Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Topics - Md. Abul Bashar

Pages: 1 2 [3] 4 5 ... 11
31
সংযত আচরণ ইমানদারের লক্ষণ
আবদুর রশিদ

জীবজগতের মধ্যে মানুষই একমাত্র জীব মানুষ হয়ে উঠতে যার পরিচর্যার দরকার হয়। যা অন্য কোনো জীবের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। প্রত্যেক বাবা-মায়ের লক্ষ্য থাকতে হবে তাঁর সন্তান যেন মানবিক গুণ অর্জন করে। কেউ যদি খারাপ আচরণ করে কোনো মুমিনের উচিত নয় তার সঙ্গে একই ধরনের আচরণ করা। কারণ মানুষ হলো সৃষ্টির সেরা জীব। তার আচরণ হওয়া উচিত মানুষের মতো। পশুর  মতো বিবেকবর্জিত বা কান্ডজ্ঞানহীন আচরণ মানুষের হওয়া উচিত নয়। এ বিষয়ে একটি হাদিস স্মরণযোগ্য।

হুজায়ফা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা কালের দাস (হীনভাবে অন্যের আচরণের মতো আচরণকারী) হয়ে যেও না। বোলো না যে লোকেরা যদি ভালো ব্যবহার করে তবে আমরাও (তাদের সঙ্গে) ভালো ব্যবহার করব। আর তারা যদি দুর্ব্যবহার করে তবে আমরাও তাদের সঙ্গে জুলুম করব। বরং তোমরা নিজেদের এই আদর্শের অনুসারী বানাও যে লোকেরা ভালো ব্যবহার করলে তোমরাও ভালো ব্যবহার করবে এবং তারা জুলুম করলে তোমরা তাদের অনুসরণ করবে না।’ তিরমিজি।

মানুষকে অবশ্যই ব্যক্তিত্বসম্পন্ন হতে হবে। যাকে তাকে অনুসরণ ও অনুকরণ কোনো খাঁটি মানুষের কাছ থেকে আশা করা যায় না। সমাজের সবাই খারাপ পথে চললে সে গড্ডলিকা প্রবাহে গা ভাসানো কোনো মুমিনের কাজ হতে পারে না। সমাজের গতি যেদিকেই হোক না কেন মুমিনদের অবশ্যই ন্যায়-ইনসাফ ও সদাচরণ করতে হবে। সদাচরণ অন্য মানুষের মঙ্গল কামনা, সংঘাত এড়িয়ে চলা মুমিনদের ভূষণ হিসেবেই বিবেচিত হয়। এমনকি যুদ্ধের মতো সংঘাতময় পরিবেশেও মুমিনের কর্তব্য হলো সংঘাত এড়িয়ে চলা যায় কি না সে চেষ্টা করা।
আবদুল্লাহ ইবনে আবু আওফা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদিন দুশমনের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত থাকাকালে সূর্য ঢলে পড়ার অপেক্ষায় ছিলেন। এরপর তিনি লোকদের মাঝে দাঁড়িয়ে বলেন- হে লোকেরা! তোমরা শত্রুর সঙ্গে সংঘর্ষ কামনা কোর না; বরং আল্লাহর কাছে নিরাপত্তা ও শান্তি কামনা কর। আর যখন শত্রুর মুখোমুখি হও তখন ধৈর্য ধারণ কর (অবিচল থাক)।’ বুখারি, মুসলিম।

‘ইসলাম সদাচরণকে কতটা গুরুত্ব দিয়েছে রসুলুল্লাহ (সা.)-এর আরেকটি হাদিস তার প্রমাণ। তিনি বলেন, ‘যে লোক আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে সে হয় ভালো কথা বলবে নচেৎ নীরব থাকবে। মহান আল্লাহ আপন কালামে বলেন, ‘মানুষ যে কথাই উচ্চারণ করুক না কেন তা-ই লিখে (সংরক্ষণ করে) রাখার জন্য তার সঙ্গে রয়েছে সদাতৎপর প্রহরী।’ (একবার) হজরত ওকবা ইবনে আমের (রা.) আরজ করলেন, হে আল্লাহর রসুল! কীভাবে নাজাত পাওয়া যাবে?

রসুল (সা.) বললেন, তোমার রসনা সংযত রাখ, তোমার বাড়িকে (পরিজনদের) সুরক্ষিত রাখ। তোমার ত্রুটি-বিচ্যুতির (পাপের) জন্য কাঁদো আর মনে রেখ পাষাণ-চিত্তরা আল্লাহর নৈকট্য থেকে সবচেয়ে বেশি দূরে।’ আবু দাউদ, তিরমিজি। আরেক হাদিসে রসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর কাছে সবচেয়ে ঘৃণিত মানুষ হচ্ছে বাচাল, অশ্লীল ও অসংযত কথাবার্তায় অভ্যস্ত ব্যক্তি।’ আল্লাহ আমাদের সবাইকে সদাচরণের তৌফিক দান করুন।




লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক

32
নতুন ধরন নিয়ে সতর্ক বাংলাদেশ
দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে যোগাযোগ স্থগিত করার ঘোষণা। বিমানবন্দর, স্থলবন্দর বা দেশের সব প্রবেশপথে স্ক্রিনিং আরও জোরদার করার জন্য নির্দেশনা।

করোনাভাইরাসের নতুন ধরন (ভেরিয়েন্ট) ১১টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। সংক্রমণ প্রতিরোধে বিভিন্ন দেশ আন্তর্জাতিক চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা শুরু করেছে। সতর্কতা হিসেবে বাংলাদেশ দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে যোগাযোগ স্থগিত করার ঘোষণ দিয়েছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সময় নষ্ট না করে স্বাস্থ্য বিভাগকে মাঠে নামতে হবে।

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমে এলেও নতুন ধরনের উদ্ভব ও তা ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি ছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, ৯ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনার নতুন ধরন ‘ওমিক্রন’ শনাক্ত হয়। বিজ্ঞান সাময়িকী নেচার বলেছে, নতুন ধরনটি প্রথম শনাক্ত হয়েছে আফ্রিকার দেশ বতসোয়ানায়।
গত বছর অক্টোবরেও ভারতে নতুন একটি ধরন শনাক্ত হয়েছিল। ‘ডেলটা’ নামের ওই ধরন অতি দ্রুত বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছিল। ডেলটা ধরন বাংলাদেশে শনাক্ত হয় এ বছর ৮ মে। প্রথম শনাক্ত হওয়া ব্যক্তি ভারতফেরত ছিলেন।

এ পর্যন্ত আফ্রিকার ছয়টি দেশসহ হংকং, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, ইসরায়েলে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে ইউরোপের প্রায় প্রতিটি দেশ আফ্রিকার সঙ্গে যোগাযোগ স্থগিত করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে ফ্লাইট বাতিল করেছে। একই পথ বেছে নিয়েছে জাপান ও সিঙ্গাপুর।
আফ্রিকার নতুন ধরনটি সম্পর্কে স্বাস্থ্য বিভাগ সতর্ক আছে বলে উল্লেখ করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। গতকাল সুইজারল্যান্ডে যাত্রার আগে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় তিনি বলেন, এই ভাইরাসটি খুবই আগ্রাসী। সে কারণে আফ্রিকার সঙ্গে যোগাযোগ এখন স্থগিত করা হচ্ছে। সব বিমানবন্দর, স্থলবন্দর বা দেশের সব প্রবেশপথে স্ক্রিনিং আরও জোরদার করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কী বলেছে
২৬ নভেম্বর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এক বিবৃতিতে বলেছে, নতুন ধরনটি নিয়ে এ পর্যন্ত মূল্যায়নে দেখা যায় আগের ধরনগুলোর চেয়ে নতুন ধরনটির ছড়িয়ে পড়ার গতি দ্রুততর। এর অর্থ হচ্ছে নতুন ধরনের মাধ্যমে সংক্রমণ ব্যাপক হওয়ার আশঙ্কা আছে।

এই পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সদস্যদেশগুলোকে চারটি পদক্ষেপ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে: নজরদারি জোরদার করার পাশাপাশি নতুন ধরনটি সম্পর্কে জানতে জিন বিশ্লেষণ করতে হবে; পূর্ণাঙ্গ জিন বিশ্লেষণের তথ্য সর্বসাধারণের জানার জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে; নতুন রোগী শনাক্ত হলে বা সংক্রমণ গুচ্ছ আকার ধারণ করলে তা বিশ্ব সংস্থাকে জানাতে হবে এবং নতুন ধরনের সংক্রমণের তীব্রতা, রোগনির্ণয় পদ্ধতিসহ বিদ্যমান জনস্বাস্থ্য ও সামাজিক উদ্যোগের কার্যকারিতা বোঝার জন্য কাজে সমন্বয় বাড়াতে হবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আরও বলেছে, মাস্ক পরা, হাত ধোয়া, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, ভিড় এড়িয়ে চলার পাশাপাশি টিকা নেওয়া অব্যাহত রাখতে হবে।

সরকার কী করছে
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনাবিষয়ক কমিটিগুলো নিয়মিত বৈঠক করে না বা সভা ডাকা হয় না। আট সদস্যের পাবলিক হেলথ অ্যাডভাইজারি কমিটির সর্বশেষ সভা হয়েছিল গত বছর অক্টোবর মাসে। অন্যদিকে রোগতত্ত্ব ও জনস্বাস্থ্যবিষয়ক কমিটির সর্বশেষ
সভা হয় এ বছর ফেব্রুয়ারিতে। এসব কমিটি করোনাবিষয়ক বৈজ্ঞানিক তথ্য ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের পাশাপাশি সরকারকে নানা বিষয়ে পরামর্শ দিত।

নতুন ধরন মোকাবিলার প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক মো. নাজমুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, পয়েন্ট অব এন্ট্রি বা বিদেশ থেকে বাংলাদেশে ঢোকার নির্দিষ্ট স্থানগুলোতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা আছে। সেসব স্থানে পরীক্ষা জোরদার করার মৌখিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে নির্দেশ এলে সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

করোনাবিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি আজ রোববার সভা করবে বলে জানিয়েছেন কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ সহিদুল্লা। এই সভায় নতুন পরিস্থিতিতে সরকারের করণীয় বিষয়ে আলোচনা হবে।

ভাইরাসের নতুন ধরন বা নতুন রোগী শনাক্তে বড় ভূমিকা আছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর)। আইইডিসিআরের পরিচালক তাহমিনা শিরীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘নমুনা পরীক্ষা চলমান। সেসব নমুনা থেকে নিয়মিতভাবে জিন বিশ্লেষণ করা হয়। আশা করি নতুন ধরন এলে আমরা দ্রুততম সময়ে শনাক্ত করতে পারব।’

দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের তথ্য জানানো হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ। দেশে এ পর্যন্ত ১৫ লাখ ৮৫ হাজার ৫৭৯ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মারা গেছেন ২৭ হাজার ৯৭৫ জন। গতকাল শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সর্বশেষ দুজন মারা যাওয়ার কথা জানিয়েছে। গতকাল নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ১ দশমিক ১৫ শতাংশ। সংক্রমণ ও মৃত্যু কমে আসার এই সময়ে করোনাভাইরাসের নতুন ধরনের তথ্য জানাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগতত্ত্ব ও জনস্বাস্থ্যবিষয়ক কমিটির সদস্য জনস্বাস্থ্যবিদ আবু জামিল ফয়সাল প্রথম আলোকে বলেন, বিদেশ থেকে দেশে প্রবেশের স্থানগুলোতে রোগ শনাক্তকরণ ব্যবস্থা জোরদার করার পাশাপাশি কোয়ারেন্টিন (সঙ্গনিরোধ), আইসোলেশন (বিচ্ছিন্নকরণ) ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। হাসপাতালে রোগী ব্যবস্থাপনা আরও উন্নত করতে হবে। মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে। নতুন ধরন আসার জন্য বসে থাকা উচিত হবে না। সময় নষ্ট না করে স্বাস্থ্য বিভাগকে মাঠে নামতে হবে।

33
Eyes / চোখের সুরক্ষায় যা করবেন
« on: November 25, 2021, 10:52:57 AM »
চোখের সুরক্ষায় যা করবেন

দিনে কতঘণ্টা ল্যাপটপ বা মোবাইল বা টেলিভিশনের সামনে ব্যয় করেন? ফোনে স্ক্রিন টাইম চেক করতে পারেন। অনলাইন ক্লাস বা কাজের সময় যোগ করতে পারেন। তাহলে ফলাফল কী হল? আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন যে এটি আপনার চোখে কতটা চাপ সৃষ্টি করতে পারে? গবেষণায় দেখা গেছে যে, এই গ্যাজেটগুলি থেকে নির্গত রশ্মি আমাদের চোখের জন্য ক্ষতিকারক। পর্যাপ্ত পরিচর্যায় চোখের স্বাস্থ্যের চিকিৎসা এবং দীর্ঘ সময়ের জন্য বজায় রাখা যায়।

আমাদের চোখের সুস্থ থাকার জন্য প্রাকৃতিক আলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চিকিত্‍সকদের মতে, চোখের যত্নের জন্য প্রতি বছর একবার করে চক্ষু পরীক্ষা করা উচিত। দিনে টানা ১২ ঘণ্টার বেশি ল্যাপটপ বা মোবাইল ফোনের স্ক্রিনে ডুবে থাকলে এমনিতেই চোখের সমস্যা শুরু হওয়া স্বাভাবিক। এই সব সমস্যা থেকে দূরে থাকতে কী কী মাথায় রাখা দরকার, তা জেনে নিন-

সঠিক ও স্বাস্থ্যকর খাবার খান-
ভিটামিন এ সমৃদ্ধ স্বাস্থ্যকর ও সুষম খাবার খাওয়া উচিত। ডায়েটে রাখুন স্বাস্থ্যকর খাবার। চোখের দৃষ্টি ও সুস্থ থাকতে ডায়েটের দিকেও নজর দেওয়া দরকার।

ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি-

অতিবেগুনি বিকিরণ থেকে চোখকে প্রতিরোধ করুন। সূর্য হল ইউভি এবং আলোর সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক উৎস। সকালের দিকে বা ভোরবেলায় সূর্যের আলো চোখের জন্য ভাল, তবে সরাসরি সূর্যের দিকে তাকাবেন না যেন।

কৃত্রিম উৎস-

বাল্ব, টিউবলাইট ব্যবহৃত এলইডি বা এলসিডি-সহ অনেক আলোর কৃত্রিম উত্‍‌সের সংস্পর্শে আমরা বেশিই থাকি। এছাড়া টিভি, মোবাইল, ল্যাপটপ, ডেস্কটপ প্রভৃতিও দেখা হয়। সূর্যের মতো শক্তিশালী না হলেও দীর্ঘক্ষণ চোখের সান্নিধ্যে থাকলে চোখের উপর নেগেটিভ প্রভাব পড়ে।

ডিজিটাল স্বাস্থ্যবিধি-

২০-২০-২০ নিয়ম। তারমানে প্রতি ২০ মিনিট অন্তর একজন ব্যক্তিকে ২০ সেকেন্ডের জন্য ২০ ফুট দূরে তাকাতে হবে। এতে চোখের পেশি শিথিল হয়। চোখের সুস্থতার জন্য এই নিয়ম অবশ্যই পালন করা আবশ্যিক।

ধূমপান ত্যাগ করা-

বয়সজনিত ম্যাকুলার ডিজেনারেশন ও ছানির সঙ্গে ধূমপান সংযুক্ত রয়েছে। ধূমপান আপনার দৃষ্টিশক্তি হারানোর সম্ভাবনাকে দ্বিগুণ করে তোলে। এছাড়া ডায়াবেটিস-সম্পর্কিত দৃষ্টি সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।

প্রতি বছর চক্ষুপরীক্ষা-

চিকিত্‍সকদের মতে, প্রতি বছর চোখের পরীক্ষা করানো উচিত। চোখ সুস্থ রাখতে আপনি যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে পারেন তা হল নিয়মিত চোখের পরীক্ষা করা। চোখের চশমার প্রয়োজন কিনা তা নির্ধারণ করার চেয়ে চোখের পরীক্ষা আরও বেশি জরুরি।


34
কোরআন ও হাদিসে অপচয় নিষিদ্ধ

মহান আল্লাহ তাঁর প্রিয় বান্দাদের জন্য অফুরন্ত নিয়ামতের ব্যবস্থা করেছেন। এবং তাঁর দেওয়া নিয়ামতগুলো যথাযথভাবে ভোগ করার নির্দেশ দিয়েছেন। কারণ আল্লাহর নির্দেশিত পদ্ধতিতে নিয়ামতের সঠিক ও যথাযথ ব্যবহার আল্লাহর শুকরিয়ার অংশ। যেসব কারণ মানুষের ওপর নিয়ামত সংকুচিত করা হয় বা মানুষকে বিপদে পড়তে হয়, তন্মধ্যে একটি হলো অপচয়। মহান আল্লাহ তাঁর প্রিয় বান্দাদের পবিত্র কোরআন ও হাদিসের অসংখ্য স্থানে অপচয় করতে নিষেধ করা হয়েছে। এক আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘হে আদম সন্তান, প্রত্যেক নামাজের সময় তোমরা সুন্দর পোশাক গ্রহণ করো। আর পানাহার করো; কিন্তু অপচয় কোরো না। নিশ্চয় তিনি অপচয়কারীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ৩১)

তবে এর মানে এই নয় যে অপচয় রোধ করতে গিয়ে কৃপণতা অবলম্বন করবে। মহান আল্লাহ কৃপণদের পছন্দ করেন না। অপচয় ত্যাগ করার অর্থ হলো মধ্যপন্থা অবলম্বন করা।

এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তুমি একেবারে ব্যয়কুণ্ঠ হয়ো না, আর একেবারে মুক্তহস্তও হয়ো না, তাহলে তুমি তিরস্কৃত, নিঃস্ব হয়ে বসে থাকবে।’ (সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ২৯)
অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ তাঁর পছন্দের বান্দাদের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, ‘আর তারা যখন ব্যয় করে তখন অপব্যয় করে না এবং কার্পণ্যও করে না; বরং মাঝামাঝি অবস্থানে থাকে।’ (সুরা : ফুরকান, আয়াত : ৬৭)

বিষয়টি হাদিস শরিফে এভাবে এসেছে, ‘পানাহার করো, সদকা করো আর পোশাক পরিধান করো, যতক্ষণ তা অপচয় ও অহংকার মিশ্রিত না হয়।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৬০৫)

উল্লেখ্য, আল্লাহর অবাধ্যতায় (পাপকাজে) খরচ করা অপব্যয় এবং আল্লাহর পথে খরচ না করা কৃপণতা। আর আল্লাহর নির্দেশানুসারে ও তাঁর আনুগত্যের পথে খরচ করা হলো মধ্যপন্থা অবলম্বন করা। (ফাতহুল কাদির) অনুরূপ আবশ্যকীয় খরচে ও বৈধ খরচেও সীমা অতিক্রম করা অপব্যয় বলে গণ্য। অতএব সে ক্ষেত্রেও সাবধানতা ও মধ্যপন্থা অবলম্বন করা একান্ত জরুরি।

আল্লাহর দেওয়া সম্পদ অপচয় করা আল্লাহ তাআলা কিছুতেই পছন্দ করেন না। ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ তোমাদের তিন বস্তু পছন্দ করেন আর তিন বস্তু অপছন্দ করেন। আল্লাহর পছন্দনীয় বস্তুগুলো হলো, তাঁর ইবাদত করা, তাঁর সঙ্গে কাউকে অংশীদার না করা এবং সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ থাকা, বিচ্ছিন্ন না হওয়া।

আর আল্লাহর অপছন্দনীয় বস্তু তিনটি হলো, অহেতুক কথা বলা, অহেতুক প্রশ্ন করা ও অনর্থক সম্পদ বিনষ্ট করা।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৭১৫)

কোনো ব্যক্তি অপচয় বা অপব্যয় করে শয়তান কর্তৃক প্ররোচিত হয়ে শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে। শয়তানের ধোঁকায় পড়ে সে আল্লাহর আদেশ ভুলে অপচয়ে মত্ত হয়ে থাকে। মনের খাহেশের পূজারি হয়ে ওঠে। এ জন্য পবিত্র  কোরআনে অপচয়কারীকে শয়তানের ভাই আখ্যায়িত করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই।’ (সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ২৭)

আল্লামা বরকুভি (রহ.) বলেন, ‘শয়তানের ভাই শয়তানের মতোই। এই পৃথিবীতে শয়তানের চেয়ে নিকৃষ্ট কোনো নাম নেই। এ হিসেবে অপচয়কারীকে শয়তানের ভাই আখ্যায়িত করার চেয়ে নিকৃষ্ট কোনো বিশেষণ নেই।’ (আত-ত্বরিকতুল মুহাম্মদিয়্যা, পৃষ্ঠা : ১০৩)

35


ক্ষমা মানে অপরাধ মার্জনা করে দেওয়া। আল্লাহর কাছে প্রত্যেকেরই ক্ষমা প্রার্থনা করা অপরিহার্য কর্তব্য। কারণ স্বয়ং আল্লাহ ক্ষমা প্রার্থনার নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমরা ক্ষমা প্রার্থনা করো আল্লাহর কাছে। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা মুজ্জাম্মিল, আয়াত : ২০)

আল্লাহর কাছে একনিষ্ঠ চিত্তে ক্ষমা প্রার্থনা করলে তিনি ক্ষমা করে দেবেন। কেননা আল্লাহপাক কোরআনের শতাধিক আয়াতে নিজেকে ক্ষমাশীল বলে ঘোষণা করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমার বান্দাদের জানিয়ে দাও যে নিশ্চয়ই আমি অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও অপরিসীম দয়ালু।’ (সুরা হিজর, আয়াত : ৪৯)

অন্য আয়াতে তিনি বলেন, ‘এর পরেও কি তারা আল্লাহর দিকে ফিরে আসবে না (অর্থাৎ তাওবা করবে না) এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে না? অথচ আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়াবান।’ (সুরা মায়েদা, আয়াত : ৭৪) বান্দার প্রতি আল্লাহর দয়া ও অনুগ্রহ অসীম। আল্লাহ বলেন, ‘বলো, হে আমার বান্দারা! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি জুলুম করেছ, আল্লাহর অনুগ্রহ থেকে নিরাশ হয়ো না। আল্লাহ সমুদয় পাপ ক্ষমা করে দেবেন। তিনি তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা জুমার, আয়াত : ৫৩)

