Daffodil International University

Faculties and Departments => Faculty Sections => Topic started by: Mohammad Mahedi Hasan on September 04, 2019, 11:11:37 AM

Title: বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠদান পদ্ধতি কেমন হওয়া উচিত
Post by: Mohammad Mahedi Hasan on September 04, 2019, 11:11:37 AM
বাংলাদেশের বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা মূলত স্নাতক শিক্ষার্থীদের পড়ান। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষকদের পাঠদান ক্ষেত্রে কোনো আনুষ্ঠানিক যোগ্যতা ছাড়াই তাদের পাঠদানের ও শেখানোর অনুমতি দেয়।

আসলে সঠিক পদ্ধতিতে পাঠদানের প্রয়োজনীয়তা আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে না। এ বিষয়টি শিক্ষকদের ওপর সম্পূর্ণভাবে ছেড়ে দেয়া হয়। বর্তমানে কেবল পাশ্চাত্য দেশগুলোয় নয়, অনেক এশীয় দেশেও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষকতা এবং শেখানোর বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করে। কেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এ বিষয়ে এত গুরুত্ব দিচ্ছে, তা পর্যালোচনা করার সময় এসেছে।

শিক্ষার ব্যাপক বিস্তারের কারণে বিভিন্ন সামাজিক ব্যাকগ্রাউন্ডসহ বহুবিধ অর্থনৈতিক শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বর্তমানে উচ্চশিক্ষা নিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আসছে। তাই তাদের প্রত্যাশা ও সন্তুষ্টির মাত্রা ভিন্ন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কাজও তাই শিক্ষার্থীদের বিভিন্নতা, তাদের প্রত্যাশা, অনুশাসন এবং লক্ষ্যযুক্ত ফলাফলগুলোকে সমাধান করতে যথাযথ পাঠদান ও শেখানোর পদ্ধতিগুলো জানা ও প্রয়োগ করা। এ কাজগুলো অবশ্যই কঠিন ও জটিল।

বড় সমস্যা হচ্ছে, যদিও অনেক শিক্ষক তাদের শিক্ষাদানের উপকরণগুলো ভালোভাবে বুঝতে পারেন, তবুও শিক্ষার্থীরা কীভাবে শিখবে তা তাদের জানা নেই। যেহেতু আমাদের শিক্ষকরা শিক্ষাদান এবং শেখার বিষয়ে কোনো প্রশিক্ষণ পান না, তাই তাদের কাছ থেকে তাদের শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে প্রক্রিয়াটি অনুভূত হয় তা বোঝার, ব্যাখ্যা করার এবং বোঝানোর ধারণাটি আশা করা যায় না।

বর্তমানে শিক্ষা বিষয়ে প্রচুর গবেষণা হচ্ছে। গবেষকরা একমত যে, শিক্ষার্থীর সক্রিয় আচরণের মাধ্যমেই পড়াশোনা হয়, শিক্ষক যা করেন তাতে নয়।

আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ এখন ‘surface’ লার্নার। শুধু পরীক্ষায় ডিগ্রি অর্জনের সর্বনিম্ন গ্রেড (minimum passing grade) পাওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে তা অর্জনের জন্য যে স্তরগুলো খুব কম স্তরের তা শেখার ক্রিয়াকলাপগুলো শেখার পদ্ধতি অবলম্বন করে ‘surface’ লার্নাররা, যেমন- মুখস্থনির্ভর হওয়া। যে কোনো শিক্ষা প্রোগ্রামের ফল অর্জনের জন্য উপযুক্ত ক্রিয়াকলাপগুলোকে বলা হয় ‘deep approach’।

কাজেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এখন শিক্ষার্থীদের কীভাবে ‘deep’ লার্নারে রূপান্তর করা যায়, সে সম্পর্কে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। মনে রাখতে হবে, ‘surface’ ও ‘deep’ পদ্ধতি দুটি শিক্ষার্থীর ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্য নয়। এগুলোকে শিক্ষার পরিবেশের প্রতিক্রিয়া হিসেবে ভাবা হয়। সঠিক পাঠদান পদ্ধতি উপযুক্ত শেখার ক্রিয়াগুলোকে সমর্থন করে, যা শিক্ষার্থীকে ‘deep’ লার্নিয়ের দিকে পরিচালিত করে।

বর্তমানে শেখা ও পাঠদান ক্ষেত্রে অনেক তত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। একাডেমিক সম্প্রদায় শিক্ষাদানের তিনটি বহুল স্বীকৃত তত্ত্বকে পৃথক করে তিনটি ক্ষেত্র- ১. শিক্ষার্থীরা কী, ২. শিক্ষকরা কী করেন এবং ৩. শিক্ষার্থীরা কী করে, বিবেচনায় এনে। প্রথম তত্ত্ব অনুসারে শেখানো ও পাঠদান পদ্ধতিকে স্তর-১ পদ্ধতি বলা যেতে পারে। স্তর-১ পদ্ধতি হল যেখানে শিক্ষক ক্লাসে তথ্য প্রেরণ করেন আর শিক্ষার্থীরা তা মুখস্থ বা গিলে ফেলে।

