Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Topics - mustafiz

Pages: 1 [2] 3 4 ... 22
16
পেঁপে ফুলের সালাদ ডায়াবেটিস রোগীর জন্য খুবই উপকারী। গাছ থেকে সদ্য ফোটা পেঁপে গাছের ফুল তুলে ভালো করে ধুয়ে পানি ঝরাতে হবে।



অন্য একটি কড়াইয়ে ঘি অথবা তেলে এই ফুলগুলো লবণ দিয়ে হালকাভাবে ভেজিয়ে নিলেই হলো।

খেতে বেশ সুস্বাদু এই সালাদ ডায়াবেটিস রোগীদের প্রাকৃতিকভাবে সুগার নিয়ন্ত্রণ করে।

চা পানের সময় নাশতার সাথেও এ সালাদ খাওয়া যায়।

নিয়মিত খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ হওয়ার পাশাপাশি লিভার ও ফুসফুসের প্রদাহ দূর করে।

এ ক্ষেত্রে পেঁপে ফুলের স্থলে পেঁপের পাতাও ব্যবহার করা যায়। পেঁপের পাতা খেতে একটু তিতা লাগবে।


Sourcet: http://prohornews.com/details.php?iddpuf

17

তৃষ্ণা মেটাতে লেবুর শরবতের ‍তুলনা নেই। তবে ঘুম থেকে উঠেই কুসুম গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে খাওয়ার অভ্যাস স্বাস্থ্যের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ।


একটি স্বাস্থবিষয়ক ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে সকালের ঘুম থেকে উঠে লেবুপানি খাওয়ার উপকারিতাগুলো উল্লেখ করা হয়।

হজমে সাহায্য করে

দিনের শুরুতে কুসুম গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে খেলে হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে। অন্যদিকে লেবু পাকস্থলি পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে আর বর্জ্য নিষ্কাশনে সহায়তা করে।

রোগ প্রতিরোধ

সিট্রাস গোত্রের ফল যেমন লেবু, বাতাবি লেবু বা কমলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অসকর্বিক অ্যাসিড। ভিটামিন সি ঠাণ্ডাজনিত রোগ থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে এবং অসকর্বিক অ্যাসিড শরীরে আয়রন গ্রহণে সহায়তা করে। ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

ক্ষারের সমন্বয়

শরীরে হাইড্রোজেনের পরিমাণের উপর অনেকাংশে সুস্থতা নির্ভর করে। সর্বমোট পিএইচ বা পাওয়ার অফ হাইড্রোজেন স্কেল হল ১ থেকে ১৪। মানবদেহে ৭ মাত্রার পিএইচ থাকা স্বাভাবিক। এর থেকে কম বা বেশি হলে শরীরে রোগের বিস্তার হতে পারে।

অ্যাসিডিক বা ক্ষারীয় ফল হলেও লেবু মানবদেহে পিএইচ’য়ের মাত্রা সমন্বয় করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে যারা বেশি মাংস, পনির বা অ্যালকোহল গ্রহণ করেন তাদের জন্য লেবু সবচেয়ে বেশি উপকারী।

বিষাক্ত পদার্থ নিষ্কাশন

পানির মাধ্যমে শরীরের ক্ষতিকর পদার্থ বের হয়ে যায়। লেবু হচ্ছে প্রাকৃতিক মূত্রবর্ধক। তাছাড়া লেবুর সিট্রিক এসিড পাকস্থলি পরিষ্কার রেখে ক্ষতিকর বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে।

শক্তি বর্ধক

পানি এবং লেবুর রস শরীরে প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা বজায় রাখে এবং রক্তে অক্সিজেন যুক্ত করে। ফলে শরীরে শক্তি সঞ্চার হয়।

ত্বক সুন্দর করে

দীর্ঘক্ষণ পানিশূণ্য থাকলে ত্বক ম্লান দেখায়। সকালে লেবুর শরবত খেলে এর ভিটামিন সি ত্বক সুস্থ রাখে। আর লেবুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে।

18
বর্তমান সময়ের অন্যতম মরণব্যাধি হলো ক্যান্সার। কিন্তু অতি সহজেই আমরা এই রোগ থেকে পরিত্রান পেতে পারি। আর এ জন্য আপনাকে নিয়মিত করলা খেতে হবে। বিশেষ করে মাথা, ঘাড় ও স্তন ক্যান্সার রোধে করলা খুবই সহায়ক ভূমিকা পালন করে। ভারতীয় লোটি ক্যারোলিন হার্ডি চ্যারিটেবল ট্রাস্টের একদল গবেষক এমনটিই দাবি করেছেন।


ভারতের সেন্ট লুই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাথলজির অধ্যাপক রত্না রায় বলেন, দীর্ঘদিন ক্যান্সার নিয়ে গবেষণাকালে তিনি দেখতে পান ভারতীয় সবজি তিতা তরমুজ বা করলার মধ্যে যে রাসায়নিক উপাদান রয়েছে তা ক্যান্সার নিরাময়ে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় করলা রাখলে মাথা ও ঘাড় ক্যান্সার রোধে তা বিশেষভাবে সাহায্য করে।

অধ্যাপক রত্না আরও বলেন, গবেষণায় দেখা যায় মাথা ও ঘাড় ক্যান্সারের চিকিৎসায় বিকল্প ওষুধ হিসেবে করলা পরিপূরকভাবে কাজ করছে। ক্যান্সার বিস্তার রোধে অত্যন্ত তিতা করলা খুবই কার্যকর। করলার নির্যাস ক্যান্সার সেল গঠনে বাধা দেয়। স্তন ক্যান্সার রোধেও করলার নির্যাস খুবই উপকারী বলেও জানান তিনি।


Source: http://www.prohornews.com/details.php?dpuf

19
 আশ্চর্য্য সব ভেষজ গুন রয়েছে আমলকিতে। ত্বক, চোখ ও চুলের যত্ন থেকে ক্যান্সারের মতো রোগ প্রতিরোধেও এই ফল রাখতে পারে বিরাট ভূমিকা। ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসের ক্ষমতা রয়েছে ভিটামিন সি’সমৃদ্ধ আমলকিতে। আমলকির ফাইটো-কেমিক্যাল চোখের জন্য উপকারী। হজম ও দেহের চর্বি কমাতেও সাহায্য করে ক্ষুদ্র আকৃতির এই ফল। শারীরিক সুস্থতায় প্রতিদিন অন্তত একটি আমলকি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন।

আমলকি সাধারণত কাঁচা চিবিয়ে খাওয়া হয়। অনেকের কাছে আমলকি খেতে ভালো লাগে না টক ও কষটে স্বাদের কারণে। উপকারী এই ফল খেতে পারেন ভিন্ন উপায়েও।

অন্য অনেক ফলের মতো আমলকিও ব্লেন্ডার দিয়ে জুস বানিয়ে খাওয়া যায়। কুচি করে কেটে সামান্য পানি দিয়ে ব্লেন্ড করে সহজেই বানানো যায় আমলকির জুস। কষটে স্বাদ দূর করার জন্য মেশাতে পারেন চিনি বা মধু।


লবণ আর লবনের রস মেখে রোদে শুকিয়েও খাওয়া যায় আমলকি। হজমের ঝামেলা পরিত্রাণের জন্য ভাতের সঙ্গে খেতে পারেন আচার বা চাটনি বানিয়ে।

যদিও এখন বছর জুড়েই আমলকি কিনতে পাওয়া যায়। তবে বছর জুড়ে ঘরেও সংরক্ষণ করে রাখা যায় ভেষজ এই ফল। মাঝারি আকারে কেটে মিনিট তিনেক পানিতে ফুটিয়ে নেয়ার পর লবণ, আদা কুচি, লেবুর রস ও সরিষার তেল মেখে রোদে শুকিয়ে সারা বছর সরক্ষণ করা যায় আমলকি।

গুঁড়ো করেও খাওয়া যায় আমলকি। সেজন্য আমলকি টুকরো করে শুকিয়ে নিতে হবে। পরে শুকনো টুকরা গুঁড়ো করে বয়ামে রেখে খেতে পারবেন সারা বছর। এর সঙ্গে যুক্ত করে নিতে পারেন মধু ও মাখন। পানিতে চিনির সঙ্গে আমলকির গুঁড়ো মিশিয়ে খেতেও মন্দ লাগবে না।

Source : http://www.prohornews.com/details.php?.dpuf

20
Life Style / শাকসবজি খান টাটকা
« on: November 24, 2014, 05:09:21 PM »
টাটকা শাকসবজি খেতে যেমন দারুণ, তেমনি স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো। শাকসবজি টাটকা রাখার কিছু উপায়-



* টমেটো পলিথিন ব্যাগে ভরে ফ্রিজে রাখবেন না। ব্রাউন পেপারের প্যাকেটে করে রাখুন। একই রকমভাবে মাশরুমও রাখতে পারেন।

* পালংশাক, লেটুস, সেলেরির মতো সালাদের সবজি পরিষ্কার করে ধুয়ে পোর্সেলিনের কন্টেনারে ভরে ফ্রিজে রাখুন। এটা এক সপ্তাহেরও বেশি টাটকা থাকবে।

* কাঁচামরিচের বোঁটা ফেলে দিয়ে মরিচ ফ্রিজে রাখুন। এছাড়া কাঁচা মরিচের বোঁটা ছাড়িয়ে নিয়ে মাঝখান থেকে সামান্য চিরে নিন। তারপর এতে সামান্য লবণ ও হলুদ মাখিয়ে রোদে শুকিয়ে নিয়ে সংরক্ষণ করুন। এটা বেশি দিন থাকবে।

* লেবু বেশি দিন টাটকা রাখতে চাইলে লবণের বয়ামের মধ্যে রাখুন।

* পেঁয়াজ, বেগুন, স্কোয়াশের মতো ফল ফ্রিজের বাইরে রাখুন। ভালো থাকবে বেশি দিন।

* আলু বেশিদিন ভালো রাখার জন্য আলুর সঙ্গে ব্যাগে ভরে একটা আপেলও রাখুন। আলু সহজে পচবে না।

* লেটুস পাতার তাজা ভাব বজায় রাখার জন্য ধোয়ার সময় পানির মধ্যে অল্প লেবুর রস মিশিয়ে নিন।

* ফ্রিজে শাকসবজি এবং ফলমূল একসঙ্গে না রাখা ভালো। কারণ একইসঙ্গে শাকসবজি ও ফলমূল রাখলে ফল থেকে ইথাইলিন নামক এক ধরনের গ্যাস তৈরি হয়। ফলে শাকসবজির পুষ্টিমান আস্তে আস্তে কমতে থাকে। সেজন্য শাকসবজি আলাদা আলাদা জায়গায় রাখা উচিত।

