Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Topics - Sahadat Hossain

Pages: [1] 2 3 ... 25
1
প্রেগন্যান্সি বা গর্ভকালে বেশির ভাগ নারীই নানা ধরনের মানসিক চাপ বোধ করেন। তাঁদের মধ্যে অস্থিরতা বাড়ে, কখনো কখনো বিষণ্নতায় ভোগেন তাঁরা। একাধিক আন্তর্জাতিক গবেষণায় দেখা গেছে, গর্ভাবস্থায় ১৪ থেকে ২৩ শতাংশ নারীর মধ্যে বিষণ্নতার বিভিন্ন লক্ষণ থাকে।

বেশির ভাগ সময়ই গর্ভাবস্থায় বিষণ্নতার এসব লক্ষণকে হরমোনের তারতম্যজনিত স্বাভাবিক সমস্যা বা মুডের ওঠানামা মনে করা হয়। কিন্তু এ সময়ের বিষণ্নতা রোগ মা ও তাঁর অনাগত শিশুর জন্য মারাত্মক ক্ষতি বয়ে আনতে পারে।

কীভাবে বুঝবেন
বেশির ভাগ সময় মন খারাপ থাকা; অল্পতেই মনোযোগ হারানো; সাধারণ জিনিস ভুলে যাওয়া; যেসব কাজ বা বিনোদন আগে ভালো লাগত, সেগুলো ভালো না লাগা; মেজাজ খিটখিটে হওয়া; কাজকর্মে আগ্রহ না থাকা বা আগ্রহ কমে যাওয়া; অতিরিক্ত ঘুম বা ঘুম খুব কমে যাওয়া; খেতে না চাওয়া বা অনেক বেশি খেতে চাওয়া; প্রায়ই অস্থিরতা অনুভব করা; পরিবারের সদস্য বা আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বা যোগাযোগ কমিয়ে দেওয়া; প্রায়ই কান্নাকাটি করা; নিজেকে ব্যর্থ বা দোষী মনে করা; মৃত্যু নিয়ে চিন্তা বা ভয়; আত্মহত্যার চিন্তা ইত্যাদি।



কেন হয়
যেসব কারণে গর্ভাবস্থায় বিষণ্নতা রোগ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে, সেগুলো হলো দাম্পত্য কলহ, পরিবারের সদস্য বা নিকটাত্মীয়দের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি, আগের কোনো বিষণ্নতা রোগ থাকা, মানসিক চাপে থাকা, প্রয়োজনীয় বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ না পাওয়া, অন্য রোগের প্রভাব, কর্মক্ষেত্রে সমস্যা ইত্যাদি।

জটিলতা
গর্ভাবস্থায় বিষণ্নতার কারণে মানসিক সমস্যার পাশাপাশি নানা শারীরিক সমস্যাও হতে পারে।

সঠিক সময়ের আগে শিশুর জন্ম হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।

গর্ভের শিশুর ঠিকমতো বেড়ে ওঠায় ঘাটতি দেখা দিতে পারে।

এমনকি জন্মের পরও শিশুর স্বাভাবিক শারীরিক ও মানসিক বিকাশ কমে যেতে পারে।

প্রতিকার
লক্ষণ দেখে দ্রুত রোগ শনাক্ত করা প্রয়োজন। এ অবস্থায় পরিবারের সমর্থন দিতে হবে।

মা যেন পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে পারেন, সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।

পুষ্টিকর খাবার ও প্রয়োজনীয় ঘুমের সুযোগ দিতে হবে।


মায়ের ছোট ছোট ইচ্ছা প্রাধান্য দেওয়া, তাঁর কথা মনোযোগ দিয়ে শোনা। বিনোদনের ব্যবস্থা, যেমন কোথাও ঘুরতে নিয়ে যাওয়া, বই পড়তে দেওয়া উচিত।

পর্যাপ্ত আলো-বাতাস ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশের ব্যবস্থা করতে হবে।

প্রয়োজনে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।

গর্ভাবস্থায় মায়ের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর রাখা জরুরি। পরিবারের সবার এদিকে খেয়াল রাখা উচিত।