শিক্ষার্থীর যদি তথ্য সঠিকভাবে বুঝে গ্রহণ করার ক্ষমতা বা অনুপ্রেরণা না থাকে তবে এটি তাদের সমস্যা এবং এ জন্য তাদের দায়ী করা হয়। এখানে দক্ষতা শিক্ষার্থীদের একাডেমিক পারফরম্যান্স নির্ধারণের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে বিবেচিত হয়। আর পাঠদান শেষ হওয়ার পর কম দক্ষ শিক্ষার্থীদের থেকে আরও বেশি সক্ষম বাছাই করার উপায় হল মূল্যায়ন। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা মূলত তত্ত্ব-১ পদ্ধতিতে পাঠদান ও শেখানোর কাজটা করে থাকেন।

শিক্ষকরা পাঠ্যক্রমের বিষয়বস্তুগুলো শেষ করাটাই তাদের মুখ্য দায়িত্ব মনে করেন। স্তর-১-এর মতো স্তর-২ পদ্ধতিটিও শিক্ষকতাকেন্দ্রিক পাঠদান ও শেখানো পদ্ধতি। শিক্ষকরা নিজেরা কী করেন সেদিকে মনোনিবেশ করে থাকেন, শিক্ষার্থীরা কী করেন তার দিকে নয়। তবে এখানে বোঝানো এবং তথ্য প্রেরণ করার ব্যবস্থাপনা ভিন্ন। শিক্ষকের ভূমিকা পাঠ্য বিষয়বস্তু এবং নীতিগুলো ব্যাখ্যা করা এবং তথ্য উপস্থাপন করা।

এর জন্য, শিক্ষকদের বিভিন্ন দক্ষতা, কৌশল এবং শিক্ষার সরঞ্জাম, যেমন- মাল্টিমিডিয়া, ভিডিও, স্মার্টবোর্ড ইত্যাদির প্রয়োজন হয়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা মূলত তত্ত্ব-২ পদ্ধতিতে পাঠদান করে থাকেন।

উচ্চশিক্ষিত যুবকরা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে। কাজেই তাদের যথাযথ শিক্ষিত করে গড়ে তোলার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয়কে নিতে হবে। শিক্ষকদের অবশ্যই তাদের দেয়া শিক্ষা শিক্ষার্থীদের ওপর যাতে কাঙ্ক্ষিত প্রভাব ফেলে, সেদিকে মনোনিবেশ করতে হবে এবং এই বোঝাপড়া আমাদের তৃতীয় স্তরে নিয়ে আসে। স্তর-৩ হচ্ছে ছাত্রকেন্দ্রিক শিক্ষাদান ও শেখানোর পদ্ধতি।

স্তর-১ ও স্তর-২-এর বিপরীতে তৃতীয় পদ্ধতিটি শিক্ষাদান ও শেখানোর ক্ষেত্রে এমন দৃষ্টিভঙ্গিকে বোঝায় যা কেবল তথ্য, ধারণা এবং নীতিগুলো বলা ও বোঝার জন্য নয়, এগুলো সম্পর্কেও পরিষ্কার হওয়া দরকার। এতে (ক) শিক্ষার্থীদের কী শিক্ষতে হবে এবং তাদের উদ্দেশ্যপূর্ণ শেখা কী, (খ) শিক্ষকরা এটি শিখিয়ে দেয়ার পরে শিক্ষার্থীরা বিষয়বস্তুটি সেভাবে বুঝেছে কি না, তা বোঝার উপায় কী।

কাজেই শিক্ষকদের বিষয়বস্তু নিয়ে কথা বলা বা চিত্তাকর্ষক এইডগুলো ব্যবহার করে শিক্ষা দেয়াই যথেষ্ট নয়। শিক্ষাদান ও শেখার ক্রিয়াকলাপগুলো এমন হতে হবে যাতে শিক্ষার্থীদের বোঝার সেই স্তরগুলো অর্জনে সহায়তা করার জন্য বিশেষভাবে সম্পৃক্ত। সেই তত্ত্ব ও পদ্ধতিগুলো শিক্ষকদের জানতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেই তা জানানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কোর্স উপকরণগুলোতে যথেষ্ট ব্যুৎপত্তি আছে। এখন শিক্ষকদের শিক্ষণ সম্পর্কিত তত্ত্ব ও শেখানোর পদ্ধতিগুলো সম্পর্কে জ্ঞান নিতে হবে এবং সেই জ্ঞানটি তাদের নিজস্ব শিক্ষায় সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে হবে। আমাদের প্রত্যাশা, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষাদান এবং শেখার ক্ষেত্রে এই পরিবর্তনের প্রতি যথাযথ মনোযোগ দেবে এবং শিক্ষাদান ও শেখার তত্ত্বগুলোতে সুসজ্জিত একটি শিক্ষামূলক সম্প্রদায় গঠনের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
Source: Jugantor: এম এম শহিদুল হাসান : উপাচার্য, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, ঢাকা
Title: Re: বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠদান পদ্ধতি কেমন হওয়া উচিত
Post by: Raisa on September 21, 2019, 10:33:22 AM
 :)
Title: Re: বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠদান পদ্ধতি কেমন হওয়া উচিত
Post by: Anuz on September 25, 2019, 11:03:46 PM
Thanks for sharing.............
Title: Re: বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠদান পদ্ধতি কেমন হওয়া উচিত
Post by: tokiyeasir on October 03, 2019, 03:38:56 PM
Well and meaningful Topic. Thanks...