Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Messages - AwratHossain

Pages: [1]
1
কেবল শারীরিক স্বাস্থ্য নয়, মনের সুস্থতার সঙ্গেও মুখের সুস্বাস্থ্যের যোগসূত্র আছে। শিশু থেকে বৃদ্ধ—সব বয়সীর ক্ষেত্রেই এটি প্রযোজ্য। গবেষণায় দেখা গেছে, নানা ধরনের মানসিক সমস্যার সঙ্গে মুখ ও দাঁতের সম্পর্ক রয়েছে।

দাঁতে ক্যারিজ বা গর্ত শিশুদের খুব পরিচিত একটি সমস্যা। স্কুলগামী শিশুদের প্রিয় খাবার যেমন: আইসক্রিম, চকলেট, কোমল পানীয়,
কৃত্রিম জুস, আলুর চিপস, ফাস্ট ফুড ইত্যাদি দাঁতের গর্ত তৈরি করে। এ সমস্যার চিকিৎসা না করালে একপর্যায়ে তা দাঁতের মজ্জাকে আক্রান্ত করে। তখন ব্যথা শুরু হয়। পরবর্তীকালে দাঁতের গোড়া ফুলে যায়, দাঁত ভেঙ্গে যায়। যেসব শিশুর মুখের স্বাস্থ্য ভালো থাকে, তাদের লেখাপড়ায় আগ্রহ, নিজের ওপর আস্থা ও স্মরণশক্তি স্বাভাবিক থাকে। শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও পর্যাপ্ত পুষ্টি, প্রাণচঞ্চলতাসহ মানসিকভাবে উৎফুল্ল থাকে।

অসুস্থ দাঁত দিয়ে খাবার গ্রহণে কষ্টের কারণে অপুষ্টি, স্কুলের প্রতি অনিহা, লেখাপড়ায় অমনযোগিতা প্রভৃতি সমস্যা দেখা দেয়। শিশুর দুধদাঁত সঠিক সময়ে না পড়ে আগে বা পরে পড়লে স্থায়ী দাঁত এলোমেলো হয়ে ওঠার ঝুঁকি থাকে। তখন সৌন্দর্যের ঘাটতি থেকে মানসিক কষ্টের সূচনা হয়। হাসি ও বাক্য আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অন্যতম জরুরি কার্যকর মাধ্যম, ব্যক্তিত্ব প্রকাশের অন্যতম হাতিয়ার। আর এর জন্য দরকার সুস্থ ও পরিচ্ছন্ন দাঁত।

যেকোনো বয়সের যে কেউ এলোমেলো ও বিবর্ণ দাঁত নিয়ে মনঃকষ্টে ভুগতে পারে। বিবর্ণ দাঁতের অন্যতম কারণ সঠিক নিয়মে দাঁত ব্রাশ না করা, ধূমপান, পান, জর্দা, আঘাত, দাঁত ক্ষয়, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।

ওদিকে ডিমেনশিয়া এমন একটি সিনড্রোম, যেখানে স্মৃতিশক্তি, চিন্তা–ভাবনা, আচরণ এবং প্রতিদিনের স্বাভাবিক ক্রিয়াকলাপ সম্পাদন করার ক্ষমতা হ্রাস পায়। অযত্ন বা অবহেলার কারণে দাঁতকে রক্ষা করতে না পারলে ডিমেনশিয়ার প্রবণতা দেখা যেতে পারে। যথাযথ চর্বণ মস্তিষ্কে পর্যাপ্ত রক্ত সরবরাহ করে, ফলে মস্তিষ্ক সতেজ থাকে। অন্যদিকে, দাঁতহীন মুখ সৌন্দর্য নষ্ট করে। দীর্ঘমেয়াদি মাড়ির রোগ ও মুখের দুর্গন্ধের
কারণে অনেক সময় রোগীদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

মুখের সুস্থতা ও সৌন্দর্য ধরে রাখতে সঠিক নিয়মে মুখের যত্নের কোনো বিকল্প নেই। মনগড়া পদ্ধতিতে দাঁত ব্রাশ না করে নিয়মিত ও নিয়ম অনুযায়ী মুখ পরিষ্কারের অভ্যাস সিংহভাগ রোগপ্রতিরোধ করতে পারে।