* পালংশাক, পুঁইশাক, শসা, গাজরসহ কিছু কিছু শাকসবজি দিনেরটা দিনেই খাওয়া ভালো। কারণ এগুলোর পুষ্টিমান ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

* বাজার থেকে কিনে আনা শাকসবজি হালকাভাবে ধুয়ে সঙ্গে সঙ্গে ফ্রিজে রাখা ভালো। সাধারণ মানের শাকসবজিগুলো এমনভাবে ধুতে হবে যাতে খাদ্যের পুষ্টিমান পানির সঙ্গে ধুয়ে না যায়। আমরা তাজা শাকসবজির পুষ্টিমান থেকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বঞ্চিত হই কারণ শাকসবজি দীর্ঘদিন ধরে ফ্রিজে রাখলে এর সব পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। অনেক ক্ষেত্রে আমরা বেশি পানি দিয়ে ধুয়ে শাকসবজির পুষ্টিমান নষ্ট করে ফেলি।

* যে কোনো শাকসবজি দুই দিনের বেশি ফ্রিজে না রাখা উচিত। সেজন্য শাকসবজির পুষ্টিমান সঠিকভাবে পেতে হলে প্রতিদিনের বাজার প্রতিদিন করা উচিত।

* শপিংমল কিংবা বাজারে অনেক সময় দীর্ঘক্ষণ ধরে শাকসবজি অধিক পাওয়ারের লাইটের নিচে থাকে। এতে করে শাকসবজিগুলো অত্যধিক তাপমাত্রায় বর্ণহীন হয়ে যায় এবং এগুলোর পুষ্টিমানও কমে যায়। সুতরাং কেনাকাটায় এগুলো পরিহার করা উচিত।

* শপিংমল কিংবা বাজারে কেনাকাটার সময় একই ব্যাগে সব ধরনের শাকসবজি প্রায়ই আমরা কিনে থাকি। বাজার করে আসার পর সব ধরনের ফলমূল, শাকসবজি আলাদা আলাদা করে রাখা উচিত। যাতে একটির কারণে আরেকটি নষ্ট না হয়।

* পলিথিনের ব্যাগে বাজার না করা ভালো। কাপড় কিংবা পাটের ব্যাগে বাজার করা উচিত।

Source: http://www.alokitobangladesh.com/life/2014/11/24/108693#sthash.TlyHfjtu.dpuf

21
প্রচণ্ড গরমে এক গ্গ্নাস ঠাণ্ডা তাজা ফলের রসের জুড়ি মেলা ভার। ক্লান্তি দূর করার পাশাপাশি পুষ্টির জোগান ও রসনাতৃপ্তিতে এই পানীয় অতুলনীয়। কিন্তু শিশুদের জন্য বাজারে ক্যানে বা প্যাকেটজাত যে জুস পাওয়া যায় তা কি আসলে স্বাস্থ্যসম্মত? গবেষকদের উত্তর নেতিবাচক।

তারা বলছেন, এই জুসে রয়েছে অতিমাত্রায় চিনি, যা শিশুস্বাস্থ্যের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এক গ্গ্নাস কোকাকোলায় যে পরিমাণ চিনি থাকে প্যাকেটজাত জুসেও তা থাকে সমপরিমাণ।জুস শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ!

সম্প্রতি ব্রিটেনে অ্যাকশন অন সুগার নামে একটি প্রচার অভিযান পরিচালিত হয়। এ অভিযান চলাকালে পরিচালিত এক জরিপে দেখা যায় ২৫০ মিলিলিটার পরিমাণ জুসে ৬ চা-চামচ পরিমাণ চিনি থাকে। বিভিন্ন ধরনের প্যাকেটজাত জুসের ২০০-এর বেশি নমুনা বিশ্লেষণ করে এ উপাত্ত পান গবেষকরা।

অ্যাকশন অন সুগারের চেয়ারম্যান অধ্যাপক গ্রাহাম ম্যাকগ্রেগর বলেন, শিশু ও রোগীদের জন্য প্যাকেটজাত যে জুস স্বাস্থ্যকর বলে বাজারজাত করা হচ্ছে তা আসলে অপপ্রচার ছাড়া আর কিছুই না। এটি অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত।

কারণ আমাদের শিশুদের মুটিয়ে যাওয়ার প্রবণতা ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অসীম মালহোত্রার সতর্কবার্তা হচ্ছে, নিয়মিত অতিরিক্ত চিনি গ্রহণ করলে দন্তক্ষয় ছাড়াও টাইপ-২ ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। তাই কৃত্রিম জুস কখনও স্বাস্থ্যকর সুষম খাদ্যের অংশ হতে পারে না। -বিবিসি ও দ্য ইনডিপেনডেন্ট।

Source: http://www.prohornews.com/details.php?dpuf

22
সালাদ খান না এমন পরিবার খুব কমই পাওয়া যাবে। মেদ সমস্যায় ভুগছেন তারা কাঁচা পেঁপে সালাদ হিসাবে খেতে পারেন অনায়াসে।
আমাদের দেশে নানারকম ফল পাওয়া যায়। তার মধ্যে পেঁপে অন্যতম। পেঁপের রয়েছে নানা গুণ। যাদের পেটে গোলমাল দেখা দেয়, তারা পেঁপে খেতে পারেন। অন্যান্য ফলের তুলনায় পেঁপেতে ক্যারোটিন অনেক বেশি থাকে। কিন্তু ক্যালরির পরিমাণ বেশ কম থাকায় যারা মেদ সমস্যায় ভুগছেন তারা পেঁপে খেতে পারেন অনায়াসে। এই ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ ও সি আছে।
সালাদ এখন খাবার টেবিলের অন্যতম সহ আইটেমেব বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে টমেটো, শসা, গাজর, কাঁচামরিচ, পিঁয়াজ, লেটুসপাতা সালাদে স্থান পায়।




এসব সবজির মিশ্রনে তৈরী সালাদ ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ভিটামিন ইর পরিমাণ থাকায় এধরনের সালাদ এন্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে। তবে সালাদে যদি কাচা পেপে মেশানো হয় তাহলে এটা আরও উপকারী। কারণ পেঁপেতে থাকে প্রচুর পরিমাণ পেপসিন। এই পেপসিন হজমে সাহায্য করে। কাঁচা পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে পেপেইন নামক হজমকারী দ্রব্য থাকে। অজীর্ণ,কৃমি সংক্রমণ, আলসার, ত্বকে ঘা, কিডনি ও ক্যান্সার নিরাময়ে কাজ করে। পাকা পেঁপে ফল ও কাঁচা পেপে সবজি হিসেবে খাওয়া যায়। পেঁপে কাঁচা কী পাকা, দুটোতেই এর উপকারের মাত্রা সীমাহীন। কাঁচা পেঁপের কষ বাতাসার সঙ্গে খেলে লিভার সংক্রান্ত নানা সমস্যা দূর হয়। এর সঙ্গে খিদে বাড়ে। জন্ডিস হওয়ার সম্ভাবনা কমে। অপরদিকে পেঁপের রসে এমন কিছু উপাদান আছে যা আমাশয়, অশ্ব, কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সক্ষম। -পেঁপে খেলে শরীর থেকে দূষিত বায়ু সহজেই বেরিয়ে যায়। কাঁচা পেঁপের তরকারি পথ্যের কাজ করে।
চিকিৎসকরা ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের কাঁচা পেঁপের তরকারি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। অপরদিকে কাঁচা পেঁপের কষ নাকি ঘা শুকাতে সাহায্য করে। পাকা পেঁপে তো খেতেও মিষ্টি। গুণটাও এর মধুর মতো মধুর। -লিভারের জটিল সমস্যা দূর করে। পাচন শক্তি বাড়ায়। অপরদিকে ত্বকের গ্ল্যামার বাড়াতে হলে আপনি পাকা পেঁপে মুখে লাগাতে পারেন। তা আপনার সৌন্দর্যে অভূতপূর্ব চমক এনে দেবে। সারা বছর সবজি ও ফল হিসেবে পাওয়া যায় এমন একটি ফসল হলো পেঁপে। একই গাছ থেকে অপরিপক্ব ফল বা কাঁচা সবুজ পেঁপে সংগ্রহ করে সবজি হিসেবে খাওয়া যায়। কাঁচা পেঁপের তরকারি একটি উপাদেয় এবং ওষুধি সবজি হিসেবে বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয়। অন্য দিকে পরিপক্ব বা পুষ্ট পেঁপে একটি পুষ্টিকর ও জনপ্রিয় ফল। প্রতিদিন কাঁচা পেঁপের তরকারি বা পাকা পেঁপে খাওয়া শরীরের পক্ষে খুবই উপকারী। পুষ্টিগুণের দিক দিয়ে পেঁপে অন্য ফলের তুলনায় অনেক বেশি পুষ্টিকর। পাকা পেঁপে ভিটামিন ‘এ’ এবং ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ। কাঁচা পেঁপেতেও ভিটামিন ‘এ’, ভিটামিন ‘বি’ এবং ভিটামিন ‘সি’ আছে। এ ছাড়া কাঁচা বা পাকা পেঁপেতে লৌহ ও ক্যালসিয়াম আছে। হজমে সহায়ক পেঁপে কাঁচা ও পাকা উভয় অবস্খাতেই শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
পেঁপের ঔষধি গুন সমূহ:
রক্ত আমাশয়: প্রত্যেহ সকালে কাঁচা পেঁপের আঠা ৫/৭ ফোঁটা ৫/৬ টি বাতাসার সঙ্গে মিশিয়ে খেতে হবে। ২/৩ দিন খাওয়ার পর রক্তপড়া কমতে থাকবে।
ক্রিমি: যে কোনো প্রকারের ক্রিমি হলে, পেঁপের আঠা ১৫ ফোঁটা ও মধু ১চা চামচ একসঙ্গে মিশিয়ে খেতে হবে। এরপর আধা ঘন্টা পরে উষ্ণ পানি আধ কাপ খেয়ে তারপরে ১ চামচ বাখারি (শসা-ক্ষীরার মতো এর স্বাদ) চুনের পানি খেতে হয়। এভাবে ২ দিন খেলে ক্রিমির উপদ্রব কমে যাবে।
আমাশয়: আমাশয় ও পেটে যন্ত্রনা থাকলে কাঁচা পেঁপের আঠা ৩০ ফোঁটা ও ১ চামচ চুনের পানি মিশিয়ে তাতে একটু দুধ দিয়ে খেতে হবে। একবার খেলেই পেটের যন্ত্রনা কমে যাবে এবং আমাশয় কমে যাবে।
যকৃত বৃদ্ধিতে: এই অবস্থা হলে ৩০ ফোঁটা পেঁপের আঠাতে এক চামচ চিনি মিশিয়ে এক কাপ পানিতে ভালো করে নেড়ে মিশ্রণটি সারাদিনে ৩বার খেতে হবে। ৪/৫ দিনের পর থেকে যকৃতের বৃদ্ধিটা কমতে থাকবে, তবে ৫/৬ দিন খাওয়ার পর সপ্তাহে ২ দিন খাওয়াই ভালো। এভাবে ১ মাস খেলে ভাল ফল পাওয়া যাবে।
ক্ষুধা ও হজম শক্তিতে: প্রত্যেকদিন সকালে ২/৩ ফোঁটা পেঁপের আঠা পানিতে মিশিয়ে খেতে হবে। এর দ্বারা ক্ষুধাও বেড়ে যাবে এবং হজমও ঠিকভাবে হবে।
পেট ফাঁপায়: কয়েক টুকরো পাকা পেঁপের শাঁষ, আর সামান্য লবন এবং একটু গোলমরিচের গুড়ো একসংগে মিশিয়ে খেতে হবে। এর দ্বারা পেট ফাঁপার উপশম হয।
প্রবল জ্বরে: দেড় চামচ পেঁপে পাতার রস এক কাপ পানিতে মিশিয়ে খেতে হবে। এর দ্বারা জ্বরের বেগ, বমি, মাথার যন্ত্রনা, শরীরে দাহ কমে যাবে। জ্বর কমে গেলে আর খাওয়ার প্রয়োজন নেই।
মাসিক ঋতু বন্ধে: যাদের মাসিক ঋতু বন্ধ হওয়ার সময় হয়নি অথচ বন্ধ হয়ে গিয়েছে অথবা যেটুকু হয় তা না হওয়ারই মত, সেক্ষেত্রে ৫/৬ টি পাকা পেঁপের বিচি গুড়া করে রোজ সকালে ও বিকালে দু’বার পানিসহ খেতে হবে। এর ফলে কয়েকদিনের মধ্যেই মাসিক স্রাব ঠিক হয়ে যাবে, তবে অন্য কোন কারনে এটা বন্ধ হয়ে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
দাদে: সে যে কোনো প্রকারের হোক না কেন, কাঁচা পেঁপের/গাছের আঠা ঐ দাদে লাগিয়ে দিতে হবে, একদিন লাগিয়ে পরের দিন লাগাতে হবে না, এরপরের দিন আবার লাগাতে হবে, এইভাবে ৩/৪ দিন লাগালে দাদ মিলিয়ে যাবে।
একজিমায়: যে একজিমা শুকনা অথবা রস গড়ায় না, সেখানে ১ দিন অথবা ২ দিন অন্তর পেঁপের আঠা লাগালে ওটার চামড়া উঠতে উঠতে পাতলা হয়ে যায়।
উকুন হলে: ১ চামচ পেঁপের আঠা, তার সঙ্গে ৭/৮ চামচ পানি মিশিয়ে ফেটিয়ে নিতে হয়। তারপর ওই পানি চুলের গোড়ায় লাগিয়ে কিছুক্ষণ রাখার পর মাথা ধুয়ে ফেলতে হয়। এইভাবে একদিন অন্তর আর একদিন বা ২ দিন লাগালে উকুন মরে যায়।

