Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Messages - ashraful.diss

Pages: 1 ... 7 8 [9] 10 11
121
জাহান্নামীদের খাদ্য-পানীয় এবং পোষাক-পরিচ্ছদ

জাহান্নামীদের খাদ্য হবে যাক্কুম এবং কাঁটাযুক্ত এক প্রকার গাছ। আর পানীয় হবে রক্ত-পুঁজ মিশ্রিত গরম দূর্গন্ধময় পানি। আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কুরআন মাজীদে ইরশাদ করেন, ‘তাদের জন্য খাদ্য থাকবে না কাঁটাযুক্ত ফল ব্যতীত, যা তাদেরকে পুষ্ট করবে না এবং তাদের ক্ষুধা নিবৃত্তি করবে না। [সূরা গাশিয়া: ৬-৭]

জাহান্নামীদের খাদ্য হিসাবে নির্ধারিত যাক্কুম সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই যাক্কূম বৃক্ষ হবে পাপীদের খাদ্য, গলিত তামার মত তাদের উদরে ফুটতে থাকবে ফুটন্ত পানির মত’। [সূরা দুখান: ৪৩-৪৬]

আর যাক্কুম-এর আকৃতি উল্লেখ করে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘আপ্যায়নের জন্য কি ইহাই শ্রেয় না যাক্কুম বৃক্ষ? যালিমদের জন্য আমি ইহা সৃষ্টি করেছি পরীক্ষাস্বরূপ, এই বৃক্ষ উদগত হয় জাহান্নামের তলদেশ হতে, ইহার মোচা যেন শয়তানের মাথা, তারা ইহা হতে ভক্ষণ করবে এবং উদর পূর্ণ করবে ইহা দ্বারা। তদুপরি তাদের জন্য থাকবে ফুটন্ত পানির মিশ্রণ। আর তাদের গন্তব্য হবে অবশ্যই প্রজ্জ্বলিত অগ্নির দিকে।[ সূরা ছাফফাত: ৬২-৬৮]

অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘অতঃপর হে বিভ্রান্ত অস্বীকারকারীরা! তোমরা অবশ্যই আহার করবে যাক্কুম বৃক্ষ হতে এবং উহা দ্বারা তোমরা উদর পূর্ণ করবে, পরে তোমরা পান করবে উহার উপর গরম পানি, আর পান করবে পিপাষিত উটের ন্যায়। ক্বিয়ামতের দিন ইহাই হবে তাদের আপ্যায়ন [সূরা ওয়াকিয়াহ: ৫১-৫৬]

আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘আমার নিকট আছে শৃংখল ও প্রজ্জ্বলিত অগ্নি, আর আছে এমন খাদ্য, যা গলায় আটকিয়ে যায় এবং মর্মন্তুদ শাস্তি’। [সূরা মুযযাম্মিল: ১২-১৩]

আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘এবং যাদেরকে (জাহান্নামী) পান করতে দেয়া হবে ফুটন্ত পানি যা তাদের নাড়িভূঁড়ি ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে দিবে। [সূরা মুহাম্মাদ: ১৫]

আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, ‘অতএব এই দিন সেথায় তার কোন সহৃদয় থাকবে না এবং কোন খাদ্য থাকবে না ক্ষত নিঃসৃত স্রাব ব্যতীত, যা অপরাধী ব্যতীত কেহ খাবে না’। [ সূরা হাক্কাহ: ৩৫-৩৭]

আল্লাহ আরো বলেন, ‘ইহা সীমালংঘনকারীদের জন্য। সুতরাং তারা আস্বাদন করুক ফুটন্ত পানি ও পুঁজ। আরও আছে এইরূপ বিভিন্ন ধরনের শাস্তি। [সূরা ছাদ: ৫৭-৫৮]

জাহান্নামীদের পানীয় হিসাবে আল্লাহ তা‘আলা আরো নির্ধারণ করেছেন গরম পানি। তিনি ইরশাদ করেন: ‘এবং যাদেরকে (জাহান্নামী) পান করতে দেয়া হবে ফুটন্ত পানি যা তাদের নাড়িভূঁড়ি ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে দিবে। [সূরা মুহাম্মাদ:১৫]

আল্লাহ অন্যত্র বলেন, ‘তারা পানীয় চাইলে তাদেরকে দেয়া হবে গলিত ধাতুর ন্যায় পানীয়, যা তাদের মুখমণ্ডল দগ্ধ করবে, ইহা নিকৃষ্ট পানীয় ও অগ্নি কত নিকৃষ্ট আশ্রয়। [ সূরা কাহফ: ২৯]

আল্লাহ অন্যত্র বলেন, ‘তাদের প্রত্যেকের জন্য পরিণামে জাহান্নাম রয়েছে এবং প্রত্যেককে পান করানো হবে গলিত পুঁজ, যা সে অতি কষ্টে গলাধঃকরণ করবে এবং উহা গলাধঃকরণ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। সর্বদিক হতে তার নিকট আসবে মৃত্যু যন্ত্রণা কিন্তু তার মৃত্যু ঘটবে না এবং সে কঠোর শাস্তি ভোগ করতেই থাকবে। [সূরা ইবরাহীম: ১৬-১৭]

অতএব, উল্লেখিত আয়াত সমূহ থেকে প্রতীয়মাণ হয় যে, জাহান্নামীদের পানীয় হিসাবে আল্লাহ তা‘আলা চার প্রকারের বস্তু নির্ধারণ করেছেন। যেমনঃ গরম পানি যার উত্তপ্ততা শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে, যার পরে অধিক গরম করা সম্ভব নয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তারা জাহান্নামের অগ্নি ও ফুটন্ত পানির মধ্যে ছুটাছুটি করবে। [সূরা আর-রাহমান: ৪৪]

আল্লাহ আরো বলেন, তাদের পান করানো হবে ফুটন্ত ঝর্ণা থেকে। [সূরা গাশিয়াহ: ৫]

আয়াতে তাপের শেষ পর্যায়কে বুঝানো হয়েছে যার পরে অধিক গরম করা সম্ভব নয়। জাহান্নামীদের শরীর হতে গড়িয়ে পড়া রক্ত পুঁজ মিশ্রিত গরম তরল পদার্থ। অথবা বলা হয়ে থাকে যেনাকারী মহিলাদের লজ্জাস্থান হতে দুর্গন্ধযুক্ত যা বের হয় তা।


122
জাহান্নামের প্রহরী

মহান আল্লাহ রাব্বুল ‘আলামীন নির্মমহৃদয়, কঠোরস্বভাব ফেরেশতাগণকে জাহান্নামের প্রহরী নিযুক্ত করেছেন যারা আল্লাহর আদেশ পালনে সদা প্রস্তুত থাকে, কখনোই তা অমান্য করে না। এ সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলার বাণী, ‘হে মু’মিনগণ তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা কর, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর, যাতে নিয়োজিত আছে নির্মমহৃদয়, কঠোরস্বভাব ফেরেশতাগণ, যারা অমান্য করে না আল্লাহ তাঁদেরকে যা আদেশ করেন তা পালনে। আর তাঁরা যা করতে আদিষ্ট হয় তাই পালন করে। [সূরা আত-তাহরীম: ৬]

আর জাহান্নামের প্রহরী হিসাবে নিয়োজিত ফেরেশতাগণের সংখ্যা ১৯ জন। আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেছেন: ‘আমি তাদেরকে নিক্ষেপ করব সাকার-এ। তুমি কি জান সাকার কি? উহা তাদেরকে জীবিত অবস্থায় রাখবে না এবং মৃত অবস্থায়ও ছেড়ে দেবে না। ইহা গাত্রচর্ম দগ্ধ করবে। সাকার-এর তত্ত্বাবধানে রয়েছে উনিশজন প্রহরী’।
[সূরা মুদ্দাছছির: ২৬-৩০]

আয়াতে উল্লেখিত সংখ্যা দ্বারা আল্লাহ তা‘আলা কাফিরদেরকে পরীক্ষায় ফেলেছেন। কারণ, তারা ধারণা করে যে, এই অল্প সংখ্যক ফেরেশতার শক্তির সাথে বিপুল পরিমাণ জাহান্নামীদের বিজয়লাভ সম্ভব। কিন্তু তারা জানেনা যে, একজন ফেরেশতার শক্তি দুনিয়ার সকল মানুষের চেয়েও বেশী। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘আমি ফেরেশতাগণকে জাহান্নামের প্রহরী নিযুক্ত করেছি, কাফিরদের পরীক্ষাস্বরূপই আমি তাদের এই সংখ্যা উল্লেখ করেছি যাতে কিতাবীদের দৃঢ় প্রত্যয় জন্মে, বিশ্বাসীদের বিশ্বাস বৃদ্ধি হয় এবং বিশ্বাসীরা ও কিতাবীগণ সন্দেহ পোষণ না করে’। [সূরা মুদ্দাছছির: ৩১]