2
ডায়াবেটিসের মূল সমস্যা হলো ইনসুলিনের অভাব অথবা অকার্যকারিতা। নিয়মিত হাঁটলে শরীরে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ে।ডায়াবেটিস চিকিৎসায় অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন ও শরীরচর্চা বা ব্যায়াম। কিন্তু ডায়াবেটিস রোগীদের ব্যায়ামের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মেনে চলা জরুরি। এ ক্ষেত্রে সব বয়সীর জন্য নিয়মিত হাঁটা বা জগিং সবচেয়ে সহজ ও ভালো ব্যায়াম।

কেন হাঁটবেন:

ডায়াবেটিসের মূল সমস্যা হলো ইনসুলিনের অভাব অথবা অকার্যকারিতা। নিয়মিত হাঁটলে শরীরে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ে। পেশিকোষে গ্লুকোজ প্রবেশ করার জন্য ইনসুলিনের প্রয়োজন। হাঁটার ফলে পেশিকোষে গ্লুকোজ প্রবেশ সহজ হয়। ফলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নেমে আসে। এ ছাড়া হাঁটার ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে ডায়াবেটিসের জটিলতা কমে। হাঁটলে ঘুমও ভালো হয়, যা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য খুব জরুরি। হাঁটলে এনডরফিন নিঃসৃত হয় বলে মানসিক চাপ কমে, ফুরফুরে অনুভূতি হয়।

কখন হাঁটবেন:

সকাল-বিকেল-রাত—যেকোনো সময় হাঁটা যায়। তবে হাঁটার জন্য একটি নির্ধারিত সময় থাকা জরুরি। টাইপ-১ ডায়াবেটিস রোগীদের সকালে হাঁটা ভালো। সময় না পেলে তিন বেলা খাবারের এক ঘণ্টা থেকে দেড় ঘণ্টা পর ১৫ থেকে ২০ মিনিট করে হাঁটুন। বিকেলে হাঁটাও মন্দ নয়।
কতক্ষণ হাঁটবেন

আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যমতে, সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট হাঁটা প্রয়োজন। একেবারে ঘামঝরানো হাঁটা। যাঁদের স্থূলতার সমস্যা আছে, তাঁদের হাঁটতে হবে আরও বেশি। প্রথম দিকে ৩ থেকে ৫ মিনিট আস্তে-ধীরে হাঁটুন। এরপর ২০ থেকে ২৫ মিনিট দ্রুত কদমে হাঁটুন। শেষ ১ থেকে ৩ মিনিট হাঁটার গতি কমিয়ে আনুন।

হাঁটার প্রস্তুতি:

খালি পায়ে হাঁটা যাবে না। আরামদায়ক ও নরম সোলের এক জোড়া কেডস কিংবা জুতা এবং পরিষ্কার নরম মোজা পরুন। ডায়াবেটিস পরখ করে নিন হাঁটার আগে। গ্লুকোজের মাত্রা ৫ দশমিক ৩-এর নিচে থাকলে হাঁটতে গেলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা রক্তে চিনির মাত্রা কমে যেতে পারে। আবার ভোরবেলা একেবারে খালি পেটে হাঁটতে গেলেও শর্করা কমে যেতে পারে। তাই হালকা কিছু খেয়ে নিন। আবার চিনির মাত্রা ১৬ দশমিক ৭-এর ওপরে থাকলেও সাবধান।

বড় এক গ্লাস পানি পান করুন হাঁটার আগে। সঙ্গে পানির বোতল রাখুন। প্রতি ২০ মিনিট হাঁটার জন্য এক কাপ পানি পান করুন। এবড়োখেবড়ো কর্দমাক্ত পথে হাঁটবেন না। সম্ভব হলে খোলা মাঠে, পার্কে কিংবা নদীর পাড়ে হাঁটুন।

হাঁটার সময় লক্ষণীয়:

ইনসুলিন নিয়ে হাঁটার সময় হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয় কি না, সেদিকে খেয়াল রাখুন। হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত কার্যকর শর্করা গ্রহণ করুন। হাঁটায় ক্ষান্ত দিন। দীর্ঘপথ হাঁটতে চাইলে সঙ্গে সহজপাচ্য শর্করাজাতীয় খাবার রাখুন।