Sourcet: http://www.prohornews.com/details.dpuf

23
মুসলিম বিজ্ঞানী জাবির ইবনে হাইয়ান আল-আজদি আস সুফি আল-ওমাবি (৭২২- ৮০৪/৮১৩)। আরবের দক্ষিণাংশের বাসিন্দা আজদি গোত্রের হাইয়ান ছিলেন তার পিতা। চিকিৎসক পিতার সন্তান হলেও সমকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে উমাইয়া খলিফা তার পিতাকে মৃত্যুদ- প্রদান করলে বাল্যকালে তিনি চরম দুঃখ-কষ্টের সম্মুখীন হন। শৈশবে কুফায় বসবাস করলেও পিতার মৃত্যুর পর তিনি দক্ষিণ আরবে স্বগোত্রে ফিরে আসেন। স্থানীয় বিদ্যালয়ে পড়ালেখার হাতেখড়ি হলেও পরবর্তী সময়ে তিনি গণিতে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে ইয়েমেনের বিখ্যাত গণিতজ্ঞ হারবি আল-হিময়ারির ছাত্র হওয়ার সুযোগ লাভ করেন। তিনি পিতার মতো চিকিৎসাবিদ্যায়ও ব্যুৎপত্তি অর্জন করেছিলেন।


ইমাম জাফর আস সাদিকের সানি্নধ্য লাভের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বিজ্ঞানে বিশেষ করে রসায়ন শাস্ত্রে গভীর জ্ঞানের অধিকারী হন। ঐতিহাসিক ইবনে খালি্লকানের মতে, 'জাবির এ সময়ে জাফর আস-সাদিকের ৫০০ বিজ্ঞানবিষয়ক গ্রন্থ সনি্নবেশ করে একটি ২ হাজার পৃষ্ঠার বই সঙ্কলন করেন।' খলিফা হারুন-আর-রশিদের শাসনামলে তিনি বাগদাদে বসবাস করেন এবং খলিফার পৃষ্ঠপোষকতায় জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চায় আত্মনিয়োগ করেন। তবে বাগদাদে বসবাস ও আব্বাসীয়দের রাজকীয় অনুগ্রহের স্বাদ তার পক্ষে বেশিদিন উপভোগ করা সম্ভব হয়নি। আব্বাসীয় উজির বার্মাকীয়দের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত হলে তিনি বাগদাদ থেকে পালিয়ে কুফায় চলে আসেন এবং সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। কুফায় বসবাসের সময় তিনি রসায়ন শাস্ত্র গবেষণায় বিশেষ মনোযোগী হন। ওই পরিপ্রেক্ষিতে কুফায় একটি রসায়ন গবেষণাগারও প্রতিষ্ঠা করেন। মুসলিম ঐতিহাসিকরা ওই গবেষণাগারকে পৃথিবীর প্রথম রসায়নাগার বলে অভিহিত করেছেন। তবে বর্তমানে ওই গবেষণাগারের কোনো অস্তিত্ব বিদ্যমান নেই।

রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় দ্রব্যাদি প্রস্তুত করার কাজে তার প্রত্যক্ষ জ্ঞান ছিল। পৃথিবীর ইতিহাসে তিনিই প্রথম বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে রসায়নের প্রাথমিক প্রক্রিয়াগুলো চর্চা করার উপায় উদ্ভাবন করেন। তিনি পাতন, ঊর্ধ্বপাতন, পরিস্রবণ, দ্রবণ, কেলাসন, ভস্মীকরণ, বাষ্পীভবন, গলানো প্রভৃতি রাসায়নিক প্রক্রিয়ার সূত্রপাত করেন। ইস্পাত তৈরি, ধাতুর শোধন, তরল বাষ্পীকরণ প্রণালি, বস্ত্র ও চর্ম রঞ্জন, ওয়াটারপ্রুফ কাপড়ের ও লোহার মরিচা রোধক বার্নিশ, চুলের নানাকরণ কলপ প্রভৃতি বিষয়ে তিনি গ্রন্থ রচনা করেন। সোনার বদলে মারকাসাইট থেকে উজ্জ্বল রঙের কালি প্রস্তুত প্রণালি আবিষ্কার তার অন্যতম কৃতিত্ব। তিনি ম্যাঙ্গানিজ ডাই-অঙ্াইড থেকে কাচ, সিরকা পাতনপূর্বক সিরকাপ্রধান অমস্ন, গন্ধককে ক্ষারের সঙ্গে তাপ দিয়ে লিভার অব সালফার এবং মিল্ক অব সালফার, জলীয় লতাগুল্ম, পটাশ ও সোডা এবং এগুলোর সঙ্গে এসিড মিশ্রিত করে লবণ তৈরি করার পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন। সাইট্রিক এসিড, আর্সেনিক, এন্টিমনি, সিলভার-নাইট্রেট, কিউরিক ক্লোরাইড প্রভৃতি রাসায়নিক দ্রব্যের ব্যবহারও তিনি জানতেন।

রসায়ন শাস্ত্রের পাশাপাশি তিনি চিকিৎসা, খনিজ পদার্থ বিশেষত পাথর, দর্শন, যুদ্ধবিদ্যা জ্যামিতি, জ্যোতির্বিজ্ঞান প্রভৃতি বিষয়ে অবদান রাখেন। তিনি প্রায় ২ হাজার বই রচনা করেন। এর মধ্যে চিকিৎসা বিষয়ে বইয়ের সংখ্যা প্রায় ৫০০। তার আল-জহর বা বিষ নামক গ্রন্থটি মৌলিক গ্রন্থের তালিকায় বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। অন্য বিষয়ে পা-িত্য থাকলেও রসায়ন শাস্ত্রে অবদানের জন্য তিনি আজও সবার কাছে সমাদৃত হয়ে আছেন। ঐতিহাসিক আবদুল মওদুদের মতে, 'জাবির ছিলেন আরবি কিমিয়ার জন্মদাতা এবং সম্ভবত জগতের সর্বপ্রথম রসায়নবিদ।'


লেখক :  মোঃ আবুসালেহ সেকেন্দার ,সহকারী অধ্যাপক, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

 Source: http://www.alokitobangladesh.com/civilization&culture/2014/11/24/108830#sthash.WrP50za6.dpuf

24
নির্মল আকাশ। প্রখর সূর্য। গাছের পাতা ভাবলেশহীন। যেন প্রার্থণায় রত। শান্ত সৌম্য পরিবেশ। উপরে লিচু, জাম আর শান্তির প্রতীক জলপাই গাছ। নিচে সবুজ ঘাসের গালিচা। যেন এক টুকরো শান্তি নিকেতন। এইখানে চির নিদ্রায় হুমায়ূন আহমেদ। উত্তরাধুনিক বাংলা সাহিত্যের কিংবদন্তী লেখক।



বলছিলাম নুহাশ পল্লীর কথা। হুমায়ূন আহমেদের সমাধির কথা। নুহাশ পল্লীর পশ্চিম পাশের দেয়াল ঘেষে সমাধি। চারদিকে কাঁচের দেয়াল। ভেতরে অনেকটা জায়গা নিয়ে শ্বেত পাথরের সমাধি। শিথানের পাশে কাঁচের উপর হুমায়ূন আহমেদের স্বাক্ষর করা ফলক। পুরো জায়গা জুড়ে সুনশান নীরবতা। জীবিত থাকতে তিনি যেমন কেতাবী জীবন যাপন করেছেন, মৃত্যুর পরও যেন তার যথার্থ শয্যা।