ক্ষমা লাভের উপায়

কোরআন ও হাদিসে আল্লাহর ক্ষমা লাভ করার অনেক উপায় বর্ণিত হয়েছে। তন্মধ্যে কয়েকটি উপায় এখানে উল্লেখ করা হলো—

ঈমান ও নেক কাজের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করা

যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে ও নেক আমল করবে, আল্লাহ তাদের ক্ষমার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন, ‘যারা ঈমান আনে ও সত্কর্ম করে, আল্লাহ তাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ক্ষমা ও মহাপুরস্কারের।’ (সুরা ফাতহ, আয়াত : ২৯; সুরা মায়েদা, আয়াত : ৯) অন্যত্র তিনি বলেন, ‘আর যারা ঈমান আনে ও সত্কর্মসমূহ সম্পাদন করে, তাদের জন্য আছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার।’ (সুরা ফাতির, আয়াত : ৭)

আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা

আল্লাহর ক্ষমা লাভের জন্য তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। আল্লাহ বলেন, ‘আর আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়াবান।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৯৯)

তিনি আরো বলেন, ‘যে কেউ দুষ্কর্ম করে অথবা স্বীয় জীবনের প্রতি অবিচার করে, অতঃপর আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থী হয়, সে আল্লাহকে ক্ষমাশীল ও দয়ালু পাবে।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ১১০)

অন্যত্র আল্লাহ বলেন, ‘ক্ষমা প্রার্থনা করো তোমার জন্য এবং মুমিন নর-নারীদের পাপের জন্য। আল্লাহ তোমাদের গতিবিধি ও অবস্থান সম্বন্ধে অবগত আছেন।’ (সুরা মুহাম্মদ, আয়াত : ১৯)
অন্য হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, আল্লাহ বলেন, হে আদম সন্তান! যত দিন তুমি আমাকে ডাকবে এবং আমার কাছে ক্ষমার আশা রাখবে, আমি তোমাকে ক্ষমা করব, তোমার অবস্থা যা-ই হোক না কেন। আমি কারো পরোয়া করি না। হে আদম সন্তান! তোমার গুনাহ যদি আকাশ পর্যন্তও পৌঁছায় অতঃপর তুমি আমার কাছে ক্ষমা চাও, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব। আমি ক্ষমা করার ব্যাপারে কারো পরোয়া করি না। হে আদম সন্তান! তুমি যদি পৃথিবী পরিমাণ গুনাহ নিয়ে আমার দরবারে উপস্থিত হও এবং আমার সঙ্গে কাউকে শরিক না করে আমার সামনে আসো, আমি পৃথিবী পরিমাণ ক্ষমা নিয়ে তোমার কাছে উপস্থিত হব। (তিরমিজি, হাদিস, ৩৫৪০)

তাওবা করা

আল্লাহর ক্ষমা লাভের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে পাপ করার পরই তাঁর কাছে অনুতপ্ত হয়ে তাওবা করা। আল্লাহ বলেন, ‘তিনিই তাঁর বান্দাদের তাওবা কবুল করেন ও পাপ মোচন করেন।’ (সুরা শুরা, আয়াত : ২৫)

তিনি আরো বলেন, ‘এর পরও কি তারা আল্লাহর দিকে ফিরে আসবে না (অর্থাৎ তাওবা করবে না) ও তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে না? অথচ আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়াবান।’ (সুরা মায়েদা, আয়াত : ৭৪)

তাকওয়া বা আল্লাহভীতি অর্জন করা

আল্লাহর নির্দেশিত বিষয় প্রতিপালন ও নিষিদ্ধ বিষয় পরিহার করার মাধ্যমে তাকওয়া অর্জন করা, যা ক্ষমা লাভের অন্যতম উপায়। আল্লাহ বলেন, ‘হে ঈমানদাররা! যদি তোমরা আল্লাহভীরু হও, তাহলে তিনি তোমাদের জন্য সত্য-মিথ্যা পার্থক্য করার পথ বের করে দেবেন এবং এর ফলে তোমাদের পাপ মোচন করবেন ও তোমাদের ক্ষমা করে দেবেন। বস্তুত আল্লাহ হলেন মহা অনুগ্রহশীল।’ (সুরা আনফাল, আয়াত : ২৯) অন্যত্র তিনি বলেন, ‘যারা দৃষ্টির অগোচরে তাদের প্রতিপালককে ভয় করে, তাদের জন্য আছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার।’ (সুরা মুলক, আয়াত : ১২)

আল্লাহ আমাদের তাওফিক দিন। আমিন।

36
বাংলাসহ ১০ ভাষায় সম্প্রচার হবে হজের খুতবা

এবার আরাফার বিস্তৃত প্রাঙ্গণে হাজিদের উদ্দেশ্যে হজের যে খুতবা পাঠ করা হবে সেটি বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর কাছে পৌঁছে দিতে সৌদি আরব সরকার বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

এবারের হজের খুতবা বাংলাসহ মোট ১০টি ভাষায় অনুদিত হবে এবং দু’টি প্লাটফর্মে সেটি সম্প্রচার করা হবে বলে জানিয়েছেনসৌদির পবিত্র দুই মসজিদের পরিচালনা বিভাগের প্রধান শায়খ ড. আবদুর রহমান আল সুদাইস।

যে সকল ভাষায় সম্প্রচারিত হবে সেগুলো হলো- বাংলা, ইংরেজি, ফ্রেন্স, তুর্কি, মালাইউ, চায়নিজ, উর্দু, ফার্সি, রাশিয়ান ও হাউসা। শায়খ ড. আবদুর রহমান আল সুদাইস, ইসলামের সুমহান বার্তা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
দুই পবিত্র মসজিদের খাদেম কর্তৃক গৃহীত হারামাইন শরীফাইন ও আরাফা'র খুতবার তাৎক্ষণিক অনুবাদ প্রকল্পের অংশ হিসেবে, মসজিদে হারাম ও মসজিদে নববী পরিচালনা পরিষদ (আর রিয়াসা আল আম্মা) জানিয়েছে, উক্ত খুতবা বিশ্বের এই দশটি ভাষায় সরাসরি (লাইভ) সম্প্রচার করা হবে। 

চলতি বছরে আরাফার দিনের খুতবা দেবেন মক্কার মসজিদুল হারামের ইমাম ও খতিব শেখ ড. বন্দর বিন আবদুল আজিজ বালিলা। রাজকীয় এক ডিক্রির মাধ্যমে সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান এই নির্দেশ জারি করেন।

গ্র্যান্ড মসজিদের ইমামের দায়িত্ব ছাড়াও শেখ বন্দর কাউন্সিল অব সিনিয়র স্কলার্সেরও সদস্য। আরাফার দিনে খুতবার দায়িত্ব দেয়ার পর সৌদি বাদশাহ সালমানকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন শেখ বন্দর বালিলা।

করোনাকালে দ্বিতীয় বারের মতো সীমিত সংখ্যক হাজিদের অংশগ্রহণে হজ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। গতকাল শনিবার (১৭ জুলাই) থেকে সৌদির বিভিন্ন স্থান থেকে হাজিরা মক্কার মসজিদুল হারামে এসে তাওয়াফ শুরু করেছেন। এবারের জিলহজ মাসের নবম দিন আরাফার দিন অনুষ্ঠিত হবে পবিত্র হজ।




Source: BD Protidin

সূত্র: দ্যানিউজগ্লোরি।

37
যেভাবে বুঝবেন আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সাদা রক্তকণিকা, লিম্ফ নোড এবং অ্যান্টিবডি দ্বারা গঠিত হয়ে থাকে এবং শরীরকে বাহ্যিক সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে। কিছু লক্ষণ আছে যেগুলো দেখে আপনি বুঝবেন যে আপনার রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছে।

ঘন ঘন সংক্রমিত-
চিকিৎসা বিজ্ঞান বলছে, যে প্রাপ্তবয়স্করা সাধারণত বছরে দুই থেকে তিনবার সাধারণ সর্দিতে ভুগতে পারেন। তবে যাদের প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল তাদের ক্ষেত্রে প্রায় সারা বছর জুড়ে দীর্ঘস্থায়ী কাশি হতে পারে।

দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা-
বিজ্ঞানের মতে, প্রায় ৭০ থেকে ৭৫ ভাগ রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা হজমের সাথে সম্পর্কযুক্ত। তাই সঠিক খাবার না খাওয়ার ফলে হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এজন্য কোষ্ঠ্যকাঠিন্য, অ্যাসিডিটি, গ্যাস, ডায়রিয়া দেখা দিতে পারে ঘন ঘন।

পেশীতে ব্যাথা-
শরীরের ভেতরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী না হলে আপনি রক্তনালীতে প্রদাহ, ভ্যাসকুলাইটিসের সমস্যায় ভুগতে পারেন। এতে করে পেশীতে ব্যাথা হবে।

অবসাদ-
রাতে পর্যাপ্ত ঘুম হলেও অনেকের খুব শরীর দুর্বল লাগে সারাদিন। বলা যায় যে দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার জন্য আপনার সারাদিন ঘুম ভাব থাকে বজায়। এতে করে শরীর ক্লান্ত হবে ধীরে ধীরে ও আপনার মনমেজাজ ভালো থাকবে না।

অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা-
অনেকে খুব সাধারণ ব্যাপারেই সারাক্ষন দুশ্চিন্তা করতে থাকেন। আপনার যদি যে কোন বিষয়ে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা হয় তবে তা ভালো লক্ষণ না এটাও জেনে রাখুন। কারণ দীর্ঘদিন ধরে এমন হতে হতে আপনার রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার উপর প্রভাব পড়তে পারে।

 

বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ

38
দুপুরের ঘুম ভাব দূর করার উপায়


অফিস বা বাসাবাড়ি যেখানেই অবস্থান করেন, দুপুরের খাবারের পর প্রতিটি মানুষের মাঝেই একটু ঘুম লক্ষ করা যায়। বিশেষ করে খাওয়ার পর মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ হ্রাস পাওয়ার কারণেই এ ঘুম ভাব আসে।

এটা একটি স্বাভাবিক ব্যাপার। তবে এ স্বাভাবিক ব্যাপারটি সহজ সাধারণ উপায় অবলম্বন করেই দূর করা যায়। নিচে দুপুরের ঘুম ভাব দূর করার কয়েকটি উপায় নিয়ে আলোচনা করা হলো :

পানি পান করুন
পানি ঘুম ঘুম ভাব দূর করার সব চাইতে ভালো ওষুধ। পানি পান করলে আমাদের দেহের কোষগুলো নতুন করে উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। এক গ্লাস পানি পান করে নিন। দেখবেন ঝিম ঝিম ঘুম ধরা ভাব কেটে গেছে। এরই সাথে পানি পান করলে মস্তিষ্ক নতুন করে কাজ করার জন্য তৈরি হয়ে যায়।

