Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Topics - ashraful.diss

Pages: [1] 2 3 ... 15
1
 
🔥 শরাব পান করো, কোরআন পোড়াও, কাবায় আগুন লাগাও, মন্দিরে আস্তানা গাড়ো – কিন্তু মানুষকে কষ্ট দিও না!🔥

আজ আমি আপনাদের সামনে এমন একটি বিস্ফোরক বিষয় নিয়ে কথা বলতে এসেছি যা হয়তো অনেকের কাছে বিতর্কিত মনে হতে পারে। কিন্তু গভীরভাবে চিন্তা করলে এর গভীরতম সত্য উপলব্ধি করা যায়। কথাটি হলো – তুমি যাই করো না কেন, যত বড় পাপই করো না কেন, এমনকি যদি তুমি ধর্মীয় অনুশাসনও ভেঙে দাও – তবুও কোনো মানুষকে কষ্ট দিও না।

হয়তো শুনে আপনারা চমকে উঠছেন। ভাবছেন, একজন মানুষ কিভাবে এমন কথা বলতে পারে? শরাব পান করা, ধর্মগ্রন্থের অবমাননা করা, পবিত্র স্থানে আগুন লাগানো – এগুলো তো জঘন্য অপরাধ। হ্যাঁ, বাহ্যিকভাবে দেখলে এগুলো অবশ্যই গর্হিত কাজ। কিন্তু এর পেছনের গভীর অর্থ অনুধাবন করা জরুরি।

🤔 আসুন, আমরা একটু ভিন্নভাবে চিন্তা করি 🤔

একজন মানুষ যখন মাদকাসক্ত হয়, তখন সে নিজের ক্ষতি করে। যখন সে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে, তখন সে একটি বিশেষ গোষ্ঠীর বিশ্বাসে আঘাত হানে। যখন সে পবিত্র স্থানে ধ্বংসযজ্ঞ চালায়, তখন সে অনেকের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ ঘটায়। কিন্তু এই কাজগুলো মূলত বস্তুগত বা ধারণাগত বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত।

অন্যদিকে, যখন একজন মানুষ অন্য একজন মানুষকে কষ্ট দেয় – সেটা শারীরিক, মানসিক বা আবেগগত যাই হোক না কেন – তখন সে সরাসরি একটি জীবন্ত আত্মার উপর আঘাত হানে। একটি হৃদয়ের স্পন্দন থামিয়ে দেয়, একটি মুখের হাসি কেড়ে নেয়, একটি জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে। এই কষ্টের দাগ সহজে মোছার নয়।

কোরআন, কাবা বা মন্দির – এগুলো সবই শ্রদ্ধার স্থান, পবিত্রতার প্রতীক। কিন্তু মানুষের জীবন তার থেকেও মূল্যবান। কারণ প্রতিটি মানুষের মধ্যেই সেই মহান স্রষ্টার আত্মা বিদ্যমান। যখন আমরা কাউকে কষ্ট দেই, তখন আমরা প্রকারান্তরে সেই ঐশ্বরিক সত্তাকেই আঘাত করি।

🕊️ ধর্মের মূল শিক্ষা কী? 🕊️

ভালোবাসা, সহানুভূতি, পরোপকার। কোনো ধর্মই মানুষকে ঘৃণা করতে, কষ্ট দিতে শেখায় না। বরং সকল ধর্মই শান্তি ও সহানুভূতির কথা বলে। যদি কোনো ধর্মীয় আচার বা বিশ্বাস মানুষকে কষ্ট দেওয়ার কারণ হয়, তবে সেই আচার বা বিশ্বাসের পুনর্বিবেচনা করা উচিত।

আসুন, আমরা বাহ্যিক আচার-অনুষ্ঠানের ঊর্ধ্বে উঠে মানুষের ভেতরের সত্তাকে সম্মান করি। ধর্ম-বর্ণ, জাতি-গোষ্ঠী নির্বিশেষে প্রতিটি মানুষকে ভালোবাসি। কারণ মানবতাই সবচেয়ে বড় ধর্ম।

হয়তো কেউ শরাব পান করে নিজের ক্ষতি করছে, হয়তো কেউ ভিন্ন পথে হেঁটে নিজের বিশ্বাস নষ্ট করছে, হয়তো কেউ পবিত্র স্থানের অবমাননা করছে – কিন্তু যদি তারা অন্য কোনো মানুষের ক্ষতি না করে, তবে তাদের বিচার করার অধিকার আমাদের নেই। তাদের কর্মের ফল তারা অবশ্যই ভোগ করবে।

কিন্তু যদি আমরা সামান্যতম কারণেও কোনো মানুষের মনে আঘাত দিই, তার জীবন দুর্বিষহ করে তুলি, তবে তার জন্য আমাদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। মানুষের চোখের জল কখনো বৃথা যায় না।

🤝 আসুন, আমরা মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে দাঁড়াই 🤝

তাই আজ আমি আহ্বান জানাই – আসুন, আমরা এমন একটি সমাজ গড়ে তুলি যেখানে ধর্মীয় গোঁড়ামি বা ব্যক্তিগত বিদ্বেষের কোনো স্থান নেই। যেখানে প্রতিটি মানুষ সম্মানের সাথে বাঁচতে পারে। যেখানে একজন মানুষ তার বিশ্বাস অনুযায়ী চলতে পারে, যতক্ষণ না সে অন্য কারো কষ্টের কারণ না হয়।

মনে রাখবেন, সবচেয়ে বড় ইবাদত হলো মানুষের সেবা করা, সবচেয়ে বড় পুণ্য হলো কারো মুখে হাসি ফোটানো এবং সবচেয়ে বড় পাপ হলো কারো মনে কষ্ট দেওয়া।

ভালোবাসা আর সহানুভূতির বন্ধনে আবদ্ধ হই। এই হোক আমাদের জীবনের মূলমন্ত্র।

আপনারা কি আমার এই ভাবনার সাথে একমত? আপনার মূল্যবান মতামত কমেন্টে জানান। 👇

#মানবতাই_সর্বোত্তম #মানুষকে_ভালোবাসো #কষ্ট_দিও_না #শান্তির_পথে

2

এই মিছে দুনিয়ায় তুমি থাকবে কতদিন?