ঘরে হাঁটা:

ঘরে ট্রেডমিলেও হাঁটতে পারেন। ছাদে হাঁটার ব্যবস্থা থাকলে সেখানে হাঁটুন। মুঠোফোনে কথা বলার সময় বসে না থেকে হাঁটুন।

লে. কর্নেল নাসির উদ্দিন আহমদ, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, সিএমএইচ, ঢাকা

5
সচেতনতায় স্ট্রোক প্রতিরোধ
স্ট্রোক বা পক্ষাঘাত বাংলাদেশে বয়স্ক মানুষের মৃত্যুর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কারণ। মূলত চল্লিশোর্ধ্ব ব্যক্তিরা বেশি আক্রান্ত হলেও অল্প বয়সের মানুষও আক্রান্ত হতে পারে। অনেকের ধারণা, স্ট্রোক হার্ট বা হৃৎপিণ্ডের অসুখ। কিন্তু স্ট্রোক আসলে মস্তিষ্কের একটি রোগ। মস্তিষ্কের কোনো অংশে রক্তক্ষরণ বা রক্ত চলাচল ব্যাহত হওয়ার কারণে যে ক্ষতি হয়, সেটাই স্ট্রোক। স্ট্রোক থেকে প্যারালাইসিস বা পক্ষাঘাতগ্রস্ত, বিকলাঙ্গ এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
যে পরিবারে একজন স্ট্রোকের কারণে পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগী আছেন, তারা প্রতিনিয়ত এর কারণে সীমাহীন বিপর্যস্ততায় ভুগছে। শুধু সচেতনতার অভাবে বিপুলসংখ্যক মানুষকে এমন মানবেতর জীবন যাপন করতে হয়।
চাই সচেতনতা
প্রথমত, জানতে হবে যে স্ট্রোক একটি প্রতিরোধযোগ্য রোগ। সঠিক জীবনযাত্রা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার মাধ্যমে স্ট্রোক প্রতিরোধ করা সম্ভব। সঠিক ওজন, রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের নিয়ন্ত্রণ, চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার, ধূমপান পরিহার করা এবং নিয়মিত শরীরচর্চার মাধ্যমে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমিয়ে আনা সম্ভব।
এসবের পাশাপাশি প্রয়োজন স্ট্রোকের চিকিৎসা নিয়ে সচেতন হওয়া। স্ট্রোকের রোগীরা প্রায়ই অনেক দেরি করে হাসপাতালে পৌঁছান। ততক্ষণে রোগীকে সঠিক চিকিৎসা দেওয়ার আর সময় থাকে না। অথচ সময়মতো চিকিৎসা নিলে ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা যায়।
তাই স্ট্রোকের লক্ষণ নিয়ে ব্যাপক প্রচারণা ও সচেতনতা প্রয়োজন। রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে আনা সম্ভব হলে স্ট্রোকের ধরন অনুযায়ী রোগীর ত্বরিত চিকিৎসা করে তাঁকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব।
দ্রুত করুন
স্ট্রোকের লক্ষণ সহজে চেনার জন্য বিশ্বব্যাপী ‘বি ফাস্ট বা দ্রুত করুন’ বাক্যবন্ধ ব্যবহার করা হয়। এ কারণে এবারের বিশ্ব স্ট্রোক দিবসের স্লোগান হলো—প্রিসিয়াস টাইম বা প্রতিটি মুহূর্ত মূল্যবান। ইংরেজি বি ফাস্ট শব্দবন্ধ দিয়েই স্ট্রোকের লক্ষণ বা উপসর্গ মনে রাখা সম্ভব।
বি অর্থ ব্যালেন্স বা ভারসাম্য। হঠাৎ করে ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাওয়া।
ই অর্থ আই বা দৃষ্টি। হঠাৎ চোখে দেখতে সমস্যা।
এফ অর্থ ফেস বা মুখমণ্ডল। হঠাৎ মুখের একদিক বাঁকা হয়ে যাওয়া।
এ অর্থ আর্ম বা বাহু। হঠাৎ করে এক হাত দুর্বল হয়ে যাওয়া।
এস অর্থ স্পিচ বা হঠাৎ কথা জড়িয়ে আসা।
টি অর্থ টাইম বা সময়। এসব লক্ষণ দেখামাত্রই যত দ্রুত সম্ভব রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে আসার চেষ্টা করা।
স্ট্রোকের রোগীর পরিচর্যা
