বৈশ্বিক উষ্ণতা কমাতে ‘কৃত্রিম উদ্ভিদ’
উদ্ভিদ বা গাছপালা সূর্যের আলোর সাহায্যে কার্বন ডাই-অক্সাইডকে শর্করায় রূপান্তর করে। এটাই প্রাকৃতিক সালোকসংশ্লেষণ। মার্কিন বিজ্ঞানীরা একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে একটি যন্ত্র বানিয়েছেন। এটা সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি এবং বাতাস ব্যবহার করে দুই ধরনের জ্বালানি উৎপাদন করে। সেটা পরে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহার করার সুযোগ রয়েছে।
সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার অনুরূপ এই কৃত্রিম পদ্ধতিতে বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ সম্ভব। যুক্তরাষ্ট্রের একদল বিজ্ঞানী আশা করছেন, তাঁদের এই উদ্ভাবন বৈশ্বিক উষ্ণতা কমাতে সহায়ক হবে।
সেন্ট্রাল ফ্লোরিডা ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ফার্নান্দো আরিব-রোমো ও তাঁর সহযোগী গবেষকেরা টাইটানিয়াম, কয়েকটি জৈব অণু এবং একটি নীল এলইডি ফোটোরিয়েক্টরের সমন্বয়ে একটি যন্ত্র বানিয়েছেন। এটা দেখতে চকচকে সিলিন্ডারের মতো।
আরিব-রোমো এই গবেষণার ওপর ইউটিউবে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন। এতে তিনি বলেন, প্রাকৃতিক সালোকসংশ্লেষণের গাছের
যে ভূমিকা থাকে, সেটার পরিবর্তে এই যন্ত্রে কয়েকটি রাসায়নিক উপাদান সক্রিয় থাকে। এগুলো সূর্যালোক ধারণ করে কার্বন ডাই-অক্সাইডকে শর্করার অনুরূপ উপাদানে পরিণত করে। এই বিশেষ যন্ত্রটি জীবাশ্ম জ্বালানিনির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্রে স্থাপন করা যেতে পারে।
এ বিষয়ে একটি গবেষণা প্রতিবেদন জার্নাল অব ম্যাটেরিয়ালস কেমিস্ট্রি সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। অধ্যাপক আরিব-রোমো বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্রগুলো কয়লা পোড়ানোর মাধ্যমে প্রচুর কার্বন ডাই-অক্সাইড ছড়ায়। সেগুলোকে আবার জ্বালানিতে রূপান্তর করা যায়। বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্রে ওই কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণের মাধ্যমে রূপান্তরিত হয়ে যায়। এতে নির্গমন যেমন কমে, তেমনি জ্বালানি উৎপাদন হয়। এই প্রক্রিয়া বৈশ্বিক উষ্ণায়ন মোকাবিলায় সহায়ক। গবেষকেরা এখন যন্ত্রটির কার্যকারিতা বৃদ্ধির চেষ্টা করছেন।