ফোরামের এই শান্ত সন্ধ্যায়, আসুন আমরা জীবনের এক গভীর সত্য নিয়ে কিছুক্ষণ ভাবি। এই যে জগত, যেখানে আমরা হাসি, কাঁদি, স্বপ্ন দেখি, অর্জন করি – এই দুনিয়ায় আমরা কতদিন থাকব? একটু থমকে ভাবুন তো।

আমাদের জীবন যেন এক ক্ষণিকের অতিথি। এক পথিক, যে পথ চলতে চলতে কোথাও একটু বিশ্রাম নেয়, আবার গন্তব্যের পানে যাত্রা করে। এই পৃথিবীর চাকচিক্য, এর সম্পদ, এর ক্ষমতা – সবই ক্ষণস্থায়ী। আজ যা আমার, কাল তা অন্যের হতে পারে। কালের স্রোতে সবকিছু ভেসে যায়, ধুয়ে যায়।

আমরা কত মায়া জড়াই এই পৃথিবীর সাথে। সুন্দর বাড়ি, দামি গাড়ি, অগুনতি সম্পর্ক – কত কিছুর পেছনে আমরা ছুটে চলি। কিন্তু একবারও কি গভীরভাবে ভেবে দেখেছি, যখন ডাক আসবে, তখন এসব কিছুই কি সাথে যাবে? এই ধন-সম্পদ, এই আত্মীয়-পরিজন – সবাই তো এই পৃথিবীতেই রয়ে যাবে।

আমাদের জীবনটা একটা পদ্মপাতার জলের মতো। টলমল করছে, একটু বাতাসেই পড়ে যাবে। কখন যে এই নশ্বর দেহের বাঁধন ছিঁড়ে যাবে, তা আমরা কেউই জানি না। অথচ আমরা কত অহংকারে মত্ত থাকি, কত অন্যায় করি, কত মানুষের মনে কষ্ট দেই।

আসুন, আমরা একটু আত্মসমালোচনা করি। এই অল্প সময়ের জীবনে আমরা কী করছি? শুধু কি নিজের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য আর ভোগ-বিলাসের পেছনে ছুটছি? নাকি এমন কিছু করছি যা এই পৃথিবী ছেড়ে যাওয়ার পরেও টিকে থাকবে?

আমাদের মনে রাখা উচিত, এই জীবন একটা সুযোগ। ভালো কাজ করার সুযোগ, মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সুযোগ, ভালোবাসা বিলিয়ে দেওয়ার সুযোগ। আমরা যদি এই সুযোগ হেলায় হারাই, তাহলে আফসোস করা ছাড়া আর কিছুই করার থাকবে না।

আসুন, আমরা এই ক্ষণস্থায়ী জীবনের গুরুত্ব বুঝি। প্রতিটি মুহূর্তকে মূল্যবান মনে করি। এমন কিছু কাজ করে যাই, যা আমাদের মৃত্যুর পরেও মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকে। ভালোবাসা, সহানুভূতি আর সততার আলোয় আলোকিত করি আমাদের পথ।

মনে রাখবেন, এই মিছে দুনিয়ায় আমরা বেশি দিন থাকব না। তাই আসুন, আমরা এমন কিছু করে যাই, যা আমাদের পরকালের পাথেয় হবে। যা আমাদের আত্মাকে শান্তি দেবে।


3

খারাপ সময়ে যখন সব দরজা বন্ধ, তখনো খোলা আল্লাহর রহমতের দুয়ার

জীবনের পথ সবসময় মসৃণ থাকে না। ঝড়-ঝঞ্ঝা, দুঃখ-বেদনা, অভাব-অনটন আমাদের জীবনে নেমে আসতে পারে। এমন কঠিন পরিস্থিতিতে মনে হওয়া স্বাভাবিক যে, যেন চারপাশ থেকে সব দরজা বন্ধ হয়ে গেছে। আপনজন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, বন্ধু-বান্ধব দূরে সরে গেছে, সহায়তার সকল পথ রুদ্ধ হয়ে গেছে। হতাশা আর নিরাশার কালো মেঘ আমাদের আকাশ ছেয়ে ফেলে।

কিন্তু এই ঘোর অন্ধকারেও এক ক্ষীণ আলোর রেখা আমাদের অন্তরে আশা জাগাতে পারে। সেটি হলো মহান আল্লাহ তা'আলার দরজা। মানুষের দরজা হয়তো কোনো কারণে বন্ধ হয়ে যেতে পারে, স্বার্থপরতা, ভয় বা অক্ষমতা তাদের সরিয়ে নিতে পারে। কিন্তু যিনি সর্বশক্তিমান, যিনি দয়াময়, যাঁর রহমতের কোনো সীমা নেই, সেই আল্লাহর দরজা কখনোই তাঁর বান্দাদের জন্য বন্ধ হয় না।

কোরআন মাজীদে আল্লাহ তা'আলা বলেন:

وَإِذَا سَأَلَكَ عِبَادِي عَنِّي فَإِنِّي قَرِيبٌ ۖ أُجِيبُ دَعْوَةَ الدَّاعِ إِذَا دَعَانِ ۖ فَلْيَسْتَجِيبُوا لِي وَلْيُؤْمِنُوا بِي لَعَلَّهُمْ يَرْشُدُونَ
   
"আর যখন আমার বান্দা আমার সম্পর্কে তোমাকে জিজ্ঞাসা করে, তখন বলো, নিশ্চয় আমি নিকটবর্তী। আমি আহবানকারীর ডাকে সাড়া দিই, যখন সে আমাকে ডাকে। সুতরাং তারা যেন আমার ডাকে সাড়া দেয় এবং আমার প্রতি ঈমান আনে, যাতে তারা সঠিক পথে চলতে পারে।" (সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৮৬)

এই আয়াতে আল্লাহ তা'আলা স্পষ্ট ঘোষণা করছেন যে তিনি তাঁর বান্দাদের অতি নিকটে। যখন কোনো বান্দা আন্তরিকভাবে তাঁকে ডাকে, তখন তিনি সেই ডাকে সাড়া দেন। খারাপ সময়ে যখন আর কোনো আশ্রয় থাকে না, তখন আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করাই মুমিনের শান।

কেন আল্লাহর দরজা কখনো বন্ধ হয় না?