এক কাপ চা-কফি

চা বা কফি ঝিম ভাব দূর করার জন্য সব চাইতে কার্যকর একটি পানীয়। দুপুরের খাবারের শেষে এক কাপ চা-কফি খেলে এক নিমেষে দূর হবে ঝিম ধরা ভাব। চা-কফির ক্যাফেইন আমাদের মস্তিষ্ককে সজাগ রাখতে বেশ কার্যকর।

হাঁটাহাঁটি করুন

বসে থাকলে কিংবা চেয়ারে একটু গা এলিয়ে পড়ে থাকলে ঘুম ঘুম ভাব আরো জাঁকিয়ে বসে। তাই উঠে পাঁচ মিনিটের জন্য হলেও হাঁটুন। এতে শরীরের আলস্য কেটে যাবে। আর ঘুম ঘুম ভাবও দূর হবে।
 
চোখে মুখে পানি দিন

চোখে পানির ঝাপটা দিন। চোখে মুখে ঠান্ডা পানির একটু ঝাপটা দিলে আমাদের মাথা ঝিম ধরা এবং শরীরে অলসভাব একেবারে দূর হয়ে যায়।

কথা বলুন

আপনি যদি ঘুম ঘুম ভাব নিয়ে চুপচাপ কাজে মনোযোগ দেয়ার চেষ্টা করতে থাকেন, তাহলে কখনোই এই ঝিম ধরা ভাবটি যাবে না। কারণ এতে করে আপনার আলস্য কাটানোর কোনো কাজই হচ্ছে না।

দুপুর পরের এই অস্বস্তিকর ভাব থেকে উঠতে চাইলে কলিগ বা সহপাঠীর সঙ্গে ৫-১০ মিনিট কথা বলতে পারেন। আমরা যখন কথা বলি বা কোনো কিছু নিয়ে আলোচনা করি তখন আমাদের মস্তিষ্ক সজাগ হয়ে থাকে। তাই অল্প কিছুক্ষণ কথা বলে দেখুন।

39
ফেসবুক-টুইটারকে মানুষের জন্য হুমকি মনে করছেন কেন বিজ্ঞানীরা


সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আমাদের যোগাযোগের ধরনে যে বড় পরিবর্তন এনেছে, তাতে সন্দেহ নেই। আমরা আগের চেয়ে যেমন দ্রুত তথ্য পাচ্ছি, তেমনি সবার সঙ্গে ভাগাভাগিও করতে পারছি। তবে তথ্যের প্রবাহ নির্ধারিত হচ্ছে এমন অ্যালগরিদমের সাহায্যে, যা বেশির ভাগ মানুষই বোঝে না।

সমাজবিজ্ঞানী, সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীদের কেউ কেউ অবশ্য গণতন্ত্র, মানসিক স্বাস্থ্য ও পারস্পরিক সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাব দিয়ে সোচ্চার হয়েছেন। তবে জীববিজ্ঞানী কিংবা বাস্তুবিদেরা (ইকোলজিস্ট) এ নিয়ে তেমন মুখ খোলেননি। হয়তো প্রয়োজন বোধ করেননি। তবে নতুন গবেষণাপত্রে সেটার পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে।

বিজ্ঞান জার্নাল প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেসে (পিএনএএস) প্রকাশিত নতুন এক গবেষণাপত্রে ১৭ জন গবেষক মানবসম্প্রদায়ের ওপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সার্বিক প্রভাব নিয়ে লিখেছেন। জলবায়ুবিজ্ঞান থেকে দর্শন—এই গবেষকদের কাজের ক্ষেত্র বিস্তৃত।

‘স্টুয়ার্ডশিপ অব গ্লোবাল কালেকটিভ বিহেভার’ শীর্ষক গবেষণাপত্রে তাঁরা বলেছেন, সমাজে প্রযুক্তির বৃহত্তর প্রভাবকে ‘ক্রাইসিস ডিসিপ্লিন’ হিসেবে গণ্য করতে হবে। ক্রাইসিস ডিসিপ্লিনে বিভিন্ন ধরনের বিজ্ঞানীরা এককাট্টা হয়ে জরুরি ভিত্তিতে কোনো সমস্যার সমাধান দেন। যেমন বিপন্ন প্রজাতি রক্ষায় জীববিজ্ঞানীরা যেভাবে কাজ করেন, কিংবা বৈশ্বিক উষ্ণতা থামাতে জলবায়ু নিয়ে গবেষকদের কাজ এখানে উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা যেতে পারে।

গবেষণাপত্রে যুক্তি দেখানো হয়েছে, নতুন প্রযুক্তির ‘সমন্বিত আচরণগত প্রভাব’ সম্পর্কে আমাদের পরিষ্কার জ্ঞানের অভাব গণতন্ত্র এবং বিজ্ঞানবিষয়ক উন্নতির জন্য বিপজ্জনক। যেমন সেখানে বলা হয়েছে, প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো চলমান করোনাকালে ভুয়া তথ্যের প্রসার রোধে হিমশিম খাচ্ছে। আর তাতে মাস্ক এবং ভ্যাকসিন সর্বজনগ্রাহ্য করে তোলা সম্ভব হয়নি।

গবেষকেরা সতর্ক করেছেন, এই বিষয়গুলো যদি এমন অজানা এবং অনিয়ন্ত্রিত থাকে, তবে হয়তো নতুন প্রযুক্তির কালো দিক দেখতে হবে। যা নির্বাচনে হস্তক্ষেপ, রোগ, সহিংস উগ্রবাদ, দুর্ভিক্ষ, বর্ণবৈষম্য এবং যুদ্ধের মতো ব্যাপারগুলোতে মদদ জোগাবে।

এমন বিস্তৃত খাতের গবেষকদের প্রযুক্তির ব্যাপারে এককাট্টা সচরাচর হতে দেখায় যায় না। তাঁদের সম্মিলিত গবেষণাপত্রের উদ্যোগই বলছে, তাঁরা কতটা উদ্বিগ্ন। তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট রিকোড গবেষণাপত্রটির মূল লেখক জো বাক-কোলম্যান এবং সহলেখক কার্ল বার্গস্ট্রমের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। তাঁরা দুজনই এই নতুন প্রযুক্তি বলতে মূলত ফেসবুক-টুইটারের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাবকে বুঝিয়েছেন বলে জানিয়েছে।




Source: Prothom Alo

40
রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানোর কার্যকরী কিছু উপায়

বিশ্বব্যাপী করোনার প্রাদুর্ভাব আবারও ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। প্রতিদিন COVID-19 রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা এবং মৃত্যের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। আমাদের দেশের পরিস্থিতিও এর ব্যতিক্রম নয়। করোনায় ভাঙছে দৈনিক মৃত্যুর রেকর্ডও। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত হিমশিম খাচ্ছে এত বিপুল পরিমাণ করোনা রোগীর চিকিৎসা দিতে গিয়ে। শনাক্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড গড়ছে প্রতিদিন সেখানে। এমতাবস্থায় আমাদের উচিত প্রতিরোধের দিকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া এবং এজন্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো বা Immunity Boostকরার দিকে বেশি মনোযোগী হওয়া উচিত। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে Immune System করার কিছু কার্যকর উপায় সম্পর্কে বলব।

খাদ্যাভ্যাস : সুষম ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। প্রচুর শাকসবজি ও ফলমূল খান। ফলের রসের পরিবর্তে গোটা ফল চিবিয়ে খেলে ভালো। এতে পুষ্টি সঙ্গে ফাইবারও পাওয়া যাবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন ৮-১০ গ্লাস। ফাস্ট ফুড, অতিরিক্ত তেল-চর্বি ও মসলা  খাবার যতটুকু সম্ভব পরিহার করুন।

ভিটামিনস ও মিনারেল : রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
Bangladesh Pratidinভিটামিন সি : প্রাকৃতিক উৎস হচ্ছে টক জাতীয় ফল, যেমন- লেবু, কমলা, মাল্টা,  জাম্বুরা ইত্যাদি। এছাড়াও বাজারে ট্যাবলেট আকারে পাওয়া যায়, যা ফ্লু উপসর্গে আপনি দিনে ১-২ বার চুষে খেতে পারেন। তবে প্রাকৃতিক উৎস থেকে পাওয়া ভিটামিন সি এর কার্যকারিতা বেশি।

ভিটামিন ডি  : এর প্রাকৃতিক উৎস হচ্ছে সূর্যরশ্মি যা সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত শরীরের কিছু অংশ উন্মুক্ত করে (যেমন মুখমন্ডল, হাত বা ঘাড় আপনি কাজে লাগাতে পারেন। এছাড়াও ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার যেমন- ডিমের কুসুম, মাছের তেল, ওমেগাও, গরুর কলিজা, চিজ এগুলো খেতে পারেন।

জিংক : ফ্লু বা সর্দি-কাশি উপসর্গে, জিংকের বেশ উপকারিতা রয়েছে। জিংকসমৃদ্ধ খাবার গুলো হচ্ছে- আদা, রসুন, বাদাম, সামুদ্রিক মাছ, ইত্যাদি। বাজারে লজেন্স আকারে জিংক সাপ্লিমেন্ট খেতে পারেন ২-৩ ঘন্টা পরপর।

মধু : মধুতে এমন কিছু জীবাণু ধ্বংসকারী উপাদান রয়েছেন যেমন- হাইড্রোজেন  পারঅক্সাইড, নাইট্রিক অক্সাইড যা RNA Virus এর বিরুদ্ধে কাজ করে। তাই ফ্লু উপসর্গে মধু বেশ উপকারী তবে ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে সাবধানে খেতে হবে।

প্রোবায়োটিক্স : যেমন- দই, চিজ ইত্যাদি খাবারে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা রোগী প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

মানসিক চাপমুক্ত থাকুন : অতিরিক্ত মানসিক চাপে আমাদের শরীরের Sympathetic activity বেড়ে যায় এবং কর্টিসল/Cortisolহরমোন নিঃসরণ হয়, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ব্যাহত করতে পারে। তাই মানসিক চাপমুক্ত থাকার চেষ্টা করতে হবে। টিভি, সোশ্যাল মিডিয়াতে যে খবরগুলো আপনাকে মানসিক চাপে ফেলছে। সেগুলো থেকে দূরে থাকুন। মনকে Divert করার জন্য পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে ভালো সময় কাটান, গান শুনুন, বই পড়ুন, মুভি দেখুন বা নতুন কিছু শিখতে মনোনিবেশ করুন। এছাড়া যোগ ব্যায়াম বা মেডিটেশন একটি খুব ভালো উপায় মনকে শান্ত রাখার।

শরীরচর্চা : শরীরকে সুস্থ রাখতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে শরীরচর্চা অপরিহার্য। বিশেষ করে বর্তমান পরিস্থিতিতে যখন আমরা সবাই ঘরে অবস্থান করছি। প্রাপ্ত বয়স্কদের প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট এবং বাচ্চাদের অন্তর ১ ঘন্টা শরীরচর্চা করা উচিত। ঘরে থেকে আপনি যা করতে পারেন হাঁটাহাঁটি, সাইক্লিং, ইয়োগা, ওয়েট শিফ্টিং, সিঁড়ি দিয়ে উঠানামা শরীর চর্চার উপায় হতে পারে।

ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার করা : বিশেষ করে ধূমপান, যা সরাসরি আপনার শ্বাসতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। যেহেতু করোনাভাইরাস শ্বাসতন্ত্রের রোগ, এতে সংক্রমের আশঙ্কা বেড়ে যায়। তাই ধূমপান পুরোপুরি বাদ দিন ও Respiratory Exercise করুন। মদ্যপান পুরোপুরি পরিহার করুন।

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা : শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অটুট রাখতে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার বিকল্প নেই। খাবার পরিমিত খান ও শরীরিকভাবে সচল থাকুন।

ঘুম :  মনে রাখবেন, এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। প্রতিদিন অন্তত ৮ ঘন্টা করে ঘুমানোর চেষ্টা করুন। পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম আমাদের Immune System Boost 3 Renew করতে।

পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা : আমরা যদি করোনাভাইরাস রোগের সংক্রমণ থেকে নিজেদের বাঁচতে চাই নিজের ও আশপাশের পরিবেশের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। নির্দিষ্ট সময়ে পরপর হাত সাবান পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ব্যবহার্য জিনিসপত্র জীবাণুনাশক পদার্থ দিয়ে পরিষ্কার করে নিন। দরজার হাতল, সুইচ, লিফ্টের বাটন জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার রাখুন ও মাস্ক ব্যবহার করুন। তাই সতর্ক হোন।

ডা. আফরিন সুলতানা, হলি ফ্যামেলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।

41
Cyber Security / A Cyberspace Unsafe for Women
« on: April 08, 2021, 03:10:36 PM »
A Cyberspace Unsafe for Women


Adhora Ahmed

Your phone suddenly buzzes to announce a notification. You pick it up, expecting something important. However, the notification comes from the requests folder of one of your text messaging apps. You are almost certain what it looks like; a completely random stranger, most probably a man, sent you an inappropriate text.

If you're feeling indifferent, you just ignore it. If it bothers you too much, you block the person. If you're feeling lighthearted enough to make fun of it, you take a screenshot and send it to your friends. If you believe in its meme potential, your screenshot might even make its way to some subreddit dedicated to hilariously poor attempts at flirting.

Women on social media are familiar with the scenario above. In most cases, we tend to brush off such attempts to breach our online privacy, because these things seem relatively harmless compared to the more pressing issues when it comes to women, such as the recent spike in gender-based violence. However, are such acts really that harmless?

Women are harassed online in many ways, and unsolicited texts are just the tip of the iceberg, along with friend requests from unknown people. You must have come across revolting comments under pictures of female celebrities or of any woman that goes viral, most of which can be classified under hate speech. You most probably have heard stories of leaked private pictures, videos or information without consent – also known as doxxing – and the devastating toll it takes on the victims.

"I have been harassed online by men on many counts. Often, they were in the form of continuous pestering texts that start off nice, but get more degrading with time. Sometimes, their texts are accompanied by inappropriate pictures or videos," shares Fabiha Fairooz*, a freelance writer.
"Once, when I was in high school, a group of boys decided to bully my friends and I in a group chat," says Zareen Tasnim*, who is now completing her undergraduate degree abroad. "They made very weak yet unacceptable attempts at insulting me, which had to do with my financial status, my dual nationality, my looks etc. They were even petty enough to make comments about me sending memes in that group chat."


This is a serious problem which has only increased during the pandemic since we are forced to spend more time online than ever before. According to a recent report by The Daily Star, 80 percent of the victims of cyberbullying in Bangladesh are adolescent girls and women in their early twenties. In another report by Dhaka Tribune, most victims of cyberbullying do not report to the police, hence the statistic does not take into account the cybercrimes that go unreported.

The question arises, why don't people report cybercrimes? Anika Anjum Iftee, Head of Content Development and Marketing at WeMen View, a non-profit social welfare organisation which works to raise awareness against cyber harassment of women, thinks that such cases are generally taken less seriously than physical ones. "It's because there are too many factors to consider. With the ongoing calling out culture, the conversation around things like unsolicited texts could be easily manipulated, which can make the main discourse rather confusing. Also, since how we behave on social media is an evolving process, there is still so much to define and to make laws on concretely. While all of that happens, a lot of us will be unfortunate enough to fall victim to online harassment."

The fact that technology is evolving too fast for us to catch up on the expanding confines of online harassment rings very true. Almost every day, new strides are being made in technology with more opportunities for harassers to abuse them. In this dizzying mess, no wonder tech-savvy women are struggling to deal with a constant barrage of harassment, both big and small. "I don't think there's much to do. In my experience of receiving unwanted texts, I find that confronting these men is very draining because most see no wrong in their actions and will continue to verbally abuse you or others," Fabiha adds.

It is as clear as daylight that the toxic standards most men in this region have been brought up to contribute to their interactions online. The firm belief that they will get away with harassing women in both physical and virtual spaces unfortunately enables them to do so. In addition, the common yet unjust shaming of female victims further encourages these abusers to carry on, as Zareen and her friends had faced, "This cyberbullying incident was reported to the school management, but they didn't fulfil their promises. Instead, they resorted to victim blaming by accusing us of isolating one of our classmates who egged those boys on, even though we weren't friends with her in the first place."

For all kinds of abuse, for too long, women have been putting in all the work to rage against the injustice. In the case of cyber harassment, from tightening privacy settings to filing cases, women still carry the burden to take preventive measures. However, prevention is not the only cure, at least in this case.

In order to see an end to harassment not limited to the digital realm, education comes first, as Anjum explains, "Measures should be integrated into the way we socialise from an early stage. At WeMen View, we want to teach children how to respect other genders and expand to do workshops with parents too. Humility and kindness are very important in the process of learning how to behave. Children need to know about the obvious red flags because if we are not aware of the danger, we won't be ready to tackle it."

In the end, it all comes down to getting acquainted with some very simple, basic concepts: consent and respecting one's personal space, and that these apply to everyone regardless of any parameter that you can think of. If we keep all these in mind, perhaps one day all the spheres we occupy, the virtual one included, can be safe for everyone.



*Names have been changed to protect identity

References

1. The Daily Star (December 10, 2020). 80% of cyberbullying victims are women: Cyber Crime Division of DMP.

2. Dhaka Tribune (September 24, 2019). 70% of women facing cyber harassment are 15-25 years in age.

42
ঘরে গাছ রাখলে কি বেশি অক্সিজেন পাওয়া যায়?

সবুজ গাছের একটা গুণ হলো, বাতাসের কার্বন ডাই-অক্সাইড নিয়ে পানি ও সূর্যের আলোর সঙ্গে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটিয়ে তার নিজের খাদ্য ও অক্সিজেন তৈরি করে। একে বলা হয় সালোক সংশ্লেষণ। এ জন্যই রোগীদের ঘরে ফুলগাছ ও নানা রকম পাতাবাহার গাছের টব রাখার চল হয়। আশা করা হয় যে গাছের অক্সিজেন বাতাস পরিশুদ্ধ করবে। কিন্তু এখানে মনে রাখতে হবে যে শুধু সবুজ গাছই অক্সিজেন তৈরি করে এবং এ জন্য তীব্র আলো দরকার। তাই রাতে গাছ কোনো অক্সিজেন তৈরি করতে পারে না।

রঙিন ফুল অক্সিজেন তৈরি করে না
রঙিন ফুল অক্সিজেন তৈরি করে নাপেক্সেলস
রঙিন ফুলও অক্সিজেন তৈরি করে না। সুতরাং রাতে ঘরের ফুলগাছ বাড়তি কোনো সুবিধা দেয় না। অন্যদিকে গাছ কিন্তু সব সময় শ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়ায় বাতাস থেকে অক্সিজেন নিয়ে কার্বন ডাই-অক্সাইডও ফিরিয়ে দিচ্ছে। এর পরিমাণ খুবই কম, তাই এতে খুব একটা বিপদের ভয় নেই। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষার্ধে ডাচ জীববিজ্ঞানী ইয়ান ইনঙ্গেনহৌজ সবুজ গাছ ও বাতাসের মধ্যে এই দেওয়া-নেওয়ার ব্যাপারটি আবিষ্কার করেন। ঘরে গাছ রাখলে কোনো উপকার পাওয়া যাবে কি না সে ব্যাপারে তিনি সন্দিহান ছিলেন। আসল ব্যাপার হলো, ফুলগাছের টবে ঘরের বাতাস খুব একটা পরিশুদ্ধ হয় না। তবে ক্ষতিও নেই।

অক্সিজেন তৈরির জন্য গাছের প্রয়োজন তীব্র আলো
অক্সিজেন তৈরির জন্য গাছের প্রয়োজন তীব্র আলোপেক্সেলস
অবশ্য কোনো ছোট ঘরে যদি অনেক গাছের টব রাখা হয় তাহলে হয়তো অক্সিজেনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। মাঠের বড় বড় বটগাছ দিনে সালোক সংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় বাতাসে প্রচুর অক্সিজেন দেয়। সে তুলনায় গাছের শ্বাস-প্রশ্বাসে নির্গত কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ অনেক কম। কিন্তু রাতে শুধু এই ক্ষতিকর গ্যাসটিই অল্প অল্প করে বাতাসে মেশে এবং এটা তুলনামূলক ভারী বলে নিচে জমা হতে থাকে। গাছ যদি খুব বড় হয় তাহলে হয়তো ভোরের দিকে সঞ্চিত কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ কিছুটা বেশিই হয়ে যায়। এ জন্যই বড় গাছের নিচে রাতে ঘুমানো উচিত নয়। এতে শেষ রাতে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। এ ঘটনা থেকেই গ্রামের অনেকে বলেন, বড় বটগাছে ভূত থাকে, ওরা গলা চেপে ধরে। আসলে সেটা ওই অতিরিক্ত কার্বন ডাই-অক্সাইডের ব্যাপার।




Source: Prothom Alo

43
করোনা প্রতিরোধ করতে পারে যেসব ফল

করোনাভাইরাস নিরাময়ে এখন পর্যন্ত কোনো স্থায়ী চিকিৎসা নেই। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যক্তিগত সচেতনতার পাশাপাশি করোনা প্রতিরোধের প্রথম ধাপ হলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো। যার ফলে শ্বাসযন্ত্র এবং ফুসফুসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে করোনাকালে সবচেয়ে কার্যকারি ভিটামিন-সি যুক্ত খাদ্য গ্রহণ। পুষ্টি বিজ্ঞানীদের মতে, আমলকিতে পেয়ারার চেয়েও ১০ গুণ বেশি ভিটামিন সি থাকে। কাগজি লেবুর চেয়ে ৩ গুণ ভিটামিন সি থাকে।

এছাড়াও আমলকিতে কমলার চেয়ে ১৫ থেকে ২০ গুণ বেশি, আপেলের চেয়ে ১২০ গুণ বেশি, আমের চেয়ে ২৪ গুণ এবং কলার চেয়ে ৬০ গুণ বেশি ভিটামিন সি থাকে। একজন প্রাপ্তবয়স্কের প্রতিদিন ৩০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি দরকার। এ পরিমাণ ভিটামিন সি দিনে মাত্র ২টি আমলকি খেলেই পূরণ করা সম্ভব।
করোনা থেকে বাঁচতে লেবু ও গরম পানি পানের বিকল্প নেই। ভিটামিন সি এর অভাব পূরণে লেবু হলো প্রথম ও প্রধান উৎস। এটি বাজারে সহজলভ্য। করোনায় আক্রান্ত হলে এমনকি সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে এসময় লেবু খাওয়ার বিকল্প নেই। সকালে খালি পেটে লেবু রস ও হালকা গরম পানি পান করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে।

