Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Messages - Mrs.Anjuara Khanom

Pages: 1 ... 19 20 [21] 22 23 ... 33
301
মানুষের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর মধ্যে ঝকঝকে সাদা দাঁত অন্যতম। আর সুন্দর দাঁত মানেই আত্মবিশ্বাস। সামান্য একটু মুক্তা ঝরা হাসিতে যেমন কারও মন কেড়ে নেয়া নিমিষে, তেমনি হলদে দাঁতের হাসি বিরূপ ধারণা তৈরি করে এক মূহূর্তেই। তাই একটু আলাদা করেই যেন নিতে হয় দাঁতের যত্ন।

তবে ঝকঝকে সাদা দাঁত পেতে হলে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে–এই ধারণাটা ঠিক নয়। ঘরোয়া কিছু উপাদান ব্যবহার করে আপনি নিজেই আপনার দাঁতকে করতে পারেন মুক্তার মত সুন্দর আর উজ্জ্বল। তাই এখনই জেনে নিন দাঁতকে ঝকঝকে সাদা করার কিছু ঘরোয়া উপায়।
লেবুর ব্যবহার : প্রতিদিন দুই বেলা দাঁত ব্রাশ করার পর পরিষ্কার দাঁতে এক টুকরো লেবু নিয়ে ঘষতে থাকুন । এভাবে ৫/৬ মিনিট ধরে ঘষতে থাকলে ৭ দিনের মধ্যে উত্তম রেজাল্ট পাবেন। এতে শুধু আপনার দাঁত পরিষ্কার হবে তা নয় বরং দাতেঁর রংও ফিরবে।

লবনের ব্যবহার: আপনি প্রতি রাতে যখন দাঁত ব্রাশ করেন। এরপর লেবুর ব্যবহার করতে হবে। লেবুর ব্যবহার শেষ করে হাতে লবন নিন। লবন আঙ্গুলের মাথায় নিয়ে ৫/৭ মিনিট ঘষুন তারপর কুলি করে ফেলুন। এভাবে এটিও ৭ দিন নিয়মিত করেন। এতে দাঁতের গোড়া হবে শক্ত ও মজবুদ। এখন অনেক টুথপেস্টেও লবনের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়।

কলার খোসার ব্যবহার : কলা খাওয়ার পর খোসাটি না ফেলে সেটি একাকী দাতেঁ ঘষতে থাকুন। প্রতিদিন এভাবে দুটি কলা খান এবং খোসাটি ঘসুন ৫ মিনিট ধরে । ৭ দিন হওয়ার আগেই এর ফলাফল পাবেন। ঝকঝকে সাদা দাঁত। এছাড়া কলার খোসা দিয়ে আপনার রুপ চর্চাও করতে পারেন।

বেকিং সোডা : বেকিং সোডার সাথে সামান্য পানি মিশিয়ে দাঁতে লাগিয়ে ১ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর ব্রাশ দিয়ে দাঁত ভালো করে পরিষ্কার করে নিন।

কমলার খোসা কিংবা কলার খোসা : কমলা এবং কলার খোসায় আছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাসিয়াম যা দাঁত সাদা করতে সহায়তা করে। এই ফলগুলো খেয়ে খোসা ফেলে না দিয়ে দাঁতে ঘষে নিন। তাই সপ্তাহে অন্তত দুইবার এই পদ্ধতি ব্যবহার করুন। ব্যবহারের কিছুক্ষণ পর দাঁত ব্রাশ করে ফেলুন।

আপেল, গাজর এবং দুধ : ঝকঝকে সাদা দাঁত পেতে হলে খাবার তালিকায় নিয়মিত গাজর, আপেল এবং দুধ রাখতে হবে। এই খাবারগুলো দাঁতের এনামেলকে ঠিক রাখে।

অ্যাপেল সিডার ভিনেগার : আঙ্গুলের ডগায় অ্যাপেল সিডার ভিনেগার লাগিয়ে কিছুক্ষণ দাঁতে ঘষে নিন। এভাবে প্রতিদিন ব্যবহারে দাঁতের হলদে ভাব কমে যাবে।

সঠিক নিয়মে ব্রাশ করা : আমরা বেশির ভাগ মানুষই সঠিক নিয়মে দাঁত ব্রাশ করি না। চিকিৎসকদের মতে, দিনে অন্তত দুইবার দুই মিনিট সময় নিয়ে দাঁত ব্রাশ করা উচিত। দাঁত ব্রাশের সময়ে অবশ্যই নরম ব্রাশ ব্যবহার করা উচিত। শক্ত ব্রাশ ব্যবহার করলে মাড়ি এবং দাঁতের এনামেলের ক্ষতি হয়। এছাড়াও নিয়মিত ফ্লসিং করতে হবে।

বিডি প্রতিদিন/


302
ঘরে-বাইরে সর্বত্র আজ বিনয়ের অভাব। দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে মানবিকতা। আমরা অনেক কিছু শিখছি, কিন্তু মানুষ হওয়ার দীক্ষা নিচ্ছি না। সত্য মেনে নেওয়াকে আজ পরাজয় মনে করা হয়।
যার গলা যত উঁচু, তাকেই বড় বীর ভাবে মানুষ। আমরা এটা ভুলে গেছি যে, মুসলমান হিসেবে এসব আমাদের আচরণ হতে পারে না। স্বার্থবিহীন উদার ও লৌকিকতামুক্ত অকৃত্রিম বিনয় এবং সবার সঙ্গে মার্জিত ব্যবহার করা ইসলামের প্রথম শিক্ষা। কারণ এমন গুণাবলি দিয়েই আল্লাহ সর্বপ্রথম নবীদের সুশোভিত করেছেন। তারপর দায়িত্ব দিয়েছেন নবুয়তের। মানুষকে কাছে টানার জন্য নবীদের হতে বলেছেন বিনয়ী ও কোমল ব্যক্তিত্বের অধিকারী। আল্লাহ বলেন, ‘আপনি আপনার অনুসারী মুমিনদের জন্য নিজেকে কোমল রাখুন। ’ সূরা শুয়ারা, আয়াত ২১৫। আরেক আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘আপনি যদি কঠোর হতেন তবে মানুষ আপনার কাছ থেকে দূরে সরে যেত। আপনি তাদের ক্ষমা করুন এবং তাদের জন্য আমার কাছে ক্ষমা চান। আর তাদের সঙ্গে পরামর্শ করুন। ’ সূরা আলে ইমরান, আয়াত ১৫৯। বিনয়ের অর্থ হচ্ছে সত্যকে দ্বিধাহীন চিত্তে মেনে নেওয়া। এর আরেকটি অর্থ নিজেকে অন্যদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ মনে না করা। হজরত হাসান বসরি (রহ.) বলেছেন, ‘নিজের ঘর থেকে বের হওয়ার পর যে কারও সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে তাকে নিজের চেয়ে ভালো মনে করার নামই হলো বিনয়। ’ ইয়াজ (রা.) বর্ণনা করেছেন, একদিন রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের বললেন, ‘আল্লাহ আমার কাছে নির্দেশনা পাঠিয়েছেন যাতে তোমরা বিনয়ী হও। একে অন্যের ওপর গর্ব না কর এবং রাগও না কর। ’ মুসলিম। হজরত ঈসা আলাইহিস সালাম বলতেন, এ পৃথিবীতে যারা বিনয়ীর জীবনযাপন করবে, কিয়ামতের মাঠে তাদের জন্য কতই না আনন্দ অপেক্ষা করছে। তারা সেদিন আসনে বসে থাকবে। যারা আজ মানুষে মানুষে ভেদাভেদ ভুলিয়ে তাদের মিলিয়ে দেয়, তারাই তো সর্বোচ্চ জান্নাত ফিরদাউসের প্রকৃত মালিক হবে। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহর জন্য যে যত বেশি  নিচু হবে, নিজেকে বিনয়ী করবে, আল্লাহ তাকে তত বেশি বড় করবেন। অর্থাৎ মানুষের কাছে সম্মানিত করবেন। ’ আহমদ। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘দানসদকায় কখনো সম্পদ কমে না, এতে আল্লাহ দাতার সম্মান বাড়িয়ে দেন। আর যে আল্লাহর জন্য বিনয়ী হবে, তার সম্মান আরও বাড়িয়ে দেওয়া হয়। ’ মুসলিম। এমন লোকদের প্রশংসা করে আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘আর পরম দয়াময়ের বান্দারা তো নম্র হয়ে হাঁটাচলা করে এবং কোনো মূর্খের সঙ্গে দেখা হলে সালাম দিয়ে চলে যায়। ’ সূরা ফুরকান, আয়াত ৬৩। এখানে ওখানে বাগ্বিতণ্ডা কিংবা কারও সঙ্গে রেগে যাওয়া তাদের স্বভাব নয়। আল্লাহ অন্যত্র বলেছেন, ‘এই জান্নাত তো তাদের জন্য তৈরি করে রেখেছি যারা পৃথিবীতে অনেক সম্মান ও বড়ত্বের জন্য লোলুপ ছিল না। ছিল বিনয়ী এবং কোমল। তারা সেখানে হাঙ্গামা করত না। শুভ পরিণাম তো মুত্তাকিদের জন্যই। ’ সূরা কাসাস, আয়াত ৮৩। ইবনে মাজাহ থেকে বর্ণিত হাদিসে জানা যায়, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সামনে দাঁড়িয়ে ঠকঠক করে কাঁপছিল এক গ্রাম্য বেদুইন। সে ভাবছিল, কত প্রতাপশালী শাসক না জানি আবদুল্লাহর ছেলে মুহাম্মদ। প্রিয় নবী তাকে অভয় দিয়ে বললেন, ‘তুমি শান্ত হও। আমি কোরাইশ বংশের এক সাধারণ মহিলার সন্তান, যে মহিলা রোদে শুকানো মাংসের টুকরা খেয়ে দিন কাটাতেন। ’