অসীম দয়া ও ক্ষমা: আল্লাহ তা'আলার দয়া ও ক্ষমা অসীম। তিনি তাঁর বান্দাদের ভুলত্রুটি ক্ষমা করতে সদা প্রস্তুত। খারাপ সময়ে অনুতপ্ত হয়ে তাঁর কাছে আশ্রয় নিলে তিনি কখনোই ফিরিয়ে দেন না।

সর্বশক্তিমান: তিনি সর্বশক্তিমান। মানুষের সাধ্য সীমিত হলেও আল্লাহর ক্ষমতার কোনো সীমা নেই। কঠিনতম পরিস্থিতিতেও তিনি সাহায্যের হাত বাড়াতে পারেন।

বান্দার প্রতি ভালোবাসা: আল্লাহ তাঁর বান্দাদের ভালোবাসেন। তিনি চান তাঁর বান্দারা কষ্টের সময় তাঁর কাছে সাহায্য চাক এবং তিনি তাদের সেই কষ্ট দূর করবেন।

হতাশ হওয়া নিষেধ: ইসলামে হতাশ হওয়া কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে। খারাপ সময়েও আল্লাহর রহমতের উপর ভরসা রাখা মুমিনের কর্তব্য।

খারাপ সময়ে আমাদের করণীয়:

আল্লাহর দিকে রুজু হওয়া: যখন সব দরজা বন্ধ মনে হয়, তখন একমাত্র আল্লাহর দিকেই আন্তরিকভাবে প্রত্যাবর্তন করুন।

দু'আ ও কান্নাকাটি: নিজের অসহায়তা আল্লাহর কাছে পেশ করুন, চোখের পানি ফেলে সাহায্য চান। আল্লাহ অবশ্যই শুনবেন।

ধৈর্য ধারণ: খারাপ সময়ে ধৈর্য ধারণ করা ঈমানের পরীক্ষা। বিশ্বাস রাখুন, কষ্টের পরেই শান্তি আসবে।

ক্ষমা চাওয়া: নিজের ভুলত্রুটির জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চান। হয়তো আপনার কোনো ভুলের কারণেই এই বিপদ এসেছে।

আশা রাখা: কখনোই আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হবেন না। মনে রাখবেন, রাতের পরেই দিন আসে।

পরিশেষে, আসুন আমরা এই বিশ্বাস রাখি যে খারাপ সময়ে যখন পৃথিবীর সকল দরজা আমাদের জন্য বন্ধ হয়ে যায়, তখনও মহান আল্লাহ তা'আলার রহমতের দরজা সবসময় খোলা থাকে। একমাত্র তাঁর কাছেই আমরা প্রকৃত আশ্রয় ও সাহায্য লাভ করতে পারি। তাই আসুন, সকল পরিস্থিতিতে আমরা তাঁর দিকেই প্রত্যাবর্তন করি এবং তাঁর অসীম দয়া ও ক্ষমার ছায়াতলে নিজেদের জীবনকে সমর্পণ করি।

আল্লাহ তা'আলা আমাদের সকলকে কঠিন সময়ে তাঁর উপর ভরসা রাখার এবং তাঁর সাহায্য লাভের তাওফিক দান করুন। আমীন।


4

ইসলামের আলোকে ভয়ের নিরাময় - আশার আলোয় উদ্ভাসিত জীবন

জীবনের পথে চলতে গিয়ে আমরা বিভিন্ন সময়ে অজানা আশঙ্কা, অনিশ্চয়তা আর ভয়ের সম্মুখীন হই। ভবিষ্যতের ভাবনা, প্রিয় হারানোর বেদনা, ব্যর্থতার ভয় - কত না দুশ্চিন্তা আমাদের মনকে আচ্ছন্ন করে রাখে। মনে হয় যেন চারপাশ অন্ধকার, আর সামনে এগোনোর কোনো পথ নেই। কিন্তু এই অস্থির সময়ে একটি শান্ত ও দৃঢ় বিশ্বাস আমাদের হৃদয়ে সাহস যোগাতে পারে - ভয় পাওয়ার কিছু নেই।

এই বাক্যটি কেবল কয়েকটি শব্দের সমষ্টি নয়, বরং এটি একটি শক্তিশালী মন্ত্র, যা আমাদের মানসিক শক্তিকে জাগিয়ে তোলে এবং আশার আলো দেখায়। যখন ভয় আমাদের গ্রাস করতে চায়, তখন এই বিশ্বাস আমাদের মনে প্রশান্তি এনে দেয় যে, সবকিছু শেষ হয়ে যায়নি।

ভয়ের উৎস ও তার মোকাবিলা:

আমাদের ভয়ের প্রধান উৎস হলো অজানা ভবিষ্যৎ এবং আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরের পরিস্থিতি নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা করা। আমরা সেইসব বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তা করি যা হয়তো কখনোই ঘটবে না। এই কাল্পনিক ভয় আমাদের বর্তমানের শান্তি কেড়ে নেয় এবং সামনে এগোনোর পথে বাধা সৃষ্টি করে।

ভয়ের মোকাবিলা করতে হলে প্রথমে এর উৎস চিহ্নিত করতে হবে। কোন বিষয়গুলো আমাদের মনে ভীতির সঞ্চার করে? একবার কারণ জানা গেলে, সেই ভয়কে যুক্তি দিয়ে মোকাবিলা করা সম্ভব। মনে রাখতে হবে, অনেক ভয়ই আমাদের মনের projection, বাস্তবের সাথে যার কোনো সম্পর্ক নেই।

ইসলামের আলোকে ভয়ের নিরাময়:

ইসলাম আমাদের ভয় মোকাবিলা করার জন্য শক্তিশালী দিকনির্দেশনা দেয়। একজন মুমিনের সবচেয়ে বড় আশ্রয় হলো আল্লাহ তা'আলার উপর অবিচল বিশ্বাস। কোরআন মাজীদে আল্লাহ তা'আলা বলেন:

أَلَا إِنَّ أَوْلِيَاءَ اللَّهِ لَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ

"জেনে রাখো, যারা আল্লাহর বন্ধু, তাদের কোনো ভয় নেই এবং তারা দুঃখিতও হবে না।" (সূরা ইউনুস, আয়াত: ৬২)

যারা আল্লাহর উপর পূর্ণ ভরসা রাখে এবং তাঁর পথে জীবন পরিচালনা করে, তাদের কোনো ভয় থাকার কারণ নেই। কারণ আল্লাহ সর্বশক্তিমান এবং তিনি তাঁর বিশ্বাসী বান্দাদের রক্ষা করেন।

ভয় দূর করার উপায়:

আল্লাহর উপর ভরসা: সকল পরিস্থিতিতে আল্লাহর উপর ভরসা রাখুন। বিশ্বাস করুন, তিনি যা করেন বান্দার ভালোর জন্যই করেন।

ধৈর্য ধারণ: কঠিন সময়ে ধৈর্য ধরুন। মনে রাখবেন, কষ্টের পরেই শান্তি আসে।

দু'আ করা: আল্লাহর কাছে সাহায্য চান। নিজের ভয় ও দুর্বলতার কথা তাঁর কাছে বলুন।

ইতিবাচক চিন্তা: নেতিবাচক চিন্তা পরিহার করে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করুন।

বর্তমানকে গুরুত্ব দেওয়া: ভবিষ্যতের অজানা ভয় নিয়ে দুশ্চিন্তা না করে বর্তমানে মনোযোগ দিন এবং নিজের সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যান।

জ্ঞান অর্জন: জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে অনেক অজানা ভয়কে জয় করা যায়। পরিস্থিতি সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান থাকলে অযথা আতঙ্কিত হওয়ার প্রবণতা কমে যায়।