পল্লীর ভেতরে না এসে বাইরে থেকেও সমাধি পরিদর্শনের ব্যবস্থা আছে। অবশ্য ওই পথটি আমরা বন্ধই দেখতে পেলাম। নুহাশ পল্লীর প্রবেশ মূল্য জনপ্রতি ২০০ টাকা। অনেকেরই সে সামর্থ নেই। তাই প্রিয় লেখকের সমাধি দেখার এই ব্যবস্থা প্রসংশাযোগ্য। তবে ওই পথটা খোলা রাখা দরকার।

নুহাশ পল্লীতে যাওয়ার ইচ্ছে অনেক দিনের। হুমায়ূন আহমেদ বেঁচে থাকতে কতবার যেতে চেয়েছি। চাইলেই কি আর হয়? হয় না। তাঁর মৃত্যর পর ভক্তদের ঢল নেমেছিলো এখানে। কিন্তু আমার যাওয়া হয়নি। হৃদয়ের গহীন গভীরে ব্যথা অনুভব করেছি। ভেবেছি, ভীড় কমুক।

পহেলা মে। সকালে রওনা হলাম। গাজীপুর চৌরাস্তা পেরিয়ে রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তা। এরপর কিছুটা সামনে যেতেই হোতাপাড়া বাজার। নাস্তা সারলাম নিরিবিলি হোটেলে। মূল রাস্তা থেকে পশ্চিমে এগিয়ে গেলাম প্রায় ১০ কিলো। দুপাশে গজারি বন। ফসলের মাঠ। বাড়িঘর। আমবাগান। লিচুবাগান। কলাবাগান। শহরের লোকদের আকৃষ্ট করার মতো




সবই আছে এই পথে। এই সবুজ শ্যামলিমা তাঁর যে খুব প্রিয় ছিলো। তাইতো চির নিদ্রাও প্রিয় ভূমে।

যতোই এগোচ্ছি ততই অনুভব করছি হুমায়ূন আহমেদকে। যাদু আছে তার লেখায়। পরশ পাথর নিয়ে এসেছিলেন। যার ছোঁয়ায় যাই লিখেছেন সোনা হয়ে ফলেছে। বাংলা সাহিত্যের উষর ভূমিকে দিয়েছেন উর্বরতা। কথা সাহিত্য তাঁর ছোয়ায় হয়ে উঠেছে জীবন্ত। বলে গেছেন সাধারণ মানুষের মনের কথা। অবলীলায় প্রকাশ করেছেন মধ্যবিত্তের সংকোচ গাঁথা।

রাস্তায় কোনো মাইল ফলক নেই। নেই রাস্তা চেনার জন্য তীর চিহ্ন। একটু পর পর লোকজনকে জিজ্ঞেস করে এগোতে হচ্ছে। নুহাশ পল্লীতে প্রবেশের পথটা এখনো বড় অবহেলিত। ইউনিয়ন পরিষদের উচিত ছিলো রাস্তাটাকে পাকা করা।

গজারি বন লাগোয়া নুহাশ পল্লী। বাইরে একজন বিক্রেতা কয়েকটা পেঁপে বিক্রি করছেন। একটা চায়ের দোকান আছে। বাকিটা নিরাভরণ, সাদা মাটা।



ভেতরে প্রবেশের দেখলাম বড় চত্বর। উত্তর দক্ষিণে লম্বা পুরো জায়গাটা। বা পাশে গাছের নিচে গাড়ি পার্কিং। ডান পাশে নব নির্মিত জল ফোয়ারা, সুইমিং পুল। মা-ছেলের স্ট্যাচু।

আমার চোখ খুঁজছিলো সমাধিস্থল। কিছুটা এগিয়ে গিয়ে বা পাশে সমাধি। সবার আগে সেখানে যাওয়ার তাগিদ অনুভব করলাম। হুমায়ূন আহমেদের সমাধিস্থলে গিয়ে মনে হল এই চত্বরের প্রতিটি বালুকনায়, ঘাসে, জলে-স্থলে মিশে আছেন সবার প্রিয় হুমায়ূন আহমেদ। এখানে যতটা অক্সিজেন আছে নিশ্বাস নেওয়ার সবটুকুতে মিশে আছেন ওই মানুষটি।

সমাধি থেকে কিছুটা পূবে গেলাম দাবা ঘরে। কাঠের তৈরি দাবার গুটি এখনো আছে। তবে ভেঙ্গে যাচ্ছে অনেকগুলো। ঘরটাতে প্রচুর ধুলাবালি। মনে পড়লো রবীন্দ্রনাথের গান ‘যেদিন জমবে ধুলা তানপুরাটার তারগুলায়...।’

পূব দিকের দেয়াল ঘেষে খেজুর গাছের বাগান। মনে পড়লো নজরুলের বাতায়ন পাশে গোবাক তরুর সারি কবিতার কথা। যেখানে বলা হয়েছে ‘বিদায় হে মোর বাতায়ন পাশে নিশিথ জাগার সাথি...।’


বৃষ্টি বিলাস শূন্য। কে আর অমন শৈল্পিক বাসনায় বৃষ্টি দেখবে? একটা ভাঙ্গা মোড়া। কয়েকটা জীর্ণ সোফা। সবকিছুতেই অযত্নের ছাপ। বৃষ্টি বিলাস ভবনের ভেতরে পোড়ো বাড়ির মতো কয়েকটা খালি খাট। লোকজন নেই।



সামনের চত্বরে জলপাই, লিচু আর কাঁঠালগাছ। কেবল ওগুলোতেই যেন এখনো প্রাণ আছে। প্রাণের স্পন্দন বিলাচ্ছে।

পশ্চিম পাশের বিশাল টিনের ঘরের দিকে গেলাম না। মনে হচ্ছে কিছুই নেই ওতে। বটতলায় বুড়ো দৈত্য যেন শীর্ণকায়। তার নিচে মৎস্যকুমারী বড় একা! কোথাও কেউ নেই।

সুইমিং পুলের পানি বড্ড বেশি নীলাভ। মনে পড়ে এখানে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় এবং হুমায়ূন আহমেদ একসঙ্গে জলে নেমেছিলেন। এখনো জলজ্যান্ত সেই উপজীব্য। সেখানে এখন কেবলই স্মৃতির তুচ্ছ ঢেউ। আইফোনে তোলা ছবিতেও সেই ঢেউ স্পষ্ট। যদিও শোকছোঁয়া মনের ঢেউ টের পায় না কেউ।

পাশেই ব্যঙ্গের ছাতা। প্রাণহীন। শুষ্ক কেয়া বন। ঢালুতে লাগানো খেলনাগুলো অলস জং নিয়ে পড়ে আছে। লোকজন খুব একটা নেই। দুটো গরীব শিশু ড্রাগনের উপর উঠে আবার নেমে চলে গেলো।



পথ বাড়ালাম পুকুরের দিকে। ভিত্তি ফলকে লেখা ‘দিঘি লীলাবতী’। হুমায়ূন আহমদের সবচেয়ে প্রিয় জায়গাগুলোর একটা। এখানে তিনি অনেক সময় কাটিয়েছেন। অনেক নাটক সিনেমার শ্যুটিং করেছেন এখানে। পুকুরের উত্তর পাড়ে মাঝারি সাইজের বটগাছ। দক্ষিণে একটি নতুন একতলা ছোট ঘর। বৃষ্টি দেখার জন্য বোধহয় এরচেয়ে ভালো জায়গা আর নেই। পুকুরের মাঝখানে একটি ছোট দ্বীপ। তাতে আছে গাছের ছায়া। সেখানে যাওয়ার জন্য একটি কাঠের সেতু।

ফিরে যাচ্ছি। কেউ বলছেন ছোট জায়গা, কেউ বলছেন যথেষ্ট বড়। কারো কাছে সুন্দর। কারো কাছে ততটা নয়। তবে বাংলা সাহিত্যকে যিনি দুহাত ভরে দিয়ে গেলেন; তার চলে যাওয়ায় কি এতো তাড়া ছিলো? আর কটা দিন বাঁচলে কি এমন ক্ষতি হত!

হুমায়ূন আহমেদের সার্থকতা সেখানেই, যতদিন বেঁচেছেন বীরের মতোই বেঁচেছেন। এ প্রজন্ম তাঁকে আজীবন স্মরণ করবে। হাজারো ভক্ত পাঠকের হৃদয়ে তিনি চীর ভাস্বর হয়ে থাকবেন। তাঁর মৃত্যু নেই।

 Source: bdnews24.com

25
Travel / Visit / Tour / জলাবন রাতারগুল
« on: November 23, 2014, 07:05:27 PM »
বাংলাদেশের একমাত্র জলাবন রাতারগুল। সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত এই জঙ্গল বছরের প্রায় অর্ধেকেরও বেশি সময় কোমর পানিতে ডুবে থাকে।



চিরসবুজ এ জঙ্গলে আছে নানান রকম বন্যপ্রাণী। পানিতে অর্ধেক গা ডুবিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা এই বনের গাছগুলোর ফাঁকে ফাঁকে নৌকায় চড়ে ঘুরে বেড়ানোর মজাই আলাদা।

সিলেট বন বিভাগের উত্তর সিলেট রেঞ্জে-২ এর অধীন প্রায় তিন হাজার তিনশ একুশ একর জায়গা জুড়ে রাতারগুল জলাবন। এর মধ্যে ৫০৪ একর জায়গায় মূল বন, বাকি জায়গা জলাশয় আর সামান্য কিছু উঁচু জায়গা।

তবে বর্ষাকালে পুরো এলাকাটিই পানিতে ডুবে থাকে। শীতে প্রায় শুকিয়ে যায় রাতারগুল। তখন কেবল পানি থাকে বনের ভেতরে খনন করা বড় জলাশয়গুলোতে। পুরানো দু’টি বড় জলাশয় ছাড়াও ২০১০-১১ সালে রাতারগুলের ভেতরে পাখির আবাসস্থল হিসেবে ৩.৬ বর্গকিলোমিাটারের একটি বড় লেইক খনন করা হয়।

রাতারগুল বনের কোথাও কোথাও গভীরতা অনেক বেশি। এ বনের কোনও কোনও জায়গা ২৫ ফুটেরও বেশি গভীর।

রাতারগুল প্রাকৃতিক বন। এর পরেও বন বিভাগ হিজল, বরুন, করচ, আর মুর্তাসহ কিছু জলসহিষ্ণু জাতের গাছ লাগিয়েছে। এছাড়াও রাতারগুলের গাছ পালার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল: কদম, জালি বেত, অর্জুনসহ জলসহিষ্ণু আরও প্রায় ২৫ প্রজাতির গাছপালা।