লেখক : বিশিষ্ট মুফাসসিরে কোরআন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব। চেয়ারম্যান : বাংলাদেশ মুফাসসির সোসাইটি।

303
রাতে ছয় ঘণ্টার কম ঘুমানোর অভ্যাস হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। নতুন একটি গবেষণায় এ বিষয়ে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে।গবেষকদের মতে, ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমান এ ব্যক্তিদের চেয়ে যাদের ছয় ঘণ্টার কম ঘুমানোর অভ্যাস (চোখ বন্ধ থাকা) তাদের কার্ডিওভাসকুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৩৫ ভাগ বেশি।

কম ঘুমানোর অভ্যাস অথেরোস্ক্লেরোসিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় যা ধমনীকে সরু ও কঠিন করে দেয়। এই গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছে স্প্যানিশ ন্যাশনাল সেন্টার ফর কার্ডিওভাসকুলার রিসার্চ।আমেরিকান কলেজ অব কার্ডিওলজি জার্নালে গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে।
স্পেনের ৪,০০০ ব্যাংক কর্মীর ওপর এ গবেষণা করা হয়েছে। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের বয়স ছিল গড়ে ৪৬ এবং তাদের হৃদরোগের আক্রান্ত হওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি।  গবেষণার ফলাফলে দেখানো হয়েছে, ওষুধের চেয়ে ঘুমের অভ্যাস পরিবর্তন করে দ্রুত ও সহজেই  হৃদরোগের প্রতিকার সম্ভব। সূত্র: ডেইলি মেইল

বিডি প্রতিদিন/

304
Heart / হার্টব্লকের উপসর্গ
« on: November 17, 2018, 11:48:26 AM »
হার্টের নিজস্ব ব্যবহারের জন্য কী পরিমাণ রক্ত সরবরাহের প্রয়োজন তা খুব সহজে নির্ণয় করা যায় না। একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের প্রতি মিনিটে সারা শরীরে ৫ লিটারের মতো রক্ত সরবরাহের প্রয়োজন, সেমতে এ সময়ে হার্ট প্রতি মিনিটে ৫ লিটার রক্ত পাম্প করবে। একজন মানুষ যখন যুদ্ধক্ষেত্রে থাকে অথবা প্রতিযোগিতামূলক কোনো খেলায় অংশগ্রহণ করে অথবা কখন কোনরূপ দুর্ঘটনায় পতিত হয় তখন শারীরিক রক্ত সরবরাহের প্রয়োজন বৃদ্ধি পায় এবং হার্ট তার পাম্পিং দক্ষতা কাজে লাগিয়ে ৫ লিটারের পরিবর্তে মিনিটে ১০০ লিটার পর্যন্ত রক্ত পাম্প করতে পারে। এবার ধরুন ৫ লিটার রক্ত পাম্প করা আর ১০০ লিটার রক্ত পাম্প করার মধ্যে শক্তি খরচের মাত্রা অনেকগুণ বৃদ্ধি পায় ফলশ্রুতিতে ওই সময়ে হার্টে জ্বালানি ও অক্সিজেনের চাহিদা ১০ থেকে ৫০ গুণ বৃদ্ধি পায়। তার মানে দাঁড়ালো হার্টের নিজস্ব রক্ত সরবরাহের প্রয়োজন শারীরিক কর্মকাণ্ডের ওপর নির্ভর করে অনেক কমবেশি হয়ে থাকে। এখান থেকে আরও একটি ব্যাপার নির্ণয় করা যায় যে, প্রয়োজনের সময় অত বেশি পরিমাণ রক্ত সরবরাহের জন্য হার্টে পর্যাপ্ত পরিমাণে রক্তনালি বিদ্যমান থাকে। বিশ্রামকালীন সময়ে খুবই অল্প পরিমাণ রক্তনালি খোলা থাকলেই চলে তাই অল্প কিছু রক্তনালি খোলা থাকে এবং বাকিগুলো চুপসানো অবস্থায় থাকে এবং চুপসানো নালিগুলো প্রয়োজনে আবারও রক্ত সরবরাহ করতে সক্ষম হয়। রক্তনালির ভিতর দিকে চর্বিজাতীয় পদার্থ খুব ধীরে ধীরে জমা হতে হতে রক্তপ্রবাহের পথ আটকে ব্লকের সৃষ্টি করে। ব্লক সৃষ্টির প্রাথমিক পর্যায়ে বিশ্রামকালীন এবং স্বাভাবিক পরিশ্রম যেমন পথ হাঁটা সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠা ইত্যাদি কাজে, ব্লক থাকা সত্ত্বেও রক্ত সরবরাহ পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকায় রোগী ব্লকের কোনো উপসর্গে আক্রান্ত হয় না। তবে দ্রুত দৌড় দেওয়া অথবা প্রতিযোগিতামূলক কর্মকাণ্ড সম্পাদনের সময় রোগী হাঁপিয়ে উঠা, বুক ধড়ফড় করা, বুকে চাপ, ব্যথা জ্বালা করার মতো উপসর্গে আক্রান্ত হয়। এই সমস্যাগুলোকে একত্রে এনজিনা নামে অবিহিত করা হয়, মানে এসব কাজের সময় রোগী এনজিনায় আক্রান্ত হয়। কাজ শেষে খুব দ্রুত এনজিনা কমে গিয়ে ব্যক্তি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। ব্লকের তীব্রতা ও সংখ্যা  বৃদ্ধি পেলে দ্রুত হাঁটতে গেলে এবং সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে গেলে এনজিনায় আক্রান্ত হন এবং কাজ শেষে খুব এনজিনা কমে যায়। ব্লকের তীব্রতা ও সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেলে রোগী সামান্য কাজ করতে গেলে এনজিনা আক্রান্ত হয়। এ ধরনের রোগীদের ব্লকের তীব্রতার জন্য হার্ট শারীরিক চাহিদা মতো রক্তপাম্প করতে না পারায় রোগীর হার্ট ফেইলুর দেখা দেয়। যার ফলে রোগীর শরীরে পানি জমা হতে থাকে কাজেই বিছানায় শুতে গেলে শুকনো কাশির উদ্রেগ হয়, পেটে বদহজম ও অত্যধিক গ্যাসের সৃষ্টি হয়, সব সময় পেটে ভরা ভরা ভাব অনুভূত হয়। ব্লকের পরিমাণ এবং হার্ট ফেইলুরের তীব্রতা বৃদ্ধি পেলে রোগী বিশ্রামকালীন যেমন শুয়ে বসে থাকাকালীন এনজিনায় আক্রান্ত হয় এবং হার্ট ফেইলুরের উপসর্গ বৃদ্ধি পায়। এত কিছু বিবেচনা করে চিকিৎসক এনজিওগ্রামের আগেই রোগীর ব্লকের তীব্রতা অনুমান করেন এবং অনুমান শতকরা ৯০ ভাগ ক্ষেত্রেই প্রায় সঠিক হয়ে থাকে।

ডা. এম শমশের আলী (কার্ডিওলজিস্ট)

সিনিয়র কনসালটেন্ট (প্রা.), ঢাকা মেডিকেল

কলেজ ও হাসপাতাল, ঢাকা।

305
Diabetics / ডায়াবেটিস কী? কেন হয়?
« on: November 14, 2018, 11:24:23 AM »
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, ডায়াবেটিস এখন একটি মহামারি রোগ। ছবি: এএফপিবিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, ডায়াবেটিস এখন একটি মহামারি রোগ। ছবি: এএফপিডায়াবেটিস শব্দটি আমাদের সবার কাছেই বেশ পরিচিত। এমন কোনো পরিবার খুঁজে পাওয়া যাবে না, যেখানে কোনো ডায়াবেটিসের রোগী নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, ডায়াবেটিস এখন একটি মহামারি রোগ। এই রোগের অত্যধিক বিস্তারের কারণেই সম্প্রতি এমন ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

প্রশ্ন আসতেই পারে, ডায়াবেটিস কী? আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন বলছে, ডায়াবেটিস এমনই একটি রোগ, যা কখনো সারে না। কিন্তু এই রোগকে সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

আইরিশ ইনডিপেনডেন্টের খবরে বলা হয়েছে, যখন আমরা কার্বোহাইড্রেট বা সাধারণ শর্করাজাতীয় খাবার খাই, তখন তা ভেঙে গ্লুকোজে পরিণত হয়। ইনসুলিন হচ্ছে একধরনের হরমোন। এর কাজ হলো এই গ্লুকোজকে মানুষের দেহের কোষগুলোয় পৌঁছে দেওয়া। এরপর সেই গ্লুকোজ ব্যবহার করে শরীরের কোষগুলো শক্তি উৎপাদন করে। সেই শক্তি দিয়েই রোজকারের কাজকর্ম করে মানুষ। সুতরাং যখন এই গ্লুকোজ শরীরের কোষে পৌঁছাবে না, তখন স্বাভাবিকভাবেই মানুষের দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হবে।

যখন কারও ডায়াবেটিস হয়, তখন ওই মানুষের শরীরে ইনসুলিন হরমোনের নিঃসরণ কমে যায়। ফলে দেহের কোষে গ্লুকোজ পৌঁছাতে পারে না। এতে করে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায়। সাধারণত প্রস্রাবের মাধ্যমে অতিরিক্ত গ্লুকোজ শরীর থেকে বের হয়ে যায়। এই কারণে ডায়াবেটিস রোগীর ঘন ঘন প্রস্রাব হয়। যখন প্রস্রাব বেশি হয়, তখন ডায়াবেটিসে ভোগা রোগী তৃষ্ণার্ত হয়ে পড়েন।