সাহসী পদক্ষেপ: ভয়কে জয় করতে হলে মাঝে মাঝে Comfort Zone থেকে বেরিয়ে এসে সাহসী পদক্ষেপ নিতে হয়। ছোট ছোট ঝুঁকি নেওয়ার মাধ্যমে আত্মবিশ্বাস বাড়ে।

প্রকৃতির সান্নিধ্য: প্রকৃতির কাছাকাছি সময় কাটানো মনকে শান্ত করে এবং ভয় কমাতে সাহায্য করে।

সৎসঙ্গ: ইতিবাচক ও সাহসী মানুষদের সাথে মেলামেশা করুন। তাদের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা লাভ করুন।

ভয় যখন স্বাভাবিক:

অবশ্য কিছু ভয় স্বাভাবিক এবং প্রয়োজনীয়। যেমন - বিপদ থেকে নিজেকে রক্ষা করার ভয়, অন্যায় কাজের পরিণতির ভয়। এই ধরনের ভয় আমাদের সতর্ক করে এবং ক্ষতির হাত থেকে বাঁচায়। কিন্তু যখন অমূলক ভয় আমাদের জীবনকে স্থবির করে দেয়, তখনই তা মোকাবিলা করা জরুরি।

পরিশেষে:

আসুন, আমরা সকলে ভয়কে জয় করার জন্য নিজেদের মনকে প্রস্তুত করি। আল্লাহর উপর অবিচল বিশ্বাস রাখি এবং ইতিবাচক চিন্তাভাবনার মাধ্যমে জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে উপভোগ করি। মনে রাখবেন, ভয় পাওয়ার কিছু নেই, কারণ মহান আল্লাহ সবসময় আমাদের সাথে আছেন। তাঁর অসীম দয়া ও করুণা আমাদের সকল ভয়কে জয় করতে সাহায্য করবে।

আল্লাহ তা'আলা আমাদের সকলকে সাহসী ও প্রশান্ত হৃদয় দান করুন। আমীন।


5
তাওবা: ফিরে আসার অনন্ত আহ্বান

আজ আমি এমন একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে এসেছি, যা আমাদের জীবনের প্রতিটি বাঁকে আশার আলো দেখাতে পারে, আমাদের ভুলগুলোকে শুধরে নেওয়ার সুযোগ করে দিতে পারে এবং মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের পথ উন্মোচন করতে পারে। আর সেটি হলো - তাওবা।

তাওবা আরবি শব্দ, যার আভিধানিক অর্থ হলো ফিরে আসা, প্রত্যাবর্তন করা, অনুতপ্ত হওয়া। ইসলামী শরীয়তে তাওবা বলতে বোঝায় কোনো ভুল বা পাপ কাজ করার পর অনুশোচনায় দগ্ধ হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া, ভবিষ্যতে সেই পাপ আর না করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করা এবং সাধ্যমত অতীতের ভুলগুলো সংশোধন করার চেষ্টা করা।

তাওবা মহান আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে বান্দার জন্য এক বিশাল অনুগ্রহ। মানুষ স্বভাবতই ভুল করে, পদস্খলিত হয়। কিন্তু আল্লাহ চান তাঁর বান্দা হতাশ না হোক, বরং ভুলের অন্ধকার থেকে ফিরে এসে তাঁর রহমতের আলোয় আশ্রয় নিক। তিনি তাওবার দরজা সর্বদা খোলা রেখেছেন।

কোরআন মাজীদে আল্লাহ তা'আলা বারবার তাওবার প্রতি উৎসাহিত করেছেন এবং তাওবাকারীদের ভালোবাসার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন:

وَهُوَ الَّذِي يَقْبَلُ التَّوْبَةَ عَنْ عِبَادِهِ وَيَعْفُو عَنِ السَّيِّئَاتِ وَيَعْلَمُ مَا تَفْعَلُونَ

"আর তিনিই তাঁর বান্দাদের তাওবা কবুল করেন এবং পাপসমূহ ক্ষমা করে দেন; এবং তোমরা যা কর, তিনি তা জানেন।" (সূরা আশ-শুরা, আয়াত: ২৫)

অন্যত্র আল্লাহ তা'আলা বলেন:

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا تُوبُوا إِلَى اللَّهِ تَوْبَةً نَصُوحًا عَسَىٰ رَبُّكُمْ أَنْ يُكَفِّرَ عَنْكُمْ سَيِّئَاتِكُمْ وَيُدْخِلَكُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ
 
"হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহর কাছে খাঁটি তাওবা করো; আশা করা যায় তোমাদের রব তোমাদের পাপসমূহ মোচন করবেন এবং তোমাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত।" (সূরা আত-তাহরীম, আয়াত: ৮)

তাওবার শর্তসমূহ:

একটি গ্রহণযোগ্য তাওবা হতে হলে প্রধানত কিছু শর্ত পূরণ করা জরুরি:

১. অনুতপ্ত হওয়া (নাদামাহ): কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা ও লজ্জিত হওয়া। হৃদয় থেকে অনুভব করা যে কাজটি ভুল হয়েছে এবং এর জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত।

২. তাড়াতাড়ি পরিত্যাগ করা (ইক্বলা'): যে পাপ কাজটি করা হয়েছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে ছেড়ে দেওয়া। যদি পাপটি চলমান থাকে, তবে তা দ্রুত বন্ধ করতে হবে।

৩. পুনরায় না করার দৃঢ় সংকল্প (আজম): ভবিষ্যতে আর কখনো সেই পাপ কাজটি না করার জন্য মনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করা। শুধু মুখে মুখে বললে হবে না, অন্তর থেকে সেই বিষয়ে বিতৃষ্ণা সৃষ্টি হতে হবে।

৪. অধিকার ফেরত দেওয়া (রাদ্দুল হুকুক): যদি পাপটি অন্য কোনো মানুষের অধিকারের সাথে জড়িত থাকে, যেমন - কারো সম্পদ আত্মসাৎ করা, কারো মানহানি করা - তাহলে সাধ্যমত সেই অধিকার ফেরত দিতে হবে অথবা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে।

৫. নির্দিষ্ট সময়ে তাওবা করা: তাওবার দরজা সর্বদা খোলা থাকলেও এর কিছু নির্দিষ্ট সময়সীমা রয়েছে। যেমন - মৃত্যু উপস্থিত হওয়ার আগে এবং সূর্য পশ্চিম দিক থেকে উদিত হওয়ার আগে তাওবা কবুল করা হয়। এই সময়ের পর তাওবা আর গ্রহণযোগ্য হবে না।

তাওবার তাৎপর্য ও উপকারিতা:

তাওবা আমাদের জীবনে অসংখ্য কল্যাণ বয়ে আনে:

আল্লাহর ক্ষমা লাভ: তাওবার মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর ক্ষমা ও রহমত লাভ করে। আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও দয়ালু।

পাপ মোচন: খাঁটি তাওবার মাধ্যমে অতীতের সকল গুনাহ মাফ হয়ে যায়, যেন সেই ব্যক্তি কখনো কোনো পাপই করেনি।

আত্মশুদ্ধি: তাওবা আমাদের অন্তরকে কলুষতা থেকে পরিষ্কার করে এবং আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে।

মানসিক শান্তি: অনুশোচনার দহন থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং অন্তরে প্রশান্তি লাভ হয়।

আল্লাহর নৈকট্য লাভ: তাওবার মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর আরও কাছে চলে আসে এবং তাঁর ভালোবাসা অর্জন করে।

জীবনের দিক পরিবর্তন: তাওবা আমাদের জীবনের ভুল পথ থেকে সঠিক পথে ফিরে আসতে সাহায্য করে।

আমাদের করণীয়:

আমাদের সকলের উচিত সর্বদা আল্লাহর কাছে তাওবা করতে থাকা। আমরা জ্ঞাতসারে বা অজ্ঞাতসারে প্রতিনিয়ত ভুল করি। তাই আমাদের উচিত প্রতিদিন নিজেদের ভুলগুলোর জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া এবং ভবিষ্যতে সেগুলো আর না করার প্রতিজ্ঞা করা। বিশেষ করে যখন কোনো পাপ কাজ হয়ে যায়, তখন বিলম্ব না করে দ্রুত তাওবা করা উচিত।

আসুন, আমরা সকলে মিলে খাঁটি অন্তরে আল্লাহর কাছে তাওবা করি এবং তাঁর ক্ষমা ও রহমত লাভের সৌভাগ্য অর্জন করি। আল্লাহ তা'আলা আমাদের সকলকে তাওবা করার এবং সেই তাওবার উপর অবিচল থাকার তাওফিক দান করুন। আমীন।


6

বিশুদ্ধ নিয়তের গুরুত্ব: প্রকাশ্য ও গোপন জীবনের চালিকাশক্তি

আজ আমি এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে এসেছি, যা আমাদের জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে আলোকিত করতে পারে, আমাদের আমলগুলোকে অর্থবহ করে তুলতে পারে এবং আল্লাহর দরবারে গ্রহণযোগ্যতা এনে দিতে পারে। আর সেটি হলো - প্রত্যেক কাজ, কথা এবং প্রকাশ্য-গোপনীয় অবস্থায় নিয়তকে বিশুদ্ধ করা।

নিয়ত আরবি শব্দ, যার অর্থ হলো সংকল্প, উদ্দেশ্য, অভিপ্রায় বা আকাঙ্ক্ষা। ইসলামে নিয়তের গুরুত্ব অপরিসীম। আমাদের প্রতিটি কাজের বাহ্যিক রূপ যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি সেই কাজের পেছনের উদ্দেশ্য বা নিয়তও আল্লাহর কাছে অত্যন্ত মূল্যবান। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

إِنَّمَا الْأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ، وَإِنَّمَا لِكُلِّ امْرِئٍ مَا نَوَى

"নিশ্চয়ই সকল কাজ নিয়তের উপর নির্ভরশীল এবং প্রত্যেক ব্যক্তি তার নিয়ত অনুযায়ী ফল পাবে।" (সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম)

এই একটি হাদীসই নিয়তের গুরুত্ব অনুধাবন করার জন্য যথেষ্ট। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপ, প্রতিটি কথা এবং এমনকি আমাদের গোপন চিন্তাভাবনারও একটি নিয়ত থাকে। এই নিয়ত যদি বিশুদ্ধ হয়, একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য হয়, তাহলে সেই কাজ, কথা বা চিন্তাও ইবাদতে পরিণত হতে পারে এবং আল্লাহর কাছে পুরষ্কারের যোগ্য হতে পারে। পক্ষান্তরে, যদি নিয়তে ভেজাল থাকে, লোক দেখানো উদ্দেশ্য থাকে অথবা অন্য কোনো পার্থিব লাভের আকাঙ্ক্ষা থাকে, তাহলে সেই কাজের বাহ্যিক সৌন্দর্য থাকা সত্ত্বেও তা আল্লাহর কাছে মূল্যহীন হয়ে যেতে পারে।

প্রকাশ্য জীবনে বিশুদ্ধ নিয়তের গুরুত্ব:

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আমরা যা কিছু করি, যেমন - সালাত আদায় করা, যাকাত দেওয়া, রোজা রাখা, হজ পালন করা, দান-সাদাকা করা, জ্ঞান অর্জন করা, পরিবার ও সমাজের জন্য কাজ করা - এই সমস্ত কাজের নিয়ত বিশুদ্ধ হওয়া অপরিহার্য। যদি আমাদের সালাত লোক দেখানোর জন্য হয়, যাকাত সুনাম অর্জনের জন্য হয়, অথবা দান-সাদাকা পার্থিব কোনো স্বার্থের জন্য হয়, তাহলে সেই আমল আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। আল্লাহ তা'আলা বলেন:

وَمَا أُمِرُوا إِلَّا لِيَعْبُدُوا اللَّهَ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ حُنَفَاءَ وَيُقِيمُوا الصَّلَاةَ وَيُؤْتُوا الزَّكَاةَ ۚ وَذَٰلِكَ دِينُ الْقَيِّمَةِ   

"তাদেরকে কেবল এই আদেশ করা হয়েছিল যে, তারা খাঁটি মনে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর ইবাদত করবে এবং সালাত কায়েম করবে ও যাকাত দেবে। এটাই সঠিক দ্বীন।" (সূরা আল-বাইয়্যিনাহ, আয়াত: ৫)

অতএব, আমাদের প্রকাশ্য জীবনের প্রতিটি ইবাদত ও সৎকাজের নিয়ত হতে হবে একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। কোনো প্রকার খ্যাতি, প্রশংসা বা পার্থিব লাভের উদ্দেশ্য যেন আমাদের আমলকে কলুষিত না করে।

গোপন জীবনে বিশুদ্ধ নিয়তের গুরুত্ব:

আমাদের গোপন জীবনও আমাদের ঈমানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমরা যখন একান্তে থাকি, তখন আমাদের অন্তরে যে চিন্তাগুলো আসে, আমাদের যে গোপন আকাঙ্ক্ষা থাকে, সেগুলোরও একটি নিয়ত থাকে। যদি আমাদের গোপন নিয়ত আল্লাহর অসন্তুষ্টির কারণ হয়, যেমন - কুচিন্তা করা, হারাম কাজের পরিকল্পনা করা, কারো ক্ষতি কামনা করা - তাহলে এর খারাপ প্রভাব আমাদের আত্মাকে কলুষিত করে।