ডা. তাইয়েব ইবনে জাহাঙ্গীর, মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, ঢাকা
Ref: https://www.prothomalo.com/lifestyle/health/qjgwba0oj1

2
বাসাবাড়িতে প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটে। বিশেষ করে, ঘরে শিশু কিংবা বয়স্ক ব্যক্তি থাকলে দুর্ঘটনাগুলো মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাই দুর্ঘটনার স্থান, কারণ, প্রতিরোধের উপায় এবং প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে জানা থাকলে বড় ধরনের বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যেতে পারে।

দুর্ঘটনার স্থান ও কারণ জানুন
গৃহস্থালিতে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটে ওয়াশরুম ও রান্নাঘরে।

এর মধ্যে প্রধানত যে দুর্ঘটনা ঘটে তা হলো, পড়ে গিয়ে আঘাত পাওয়া। এ ছাড়া ধারালো কিছুতে কেটে যাওয়া, পুড়ে যাওয়া, গলায় ফাঁস লাগা, বিদ্যুতের শক—এসব দুর্ঘটনাও নিয়মিত ঘটে থাকে।

ওয়াশরুমের মেঝে ভেজা থাকার কারণে সেখানে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। এ ছাড়া ওয়াশরুমের বাইরে যে মাদুর থাকে, সেটাতে পিছলে পরেও অনেকে আঘাত পেতে পারেন।

গোসলের আগে পানির উষ্ণতা পরীক্ষা না করে গায়ে গরম পানি দিলে ত্বক পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

রান্নাঘরে আঘাত পাওয়ার মূল কারণ হলো ধারালো যন্ত্রপাতি। যেমন দা, বঁটি, ছুরি, কাঁচি ইত্যাদি। এ ছাড়া চুলার আগুন, গরম খাবার থেকে বার্ন ইনজুরি হতে পারে।



ঘরে শিশু থাকলে ছোটখাটো দুর্ঘটনাগুলো মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে
ঘরে শিশু থাকলে ছোটখাটো দুর্ঘটনাগুলো মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারেসংগৃহীত অলংকরণ
প্রতিরোধের উপায়
প্রথমত, ওয়াশরুমে যেন পানি জমে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। গোসলের পর সাবান বা শ্যাম্পুতে মেঝে পিচ্ছিল হয়ে থাকে। তাই গোসলের পর মেঝেতে ভালোভাবে পানি ঢেলে মপ করে এরপর বেরুতে হবে।

বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য কমোডের পাশে ও গোসলের জায়গায় হাতে ধরার হাতল বা গ্রাব রেইল লাগিয়ে নিতে হবে। তাহলে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা কমে যাবে।

ওয়াশরুমের বাইরে যে মাদুর থাকে, সেটা নিয়মিত খেয়াল করতে হবে, যেন নিচে পানি জমে না থাকে।

রান্নার সময় ছাড়া চুলা নিভিয়ে রাখতে হবে।

ধারালো যন্ত্রপাতি ঢাকনাসহ কৌটায় রাখতে হবে।

বাসায় শিশু থাকলে মেঝের কাছাকাছি সুইচবোর্ড টেপ দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে।

কোনো ওড়না বা দড়ি–জাতীয় জিনিস দিয়ে শিশুরা যাতে না খেলে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।


চিকিৎসা
আঘাত পাওয়ার পর যাতে আবার আঘাত না পায়, এ জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে। যেমন হাত বা পা ভেঙে গেলে একটা সাপোর্ট দিয়ে রাখতে হবে।

আঘাতপ্রাপ্ত অংশকে বিশ্রাম দিতে হবে।

ক্ষতস্থানে বরফ বা ঠান্ডা কিছু চেপে ধরতে হবে। এতে ক্ষতস্থানে রক্ত সঞ্চালন কমে যায়, যার কারণে রক্তপাত, ব্যথা ও ফোলা কমে যায়।

