Daffodil International University

Faculty of Science and Information Technology => Film => MCT => Script Writing. => Topic started by: sadiur Rahman on April 08, 2019, 06:47:21 PM

Title: ১০ টি ধাপে স্ক্রিপ্ট লেখা শিখুন
Post by: sadiur Rahman on April 08, 2019, 06:47:21 PM
সিনেমা বা টিভির স্ক্রিপট বা চিত্রনাট্য নিয়ে আলোচনা বা লেখার শখ আমাদের অনেকেরই আছে, অনেকেরই মাথায় হয়ত অনেক নিত্যনতুন আইডিয়া অথবা গল্পের ধারনা আসছে প্রতিনিয়ত কিন্তু কিভাবে সেই গল্পটিকে চিত্রনাট্যে রুপান্তর করতে হবে সেই সমন্ধে আমাদের ধারনা খুব একটা পরিষ্কার নয়। এসো দেখে নেওয়া যাক ১০টি ধাপে একটি পেশাগত চিত্রনাট্য লেখার কয়েকটি সহজ পদ্ধতিঃ

১। প্রথমে বুঝতে হবে চিত্রনাট্য ঠিক কাকে বলে? স্ক্রিপ্ট বা চিত্রনাট্য হল তোমার গল্পের এমন একটি আকার বা পরিকল্পনা যাতে তোমার গল্পের সম্পূর্ন বর্ননা থাকবে অর্থাৎ অডিও, ক্যামেরা, ডায়লগ এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সম্বন্ধে একটি সু-স্পষ্ট ধারনা থাকবে যাতে কিনা তুমি না থাকলেও তোমার লেখাটি দেখে কেউ তোমার কাজটি করতে পারবে যাতে তোমার ভিশন সম্বন্ধে সু-স্পষ্ট নির্দেশ থাকবে। তবে এটিও ঠিক কোন একটি সিনেমা বা ধারাবাহিকের চিত্রনাট্য কারো একার লেখার ফসল নয়, এটি বহুবার পরিচালক ও প্রযোজকের দ্বারা পরিবর্তিত ও পুনলিখিত হয়।

২। নিজের পছন্দের সিনেমা আথবা ধারাবাহিকের চিত্রনাট্য পড়ার অভ্যেস করতে হবে। সেটা অনলাইন থেকে নেওয়া হোক বা কোন বই থেকে পড়ে বুঝতে হবে কি করে একটি পেশাগত চিত্রনাট্য লেখা হয় এবং তার ফরম্যাটটি ঠিক কিরকম।

৩। নিজের আইডিয়া অথবা কনসেপ্ট সমন্ধে একটি পরিষ্কার ধারনা থাকতে হবে। মনেমনে তোমার আইডিয়ার একটি আউটলাইন তৈরী করে নিতে হবে অর্থাৎ তুমি কি লিখবে?, কিরকম চরিত্র সেখানে তুমি রাখবে?, প্রতিটা সম্পকের সমীকরন কিরকম হবে?, তোমার চরিত্র গুলি কিভাবে কথাবার্তা চালাবে? এবং কেন? তোমার এই গল্পের মাধ্যমে কি তুমি তোমার দর্শকে কি কোন মেসেজ দিতে চাইছ? চাইলে সেটি কি? দরকার হলে একটি নোট লিখে রাখা যেতে পারে।

৪। স্ক্রিপ্টের সম্ভাব্য দৈঘ্য মাথায় রেখে স্ক্রিপ্ট লিখতে বসতে হবে। সাধারনত একটি ২ ঘন্টার স্ক্রিপ্টের দৈঘ্য ১২০ পৃষ্ঠা হয়। আর যদি সেটি সেলটেক্স, ফাইনাল ড্রাফটের মত সফটওয়ারে লেখা হয় তবে সেক্ষেত্রে একটি পেজের দৈর্ঘ্য এক মিনিট হিসেবে ধরা হয়। তবে আরো একটি বিষয়ও মাথায় রাখা ভাল যে সাধারন ভাবে দুই থেকে আড়াই ঘন্টার চিত্রনাট্যই সবচেয়ে বেশি গ্রহন যোগ্য হয়। এর থেকে বেশী হলে সেটিকে চিত্রনাট্য হিসেবে না লিখে নভেল হিসেবে লেখাই ভাল।

৫। সাধারনত তিনটি অ্যাক্ট-এ একটি চিত্রনাট্য লেখা হয়। এই তিনটি অ্যাক্ট কে মূল চিত্রনাট্যের তিনটি খুটি হিসেবে ধরা হয়। প্রতিটি অ্যাক্ট প্রতিটির থেকে স্বতন্ত্র হয়। তিনটি অ্যাক্ট মিলিয়ে একটি চিত্রনাট্য সম্পূর্ন হয়।

অ্যাক্ট – ১

এখানে মূলত গল্পের মূল সেটআপ টি তৈরি করা হয়, মূল চরিত্র গুলির সাথে পরিচয় ঘটানো হয় পাঠকের। গল্পের প্রটাগনিষ্ট এর আবির্ভাব ও এখানেই হয় এবং তার উদ্দেশ্য ঠিক করা হয়। এর পর শুরু হয় অ্যাক্ট ২। অ্যাক্ট ১ সাধারন গল্পের ক্ষেত্রে ৩০ পৃষ্ঠা আর কমেডির ক্ষেত্রে ২৪ পৃষ্ঠার হয়।

