Daffodil International University

Help & Support => Common Forum/Request/Suggestions => Topic started by: ashraful.diss on January 17, 2022, 11:47:34 AM

Title: আদম (আঃ) কে হাওয়া (রাঃ) এর সঙ্গে জান্নাতে বসবাস করার অনুমতি দেয়া হয়েছিল
Post by: ashraful.diss on January 17, 2022, 11:47:34 AM
আদম (আঃ) কে হাওয়া (রাঃ) এর সঙ্গে জান্নাতে বসবাস করার অনুমতি দেয়া হয়েছিল

মহান আল্লাহ তা’আলা আদম আঃ সাঃ থেকে হাওয়া রাঃ কে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ জানিয়েছেন যে তিঁনি হাওয়া রাঃ কে সৃষ্টি করেছেন যেন আদম আঃ তার সাথে থেকে সস্থি পায়।

ہُوَ الَّذِیۡ خَلَقَکُمۡ مِّنۡ نَّفۡسٍ وَّاحِدَۃٍ وَّجَعَلَ مِنۡہَا زَوۡجَہَا لِیَسۡکُنَ اِلَیۡہَا ۚ فَلَمَّا تَغَشّٰہَا حَمَلَتۡ حَمۡلًا خَفِیۡفًا فَمَرَّتۡ بِہٖ ۚ فَلَمَّاۤ اَثۡقَلَتۡ دَّعَوَا اللّٰہَ رَبَّہُمَا لَئِنۡ اٰتَیۡتَنَا صَالِحًا لَّنَکُوۡنَنَّ مِنَ الشّٰکِرِیۡنَ

তিনিই সে সত্তা যিনি তোমাদিগকে সৃষ্টি করেছেন একটি মাত্র সত্তা থেকে; আর তার থেকেই তৈরী করেছেন তার জোড়া, যাতে তার কাছে স্বস্তি পেতে পারে। অতঃপর পুরুষ যখন নারীকে আবৃত করল, তখন সে গর্ভবতী হল। অতি হালকা গর্ভ। সে তাই নিয়ে চলাফেরা করতে থাকল। তারপর যখন বোঝা হয়ে গেল, তখন উভয়েই আল্লাহকে ডাকল যিনি তাদের পালনকর্তা যে, তুমি যদি আমাদিগকে সুস্থ  ও ভাল দান কর  তবে আমরা তোমার শুকরিয়া আদায় করব। {সূরা আল-আরাফ: আয়াত ১৮৯}

আল্লাহ তাঁর শাহী দরবার বা জান্নাত থেকে ইবলিসকে বহিস্কার করে হযরত আদম (আঃ)-কে জান্নাতে বসবাসের স্থান দিলেন। কিছু দিন অতিবাহিত হওয়ার পর বিশাল জান্নাতে আদম (আঃ)-এর একা ভাল লাগে না। তাই একদিন তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন তাঁর বাম পাড়জড়ের এক খানা বাকা হাড্ডি নিয়ে সমগ্র মানব জাতির আদি মাতা হযরত হাওয়া (আঃ)-কে আল্লাহ পাক সৃষ্টি করে তার পাশে বসায়ে রাখলেন।