ক্ষতস্থান চাপ দিয়ে ধরে রাখতে হবে বা শুকনা কাপড় দিয়ে বেঁধে দিতে হবে।

আঘাতপ্রাপ্ত স্থান একটু ওপরে তুলে ধরে রাখতে হবে। এতে রক্তপাত কমে যায়।

ছোটখাটো কাটাছেঁড়ার চিকিৎসার জন্য বাসায় একটা ফার্স্ট এইড কিট রাখলে ভালো হয়। এর মধ্যে কিছু গজ পিস, একটা রোল ব্যান্ডেজ, অ্যান্টিসেপটিক মলম ও সলিউশন, ব্যান্ডএইড আর একটা মাইক্রোপোর সার্জিক্যাল টেপ থাকলে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া সহজ হবে।

লেখক: কনসালট্যান্ট সার্জন, ইবনে সিনা হাসপাতাল, সিলেট

Ref: https://www.prothomalo.com/lifestyle/health/dkr85b8jgb

3
ঘন ঘন শ্বাস ফেলা বা নেওয়া, বুকের পাঁজর ওঠানামা, শ্বাসের গতি দ্রুত বা ঘন হওয়া, দম বন্ধ অনুভূতি—এসব উপসর্গ দেখা দিলেই আমরা বলি শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। তবে শ্বাসকষ্ট নিজে কোনো রোগ নয়, নানা রোগের উপসর্গ।

শ্বাসকষ্ট হলে প্রথমেই মনে পড়ে হৃদ্‌রোগ আর ফুসফুসের রোগের কথা। এসব রোগকে আমরা বেশি ভয় পাই। লক্ষ করে থাকবেন, জোর করে কিছুক্ষণ শ্বাস বন্ধ করে থাকলে প্রয়োজনের তুলনায় বাতাস কম প্রবেশের জন্য রক্তের কার্বন ডাই-অক্সাইডের মাত্রা বেড়ে যায় এবং দম বন্ধ অস্বস্তিকর অনুভূতির সৃষ্টি করে।

হৃদ্‌পিণ্ডের রোগে যখন হৃদ্‌পেশির সংকোচন করার ক্ষমতা কমে যায়, তখন ফুসফুসে রক্ত জমে ফুসফুসকে অনমনীয় করে তোলে, কখনো ফুসফুসে পানি জমে। এতে শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়।

আবার হাঁপানি হলে ফুসফুসে বাতাস ঢোকা ও বেরোনোর নল (ব্রঙ্কিওল) সরু হয়ে যাওয়ায় জোরে জোরে শ্বাস নিতে হয়। ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস বা নিউমোনিয়াতেও শ্বাসকষ্ট হয়। এমনকি শ্বাসকষ্ট হতে পারে রক্তে পিএইচ কমে গেলে বা অ্যাসিড জমে গেলে।

তবে কখনো কখনো কোনো রোগের সঙ্গে শ্বাসকষ্টের অনুভূতিকে মেলানো যায় না। চোখের সামনে দেখছেন রোগী ঘন ঘন শ্বাস নিচ্ছে বা ফেলছে, বাতাসের জন্য ছটফট করছে, কিন্তু যুক্তিসংগত কোনো কারণ পাওয়া যাচ্ছে না। একে চিকিৎসকেরা বলেন হাইপারভেন্টিলেশন সিনড্রোম।

শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলোর দহন বা মেটাবলিজম বেড়ে যাওয়ায় নিশ্বাসের হার বেড়ে যায়। হাইপারভেন্টিলেশন সিনড্রোমের কারণ যদিও খুব স্পষ্ট নয়, তবে এর সঙ্গে উৎকণ্ঠা ও একধরনের ভয় পাওয়ার রোগের (প্যানিক ডিজঅর্ডার) সম্পর্ক আছে। সে অর্থে এটা মনের রোগ।

এ ক্ষেত্রে শারীরিক প্রয়োজনের চেয়ে বেশি করে শ্বাস নেওয়ার জন্য রক্তের কার্বন ডাই-অক্সাইড শ্বাসের সঙ্গে অত্যধিক মাত্রায় বেড়ে যায়। ফলে রক্তে ক্ষারের মাত্রা বেড়ে যায়।