123
জাহান্নামের জ্বালানী

আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা কর, যার ইন্ধন হবে মানুষ এবং পাথর, যাতে নিয়োজিত আছে নির্মমহৃদয়, কঠোরস্বভাব ফিরিশতাগণ, যারা অমান্য করেনা তা, যা আল্লাহ তাদেরকে আদেশ করেন। আর তারা যা করতে আদিষ্ট হয় তাই করে’। [সূরা আত-তাহরীম: ৬]

আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, ‘তোমরা এবং আল্লাহর পরিবর্তে তোমরা যাদের ইবাদত কর সেগুলি তো জাহান্নামের ইন্ধন; তোমরা সকলে উহাতে প্রবেশ করবে’। [সূরা আম্বিয়া: ৯৮]

মানুষ আল্লাহ তা‘আলাকে বাদ দিয়ে যে সকল ব্যক্তি বা বস্তুকে মা‘বুদ হিসাবে গ্রহণ করেছে, আল্লাহ তা‘আলা জাহান্নামের জ্বালানী হিসাবে মানুষ এবং পাথরের সাথে সে সকল মা‘বুদদেরকেও জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘তোমরা এবং আল্লাহর পরিবর্তে তোমরা যাদের ইবাদত কর সেগুলিতো জাহান্নামের ইন্ধন, তোমরা সকলে তাতে প্রবেশ করবে। যদি তারা ইলাহ হতো তবে তারা জাহান্নামে প্রবেশ করত না, তাদের সকলেই তাতে (জাহান্নামে) স্থায়ী হবে’। [সূরা আম্বিয়া: ৯৮-৯৯]

আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘আর বাম দিকের দল, কত হতভাগ্য বাম দিকের দল! তারা থাকবে তীব্র গরম হাওয়া এবং প্রচন্ড উত্তপ্ত পানিতে, আর প্রচন্ড কালো ধোঁয়ার ছাঁয়ায়, যা শীতলও নয়, সুখকরও নয়’ [সূরা ওয়াকি‘আহ: ৪১-৪৪]

অত্র আয়াত সমূহ থেকে প্রমাণিত হয় যে, আল্লাহ তা‘আলা ক্বিয়ামতের দিনের প্রচন্ড তাপ থেকে মানুষকে ঠান্ডা করবেন তিনটি বস্তু দ্বারা, তা হল: ১- পানি ২- বাতাস এবং ৩- ছাঁয়া, যার সামান্যটুকুও জাহান্নামীদেরকে দেয়া হবে না। আল্লাহ তা‘আলা জাহান্নামের আগুনের প্রখরতা উল্লেখ করে বলেন, ‘আমি তাকে নিক্ষেপ করব সাকার-এ, তুমি কি জান সাকার কি? উহা তাদেরকে জীবিতাবস্থায় রাখবে না এবং মৃত অবস্থায়ও ছেড়ে দেবে না, ইহা তো গাত্রচর্ম দগ্ধ করবে’ [সূরা মুদ্দাছছির: ২৬-২৯]

আর জাহান্নামের আগুনের তাপ কখনো প্রশমিত হবেনা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘অতঃপর তোমরা আস্বাদণ গ্রহণ কর, আমি তো তোমাদের শাস্তিই শুধু বৃদ্ধি করব’ [সূরা নাবা: ৩০]

তিনি অন্যত্র বলেন, ‘যখনই উহা (জাহান্নামের আগুন) স্তিমিত হবে আমি তখনই তাদের জন্য অগ্নিশিখা বৃদ্ধি করে দেব’ [সূরা বানী ইসরাঈল: ৯৭]

যার কারণে জাহান্নামীরা কখনো সামান্যটুকু বিশ্রামের অবকাশ পাবে না এবং তাদের থেকে শাস্তির কিছুই কমানো হবে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘সুতরাং তাদের শাস্তি লাঘব করা হবে না এবং তারা কোন সাহায্যপ্রাপ্ত হবে না।[সূরা বাক্বারহা: ৮৬]

নিশ্চয়ই ইহা তাদেরকে পরিবেষ্টন করে রাখবে দীর্ঘায়িত স্তম্ভসমূহে। [সূরা হুমাযাহ্: ১-৯]

124
জাহান্নাম বিষয়ক আলোচনা

পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ জাহান্নামে প্রবেশ করবে। জাহান্নামীদের সংখ্যার আধিক্য বর্ণনা করতে গিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, হাজারে নয়শত নিরানব্বই জন মানুষ জাহান্নামে প্রবেশ করবে। এর পরেও আল্লাহ তা‘আলা জাহান্নামীদেরকে বিশাল আকৃতির দেহ দান করবেন। যেমন- তাদের এক একটি দাঁত হবে উহুদ পাহাড়ের সমান, এক কাঁধ থেকে অপর কাঁধের দুরুত্ব একজন দ্রুতগামী অশ্বারোহীর তিন দিনের পথ, চামড়া হবে তিন দিনের পথ পরিমান মোটা, যা জাহান্নামীদের দেহ অবয়ব অধ্যায়ে আলোচনা করব ইন্‌শাআল্লাহ।

এতো বিশালাকৃতির হাজারে নয়শত নিরানব্বই জন মানুষ জাহান্নামে প্রবেশ করলেও তা পূর্ণ হবে না। শেষ পর্যন্ত আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নিজের পাঁ জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন। আল্লাহ তা‘আলা জাহান্নামকে বলবেন: ‘সেদিন আমি জাহান্নামকে জিজ্ঞেস করব, তুমি কি পূর্ণ হয়ে গেছ? জাহান্নাম বলবে, আরও কিছু আছে কি? [সূরা ক্বাফ: ৩০]

এই উত্তর শুনে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নিজ পাঁ জাহান্নামের মধ্যে প্রবেশ করাবেন। এ সম্পর্কে হাদীছে এসেছে, আনাস ইবনে মালেক (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ)বলেছেন, জাহান্নামে অনবরত (জ্বিন-মানুষ) কে নিক্ষেপ করা হবে। তখন জাহান্নাম বলতে থাকবে, আরো অধিক কিছু আছে কি? এভাবে ততক্ষণ পর্যন্ত বলতে থাকবে, যতক্ষণ না আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নিজ পাঁ প্রবেশ করাবেন। তখন জাহান্নামের একাংশ অপর অংশের সাথে মিলে যাবে এবং বলবে, তোমার মর্যাদা ও অনুগ্রহের কসম! যথেষ্ট হয়েছে,যথেষ্ট হয়েছে।

আরো বলা হয় যে, জাহান্নাম এসে পাপীদের দেখে একটি ভয়াবহ চিৎকার করবে। অন্য  হাদিসে এসেছে এই চিৎকার জদি জাহান্নাম আগে কখনো দেয়/দিতো তাহলে মহাপ্রলয়ের জন্য/কেয়ামতের তথা পুরো কায়নাত ধংসের জন্য সুধু এই চিৎকারই যথেষ্ট ছিলো। কারন জাহান্নাম তখন থাকবে ভয়াবহ হিংস্র ও খুধার্থ।এই দিনের জন্য তো জাহান্নামের সৃষ্টি।( আল্লাহু আকবার )


125
তিনটি বিষয় নিয়ে কখনো মানুষের সামনে কথা বলো না

• নিজের গুনাহ
• নিজের নেক আমল
• নিজের দুঃখ-কষ্ট

১.গুনাহর কথা বলা যাবে না। কারণ, হাদিসে এসেছে, গুনাহর কথা প্রকাশকারী মুজাহিরকে আল্লাহ্ কখনো মাফ করবেন না (তাওবাহ্ ব্যতীত)। কারণ, যে গুনাহ আল্লাহ ঢেকে রাখেন, সে সেই গুনাহের কথা উন্মুক্ত করে দেয় মানুষের কাছে। [বুখারি, আস-সহিহ: ৫৭২১]

এই ভুলটা আমরা অনেকেই করি। সাবধান হওয়া দরকার।

২.নেক আমলের কথা প্রকাশ করা উচিত নয়। কারণ, এতে রিয়া তথা লৌকিকতার প্রবল সম্ভাবনা থাকে। তাছাড়া আত্মপ্রীতি ও আত্মপূজার সম্ভাবনা তৈরি হয়। সালাফ তথা পূর্বসূরি নেককার ব্যক্তিগণ বলতেন, ‘তোমরা যেভাবে তোমাদের গুনাহগুলো ঢেকে রাখো, সেভাবে তোমাদের নেক আমলগুলোও ঢেকে রাখো।’ আমাদের কিছু ডিল থাকা দরকার শুধু নিজেদের এবং আল্লাহর মাঝে। আর কেউ জানবে না। জানার দরকার কী? গোপন আমলকে আল্লাহর কাছে উসিলা হিসেবে পেশ করলে বিভিন্ন সময় উপকার পাওয়া যায়। গুহায় আটকে পড়া সেই তিন ব্যক্তির কথা মনে পড়ে? তারা কিন্তু গোপন নেক আমলের উসিলা দিয়ে আল্লাহর কাছে দু‘আ করেছিলো এবং আল্লাহ তাদের দু‘আ কবুল করে বিপদ থেকে মুক্তি দিয়েছিলেন। [বুখারি, আস-সহিহ: ২৩৩৩; মুসলিম, আস-সহিহ: ২৭৪৩]