সিলেটের শীতল পাটি তৈরির মূল উপাদান মুর্তার বড় একটা অংশ এ বন থেকেই আসে।



বাংলাদেশ বন বিভাগ ১৯৭৩ সালকে রাতারগুল বনের ৫০৪ একর এলাকাকে বন্যপ্রাণী অভয়াশ্রম হিসেবে ঘোষণা করে। এ বনে দেখা যায় নানান প্রজাতির পাখি। এ সবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল: মাছরাঙা, বিভিন্ন প্রজাতির বক, ঘুঘু, ফিঙে, বালিহাঁস, পানকৌড়ি ইত্যাদি।

বন্যপ্রাণীর মধ্যে আছে— বানর, উদবিড়াল, কাঠবিড়ালি, মেছোবাঘ ইত্যাদি। নানান প্রজাতির সাপেরও অভায়শ্রম এই বন।

রাতারগুল জলাবনের একেবারে শুরুর দিকটায় মুর্তার বন। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ খোলা জায়গার পুরোটাই পানিতে ডুবে থাকে। এর পরেই মূল বন। বনের গহীনে গাছের ঘনত্ব বেশি। কোথাও কোথাও সূর্যের আলো পর্যন্ত পানি ছুঁতে পারে না। কয়েকদিন পাহাড়ি ঢল না থাকলে বনের পানি এত বেশি স্বচ্ছ হয় যে, বনের সবুজ প্রতিবিম্বকে মনে হয় বনের নিচে আরেকটি বন।

এ সময়টা রাতারগুলের ছবি তোলার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত।

কীভাবে যাবেন

রাতারগুল দেখতে হলে প্রথমে যেতে হবে সিলেট শহর। সড়ক, রেল ও আকাশ পথে ঢাকা থেকে সরাসরি সিলেট যেতে পারেন। চট্টগ্রাম থেকেও সিলেটে যাওয়া যায়।

ঢাকার ফকিরাপুল, সায়দাবাদ ও মহাখালী বাস স্টেশন থেকে সিলেটের বাসগুলো ছাড়ে। এ পথে গ্রীন লাইন পরিবহন, সৌদিয়া এস আলম পরিবহন, শ্যামলি পরিবহন ও এনা পরিবহনের এসি বাস চলাচল করে। ভাড়া ৮শ’ থেকে ১ হাজার ১শ’ টাকা। এছাড়া শ্যামলী পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, ইউনিক সার্ভিস এনা পরিবহনের পরিবহনের নন এসি বাস সিলেটে যায়। ভাড়া ৪শ’ থেকে সাড়ে ৪শ’ টাকা। এনা পরিবহনের বাসগুলো মহাখালী থেকে ছেড়ে টঙ্গী ঘোড়াশাল হয়ে সিলেট যায়।

ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে মঙ্গলবার ছাড়া সপ্তাহের প্রতিদিন সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে যায় আন্তঃনগর ট্রেন পারাবত এক্সপ্রেস। সপ্তাহের প্রতিদিন দুপুর ২টায় ছাড়ে জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস এবং বুধবার ছাড়া সপ্তাহের প্রতিদিন রাত ৯টা ৫০ মিনিটে ছাড়ে উপবন এক্সপ্রেস।

শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন বিকাল ৪টায় ছাড়ে কালনী এক্সপ্রেস। ভাড়া দেড়শ থেকে ১ হিাজার ১৮ টাকা। এছাড়া চট্টগ্রাম থেকে সোমবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে যায় পাহাড়িকা এক্সপ্রেস এবং শনিবার ছাড়া প্রতিদিন রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে উদয়ন এক্সপ্রেস। ভাড়া ১৪৫ থেকে  ১ হাজার ১শ’ ৯১ টাকা।




ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইউনাইটেড এয়ার, রিজেন্ট এয়ার, নভো এয়ার এবং ইউএস বাংলা এয়ারের বিমান প্রতিদিন উড়াল দেয় সিলেটের ওসমানী বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে।

সিলেট শহর থেকে কয়েকটি পথে আসা যায় রাতারগুল। সবচেয়ে সহজ পথটি হল— শহর থেকে মালনিছড়ার পথে ওসমানী বিমান বন্দরের পেছনের সড়ক ধরে সোজা সাহেব বাজার হয়ে রামনগর  চৌমুহনী। সেখান থেকে হাতের বাঁয়ে এক কিলোমিটার গেলেই রাতারগুল।

সারাদিন ভ্রমণের জন্য জায়গাটিতে পাওয়া যাবে ছোট ছোট খোলা নৌকা। এক বেলা জঙ্গলে বেড়ানোর জন্য প্রতিটি নৌকার ভাড়া ৩শ’ থেকে ৭শ’ টাকা।

সিলেটের আম্বরখানা, শাহজালাল মাজার থেকে সাহেব বাজার কিংবা চৌমুহনী লোকাল অটো রিকশা যায়। জনপ্রতি ভাড়া ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা। রিজার্ভ নিয়ে গেলে আড়াইশ থেকে ৩শ’ টাকা।

কোথায় থাকবেন

সিলেট শহরে থাকার জন্য বেশ কিছু ভালো মানের হোটেল আছে। শহরের নাইওরপুল এলাকায় হোটেল ফরচুন গার্ডেন (০৮২১-৭১৫৫৯০), জেল সড়কে হোটেল ডালাস (০৮২১-৭২০৯৪৫), ভিআইপি সড়কে হোটেল হিলটাউন (০৮২১-৭১৮২৬৩), লিঙ্ক রোডে হোটেল গার্ডেন ইন (০৮২১-৮১৪৫০৭), আম্বরখানায় হোটেল পলাশ, (০৮২১-৭১৮৩০৯), দরগা এলাকায় হোটেল দরগাগেইট (০৮২১-৭১৭০৬৬), হোটেল উর্মি (০৮২১-৭১৪৫৬৩), জিন্দাবাজারে হোটেল মুন লাইট (০৮২১-৭১৪৮৫০), তালতলায় গুলশান সেন্টার (০৮২১-৭১০০১৮) ইত্যাদি।

এসব হোটেলে ৫শ’ থেকে ৪ হাজার টাকায় রাত যাপনের ব্যবস্থা আছে।

সাবধানতা

পানিতে ডুবে থাকা অবস্থায় রাতারগুল জঙ্গল বেড়ানোর উপযুক্ত সময়। এ বনের চারদিকে পানি পূর্ণ থাকে বলে ভ্রমণের সময় কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

এই বনে বেড়ানোর সময় সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। বনের গাছে ডালে অনেক সময় সাপ থাকে। এছাড়া কম বেশি জোঁকেরও উপদ্রব আছে। সাঁতার না জানলে সঙ্গে লাইফ জ্যাকেট রাখা জরুরি।

এছাড়া ছাতা, বর্ষাতি কিংবা পঞ্চ, রোদ টুপিও সঙ্গে নিতে হবে। এখানে বেড়ানোর নৌকাগুলো অনেক ছোট। এক নৌকায় পাঁচজনের বেশি উঠবেন না।

26
Travel / Visit / Tour / সিলেট শহরের আশপাশে
« on: November 23, 2014, 05:38:19 PM »

হযরত শাহজালাল আর শাহ পরাণের স্মৃতিধন্য শহর সিলেট। ছোট্ট এই শহর আর আশপাশে বেড়ানোর উপযোগী অনেক জায়গা আছে।

একদিনেই বেড়ানো যায় এসব জায়গাগুলোতে। শহর সিলেট আর আশপাশের কিছু দর্শনীয় স্থানে ভ্রমণ বৃত্তান্ত নিয়েই এবারের বেড়ানোর আয়োজন।

হযরত শাহজালাল (র) এর মাজার

সিলেট শহর ভ্রমণে সর্বপ্রথম ঢুঁ দিতে পারেন হযরত শাহজালাল (র) এর মাজারে। শহরের প্রাণ কেন্দ্রেই অবস্থিত এটি। প্রধান রাস্তা থেকে কিছুটা পথ ভেতরে গেলে মূল মাজার কমপ্লেক্স। শুরুতেই সামনে দেখা যাবে দরগাহ মসজিদ।

বিভিন্ন সময়ে সংস্কারের ফলে মসজিদটি বর্তমানে আধুনিক রূপ নিলেও, প্রথম এটি তৈরি হয়েছিল ১৪০০ খ্রীস্টাব্দে।

মসজিদের পাশেই রয়েছে মাজারে উঠার সিঁড়ি। গম্বুজ বিশিষ্ট একটি হল ঘরের মধ্য দিয়ে মাজারে প্রবেশ করতে হয়। এই হল ঘরের ঠিক পশ্চিমের ভবনটি ঘড়ি ঘর। ঘড়ি ঘরের আঙিনার পূর্ব দিকে যে তিনটি কবর রয়েছে তা হযরত শাহজালের ঘনিষ্ট তিনজন সঙ্গীর। এর দক্ষিণপাশে ছোট ঘরটি হযরত শাহজালালের চিল্লাখানা। কথিত আছে দুই ফুট চওড়া এ জায়গাতে তিনি জীবনের তেইশটি বছর ধ্যানমগ্ন কাটিয়েছেন।



উত্তরের প্রবেশ পথ দিয়ে ঢুকতেই চোখে পড়বে উঁচু ইটে বাঁধানো হযরত শাহজালাল (র) এর সমাধি। এটি নির্মাণ করা হয় ১৬৫৯ খ্রীষ্টাব্দে। এর পাশেই আছে ইয়েমেনের রাজা শাহজাদ আলীর কবর এবং ১৪১০ খ্রীস্টাব্দে সিলেটের শাসনকর্তা মুক্তালিব খান উজিরের কবর।

এখান থেকে পাওয়া একটি শিলালিপি অনুযায়ী জানা যায়, সুলতান শামসুদ্দীন ফিরোজশাহের শাসনকালে ১৩০৩ সালে হযরত শাহজালালের হাতে এ অঞ্চল বিজিত হয়। হিন্দু রাজা গৌর গোবিন্দকে পরাজিত করে এ অঞ্চলে ইসলাম প্রচার শুরু করেন তিনি। সে সময়ে তুরষ্কের কুনিয়া শহর থেকে তিনি ৩১৩ জন শিষ্যসহ এদেশে আসেন। বহু যুদ্ধে বিজয়ের পর এখানেই তিনি থেকে যান। ১৩৪০ খ্রীস্টাব্দে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

মাজার কমপ্লেক্সের ভেতরে পূর্ব পাশের পুকুরে আছে বহুকালের ঐতিহ্য গজার মাছ। শত শত জালালী-কবুতরও রয়েছে এখানে। মাজার কমপ্লেক্সের পশ্চিম পাশের একটি ঘরে এখনও রক্ষিত আছে হযরত শাহ জালালের ব্যবহৃত তলোয়ার, খাবার বাসন, বাটি ইত্যাদি।