দেখা গেছে, উৎকণ্ঠায় ও ভয় পেলে ২৫ থেকে ৮৩ শতাংশ ক্ষেত্রে একধরনের শ্বাসকষ্ট অনুভূত হয়, যার শারীরিক কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। এ ছাড়া মানসিক কোনো সমস্যা নেই, এমন ১১ শতাংশ ক্ষেত্রে শারীরিক কোনো কারণ ছাড়াই শ্বাসের একধরনের কষ্ট হয়। পুরুষদের চেয়ে নারীরা এ সমস্যায় বেশি আক্রান্ত হন।

তবে সত্যি কোনো গুরুতর রোগ, নাকি মানসিক কারণে কেউ শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হলে, তা সঠিক পরীক্ষা–নিরীক্ষা ছাড়া বোঝা অসম্ভব। তাই শ্বাসকষ্ট যে মাত্রায়ই হোক, আক্রান্ত ব্যক্তিকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা–নিরীক্ষা করতে হবে।

সব শেষে যদি দেখা যায়, এর পেছনে কোনো গুরুতর শারীরিক কারণ নেই, কারণটি মনে, তবে মনোবিদের সাহায্য নিতে হতে পারে।

অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আজিজুর রহমান, মেডিসিন ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ
Ref: https://www.prothomalo.com/lifestyle/health/by4ptahk3c

4
হিজরি সন ইসলাম ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর কৃষ্টি–কালচার তাহজিব তামাদ্দুন ও ইতিহাস ঐতিহ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত। মুসলিম জীবনে হিজরি সনের গুরুত্ব অপরিসীম। মুসলিম জাতির ধর্মীয় আচার–অনুষ্ঠান, আনন্দ–উৎসবসহ বিভিন্ন বিধিবিধান হিজরি সন তথা আরবি তারিখ ও চান্দ্রমাসের সঙ্গে সম্পর্কিত।

ইসলামি বর্ষপঞ্জির প্রথম মাস মহররম। মহররম শব্দের অর্থ সম্মানিত। ইতিহাসে এই মাস বহু উল্লেখযোগ্য স্মৃতিবিজড়িত। সেসব স্মৃতির সম্মানার্থেই এ মাসকে মহররম বা সম্মানিত বলা হয়। পবিত্র কোরআনে রয়েছে, ‘আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকেই আল্লাহর কাছে মাসের সংখ্যা ১২, এর মধ্যে ৪টি মাস সম্মানিত।’ (সুরা-৯ তাওবা, আয়াত: ৩৬) হাদিস শরিফে চান্দ্রবর্ষের ১২ মাসের মধ্যে মহররমকে ‘শাহরুল্লাহ’ বা ‘আল্লাহর মাস’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

পরিভাষায় মহররমের দশম তারিখকে আশুরা বলে। ‘আশুরা’ আরবি শব্দ, এর অর্থ দশম তারিখ। সৃষ্টির শুরু থেকে মহররমের ১০ তারিখে তথা আশুরার দিনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। এর ফলে আশুরার মর্যাদা ও মাহাত্ম্য উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। সর্বশেষ ৬২ হিজরি সনে কুফার ফোরাত নদীর তীরে কারবালার প্রান্তরে নবীর দৌহিত্র হজরত হুসাইন (রা.)–এর শাহাদত এদিনকে বিশ্ববাসীর কাছে চিরস্মরণীয় ও অমর করে রেখেছে।

আশুরাতেই নভোমণ্ডলের সৃষ্টিকুলের প্রাথমিক বিভাজনপ্রক্রিয়া সূচনা হয়। হজরত আদম (আ.)–এর সৃষ্টি, স্থিতি, উত্থান ও অবনমন—সব ঘটনাই ঘটেছিল আশুরায়। হজরত নুহ (আ.)–এর নৌযানের যাত্রারম্ভ ও বন্যার সমাপ্তিও আশুরাকেন্দ্রিক ছিল। হজরত মুসা (আ.)–এর সমুদ্র অতিক্রমও আশুরা দিবসে হয়েছিল। আশুরা এলে হজরত মুহাম্মদ (সা.) বিনম্র থাকতেন এবং রোজা রাখতেন। (তাফসিরে তাবারি)