৩.দুঃখ-কষ্টের কথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে, কারণ দুঃখের কথা বললে দুঃখ অনেক সময় বাড়ে, কারণ সব শ্রোতা সমান নয়। অনেক শ্রোতাই উল্টো আতঙ্কিত করে তোলে (তবে, দুঃখ-কষ্ট শেয়ারের ফলাফলের ব্যাপারটি আপেক্ষিক; ব্যক্তিভেদে ভিন্ন ভিন্ন হওয়াটা স্বাভাবিক)। তবে, যদি সেই দুঃখের ব্যাপারটি নেতিবাচক কিছু হয়, তাহলে নিঃসন্দেহে তা বলা উচিত নয়। কারণ এমন অনেকেই আছে, যারা এসব বিষয় দিয়ে পরবর্তীতে ব্ল্যাকমেইল করে। ব্ল্যাকমেইল না করলেও, বাকি জীবন তার সাথে হিসেব করে কথা বলতে হয় এবং সমীহ করে চলতে হয়। ভয় কাজ করে, অসন্তুষ্ট হলে না জানি বলে দেয়! তবে, আমাদেরকে এমন কাজ করা থেকে বেঁচে থাকতে হবে, যেটি কারও সাথে শেয়ার করতে ভয় কাজ করবে। হাদিসে এসেছে, ‘‘গুনাহ সেটিই, যেটি তোমার মাঝে সন্দেহ তৈরি করে এবং যেটির ব্যাপারে তুমি অপছন্দ করো যে, মানুষ সেটি জেনে ফেলুক।’’ [মুসলিম, আস-সহিহ: ৬৬৮০]

সুতরাং, চুপ করা শিখতে হবে। যাবতীয় বিষয় আল্লাহর সাথে সুরাহা করার অভ্যাস করতে হবে। কুরআনুল কারিমে বলা হয়েছে—

ﺣَﺴْﺒُﻨَﺎ ﺍﻟﻠّٰﻪُ ﻭَﻧِﻌْﻢَ ﺍﻟْﻮَﻛِﻴْﻞُ

অর্থ: আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট, আর তিনি কতই না উত্তম কর্মবিধায়ক!


126
কিয়ামতের দিন মানুষের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সাক্ষ্য দেবে

কিয়ামতের দিন মানুষের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবেঃ মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, “সেইদিন তাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে তাদের জিহ্বা, তাদের হাত ও তাদের পা তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে। সেদিন আল্লাহ তাদের প্রাপ্য প্রতিফল পুরোপুরি দেবেন এবং তারা জানতে পারবে যে, অল্লাহই সত্য, স্পষ্ট ব্যক্তকারী। (সুরা নুরঃ ২৪-২৫)

সুতরাং কেয়ামতের দিন আল্লাহর দরবারে শুধুমাত্র মুখ মানুষের গোনাহের সাক্ষ্য দেবে না, বরং আল্লাহর অনুমতি নিয়ে প্রত্যেক অপরাধীর অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও দুনিয়ায় তাদের কৃতকর্মের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে। তখন অপরাধীদের মনে হবে, যেন তাদের শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ তাদের কৃতকর্মকে রেকর্ড করে রেখেছিল- যা এখন আল্লাহর নির্দেশে ফাঁস করে দিচ্ছে। ঐ দিন মানুষ নিজের হাতে আমলনামা দেখে এবং পাল্লা দিয়ে ওজন করার পরও অনেকে কৃতকর্ম অস্বীকার করে বসবে।

তারা বলতে থাকবে- আমরা এই এই কাজ করিনি। ফেরশতারা কমবেশি বা ভুল করে লিখে রেখেছে। তখন আল্লাহ তায়ালা তাদের মুখ বন্ধ করে দেবেন। তাদের ইচ্ছাধীন বাকশক্তির বদলে তাদের জিহ্বা, হাত এবং পা কে কথা বলার শক্তি দিবেন। তখন জিহ্বা তার কৃতকর্মের সাক্ষ্য দিয়ে বলবে, হে আল্লাহ! সে আমার দ্বারা অমুককে গালি দিয়েছে, এই এই মিথ্যা বলেছে। এমনিভাবে হাত সাক্ষ্য দেবে- সে আমার দ্বারা অন্যায়ভাবে অমুককে প্রহার করেছে, আমার দ্বারা এই খারাপ কাজ করেছে। পা সাক্ষ্য দেবে- এ আমার দ্বারা এই এই খারাপ কাজ করেছে। এটাই কোরআনে কারিমে বলা হয়েছে।

আল্লাহ তায়ালা বলেন, “সেইদিন আমি তাদের মুখের উপর মোহর মেরে দেব, আর তাদের হাত আমার সাথে কথা বলবে এবং তাদের পা তাদের কৃতকর্মের সাক্ষ্য দেবে”। (সুরা ইয়াসিনঃ ৬৫)

মহান আল্লাহ তায়ালা আরও বলেন, “তারা যখন জাহান্নামের কাছে পৌঁছাবে, তখন তাদের কান, চক্ষু ও ত্বক তাদের কর্ম সম্পর্কে সাক্ষ্য দেবে। তারা তাদের ত্বককে বলবে, তোমরা আমাদের বিপক্ষে সাক্ষ্য দিলে কেন? তারা বলবে, যে আল্লাহ সব কিছুকে বাকশক্তি দিয়েছেন, তিনি আমাদেরকেও বাকশক্তি দিয়েছেন। তিনিই তোমাদেরকে প্রথমবার সৃষ্টি করেছেন এবং তোমরা তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে”। (সুরা ফুসসিলাতঃ ২০-২১)

সুতরাং দুনিয়ায় কিছু করার আগে মানুষের মনে কিয়ামতের দিনের কথা মনে রাখা দরকার। সাবধান! হে মুসলিম সাবধান। ইয়া রব্বুল আলামিন! দয়া করে কিয়ামতের দিন আমাদিগকে তুমি লাঞ্ছিত, অপমানিত করো না। (আমিন)

127
প্রিয়নবীজী (সাঃ) এর বদান্যতা

নবীজী (সা.) এর প্রিয় সাহাবী হযরত জাবের রাযি. এর ঘটনা। তাঁর সাথে নবীজীর বিশেষ সম্পর্ক ছিল। গাযওয়ায়ে বনীল মুসতালেক থেকে ফিরে আসার সময় তাঁর রুগ্ন উট চলতে চলতে থেমে পড়ছিল । খুব ধীরপদে পথ চলছে। তাকে দ্রুত হাঁকানাের চেষ্টায় কমতি ছিল না। কিন্তু ক্লান্ত শ্রান্ত উটটি আর পারছে না। কাফেলার সবাই আগে চলে যাচ্ছে আর তিনি পিছনে থেকে যাচ্ছেন। বারবার তাকে পেছনে পড়তে দেখে হুযুর পাক (সা.)-তার কাছে গিয়ে বললেন, তুমি কাফেলার সাথে না চলে পেছনে কেন? উত্তরে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ (সা.) আমার এ উট চলতে পারছে না । আমি তাকে দ্রুত চালানাের খুব চেষ্টা করছি; কিন্তু সে পিছে থেকে যাচ্ছে।

হুযুর আকরাম (সা.) নিকটের এক ঝাড় থেকে একটি ডাল ভাঙলেন এবং তা দিয়ে মৃদু আঘাত করলেন। হুযুর পাক (সা.) ছড়ি মারতেই বাহন উটটি বাতাসে গতি ফিরে পেল। এমন কি সবাইকে ছেড়ে কাফেলার অগ্রভাগে অতিদ্রুত চলতে থাকে। প্রিয় নবীজী আবার তার কাছে গিয়ে বললেন, তােমার উট দেখছি খুব দ্রুতগামী। হযরত জাবের (রা.) বললেন, ইয়া হাবীবাল্লাহ এটা আপনার বরকত। হুজুর (সা.) পুনরায় বললেন, তােমার এমন সুন্দর উটটি আমার কাছে বিক্রি করবে? জাবের (রা.) বললেন, বেচার কি দরকার আপনার পছন্দ হলে আমার পক্ষ থেকে হাদিয়া গ্রহণ করুন।