মাদারেজুন নবুয়ত নামক কিতাবের মধ্যে আছে, নিদ্রা ভঙ্গের পর হযরত আদম (আঃ) মা হাওয়া (আঃ)-এর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে তাঁর দিকে হাত বাড়াতে উদ্যত হয়েছিলেন। এমন সময় ফেরেশতারা বলল, হে আদম! যতক্ষণ পর্যন্ত তাকে বিবাহ না করবে ততক্ষণ পর্যন্ত তাঁর দিকে হস্তক্ষেপ করা তোমার জন্য জায়েয হবে না। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, বিবাহ কিভাবে হবে? ফেরেশতারা জবাব দিল হে আদম! বিবাহ করলে হাওয়া (আঃ) তোমার স্ত্রী হবে আর তোমাদের ঔরসে সন্তানাদী হতে থাকবে। এভাবে আখেরী জামানায় তোমার এমন একজন সন্তানকে আল্লাহ পাক পাঠাবেন যাকে সৃষ্টি না করলে তোমাকেও সৃষ্টি করা হত না। সেই ভাগ্যবান সন্তানের উপর তিনবার দুরুদ শরীফ পাঠ না করলে হাওয়া (আঃ)-এর সাথে তোমার বিবাহ হবে না। আল্লাহ পাক আমাদের নবীকে (সাঃ) কত বড় সম্মানিত নবী করে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন যে তাঁর উপর দুরুদ না পড়লে আদম (আঃ)-এর বিবাহ হল না। অবশেষে আদম-হাওয়া (আঃ) জান্নাতে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে মহাসুখে বসবাস করতে ছিলেন।

ইবনে কাসীর রহমতুল্লাহ বলেছেন, আদম (আঃ) স্বর্গেই থাকতেন, একাকীত্ব বোধ করতেন এবং তার এমন কোনো সঙ্গীও ছিল না যার কাছ থেকে তিনি খানিকটা প্রশান্তি পেতে পারেন। একদিন তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন। ঘুম থেকে উঠে মাথার কাছে কাউকে বসে থাকতে দেখলেন তিনি। এক সুন্দরী রমণী; স্নিগ্ধ আর কোমল দৃষ্টি মেলে তার দিকেই তাকিয়ে আছে।

আদম (আঃ) তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কে?”  উত্তরে সে বললো, “আমি একজন নারী।”  তিনি আবার জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমাকে কেন সৃষ্টি করা হয়েছে?” জবাবে, “যাতে আমার মধ্যে তুমি প্রশান্তি খুঁজে পাও।”

ফেরেশতারা আদম (আঃ) এর কাছে তার নাম জানতে চাইলে জবাবে তিনি বললেন, হাওয়া (ইংরেজিতে Eve) – যার মানে জীবিত কিছু। তারা পুনরায় জিজ্ঞেস করলো, “আপনি কেন তাকে হাওয়া নামে ডাকছেন?” জবাবে আদম (আঃ) বললেন, “কারণ সে আমার থেকে সৃষ্টি হয়েছে আর আমি একজন জীবিত সত্তা।”

وَقُلۡنَا یٰۤاٰدَمُ اسۡکُنۡ اَنۡتَ وَزَوۡجُکَ الۡجَنَّۃَ وَکُلَا مِنۡہَا رَغَدًا حَیۡثُ شِئۡتُمَا ۪ وَلَا تَقۡرَبَا ہٰذِہِ الشَّجَرَۃَ فَتَکُوۡنَا مِنَ الظّٰلِمِیۡنَ

এবং আমি আদমকে হুকুম করলাম যে, তুমি ও তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস করতে থাক এবং ওখানে যা চাও, যেখান থেকে চাও, পরিতৃপ্তিসহ খেতে থাক, কিন্তু এ গাছের নিকটবর্তী হয়ো না। অন্যথায় তোমরা যালিমদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে পড়বে। {সূরা আল-বাকারা: আয়াত ৩৫}

আবু হুরায়রা হইতে বর্ণিত আছে যে, নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,“তোমরা নারীদেরকে উত্তম নাসীহাত প্রদান করবে। কেননা নারী জাতিকে পাঁজরের হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। আর পাঁজরের হাড়গুলোর মধ্যে উপরের হাড়টি বেশী বাঁকা। তুমি যদি তা সোজা করতে যাও, তাহলে তা ভেঙ্গে যাবে আর যদি ছেড়ে দাও, তাহলে সব সময় তা বাঁকাই থাকবে। কাজেই নারীদেরকে নাসীহাত করতে থাক।” {সহীহ বুখারী বই ৬০, হাদিস ৬/ ৩৩৩১}