সব নবীর আমলেই আশুরার রোজা ছিল। প্রিয় নবী (সা.) মক্কায় থাকতেও আশুরার রোজা পালন করতেন। হিজরতের পর মদিনায় এসে রাসুলুল্লাহ (সা.) দেখতে পেলেন, ইহুদিরাও এই দিনে রোজা রাখে। নবীজি (সা.) তাদের রোজার কারণ জানতে পারলেন—এদিন হজরত মুসা (আ.) সিনাই পাহাড়ে আল্লাহর পক্ষ থেকে তাওরাত লাভ করেন। এদিনেই তিনি বনি ইসরাইলকে ফেরাউনের কবল থেকে উদ্ধার করেন এবং এদিনেই তিনি বনি ইসরাইলদের নিয়ে লোহিত সাগর অতিক্রম করেন। আর সেই সাগরে ফেরাউনের সলিলসমাধি হয়। তাই ইহুদিরা এদিন রোজা রাখে। মহানবী (সা.) বলেন, মুসা (আ.)–এর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক তোমাদের চেয়ে বেশি ঘনিষ্ঠ ও অগ্রাধিকারমূলক। অতঃপর তিনি ১০ মহররমের সঙ্গে ৯ মহররম মিলিয়ে দুটি রোজা রাখতে বললেন। হিজরি দ্বিতীয় সনে রমজান মাসের রোজা ফরজ হলে আশুরার রোজা নফল হয়ে যায়। তবে রমজানের রোজার পর আশুরার রোজা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ। এ মাসের নফল রোজা ও অন্যান্য ইবাদত রমজান মাস ব্যতীত অন্য যেকোনো মাস অপেক্ষা অধিক উত্তম। (মুসলিম ও আবুদাউদ)


রাসুলে পাক (সা.) বলেন, আশুরার রোজার ব্যাপারে আমি আশাবাদী—আল্লাহ তাআলা এর অসিলায় অতীতের এক বছরের গুনাহ মাফ করে দেবেন। (তিরমিজি ও মুসানাদে আহমাদ) রাসুলে করিম (সা.) বলেন, ‘রমজানের রোজার পর মহররমের রোজা হলো সর্বশ্রেষ্ঠ, যেমন ফরজ নামাজের পর শেষ রাতের তাহাজ্জত নামাজ সবচেয়ে বেশি মর্যাদাসম্পন্ন।’

নতুন বছরের দোয়া ‘ইয়া মুকাল্লিবাল কুলুবি ওয়াল আবছার, ইয়া মুদাব্বিরাল্লাইলি ওয়ান্নাহার; ইয়া মুহাওয়িলাল হাওলি ওয়াল আহওয়াল, হাওয়িল হালানা ইলা আহছানিল হাল।’ অর্থ: হে অন্তর ও দৃষ্টিগুলো পরিবর্তনকারী! হে রাত ও দিনের আবর্তনকারী! হে সময় ও অবস্থা বিবর্তনকারী! আমাদের অবস্থা ভালোয় উন্নীত করুন। (দিওয়ানে আলি, নাহজুল বালাগা)

নতুন চাঁদের দোয়া ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহুম্মা আহিল্লাহু আলাইনা বিল আমনি ওয়াল ইমান, ওয়াছ ছালামাতি ওয়াল ইসলাম; ওয়া রিদওয়ানিম মিনার রহমান; ওয়া জাওয়ারিম মিনাশ শাইতন; ওয়াত তাফিকি লিমা তুহিব্বু ওয়া তারদা; রব্বি ওয়া রব্বুকাল্লাহ; হিলালু রুশদিন ওয়া খায়র।’ অর্থ: আল্লাহ মহান, হে আল্লাহ! এই মাসকে আমাদের জন্য নিরাপত্তা, ইমান, প্রশান্তি ও ইসলাম সহযোগে আনয়ন করুন; দয়াময় আল্লাহর সন্তুষ্টি দিন; শয়তানের অবস্থান থেকে দূরে রাখুন; আপনার মহব্বত ও সন্তুষ্টি লাভের তাওফিক দিন; আমার ও তোমার প্রভু আল্লাহ। এই মাস সুপথ ও কল্যাণের। (তিরমিজি: ৩৪৫১, মুসনাদে আহমাদ: ১৪০০, রিয়াদুস সলিহিন: ১২৩৬)

● মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী

যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম
Ref: https://www.prothomalo.com/opinion/column/svm1z6og3d

5
শেষ পাতে একটুখানি মজাদার মিষ্টান্ন বা ডেজার্ট অনেকেরই পছন্দ। তবে সুস্থ জীবনযাপনের জন্য অনেক সময় শর্করা বা মিষ্টি খাবারের লোভ সামলাতে হয়। বিশেষ করে যাঁরা ডায়াবেটিস, স্থূলতা, হৃদ্‌রোগসহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের জন্য মিষ্টান্নের স্বাদ নেওয়া বেশ কঠিন। তবে তাঁদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থাও রয়েছে। চিনি ছাড়া বানানো বেশ কিছু মিষ্টান্নের স্বাদ নিতে পারেন তাঁরা। আসুন জেনে নিই এমন কিছু মজাদার ডেজার্টের খবর:

পিনাট বাটার ও আপেল
একটি আপেল লম্বা লম্বা টুকরা করে তাতে পিনাট বাটার মাখিয়ে নিন। এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুব ভালো একটি খাবার।

ডার্ক চকলেট
এটা চমৎকার ও স্বাস্থ্যসংক্রান্ত ঝুঁকিহীন একটি খাবার। অনায়াসে যে কেউ খেতে পারবেন।

চিয়া সিডের পুডিং
মিষ্টি খাবারের বিকল্প হিসেবে দুধে ভেজানো চিয়া সিড খাওয়া যেতে পারে। দুধের মধ্যে চিয়া সিড ভিজিয়ে কিছু সময়ের জন্য ফ্রিজে রেখে দিন। ঠান্ডা হলে তাতে ফল ও বাদাম মিশিয়ে খেতে হবে। এ ছাড়া ওটস, নারকেল, বাদাম, তিসি ও চিয়া সিড দিয়ে বানানো লাড্ডু খাওয়া যেতে পারে।

মিষ্টি পপকর্ন
আখের গুড়ের কেরামেল দিয়ে ঘরে ভুট্টার দানা থেকে পপকর্ন তৈরি করতে পারেন। তবে গুড় থাকায় এই খাবার এক কাপের বেশি না খাওয়াই ভালো। এ ছাড়া এই গরমে চিনি ছাড়া মিষ্টি ফলের স্মুদি বানিয়ে খেতে পারেন। এ ছাড়া ২০ গ্রাম কর্নফ্লেক্স হতে পারে উৎকৃষ্ট বিকল্প ডেজার্ট।

টক দই
শুধু টক দই খাওয়ার পাশাপাশি এর সঙ্গে বিভিন্ন রকমের ফল মিশিয়ে নেওয়া যেতে পারে। তবে দইয়ে কখনোই চিনি মেশাবেন না। ফ্রিজের সিলিকন আইস ট্রেতে ফল ও টক দই জমাট করে ডেজার্ট হিসেবেও খেতে পারেন।

ফলের শাশলিক
যাঁরা হৃদ্‌রোগ ও স্থূলতার সমস্যায় ভুগছেন, তাঁরা ফলের ওপর তিসি বা চিয়া সিড ছিটিয়ে শাশলিক বানিয়ে নিতে পারেন। প্রচলিত ফল দিয়েই এটা বানানো যায়। নারকেল কোরানো ও নারকেলের সাদা নরম শাঁসও খাওয়া যেতে পারে।

গাজর বা পেঁপের হালুয়া
চিনির পরিবর্তে যষ্টিমধু দিয়ে গাজর কিংবা পেঁপের হালুয়া বানানো যেতে পারে। ডেজার্ট হিসেবে ১-২ চা চামচ হালুয়া খাওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া বিকল্প ডেজার্ট হিসেবে আখের গুড় দিয়ে বানানো বাদামের বার অল্প পরিমাণে খাওয়া যেতে পারে।