নবীজী বললেন, হাদিয়া হিসেবে নয় আমি মূল্য দিয়ে কিনতে চাই। বেচতে চাইলে বেচতে পার। হযরত জাবের (রা.) বললন, কিনতে চাইলে আপনার যা কিছু মনে চায় দাম ধরে নিয়ে নিন। নবীজী বললেন, তা হয় না তুমিই দাম বলে দাও কত দামে বিক্রি করবে। জাবের (রা.) বললেন এক আউকিয়া রূপার বিনিময়ে বিক্রি করতে চাই “আনুমানিক চল্লিশ দিরহাম সমপরিমাণ হবে।

নবীজী বললেন, তুমি বেশ দাম হেকেছাে তা দিয়ে হৃষ্ট পুষ্ট বড় উট কেনা যায়। হযরত জাবের (রা.) বললেন, ইয়া রসূলুল্লাহ আপনি যে দামে মন চায় নিয়ে নিন। প্রিয় রাসুল (সা.) বললেন, ঠিক আছে আমি এক আউকিয়া দিয়ে বাকিতে ক্রয় করলাম, মদীনায় গিয়ে তােমার মূল্য পরিশােধ করবাে। এরপর উট থেকে নেমে পড়লেন হযরত জাবের (রা.)। নবীজী (সা.) জিজ্ঞেস করলেন, নামলে কেন? জাবের (রা.) বললেন এটা তাে আপনি কিনে নিয়েছেন এখন আপনার উট । প্রিয় নবীজী বললেন, তুমি কি মদীনা পর্যন্ত হেঁটে যাবে? আচ্ছা ঠিক আছে মদীনা পর্যন্ত তুমি উটের পিঠে চড়ে যাও; মদীনায় গিয়ে তােমার উটের মূল্য পরিশােধ করে তােমার থেকে উট বুঝে নেব।

মদীনায় পৌছে হযরত জাবের (রাযি.) নবীজী (সা.)-এর নিকট উটটি পাঠিয়ে দিলেন। কিন্তু প্রিয় হাবীব (সা.) উটটিও তাকে ফেরত দিলেন এবং উটের মূল্যও পরিশােধ করে দিলেন। অর্থাৎ এক আউকিয়া রূপা তাঁকে দিয়ে দেন। মূলত এটা ছিল এক বাহানা মাত্র। প্রিয় নবীজী সখ্যতাভাব বজায় রাখার তা’লীম উম্মতের জন্য উপস্থাপন করলেন।

128
মুআবিয়া (রাঃ) এর তাহাজ্জুদ নামায ।

হযরত মুআবিয়া (রা.)-এর অভ্যাস ছিল, তিনি দৈনন্দিন নিয়মিত ঘুম থেকে উঠে তাহাজ্জুদ নামায আদায় করতেন। এক রাতে গভীর ঘুমে চোখ খােলেনি এমন কি তাহাজ্জুদের ওয়াক্ত শেষ হয়ে গেল। ইতিপূর্বে কখনও তাহাজ্জুদ ছুটেনি। প্রথমবারের মত তাহাজ্জুদ নামায ছুটে যাওয়ায় সাংঘাতিক ব্যথিত ও লজ্জিত হলেন। দুশ্চিন্তা ও পেরেশানীতে সারাদিন কাঁদলেন। শুধু আফসােস করে বলতে লাগলেন হে আল্লাহ! আজ আমার তাহাজ্জুদ ছুটে গেছে।

পরের রাত তাহাজ্জুদের ওয়াক্তে এক ব্যক্তি এসে তাঁকে তাহাজ্জুদের জন্য জাগাতে আরম্ভ করল। হযরত মুআবিয়া (রা.) ঝটপট উঠে আগন্তুক ব্যক্তিটিকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কে? এখানে কিভাবে এসেছেন? উত্তরে সে বলল আমি ইবলিস শয়তান। হযরত মুআবিয়া বলেন, তােমার কাজ মানুষকে গাফেল রাখা, নামাযের জন্য উঠিয়ে তােমার লাভ কি? শয়তান বলল প্রসঙ্গ বাদ দিন জলদি গিয়ে তাহাজ্জুদ আদায় করে আপনার কাজে লেগে যান।

মুআবিয়া (রা.) বললেন, আগে তােমাকে বলতে হবে কারণটা কি? কেন আমাকে জাগিয়ে তুললে? যতক্ষণ পর্যন্ত বলবে না ততক্ষণ আমি তােমাকে ছাড়বাে না। বারবার পীড়াপীড়ি করার পর শয়তান বললাে, আমার কাজ তাে মূলত আপনি যা বলেছন তাই। গত রাতে আমি আপনাকে এমন অলসতা দিয়েছি যে আপনার তাহাজ্জুদ ছুটে গেছে। আপনি তাহাজ্জুদ পড়তে পারেন নি। কিন্তু তাহাজ্জুদ ছুটে যাওয়ার পরিণতিতে আপনি সারাদিন আফসােস আর কান্নাকাটি করছেন।

এই রােনাজারিতে আপনার মর্তবা এমন বৃদ্ধি পেয়েছে যদি আপনি তাহাজ্জুদ পড়তেন তবে সে স্তরে উন্নীত হতে পারতেন না। এটা তাে আমার জন্য বড়ই লােকসানের কাজ। এজন্য আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি আপনাকে তাহাজ্জুদের জন্য জাগিয়ে দেব যাতে মর্তবা বুলন্দির রাস্তা পয়দা না হয়।

129
কবর ভয়াবহ এক ঘাঁটি

কবরকে আমরা ওয়েটিং রুম হিসেবে বুঝে নিতে পারি। ওয়েটিং রুমে যেমন মানুষ তার পরবর্তী অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারে, আরামের হবে কিংবা কষ্টের হবে। আরামের হলে হেসে খেলে সময় পার করে। কষ্টের হলে এক ঘণ্টা এক বছরের মতো মনে হয় তারপরও সময় যেতে চায় না। অনুরূপ প্রত্যেকের কবরে কবরবাসীকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে সে জান্নাতি না জাহান্নামি। জান্নাতি হলে সে বড় আরামে সময় পার করবে। আর জাহান্নামি হলে বড় কষ্টে সময় অতিবাহিত করবে। এ কবর এমন এক ঘাঁটি যেখানে সাহায্যের বা বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজন বলতে কেউই থাকবে না। শুধুই নেক আমল হবে তার সাথী। দুনিয়ার হায়াতে নামাজ, রোজা, হজ্জ, জাকাত, কোরআন তেলাওয়াতসহ ইত্যাদি নেক আমল তাকে আজাব থেকে রক্ষা করবে। মুনকির-নকির ফেরেস্তাদ্বয়ের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারলে কবর উত্তম ঘাঁটি।

আর উত্তর দিতে না পারলে ভয়াবহ ঘাঁটি। হজরত উসমান (রা.) যখন কোনো কবরের পাশে দাঁড়াতেন তখন এমনভাবে কাঁদতেন যে, নিজের দাড়ি মোবারক ভিজে যেত একবার হজরতকে জিজ্ঞাসা করা হলো আপনি জান্নাত ও জাহান্নাম স্মরণ করে এত কাঁদেন না, যতটুকু কাঁদেন কবর দেখে, এর কারণ কী? তিনি বললেন, রসুল (সা.) বলেছেন, কবর হচ্ছে আখেরাতের প্রথম ঘাঁটি। এখানে যদি কেউ রক্ষা পেয়ে যায় তাহলে পরবর্তী সব ঘাঁটি তার জন্য সহজ হয়ে যায়। আর এখানে কেউ যদি রক্ষা না পায় তাহলে পরবর্তী সব ঘাঁটি তার জন্য খুব কঠিন হয়ে যায়। তিনি আরও বললেন, রসুল (সা.) বলেছেন, মেরাজের রজনীতে আমি যত ভয়াবহ দৃশ্য দেখেছি তার মধ্যে কবরের আজাবই হচ্ছে সবচেয়ে ভয়াবহ। (তিরমিজি শরিফ, হাদিস নং-২৩০৮)।

প্রিয় পাঠক! বেনামাজির কবরে কী ধরনের আজাব হবে এ সম্পর্কে হাদিসে আছে, বেনামাজির কবরে তিন ধরনের শাস্তি হবে : ১. কবর তার জন্য এমন সংকীর্ণ হবে যে, এক পাশের বুকের হাড় আরেক পাশে ঢুকে যাবে। ২. তার কবরে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হবে। ৩. তার কবরে এমন একটি সাপ নিযুক্ত করা হবে যার চক্ষু হবে আগুনের। আর নখগুলো হবে লোহার। তার প্রত্যেকটি নখ লম্বা হবে একদিনের দূরত্বের পথ। সাপের আওয়াজ হবে বজ্রের ন্যায় বিকট। সাপ ওই বেনামাজিকে বলতে থাকবে ‘আমাকে আমার রব তোর ওপর নিযুক্ত করেছেন যাতে ফজরের নামাজ নষ্ট করার কারণে সূর্যোদয় পর্যন্ত তোকে দংশন করতে থাকি। জোহরের নামাজ নষ্ট করার কারণে আসর পর্যন্ত দংশন করতে থাকি। আসর নামাজ নষ্ট করার কারণে মাগরিব পর্যন্ত। আর মাগরিব নামাজ নষ্ট করার কারণে এশা পর্যন্ত।