অন্যদিকে, ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার রোগীর শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণ গ্লুকোজ বের হয়ে যায়। এতে করে প্রয়োজনীয় শক্তি উৎপাদন করতে পারে না দেহের কোষগুলো। ফলে রোগী দুর্বলতা অনুভব করেন। রোগী যদি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ না করেন, তবে তার রক্তনালি, স্নায়ু, কিডনি, চোখ ও হৃদ্‌যন্ত্রের সমস্যাসহ নানা ধরনের শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে।

ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলো
ডায়াবেটিস রোগের সাধারণ কিছু লক্ষণ রয়েছে। আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখলে সহজেই চিহ্নিত করা যায় ডায়াবেটিস। আর যত আগে ডায়াবেটিস চিহ্নিত করা যাবে, তখনই নিতে হবে নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ। ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলো হলো:

১. ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া
২. তেষ্টা পাওয়া
৩. নিয়মিত খাওয়ার পরও ঘন ঘন খিদে
৪. প্রচণ্ড পরিশ্রান্ত অনুভব করা
৫. চোখে ঝাপসা দেখা
৬. শরীরের বিভিন্ন অংশের কাটাছেঁড়া সহজে সারে না
৭. খাওয়া সত্ত্বেও ওজন কমে যাওয়া
৮. হাতে-পায়ে ব্যথা বা মাঝে মাঝে অবশ হয়ে যাওয়া

 Source:https://www.prothomalo.com

306
মানবদেহ তড়িতের সুপরিবাহী। তাই বিদ্যুৎপ্রবাহ আছে এমন কোনও খোলা তার বা বোর্ডের সংস্পর্শে এলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে থাকেন অনেকেই। বিদ্যুতের প্রাবল্যের ওপর মানুষের বেঁচে থাকাও নির্ভর করে। খুব কম সময়ে শরীরে অনেকটা বিদ্যুৎ চলে গেলে সেই মানুষের তৎক্ষণাৎ মৃত্যুও অসম্ভব নয়।
 
হঠাৎ বিদ্যুৎ আক্রান্ত কাউকে কীভাবে বাঁচাবেন:
 
১/ কোনভাবে কেউ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হলে কিছুতেই তার গায়ে হাত দেবেন না। গায়ে জলও দেবেন না। বরং ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিন। ধাক্কা দেওয়ার সময় শুকনো কাঠের টুকরো, খবরের কাগজ অথবা রাবার জাতীয় তড়িৎ অপরিবাহী বস্তু দিয়ে সজোরে আঘাত করে সরান। তাতে বিদ্যুতের উৎস থেকে সেই ব্যক্তির ছিটকে যাওয়া সম্ভব হবে।
 
২/ দ্রুত মেইন সুইচ বন্ধ করুন। অনেক সময় এই মেইন সুইচ বন্ধ করতে গিয়ে যে সময় নষ্ট হয়, তাতেই প্রাণ চলে যায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট ব্যক্তির। তাই সামনে থাকলে তাকে বিদ্যুতের উৎস থেকে সরানোর চেষ্টাই প্রথম করুন, সঙ্গে অন্য কাউকে নির্দেশ দিন মেইন সুইচ বন্ধ করার। একান্ত সে উপায় না থাকলে বা হাতের কাছে তড়িৎ অপরিবাহী কিছু না মিললে দ্রুত মেইন সুইচ বন্ধের দায়িত্ব নিন।
 
৩/ বিদ্যুৎ থেকে মুক্তি পেলেও অনেক সময় ব্যক্তির শ্বাস প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। তেমন হলে বুকের ওপর জোরে চাপ দিয়ে হৃদযন্ত্র চালু করুন।
 
৪/ বিদ্যুতের উৎস থেকে সরাতে পারলে সঙ্গে সঙ্গে আক্রান্ত ব্যক্তিকে গরম দুধ ও গরম পানি খাওয়ান। এতে শরীরের রক্ত সঞ্চালন দ্রুত স্বাভাবিক হবে।
 
৫/ বিদ্যুতস্পৃষ্ট ব্যক্তির গলা, বুক ও কোমরের কাপড় ঢিলা করে দিতে হবে।
 
৬/ রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন।
 
ইত্তেফাক/

307
বেশিরভাগ উল্কাতে বরফ থাকে। সেখান থেকেই পৃথিবীতে প্রথম পানির আগমন হয়েছিল।

 
সূর্যের অতিরিক্ত গ্যাস আর উল্কাপাতের মিলনে পৃথিবীতে প্রথম পানির আবির্ভাব হয়েছিল। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের আরিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় এই তথ্য জানা গেছে। খবর এনডিটিভির।
 
গবেষকরা বলছেন, বেশিরভাগ উল্কাতে বরফ থাকে। সেখান থেকেই পৃথিবীতে প্রথম পানির আগমন হয়েছিল।
 
আরিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পিট বুসেক বলেন, ‘সৌরমন্ডল তৈরীর সময় কীভাবে পানির আবির্ভাব হয়েছিল তা সম্পূর্ণ অন্যভাবে ভাবা যেতে পারে।’
 
‘হাইড্রোজেল ও অস্কিজেনের সংমিশ্রণ পানি। পৃথিবীতে হাইড্রোজেনের যে কোন উৎপত্তিস্থল থেকে পানির আগমন হতে পারে।’ বলেন তিনি।
 
নতুন এই তত্ব সৌরমন্ডলের উৎপত্তির প্রচলিত ধারনাকে সমর্থন করে। এই গবেষণার ফল সত্যি হলে সৌরমন্ডলের বাইরে প্রাণ থাকার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।
 
এখনো পর্যন্ত বিভিন্ন নক্ষত্রের চারপাশে প্রদক্ষিণরত বহু গ্রহ খুঁজে পেয়েছেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। এই গবেষণা সেখানে প্রাণ থাকার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিল।
 
ইত্তেফাক/

308
মানবদেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যকৃৎ। পরিপাক ক্রিয়ায় মুখ্য ভূমিকা পালন করে এই অঙ্গ। শরীরের সব বর্জ্যপদার্থ বের করে শরীরকে সুস্থ রাখাই যকৃৎ বা লিভারের কাজ। কিন্তু যদি লিভার তার স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারায়, তাহলে বাড়ে মৃত্যুর ঝুঁকি।

এখন কী করে বুঝবেন, আপনার যকৃত ঠিক মতো কাজ করছে কিনা বা কোন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিনা? উপায় আছে। কিছু লক্ষণ আপনার শরীরেই ফুটে উঠবে, যা দেখে আপনি বুঝে নিতে পারবেন আপনার যকৃৎ বা লিভার অসুস্থ কিনা-

১) যদি হঠাৎ করেই খাওয়া-দাওয়ায় অনীহা তৈরি হয়, যদি দেখেন খাবার খেতে ইচ্ছেই করছে না, তাহলে বিষয়টিকে অবহেলা করবেন না। কারণ, এটি যকৃতের সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। অবিলম্বে চিকিৎসকের কাছে যান।

২) পাঁজরের একটু নীচে, পেটের ডান দিকে ব্যথা হলে সাবধান। এটি যকৃতের সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। বিষয়টিকে অবহেলা করবেন না।

৩) কিছু খেলেই বমি পাচ্ছে? সারাক্ষণ বমি বমি ভাব? এটি যকৃৎ বা লিভারের সমস্যার কারণে হতে পারে। ফ্যাটি লিভারের সমস্যা হয়েছে কিনা, চিকিৎসকের পরামর্শ মতো পরীক্ষা করিয়ে দেখুন।

৪) হঠাৎ করেই যদি আপনার গায়ের চামড়া কোন জায়গায় খুব শুষ্ক হয়ে যায়, খোসা খোসা উঠতে থাকে, তাহলে বিষয়টিকে অবহেলা করবেন না। এটি যকৃতের সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।

৫) মল ও মূত্রের রং যদি হঠাত করে পাল্টাতে থাকে, তাহলে এখনই সাবধান হওয়া উচিত। আপনার যকৃতে কোনও সমস্যা হচ্ছে। হজমেরও সমস্যা হচ্ছে। অবহেলা না করে অবিলম্বে চিকিৎসকের কাছে যান।

৬) যদি আচমকা আপনার চোখের সাদা অংশের রং, গায়ের চামড়া হলুদ হতে শুরু করেছে, তাহলে বিষয়টিকে অবহেলা করবেন না। কারণ, এটি জন্ডিসের লক্ষণ। অবিলম্বে চিকিৎসকের কাছে যান।

৭) যদি আপনার পেটের নিচের অংশ অস্বাভাবিক রকম ফুলে ওঠে এবং দীর্ঘদিন একই অবস্থা থাকে তাহলে সাবধান হয়ে যান। এটি যকৃতে পানি জমার লক্ষণ হতে পারে। একে লিভার কিরহোসিস বলা হয়।


বিডি-প্রতিদিন

309
Fashion / ত্বকের পোড়াভাব দূর করতে
« on: November 10, 2018, 01:39:31 PM »
ত্বকের পোড়াভাব দূর করতে

ভাবছেন সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে যাবেন, যেই ভাবা সেই কাজ। চলে গেলেন ব্যাগ গুছিয়ে। কিন্তু ফেরার পর থেকেই মন খারাপ। কেন? রোদে ত্বক পুড়ে তামাটে হয়ে গেছে।

এবার ত্বকের পোড়াভাব দূর করতে হবে। কীভাবে? জেনে নিন:

•    দুধ, হলুদ বাটা ও লেবুর রস মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে ত্বকে লাগান। শুকিয়ে গেলে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন

•    ত্বকে টমেটোর রস লাগানোর পর শুকিয়ে গেলে আবার লাগান। এবার ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে নিন

•    অ্যালোভেরার রস আর টমেটোর রস একসাথে মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে ২০ মিনিট রাখার পর পরিষ্কার পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন

•    লেবুর রস আর টকদই একসঙ্গে মিশিয়ে লাগাতে পারেন। টকদই ও লেবু দুটোই রোদে পোড়া ত্বকের জন্য ভালো

•    মধু, মসুর ডালের গুঁড়া ও দুধ একসঙ্গে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে ত্বকে লাগান। সপ্তাহে দুই দিন এই প্যাকটি লাগাতে পারলে রোদে পোড়া ভাব আর ফিরে আসবে না।
•    ময়দা এবং কাঁচা দুধ মিশিয়ে মুখে লাগাতে পারেন। এতে পোড়া দাগের সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের ময়লাও দূর হবে।

যারা সাগরে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন, তারা আগেই লক্ষ্য রাখুন:

•    রোদ থেকে বাঁচতে টুপি ও সানগ্লাস অবশ্যই সঙ্গে রাখুন

•    সাগরের পানিতে গোসল করলে, ভিজে কাপড় পরে তো আর হোটেলে ফিরতে পারবেন না। তাই সঙ্গে রাখুন শুকনো পোশাক।
•    সানস্ক্রিন ক্রিম কিন্তু মাস্ট। প্রতি ৪০ মিনিট পর পর শরীরের খোলা জায়গাগুলোতে লাগান সান স্ক্রিন লোশন বা ক্রিম
•    এক বোতল ঠাণ্ডা পানি বা কোনো ফলের জুসও রাখতে পারেন
•    ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, টাকা, মোবাইল, ঘড়ি, মানিব্যাগ রাখার জন্য পানি নিরোধক ছোট ব্যাগ ব্যবহার করুন।

একটু সচেতন থাকলেই ত্বকের সৌন্দর্য কমবে না বরং ঘুরে ঘুরে উপভোগ করা হবে প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য।

Source: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

310
ইসলামে যে এক মহান সভ্যতা লুকিয়ে আছে তা আমরা ঠাওর করি না। রোমানরা যখন নিজেদের দেহের পবিত্রতা জানত না তখন ইসলাম মানুষকে শিখিয়েছে কী করে অজু গোসল করে পাক-সাফ হতে হয়।

আজও ফরাসিরা গোসলের ব্যাপারে অলস। শংকরের লেখা জীবন সাগর তীরে বইটি পড়লে তাদের সভ্যতা সম্পর্কে কিছুটা আঁচ করা যাবে।

তবে ইসলামে একটি নির্ধারিত সভ্যতা আছে, তা হল তাওহিদ ও রিসালাতের আওতায় সেরা। যখন একজন ভালো ইসলামী বক্তাকে ইসলামী সভ্যতা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবেন, হুট করে বলে দেবে সংস্কৃতি! সেটা তো ইসলামে নিষিদ্ধ।

যদি বলেন এই যে আপনি ওয়াজ করছেন এটাও ইসলামী সংস্কৃতির অংশ। জবাবে বলবে সেটা কী করে? আপনি যদি এর পক্ষে ব্যাখ্যা দিয়ে তার কাছে কিছু জানতে চান তখন হয় তোতলামি রোগে ধরে যাবে তার, অথবা বোবা জীনের খপ্পরে পড়ে যাবেন বক্তা। উলটা জিজ্ঞেস করেন, তাহলে আপনি ইসলামী সভ্যতায় বিশ্বাস করেন না, জবাবে বলবে বিশ্বাস করব না কেন? কিন্তু সেটা কী?

একটু বুঝিয়ে বলুন। তখন এদিক ওদিক ঘুরিয়ে কিছু বলবে যা সভ্যতা সংস্কৃতির ধারেকাছেও নেই। আমাদের মনে রাখতে হবে কবিতা আবৃতি বা গান গাওয়া কিংবা নৃত্যকলা সংস্কৃতি নয় সংস্কৃতির বাহন মাত্র।

সংস্কৃতি হল এগুলোর বিষয়বস্তু। আমাদের মনে রাখা উচিত সংস্কৃতি হল সভ্যতার বাহন। সংস্কৃতির পিঠে চড়েই সভ্যতা কোনো জাতি-গোষ্ঠীর ডানা মেলে বসে। এ জন্যই প্রতিটি সভ্যতা সংস্কৃতিকে লালন করে থাকে।

আর পৃথিবীতে যত ধর্ম এসেছে তা তার বিশ্বাসের সঙ্গে মিলিত সংস্কৃতিকে ধারণ করেই বেঁচে আছে। শুধু মুসলিম জাহানের সাহিত্য স্থাপত্য কলায় নয় জ্ঞান গরিমা পরিবেশ রক্ষা মানবাধিকারসহ আজকে পৃথিবীজুড়ে যে সভ্যতা ও সুকুমার সংস্কৃতি লালিত হচ্ছে তার দিকে তাকালে আরবের মরু দুলাল মহানবী (সা.)-এর শিক্ষাকেই দেখতে পাই।

সংস্কৃতি কী? আরবিতে একে সাক্বাফাহ বলে। প্রফেসর ড. উমর বাহাযিক্বের মতে সংস্কৃতি বা সাক্বাফাহের ভালো সংজ্ঞা হল, ‘মা তাসক্বিফু আলাইহিন নাস’ যেসব নিয়ে তুমি একটা মানব সমষ্টিকে পাও তাই সংস্কৃতি। মানে আপনি একটি মুসলিম সমাজে আছেন। এখানে আপনার ঘুম ভাঙে আজানের শব্দে। মসজিদে নামাজ হয় একতাবদ্ধ হয়ে।

এখানে আল্লাহ সুবহানাহুতায়ালা, ফেরেশতা, নবী-রাসূল (সা.) আসমানি কিতাব, আখিরাত, কদর ও কেয়ামতের বিচার, জান্নাত-জাহান্নামকেন্দ্রিক জীবন থাকে। জুমা ঈদে মুসলিম স্কলারদের ভাষণ অভিভাষণ থাকে, আনন্দ উৎসব বিয়েশাদিতে নির্দোষ গান থাকে। মানুষে মানুষে মোলাকাত কুলাকুলি থাকে। নারী-পুরুষে মিলন হতে চাইলে বিয়ের ইজাব কবুল থাকে।

বিয়ের মাধ্যমে পরিবার হয়। পরিবার হয়ে ওঠে প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সেখান থেকেই বের হয়ে আসে ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্য যা একসময় সংস্কৃতিতে রূপ নেয়। পরিবারে হৃদয় আনন্দিত করার নানা প্রক্রিয়া থাকে, দেহকে ভালো রাখার সামগ্রিক দিক থাকে, খাওয়া-দাওয়ার নানা ব্যবস্থা থাকে। আনন্দে ছন্দ থাকে বেদনায় কান্না থাকে। এসব ইসলামী সংস্কৃতি।

আর সভ্যতার আরবি হল হাদ্বারাহ। এটি হল সংস্কৃতি থেকে উৎপন্ন এমন জিনিস যা আপনার ও আমার কাছে হাজির থাকে।

মুসলিম সংস্কৃতির একান্ত অঙ্গ হল ইবাদাত। বিশেষ করে নামাজ আদায়। এটা মুসলিম সমাজের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। নামাজ আদায়ে কিবলা লাগে, পবিত্র জায়গা লাগে, পবিত্র অর্জনে পানির স্থান লাগে, নামাজ পরিচালনার জন্য ইমাম ও ইমামের স্থান লাগে, মহিলা-পুরুষের জন্য আলাদা জায়গা লাগে, আজানের জন্য সর্বোচ্চ স্থান লাগে যেখান থেকে শব্দ ইথারে ভাসিয়ে লোকালয়ে পৌঁছানো যায়।

এগুলো মুসলিম সংস্কৃতি। এ সংস্কৃতি ঠিকভাবে চর্চা করার জন্য আমরা একটি জায়গা বাছাই করি যার মালিকানা নিজেরা না রেখে ওয়াকফ লিল্লাহ বা আল্লাহর মালিকানা করে সব তাওহিদবাদীর প্রবেশাধিকার করে দেয়া হয়। সেখানে তাওহিদকে ভিত্তি করে কাজ হয়।

নামাজের শুরুতেই বলি ‘ইন্নি ওয়াজ্জাহ্তু ওয়াজহিয়া লিল্লাজি ফাতারাসসামাওয়াতে ওয়াল আরদ্বা হানিফাও ওমা আনা মিনাল মুশরিকিন’। আল্লাহর উদ্দেশে একটা ঘর বানানোর কাজে অনেক হালাল টাকার জোগান দিয়ে আল্লাহর জন্য খাস করে সুন্দর একটা ঘর বানাই। এর মুখ করে দিই কিবলার দিকে। ভেতরে ইমামকে রাখি সুন্দর সুরক্ষিত মেহরাব নামক স্থানে।

ইমামকে সবাই দেখা ও কথা শোনার সুবিধার্থে মিম্বর বানিয়ে দিই। মুয়াজ্জিন হয় সুকণ্ঠ দরাজ আওয়াজের, যাতে তার আজানের সুর ধ্বনি দূর সুদূরে পৌঁছে, সেজন্য বানিয়ে দিই সুউচ্চ মিনার। অজুর জায়গা, ওয়াশরুম, টয়লেট, মহিলাদের আসার পথ, তাদের জন্য কাতার সংলগ্ন পৃথক কামরা বা পর্দাযুক্ত স্থান। এসবের মিলিত একটি নয়নাভিরাম স্থানকে আমরা মসজিদ বলি।