লাক্কাতুরা চা-বাগান

সিলেট শহর থেকে বিমানবন্দর সড়ক ধরে কিছুদূর এগুলেই লাক্কাতুরা চা-বাগান। ন্যাশনাল টি কোম্পানির মালিকানাধীন এ বাগান ঘুরে বেড়াতে ভালো লাগবে। সড়কের পাশেই প্রবেশ পথ। অনুমতি নিয়ে ভেতরে ঢুকতে হবে।

মালনিছড়া চা-বাগান

লাক্কাতুরা চা বাগান ছেড়ে বিমানবন্দরের দিকে একটু যেতেই চোখে পড়বে সুন্দর এই চা বাগান। বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরানো এই চা-বাগান ১৮৫৪ সালে ইংরেজ সাহেব হার্ডসনের হাত ধরে যাত্রা শুরু করে। টিলা ঘেরা চা-বাগানের ভেতরে ঘুরে ঘুরে উপভোগ করা যাবে সবুজের সৌন্দর্য। এছাড়া বানরও দেখেতে পাবেন।




শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশাববিদ্যালয়

সিলেট শহরের পাশে কুমারগাঁও এলাকায় অবস্থিত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েও ঘুরতে যেতে পারেন। ১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিশ্ববিদ্যালয়ের খোলামেলা ক্যাম্পাস ভালো লাগবে সবার।

ক্বিন ব্রিজ

সিলেট শহরের অন্যতম প্রাচীন স্থাপনা ক্বিন ব্রিজ। সুরমা সেতু নামেও এটি বেশ পরিচিত। ১৯৩৬ সালে নির্মাণ করা হয় লোহার তৈরি এ সেতু। ইংরেজ গভর্নর মাইকেল ক্বিনের নামেই এর নামকরণ করা হয়। ১১৫০ ফুট লম্বা এবং ১৮ ফুট প্রস্থ এ সেতুটি দেখতে ধনুকের মতো বাঁকানো। ১৯৭১ সালে পাক হানাদাররা ব্রিজটির একাংশ উড়িয়ে দেয়। পরে ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ রেলওয়ের অর্থায়নে বিধ্বস্ত অংশটি পুনঃনির্মাণ করা হয়।


সুরমা নদীর চাঁদনীঘাটে আলী আমজাদের ঘড়িঘর। ছবি: মুস্তাফিজ মামুন/ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
আলী আমজাদের ঘড়িঘর

ক্বিন ব্রিজের উত্তর পাড়ে আছে পুরান একটি ঘড়িঘর। সেতুর পাশের এ জায়গাটির নাম চাঁদনীঘাট। কাঁটা থেমে থাকলেও নানান ইতিহাসের সঙ্গী এ ঘড়িঘরটি আজও দাঁড়িয়ে আছে।

জানা যায় পৃথ্বিমপাশার বিখ্যাত জমিদার আলী আমজাদ খাঁ দিল্লীর চাঁদনীচকের শাহজাদী জাহানারার একটি ঘড়িঘর দেখে মুগ্ধ হন। তাই তিনি সুরমা নদীর তীরে চাঁদনীঘাটের কাছে অনুরূপ একটি ঘড়িঘর নির্মাণ করেন। এজন্যই সবাই একে জানেন আলী আমজাদের ঘড়ি নামে।

মনিপুরী জাদুঘর

শহরের সুবিদবাজার এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এ জাদুঘর। বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে বসবাসরত আদিবাসী সম্প্রদায় মনিপুরীদের শত বছরের কৃষ্টি আর ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়েছে এ জাদুঘরের মাধ্যমে। দেখা মিলবে কয়েকশ বছরের পুরানো ঘন্টা, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত নানান দ্রব্যসামগ্রী, যুদ্ধে ব্যবহৃত সরঞ্জাম, মনিপুরীদের ঐতিহ্যবাহি হস্তশিল্প সামগ্রীসহ আরও অনেক কিছু।

এমসি কলেজ

সিলেট শহরে অবস্থিত প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মুরারীচাঁদ কলেজ বা সিলেট এমসি কলেজ। ১৮৮৬ সালে প্রতিষ্ঠিত বিশাল জায়গাজুড়ে এ কলেজের ক্যাম্পাসে এখনও আছে অনেক পুরানো স্থাপনা।

ওসমানী স্মৃতি জাদুঘর

সিলেট শহরের কোর্ট পয়েন্টের কাছে নাইওরপুলে আছে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল আতাউল গনি ওসমানীর বাস ভবন ‘নূর মঞ্জিল’। বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের পরিচালনায় এ ঘরে বসেছে ওসমানী স্মৃতি জাদুঘর। খোলা থাকে এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত। আর অক্টোবর থেকে মার্চ সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত। শুক্রবার খোলা থাকে বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত। বৃহস্পতিবার এবং অন্যান্য সরকারী ছুটির দিনে জাতীয় জাদুঘর বন্ধ থাকে।

হযরত শাহ পরানের (র) মাজার

হযরত শাহ পরান ছিলেন হযরত শাহ জালালের ভাগ্নে। তিনিও ছিলেন একজন সাধক পুরুষ। শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার পূর্ব দিকে দক্ষিণগাছের খাদিমপাড়ায় এই মাজার। বিশাল বটগাছের ছায়াতলে এ মাজারে সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হয়। প্রতিদিন হাজার হাজার ভক্তের পদচারণায় মুখরিত থাকে পুরো মাজার এলাকা।

কীভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে সড়ক, রেল ও আকাশ পথে সরাসরি সিলেট যাওয়া যায়। ঢাকার ফকিরাপুল, সায়দাবাদ ও মহাখালী বাস স্টেশন থেকে সিলেটের বাসগুলো ছাড়ে।

এ পথে গ্রীন লাইন পরিবহন, সৌদিয়া এস আলম পরিবহন, শ্যামলি পরিবহন ও এনা পরিবহনের এসি বাস চলাচল করে। ভাড়া ৮শ' থেকে ১ হাজার ১শ' টাকা। এছাড়া শ্যামলী পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, ইউনিক সার্ভিস এনা পরিবহনের পরিবহনের নন এসি বাস সিলেটে যায়। ভাড়া ৪শ' থেকে সাড়ে ৪শ' টাকা।

এনা পরিবহনের বাসগুলো মহাখালী থেকে ছেড়ে টঙ্গী ঘোড়াশাল হয়ে সিলেট যায়।

ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে মঙ্গলবার ছাড়া সপ্তাহের প্রতিদিন সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে যায় আন্তঃনগর ট্রেন পারাবত এক্সপ্রেস। সপ্তাহের প্রতিদিন দুপুর ২টায় ছাড়ে জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস এবং বুধবার ছাড়া সপ্তাহের প্রতিদিন রাত ৯টা ৫০ মিনিটে ছাড়ে উপবন এক্সপ্রেস। শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন বিকাল ৪ টায় ছাড়ে কালনী এক্সপ্রেস। ভাড়া দেড়শ থেকে ১ হাজার ১৮ টাকা।

ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইউনাইটেড এয়ার, রিজেন্ট এয়ার, নভো এয়ার এবং ইউএস বাংলা এয়ারের বিমান যায় সিলেটের ওসমানী বিমানবন্দরে।

কোথায় থাকবেন

সিলেট শহরে থাকার জন্য বেশ কিছু ভালো মানের হোটেল আছে। শহরের নাইওরপুল এলাকায় হোটেল ফরচুন গার্ডেন (০৮২১-৭১৫৫৯০)। জেল সড়কে হোটেল ডালাস (০৮২১-৭২০৯৪৫)। ভিআইপি সড়কে হোটেল হিলটাউন (০৮২১-৭১৮২৬৩)। লিঙ্ক রোডে হোটেল গার্ডেন ইন (০৮২১-৮১৪৫০৭)। আম্বরখানায় হোটেল পলাশ (০৮২১-৭১৮৩০৯)। দরগা এলাকায় হোটেল দরগাগেইট (০৮২১-৭১৭০৬৬)। হোটেল উর্মি (০৮২১-৭১৪৫৬৩)। জিন্দাবাজারে হোটেল মুন লাইট (০৮২১-৭১৪৮৫০)। তালতলায় গুলশান সেন্টার (০৮২১-৭১০০১৮) ইত্যাদি।

এসব হোটেলে ৫শ' থেকে ৪ হাজার টাকায় রাত যাপনের ব্যবস্থা আছে।

27
Travel / Visit / Tour / পুঠিয়ায় বেড়ানো
« on: November 23, 2014, 05:30:34 PM »

মন্দিরের শহর পুঠিয়া। ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে দক্ষিণ পাশে অবস্থিত পুঠিয়া রাজবাড়ীর বিশাল চত্বরে রয়েছে বেশ কয়েকটি নজরকাড়া মন্দিরসহ আরো অনেক প্রাচীন স্থাপনা। একদিনের ভ্রমণ কর্মসূচীতে দেখে আসতে পারেন পুঠিয়ার এসব কিছু।

 

                                                                                      শিব মন্দির

ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক থেকে সরু সড়কে সামান্য দক্ষিণে ঢুকলেই পুঠিয়া রাজবাড়ির প্রবেশপথ। এখানে পুকুর পাড়ে বিশাল আকারের মন্দিরের নাম শিব মন্দির। পুঠিয়ার রাণী ভুবন মোহিনী দেবী ১৮২৩ সালে এটি প্রতিষ্ঠা করেন।

চারদিকে ৬৫ ফুট দীর্ঘ এই শিব মন্দির একটি উঁচু ভিতের উপরে নির্মিত। চার কোণায় চারটি আর কেন্দ্রে একটি রত্ন আছে। মন্দিরের দোতলায় একটি মাত্র কক্ষ আর চারপাশে দুই স্তরে বারান্দা। মূল কক্ষের ভিতরে আছে কষ্ঠি পাথরের বিশাল এক শিব লিঙ্গ।

এশিয়ার অন্যতম বড় শিব মন্দির হিসেবে খ্যাত এই স্থাপনার দেয়াল জুড়ে পৌরাণিক কাহিনী চিত্র খচিত।

পাশেই আছে গোল গম্বুজাকৃতির আরেকটি ছোট মন্দির। 


দোলমঞ্চ

শিব মন্দির ছাড়িয়ে একটু দক্ষিণে গেলেই চোখে পড়বে চারতলা বিশিষ্ট দোলমন্দির। দোলমঞ্চের আকারে মন্দিরটি ধাপে ধাপে উপরে উঠে গেছে। একদম উপরে আছে গম্বুজাকৃতির চূড়া। প্রত্যেক তলার চারপাশে টানা বারান্দা। ধরা হয় আনুমানিক নির্মাণকাল ঊনবিংশ শতাব্দির শেষ দশকে, নির্মাণ করেছিলেন পুঠিয়ার আরেক রাণী হেমন্ত কুমারী দেবী।

