Daffodil International University

Help & Support => Common Forum/Request/Suggestions => Topic started by: Ishtiaque Ahmad on October 11, 2015, 03:53:58 PM

Title: সিটিং ডিজিজ: এক নিরব ঘাতক
Post by: Ishtiaque Ahmad on October 11, 2015, 03:53:58 PM
পৃথিবীতে এক গোপন ঘাতক এসেছে। এর নাম সিটিং ডিজিজ (Sitting Disease)। এটি নিরবে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, ‘মানুষের দেহের বিবর্তন হয়েছে হাঁটার কারণে।’ দীর্ঘ সময় বসে থাকা হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, ক্যান্সার (বিশেষত স্তন ও কোলন: যাতে বিশিষ্ট লেখক হুমায়ুন আহমেদ মারা গিয়েছিলেন) স্থুলতা, রক্তে উচ্চ মাত্রার কোলেস্টেরল, কোমড়ে ব্যথা, ডিমেনশিয়া, বিষণ্নতা ও অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি বহুলাংশে বাড়িয়ে দেয়।

আপনি কী সিটিং ডিজিজে ভুগছেন?

একটু খেয়াল করে বলুন তো, প্রতিদিন আপনি কত ঘণ্টা বসে থাকেন? অফিসের কাজে, পড়ার টেবিলে, বাসে বা গাড়িতে, খাবার টেবিলে, টিভির সামনে, ফেসবুক বা কম্পিউটারের সামনে? যোগ করুন।

এক গবেষণায় দেখা যায়, দীর্ঘ সময় বসে থাকার কারণে আমেরিকানদের গড় আয়ু কমে যাচ্ছে। যদি সারাদিন গড়ে ৩ ঘণ্টা বা এর কম সময় বসে থাকেন, তবে গড়ে তাদের আয়ু ২ বছর বেড়ে যাবে। আর এর মধ্যে টিভি দেখার সময়টা যদি ২ ঘণ্টার থেকে কমিয়ে আনে তবে ১ দশমিক ৪ বছর বাড়তি জীবন বোনাস পাবে।

আপনি সারাদিনে মোট কত ঘণ্টা বসে থাকেন?

নড়াচড়া করুন: আগে ধারণা করা হতো যে ছেলেটা টানা বহু সময় জড়ভারত হয়ে বই নিয়ে বসে থাকে, সে লক্ষ্মী ছেলে। অফিসে যে কর্মী নিচে নেমে চা খায় না, টেবিলে যাকে সব সময় পাওয়া যায়, সে নিবেদিত প্রাণ। এখন এই ধারণা বদলাবার সময় এসেছে।

ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি ইনসুলিনের উপর কাজ করে ডায়াবেটিস প্রবণতা কমায়, চিনি ও চর্বির বিপাকে কাজ করে দেহের ইনফ্লামেশন কমায়, একইসঙ্গে কিছু কিছু হরমোনের ভারসাম্যহীনতাও কমায়। সুতরাং যত নড়াচড়া করবেন, দেহঘড়ি ততো স্বাস্থ্যকর ও সহজ হবে।

কাজেই প্রতি ঘণ্টায় ঘণ্টায় নড়াচড়া করুন। থ্যাবড়া মেরে ‘গুড’ বয় হয়ে বসে থাকবেন না।

নিয়মিত ব্যায়াম সিটিং ডিজিজের সমাধান নয়: আশ্চর্য হলেও সত্যি, উইসকনসিন ডিসকভার-তে এই কথা উঠে এসেছে। যারা প্রতিদিন নিয়ম মেনে দীর্ঘ সময় ব্যায়াম করেন তারাও রেহাই পাবেন না সিটিং ডিজিজের প্রাণঘাতী থাবা থেকে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, যিনি নিয়মিত ব্যায়াম করেন এবং যিনি মোটেই ব্যায়াম করেন না, উভয় ব্যক্তিই সিটিং ডিজিজে আক্রান্ত হতে পারেন।

কতক্ষণ সর্বোচ্চ বসে থাকবো: গড়ে প্রতি আধা ঘণ্টায় (বসার পরে) এক থেকে তিন মিনিট উঠে দাঁড়ান বা হাঁটুন। আপনার চেয়ারকে ট্রেডমিল বা হাটার যন্ত্র দিয়ে রিপ্লেস করার প্রয়োজন নেই।

সিটিং ডিজিজ থেকে মুক্তির উপায়:

•    অভ্যাস করুন (যদি চিকিৎসকের নিষেধ না থাকে)
দ্রুত হাঁটুন: ক্যালরি দ্রুত পুড়বে, পায়ের পেশী শক্তিশালী হবে-যা আপনার ফুসফুস ও হৃদপিণ্ডের জন্য উপকারী। আমরা সবাই ‍জানি, দ্রুত হাঁটা জীবনী শক্তি বাড়ায়।

সিঁড়ি ভাঙুন: আপনি হয়তো হাজার বার এ কথা শুনেছেন। কিন্তু এটা কি জানেন, শুধু মাত্র ২ তলা সিঁড়ি দিয়ে ওঠা-নামা করলে বছরে এমনি এমনিই আপনার ৬ পাউন্ড পর্যন্ত ওজন হাওয়া হয়ে যাবে?