বাড়িতে স্ট্রোকের রোগীর পরিচর্যা নিয়ে সচেতনতার প্রয়োজন আছে। একজন স্ট্রোক রোগী কিছুদিনের মধ্যেই আবার স্ট্রোকের শিকার হতে পারেন, যা আগের চেয়ে ভয়াবহ হয়ে থাকে। তাই রোগীর পরিচর্যার পাশাপাশি পুনরায় স্ট্রোক যেন না হয়, সে বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকা উচিত।
এ ছাড়া স্ট্রোকের রোগীরা প্রায়ই ঠিকমতো খাবার খেতে বা গিলতে পারেন না, ফলে অপুষ্টির শিকার হন। তাঁদের জন্য বিশেষভাবে খাদ্য গ্রহণের ব্যবস্থা করতে হতে পারে। কারও কারও এমনকি নাকে নল দিয়ে তরল খাবার দিতে হতে পারে। জোর করে খাবার গেলাতে গেলে ফুসফুসে খাবারের কণা চলে গিয়ে মারাত্মক অ্যাসপিরেশন নিউমোনিয়া হতে পারে।
দীর্ঘদিন শয্যাশায়ী থাকার কারণে বেড সোর (চাপজনিত ঘা) যাতে না হয়, সে জন্য বিশেষ বিছানা, বারবার অবস্থান পরিবর্তন করা দরকার। এ ছাড়া পায়ের ধমনিতে রক্ত জমা বা ডিভিটি হয় কি না, সেদিকে লক্ষ লাখতে হবে। অনেকে আবার প্রস্রাব-পায়খানার নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে পারেন। সে ক্ষেত্রে তাঁদের পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর দিতে হবে। কারও কারও ক্যাথেটার ব্যবহার করতে হয়।
পক্ষাঘাতগ্রস্ত হাত–পায়ের শক্তি ফিরিয়ে আনতে ফিজিওথেরাপি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই বাড়িতে নিয়মিত ফিজিওথেরাপি করতে হবে। সন্ধির জড়তা কাটাতেও নিয়মিত ব্যায়াম দরকার। স্ট্রোকের পর পরিচর্যার অন্যতম লক্ষ্য হলো রোগীকে স্বাবলম্বী করে তোলা। সেই লক্ষ্যে কাজ করে যেতে হবে। কথার জড়তা কাটাতেও ফিজিওথেরাপি গুরুত্বপূর্ণ।
চিকিৎসা চাই দ্রুত
স্ট্রোকের চিকিৎসা নির্ভর করে এর প্রকারভেদের ওপর। স্ট্রোক মূলত দুই ধরনের হয়ে থাকে। মস্তিষ্কের রক্তনালিতে রক্ত জমাট বেঁধে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়ে যে স্ট্রোক হয়, তাকে ইসকেমিক স্ট্রোক বলা হয়। আর মস্তিষ্কের কোনো রক্তনালি ছিঁড়ে গিয়ে রক্ত মস্তিষ্কের ভেতর জমলে যে স্ট্রোক হয়, তাকে হেমোরেজিক স্ট্রোক বলা হয়। এই দুই ধরনের স্ট্রোকেরই আধুনিক চিকিৎসা এখন বাংলাদেশে পাওয়া যায়।
মস্তিষ্কের কোনো অংশে রক্ত জমাট বেঁধে যে স্ট্রোক হয়, তার চিকিৎসায় বিশ্বব্যাপী স্ট্রোক থ্রম্বোলাইসিস আধুনিক ও জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসা। এই প্রক্রিয়ায় একটি ওষুধ ব্যবহার করে মস্তিষ্কের জমাটবদ্ধ রক্ত গলিয়ে রক্ত চলাচল আবার স্বাভাবিক করা হয়। তবে এই চিকিৎসার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সময়। স্ট্রোকের লক্ষণ দেখা যাওয়ার ৪ ঘণ্টা ৩০ মিনিটের মধ্যে রোগীকে এই চিকিৎসা দিতে হয়। তার কারণ হলো মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধে রক্ত চলাচল ব্যাহত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কের কোষগুলো নষ্ট হতে শুরু করে। তাই সময়মতো রক্ত চলাচল স্বাভাবিক না করা গেলে রোগীর মস্তিষ্কের গুরুত্বপূর্ণ কোষগুলোকে বাঁচানোর সম্ভাবনা কমে যায়।
রোগীকে দ্রুততম সময়ে হাসপাতালে নিয়ে এলেও প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা, বিশেষত সিটি স্ক্যান ছাড়া চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব হয় না। তাই এই সময়টুকুও গুরুত্বপূর্ণ। এমন একটি হাসপাতালে নিতে হবে, যেখানে এই ধরনের পরীক্ষা ও চিকিৎসার সুব্যবস্থা আছে।

