Daffodil International University

Religion & Belief (Alor Pothay) => Islam => Islam & Science => Topic started by: rumman on September 06, 2017, 05:35:59 PM

Title: Combining faith and tradition
Post by: rumman on September 06, 2017, 05:35:59 PM

কোরবানি বিশ্ব মুসলমানের ধর্মীয় সংস্কৃতি। খোদার প্রেমে আত্মাকে বিসর্জন দেওয়ার প্রশস্ত জায়নামাজ। আল্লাহর প্রেমে নিজেকে বিসর্জিত করার মাহেন্দ্রক্ষণ।

সৃষ্টির সূচনায়ই দুনিয়ার প্রথম মানুষ মুখোমুখি হন পরীক্ষার। খোদায়ি পরীক্ষার বিষয়বস্তু আত্মা বিসর্জন ও ত্যাগ। উৎসর্গই কোরবানি। জগতের প্রথম মানুষ আদম (আ.)-এর তনয়দ্বয়ের মাধ্যমে পৃথিবীর শহরে আবির্ভাব ঘটে কোরবানির। আদম (আ.)-এর যুগ কোরবানির প্রথম যুগ। কোরবানির প্রথম সূচনা। আদম তনয়দ্বয়ের কোরবানির কথা উল্লেখ করে আল্লাহ বলেন, তুমি তাদের আদমের দুই পুত্রের বাস্তব অবস্থা পাঠ করে শোনাও। যখন তারা উভয়ে কিছু উৎসর্গ নিবেদন করেছিল, তখন তাদের একজনের উৎসর্গ গৃহীত হয়েছিল, আর অন্যজনের গৃহীত হয়নি।
সে (কাবিল হাবিলকে) বলল, আমি অবশ্যই তোমাকে হত্যা করব। সে (হাবিল) বলল, আল্লাহ ধর্মভীরুদের পক্ষ থেকেই তো গ্রহণ করেন। ’ (সুরা : মায়েদা, আয়াত : ২৭-৩১)

পৃথিবীর প্রথম মানুষ, প্রথম নবীর যুগ থেকে শুরু করে সব নবীর শরিয়তে কোরবানি ছিল। তবে প্রত্যেক নবীর কোরবানির পদ্ধতি ছিল ভিন্ন রকম। বান্দার কোরবানির ভেতরে আল্লাহ চেয়েছেন ত্যাগ, উৎসর্গ ও ভালোবাসা নিবেদন। আল্লাহ বলেন, ‘প্রত্যেক উম্মতের জন্য আমি কোরবানির একটি পদ্ধতির প্রচলন করেছি, যে জানোয়ার আল্লাহ তাদের দান করেছেন, তার ওপর যেন তারা তাঁর নাম উচ্চারণ করে। ’ (সুরা : হজ, আয়াত : ৩৪)

অন্যান্য নবীর কোরবানির চেয়ে মুসলিম জাতির পিতা ইবরাহিম (আ.)-এর কোরবানি ভিন্ন ও স্বতন্ত্র মর্যাদার অধিকারী। তাঁর ত্যাগের দৃষ্টান্ত বিরল ও নজিরবিহীন। পৃথিবীর সব বিসর্জন ও আত্মত্যাগের ইতিহাস তাঁর ইতিহাসের সামনে নতজানু। বয়োবৃদ্ধ পিতা ও বালক চঞ্চলতায় বাড়ন্ত ছেলের সমন্বিত ত্যাগের কারিশমা দেখে লজ্জা পেয়েছিল পৃথিবীর অন্য সব সৃষ্টি। ইবরাহিম (আ.) ভালোবাসার জায়নামাজ ভিজিয়ে শেষ বয়সে প্রেমিকের দরবারে আকুতি করে লাভ করেন এক পুত্রসন্তান। আপন সন্তানকে দেখে দেখে চোখ প্রশান্ত না হতেই রবের আদেশে পাথুরে পানিশূন্য মরুভূমিতে রেখে এলেন প্রিয় পুত্র ও প্রিয়তমাকে। প্রিয় পুত্রের কৈশোর না পেরোতেই স্বপ্নযোগে খোদার আদেশে জবেহ করতে প্রস্তুত হয়ে গেলেন তাকে। বাবার স্বপ্নযোগের আদেশকে পরম শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রস্তুত হয়ে গেলেন নিজেকে সমর্পণের। বাপ-বেটার দুনিয়া জাগানিয়া, আরশ কাঁপানো দৃশ্যপট দেখে পৃথিবীর মালিক খুশি হয়ে গেলেন। রহমতের কোলে তুলে নিলেন পিতা-পুত্রকে। তদস্থলে জবেহ হলো বেহেশতি দুম্বা। পিতা-পুত্রের কাহিনি পবিত্র কালামে পত্রস্থ হয়েছে এভাবে—(ইবরাহিম বলল) হে আমার প্রতিপালক! আমাকে একজন সৎকর্মপরায়ণ সন্তান দান করো। অতঃপর আমি তাকে এক স্থিরবুদ্ধি পুত্রের সুসংবাদ দিলাম। তারপর সে যখন তার পিতার সঙ্গে কাজ করার মতো বয়সে উপনীত হলো, তখন ইবরাহিম বলল, পুত্র আমার! আমি স্বপ্নে দেখি, তোমাকে আমি জবাই করছি। এখন তোমার অভিমত কী বলো। পুত্র বলল, হে আমার পিতা! আপনি যা আদিষ্ট হয়েছেন, তা সম্পাদন করুন। আল্লাহর ইচ্ছায় আপনি আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন। যখন তারা উভয়ে (আল্লাহর নির্দেশের সামনে) আত্মসমর্পণ করল, আর ইবরাহিম তার পুত্রকে কাত করে শায়িত করে। তখন আমি তাকে বললাম, হে ইবরাহিম! তুমি তো স্বপ্নাদেশ সত্যই পালন করলে। এভাবেই আমি সৎকর্মপরায়ণদের পুরস্কৃত করে থাকি। নিশ্চয়ই এ ছিল এক স্পষ্ট পরীক্ষা। আমি তাকে (পুত্র ইসমাইলকে) মুক্ত করলাম এক কোরবানির বিনিময়ে। আর আমি এটা (ঈদুল আজহায় কোরবানি করার রীতি প্রবর্তন করে) পরবর্তীদের স্মরণে রেখেছি। ’ (সুরা : সাফফাত, আয়াত : ১০০-১০৮)