ভিটামিন সি’ জাতীয় অন্যান্য ফল যেমন- আঙুর, পেয়ারা, আপেল, পেঁপে, শসা, কলা, তরমুজ এসবও নিয়ম করে খেতে হবে। সকালের নাস্তায় একটি কলা ও আপেল বা পেয়ারা খাওয়া যেতে পারে।

দুপুরে ভাত খাওয়ার আগে কয়েক টুকরো পেঁপে বা তরমুজ খেতে পারেন। আঙুর, পেঁপে, তরমুজ, কলা টুকরো করে সামান্য মধু মিশিয়ে ফ্রুট সালাদ করে খেলে শরীর অনেক পুষ্টি পাবে একসঙ্গে। সকাল বা বিকেলের নাস্তার সময় ফ্রুট সালাদ খেতে পারেন।

প্রতিদিন যদি ফল খেতে ভালো না লাগে; তাহলে টক দই মিশিয়ে স্মুদি বানিয়ে খেলে ভালো লাগবে। সব ধরনের ফলেই পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি, ফোলেট, ডায়েটারি ফাইবার, খনিজ ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে। এসব পুষ্টি উপাদানসমূহে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার সক্ষমতা আছে।

44
করোনার নতুন ও পুরনো রূপের পার্থক্য কী? জেনে নিন লক্ষণগুলো


প্রথম ঢেউ সামলে ওঠার আগেই করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে বিশ্বের একাধিক দেশে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখন তাণ্ডব চালাচ্ছে করোনার পরিবর্তিত রূপ। বাংলাদেশেও দ্বিতীয় ঢেউয়ে বেশি সংক্রমণ ছড়াচ্ছে করোনার নতুন রূপ। প্রায় প্রতিদিনই সংক্রমিত করছে হাজার হাজার মানুষকে, যা নিয়ে ফের নতুন করে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।

তবে কি দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দেওয়ার আগে ফের তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়বে বিশ্বে? এই আশঙ্কাতেই দিন গুনছেন বিজ্ঞানীরা। কোভিড পরীক্ষা ও চিকিৎসা পরিকাঠামো এখন আগের তুলনায় অনেক উন্নত। নতুন স্ট্রেনের সংখ্যা বাড়ছে ক্রমশ।

বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, সংক্রমণের এই দ্বিতীয় ঢেউ প্রথমটির চেয়ে আরও বেশি কঠিন হতে পারে, যা স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ভেঙে দেওয়ার পথে যেতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনার নতুন স্ট্রেন কেবল ভয় তৈরি করছে না, একই সঙ্গে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোতেও সমস্যা তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই কারণে সবার জন্য ভ্যাকসিনের ব্যবস্থার করার ব্যাপারে জোর দেওয়া হচ্ছে।

পুরানো বনাম নতুন করোনা স্ট্রেনের পার্থক্য কী?

ভাইরাস এবং অন্যান্য রোগজীবাণু পরিবর্তন এবং প্রকৃতি থেকে পৃথক হিসেবে পরিচিত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুযায়ী, একটি ভাইরাস তার নিজস্ব প্রতিলিপি বা একাধিক অনুলিপি তৈরি করে, যা সাধারণ ব্যাপার। এই পরিবর্তনগুলোকে ‘মিউটেশন’ বলা হয়। ভাইরাসের এক বা একাধিক রূপান্তরকে মূল ভাইরাসটির ‘রূপ’ বলা হয়।

মিউটেশনগুলোর জিনোমিক সিকোয়েন্সিংও থাকতে পারে, যা তাদের স্বাস্থ্যকর কোষগুলো আরও গভীরভাবে অতিক্রম বা সংযুক্ত করার অনুমতি দিতে পারে। তিনটি সর্বাধিক ঝুঁকির এনফেমাস সিভিডি ভেরিয়েন্টগুলো হল কেন্ট, যুক্তরাজ্য (বি 1.1 .1.7 ভেরিয়েন্ট), দক্ষিণ আফ্রিকা (বি 1.1 .351 ভেরিয়েন্ট) এবং ব্রাজিল (বি 1.1.1 .28.2.1 বা পি 1 ভেরিয়েন্ট), বাস্তব ভাইরাস স্ট্রেন এর রূপসমূহ।

যখন একটি ভাইরাসের স্ট্রেনের দুটি মিউটেশন তৃতীয় সুপার-সংক্রামিত স্ট্রেন তৈরি করে তখন একটি দ্বৈত রূপান্তর উত্থিত হয়। ডাবল মিউট্যান্ট বৈকল্পিক, প্রথম মহারাষ্ট্র রাজ্যে চিহ্নিত, E484Q এবং L452R রূপান্তর মধ্যে ক্রস হিসাবে বিবেচিত হয়। যদিও E484Q রূপান্তরটি L452R মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছে বলে জানা গেছে।

নতুন স্ট্রেনের কী আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে?

করোনার নতুন স্ট্রেনের লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে কাশি, জ্বর, ব্যথা এবং গন্ধ চলে যাওয়া। নতুন স্ট্রেনের লক্ষণগুলো আমাদের শরীরে আক্রমণ করার আগে ভাইরাসটি আগের চেয়ে স্মার্ট হয়ে উঠেছে। উদাহরণস্বরূপ- শ্রবণশক্তি হ্রাস, পেশি ব্যথা, ত্বকের সংক্রমণ আরও কিছু লক্ষণ যা মারাত্মক হয়ে উঠেছে।

বিজ্ঞানীরা এখনও ডাবল মিউট্যান্ট ভাইরাস নিয়ে গবেষণা করছেন। তবুও, অনেকে মনে করেন যে এটি ইউকে বৈকল্পিকের চেয়ে বেশি সংক্রামক বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর লক্ষণগুলো আরও গুরুতর কিনা তাও অনিশ্চিত। মাস্ক পরা এবং সতর্কতা অবলম্বন করা সম্পূর্ণরূপে নিজেকে রক্ষা করাই একমাত্র উপায়।

45
ইন্টারভিউ, চাকরি এবং বিসিএস

আমার দেশের (বা পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে যেকোনো দেশের) চাকরির নিয়ম হওয়া উচিত মেধা ও যোগ্যতাভিত্তিক। কোনো অ্যাকাউন্ট্যান্টকে আমি চাকরিতে নিলে আমি পরীক্ষা করব ওর অ্যাকাউন্টিং বিদ্যা কত দূর। ‘প্রোডাক্টের ওপর ডিসকাউন্ট কি রেভেন্যু থেকে কাটা যাবে নাকি কষ্ট অফ গুডস সোল্ড অ্যাকাউন্ট থেকে?’ এই বিষয়ে ওর পড়াশোনা কত দূর, কী কী সার্টিফিকেট আছে ইত্যাদি ইত্যাদি যাচাই–বাছাই করব। সেটাই স্বাভাবিক নিয়ম হওয়া উচিত। এ ছাড়া ও আমার করপোরেট কালচারের সঙ্গে মানাতে পারবে কি না, ওকে ম্যানেজ করা কঠিন হবে কি না, ইত্যাদি বিষয় বুঝে নিতে হবে কথাবার্তার ধরন থেকে। এইটাই সভ্য দেশে স্বাভাবিক ইন্টারভিউর নিয়ম।

যেমন আমি এ মাস থেকেই নতুন কোম্পানিতে নতুন চাকরি শুরু করেছি। আগের কোম্পানির সঙ্গে সাড়ে সাত বছরের মধুর সম্পর্কের সমাপ্তি আমি নিজেই টেনেছি। কেন? কারণ, আমার আগের কোম্পানি অন্য আরেকটা কোম্পানির কাছে বিক্রি হয়ে গেছে। করপোরেট আমেরিকার অতি সাধারণ ঘটনা। বড় মাছ ছোট মাছকে খেয়ে ফেলে। এত দিন আমরা অন্য কোম্পানিকে কিনতে কিনতে বড় হয়েছি, এবার আমরাই শিকার হয়েছি।

তা এসব ক্ষেত্রে প্রথমেই যে ব্যাপারটা ঘটে তা হচ্ছে, নতুন ম্যানেজমেন্ট এসে কিছু পুরোনো কর্মী ছাঁটাই করে। ওপরের লেভেলের ম্যানেজমেন্ট অদলবদল করে। আপনি খুবই ভাগ্যবান হলে আপনার চাকরির কিছু হবে না। কিন্তু সেটা অনেকটা ভাগ্য নিয়ে লটারির মতো হয়ে যায়। এ জন্য আমি আমার ইমোশনকে কাবু করে নতুন চাকরি খুঁজে সরে পড়েছি। এ ছাড়া এটাও মাথায় রাখতে হবে, এই মুহূর্তে ইকোনমির অবস্থা খুব খারাপ। চাইলেই চাকরি খুঁজে পাওয়া যায় না। আমি সাড়ে সাত বছরের প্রেম দেখিয়ে অফিসের সঙ্গে থেকে গেলাম, তারপর ওরা আমাকে বিদায় বলে দিল, তখন চাকরি খুঁজে পাওয়া কঠিন হতেও পারে। এই রিস্কে আর গেলাম না।

তা আমার চাকরির ইন্টারভিউ হয়েছে ফোনে। করোনা মহামারির কারণে স্বাভাবিকভাবেই এখন সবাই বাড়ি থেকে কাজ করছে। সাধারণত লোকজন জুম ইন্টারভিউ করে। কিন্তু যেদিন আমার ইন্টারভিউ ছিল, সেদিন ডালাসে তুষার ঝড়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় ফোনে ইন্টারভিউ হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

তরুণদের জন্য চাকরির বাজার বাড়ছে না। তবে প্রতিবছর হাজারো চাকরিপ্রত্যাশী তরুণের মধ্যে কেউ কেউ দক্ষতা দেখিয়ে চাকরি পেলেও একটি বড় অংশ দরকারি নানা দক্ষতার অভাবে চাকরি পাচ্ছে না
তরুণদের জন্য চাকরির বাজার বাড়ছে না। তবে প্রতিবছর হাজারো চাকরিপ্রত্যাশী তরুণের মধ্যে কেউ কেউ দক্ষতা দেখিয়ে চাকরি পেলেও একটি বড় অংশ দরকারি নানা দক্ষতার অভাবে চাকরি পাচ্ছে নাপ্রথম আলো ফাইল ছবি
নানা বিষয় নিয়ে কথা হলো। তাঁরা কী কী সফটওয়্যার দিয়ে কাজ করে, আমরা কী কী দিয়ে কাজ করি, ওদের অফিস পরিবেশ কেমন, আমারটা কেমন ইত্যাদি ইত্যাদি। যেহেতু এখন অনেকেই চাকরির ইন্টারভিউ দেন বা নেন, সেহেতু নিজের অভিজ্ঞতার কিছু জরুরি অংশ শেয়ার করছি। আশা করি কাজে আসবে। আমার এসেছে। আলহামদুলিল্লাহ! সবই আল্লাহর ইচ্ছা। এই পুরো ঘটনা নিয়ে আলাদা করে আরেকটা লেখা লিখবে। আপাতত এই আজকের বিষয়ে ফোকাসড থাকি। তা মাত্র দুটি ইন্টারভিউ দিয়েই একটাতে পেয়ে গেছি। অপরটিতে ঠিক ফেইল করিনি। ম্যানেজার সরাসরিই বলেছেন, ‘তোমাকে আমার খুব ভালো লেগেছে, কিন্তু আমরা এমন অ্যাকাউন্ট্যান্ট চাইছি, যার সফটওয়্যার ডেভেলপারদের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে। সহজ ভাষায় একাউন্টেন্ট+বিজনেস এনালিস্ট।’