7
থাইরয়েডজনিত নানা সমস্যা :
বাংলাদেশে থাইরয়েড গ্রন্থি ও থাইরয়েড হরমোনজনিত সমস্যায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। থাইরয়েড গ্রন্থিতে সাধারণত দুই ধরনের সমস্যা দেখা যায়—গঠনগত ও কার্যগত। গঠনগত সমস্যায় থাইরয়েড গ্রন্থি ফুলে যায়। একে গলগণ্ড বা গয়টার বলা হয়। কার্যগত সমস্যা দুই রকমের—হাইপারথাইরয়েডিজম ও হাইপোথাইরয়েডিজম। হাইপারথাইরয়েডিজমে থাইরয়েড গ্রন্থি বেশি মাত্রায় সক্রিয় হয়ে পড়ে। হাইপোথাইরয়েডিজমে থাইরয়েড গ্রন্থি যথাযথ কাজ করে না। থাইরয়েড গ্রন্থির ক্যানসারও হতে পারে।
কারণ:
অকার্যকর থাইরয়েড বা হাইপোথাইরয়েডিজম মূলত তিনটি কারণে হতে পারে। নবজাতকের থাইরয়েড গ্রন্থি ঠিকমতো তৈরি না হলে তাকে কনজেনিটাল হাইপোথাইরয়েডিজম বলে। অটোইমিউন হাইপোথাইরয়েডিজমে থাইরয়েডের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি সক্রিয় হয়ে থাইরয়েড কোষগুলোকে ধ্বংস করে। চিকিৎসাজনিত কারণেও এই অসুখ হতে পারে। যেমন অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে থাইরয়েড ফেলে দেওয়া কিংবা রেডিওথেরাপি চিকিৎসার পর।অপর দিকে অ্যান্টিবডি অতিরিক্ত মাত্রায় থাইরয়েডকে উদ্দীপনা দিয়ে হাইপারথাইরয়েডিজমের সমস্যাও করতে সক্ষম। ওষুধের মাত্রা সঠিকভাবে নিরূপণ না করা ও মাত্রা বেশি হলে থাইরয়েড গ্রন্থির প্রদাহ বা থাইরয়েডাইটিস হাইপারথাইরয়েডিজম হতে পারে। সংক্রমণে তাৎক্ষণিকভাবে থাইরয়েড কোষ থেকে প্রচুর হরমোন নিঃসৃত হয়। ফলে রক্তে থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়। যেসব অঞ্চলে আয়োডিনের অভাব রয়েছে, সেখানকার লোকজনের মধ্যে আয়োডিনের ঘাটতিজনিত কারণে হাইপোথাইরয়েডিজম দেখা যায়।
চিকিৎসা:
থাইরয়েডের সমস্যা নির্ণয় করতে রক্তে হরমোন পরীক্ষা করতে হয়। হাইপোথাইরয়েডিজমের চিকিৎসা ওষুধের মাধ্যমে করা হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ঘাটতি পূরণে সারা জীবন থাইরক্সিন হরমোন সেবন করতে হয়। হাইপারথাইরয়েডিজমের চিকিৎসায় ওষুধ দিয়েই চিকিৎসা সহজ। তবে ক্ষেত্রবিশেষে অস্ত্রোপচার বা রেডিওঅ্যাকটিভ আয়োডিন থেরাপির কথা ভাবা হয়।
ডা. শাহজাদা সেলিম, সহযোগী অধ্যাপক, এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়

Pages: [1]