অন্যদিকে, যদি আমাদের গোপন নিয়ত বিশুদ্ধ হয়, যেমন - একান্তে আল্লাহর যিকির করা, নিজের ভুলত্রুটির জন্য অনুতপ্ত হওয়া, অন্যের জন্য কল্যাণ কামনা করা - তাহলে এর মাধ্যমে আমাদের ঈমান মজবুত হয় এবং আল্লাহর রহমত লাভ করা যায়।

কথা বলার ক্ষেত্রে বিশুদ্ধ নিয়তের গুরুত্ব:

আমাদের প্রতিটি কথারও একটি নিয়ত থাকে। আমরা যখন কারো সাথে কথা বলি, তখন আমাদের উদ্দেশ্য কী? কি উদ্দেশ্যে আমরা সেই কথা বলছি? যদি আমাদের কথা বলার উদ্দেশ্য হয় কাউকে কষ্ট দেওয়া, কারো সম্মানহানি করা, মিথ্যা প্রচার করা অথবা অনর্থক আলোচনা করা, তাহলে সেই কথা আল্লাহর কাছে অপছন্দনীয়।

পক্ষান্তরে, যদি আমাদের কথা বলার উদ্দেশ্য হয় সত্য বলা, ভালো উপদেশ দেওয়া, মানুষের মাঝে মীমাংসা করা অথবা আল্লাহর যিকির করা, তাহলে সেই কথা সদকাহ হিসেবে গণ্য হতে পারে। আল্লাহ তা'আলা বলেন:

لَا خَيْرَ فِي كَثِيرٍ مِنْ نَجْوَاهُمْ إِلَّا مَنْ أَمَرَ بِصَدَقَةٍ أَوْ مَعْرُوفٍ أَوْ إِصْلَاحٍ بَيْنَ النَّاسِ ۚ وَمَنْ يَفْعَلْ ذَٰلِكَ ابْتِغَاءَ مَرْضَاتِ اللَّهِ فَسَوْفَ نُؤْتِيهِ أَجْرًا عَظِيمًا 

"তাদের অধিকাংশ গোপন আলোচনায় কোনো কল্যাণ নেই; তবে কল্যাণের কথা হলো যে দান-খয়রাত, সৎকাজ অথবা মানুষের মধ্যে মীমাংসা করার নির্দেশ দেয়। আর যে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে তা করে, অচিরেই আমি তাকে মহা পুরস্কার দেব।" (সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১১৪)

অতএব, আমাদের প্রতিটি কথার নিয়ত হতে হবে কল্যাণকর এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে।

নিয়ত বিশুদ্ধ করার উপায়:

নিয়তকে বিশুদ্ধ করা একটি Continuous process। এর জন্য আমাদের সর্বদা সজাগ থাকতে হবে এবং নিজেদের অন্তরের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। কিছু উপায় নিচে উল্লেখ করা হলো:

আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া: নিয়তকে বিশুদ্ধ করার জন্য আল্লাহর কাছে নিয়মিত দু'আ করা।

আত্মপর্যালোচনা করা: প্রতিটি কাজ ও কথার আগে নিজের উদ্দেশ্য সম্পর্কে গভীরভাবে চিন্তা করা।

ইখলাসের গুরুত্ব সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা: কোরআন ও হাদীসে ইখলাসের ফজিলত এবং রিয়ার (লোক দেখানো) ভয়াবহতা সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা।

সৎসঙ্গ অবলম্বন করা: এমন ব্যক্তিদের সাথে বন্ধুত্ব রাখা যারা আল্লাহর প্রতি একনিষ্ঠ এবং যাদের সংস্পর্শে নিজের নিয়ত বিশুদ্ধ রাখার প্রেরণা পাওয়া যায়।

অহংকার ও আত্মম্ভরিতা পরিহার করা: নিজের আমল ও জ্ঞানের উপর গর্ব করা থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখা।

গোপনে সৎকাজ করা: লোক দেখানোর প্রবণতা কমানোর জন্য মাঝে মাঝে গোপনে এমন কিছু সৎকাজ করা যা অন্য কেউ জানে না।

পরিশেষে, আসুন আমরা সকলে আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে - প্রকাশ্য ও গোপনে, কথা ও কাজে - নিয়তকে বিশুদ্ধ করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করি। একমাত্র বিশুদ্ধ নিয়তই আমাদের আমলগুলোকে আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে পারে এবং আমাদের দুনিয়া ও আখেরাতের জীবনে শান্তি ও সফলতা এনে দিতে পারে।

আল্লাহ তা'আলা আমাদের সকলকে ইখলাসের সাথে আমল করার তাওফিক দান করুন। আমীন।


7

অন্ধকার রাতের ন্যায় একের পর এক ফিতনায় ছেয়ে যাচ্ছে আমাদের পৃথিবী………………।

অন্ধকার রাতের ন্যায় একের পর এক ফিতনায় ছেয়ে যাচ্ছে আমাদের পৃথিবীর সাদাসিধে আপন মানুষগুলি। চোখ ধাঁধানো ফিতনার আক্রমণে আমরা হারিয়ে ফেলছি সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকরণ ক্ষমতা। কারা আল্লাহর বন্ধু (ভাল মানুষ) আর কারা শয়তানের বন্ধু (খারাপ মানুষ), তা চিহ্নিত করতে গিয়ে ধোঁকায় পতিত হচ্ছি আমরা। আমরা আজ শয়তানের দোসরদের আল্লাহর বন্ধু ভাল মানুষ ভেবে বসি, আর আল্লাহর বন্ধুদের অর্থাৎ ভাল মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হই। আজ থেকে শত শত বছর পূর্বে মহান আল্লাহ তায়ালা এই ফিতনার মোকাবিলায় একটি কালজয়ী গ্রন্থ আল-কুরান রচনা করে আমাদের সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর নাজিল করেছেন।

