Daffodil International University

Bangladesh => Business => Economy => Topic started by: maruppharm on October 01, 2013, 10:27:32 AM

Title: বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে কমেছে বাণিজ্য ঘাটতি
Post by: maruppharm on October 01, 2013, 10:27:32 AM
আগের অর্থবছরের তুলনায় ৯ শতাংশ বেশি প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে গত ২০১২-১৩ অর্থবছর শেষ হয়েছে। আর পণ্য বাণিজ্যে ঘাটতি কমেছে ১০ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ পরিসংখ্যান থেকে এ চিত্র পাওয়া গেছে। এতে দেখা যায় যে গত অর্থবছরে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৩০ কোটি ডলার। আগের অর্থাৎ ২০১১-১২ অর্থবছরে ১১৯ কোটি ১০ লাখ ডলারের প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ এসেছিল।
অর্থনীতির শ্লথগতির এই সময়ে বিদেশি বিনিয়োগের প্রবাহ কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী থাকা ইতিবাচক বলে মনে করা হচ্ছে।
একই সময়ে পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ (পোর্টফোলিও বিনিয়োগ) এসেছে ২৮ কোটি ৭০ লাখ ডলারের। আর আগের অর্থবছরে বিনিয়োগ এসেছিল ২৪ কোটি ডলারের। সে হিসেবে পোর্টফোলিও বিনিয়োগও কিছুটা বেড়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত অর্থবছরে পণ্য বাণিজ্যে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৭০১ কোটি ডলার। আর ২০১১-১২ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ৯৩২ কোটি ডলার।
সেবা খাতের বাণিজ্যে প্রায় ৩১৬ কোটি ডলারের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। আগের বছর ছিল ৩০০ কোটি ডলার। সেবা খাতের বাণিজ্যে মূলত বিমা, ভ্রমণ ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রস্তুত করা লেনদেনের ভারসাম্য সারণি অনুসারে, বিগত অর্থবছরে চলতি হিসাবের ভারসাম্যে ২৫২ কোটি ২০ লাখ ডলারের উদ্বৃত্ত দেখা দিয়েছে। আগের বছরে ৪৪ কোটি ৭০ লাখ ডলারের ঘাটতি ছিল। এতে বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্য আপাতত স্বস্তিতে রয়েছে।
সাধারণভাবে চলতি হিসাবের মাধ্যমে দেশের নিয়মিত বৈদেশিক লেনদেন পরিস্থিতি বোঝান হয়। আমদানি-রপ্তানিসহ অন্যান্য নিয়মিত আয়-ব্যয় এতে অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকে। এখানে উদ্বৃত্ত হলে চলতি লেনদেনের জন্য দেশকে কোনো ঋণ করতে হয় না। আর ঘাটতি থাকলে তা পূরণ করতে ঋণ নিতে হয়।
প্রবাসী-আয়ের উচ্চ প্রবাহ এবং বাণিজ্য ঘাটতি নিম্নমুখী থাকার কারণেই চলতি হিসাবের ভারসাম্যে উদ্বৃত্তাবস্থা বজায় রয়েছে।
এ রকম পরিস্থিতি থেকে এটা যেমন বোঝা যায় যে লেনদেনের ভারসাম্য বেশ খানিকটা স্বস্তিতে রয়েছে, এটাও প্রতীয়মান হয় যে দেশে বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড যে শ্লথ গতিতে চলছে।
যোগাযোগ করা হলে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর প্রথম আলোকে বলেন, সার্বিকভাবে দেশের লেনদেনের ভারসাম্য পরিস্থিতি জোরাল অবস্থানে আছে। আর এটার অন্যতম কারণ হলো রপ্তানি ও প্রবাসী-আয়ের প্রবাহ ভালো। এর ফলে বৈদেশিক মুদ্রার বড় ধরনের রিজার্ভও গড়ে তোলা গেছে। এটা সামষ্টিক অর্থনীতির আস্থা বাড়াতে সহায়ক।
আহসান মনসুর আরও বলেন, রপ্তানি বাড়ার পাশাপাশি আমদানি কমে যাওয়ায় বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে। তবে আমদানি কমেছে দেশে চাহিদা কমে যাওয়ায়। কাঙ্ক্ষিত হারে প্রবৃদ্ধি না হওয়ায় চাহিদা হ্রাস পেয়েছে। আর রাজনৈতিক অস্থিরতা-অনিশ্চয়তা চলতে থাকলে আগামী দিনে এই চাহিদা আরও কমতে পারে। তখন বর্ধিত বিদেশি বিনিয়োগ ধরে রাখাও কঠিন হবে।
তবে আহসান মনসুর প্রবাসী-আয়ের বিষয়ে কিছুটা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, বিদেশি জনশক্তি রপ্তানি বেশ কমে গেছে। এটা আগামী দিনে প্রবাসী-আয়ে প্রভাব ফেলবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লেনদেনের ভারসাম্য সারণির তথ্যানুসারে, গত অর্থবছরে আর্থিক হিসাবে ২৭৮ কোটি ডলারের উদ্বৃত্ত দেখা দিয়েছে। তার আগের অর্থবছরের ১৪৩ কোটি ৬০ লাখ ডলারের উদ্বৃত্ত ছিল।
২০১২-১৩ অর্থবছরের মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি ঋণ বাবদ দেশে এসেছে ২১৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় সাড়ে ৩৮ শতাংশ বেশি।
সার্বিকভাবে গত অর্থবছরে লেনদেনের ভারসাম্যে ৫১২ কোটি ডলারের উদ্বৃত্ত দাঁড়িয়েছে। তবে তার আগের অর্থবছরের একই সময়ে ৪৯ কোটি ৪০ লাখ ডলারের উদ্বৃত্ত ছিল। আর জুন শেষে রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৫৩১ কোটি ৫০ লাখ ডলার, যা দিয়ে সাড়ে চার মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যায়।
এ প্রসঙ্গে আহসান মনসুর বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা-অনিশ্চয়তা যখন বাড়ে, তখন দেশ থেকে পুঁজি পাচারের আশঙ্কাও বাড়ে। এ রকম অবস্থায় বড় রিজার্ভ একটা রক্ষকের কাজ করবে।