আরও মজার কথা হলো, দিনে ২ মিনিট করে সপ্তাহে ৫ দিন সিঁড়ি বেয়ে ওঠা হলো ৩৬ মিনিট হাঁটার সমান। নিজেকে একটা সহজ টার্গেট দিন।

ধরুন-প্রথম সাতদিনে ১ তলা সিড়ি বেয়ে উঠে লিফট নেবেন। তারপরের সপ্তাহে ২ তলা উঠে লিফট নিন। এর ৭ দিন পরে ৩ তলা উঠে লিফট নিন।

এভাবে প্রতিদিন ৬ তলা পর্যন্ত সিঁড়ি ভাঙার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করুন। (সিঁড়ির ধাপ প্রতি তলায় ১০টি যেখানে, ৩ তলা = ৬০ ধাপ) ধাপ কম-বেশি নিজে নিজে অ্যাডজাস্ট করে নিন। উপরে উঠতে যে পরিমাণ শক্তি লাগে, নিচে নামতে তার আর্ধেক শক্তি ক্ষয় হয়।

বিভিন্ন সময় হাঁটুন: দুপুরে খাবার পর ১৫ মিনিট হাঁটুন। কর্মজীবীদের ক্ষেত্রে যদি লাঞ্চ ব্রেক ৩০ মিনিট হয়, তবে ১৫ মিনিটে খেয়ে ১৫ মিনিট হাঁটুন। এই ১৫ মিনিটের হাঁটা আপনাকে পরবর্তী ২ ঘণ্টা চাঙ্গা রাখবে।

প্রতিদিন ১০ হাজার ধাপ হাঁটুন। পেডোমিটার নামে যন্ত্র আপনি কত ধাপ হাঁটছেন তা মেপে দেবে। মোবাইলেও অ্যাপ পাওয়া যায়।

তবে এই ধাপগুলো একবারে হাঁটলে হবে না। প্রতি আধা ঘণ্টা অন্তর অন্তর ১ থেকে ৩ মিনিট হাঁটুন।

নাচুন: মোবাইলে প্রতি ৩০ মিনিট পর অ্যালার্ম দিন। উঠে দাঁড়ান, নাচের অঙ্গভঙ্গী করুন। দেহ ও মন দুটোই ভালো থাকবে।

দাঁড়িয়ে মোবাইলে কথা বলুন:  ফোন এলে দাঁড়িয়ে যান।

স্ট্রেচিং করুন: দিনে ৫ থেকে ৬ বার স্ট্রেচিং ব্যায়াম করলে এক মাসের মধ্যেই পরিবর্তন লক্ষ্য করবেন। দেহে সব সময় ফুরফুরে ভাব থাকবে।

কাফ মাসেল: দাঁড়িয়ে কাজ করার সময় এক পায়ে ভর দিয়ে অন্য পা সামান্য উচু করুন, ২ সেকেন্ড থাকুন। এবার অন্য পা তুলুন। এভাবে প্রতিদিন ২০, ৪০ বা ৬০ বার করুন।

ঘর সাজান: ফার্নিচার এমনভাবে সাজান যেন বসার জায়গা কমে যায় এবং হাঁটা এবং দাঁড়ানোর প্রয়োজন হয়। যেমন: খাবার পানিটা দূরে রাখুন, জানালার পাশে।

•    অফিসের আচরণ পরিবরতন  করুন:
কলিং বেলকে না: ফাইল পাঠাতে পিয়নের সাহায্য না নিয়ে নিজেই যান। এতে আন্তরিকতা যেমন বাড়বে, হাঁটাও হয়ে যাবে। আবার নিজের চা, পানি, নিজেই নিয়ে নিলে আপনার সম্মান মোটেও কমবে না।

দাঁড়িয়ে আড্ডা দিন: আড্ডার সময় দাঁড়িয়ে থাকুন। যতটা সম্ভব দাঁড়িয়ে থাকুন।

হেঁটে হেঁটে মিটিং: কিছু কিছু মিটিং যা না বসেও করা যায়, সেগুলো হেঁটে হেঁটে করুন। এ ক্ষেত্রে মোবাইলের ভয়েস রেকর্ডারে নোট নিন।

গাড়ির ব্যবহার কমান: প্রথম সপ্তাহে ২০ ধাপ, এরপর ৩০ ধাপ, এভাবে ক্রমান্বয়ে গন্তব্যের অর্ধেকটা যেতে পারেন কিনা দেখুন।

পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করুন: এক স্টপেজে নেমে পড়ুন এবং হাঁটুন। প্রয়োজনে আবার বাসে উঠুন।

•    বাসায় যা করবেন:
বাগান করুন: ছাদে, বারান্দায়, বেসিনের উপর ছোট ছোট টবে গাছ লাগান। প্রতিদিন পানি দিন। মাটি খুঁচিয়ে দিন। কিছু কিছু গাছ আছে যেগুলো ছায়ায় রাখা যায়। সেগুলো ঘরে রাখুন। এতে ঘরের বাতাস বিশুদ্ধ হবে। সেই সঙ্গে আপনার নড়াচড়াও হয়ে যাবে।

সঙ্গীকে সাহায্য করুন: স্ত্রীকে চা, পানি এগিয়ে দিলে এই সামান্য নড়াচড়া কেবল আপনার স্বাস্থ্যই ভালো রাখবে না, দাম্পত্য জীবনও সুন্দর হবে। যারা সংসার জীবন শুরু করেননি তারা পরিবারের অন্য সদস্যদের যত্ন নিন। সম্পর্কের মাধুর্যতা বাড়বে। একইসঙ্গে রান্না ঘরে দাঁড়িয়ে কাজ করুন।

টিভির সামনে বসবেন না: বাসায় ফিরে টিভি বা খবরের কাগজ নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পার করবেন না। নাচের অনুষ্ঠান হচ্ছে এমন একটা চ্যানেল ধরে নিজেও একটু নেচে নিন এবং দাঁড়িয়ে টিভি দেখুন।

বাচ্চাদের সঙ্গে নিন, দেখবেন নির্মল স্বাস্থ্যকর বিনোদনের স্পর্শ পাবেন।

প্রাইভেট টিউটরকে সচেতন করুন: আপনার বাচ্চাদের যিনি পড়ান তাকে বলুন, প্রতি ৩০ মিনিট পর বাচ্চাদের ৫ মিনিটের ব্রেক দিতে। এতে বাচ্চাদের নড়াচড়া যেমন হবে, মনোযোগও তেমন রিচার্জ হবে।

ছোট ছোট মেরামতের কাজ: বাসায় বাল্ব লাগানো, এসি পরিষ্কার করা ইত্যাদি মেরামত কাজ নিজেই করুন, বাচ্চাদেরও শেখান।

ঘর পরিষ্কার করুন: নিয়ম করে ধূলো ঝাড়ার কাজ করুন। স্বাস্থ্যকর পরিবেশের পাশাপাশি আপনার নড়াচড়াও হবে যাবে।

বড় জগে পানি রাখুন: বড় জগ ভরে পানি রাখুন। এতে গ্লাসে পানি ঢালার সময় ক্যালরি খরচ হবে।

রান্না ঘরে গ্যাজেট কমান: মেশিনে সালাদ না বানিয়ে বা রোটি মেকারে রুটি না বানিয়ে হাতে বানান। সাধারণত মহিলাদের বলা হয় কৈ মাছের প্রাণ। সহজে মরে না।

তার কারণ, বাড়ির কর্তারা অফিসের কাজ শেষে বাসায় ফিরে বাবু হয়ে বসে বিশ্রাম করতে পারেন। কিন্তু গিন্নিমা মরার আগে বিশ্রাম পান না। এখন দেখা যাচ্ছে, এই বিশ্রাম না পাওয়াটাই সাপে বর হয়েছে।

ফার্নিচার পরিবর্তন: অনেক অফিসে বা বাসায় পুরাতন চেয়ারগুলো বাদ দিচ্ছে। যেমন ওয়েলনেস বল। ওয়েলনেস বল চেয়ারের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করুন।
Title: Re: সিটিং ডিজিজ: এক নিরব ঘাতক
Post by: irina on October 19, 2015, 04:23:02 PM
Good to know.
Title: Re: সিটিং ডিজিজ: এক নিরব ঘাতক
Post by: Emran Hossain on October 19, 2015, 05:12:43 PM

Very nice post, Thanks for this.
Title: Re: সিটিং ডিজিজ: এক নিরব ঘাতক
Post by: Shekh Moniruzzaman on October 20, 2015, 04:59:23 PM
Thank you for sharing........... :)
Title: Re: সিটিং ডিজিজ: এক নিরব ঘাতক
Post by: Nahian Fyrose Fahim on October 25, 2015, 09:45:59 AM
Nice sharing
Title: Re: সিটিং ডিজিজ: এক নিরব ঘাতক
Post by: subrata.ns on November 13, 2015, 10:43:09 PM
Very informative and a matter of concern
Title: Re: সিটিং ডিজিজ: এক নিরব ঘাতক
Post by: ayasha.hamid12 on November 23, 2015, 03:10:14 PM
Very much informative... Thanks a lot.  :D