সতর্ক থাকুন
যাঁদের ডায়াবেটিস আছে, তাঁরা মিষ্টি ফল পরিমাণমতো খাবেন। উচ্চ রক্তচাপ ও লিভারের সমস্যায় ভোগা ব্যক্তি এবং সন্তানসম্ভবা নারীরা যষ্টিমধু ব্যবহার করবেন না।

জ্যেষ্ঠ পুষ্টিবিদ, ল্যাবএইড ওয়েলনেস সেন্টার, ঢাকা
Ref: https://www.prothomalo.com/lifestyle/health/6mwkc0tz5c

6
এই সময় ডেঙ্গু জ্বর বেড়ে যায়। ডেঙ্গু রোগটি ভাইরাসজনিত। সাধারণত, জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গুর প্রকোপ থাকে।

ডেঙ্গুর প্রধান লক্ষণ—জ্বর। ৯৯ থেকে ১০৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত তাপমাত্রা উঠতে পারে। জ্বর টানা থাকতে পারে, আবার ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়ে দেওয়ার পর আবারও আসতে পারে। এর সঙ্গে শরীরে ব্যথা, মাথাব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা এবং চামড়ায় লালচে দাগ বা ফুসকুড়ি দেখা যায়।

কখন হাসপাতালে যেতে হয়
ডেঙ্গু হলে কী ধরনের চিকিৎসা নেবেন, বাসায় না হাসপাতালে থাকবেন—নির্ভর করে এর ধরন বা ক্যাটাগরির ওপর। ডেঙ্গু জ্বরের তিনটি ধরন বা ক্যাটাগরি আছে—‘এ’, ‘বি’ ও ‘সি’। প্রথম ক্যাটাগরির রোগীরা স্বাভাবিক থাকে। তাদের শুধু জ্বর থাকে। অধিকাংশ ডেঙ্গু রোগী ‘এ’ ক্যাটাগরির। তাদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। বাড়িতে বিশ্রাম নেওয়াই যথেষ্ট।

‘বি’ ক্যাটাগরির ডেঙ্গু রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়া লাগতে পারে। কিছু লক্ষণ, যেমন পেটে ব্যথা, বমি, ডায়াবেটিস, স্থূলতা, অন্তঃসত্ত্বা, জন্মগত সমস্যা, কিডনি বা লিভারের সমস্যা থাকলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়াই ভালো।

‘সি’ ক্যাটাগরির ডেঙ্গু জ্বর সবচেয়ে খারাপ। এতে লিভার, কিডনি, মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র বা আইসিইউর প্রয়োজন হতে পারে।

বাড়িতে কী করবেন
পরিপূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে।

প্রচুর তরলজাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে। ডাবের পানি, লেবুর শরবত, ফলের জুস এবং খাবার স্যালাইন পান করুন একটু পরপর।

ডেঙ্গু জ্বর হলে প্যারাসিটামল খাওয়া যাবে। স্বাভাবিক ওজনের একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি প্রতিদিন সর্বোচ্চ আটটি প্যারাসিটামল খেতে পারবে। কিন্তু কোনো ব্যক্তির যদি লিভার, হার্ট এবং কিডনি–সংক্রান্ত জটিলতা থাকে, তাহলে প্যারাসিটামল সেবনের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে গায়ে ব্যথার জন্য অ্যাসপিরিন, ক্লোফেনাক, আইবুপ্রোফেন–জাতীয় ওষুধ খাওয়া যাবে না। ডেঙ্গুর সময় এ–জাতীয় ওষুধ গ্রহণ করলে রক্তক্ষরণ হতে পারে।


যা করবেন না
ডেঙ্গু জ্বরের ক্ষেত্রে প্লাটিলেট এখন আর মূল বিষয় নয়। প্লাটিলেট হিসাব নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।

প্লাটিলেট কাউন্ট ১০ হাজারের নিচে নামলে বা শরীরের কোনো জায়গা থেকে রক্তপাত হলে প্রয়োজন বোধে প্লাটিলেট বা ফ্রেশ রক্ত দেওয়া যেতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতি খুবই কম দেখা যায়।