ইদানীং এই অভিজ্ঞতার লোকদের খুব ডিমান্ড আছে। কেউ যদি এখনো পড়াশোনা শেষ না করে থাকেন, তাহলে বলব অ্যাকাউন্টিং ফাইন্যান্সের সঙ্গে টুকটাক কম্পিউটার রিলেটেড কোর্সও মাইনর হিসেবে করে নিতে পারেন। SQL কোড ল্যাঙ্গুয়েজ শিখে ফেলুন। এই ফিল্ডের ভবিষ্যৎ ওদিকেই যাচ্ছে।
ইন্টারভিউর একটি অতি কমন প্রশ্ন হলো, ‘তোমার সম্পর্কে কিছু বলো।’

আপাতদৃষ্টিতে অতি নিষ্পাপ প্রশ্ন মনে হলেও এখানে একটি ট্রিক থাকে। আপনি যদি আপনার বউ–বাচ্চা পোষা প্রাণী সংসারের আলাপ শুরু করে দেন, তাহলে কিন্তু আপনি বাদ। আপনাকে আপনার সম্পর্কে বলতে হলে অবশ্যই আপনার প্রফেশন নিয়ে বলতে হবে। আপনার পড়াশোনা, ক্যারিয়ার, সফলতা, ব্যর্থতা এবং ব্যর্থতা কীভাবে কাটিয়ে উঠেছেন ইত্যাদি নিয়ে বলতে হবে। ভুলেও ব্যক্তিগত আলাপ শুরু করে দিয়েন না। এমন কিছু বলবেন না যা কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। যেমন আপনি ফিকশন রাইটার, বাজারে আপনার বই আছে। আপনার গল্প লোকজন মেরে দিয়েছে। কিন্তু তার সঙ্গে অ্যাকাউন্টিংয়ের কোনোই যোগাযোগ নেই। ম্যানেজারের কিছুই যায় আসে না তাতে। তাই এই বিষয়টা তোলার প্রয়োজন নেই। তবে হ্যাঁ, যদি ম্যানেজার নিজে থেকেই বলেন যে তিনি ফিকশন বই পড়তে পছন্দ করেন, তখন এই প্রসঙ্গ তুলতে যেন না ভোলেন।
আবার আপনি এতই পণ্ডিত ব্যক্তি যে অ্যাকাউন্টিংয়ের ওপর কোনো বই লিখেছেন ‘সহজ ভাষায় অ্যাকাউন্টিং’ ‘অ্যাকাউন্টিংয়ের খুঁটিনাটি’ বা এই জাতীয় কিছু। তখন কিন্তু আপনার প্রাইমারি ফোকাসই হবে এই বইয়ের প্রসঙ্গ তোলা এবং এই নিয়ে গল্প করা। কারণ ‘আপনাকেই খুঁজছে বাংলাদেশ’!
বোঝাতে পেরেছি?

আরেকটি সাধারণ প্রশ্ন তোমার স্ট্রেন্থ এবং উইকনেসেস কী?
আপনি যদি বলেন, আমার কোনো দুর্বলতা নেই, তাহলে এরা ধরেই নেবে আপনি আপনার দুর্বলতা স্বীকার করতেই ইচ্ছুক না। কাজেই আপনি বাদ। আপনাকে অবশ্যই আপনার দুর্বলতা (প্রফেশনাল হতে হবে, যদি বলে বসেন ‘সুন্দরী নারীর হাসিই আমার দুর্বলতা’ তাহলে পত্রপাঠ বিদায়) স্বীকার করতে হবে এবং একই সঙ্গে সেই দুর্বলতা ঢাকতে আপনি কী কী কাজ করেছেন, সেটা বলতে হবে। যেমন আপনি বলতে পারেন, আমি অমুক তমুক সফটওয়্যার নিয়ে কাজ করিনি কখনো। তাই আমি কিছু ক্লাস নিয়েছি, শিখছি এবং আশা করি আগামী কয়েক সপ্তাহেই আমি আয়ত্ত করে ফেলব।
‘শক্তি’ কী? সেটার জবাব দেবেন ওরা কী চাইছে, সেটার ওপর ভিত্তি করে। যেমন ওরা চাইছে এমন কাউকে যে এক্সেলে ওস্তাদ। আপনি এক্সেলের ফর্মুলা, পিভট ইত্যাদি ভাজা ভাজা করা পাবলিক। আপনি সেটা ধরেই এগোবেন। ওরা চাইছে টিম প্লেয়ার। আপনি নিজেও দলবদ্ধভাবে কাজ করতে পছন্দ করেন। আপনি সেটা বলবেন। পারবেন না? জব রিকোয়ারমেন্ট ভালো করে পড়ে নেবেন এ ক্ষেত্রে।

আরেকটি সাধারণ প্রশ্ন, আমাদের এখানে কেন জয়েন করতে চান?
এর উত্তরে জীবনেও বলবেন না যে, আমার একটা চাকরি দরকার। বাড়িতে অসুস্থ মা, অবিবাহিত বোন, রিটায়ার্ড পিতা আছে। সংসারের হাল আমার কাঁধে। আজকে সকালে নাশতা করে আসিনি...। এসব ইমোশনাল কথাবার্তা ইন্ডিয়ান আইডল জাতীয় অনুষ্ঠানের পাবলিক খুব খায়, প্রফেশনাল জগতে এর ভ্যালু শূন্য।
আমি শুনেছি তোমরা নাকি ভালো বেতন-ভাতা দাও...এই জাতীয় কথাবার্তাও বলবেন না। আপনাকে ভাববে লোভী। সুযোগ পেলেই অন্য কোথাও দৌড় দেবেন।
এ প্রশ্নের জবাবটা দেবেন এভাবে, ‘আমার ধারণা আমার অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা দুইটাই এই কাজের জন্য যথোপযুক্ত। কারণ...। ‘‘আমি এই প্রতিষ্ঠানে চাকরির ব্যাপারে উচ্ছ্বসিত কারণ এটা আমাকে (এইটা সেটা) করার সুযোগ দেবে...(প্রফেশন রিলেটেড যেন কারণ হয়। যদি বলেন এই চাকরির পাশাপাশি আমি নাটক থিয়েটার লেখালেখি করতে পারব, তাহলে বিদায়।)’’ ঠিক এই কারণেই ইন্টারভিউর আগে অবশ্যই কোম্পানি সম্পর্কেও কিছু ধারণা নিয়ে যাবেন। গুগলের যুগে যা খুবই সহজ। আর পরিচিত কেউ যদি কোম্পানিতে কাজ করে, তাহলে তো কথাই নেই।’
আপনাকে প্রশ্ন করতে বললে বলবেন, ‘আমাকে হায়ার করলে আগামী ছয় মাসের মধ্যে আমার থেকে তোমার কি এক্সপেক্টেশন?’ তারপরের প্রশ্ন করবেন, ‘কী করলে এই পদে দ্রুত উন্নতি করা যায়?’
কোম্পানির শেয়ারের মূল্য, প্রোডাক্ট ইত্যাদি নিয়ে কথাবার্তা বলতে পারেন। তাহলে বুঝবে আপনি ভালোই রিসার্চ করা সিরিয়াস পাবলিক। যেমন এক এইটিন হুইলার (বিশালাকৃতির ট্রাক) তৈরির কোম্পানিতে একবার শখের বসে ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে প্রশ্ন করেছিলাম, ‘দুনিয়া এখন শিফট করছে ইলেকট্রিক গাড়ির দিকে। তোমাদের এই সম্পর্কে পদক্ষেপ কী? তোমরা কি এখনো ডিজেলের ইঞ্জিনই বানাবে? নাকি তোমরাও ব্যাটারিচালিত মোটরের পরিকল্পনা করছ?’
ইন্টারভিউ নিচ্ছিলেন অ্যাকাউন্টিং ম্যানেজার। এই প্রশ্নের গভীরতায় ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেছে। এই আঁতলামি প্রশ্ন সে আশা করেনি। আমিও শুধু শুধুই জিজ্ঞেস করেছি। আমার কি ঠ্যাকা কে ব্যাটারি গাড়ি বানাইল আর কে ডিজেলের? কিন্তু ইন্টারভিউতে এসব দেখাতে হবে।
উত্তরে সে বলেছে, ‘ব্রাদার আস্কড এ ভেরি গুড কোয়েশ্চেন! সঠিক উত্তরটা আমার জানা নেই।’
এই প্রশ্নটাই চাকরির দৌড়ে বহুদূর এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। শুধু ওয়াশিংটনে তিন মাস গিয়ে ট্রেনিং নিতে হবে যখন আমার বউ প্রেগন্যান্ট, তাই ওটাতে আর এগোনো হয়নি। আর ঠিক তখনই আমার তখনকার কোম্পানি আমাকে আরও কিছু নতুন দায়িত্ব দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছিল আমাকে নিয়ে তাঁদের দীর্ঘ পরিকল্পনা আছে। তাই আমিও মার্কেট থেকে নিজেকে সরিয়ে ফেলেছিলাম।

তরুণদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ব্যাংকের চাকরি
তরুণদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ব্যাংকের চাকরি ছবি: প্রথম আলো
আমার কারেন্ট বস আমাকে একটা অদ্ভুত প্রশ্ন করল। ‘আমাদের দলে বেশির ভাগই মেয়ে। তোমার কোনো অসুবিধা নেই তো মেয়েদের সঙ্গে কাজের ব্যাপারে?’
সে এই প্রশ্নটা করেছে, তার মানে এই বিষয়ে তাঁকে এর আগে ঝামেলায় পড়তে হয়েছে। এবং সেই সঙ্গে এটি ‘বিহেভিয়র’ প্রশ্নও বটে। যেমন অনেকেই সিচুয়েশন দিয়ে বলবে, ‘ধর কোনো এমপ্লয়ির সঙ্গে তোমার বনে না। কিন্তু তোমাদের একই টিমে কাজ করতে হচ্ছে। এই ক্ষেত্রে তুমি হলে কী করবে?’
এ ব্যাপারে কিছু কথা বলার আছে আমার।

আমার আগের অফিসের আগের বস ছিল একটা মেয়ে। বয়সে আমার চেয়ে কম, কিন্তু অভিজ্ঞতায় আমার চেয়ে অনেক বেশি। আমি করপোরেট অ্যাকাউন্টিংয়ের মাত্র একটি শাখায় কাজ করে অভ্যস্ত। আর সে পাবলিক অ্যাকাউন্টিং করায় বিভিন্ন কোম্পানির বিভিন্ন শাখায় কাজ করার অভিজ্ঞতা রাখে। এখন আমার জায়গায় এমন অনেকেই আছে, যারা এই বিষয়টাকে না মেনে কেবল বয়স এবং লিঙ্গের ওপর ফোকাস করে বলবে, ‘আজকে আমি সুন্দরী ব্লন্ড হলে আমার প্রমোশন হতো।’
‘একটা মেয়ের আন্ডারে কাজ করতে হবে?’
কিংবা আরও নোংরা কিছু বলত।

শুধু দেশিদের এই দোষ দেব না। আমাদের সঙ্গেই কাজ করত এক শ্বেতাঙ্গিনী মহিলা, তাঁরও এ স্বভাব ছিল। তাঁর চেয়ে কম বয়সী একটি মেয়ে কীভাবে তাঁর আগে প্রমোশন পেয়ে গেল, সেটা মানতে পারছিল না। এইটা সব যুগে সব সমাজের মানুষের মাঝেই বিদ্যমান।
‘আজ আমার গায়ের রং সাদা না বলে...’
‘আজ আমি হিন্দু/মুসলিম/খ্রিষ্টান/বৌদ্ধ বলে...’
‘আজ আমি পুরুষ/নারী বলে...’
ঘটনার শুরু সেই আদম-ইবলিস যুগে। হজরত আদমকে (আ.) তাঁর জ্ঞান ও অন্যান্য নানা গুনের কারণে সম্মান করতে বলায় ইবলিস কী বলেছিল?
‘আমি আগুনের তৈরি আর ও মাটির!’