এই মসজিদই হল ইসলামী সংস্কৃতি চর্চার স্থান। নবীজি (সা.) যেখানেই গেছেন সেখানেই আগে মসজিদ বানিয়েছেন কেননা তিনি জানেন এই মসজিদকে ঘিরেই গড়ে উঠবে ইসলামী সভ্যতা। এজন্য মসজিদগুলো আমাদের গর্বের ধন।

মসজিদ জগৎকে আলোর পথ দেখিয়ে খোদায়ী সুবাসে মোহিত করে তোলে। মানুষ তা দেখার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠে। মানুষ ছুটে চলে উম্মুল মাসাজিদ বাইতুল আতিক কাবা পানে। আর দুনিয়ার অন্য মসজিদগুলোও কাবাকেন্দ্রিক।

এ কারণেই প্রতিটি মুসলিম দেশের ঐতিহাসিক মসজিদগুলো মুসলিম সভ্যতার প্রতীক। আইয়ামে জাহিলিয়্যাতের সেরা সাহিত্য কা’বার গায়ে লাগিয়ে রাখা হতো। আসসাবউল মু’আল্লাকা নামে সাতটি ঝুলন্ত কবিতার কথা আমরা সবাই জানি।

ইসলাম আসার পর দরকার হল ইসলামী গান কবিতার। ছড়া ছন্দের যা মাসনুভী বা দ্বিপদী ছড়া। রুবাঈ বা চতুষ্পদী ছন্দ। সাবউল মু’আল্লাকার অন্যতম কবি লাবিদ ইসলাম কবুল করে জাহেলি কবিতা ছেড়ে ইসলামী কবিতা লেখা শুরু করেন। কবি হাসসান বিন সাবেত তো রাসূলের (সা.) প্রশংসায় কবিতা লিখে শায়েরুন্নবী খেতাব লাভ করেন।

ইসলামে দরকার হল কোরআন লেখার জিনিসপত্র। কোরআন লেখাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠল আরবি ক্যালিগ্রাফি। দরকার হল হাদিস লেখার মনোযোগ। হাদিস গ্রহণে লাগল সত্য মিথ্যার বিচার বিশ্লেষণ গড়ে উঠল রিজাল শাস্ত্র। দরকার হল কোরআন-হাদিস থেকে হুকুম আহকাম, ব্যবহার ও আখলাক বের করার নীতিমালা, ফিকাহ-উসূলে ফিকাহ। এই হল ইসলামী সংস্কৃতির একেকটি দিক।

এই দিকগুলো এক সময় কোরআনের মলাটে গ্রন্থিত হল। হাদিসের কিতাবে ঘর ভর্তি হল। হাজার হাজার মাসআলা ঋদ্ধ হয়ে ফিকাহ’র কিতাবে দামেশক, কায়রো, বাগদাদ মক্কা, মদিনা ভর্তি হল। কবিতার বই হল। কবিতায় এলো হাফেজ সিরাজী শেখ সাদী উমর খৈয়াম সুফি কবিতায় মাওলানা রুমী আমির খসরু। গদ্য রচনায় হাফেজ ইস্পাহানী, ইবনে কুতায়বা, আবু আলী আল ফারেসিদের আগমন হল।

তাদের লেখা একত্রিত করে ঘরে আর জায়গা হল না, বায়তুল হিকমাহ বানাতে হল। এগুলো হয়ে গেল ইসলামী সংস্কৃতির এক একটা দলিল ও দস্তাবেজ। এই সাহিত্য সম্ভারের নাম হল ইসলামী সভ্যতা।

আজকের ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) পালনও কিন্তু মুসলিম সভ্যতা ও সংস্কৃতির অংশ। কোনো বিতর্কে না জড়িয়ে তা পালনে যা ভালো বিষয় তা ধরে রাখতে হবে আর মন্দ যা মিশ্রিত হয়েছে তা বাদ দিয়ে রাসূল (সা.) প্রেমে ইসলামী উম্মাহকে কীভাবে একতাবদ্ধ করা যায় তা এখনই ভাবতে হবে মুসলিম উম্মাহর।

লেখক : মানব ও ধর্ম গবেষক


311
তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে প্রশংসিত মহামানব হিসেবে। বিশ্ব মানবতার মুক্তির দিশারী হিসেবে। পবিত্র কোরআনের ধারক ও বাহক হিসেবে। সুলতানে মদিনা হিসেবে। দুনিয়া আখেরাতের বাদশা হিসেবে।

এ রকম কোনো ব্যক্তিত্বের জীবন রূপরেখা বর্ণনা করা কোনো স্বাধারণ মানুষের পক্ষেই সম্ভব নয়, তা তিনি এ বিষয়ে যতই বিজ্ঞ ও অভিজ্ঞ হন না কেন। কোনো মানুষের পক্ষেই সম্ভব নয় এ মহান ব্যক্তির পূর্ণত্বের পরিমাপ করা।

যিনি আল্লাহতায়ালার নুরে আলোকিত হয়ে অসামান্য কিতাব আল কোরআনের অবিচল ছাঁচে চরিত্রকে গড়েছেন। কবি বলেছেন, ‘বাহ্যত মনে হয় কোরআনের পাঠক, প্রকৃতপক্ষে তিনি নিজেই কোরআন।’

তিনি অসংখ্য মানুষকে হিদায়াতের কিস্তিতে আরোহণ করিয়েছেন। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে হিদায়াতের ওই কিস্তি ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ তরঙ্গের মুখে পড়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কিস্তি কালের সাগরে ভাসমান। ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পতাকা পতপত করে উড়ছে। আজো মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সম্মান ও মর্যাদা সুরক্ষিত এবং তার হিদায়াত সমানভাবে বহমান।

প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর নাজিল হয়েছে মহাগ্রন্থ আল কোরআন। কোটি কোটি মানুষ এ কোরআন অধ্যয়ন করে মণি-মুক্তময় জ্ঞান আহরণ করছে। তবে যুগে যুগে ইসলামের শত্রুরা প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সূর্যোদীপ্ত চেহারাকে ধুলো-মলীন করে তাদের অসৎ উদ্দেশ্য হাসিল করার চেষ্টা করেছে। ইসলাম যাতে বিকশিত হতে না পারে। তারপরও অপার রহস্যময় এ পৃথিবীতে এমন কোনো জ্ঞানী-গুণী নেই, যার কানে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আহ্বান পৌঁছেনি।

যুগে যুগে নবী রাসূলরা এ পৃথিবীতে প্রেরিত হয়েছেন একটি উদ্দেশ্য নিয়ে। শান্তির দিকে মানুষকে আহ্বান জানানো। সত্যের আহ্বান জানাতে গিয়ে এশিয়া-ইউরোপ-আফ্রিকা প্রভৃতি মহাদেশে দাওয়াতি কাজ ছড়িয়ে দিয়েছেন।

এ সম্পর্কে বিশ্ব বিখ্যাত লেখক এইচও আর্মস্ট্রং তার বই খড়ৎফ ড়ভ অৎধনরধ তে লিখেন, ‘পৃথিবী থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন, অজানা, অপরিচিত, অস্বাস্থ্যকর ও মরুময় এ আরব ভূমি।

এ ভূমির কঠোরতা আর নির্দয়তার মতো এর মানুষগুলোও ছিল অত্যন্ত বর্বর আর নিষ্ঠুর। তারা ছিল দরিদ্র, আর দুঃখ কষ্টে জর্জরিত। শতধাবিভক্ত, ব্যভিচারে আসক্ত ও বর্বরতায় লিপ্ত এক জাতি। কিন্তু হঠাৎ সেখানে এক মহান মানুষ জন্ম নিলেন। যিনি সব আরবকে ঐক্যবদ্ধ করলেন।

বর্বর মানুষের হৃদয় বিশ্বাসে ভরিয়ে দিলেন। এভাবে তার ক্ষমতা দ্রুত বেড়ে গেল। দশটি বছর তিনি আরব শাসন করলেন। তার অনুসারীরা ইউফ্রেটিস নদী পাড়ি দিয়ে পারস্যের সীমানা ছাড়িয়ে গেল।

উত্তরে তারা সিরিয়া পার হয়ে এশিয়া মাইনরে পৌঁছে রোম সাম্রাজ্যের অজেয় কনস্টান্টিনোপলের প্রাচীরে আঘাত করে। পশ্চিমে সাহারা মরুভূমি পাড়ি দিয়ে আফ্রিকা হয়ে আটলান্টিক মহাসাগর পর্যন্ত পৌঁছে গেল। সেখান থেকে স্পেনের সীমা ছাড়িয়ে ফ্রান্সে কম্পন তুলল। এভাবেই ইসলাম পৃথিবীর দিগদিগন্তে ছড়িয়ে পড়ল। আরব মরুভূমির বালুকাময় প্রান্তর থেকে ছড়াল আত্মবিশ্বাস আর অনুপ্রেরণার চালিকাশক্তি।’

প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমন এক সময় জন্ম নিলেন, যখন সমগ্র পৃথিবী অন্ধকারে ডুবেছিল। তিনি কোরআনের নুরে রাঙালেন জগৎ। তিনি বিশ্ববাসীর জন্য আল্লাহ পাকের অনন্ত অসীম রহমত ও নিয়ামতের জীবন্ত প্রতীক হয়ে থাকবেন চিরদিন।

এ সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা ফরমান, ‘তোমাদের কাছে এসেছেন তোমাদের মধ্য থেকেই একজন রাসূল। তোমাদের দুঃখ-কষ্ট তার পক্ষে দুঃসহ। তিনি তোমাদের মঙ্গলকামী, মুমিনদের প্রতি øেহশীল, দয়াময়।’

লেখক : প্রাবন্ধিক

312
মসজিদে নববী

‘রাসূল আমার ভালোবাসা/রাসূল আমার আলো আশা/রাসূল আমার প্রেম বিরহের মূল আলোচনা/রাসূল আমার কাজেকর্মে অনুপ্রেরণা’।

ওহুদ ময়দানে মুসলিম বাহিনীর বিপর্যয়ের কথা শুনে এক আনসারি মহিলা দৌড়ে যাচ্ছেন। তাকে দেখে একজন বলল, ‘তুমি কি শুনেছ তোমার সন্তান তোমার ভাই এবং তোমার স্বামী তিনজনই যুদ্ধে নিহত হয়েছেন’?