পুঠিয়া রাজবাড়ি

দোলমঞ্চের সামনের মাঠের দক্ষিণ প্রান্তে মুখোমুখী দাঁড়িয়ে থাকা বিশাল প্রাসাদ, পুঠিয়া রাজবাড়ি। রাণী হেমন্তকুমারী দেবীর শাশুড়ি মহারাণী শরৎসুন্দরী দেবীর সম্মানার্থে ১৮৯৫ সালে নির্মাণ করেন এ রাজবাড়ি।

বর্তমানে লষ্করপুর ডিগ্রী কলেজের একাডেমিক ভবন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে এই প্রাসাদ। ভবনের পূবদিকে আছে রাণী পুকুর। রাজবাড়ির সম্ভ্রান্ত মহিলাদের গোসলের জন্য রাণী পুকুরের দেয়াল ঘেরা সান বাঁধানো ঘাটের অস্তিত্ব এখনো দেখা যায়।



গোবিন্দ মন্দির

পুঠিয়া রাজবাড়ির প্রাচীরের ভেতরে পোড়ামাটির অলঙ্করণে সমৃদ্ধ একটি মন্দির। বর্গাকারে নির্মিত এ মন্দিরের প্রত্যেক পাশের দৈর্ঘ্য ১৪.৬ মিটার। কেন্দ্রীয় কক্ষ ছাড়াও মন্দিরের চারপাশে বার্গাকার চারটি কক্ষ আছে।

২৫০ বছর পুরানো বলে প্রচলিত থাকলেও এর গায়ে চিত্রফলক দেখে ধারণা করা হয়, স্থাপনাটি ঊনবিংশ শতাব্দিতে নির্মিত।

বড় আহ্নিক মন্দির

পুঠিয়া রাজবাড়ির পশ্চিম পাশে দিঘি। এর পশ্চিম তীরেই রয়েছে পূর্ব মূখী বড় আহ্নিক মন্দির। কারুকায করা মন্দিরের নির্মাণ শৈলী বেশ আকর্ষণীয়।

গোপাল মন্দির

বড় আহ্নিক মন্দিরের পাশে দক্ষিণমূখী অবস্থানে আছে গোপাল মন্দির। ১৬.৩০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০.৪৭ মিটার প্রস্থের এ মন্দিরের উচ্চতা প্রায় ৮ মিটার।



যাতায়াত

রাজধানী ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী যে কোন বাসে পুঠিয়া যাওয়া যায়। রাজশাহী থেকে পুঠিয়ার দূরত্ব প্রায় ৩০ কিলোমিটার। রাজশাহীর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে নাটোরগামী বাসে চড়ে আসতে হবে পুঠিয়া। ভাড়া ৩৫-৪০ টাকা।

ঢাকা থেকে সড়ক, রেল ও আকাশপথে রাজশাহী যাওয়া যায়।

ঢাকার কল্যাণপুর ও গাবতলী থেকে গ্রীন লাইন ও দেশ ট্রাভেলসের এসি বাস যায় রাজশাহী। ভাড়া ৮শ’ থেকে ১ হাজার টাকা। এছাড়া ঢাকার গাবতলী ও কল্যাণপুর থেকে শ্যমলি পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, ন্যাশনাল ট্রাভেলস, বাবলু এন্টারপ্রাইজ প্রভৃতি পরিবহন প্রতিষ্ঠানের বাস যায় রাজশাহী। ভাড়া ৩শ’ থেকে সাড়ে ৩শ’ টাকা।

ঢাকার কমলাপুর থেকে রোববার ছাড়া সপ্তাহের প্রতিদিন দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে রাজশাহীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় আন্তঃনগর ট্রেন সিল্কসিটি এক্সপ্রেস এবং মঙ্গলবার ছাড়া প্রতিদিন রাত ১১টা ১০ মিনিটে ছেড়ে যায় আন্তঃনগর ট্রেন পদ্মা এক্সপ্রেস।

ভাড়া এসি বার্থ ৯৪০ টাকা, এসি সিট ৬৩০ টাকা, স্নিগ্ধা ৫২৫ টাকা, শোভন চেয়ার ৩১৫ টাকা।



থাকার জায়গা

পুঠিয়ায় পর্যটকদের থাকার ভালো ব্যবস্থা নেই। তাই রাত কাটানোর জন্য রাজশাহী ভালো জায়গা। এ শহরে থাকার জন্য বিভিন্ন মানের বেশ কিছু হোটেল আছে। রুম হিসেবে ভাড়া ২শ’ থেকে ৪ হাজার টাকা।

রাজশাহী চিড়িয়াখানার সামনে পর্যটন মোটেল, সাহেব বাজারে হোটেল মুক্তা ইন্টারন্যাশনাল, বিন্দুরমোড় রেল গেইটে হোটেল ডালাস ইন্টারন্যাশনাল, গণকপাড়ায় হোটেল নাইস ইন্টারন্যাশনাল, মালোপাড়ায় হোটেল সুকর্ণা ইন্টারন্যাশনাল, সাবেব বাজারে হামিদিয়া গ্রান্ড হোটেল, শিরোইলে হকস্‌ ইন, লক্ষীপুর মোড়ে হোটেল গ্যালাক্সি, সাহেব বাজরে হোটেল নিউ টাউন ইন্টারন্যাশনাল।

28
Travel / Visit / Tour / ছুটিতে খাগড়াছড়ি
« on: November 23, 2014, 05:25:28 PM »

পার্বত্য চট্টগ্রামের ভ্রমণ স্বর্গ খাগড়াছড়ি। এই জেলায় ভ্রমণের জন্য অনেক জায়গা রয়েছে। ঈদের ছুটিতে তাই বেড়িয়ে আসতে পারেন পাহাড়ের ফাঁকে ফাঁকে।

বাংলাদেশের তিনটি পার্বত্য জেলার অন্যতম খাগড়াছড়ি। চট্টগ্রাম থেকে এই জেলা শহরের দূরত্ব প্রায় ১২২ কিলোমিটার। চারিদিকে পাহাড়ের মাঝে অনেকটা সমতলে এই শহর।   

খাগড়াছড়ির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ভ্রমণের জায়গা হল আলুটিলা পাহাড়। জেলা শহর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার পশ্চিমে মহাসড়কের পাশেই রয়েছে এই পাহাড়। প্রায় এক হাজার ফুট উঁচু পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়ালে পুরো খাগড়াছড়ি শহরকে পাখির চোখে দেখা যায়। এখান থেকে চেঙ্গি নদীকে দেখলে মনে হয়, সাপের মতো আঁকাবাঁকা হয়ে ছুটে চলেছে।



আলুটিলা পাহাড়ের আরেকটি আকর্ষণীয় জায়গা হল, প্রাচীন একটি গুহা। পাহাড়ের নীচে গুহার ভেতর দিয়ে বয়ে চলছে শীতল জলধারা।

শহর থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার দূরে মনোরম এক প্রাকৃতিক ঝরনা রিছং। এটি আলুটিলা ছেড়ে সামনে আরও তিন কিলোমিটার দূরে। পাহাড়ের গা বেয়ে নামতে হয় এ ঝরনায়। বিশাল পাথরের একপাশ দিয়ে পানি বয়ে যায়।

খাগড়াছড়ি জেলাশহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণে সদর উপজেলার নুনছড়িতে উঁচু এক পাহাড়ের উপরে দেবতার পুকুর। এ পুকুরে উঠার পথ বেশ দুর্গম। শিশুদের নিয়ে এখানে বেড়াতে যাওয়া কষ্টকর।



খাগড়াছড়ি থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে মেঘের কোলে বেড়ানোর জায়গা সাজেক। জায়গাটি রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি থানার অন্তর্গত হলেও খাগড়াছড়ি থেকে যাওয়াই সহজ।

খাগড়াছড়ি থেকে পাহাড়ি পথ বেয়ে যেতে এ পথে দেখা যাবে কাসালং আর মাসালং নদী। বাঘাইহাট সেনা ক্যাম্পের সামনে কাসালং এবং মাসালং নদী একত্রে এসে মিলেছে। সাজেকে যেতে হলে বাঘাইহাট ক্যাম্প থেকে অনুমতি নিয়ে যেতে হয়। এখান থেকে পাহাড়ি পথগুলোও বেশ দুর্গম।

সাজেক যাওয়ার পথে আছে মাসালং বাজার। ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর মানুষেরাই মূলত এ বাজারে জমায়েত হন। পাহাড়ি পথ বেয়ে মাথা বোঝাই বাজার সদাই নিয়ে বাড়ি ফেরেন তারা।


একেবারে সাজেকের পাহাড় চূড়ায় আছে আদিবাসীদের গ্রাম কংলাকপাড়া। এ গ্রামে উঠলে চারপাশে দেখা যায় দূরের পাহাড়ের সৌন্দর্য। খাগড়াছড়ি শহর থেকে চাঁদের গাড়ি (পুরানো জিপ) ভাড়া করে যেতে হবে সাজেক। সকালে গিয়ে বিকেলের মধ্যেই ফিরতে হয়। রিজার্ভ চাঁদের গাড়ির ভাড়া সাধারণত আড়াই হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা।

কীভাবে যাবেন

ঢাকার কমলাপুর থেকে বিআরটিসির এসি বাস যায় খাগড়াছড়ি। ভাড়া ৭শ’ টাকা। এছাড়া ফকিরাপুল ও কমলাপুর থেকে এস আলম, সৌদিয়া, ঈগল, শ্যামলী ও শান্তি পরিবহনের নন এসি বাসও চলাচল করে এ পথে। ভাড়া ৫২০ টাকা।



                                                       পাহাড়ী ঝরনা রিসাং। ছবি: মুস্তাফিজ মামুন/ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম



কোথায় থাকবেন

খাগড়াছড়িতে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের মোটেল রয়েছে, ফোন ০৩৭১ ৬২০৮৪-৮৫। ঢাকার মহাখালীতে পর্যটনের প্রধান কার্যালয় থেকেও এ হোটেলে বুকিং দেওয়া যায়।

হোটেলের নন এসি দ্বৈত কক্ষে ভাড়া ১ হাজার ৩শ’ টাকা এবং এসি কক্ষের ভাড়া ২ হাজার ১শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা।

এছাড়াও খাগড়াছড়ি শহরে সাধারণ মানের কিছু হোটেল হল: হোটেল শৈল সুবর্ণা, হোটেল গাইরিং এবং হোটেল ফোর স্টার। এসব হোটেলে ৫শ’ থেকে দেড় হাজার টাকায় কক্ষ মিলবে।

29

কাছেধারে কোনো দেশে ঘুরতে গেলে পছন্দসই যে কয়টা দেশের নাম উঠে আসে সেগুলোর মধ্যে মালয়েশিয়া অন্যতম।