আর এশার নামাজ নষ্ট করার কারণে ফজর পর্যন্ত তোকে দংশন করতে থাকি। এ সাপ যখনই তাকে একবার দংশন করবে তখনই সে ৭০ হাত মাটির নিচে ঢুকে যাবে (উঠিয়ে আবার দংশন করবে) এভাবে কেয়ামত পর্যন্ত আজাব হতে থাকবে। নেক্কার ও বদকারের কবরের অবস্থা একটি দীর্ঘ হাদিসে এসেছে, হজরত বারা ইবনে আজিব (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা.) বলেছেন, মুমিন ব্যক্তির কবরে দুজন ফেরেশতা আসে ও তাঁকে বসায়। তারপর তাকে জিজ্ঞাসা করে, তোমার রব কে? সে উত্তর দেবে, আমার রব আল্লাহ। তারা তাকে জিজ্ঞাসা করে তোমার দীন কী? সে উত্তরে বলবে, আমার দীন হচ্ছে ইসলাম। তারা এবার তাকে জিজ্ঞাসা করে, ওই ব্যক্তি কে, যাকে তোমাদের কাছে পাঠানো হয়েছিল? সে উত্তর দেবে ইনি হচ্ছেন আমাদের রসুল (সা.)। তারা এবার তাকে জিজ্ঞাসা করবে (এ উত্তরগুলো) তুমি কীভাবে জানলে? সে বলবে আমি আল্লাহর কিতাব থেকে জেনেছি এবং তাঁর ওপর ইমান এনেছি।

তখন রসুল (সা.) বলেন, এটাই হচ্ছে আল্লাহতায়ালার ওই বাণীর মর্ম, যেখানে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ মুমিনদের দৃঢ় বাক্যের ওপর দৃঢ় রাখেন পার্থিব জীবনে ও আখেরাতে’ রসুল (সা.) বলেন, তখনই আসমান থেকে এক ঘোষণাকারী ডাক দিয়ে বলবেন, আমার বান্দা সত্য বলেছে। সুতরাং তাকে জান্নাতের বিছানা বিছিয়ে দাও। তাকে জান্নাতের পোশাক পরিয়ে দাও এবং তার দিকে জান্নাতের দরজা খুলে দাও। তখন তার জন্য জান্নাতের দরজা খুলে দেওয়া হয়। তার কাছে জান্নাতের শান্তি ও সুঘ্রাণ আসতে থাকে। কবরকে তার দৃষ্টিসীমা পর্যন্ত প্রশস্ত করে দেওয়া হয়।

প্রিয় পাঠক! চলুন, আমরা সবাই কবরের আজাব থেকে বাঁচার উপায় কী? তা জেনে আমলে বাস্তবায়িত করি। হাদিসে কবরের আজাব থেকে বাঁচার কয়েকটা আমলের কথা উল্লেখ আছে, সেখান থেকে এখানে আমি মাত্র দুটি উল্লেখ করছি। (১) রসুল (সা.) বলেছেন, সূরা মূলক কবরের আজাব থেকে রক্ষাকারী। যে ব্যক্তি এ সূরা পাঠ করবে, এ সূরা তাকে কবরের আজাব থেকে রক্ষা করবে। (কুরতুবি) রসুল (সা.) নিয়মিত রাতে ঘুমানোর আগে সূরা মূলক তেলাওয়াত করতেন। (২) কবরে আলো পাওয়ার আমল হলো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ। হাদিসে আছে ‘নামাজ নূর বা আলো’ কবরে ও হাশরের ময়দানের আলো হবে নামাজ। আল্লাহতায়ালা আমাদের কবরের আজাব থেকে রক্ষা করুন। আমিন!


130
হৃদয়ের ব্যাকুলতার মহা পুরস্কার

বিখ্যাত মুহাদ্দিস হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারকের (রহ.) ইন্তেকালের পর জনৈক ব্যক্তি স্বপ্নে জিজ্ঞেস করলেন হযরত কেমন আছেন? উত্তরে বললেন, আল্লাহ তা’আলার অনুগ্রহ পূর্বক মাগফিরাত দান করেছেন। অনুপযােগী এ বান্দাকে মর্যাদার আসনে স্থান দিয়েছেন; কিন্তু আমার প্রতিবেশী সাধারণ কামারের মর্তবা অনেক উন্নত।

স্বপ্নদ্রষ্টা লােকটি অবাক ভাবনায় হাবুডুবু খেতে লাগল। কামার লােকটি কেমন ছিলেন? বিশেষ কী আমল তিনি করতেন? যার ওছিলায় মহান প্রভু তাকে এত উঁচু মাকাম দান করলেন, যা খ্যাতিমানবুযুর্গ মুহাদ্দিস যামানার সেরা ওয়ারিসুন্নবী আবদুল্লাহ বিন মুবারক ঈর্ষান্বিত হয়ে ব্যক্ত করলেন।

সুতরাং অনুসন্ধানে বেরিয়ে পড়লেন। জানা দরকার কোন আমলে তিনি ছাড়িয়ে গেছেন শ্রেষ্ঠ বুযুর্গ আবদুল্লাহ ইবনে মুবারককে এবং কেমন ছিলেন ভাগ্যবান সেই কামার? হযরত আব্দুল্লাহ বিন মুবারকের মহল্লায় পৌঁছে জিজ্ঞেস করলেন স্বাপ্নিক, এখানে কোন কামার ছিলেন যার ইন্তেকাল হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা সামনের বাড়িটি দেখিয়ে বললেন এই বাড়িটি তাঁর। কিছুদিন পূর্বে তিনি ইন্তেকাল করেছেন।

অতঃপর সেখানে গিয়ে জীবিত স্ত্রীর কাছে লোকটি তার স্বপ্নের কথা ব্যক্ত করে জানতে চাইলেন আপনার স্বামী কী আমল করতেন! যদ্দরুন তিনি হযরত আব্দুল্লাহ বিন মুবারকের মর্তবাকে অতিক্রম করলেন? কামারের স্ত্রী উত্তর দিলেন, আমার স্বামী বিশেষ কোন আমল করেন নি, সারাদিন লোহা-লক্কর কাটা ও নির্মাণে হাড়ভাঙ্গা মেহনত করতেন। তবে তার মধ্যে দুটি জিনিস আমি লক্ষ্য করেছি,

এক. কাজে ব্যস্ত থাকা অবস্থায় আযানের আল্লাহু আকবার ধ্বনি শুনতেই কাজ বন্ধ করে দিতেন।এমনকি হাতুড়ী উঁচু করে লোহায় আঘাত হানবেন এমতাবস্থায় আযানের আওয়ায কানে আসতেই উদ্দত হাতুড়ী পিছনে ছুড়ে নামাযের প্রস্তুতি নিতেন।
এটা তার পছন্দ ছিল না যে আযান শুনে একটি আঘাত লোহায় করবেন।

দুই. আর একটি জিনিস দেখেছি যখন বাড়ীর ছাদে হযরত আব্দুল্লাহ বিন মুবারক কে সারারাত নামাযে মশগুল দেখতেন তখন আফসোসের দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ফরিয়াদ করতেন আমার স্বামী। হায়! যদি আল্লাহ তাআলা আমাকে সুযোগ দান করতেন তবে আমিও ইবাদতে মগ্ন হতাম। নেক বখত কামারের বিবির বিবরণ শুনে লোকটির বুঝতে বাকি রইলো না যে, এই আফসোস আল্লাহ পাক এমনভাবে কবুল করেছেন যে, তাতে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারকের চেয়ে উচু মাকাম দান করেছেন।

মুফতি তাকী উসমানীর আব্বা মুফতী মুহাম্মাদ শফী সাহেব (রহ.) প্রায়ই বলতেন বিরল আফসোস’ যা কখনও মানুষকে পৌছে দেয় বহুদূর। এ জন্য যখন কারও সম্পর্কে শোন যে, অমুক ব্যক্তি নেক আমল করে তবে ঐ নেক আমলের ব্যাপারে মনের মধ্যে লোভ ও ব্যাকুলতা সৃষ্টি হওয়া উচিত। আল্লাহ আমাদের সবাইকে আমলের জিন্দেগী দান করুন। আমীন!