ওই আনসারি মহিলা খুবই স্বাভাবিকভাবে ইন্নালিল্লাহ পড়ে জবাব দেন, আমি তাদের আগে শুনতে চাই আমার দয়াল নবী কেমন আছেন? এই ছিল নবী (সা.)-এর ব্যাপারে একজন সাধারণ অবলা নারীর হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা।

কিন্তু আমরা আজ ভালোবাসার দাবিদার হয়েও আমাদের অনেকের ভালোবাসা সেকি, নবীজির নাম শুনে কোনো আশেক যদি শ্রদ্ধাবনত হয়ে করজোড় হয়ে হাতে চুমু খায়, প্রেমের আতিশয্যে দরূদ পাঠ করে দাঁড়িয়ে কিংবা নবীজির বিচ্ছেদ যন্ত্রণায় গড়াগড়ি খায় তখন এর পেছনে দলিল খোঁজা শুরু করি, কোন হাদিসের ভিত্তিতে এমনটি করল। আমরা বুঝতে চাই না প্রেম দুঃখ যন্ত্রণা দলিল দিয়ে চলে না। তা মানুষের সাধ্যের বাইরে। ‘মাজহাবে ইশ্ক দিগারাস্ত প্রেমের ধর্মই ভিন্ন’। নবী জীবনের প্রতিটি কর্ম নবী প্রেমিকদের জন্য নতুন জীবনযাপনের প্রেরণা।

নবীজির প্রতিটি আমলের স্মরণও আল্লাহর ইশারা বা হুকুমেই হয়ে থাকে। আল্লাহ বলেন, ‘ওয়ারাফা’না লাকা জিকরাকা। আমি আপনার স্মরণকে চিরন্তন উঁচু করে রাখব’। কারও স্মরণকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে রাখতে তার প্রতিটি আমল জীবনাচার পদ্ধতি বংশপরম্পরায় আলোচনা করতে হয়। এ আলোচনাগুলো বিভিন্ন অনুষ্ঠান প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে করলে তা মানুষের স্মৃতিপটে জেগে থাকে।

এ কারণেই আমরা আমাদের প্রিয়জন বা জাতীয় বীর বা নেতাদের জন্ম-মৃত্যুবার্ষিকী পালন করে থাকি। বিশ্ব মানবতার মুক্তির দূত নবী মোহাম্মদ (সা.) যিনি বিশ্ব জগতের রহমত, তার জীবনচরিতের বিভিন্ন দিক নিয়ে ভক্তরা নানা অনুষ্ঠান পালন করবে এটাই স্বাভাবিক। আখেরি চাহার শোম্বা তেমনই একটি দিন। যেদিন নবীজির সুস্থতার খবর শুনে মদিনাবাসী আনন্দিত হয়ে দান সদকা শুকরানা নামাজ আদায় করেছিলেন। এটাই সুন্নতে সাহাবা হিসেবে আমাদের দেশে পালিত হয়ে আসছে।

আখেরি চাহার শোম্বা নবীজির আশেকদের জন্য শুকরিয়া দিবস। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানসহ বিশ্বের অনেক দেশেই আরবি সফর মাসের শেষ বুধবারকে আখেরি চাহার শোম্বা হিসেবে স্মরণ করা হয়। বর্ণিত আছে, রাসূল (সা.) এ দিন রোগ থেকে মুক্তিলাভ করেন এবং গোসল করেন।

এ দিনের পর তিনি আর গোসল করেননি। এরপর তার রোগ বৃদ্ধি পায় অতঃপর ১২ রবিউল আউয়াল মাওলায়ে হাকীকির ডাকে সাড়া দেন। এ দিন মুসলমানরা গোসল করে, নতুন পোশাক পরে খুশবু লাগায়। তৎকালীন দিল্লির বাদশাহি কেল্লায় এ উৎসব উপলক্ষে বিশেষ দরবার বসত। এতে শাহজাদা ও আমির উমরারা শরিক হতেন (ফারহাঙ্গ-ই-আসফিয়া, ১ম খণ্ড, পৃ. ১২৬)।

মুসলমানরা মূলত রাসূল (সা.) যে গোসল করে সুস্থতা বোধ করেছিলেন তা স্মরণ করে শোকরিয়ার নামাজ পড়া, দান-সদকা করে থাকে। সহিহ হাদিসে তার অসুস্থতা, অসুস্থকালীন অবস্থা, কর্মোপদেশ এবং তার ইন্তেকালের অবস্থা সবিস্তারে বর্ণিত হয়েছে। দ্বিতীয় হিজরি সনের প্রখ্যাত ঐতিহাসিক ইবনে ইসহাক বলেন, ‘রাসূল (সা.) যে অসুস্থতায় ইন্তেকাল করেন সে অসুস্থতা শুরু হয়েছিল সফর মাসের কয়েক রাত বাকি থাকতে। (সিরাতুন্নবী : ইবনে হিশাম)।

বোখারি ও মুসলিম শরিফে বর্ণিত আছে রাসূল (সা.) ১১ হিজরির রবিউল আউয়াল মাসের সোমবার ইন্তেকাল করেন। তার ইন্তেকালের তারিখ সম্পর্কে মতভেদ থাকলেও ১২ রবিউল আউয়াল মতটিই সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য।

হজরত আলী (রা.) সূত্রে ইন্তেকালের এ তারিখটি বর্ণিত হয়েছে। আলা হজরত ইমাম আহমদ রেজা বেরলভী (রহ.) এটিকেই শুদ্ধতম রেওয়ায়েত বলে ফতোয়া দিয়েছেন। কারণ হজরত আলী (রা.) নবী পরিবারের এমন এক সদস্য যিনি অসুস্থতাকালীন, অবস্থায় মসজিদে যাতায়াত অবস্থায়, ইন্তেকাল পরবর্তী সময় গোসলকালীন কবরে শায়িত করার সময়ও রাসূল (সা.)-এর পাশে ছিলেন। কাজেই হজরত আলী (রা.)-এর কথাই অগ্রগণ্য।

সফর মাসের শেষ বুধবার। সকালবেলায় রাসূলে পাক (সা.) আয়েশা (রা.) কে ডেকে বললেন, ‘হুমায়রা! আমার জ্বর কমে গেছে, আমাকে গোসল করিয়ে দাও।

মদিনার প্রসিদ্ধ মিঠা পানির সাত কুয়া থেকে সাত মশক পানি সংগ্রহ করে ইষৎ উষ্ণ করে নবী (সা.) কে গোসল করানো হল। আসাহহূস সিয়ারে বর্ণিত আছে, রাসূল (সা.) বলেছিলেন, ‘আমার ওপর সাত মশক পানি বইয়ে দাও, মশক যেন পূর্ণ হয়, এমন যেন না হয় তা থেকে কিছু পানি পড়ে গেছে। ‘রাহমাতুল্লিল আলামিন’ গ্রন্থে আছে, রাসূল (সা.) পাথরের জলাধারে বসে সাতটি কুয়ার সাত মশক পানি নিজের মাথায় ঢালিয়ে নেন। এটিই ছিল হুজুরের দুনিয়ার শেষ গোসল। অতঃপর তিনি সুস্থতা ও আরাম বোধ করেন।

গোসল শেষে নবী (সা.) মা ফাতেমা ও নাতিদ্বয় ইমাম হাসান ও ইমাম হোসাইনকে ডেকে এনে সবাইকে নিয়ে সকালের নাশতা সারেন। এ খুশির খবর হজরত বেলাল (রা.) এবং সুফফাবাসী সাহাবিরা দ্রুত মদিনার ঘরে ঘরে পৌঁছে দেন। স্রোতের মতো নবীপ্রেমিকরা নবীজির দর্শনে ভিড় জমাতে লাগল। মদিনার অলিগলিতে আনন্দের ঢেউ লেগে গেল।

ঘরে ঘরে শুরু হল সদকা, খয়রাত, দান-খয়রাত ও শুকরিয়া জ্ঞাপন। হজরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.) খুশিতে ৫,০০০ দিরহাম ফকির-মিসকিনদের জন্য বিলিয়ে দেন। হজরত ওমর ফারুক (রা.) দান করেন ৭,০০০ দিরহাম, হজরত উসমান (রা.) ১০,০০০ দিরহাম, হজরত আলী (রা.) দান করেন ৩,০০০ দিরহাম। মদিনার ধনাঢ্য মুহাজির সাহাবি হজরত আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা.) খুশিতে আল্লাহর রাস্তায় ১০০ উট দান করে দিলেন। কেউ কেউ খুশিতে ক্রীতদাস মুক্তি দিয়ে দেন, যাদের সম্পদ ছিল না তারা সালাতুস শুকুর আদায় করেন। নবীজির সুস্থতা ও আরামের খবরে সাহাবায়ে কেরামদের জানি আর মালি আমলের বিষয়টি আজ আমাদের জন্য একটি শিক্ষণীয় বিষয় হয়ে আছে।