চাকরির ক্ষেত্রে এই ব্যাপারগুলো আপনাকে মানতেই হবে। যদি দেখেন চাকরিতে আপনার প্রমোশন হয়নি, তাহলে অভিযোগ তোলার আগে চিন্তা করবেন কী করলে আপনার প্রমোশন হতো। যেমন ধরেন আমি নিজেই আপাতত ম্যানেজমেন্টে যেতে আগ্রহী না। আরও তিন–চার বছর অপেক্ষা করতে চাই। প্রধান কারণ আমার দুই বাচ্চাই ছোট। সপ্তাহে ৪০ ঘণ্টার বেশি কাজ করতে গেলে এই দুইটাকে সময় দিতে পারব না। ম্যানেজারের দায়িত্ব হচ্ছে নিজের অধীন কর্মচারীদের কাজগুলো ঠিকঠাকমতো হচ্ছে কি না, সেটা নিশ্চিত করা। মানে নিজের কাজের পাশাপাশি অন্যের কাজও করা। আপনি খুব লাকি হলে আপনার অধীন কর্মচারীরা খুব চৌকস হবে। আপনার ওপরও লোড কম থাকবে।

কিন্তু যদি কেউ দুর্বল হয়, তখন? তখন দ্বিগুণ সময় নষ্ট হবে এর পেছনে। আর দিন শেষে যদি আপনার টিমের কোনো ভুলত্রুটি হয়, সেটার জন্য দোষী কিন্তু আপনি। এই কারণেই দেখবেন বিদেশে একটা সড়ক/নৌ দুর্ঘটনার কারণেও মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত পদত্যাগ করে ফেলে। আর আমাদের অভ্যাস হচ্ছে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে হাত ধুয়ে ফেলা। সেটা করতে পারবেন না। আপনার দায়িত্ব হচ্ছে কাজ শেষ করা। প্রয়োজনে আপনাকে দিন–রাত ২৪ ঘণ্টা কাজ করে হলেও সেটা শেষ করতে হবে। না হলে বিদায়।

আমি সপ্তাহে ৪০–৫০ ঘণ্টা কাজ করতেই বিরক্ত হয়ে যাই, যেখানে আমার নিজেরই বন্ধুবান্ধব আছে, যারা ৭০–৮০–৯০ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করে।

আপনাকে দেখতে হবে যে প্রমোশন পেল, সে কি এসব করতে রাজি আছে কি না। আমার এক ভিপি, সিনিয়র ভিপি দুইটাই ছিল কাজপাগলা। এতটাই যে সংসার পর্যন্ত ছেড়ে দিয়েছে। আপনি সেই কমিটমেন্টের জন্য প্রস্তুত কি না। ‘আমি বাঙালি বলে আমার প্রমোশন হয়নি’— জাতীয় আহ্লাদী কথাবার্তা খুবই ফালতু শোনায়। গুগল, মাইক্রোসফট, মাস্টারকার্ড, এলবার্টসন্স, পেপসির (সাবেক) ইত্যাদির সিইও সব ভারতীয়। ওরাও মাইনরিটি। আপনার সঙ্গে ওদের পার্থক্য হচ্ছে, তাঁরা এই আহ্লাদী না করে কাজে ফোকাস করেছে, ফল পেয়েছে।

ইন্টারভিউর সময় আমার পরামর্শ হচ্ছে, আপনি সৎ থাকার চেষ্টা করবেন। অনেকেই অনেক কুপরামর্শ দিয়ে বোঝাবে যে চাপা মারতে, কিন্তু আমার অভিজ্ঞতা থেকেই বলি, কেউ যদি কোনো এক্সপার্টের সামনে চাপা মারতে শুরু করে, তাহলে খুব সহজেই ধরা পড়ে এবং তখন আপনার অন্যান্য বিষয়ে দুনিয়া উল্টে ফেলা ক্রেডিট থাকলেও আপনাকে ওরা একটা বাটপার হিসেবেই দেখবে এবং বাদ দেবে।

ধরেন, আপনি জীবনেও এপিকর নিয়ে কাজ করেননি। জব রিকোয়ার্মেন্টে দেখলেন আমরা এপিকর এক্সপার্ট খুঁজছি। আপনি সেটা দেখেই রেজুমেতে লিখে বসলেন আপনার দুই বছরের অভিজ্ঞতা আছে এপিকর নিয়ে কাজ করার। আমরা আপনাকে ইন্টারভিউতে ডাকলাম। আমি স্পেসিফিক্যালি আপনাকে প্রশ্ন করব জানুয়ারি ২০২০ সালে একটা ইনভয়েস রেকর্ড করা হয়েছে কি না, সেটা কীভাবে খুঁজে বের করবেন?
আপনার অভিজ্ঞতা থাকলে আপনি সহজেই বলতে পারবেন তারিখ উল্লেখ করে ‘মাল্টি কোম্পানি জার্নাল ডিটেইল’ থেকে বের করে ফেলবেন। আর আপনি চাপাবাজ হলে ভুগিচুগি বোঝানোর চেষ্টা করবেন, যা বুঝতে আমার বিন্দুমাত্র সময় লাগবে না। মাঝ দিয়ে আপনি আমার এবং আপনার সময় নষ্ট করবেন।

বরং এই ধরনের প্রশ্নের উত্তরে বলবেন, ‘এপিকর নিয়ে কাজ আমি করিনি, তবে আমি BI৩৬০ দিয়ে কাজ করেছি। সেখানে আমরা এইভাবে বের করতাম। আমি নিশ্চিত, এপিকরেও সেভাবেই কোনো উপায় আছে, কারণ আমি মনে করি প্রতিটা সফটওয়্যারই মোটামুটি কাছাকাছি প্রোগ্রামিং ও লজিক দিয়েই তৈরি হয়। শুধু বাটনগুলো এখানে ওখানে আলাদা আলাদা ট্যাবে থাকে।’

তাহলে ম্যানেজার বুঝে নেবেন আপনাকে কাজ শেখাতে তাঁর কতটুকু পরিশ্রম লাগবে। তিনি আপনাকে এই অভিজ্ঞতার কারণে নিয়ে নিতেও পারেন। যদি না অন্যান্য ক্যান্ডিডেটদের মধ্যে কারোর সরাসরি এপিকরে কাজ করার অভিজ্ঞতা না থাকে।
এটুকু বোঝাতে পেরেছি?

আরও অনেকে অনেক প্রশ্ন পেয়ে থাকেন। কমেন্টে সেসব লিখতে পারেন। যদি কমন পড়ে, অবশ্যই উত্তর দেব। না পারলে আমি নিজেই শিখতে আগ্রহী হব।

আমার দেশের একটা ব্যাপারে আমার খুব আফসোস হয়। চাকরির ক্ষেত্রে আমরা ধর্ম, আচার, রীতিনীতি, সাধারণ জ্ঞান ইত্যাদি বাহ্যিক বিষয় নিয়ে এত বেশি মেতে থাকি যে মূল বিষয়টাতেই ফোকাস করতে পারি না। যে করবে কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ের কাজ, ইন্টারভিউতে তাঁকে জিজ্ঞেস করি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাবির নাম কী ছিল। যে করবে ফাইন্যান্সের চাকরি, যাকে জিন্দেগিতে ক্লায়েন্ট ফেস করতে হবে না, তাঁর স্পোকেন ইংলিশ পরীক্ষা করি। আরে ভাই, আমেরিকাতেই স্পোকেন ইংলিশ নিয়ে ঝামেলায় পড়তে হয় না যতটা বাংলাদেশে ইন্টারভিউ দিতে গেলে পড়তে হয়। আমরা মাতৃভাষার জন্য প্রাণ দিয়ে দিলাম, তারপর উর্দুর বদলে ইংলিশকে এলিট ক্লাসের ভাষা বানায় ফেললাম। বাংলার তকদির সেই বায়ান্নতে যা ছিল, তাই থেকে গেল! অদ্ভুত!
হালের সেনসেশন বিসিএস নিয়ে কিছু বলার ইচ্ছাও নেই। যে পাঁচ বছর কষ্ট করে মেডিকেল পড়ল, যে বুয়েটসহ অন্যান্য ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ল, সে কোনো নদীর কয়টা শাখা নদী আর কোনো প্রাচীন পাণ্ডুলিপি কোনো গোয়ালঘরে পাওয়া গেল ইত্যাদি মুখস্থ করে আমলা পদে অ্যাপ্লাই করে! একজন সরকারি মেডিকেল ডাক্তার, যে রোগীর চিকিৎসা করবে, সে পদ্মা নদীর উৎস, গতিপথ ইত্যাদি জেনে কী করবে? আমাকে লজিক্যালি বোঝানোর একটু চেষ্টা করুন, দেখি বুঝতে পারি কি না। রোগীর রোগের সঙ্গে গঙ্গোত্রীর সম্পর্কটা ঠিক কোথায়? ঠিক এ কারণেই মেধা থাকার পরও আমরা জ্ঞান–বিজ্ঞানে বিশ্বে অনেক পিছিয়ে আছি। কেন? কারণ আমরা মুখস্থ বিদ্যা দিয়ে মস্তিষ্কের ক্ষমতা ক্ষয় করি, উদ্ভাবনী বা সৃজনশীলতা দিয়ে নয়। শার্লক হোমসের সেই বিখ্যাত যুক্তি আমরা ভুলে যাই। ‘মানুষের মস্তিষ্ক একটি খালি কামরার মতো। বুদ্ধিমান ব্যক্তি সেই ঘরে সুন্দর সুন্দর আসবাব দিয়ে সাজায়। আর মূর্খ সেটাকে আলতুফালতু জঞ্জাল দিয়ে গুদামঘর বানিয়ে ফেলে।’

এনি ওয়েজ, যার দেশে যেমন রীতি। সবাই ভালো থাকলেই হলো।



Pages: 1 2 [3] 4 5 ... 11