যাতায়াত

ঢাকা থেকে মালয়েশিয়া যেতে টিকিট কাটতে হবে ইউনাইটেড এয়ার, রিজেন্ট এয়ার ওয়েজ, বাংলাদেশ বিমান ও মালয়েশিয়ান এয়ারে। সময়ভেদে টিকেটের দামের কম-বেশি হয়।

যাওয়া-আসার টিকেট মিলিয়ে ইউনাইটেড এয়ার ও রিজেন্ট এয়ারওয়েজের টিকিটের দাম পড়বে ২২ হাজার ৫শ' থেকে ২৬ হাজার টাকা। বাংলাদেশ বিমানের টিকিট পাবেন ২৪ হাজার ৫শ' থেকে ৩০ হাজার টাকায়।

মালয়েশিয়ান এয়ারের টিকিটের দাম ২৭ হাজার থেকে ৩৬ হাজার ৫শ' টাকা।

ঢাকা থেকে কুয়ালালামপুর পৌঁছতে সময় লাগবে সাড়ে তিন ঘণ্টা। বাংলাদেশের সঙ্গে মালয়েশিয়ার সময়ে পার্থক্য ২ ঘণ্টা। তাই গভীর রাতে এয়ারপোর্টে পৌঁছানোর ঝামেলা এড়াতে রাতের বিমানে রওনা দেওয়াই উত্তম।

হোটেল

মালয়েশিয়ার সব হোটেলেই চেক ইন করার সময় দুপুর ১২টা। তাই সকালে কুয়ালালামপুর পৌঁছে হোটেল খুঁজতে বেরুলে পড়তে পারেন ঝামেলায়। তাই আগেই হোটেল বুকিং করে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।

অসংখ্য হোটেলের মধ্যে টাইমস স্কয়ার, পার্ক রয়্যাল, ফেডারেল ইন্টারন্যাশনাল, রয়্যাল বেনতান ইত্যাদি পর্যটকদের মধ্যে বেশি জনপ্রিয়।

টাইমস স্কয়ার ও পার্ক রয়্যালে সকালের বুফে নাস্তাসহ দিনপ্রতি খরচ পড়বে ১০ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত। আর ফেডারেল ইন্টারন্যাশনাল ও রয়্যাল বেনতানে ৬ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকার মধ্যেই থাকতে পারবেন।

পরিবার নিয়ে গেলে নিতে পারেন টাইমস স্কয়ারের স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্টগুলো। রান্না-বান্নাসহ সকল ঘরোয়া পরিবেশই পাওয়া যাবে এই অ্যাপার্টমেন্টগুলোতে। তবে দিনপ্রতি গুনতে হবে ১৬ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা।

এছাড়া ফেডারেল ইন্টারন্যাশনাল ও রয়্যাল বেনতানে পাবেন সর্বোচ্চ চারজনের প্যাকেজ, খরচ ১২ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা। তবে এই দুই প্যাকেজে নেই সকালের নাস্তার ব্যবস্থা।

ঘোরাঘুরি

মালয়েশিয়ায় আছে অসংখ্য দর্শনীয় স্থান। এর মধ্যে একটি হল কুয়ালামপুরের কাছেই পাহাঙ্গে অবস্থিত গেনটিন হিল রিসোর্ট।

ঠান্ডা আবহাওয়ার জন্য পরিচিত তিতিওয়াঙ্গসা পাহাড়ি অঞ্চলের এই রিসোর্টে পাবেন থিম পার্ক, কেবল কার, ক্যাসিনো ইত্যাদি।

কুয়ালালামপুরের মধ্যেই আছে টুইন টাওয়ার নামে খ্যাত প্যাট্রোনাস টাওয়ার। ১৯৯৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এটিই পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু টুইন টাওয়ার। দুই টাওয়ারের মাঝের ব্রিজকে বলা হয় স্কাই ব্রিজ। ৫০ রিঙ্গিত বা ১২শ' টাকার বিনিময়ে দর্শনার্থীরা উঠতে পারবেন এই স্কাইব্রিজে।

মালয়েশিয়া গিয়ে লাঙ্কাউই না গেলে হয়ত সমস্ত খরচই বৃথা। কুয়ালালামপুর থেকে ৪১৩ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এই সমুদ্র সৈকত অঞ্চল আন্দামান সমুদ্রের ১০৪টি দ্বীপের সমষ্টি। কি নেই এখানে, কেবল কার, ঝরনা, সমুদ্রের নিচ দিয়ে রাস্তা, ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট আরও কত কি।

একটু ভিন্ন স্বাদের জন্য একটি নৌকা ভাড়া করে চলে যেতে পারেন ম্যানগ্রোভ ফরেস্টের ভেতর। সেখানেও আছে বাদুরের গুহা, ঈগলের গুহা ইত্যাদি দর্শনীয় স্থান।

কুয়ালালামপুর থেকে ৩৫৫ কিলোমিটার দূরেই আছে আরেকটি পর্যটন এলাকা পেনাঙ্গ। এখানকার মূল আকর্ষণ কেবল ট্রেন। প্রাপ্তবয়ষ্কদের জন্য আট রিঙ্গিত আর ছোট ও বৃদ্ধদের জন্য চার রিঙ্গিতের বিনিময়ে এই ট্রেনে চড়ে যেতে পারবেন পেনাঙ্গ পর্বতে।

আর মালয়েশিয়ার ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে চলে যেতে পারেন মালাক্কা সিটি। কেনাকাটার জন্য যেতে পারেন প্যাভিলিয়ন, টাইমস স্কয়ার, বিবি প্লাজা, সানওয়ে পিরামিড মার্কেট ইত্যাদি শপিং মলগুলোতে।

পৃথিবীর সবগুলো ব্র্যান্ডের পণ্যই পাবেন এই মার্কেটগুলোয়। এছাড়া মালয়েশিয়ার স্থানীয় পণ্যগুলোও গুণগত মান সম্পন্ন, দামও ক্রয়সীমার মধ্যেই।

আর ইলেক্ট্রনিকস পণ্য কিনতে চাইলে অবশ্যই যেতে হবে ল-ইয়েট প্লাজা।

খাওয়া-দাওয়া

সবধরণের ফাস্টফুড চেইনের স্বাদ নিতে পারবেন মালয়েশিয়ায়। কমতি নেই স্থানীয় খাবারের। সকালের নাস্তায় দুই রিঙ্গিতের বিনিময়ে খেতে পারেন চানারুটি।

দুপরের খাবারে খেতে পারেন মিক্সড ফ্রাইড রাইস নাসিগরেঙ্গ, খরচ পড়বে সাত থেকে আট রিঙ্গিত।

এছাড়াও আছে পাকিস্তানি ও বাঙালি রেস্তোরা। পাবেন কাচ্চি বিরিয়ানি, তন্দুরি চিকেন, কাবাব ইত্যাদি।

২০ রিঙ্গিত বা ৫শ' টাকাতেই ভরপেট খেতে পারবেন এই রেস্তোরাগুলোয়।

ডেজার্ট হিসেবে বেছে নিতে পারেন সিক্রেট রেসিপির কেক।

30
Kidneys / About kidney
« on: November 23, 2014, 05:04:12 PM »
 মানবদেহের কিডনি নিয়ে মানুষের কৌতূহল যেমন আছে তেমনি কিডনি নিয়ে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠাও কম নয়। মহান স্রষ্টা মানবদেহের জন্য দু’টি কিডনি দিয়েছেন। যদি কারও একটি কিডনি অকেজো হয়ে যায় অথবা কোন কারণে ফেলে দিতে হয় তাহলে মাত্র একটি কিডনি নিয়েও মানুষ সুস্থভাবে জীবন যাপন করতে পারে। তাই দু’টি কিডনি মহান রাব্বুল আল-আমীনের অশেষ নেয়ামত। আর আপনি জানেন কি কিডনি আমাদের কি উপকার করে এবং কেমনভাবে উপকার করে।

এটা সত্যি সত্যি এক বিস্ময়কর সৃষ্টি। মানবদেহের প্রতিটি কিডনিতে রয়েছে এক মিলিয়ন থেকে দেড় মিলিয়ন বা ১০ লক্ষ থেকে ১৫ লক্ষ নেফ্রন। আর এই নেফ্রনকে বলা হয় কিডনির একক। এই নেফ্রনসমূহ অতিশয় সরু নলের মত। প্রতিটি নেফ্রনের দৈর্ঘ্য ৩ সেমি বা এক ইঞ্চির খানিকটা বেশি। এসব নেফ্রন যদি একটা একটা করে লম্বা করা যায় তাহলে এই নেফ্রন নামক নলের দীর্ঘ হবে কয়েক মাইল।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রতিটি কিডনির নেফ্রনের দৈর্ঘ্য হবে ৪৫ লক্ষ সেমি বা ২৮ মাইল। আর সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো কিডনির প্রধান কাজ হলো আমাদের শরীরের হার্ট যে রক্ত সরবরাহ করে তা কিডনির সরু নালীর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয় এবং কিডনিই আমাদের রক্তকে ফিল্টার করে আবার শরীরের বিভিন্ন স্থানে পাঠায়। আমরা কি কখনও ভেবে দেখেছি প্রতিনিয়ত শত শত লিটার রক্ত কিডনির সরু নেফ্রনের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
অথচ কোথাও বাধা প্রাপ্ত হচ্ছে না।

সবকিছু চলছে ঠিকঠাকভাবে। এমনকি কিডনির একটি সরু নালীও ছিঁড়ে যাচ্ছে না। এটা যদি কোন স্বাভাবিক সৃষ্টি হতো তা হলে নিশ্চয়ই অনবরত এই কিডনি ব্যবহার করা অসম্ভব হতো। শুধু তাই নয়, আমরা যত পানি অথবা ফ্লুইড গ্রহণ করি তাও কিডনির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয় এবং কিডনির নিসৃত তরল পদার্থই ইউরিন হিসাবে ব­াডারে জমা হয় এবং পরে ইউরিন হিসাবে নিসৃত হয়। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে মানবদেহের পাঁচটি ভাইটাল অঙ্গের মধ্যে কিডনি অন্যতম।

কোন কারণে যদি দু’টি কিডনিই অকেজো হয়ে পড়ে তবে জীবন বিপন্ন হবার আশংকা থাকে। তাই কিডনির সুস্থতা আমাদের অতি জরুরি। শুধু রক্ত ফিল্টার করা এবং ইউরিন নিঃসরণই নেফ্রনের কাজ নয়। এই নেফ্রন শরীরের বর্জও নিঃসরণ করে রক্তের ভলিউম, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, খনিজ লবণ নিয়ন্ত্রণসহ বহুবিধ কাজ করে।

Pages: 1 [2] 3 4 ... 22