লেখক : email: mueenchishty@gmail.com

313
‘পৃথিবীর মন্দরাও মনে করে কিয়ামতের মাঠে তাদের ধার্মিক শ্রেণীতে ফেলা হবে।’ হারুনের দিল কেঁপে উঠল বাণী শুনে। নিজে নিজেই বললেন, শান্তির খোঁজে এ উপদেশ যথেষ্ট।

ফটকে টোকা দিল বন্ধু। ভেতর থেকে আয়াজ বিরক্ত হয়ে জানতে চাইলেন, কে ওখানে। বাদশা হারুন রশিদ এসেছেন। বলতেই আয়াজ বিরক্ত হলেন। আমার কাছে তার কী প্রয়োজন। যেন ধমকালেন। তার কাছেই বা আমার কী প্রয়োজন। আমাকে দুনিয়ায় টেনো না। বন্ধু বললেন, বাদশার সম্মান রক্ষা করে ফটক খুলুন। আহ! চঞ্চল করো না আমাকে।

ফটক মেলে প্রবেশের অনুমতি দিলেন। ফিরে থাকলেন অন্যদিকে। বাদশার মুখ যেন দেখতে না হয়। হঠাৎ আলো নিভিয়ে দিলেন। আঁধারেই আয়াজের হাত চেপে ধরলেন বাদশা। আফসোস করলেন আয়াজ। হায়!

এই নরম কোমল হাত জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা পেলে হয়। বলেই নামাজে দাঁড়ালেন। বাদশা কেঁদে কেঁদে বলে চললেন, দয়া করে আরও কিছু বলুন আমাকে। নামাজ শেষে আয়াজ বললেন, মহানবীর আত্মীয় ছিলেন তোমার পিতা। তিনি তার কাছে খলিফা হওয়ার বাসনা করেছিলেন। মহানবী এ কথা বলেছিলেন তাকে। হাজার বছর খলিফাগিরি করার চেয়ে মাবুদের হৃদয়ে আশ্রয় খোঁজ।

আমি তোমাকে রাজ্য রেখে মনোরাজ্য দান করলাম। আয়াজ চুপ হলেন। দয়া করে আরও কিছু বলুন। বাদশা বিনয়ী অনুরোধ জানালেন। আয়াজ এবার খলিফা আবদুল আজিজের উপদেষ্টাদের উপদেশ শোনালেন। ‘পরকালের পাকড়াও থেকে বাঁচতে হলে বৃদ্ধদের পিতা ভেব।

যুবকদের, বালকদের সন্তানের চোখে দেখ। নারীদের সঙ্গে বোন বা মায়ের আচরণ কর। এ রাজ্যই তোমার ঘর। প্রজারা গোটা এক পরিবার। পিতৃতুল্যদের শ্রদ্ধা জানিও। ভাইদের বুকে টেনে নিও। শিশুদের যত্ন নিও। ভয় হচ্ছে।

তোমার নারী সুলভ চেহারা দোজখে না পোড়ে। বাদশা কেঁদে জার জার হলেন। বুক ভাসালেন চোখের জলে। আয়াজ ফের বলতে শুরু করলেন একটু থেমে। মাবুদকে ভয় কর। সাবধান, বিচার দিবসে সবাইকে প্রশ্ন করা হবে। পাপ, পুণ্য সেদিন নিত্তি দিয়ে মাপা হবে। সবাই সুবিচার পাবে।’

যদি কোনো বুড়ি খিদের কষ্টে মাবুদের দরবারে নিশি রাতে কাঁদে। যদি খিদায় না ঘুমান। যদি মাবুদের কাছে অভিযোগ করে তোমার বিরুদ্ধে, তুমি পাকড়াও হবে। আয়াজের সব ঐশী বাণীতে কেঁদে গড়াগড়ি হলেন বাদশা।

শান্ত হয়ে জানতে চাইলেন, আপনার কি কোনো ঋণ আছে? আয়াজ উত্তর দিলেন, হ্যাঁ, মাবুদের কাছে আমার অনেক ঋণ আছে। এজন্য যদি তিনি আটক করেন তবে কতই না আফসোস। কারও কাছে ঋণী কিনা জানতে চেয়েছি।

হাত কচলালেন বাদশা। শুকরিয়া মাবুদের কাছে। তার প্রচুর ধনসম্পদ আমি অর্জন করেছি। তারপর বাদশা হারুন হাজার মুদ্রা ভরা থলি রাখলেন তার পায়ের কাছে। এই মুদ্রা অবৈধ নয়। এসব মায়ের সম্পত্তি বেঁচে পেয়েছি। দয়া করে গ্রহণ করুন।

ফজল আয়াজ খুব বিরক্ত হলেন। হায়! এসব উপদেশ বাণী কোনো উপকার আসেনি তোমার। এখানে বসে থেকেই অত্যাচার শুরু করলে! তোমাকে হালকা করে পরিত্রাণের চেষ্টা করছি। তুমি আমাকে আক্রান্ত করছ। ঠেলে দিচ্ছ আঁধারে।

যাকে দেয়ার তাকে বঞ্চিত করে থলি দিচ্ছ অন্যকে। হে, হারুন যা কিছু আছে মাবুদকে বিলিয়ে দাও। উপদেশ বাণীতে কোনো উপকারই তোমার হয়নি। বলেই তাদের বিদায় দিয়ে শক্ত করে ফটক বন্ধ করলেন। ভাঙাচোরা শরীরে বিষণ্ণতা অনুভব করলেন বাদশা। ঘোড়ায় চড়ে ফুরফুরে সতেজ মনে বললেন- সত্যিই তিনি মক্কার কামেল দরবেশ।

মানুষ যদি খারাপ সবকিছু ছেড়ে খাঁটি তওবা করে, মাবুদ তাকে মাফ করে দেন। সে যা চায় তাই তাকে দান করেন। আমরা যদি ছোট থেকেই তাওবা করতে শিখি, আমাদেরও ক্ষমা করবেন মাবুদ। আমরাও তখন ঐশী পুরস্কার পাব।

দরবেশ আয়াজের অমর কথা

* নির্জনতা নামে রাতে। রাত্রি আমায় আনন্দ দেয়। ষ দিনে বিষণ্ণতা নামে, হইচই শব্দে। দিবস অপছন্দ আমার। * নির্জনতাকে যে ভয় পায় সে দুনিয়াপ্রেমী। ষ জান্নাতে কান্না যেমন আশ্চর্য হওয়া, অস্থায়ী সংসারে হেসে ওঠাও তেমনই। যে মাবুদকে ভয় করে, সমাজ তাকে ভয় পায়। যে ভয় পায় না মাবুদকে তাকে ভয় করে না কেউ। * সংসারে পা রাখা সহজ। খুব কঠিন বেরোনো। * কারো অনুরোধে সৎ কাজকে ভালোবাসা কপটতা। লোক দেখানো সৎ কাজ করা, আগুন পূজার মতো। * এই দুই ভাব ছাড়তে পারলে মাবুদ তোমাকে হেফাজত করবেন। মাবুদের প্রেম ঢুকবে হৃদয়ে। * কেউ কেউ পবিত্র স্থান থেকে পবিত্রতা লাভ করে। অনকেই মক্কা গিয়েও অপবিত্রতা নিয়ে ফিরে আসে।

লেখক : সাংবাদিক, শিশু সাহিত্যিক

314
মসজিদে নববী

১২ রবিউল আওয়াল ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) হচ্ছে হিকমতি দুনিয়া ও কুদরতি বেহেশতের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ দিন।

নবী রাসূলদের জন্য আল্লাহপাকের রহমত-বরকত-শান্তি সার্বক্ষণিক। আল্লাহপাক নবী রাসূলদের জন্ম-মৃত্যু দিনে বিশেষভাবে শান্তি বর্ষণ করেন কোরআনের আয়াত থেকে সুস্পষ্ট হচ্ছে। কোরআনের এ আয়াত থেকে বোঝা যাচ্ছে জন্মদিনে যেভাবে শান্তি বর্ষিত হয়- মৃত্যু দিনেও সেভাবে শান্তি বর্ষিত হয়। নবীজির জন্ম-মৃত্যু একই দিনে হলেও একইভাবে শান্তি নাজিল হয়।

রাসূল পাকের উম্মত হিসেবে আল্লাহর বান্দা হিসেবে আল্লাহর রঙে রঞ্জিত হওয়ার জন্য আমাদের রাসূল পাকের প্রতি দরূদ-সালাম পাঠাতে হবে এবং সাধ্যমতো গরিব-মিসকিনদের খাওয়াতে হবে। আয়াত (১০৭:৪), (৩৩:৫৩) ঈদে মিলাদুন্নবী সাধ্যমতো উদযাপন করলে আল্লাহ ও রাসূল (সা.)-এর রহমত-বরকত শান্তি বর্ষিত হবে বান্দার ওপর।

সূরা মারইয়াম : তোমাকে ইয়াহইয়া নামের পুত্রের সুসংবাদ জানাচ্ছি, (১৫) তার ওপর শান্তি হোক জন্মের দিনে, মৃত্যুর দিনে এবং পুনরুত্থানের দিনে। (৩৩) আর আমার প্রতি শান্তি আমার জন্মদিনে, মৃত্যু দিনে এবং জীবিত পুনরুত্থিত হওয়ার দিন। (৩৪) এ হল ঈসা ইবনে মরিয়মের জন্য।