এই ‘আল-কুরকানে বাইনা আউলিয়া-উর-রহমান ওয়া আউলিয়া-উশ-শাইত্বান’ নামের সেই মানুষগুলোর ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা আলোচনা করেছেন কারা আল্লাহর বন্ধু আর কারা শয়তানের বন্ধু। ঠিক কোন কোন বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হলে একজন ব্যক্তি আল্লাহর বন্ধু ভাল মানুষ হয়ে ওঠে, আর কোন কোন বৈশিষ্ট্যের কারণে একজন ব্যক্তি শয়তানের বন্ধু খারাপ মানুষ হয়ে যায়, কিন্তু আমরা বুঝবো কি করে! আমরাতো কুরআনের ব্যাখা বিশ্লেষণ জানিনা। তাহলে উপায় কি? ঘোর অমানিশার এই সময়ে আপনার উচিৎ আপনার জীবনকে পরিচালনার ক্ষেত্রে একজন দ্বীনদার জ্ঞানী অভিভাবক নিযুক্ত করা। আপনার যে কোন ভাল-মন্দ উনার কাছে শেয়ার করবেন আর তিনি আপনাকে দুনিয়ার খারাপ মানুষের ফেতনা থেকে কিভাবে বাঁচা যায় সে বিষয়ে পরামর্শ দিবেন। আল্লাহ যদি চান তাহলে এভাবে এক সময় আমরা আল্লাহর বন্ধু আর শয়তানের বন্ধু চিহ্নিত করার বেশ কিছু সূত্র জানতে পারব ইনশা আল্লাহ। অন্যথায় আপনি দুনিয়ার বহুরুপী খারাপ মানুষের পালায় পরে নিজে পথ ভ্রষ্ট হবেন এবং দুনিয়ার ভালো মানুষের সান্নিধ্য হারাবেন। দুনিয়া এবং আখেরাত উভয় জগতেই আপনি ক্ষতিগ্রস্থ হবেন।

তাই আমার পরামর্শ বন্ধু নির্বাচনে সতর্ক হোন। সাহায্যকারী, হেল্পিহ্যান্ড, অন্তরঙ্গ বন্ধু বানাতে সতর্কতা অবলম্বন করুন। কারণ আপনার সাথী হতে পারে আপনার দুনিয়া ও পরকালের পার হওয়ার কারণ। আবার হতে পারে জীবনের চরম অশান্তি, কষ্ট, ব্যর্থতা, জাহান্নামের কারণ। যেমন একটি নেশাখোর বন্ধু আপনাকে শুধু সিগারেট টানতে আর মদ খেতে ডাকবে। সে আপনাকে তার কাজে লিপ্ত করবে। আর একজন দ্বীনদার ভাল মানুষ আপনাকে ভাল পরামর্শ দিয়ে কুরআন শিক্ষায় উৎসাহিত করবে। আপনার হাশর, মিযান,পুলসিরাত সহজ করে দিবে।

একজন ভালো বন্ধু ভাল মানুষ একটা দুনিয়ার সমান।
🌺🌺🌺


8
Hadith / হাদীস নং ৩১
« on: November 20, 2024, 12:17:03 PM »
হাদীস নং ৩১

স্মার্ট মানুষ মাত্রই পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে। তা ছাড়া পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা ঈমানের অঙ্গ। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

الطُّهُورُ شَطْرُ الإِيمَانِ

অর্থঃ পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা হল ঈমানের অঙ্গ। (মুসলিম,২২৩;মুসনাদু আহমাদ,২২৯০২)

পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যাপারেও হাদিসে নির্দেশনা এসেছে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমরা লানতকারী (অভিশাপে আক্রান্ত হতে হয় এমন) দুইটি কাজ থেকে বেঁচে থাকো। সাহাবারা জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রসুল, লানতকারী কাজ দুইটি কী তিনি বলেন, যে মানুষের চলাচলের রাস্তায় কিংবা গাছের ছায়ায় মলমূত্র ত্যাগ করে।’ (আবু দাউদ ২৫, মুসনাদ আহমদ ৮৮৫৩)

বন্ধুরা, তোমরাও সর্বদা পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকবে। তা হলে তোমাদের শরীর-মন সবকিছুই ভালো থাকবে ইনশা আল্লাহ।

9
Hadith / হাদীস নং ৩০
« on: September 26, 2024, 01:42:19 PM »
হাদীস নং ৩০

ভালো কাজ করলে আল্লাহ অনেক খুশি হন। এরকম একটি ভালো কাজ হলো, বেশি বেশি সালাম বিনিময় করা। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

أَفْشُوا السَّلاَمَ بَيْنَكُمْ

অর্থঃ তোমরা বেশি বেশি সালাম বিনিময় করো। (মুসলিম,৫৪;আবূ দাউদ,৫১৯৩)

মানুষের সঙ্গে পরিচয়ের সর্বোত্তম মাধ্যম হলো ‘সালাম’। বিনা কষ্টে, বিনা মূল্যে অত্যন্ত ফলদায়ক অভিবাদনটির নাম ‘আসসালামু আলাইকুম’। এটি কেবল একটি বাক্য নয়, বরং এটি একটি ম্যাগনেটিক পাওয়ারের নাম। এর মাধ্যমে অপর প্রান্তের ব্যক্তির হৃদয়ে ভালোবাসার বীজ বপন করা হয়। নবী (সা.) কে প্রশ্ন করা হলো উত্তম ইসলাম কোনটি? জবাবে তিনি বলেন, অন্যকে খাদ্য খাওয়ানো এবং পরিচিত-অপরিচিত সবাইকে সালাম দেওয়া। সুতরাং আপনারাও পরিচিত-অপরিচিত (মুসলিমদের) সবাইকে সালাম দেবেন। এতে আল্লাহ অনেক খুশি হবেন।

চলবে.........................................................

10
Hadith / হাদীস নং ২৯
« on: September 25, 2024, 10:58:07 AM »
হাদীস নং ২৯

আমাদের মধ্যে কিছু মানুষ আছে, যাদের মুখের ভাষা ভালো না। তারা মানুষকে গালি দেয়। অথচ মুসলিমকে গালি দেওয়া পাপকাজ। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

سِبابُ المسلم فسوق

অর্থঃ মুসলিমকে গালি দেওয়া ফাসিকি। (বুখারী,৪৮; মুসলিম,৬৪)

আজকাল গালিগালাজ অনেকের কাছে একটি ফ্যাশনও হয়ে দাঁড়িয়েছে। অধীনস্ত বা নিম্ন আয়ের লোকজনের সঙ্গে স্বাভাবিক কথা বলার সময়ও সঙ্গে কিছু অশালীন গালি জুড়ে দেয়। অথচ এটি যে ইসলামের দৃষ্টিতে গর্হিত কাজ সেটি আমরা মনে রাখি না। বন্ধুরা, আপনারা কখনোই কাউকে গালি দেবেন না। মুসলিমদের গালি দিলে আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন।

চলবে................................................