অ্যাক্ট – ২

এটি গল্পের মূল অংশ এখানে প্রটাগনিষ্ট সমস্ত বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে সমস্যার সমাধানের দিকে একটু একটু করে এগিয়ে যাবে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তার কাজের দ্বারা পরিবর্তনের দৃষ্টান্ত রাখবে। এই অ্যাক্টটি ড্রামার ক্ষেত্রে সধারনত ৬০ পৃষ্টার এবং কমেডির ক্ষেত্রে ৪৮ পৃষ্টার হয়ে থাকে।

অ্যাক্ট – ৩

তৃতীয় অ্যাক্টে গল্প উপসঙ্ঘারের দিকে এগোয়। গল্পের টুইস্ট এই ভাগেই সাধারনত তৈরি হয়ে থাকে কারন গল্পের বিষয়-বস্তু দ্বিতীয় ভাগেই যথারীতি পরিষ্কার হয়ে গেছে। এই ভাগে গল্প দ্রুততার সঙ্গে এগোয় সমস্যার মূল সমাধানের দিকে। এটি সাধারন ড্রামার ক্ষেত্রে ৩০, এবং কমেডির ক্ষেত্রে ২৪ পৃষ্ঠার হয়।

৬। সিকোয়েন্স বা ক্রম সাজানো। এইটি মূল গল্পের অংশ হলেও গল্পের থেকে এটি পৃথক অর্থাৎ গল্পের বিষয় সম্বন্ধীয় নাও হতে পারে। অনেক সময় একটি সম্পূর্ন পৃথক বিষয় এবং পৃথক টেনশনের এটি জন্ম দিতে পারে। একটি আদর্শ সিকোয়েন্স সাধারনত ১০-১২ পৃষ্ঠার হয়ে থাকে।

৭। সিন লেখা। অনেকগুলি সিকুয়েন্স মিলে একটি সিন তৈরি হয়। সিন লোকেশনে শ্যুট করা হয়ে থাকে। এক এক-একটি সিন গল্পকে ধিরে ধিরে এগিয়ে নিয়ে যায়।

যদি কোন সিন শ্যুট করার অনুপযোগী বলে মনে করা হয় তবে সেটিকে স্ক্রীপ্ট থেকে বাদ দেওয়াই ভাল।

৮। ডায়লগ লেখা। একবার সিন এর ধারনা তৈরি করে নিলে তারপরে যেটি সবচেয়ে প্রয়োজনীয় সেটি হল ডায়লগ। এটিই একটি চিত্রনাট্যের সবচেয়ে শক্ত কাজ। ডায়লগই প্রতিটি চরিত্রের চারিত্রিক বৈশিষ্ট গুলি ফুটিয়ে তোলে। এটি সবসময় বাস্তবধর্মী নাও হতে পারে কারন আমাদের বাস্তব কথপকথন গুলো খুবই সরল ও সাদামাটা গোছের হয়। তাই সিনেমাকে বাস্তবধর্মী করতে গেলে যে খুব সাদামাটা ডায়লগ চরিত্রের মুখে বসাতে হবে এমনটা ভাবার কোন কারন নেই।

ডায়লগ লেখা হয়ে গেলে একাই জোরে জোরে আওড়ানো যেতে পারে এতে বোঝা যাবে সময় বিশেষে চরিত্রের মুখে ডায়লগটি মানাচ্ছে কিনা, বা সব চরিত্রের ডায়লগ একই প্রকৃতির হচ্ছে কিনা।

৯। লেখার কাজটি শেষ হলে বন্ধু অথবা কলিগদের সাথে কাজটি নিয়ে আলোচনা করা। বিভিন্ন ধরনের মানুষের চিন্তা ভাবনা বিভিন্ন প্রকার হয়, তাই একই প্রকার চিন্তাধারার মানুষদের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে সেটি ভিন্নমত পোষণকারী ব্যাক্তিদের সাথে আলোচনা করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে প্রশংসা ও কড়া থেকে কড়া সমালোচনা সমান ভাবে গ্রহন করতে হবে কারন এক্ষেত্রে কড়া থেকে কড়া সমালোচনা কাজটিকে আরো সমৃদ্ধ করবে তাই শুধুমাত্র মিথ্যা প্রশংসায় সন্তুষ্ট থাকলে চলবে না।

১০। নিজের লেখা বা কাজটিকে যতবার সম্ভব রিভাইস করা। এই কাজটি একটু শক্ত কারন প্রথম প্রথম রিভাইস এর সময় নিজের খামতি গুলো বেশী বেশি করে ধরা পরবে। এবং প্রতিবারই কিছু না কিছু নতুন আইডিয়া মাথায় আসবে তাই যতটা সম্ভব কাজের সাথে সামঞ্জস্যপূণ আইডিয়া গুলো রেখে বাকীগুলো মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলাই ভাল।

কিছু এক্সট্রা টিপসঃ …………।
স্ক্রিপ্ট লেখার জণ্য সেলটেকস বা ফাইনাল ড্রাফটেরমত কিছু সফটওয়্যার ব্যাবহার করা যেতে পারে। কারন এগুলিতে স্ক্রিপ্টের সঠীক ফরম্যাট ফলো করা থাকে। আর তাছাড়া স্ক্রীপট হাতে ও লেখা যেতে পারে তবে সেক্ষেত্রে ফাইনাল কপি ওয়ার্ড-এ কুরিয়ার ফ্রন্টে, ফ্রন্ট ১২ য় টাইপ করে নিলে ভাল হয়।

সংগৃহীত (সুত্র)ঃ https://abcfindings.wordpress.com/2014/07/24/