131
খুব সুন্দর একটি ইসলামিক শিক্ষণীয় গল্প

ফোরাত নদীর তীরে একদা এক বৃদ্ধ লোক খুব দ্রুত অযু করলেন। এত দ্রুত অযু করলেন যে, তার অযুই হল না। অতঃপর পূর্বের মত তাড়াহুড়া করেই নামায আদায় করলেন। যার দরুণ তার নামাযে ‘খুসু’, ‘খুযু’ কিছুই উপস্থিত ছিলনা। বৃদ্ধের এ অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছিলেন নবী দুলাল হযরত হাসান ও হোসাইন রা. কিন্তু তারা উভয়েই অস্থির হয়ে ভাবছিলেন যে, এ বৃদ্ধ লোকের ভুলগুলো কিভাবে শুধরে দেয়া যায়! কোন বেয়াদবি হয়ে যায় কিনা! তখন তারা খুব চমৎকার বিনয়ীর পন্থা অবলম্বন করলেন। যখন বৃদ্ধ লোকটির নামাজ শেষ হল তখন তারা বিনয়ের শুরে তাকে বললেন জনাব! আপনি আমাদেরকে একটু সময় দিবেন। বৃদ্ধ সম্মতি প্রকাশ করলে তারা বলল যে- আমরা ওযু করব এবং নামায আদায় করব। আপনি দয়া করে আমাদের ভুলগুলো শুধরিয়ে দেবেন।

অতপর ইমাম হাসান ও  হোসাইন রা. উভয়েই সুন্নত তরিকায় এতমিনানের সাথে অজু করলেন এবং দু’রাকাত নামায আদায় করলেন। তাদের নামাযটি ছিল স্বয়ং রাসুলুল্লাহর নামাযের মত ‘খুসু’, ‘খুযুু’ সম্পন্ন। বৃদ্ধ লোকটি তখন নিজের ভুল গুলো বুঝতে পারলেন এবং তাদেরকে ধন্যবাদ জানালেন। বড়দের ভুল ধরার কত সুন্দর, চমৎকার বিনয়ি পদ্ধতি। সুবহান আল্লাহ, এ জন্যই তাদের এত মর্যাদা।

কারণ রাসূল সা. বলেছেন, আল্লাহর রাযি খুশির উদ্দেশ্যে যে বিনয়ী হয়, আল্লহ তায়ালা তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। দেওবন্দের অদূরে এক তফসিলদার বসবাস করত। তিনি শাইখুল হিন্দ মাহমুদুল হাসান রহ. এর সুনাম অনেক দিন যাবৎ শুনছিলেন এবং মনে তীব্র ইচ্ছা পোষন করছিলেন যে তার সাথে দেখা করবেন এবং উপদেশ নছীহত গ্রহন করবেন। সে উদ্দেশ্যে তিনি দেওবন্দে আসলেন। দুপুরে দেওবন্দ মাদ্রাসার নিকটবর্তী একটি মসজিদে অবস্থান করলেন। সারা দিন সফরের কারণে শরীর খুব ক্লান্ত ছিল। তাই তিনি মসজিদের গোসলখানায় গোসল করার ইচ্ছা করলেন।

কিন্তু সমস্যা হল সে গোসলখানায় পানি ছিল না, তাই তিনি পানি আনার জন্য লোক খোজছিলেন। এমন সময় তিনি মসজিদের ভিতরে অবস্থানরত এক বৃদ্ধ (শাইখুল হিন্দ) খুব কষ্টে তাকে ঠান্ডা পানির ব্যবস্থা করে দিলেন। গোসল শেষে তফসিলদার তাকে বললেন আমাকে মাহমুদুল হাসান সাহেবের কছে নিয়ে চল যিনি শাইখুল হিন্দ নামে পরিচিত। তখন বৃদ্ধ তাকে নিয়ে চলা শুরু করলেন। কিছু দূর গিয়ে বৃদ্ধ বললেন আপনি যেন কার নিকট যাবেন? প্রশ্ন শুনে তফসিলদার রেগে গেলেন যে আমি শাইখুল হিন্দ মুচকি হেসে বললেন ভাই শান্ত হোন।

আমাকে অনেকে“শাইখুল হিন্দ” বলে ডাকে! তখন তো তফসিলদার অবাক বনে গেলেন! এবং সাথে সাথে তার পায়ে পড়ে ক্ষমা চাওয়া শুরু করলেন। তখন তিনি বললেন কোনো সমস্যা নেই, আমিতো আপনার সেবা করেছি মাত্র। আপনি মেহমান, আর আমি মেজবান হিসেবে আপনার সেবা করেছি মাত্র।

এছাড়াও আপনি যদি মনে করেন যে, আমি জাতীর নেতা তাহলে আমি আমার কর্তব্য পালন করেছি মাত্র। কারন “সাইয়্যেদুল কওমি খদিমুহা”। এ সব বলার পরে তফসিলদার শান্ত হলেন। এত বড় আলেম, বুযুর্গ হয়েও এরুপ বিনয়ী ছিলেন তিনি। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে তাদের মত বিনয়ী হওয়ার তকওফীক দান করুণ। আমীন……!


132
সত্যিই কি মৃত্যুর ৪০দিন আগে মানুষ বুঝতে পারে যে তার মৃত্যু হবে?

সত্যিই কি মৃত্যুর ৪০দিন আগে মানুষ বুঝতে পারে যে তার মৃত্যু হবে? পবিত্র কুরআনুল কারীমে বর্ণিত হয়েছে, প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতেই হবে। {সুরা আলে ইমরান, আয়াত ১৮৫,}
 
আমরা আশরাফুল মাখলুকাত। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সৃষ্টির সেরা জিব হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। আমরাও একদিন পৃথিবী ছেড়ে চলে যাব। কেউ আগে যাবো কেউ পরে যাবো। কিন্তু সত্যিই কি মৃত্যুর ৪০ দিন আগে মানুষ বুঝতে পারে যে তার মৃত্যু হবে? এক ব্যক্তি হযরত আলী রাঃ এর নিকট উপস্থিত হয়ে আদবের সহিত বললেন, হে হযরত আলী (রাঃ) আমার এক বন্ধু ছিল যে গতকাল ইন্তেকাল করেছেন। কিন্তু কিছুদিন যাবত আমার সে বন্ধু আমাদের কাছে এসে এমন সব কথা বার্তা বলতেছিল যাতে করে তার কথাবার্তা শুনে মনে হচ্ছিল সে মারা যাবে। তাহলে কি মৃত্যুর আগে মানুষ কি বুঝতে পারে তার মৃত্যু সন্নিকটে। ব্যাস একথা বলার পর, হযরত আলী (রাঃ) লোকটিকে বললেন, হে আল্লাহর বান্দা, মনে রেখ আল্লাহ তায়ালা আলেমে মালাকুত, আলমে বেয়া, আলমে আরোয়াহ এর মাঝামাঝি স্থানে সমস্ত সৃষ্টি মানব জাতির জন্য মালাকুল রয়া রেখেছেন। যেটা মানুষের জন্য আগত সমস্ত বিপদ আপদ, বালা মসিবত ইত্যাদি সম্পর্কে আগে থেকেই মানুষকে সতর্ক করে জানিয়ে দেয়।

এই ইহকালিন জীবন শেষ হয়ে যাওয়াটা মানুষ মৃত্যু মনে করে। আসলে মৃত্যু এমন একটা জিনিস যেটা মানুষকে এক জীবন থেকে অন্য জীবনের দিকে নিয়ে যায়। আর একেই বলে মৃত্যু। জীবন শেষ হয়ে যাওয়াটাকে মৃত্যু বলে না। আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদেরকে অনেক অনেক ভালোবাসেন। তাই আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদেরকে মৃত্যুর ভয়কে দূর করার জন্য, এলহামি স্বপ্ন দেখায়। যাতে করে মানুষ বুঝতে পারে যে মৃত্যু অন্য একটি নতুন জীবন, এবং মৃত্যুর ভয় যেন তার মন থেকে কমে যায়। আল্লাহ তায়ালা মানুষকে এই সুযোগ দেন, যাতে করে মানুষ নিজেদেরকে শুধরাতে পারে। নিজের কৃত পাপ কর্মের জন্য আল্লাহর নিকট তওবা করতে পারে এবং মৃত্যুর আগে নিজের আত্নার মুক্তির জন্য ব্যবস্থা করতে পারে। যেমনি ভাবে কোন মানুষ যখন এক দেশ থেকে অন্য দেশে সফরে যায় এবং সফরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে। এবং মাল-সামান,সাজসরাঞ্জাম সব কিছুর ব্যাবস্থা করে রাখে, ঠিক তেমনি আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সুযোগ করে দেয় যাতে করে মানুষ বারজাখের জীবনে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারে।