11
Ethics / ফ্যাশনের সীমারেখা
« on: September 24, 2024, 01:21:17 PM »

ফ্যাশনের সীমারেখা

সাজ-সজ্জা সম্পর্কে তিনটি মৌলিক বিষয় মহিলাদের স্মরণ রাখতে হবে.....।

(১) যে সকল কাজ অকাট্য ভাবে শরীয়ত পরিপন্থী। সেগুলো করা কোন ভাবেই মহিলাদের জন্য জায়েয নেই। স্বামী বা অন্য কেউ যদি এসকল কাজ করার হুকুম দেয় এবং তা পালন না করলে তারা অসন্তুষ্ট হয়। এ পরিস্থিতিতেও তা করা যাবেনা।

হাদীসে সুস্পষ্ট আছে: অর্থাৎ: আল্লাহ তা'আলার অবাধ্যতামূলক কাজে সৃষ্টির আনুগত্য জায়েয নেই।

(২) যে সকল কার্যকলাপ শরীয়ত অনুমোদিত বিষয়াবলীর আওতায় অর্থাৎ জায়েয আছে, সে ক্ষেত্রে স্বামীর পূর্ণ আনুগত্য করা স্ত্রীর কর্তব্য।

এ সম্পর্কে হাদীসের ভাষ্য হল: "আমি যদি কাউকে সিজদাহ করার জন্য নির্দেশ দিতাম, তাহলে মহিলাদেরকে আদেশ করতাম তারা যেন আপন স্বামীদেরকে সিজদাহ করে।"

অপর এক হাদীসে এসেছে: যদি কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে লাল পাহাড়ের পাথর কালো পাহাড়ে এবং কালো পাহাড়ের পাথর লাল পাহাড়ে স্থানান্তরিত করার নির্দেশ দেয় তাহলে তার তাই করা উচিত।"

সাজ-সজ্জা না করলে স্ত্রীকে শাসন করা

স্বামীর নির্দেশ স্বত্ত্বেও যদি স্ত্রী পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও সাজ-সজ্জা গ্রহণ না করে তাহলে স্বামী শরীয়ত প্রদত্ত অধিকারে স্ত্রীকে শাসন করতে পারে। এ বিষয়ে হাকীমুল উম্মত হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানবী (রঃ) লিখেন: "স্বামীর প্রতি স্ত্রীর অন্যতম কর্তব্য হলো স্ত্রী নিজেকে অপরিষ্কার-অপরিচ্ছন্ন ও উসকো-খুশকো অবস্থায় রাখবেনা। বরং সেজে-গোজে পরিপাটি হয়ে থাকবে। এমনকি স্বামীর নির্দেশ স্বত্ত্বেও স্ত্রী যদি সেজে-গোজে না থাকে, তাহলে স্বামী স্ত্রীকে প্রহার করার অধিকার রাখে।"

সাজ-সজ্জায় নেকী

(৩) মহিলারা শরীয়তের পরীসীমার মধ্যে যে সাজ-সজ্জা করবে তা যদি স্বামীর খুশী করার উদ্দেশ্যে হয়, অন্য কোন মহিলা বা নামাহরাম পুরুষদের দেখানো বা অহংকার প্রকাশের উদ্দেশ্যে না হয়, তাহলে এ সাজ-সজ্জার জন্য সে সওয়াব পাবে। এতে অন্যান্য মানুষ খুশী হোক বা নারাজ হোক কিছু যায় আসে না।

চলবে......................................................


12
Hadith / হাদীস নং ২৮
« on: September 23, 2024, 02:46:14 PM »
হাদীস নং ২৮

কিছু মানুষ সবসময় অন্যের দোষ খুঁজে বেড়ায়। নবিজি এটা করতে নিষেধ করেছেন। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

لاَ تَحَسَّسُوا، وَلاَ تَجَسَّسُوا

অর্থঃ তোমরা ছিদ্রান্বেষণ কোরো না ও পরস্পরের দোষ খুঁজে বেড়িয়ো না। (বুখারী,৬০৬৪; মুসলিম,২৫৬৩)

মানুষ ভুলের ঊর্ধ্বে নয়। সবার দোষ-গুণ রয়েছে। ভুল মানুষই করে। ফেরেশতা কখনও ভুল করে না। তাই অন্যের দোষ খোঁজা ও প্রচার করা মুমিনের উচিত নয়। যে অন্যের দোষ-ত্রুটি গোপন রাখে- মহান আল্লাহও তার দোষ-ত্রুটি গোপন রাখেন। সুতরাং তোমরা কখনো কারও দোষ খুঁজে বেড়িয়ো না। মুসলিম বন্ধুদের বিরুদ্ধে কখনো গোয়েন্দাগিরি করবে না। বুঝেছ, বন্ধুরা?

চলবে...................................................


13
Hadith / হাদীস নং ২৭
« on: August 19, 2024, 10:15:26 AM »
হাদীস নং ২৭

আমাদের সকলের মধ্যকার সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য হিংসা-বিদ্বেষ থেকে মুক্ত থাকতে হবে। অন্যকে হিংসা করা খুব খারাপ কাজ। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

لاَ تَحَاسَدُوا وَ لاَ تَبَاغَضُوا

অর্থঃ তোমরা পরস্পর হিংসা কোরো না ও বিদ্বেষ-পোষণ কোরো না। (বুখারী,৬০৬৫; মুসলিম,২৫৫৯)

বন্ধুরা, তোমরা তোমাদের বন্ধুদের হিংসা করবে না। কারও প্রতি অন্তরে বিদ্বেষ-পোষণ করবে না।

চলবে......................................................


14
Hadith / হাদীস নং ২৬
« on: August 17, 2024, 10:08:13 AM »
হাদীস নং ২৬

কিছু কিছু গুনাহ আল্লাহ এত অপছন্দ করেন যে, যারা এসব গুনাহ করবে তাদের তিনি জান্নাতে প্রবেশ করাবেন না। এরকম একটি গুনাহ হলো চোগলখুরী বা একজনের কথা অন্যজনের কানে লাগানো। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَتَّاتٌ

অর্থঃ চোগলখোর জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (বুখারী,৬০৫৬; মুসলিম,১০৫)

বন্ধুরা ,তোমরা কখনো এমন কাজ করবে না। একজনের গোপন কথা আরেকজনের কাছে বলে বেড়াবে না।

চলবে............................................................


15
Hadith / হাদীস নং ২৫
« on: August 14, 2024, 03:41:17 PM »
হাদীস নং ২৫

আল্লাহর নিকট অনেক পছন্দনীয় একটি আমল হলো আত্নীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা। বিপরীতে আত্নীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করতে নিষেধ করেছেন তিনি। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَاطِعٌ

অর্থঃ আত্নীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (বুখারী,৫৯৮৪;মুসলিম,২৫৫৬)

বন্ধুরা, তোমরা সবসময় তোমাদের আত্নীয়দের সাথে সুসম্পর্ক রাখবে। নিয়মিত তাদের খোঁজখবর নেবে। কখনোই তাদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবে না।

চলবে............................................................


Pages: [1] 2 3 ... 15