কোরবানির মধ্য দিয়ে আমরা খুঁজে পাই আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য। কোরবানি ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিধান। আবশ্যকীয় আমল। ইসলামে কোরবানিকে সাব্যস্ত করা হয়েছে সংস্কৃতি ও একান্ত পালনীয় বরণীয় বিধানে। নবুয়তপ্রাপ্তির পর মক্কি জীবনে হুকুম আসে কোরবানি করার। আল্লাহ বলেন, ‘তুমি তোমার রবের জন্য নামাজ পড়ো ও কোরবানি করো। ’ (সুরা : কাউছার, আয়াত : ২)

মহানবী (সা.) মদিনায় ১০ বছর বেঁচে ছিলেন, প্রতিবছরই তিনি কোরবানি করেছেন।   কোরবানি মুহাম্মদ (সা.)-এর সফল জীবনধারার চিরন্তন আমল। হজরত ইবনে উমর (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) ঈদগাহে জবাই ও নহর করতেন। ’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৫৫২)

সামর্থ্যবান ব্যক্তির উচিত কোরবানি করা। সামর্থ্যবান ব্যক্তি কোরবানির আবেদনকে উপেক্ষা করতে পারবে না। কোরবানি আদায় করবে না—এমন ব্যক্তির ব্যাপারে কঠিন হুঁশিয়ারি আরোপ করেছেন প্রিয় নবী (সা.)। সাবধান করে দিয়েছেন, তারা যেন ঈদগাহে না আসে। হাদিসে ঘোষিত হয়েছে, প্রখ্যাত সাহাবি আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কোরবানি করে না, সে যেন আমাদের ঈদের মাঠের কাছেও না আসে। ’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩১২৩)

ইসলামে সামর্থ্যবান হলো ওই ব্যক্তি, মৌলিক প্রয়োজনীয় সামানের বাইরে যদি কারো কাছে নগদ কিংবা অতিরিক্ত আসবাবপত্র এই পরিমাণ থাকে, যার মূল্য সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার সমান, তাহলে সে ইসলামের দৃষ্টিতে সামর্থ্যবান। এমন ব্যক্তির ওপর কোরবানি ওয়াজিব। (কিতাবুল ফাতাওয়া : ৪/১৩১)

কোরবানি একটি পুণ্যময় ইবাদত। পার্থিব জীবনে ত্যাগের শিক্ষা নিয়ে আখিরাতের জীবনে সফলতার বারিধারায় সিক্ত হওয়ার বর্ণাঢ্য সুযোগ। অফুরন্ত সওয়াব আছে কোরবানিতে। পশুর প্রতিটি পশমে পশমে রয়েছে সওয়াব। পশুর রক্ত জমিন স্পর্শ করার আগেই তার রক্ত পৌঁছে যায় আল্লাহ পাকের কাছে। বান্দার ত্যাগ কবুল করা হয় সওয়াবের নরম চাদরে ঢেকে ঢেকে। তাই খোদার ভালোবাসায় আসক্ত হয়ে তাঁর সমীপে কোরবানি করে আমরা তাঁর মেহমান হব। আদরে আপ্যায়নে আমাদের দলের সঙ্গী বানাব পাশের গরিবকে।


Title: Re: Combining faith and tradition
Post by: fahad.faisal on January 31, 2019, 01:43:38 PM
Thanks for sharing.