এই কথা বলার পর লোকটি হযরত আলী রাঃ কে জিজ্ঞেস করলেন, হে হযরত আলী (রাঃ) সেই স্বপ্নে কি কি দেখা যায়? তখন হযরত আলী রাঃ বললেন, মানুষ ইন্তেকালের আগে স্বপ্ন দেখে সে সফর করতেছে, এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাচ্ছে। তার পোশাক পরিচ্ছদ সাদা হয়ে থাকে। আর দুনিয়ার জিন্দেগীতে যারা তার সঙ্গী ছিল, সেটা হতে পারে আত্নীয় স্বজন, পিতা মাতা যারা ইন্তেকাল করেছেন সেই স্বপ্ন দেখেন যে তারা তাকে নিতে এসেছেন এক দেশ থেকে অন্য দেশে। তখন  স্বপ্নে মৃত সেই আত্নীয় স্বজনরা বলে থাকে তোমাদের এই দেশের সফর শেষ হয়ে গিয়েছে, তোমাকে অন্য দেশে নিয়ে যাচ্ছি। মানুষ যখন স্বপ্ন দেখে তার মৃত আত্নীয় স্বজনের মধ্যে কেউ তাকে নিতে এসেছে এবং তারা তার সাথেই আছে। তখন মানুষের মনের দিক থেকে সাহস বেড়ে যায় এবং মানুষের মৃত্যুর ভয় কমে যায়। একথা শুনার পর হযরত আলী (রাঃ) কে বললেন, হে হযরত আলী (রাঃ) যদি কোন ব্যক্তি এধরনের স্বপ্ন দেখে থাকে, তাহলে সে কিভাবে বুঝতে পারবে যে, এই স্বপ্ন এলহামি স্বপ্ন নাকি শয়তানের পক্ষ থেকে ছিল।

তখন হযরত আলী রাঃ জবাবে বললেন, যখন এই ধরনের স্বপ্ন দেখবে,যদি স্বপ্ন দেখার পরে মনের মধ্যে ভয়-ভীতি কাজ করে দুশ্চিন্তা কাজ করে,তাহলে মনে করতে হবে সেই স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে ছিল। আর যদি স্বপ্ন দ্রষ্টা স্বপ্ন দেখার পর মনের মধ্যে শান্তি অনুভব করে এবং শান্তি আসে এবং মৃত্যুর জন্য তার ভয় নয়, মহব্বত পয়দা হয়,তাহলে মনে করবে সেই স্বপ্ন রহমানি স্বপ্ন। আল্লাহ রব্বুল আলামীন তার হাবিবের উছিলায় অর্থাৎ নবী করিম (সাঃ) এর উছিলায় আমাদের সকলের মৃত্যুকে সহজ করে দিন।আর মৃত্যুর পরের জীবনকে আল্লাহর রহমতে যেন ভরপুর করে দেন। সম্মানিত ভাই ও বোনেরা আমাদের সকলের পিতা-মাতা আত্মীয়-স্বজন কেউ না কেউ এই দুনিয়া থেকে ইন্তেকাল করেছেন| আসুন আমরা তাদের জন্য প্রতিদিন নেক আমল করি এবং তাদের রুহের উপর বেশি বেশি দোয়া আমল করি। আর তাদের জন্য মাগফেরাত এবং নাজাতের জন্য দোয়া করি। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের সবাইকে সুস্থ রাখেন, ভাল রাখেন, আর সব সময় আল্লাহর শুকরিয়া আদায়  করবেন।

সম্ভব হলে প্রতি ওয়াক্ত নামাজের পর আল্লাহ তায়ালার নিকট শুকরানা হিসেবে একটি লম্বা সেজদা অবশ্যই দেবেন। সমস্ত শয়তানের ধোঁকা থেকে নিজেকে হেফাজত করতে হবে। এবং জীবনকে শুধরে নিতে হবে, সমস্ত পাপ কাজ থেকে নিজেকে শুধরে নিতে হবে। কারণ আল্লাহ তাআলা বলেনঃ মানুষ তাই পায় যা সে করে। তাই আল্লাহর ছায়া তলে থাকতে হলে মানুষকে অবশ্যই সৎকর্ম করে যেতে হবে। আমীন!


133
বন্ধু কখনও আক্ষরিক অর্থে দুঃখের ভাগিদার হতে পারে না

বন্ধু কখনও আক্ষরিক অর্থে দুঃখের ভাগিদার হতে পারে না। হৃদয়ের রক্তক্ষরণ থামিয়ে দেবার ক্ষমতা ভালোবাসার মানুষগুলোরোও নেই। নির্ঘুম রাতগুলো কেউ কারো হয়ে জেগে থাকে না। নিজেকে নিজেরই দেখে রাখতে হয়। সামলে রাখতে হয়। জীবনের ঘটনাগুলো যতখানি গুরুত্ব পাবার দাবি রাখে, ততটাই দেওয়া চাই, না বেশি, না কম। এটুকু জেনে রেখো, যদি তুমি ভেঙে পড়ো উঠে দাঁড়াতে হবে তোমাকেই--তোমাকে টেনে তোলার কেউ নেই। যদি তুমি হেরে যাও, তোমাকে জেতাতে পারে শুধুই তোমার জিদ। হোঁচট খেয়ে উঠে দাঁড়ানো, আবার চলতে শেখা--তোমারই কাজ। নিজের কদর লোকের চোখে খুঁজতে যেও না; তুমি নিজেই জানবে তোমার মর্যাদা আসলে কতখানি।

তুমি ওপরে উঠবে তখনই, যখন তুমি বিবেকের সাথে সৎ হতে পারবে। আর নিজেকে যদি সত্যিই চিনে থাকো, তবে কে কী বলল তাতে কিছু যায় আসে না । জীবন নিয়ে দুশ্চিন্তার বোঝা বয়ে বেড়িয়ো না, সে বোঝা আল্লাহই নিয়ে নিয়েছেন। আয়-রোজগার নিয়ে ভেবো না, সেটাও আল্লাহ আগে থেকেই লিখে রেখেছেন। ভবিষ্যতের জন্যেও উদ্বিগ্ন হোয়ো না, ওটাও আল্লাহ তা'আলা নির্ধারিত করে দিয়েছেন। তোমার চিন্তা-করা বা না-করাতে কিছুই বদলাবে না।

একটা চিন্তাই মাথায় গেঁথে নাও:

কীভাবে আল্লাহকে খুশি করা যায়। যদি তুমি তাকে খুশি করতে পারো, তিনি তোমাকে খুশি রাখবেন, তোমার ইচ্ছাপূরণ করবেন,তোমাকে দেবেন প্রয়োজনের চাইতেও অধিক যে জীবন তোমায় কাঁদিয়েছে, তার জন্য কেঁদো না, শুধু বলো, ''হে আমার রব, আমাকে এই জীবন ও আখিরাতের জীবনে উত্তম বিনিময় দান করো। বান্দা যখন রবের কাছে সিজদায় লুটিয়ে পড়ে, সেই একটি সিজদাহ এক পৃথিবীর সমস্ত দুঃখ বেদনাকে বিদায় জানায়। আনন্দ ফিরে আসে অন্তর-চিঁড়ে-বেরোনো একটি দু'আয়। আল্লাহ তোমার কাজের কথা ভোলেন না। তিনি সে অন্তরের কথা জানেন, যার ব্যথা তুমি দূর করেছো; সে চোখের কথাও জানেন, যে চোখ কাঁদতে গিয়ে তোমার কথায় হেসে উঠেছে।

জীবনে চলার পথে একটি কথাই মাথায় রেখো:

ভালো কাজ করে যাও, কারও কাছে বিনিময়ের আশা রেখো না। কারণ তুমি কোনো মানুষের জন্য ভালো কাজ করছো না, তুমি ভালো কাজ করছো আল্লাহর জন্য। কেননা আল্লাহ ভালো কাজকারীদের ভালোবাসেন।


134
সালাতুল হাজতের নিয়ম ও ফজিলত

সামাজিক জীবনে কোনো না কোনো প্রয়োজনে একে অপরের পারস্পরিক সহযোগিতা প্রয়োজন। অনেক সময় কঠিন বিপদাপদে অসহায় হয়ে পড়ে মানুষ। যখন কেউ কাউকে সাহায্য করতে পারে না। সেই কঠিন বিপদের সময় মানুষের করণীয় কী? তখন কীভাবে সাহায্য চাইবে মানুষ? সালাতুল হাজত কী?সালাতুল হাজত বলতেই প্রয়োজনে নামাজ পড়া বুঝায়। তাই বৈধ যে কোনো প্রয়োজন পূরণের জন্য আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে দুই রাকাআত নফল নামাজ আদায় করাকে সালাতুল হাজত বলে। (ইবনে মাজাহ)

হ্যাঁ, যখন কেউ সাহায্য করতে পারে না, তখন মানুষের একমাত্র সাহায্যকারী হলেন মহান আল্লাহ। তিনিই পারেন মানুষকে বিপদ থেকে উদ্ধার করতে। মানুষের বিপদ যত সহজ আর কঠিনই হোক না কেন, তিনি পারে মানুষকে তা থেকে রক্ষা করতে। এ ক্ষেত্রে অন্যতম মাধ্যম হলো বিপদ থেকে মুক্তি পেতে নামাজ পড়া। এ নামাজ ‘সালাতুল হাজত’ হিসেবে পরিচিত। এ নামাজের দিকে ইঙ্গিত করে আল্লাহ তাআলা বলেন-‘হে ইমানদারগণ! তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৫৩)
 