সূরা আলে ইমরান : ১৬৯। যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে, তাদের আপনি কখনও মৃত বলে ধারণা করবেন না। বরং তারা জীবিত, তারা তাদের রবের থেকে রিজিকপ্রাপ্ত হন।

সূরা আল বাকারাহ : ১৫৪। আর যারা আল্লাহর পথে মৃত্যুবরণ করে তাদের তোমরা মৃত বল না, বরং তারা জীবিত অবশ্য তোমরা তা বোঝ না। ১৬৩৭। হজরত আবু দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেছেন : তোমরা জুমার দিন আমার প্রতি বেশি দরূদ পাঠ করবে। কেননা তা আমার কাছে পৌঁছানো হয়, ফেরেশতারা তা পৌঁছে দেয়।

যে ব্যক্তি আমার প্রতি দরূদ পাঠ করে, তা থেকে সে বিরত না হওয়া পর্যন্ত তা আমার কাছে পেশ হতে থাকে। রাবি বলেন, আমি বললাম : ইন্তেকালের পরেও? তিনি (সা.) বললেন : হ্যাঁ, ইন্তেকালের পরেও।

কোরআনের আয়াত ও হাদিস থেকে স্পষ্ট, নবী রাসূলরা ও আল্লাহর পথে যারা নিহত হন তাদের মৃত ভাবা যাবে না বরং তারা জীবিত এবং আল্লাহর রিজিকপ্রাপ্ত। নবী রাসূল ও শহীদানদের জন্ম-মৃত্যু দিবসে গরিব-মিসকিনসহ মানুষ খাওয়ানো আল্লাহ প্রদত্ত রিজিককে স্মরণ করা হয়। আল্লাহ ও রাসূল পাক সন্তুষ্ট হন। আল্লাহ পাকের বিবেচনায় জীবিতরা রিজিকপ্রাপ্ত।

সূরা আল-মুমতাহিনা : ১৩। হে মুমিনরা যাদের ওপর আল্লাহতায়ালা অসন্তুষ্ট তোমরা তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব কর না। তারা অবশ্যই পরকাল সম্পর্কে তেমনি নিরাশ হয়েছে, যেমনি কাফেররা কবরে থাকা লোকদের সম্পর্কে নিরাশ হয়েছে।

যাদের মৃত্যুবার্ষিকীতে রাসূল পাকের ওপর দরূদ সালাম পাঠানো হবে ও গরিব-মিসকিনসহ মানুষকে খাদ্যদান করা হবে সেই কবরবাসী ও আয়োজকদের ওপর আল্লাহ ও রাসূল (সা.)-এর রহমত-বরকত-শান্তি বর্ষিত হবে। জন্ম-মৃত্যুবার্ষিকী পালন করার মধ্যে এটাই প্রমাণ করে, জীবিতরা কবরে থাকা লোকদের সম্পর্কে ও পরকাল সম্পর্কে নিরাশ নয় বরং আল্লাহ ও রাসূলের রহমত-বরকত করুণা শান্তির ওপর নির্ভরশীল।

সূরা মাউন : (১) আপনি কি দেখেছেন, সেই ব্যক্তিকে যে দ্বীনকে মিথ্যা মনে করে? (২) সে তো ওই ব্যক্তি যে এতিমকে ধাক্কা দেয়। (৩) এবং মিসকিনকে খাদ্যদানে উৎসাহিত করে না।

সূরা মাউনে দেখা যাচ্ছে, মিসকিনকে খাদ্যদানে উৎসাহিত না করলে ধর্মকে অস্বীকারকারী হতে হয়। শুধু নামাজ-রোজা নয়, গোটা ধর্মকে অস্বীকার করা হয়। কোনো রকমের ছলচাতুরী করা যাবে না। মসজিদ-মাদ্রাসা এমনকি বেহেশত নির্মাণের দোহাই দিয়েও গরিব-মিসকিনকে খাদ্যদানে নিরুৎসাহিত করা যাবে না।

সূরা আল এনশিরাহ : (৪) আমি তোমার স্মরণকে সর্বোচ্চ আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছি।

এ আয়াতে বোঝা যাচ্ছে, রাসূল পাকের স্মরণকেই আল্লাহ পাক সর্বোচ্চ মর্যাদা-সম্মান দিয়েছেন। ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপনে রাসূল পাককে সর্বাধিক স্মরণ করা হয়।

সূরা আল আহযাব : (৫৩)। হে মুমিনরা! তোমরা নবীর ঘরে তার অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করো না, খাবার জন্য তা পাকানোর অপেক্ষায় বসে থেক না। কিন্তু তোমাদের যখন ডাকা হয় তখন প্রবেশ কর। এরপর তোমরা যখন খানা খেয়ে ফেলবে তখন বেরিয়ে যেও।

এই আয়াতে দেখা যাচ্ছে, রাসূল পাক মানুষ খাওয়াতেন গরিব-মিসকিন-ধনী সবাইকে। মানুষকে খানা খাওয়ানো নবীপ্রেমিকদের ফরজ। ঈদে মিলাদুন্নবীসহ জন্ম-মৃত্যু দিনে মানুষকে খাদ্যদান মৃত ব্যক্তির জন্য আল্লাহর শান্তি বর্ষণের উসিলা। সূরা আল আহজাব : (৬)। আর মুমিনরা নবীদের কাছে তাদের নিজের চেয়েও ঘনিষ্ঠ।

আয়াত (৩৩:৬) থেকে বুঝে নিতে হবে, রাসূল পাক আমার ওপর আমার নিজের চেয়ে বেশি কর্তৃত্বশীল। ঈদে মিলাদুন্নবী অর্থাৎ রাসূল পাকের জন্ম-মৃত্যু দিবস উদযাপনের মাধ্যমে এটাই প্রমাণ করতে হবে যে, রাসূল পাক আমার পিতা-মাতা, স্ত্রী-পুত্র পরিবার ও সহায় সম্পত্তির, এমনকি আমার নিজের চেয়েও আপন।

লেখক : প্রাবন্ধিক, টোপেরবাড়ি দরবার শরিফ, ধামরাই

315
বর্তমানে চুলপড়া সমস্যা একটি কমন বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বয়সের ভেদাভেদ নেই, এটি যেকোন বয়সেই হতে পারে। কি পুরুষ কি নারী অথবা কিশোর-কিশোরী। চুলপড়া সমস্যা কোনো রোগ নয়। অন্য যে কোনো রোগ অথবা সমস্যা থেকে চুল পড়তে পারে।

মেল প্যাটার্ন বল্ডনেস হচ্ছে পুরুষের চুলপড়া সমস্যার অন্যতম একটি ধরন। সাধারণত জিন ও পুরুষ সেক্স হরমোন হিসেবে খ্যাত টেস্টেসটেরনই এর জন্য দায়ী।

এ ধরনের চুলপড়া সমস্যাকে এড্রোজেনেটিক এলোপেসিয়া বলা হয়। এ ধরনের চুলপড়া সমস্যা বুঝতে বা ডায়াগনসিস করতে খুব একটা সমস্যা হয় না।

হেয়ারলাইন বা কপালের ওপরের অংশের চুল ফাঁকা হয়ে যায় এবং মাথার উপর ভাগের অংশে চুল কমে যায়। এ ক্ষেত্রে চুলপড়ার ধরন দেখেই বোঝা যায়  এটা হরমোনাল বা বংশগত কারণে হচ্ছে।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পুরুষ হরমোনজনিত কারণে চুলপড়া সমস্যার কোন ভালো চিকিৎসা নেই। কারণ হরমোন পরিবর্তন করে চুলপড়া সমস্যার চিকিৎসা যৌক্তিক নয়।

তবে মেলপ্যাটার্ন বল্ডনেস বা পুরুষের চুলপড়া সমস্যার ক্ষেত্রে মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্র্রেশন এ পর্যন্ত দুটি ওষুধ অনুমোদন দিয়েছে।

আশার কথা— এ দুটি ওষুধই এখন বাংলাদেশে তৈরি হচ্ছে। এর একটি হচ্ছে মিনক্সিডিল। মিনক্সিডিল হচ্ছে একধরনের লোশন বা সলিউশন যা সরাসরি মাথার ত্বকে ব্যবহার করতে হয়। এই ওষুধটি হেয়ার ফলিকিউল স্টিমুলেট করে এবং চুল গজাতে সাহায্য করে।

এ ছাড়া এড্রোজেনেটিক এলোপেসিয়ায় আর একটি ওষুধ ব্যবহার করা হয়। এটি হচ্ছে ফিনাস্টেরাইড। এটা খাওয়ার ওষুধ। দৈনিক ১ মিলিগ্রাম করে এ ধরনের ওষুধ সেবন বাঞ্ছনীয়। এই ওষুধটি মিনক্সিডিল অপেক্ষা ভালো এবং চুলপড়া কমাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি চুল গজাতেও কার্যকর।

তবে একটি কথা মনে রাখতে হবে— শুধু ওষুধ দিয়েই চুলপড়া সমস্যার সমাধান হবে না। চুলপড়া সমস্যার প্রকৃত কারণ জেনে চিকিৎসার পাশাপাশি যথাযথ পরিচর্যা করতে হবে।

আর রোগীকে আস্থাশীল করতে না পারলে রোগীও দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা নিতে উৎসাহ হারিয়ে ফেলতে পারে। তাই চুলপড়া সমস্যার চিকিৎসা যত বেশি জরুরি, তার চেয়ে বেশি জরুরি রোগীর আস্থা ও ধৈর্য। কারণ ধৈর্য ধরে যথাযথ চিকিৎসা নিতে পারলে অবশ্যই উপকার পাওয়া যাবে।

সূত্র: ইন্টারনেট



Pages: 1 ... 19 20 [21] 22 23 ... 33