এ আয়াতে বিপদে ধৈর্যধারণ করে নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়ার কথা বলেছেন আল্লাহ তাআলা। সালাতুল হাজতের ফজিলত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে কোনো প্রয়োজন পূরণে নিজেই এ নামাজ পড়তেন এবং সাহাবায়ে কেরামকে এ নামাজ পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। হাদিসে পাকে এ নামাজ পড়ার গুরুত্ব ওঠে এসেছে। হজরত হুজাইফা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সামনে যখন গুরুত্বপূর্ণ কোনো প্রয়োজন বা বিষয় (বিপদ-আপদ) চলে আসতো; তখন তিনি সঙ্গে সঙ্গে নামাজে দাঁড়িয়ে যেতেন। (আবু দাউদ)

বিশ্বনবি যেভাবে সালাতুল হাজত পড়তেন সালাতুল হাজত পড়ার জন্য নির্ধারিত কোনো নিয়ম, দিনক্ষণ বা সময় নেই। অন্যান্য নামাজের মতোই এটি পড়তে হয়। তবে নিষিদ্ধ সময় (সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত, দ্বিপ্রহর) ও মাকরুহ সময় ব্যতিত অন্য যেকোনো সময় তা পড়া যাবে। হাদিসে এসেছে-‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তির আল্লাহর কাছে বা মানুষের কাছে কোনো প্রয়োজন দেখা দেয়, সে যেন উত্তমরূপে অজু করে দুই রাকাআত নফল নামাজ আদায় করে আল্লাহ তাআলার প্রশংসা করে এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর দরুদ পাঠ করে।’ (তিরমিজি)

মনে রাখতে হবে,কারণ নামাজ ও দরূদ পাঠের বরকত ও ফজিলতে মহান আল্লাহ মানুষের যে কোনো বিপদ দূর করে দেবেন। সে কারণেই বিপদের সময় উত্তমভাবে অজু করে হাজত পূরণের নিয়তে দুই রাকাআত নফল নামাজ আদায় করা। আর নামাজ শেষে আল্লাহ তাআলার প্রশংসা ও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর দরুদ পাঠ করে আল্লাহর কাছে নিজ ভাষায় বৈধ প্রয়োজনের জন্য এ দোয়া করা-

 ﻻَ ﺇِﻟَﻪَ ﺇِﻻَّ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺍﻟْﺤَﻠِﻴﻢُ ﺍﻟْﻜَﺮِﻳﻢُ ﺳُﺒْﺤَﺎﻥَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺭَﺏِّ ﺍﻟْﻌَﺮْﺵِ ﺍﻟْﻌَﻈِﻴﻢِ ﺍﻟْﺤَﻤْﺪُ ﻟِﻠَّﻪِ ﺭَﺏِّ ﺍﻟْﻌَﺎﻟَﻤِﻴﻦَ ﺃَﺳْﺄَﻟُﻚَ ﻣُﻮﺟِﺒَﺎﺕِ ﺭَﺣْﻤَﺘِﻚَ ﻭَﻋَﺰَﺍﺋِﻢَ ﻣَﻐْﻔِﺮَﺗِﻚَ ﻭَﺍﻟْﻐَﻨِﻴﻤَﺔَ ﻣِﻦْ ﻛُﻞِّ ﺑِﺮٍّ ﻭَﺍﻟﺴَّﻼَﻣَﺔَ ﻣِﻦْ ﻛُﻞِّ ﺇِﺛْﻢٍ ﻻَ ﺗَﺪَﻉْ ﻟِﻲ ﺫَﻧْﺒًﺎ ﺇِﻻَّ ﻏَﻔَﺮْﺗَﻪُ ﻭَﻻَ ﻫَﻤًّﺎ ﺇِﻻَّ ﻓَﺮَّﺟْﺘَﻪُ ﻭَﻻَ ﺣَﺎﺟَﺔً ﻫِﻲَ ﻟَﻚَ ﺭِﺿًﺎ ﺇِﻻَّ ﻗَﻀَﻴْﺘَﻬَﺎ ﻳَﺎ ﺃَﺭْﺣَﻢَ ﺍﻟﺮَّﺍﺣِﻤِﻴﻦَ

উচ্চারণ : ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহুল হালিমুল কারিম। সুবহানাল্লাহি রাব্বিল আরশিল আজিম। আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন। আসআলুকা মুঝিবাতি রাহমাতিকা ও আযায়িমা মাগফিরাতিকা ওল গানিমাতা মিন কুল্লি বিররি ওয়াস-সালামাতা মিন কুল্লি ইছমিন লা তাদা’ লি জাম্বান ইল্লা গাফারাতহু ওয়া লা হাম্মান ইল্লা ফাররাঝতাহু ওয়া লা হাঝাতান হিয়া লাকা রিদান ইল্লা ক্বাদাইতাহা ইয়া আরহামার রাহিমিন।’

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, শারীরিক-মানসিক, পারিবারিক-সামাজিকসহ যে কোনো বিপদ-আপদ ও দুঃশ্চিন্তায় মহান আল্লাহর কাছে নামাজ ও দরূদ পড়ে এ দোয়ার মাধ্যমে সাহায্য চাওয়া। সালাতুল হাজত কিংবা বিপদে নামাজ ও দরূদ পড়ার বিকল্প নেই। বৈধ পন্থায় বিপদ থেকে রক্ষা পেতে সালাতুল হাজতের ভূমিকাই অনন্য। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কঠিন বিপদে সালাতুল হাজাত ও দরূদ পড়ে এ দোয়ার মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করার তাওফিক দান করুন। হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমীন !


135
ফজরের পর ঘুম আর নয়!

যান্ত্রিকতা, কথিত সভ্যতা আমাদের একে একে সুন্নাহ থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। জাহেল শ্রেণির কথা তো বাদই, যারা এই দ্বীনকে আকড়ে ধরে চলতে চান । যারা ফজরের সালাত আদায় করেন, তাদেরও ফজরের পর একটু চোখ না বুজলেই নয়। অথচ সুন্নাহ হচ্ছে ফজরের পর না ঘুমানো। রাসুল (সা.) দুয়া করেছেন, اللَّهُمَّ بَارِكْ لأُمَّتِي فِي بُكُورِهَا  ‘হে আল্লাহ, আমার উম্মতের জন্য দিনের শুরু বরকতময় করুন।’

বর্ণনাকারী বলেন, ‘এ জন্যই রাসুল (সা.) কোনো যুদ্ধ অভিযানে বাহিনী পাঠানোর সময় দিনের শুরুতে পাঠাতেন। আর সাখর (রা.) ছিলেন একজন ব্যবসায়ী। তিনিও তাঁর ব্যবসায়িক কার্যক্রম ভোরবেলা শুরু করতেন। এতে তাঁর ব্যবসায় অনেক উন্নতি হয় এবং তিনি সীমাহীন প্রাচুর্য লাভ করেন।’ [আবু দাউদ : ২৬০৬]

সালফরা ফজরের পর ঘুমানোকে মাকরুহ মনে করতেন। উরওয়া ইবনু যুবাইর (রহ.) বলেন, যুবাইর (রা.) তাঁর সন্তানদেরকে ভোরবেলা ঘুমানোর ব্যাপারে নিষেধ করতেন। উরওয়া (রহ.) বলেন, إِنِّي لَأَسْمَعُ بِالرَّجُلِ يَتَصَبَّحُ فَأَزْهَدُ فِيهِ ‘আমি যখন কারো সম্পর্কে শুনি, সে ভোরবেলা ঘুমায় তখন তার প্রতি আমি আগ্রহ হারিয়ে ফেলি।’ [মুসান্নাফ ইবনু আবি শাইবা, ৫/২২২]

আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রা.) তাঁর এক সন্তানকে ভোরবেলা ঘুমাতে দেখে বলেছিলেন, تنام في الساعة التي تُقسَّم فيها الأرزاق؟ ‘ওঠো, তুমি কি এমন সময়ে ঘুমিয়ে আছ, যখন রিজিক বণ্টন করা হচ্ছে?’ [যাদুল মাআ’দ : ৪/২৪১]

আমরা প্রায়ই বলে থাকি, আমাদের সময়ে বরকত নেই, এর অন্যতম একটা কারণ হচ্ছে, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা যখন বরকত দেন, সেই সময়টা আমরা ঘুমিয়ে কাটিয়ে দেই। সুতরাং জীবনে প্রাচুর্য আনতে ফজরের পর ঘুম আর নয়। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আমাদের এই বরকতময় সময়কে কাজে লাগানোর তাওফিক দান করুন। আমিন !

Pages: 1 ... 7 8 [9] 10 11