অনেকে বলেন, পেঁপেপাতার জুস ইত্যাদি খেলে প্লাটিলেট বাড়ে। আসলে এসবের কোনো ভূমিকা নেই। জ্বর কমে যাওয়ার পর সংকটকাল পেরিয়ে গেলে আপনা থেকেই প্লাটিলেট বাড়তে শুরু করে।

জ্বরের শেষের দিকে রক্তচাপ কমে যেতে পারে অথবা মাড়ি, নাক, মলদ্বার দিয়ে রক্তপাত হতে পারে। এ রকম হলে প্রয়োজনে শিরাপথে স্যালাইন দেওয়া লাগতে পারে। এসব ক্ষেত্রে তাই হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে।

ডা. আফসারা বেগম: সিনিয়র কনসালট্যান্ট, ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগ, ইউনাইটেড হাসপাতাল, ঢাকা
Ref: https://www.prothomalo.com/lifestyle/health/klugg54kb0

7
নখের কোনা ভেতরের দিকে মাংসে বা ত্বকে দেবে যাওয়ার ঘটনা প্রায়ই ঘটে। এর ফলে নখের কোনায় প্রদাহ হয়, ব্যথা করে, লাল হয়ে যায় বা ফুলে যায়। সংক্রমণ হলে পুঁজও হতে পারে। পায়ের বুড়ো আঙুলের নখে এমনটা বেশি ঘটে। সাধারণত অতিরিক্ত আঁটসাঁট জুতা পরা, নখে আঘাত, সংক্রমণ, খুব গভীর করে নখ কাটা, খোঁচাখুঁচি ইত্যাদি কারণে এমনটা হয়। এ ছাড়া আঘাতজনিত, ডায়াবেটিস ও কোনো কারণে পায়ে রক্ত চলাচল কমে গেলে এ সমস্যা হতে পারে।

চিকিৎসা
হালকা কুসুম গরম পানিতে কোনা দেবে যাওয়া নখের আঙুল ১০ থেকে ২০ মিনিট ডুবিয়ে রাখুন।

পানি থেকে তোলার পর নরম কাপড় দিয়ে মুছে কোনার ভেতর পরিষ্কার তুলা বা গজ ঢুকিয়ে একটু আলগা করে বা উঁচু করে রাখুন।

পেট্রোলিয়াম জেলি মেখে গজ দিয়ে হালকা ব্যান্ডেজ করে রাখতে পারেন।

এ রকম দিনে তিন থেকে চারবার করতে হবে।

ব্যথানাশক ট্যাবলেট খাওয়া যেতে পারে।

এ সময় বাইরে যেতে হলে ঢিলেঢালা স্যান্ডেল বা জুতা পরুন।

ওপরে উল্লেখ করা ঘরোয়া চিকিৎসায় উপকার না পেলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়াই ভালো। বিশেষ করে যদি ব্যথা বাড়ে, পুঁজ জমা হতে দেখা যায় বা ডায়াবেটিস থাকে।

চিকিৎসক স্প্লিন্ট, তুলা বা ফ্লস দিয়ে নখের কোনা আলগা উঁচু করে দেবেন ২ থেকে ১২ সপ্তাহের জন্য। শিখিয়ে দেবেন কীভাবে বাড়িতে পা পরিষ্কার করে তুলা বদলাতে হবে। দেবে যাওয়া খানিকটা অংশ বা কখনো দরকার হলে গোটা নখ তুলে ফেলার দরকার হতে পারে।

সতর্কতা
খুব গভীর করে বা কোনা করে নখ কাটবেন না। একটু বাড়তি ও সোজা করে রাখুন।

অতিরিক্ত আঁটসাঁট জুতা পরবেন না, যাতে নখ বা আঙুল ভেতরে চেপে থাকে। স্পেস আছে বা একটু আরামদায়ক জুতা পরবেন।

যাঁদের নখের কোনা দেবে যাওয়ার প্রবণতা আছে, তাঁরা জুতার ভেতর প্রটেকটিভ ফুটওয়্যার পরতে পারেন।

ডায়াবেটিস থাকলে নিয়ন্ত্রণে রাখুন।

নখ ও আঙুল মাঝেমধ্যে পরীক্ষা করুন। কোনো রং পরিবর্তন বা ফোলা দেখলে ও ব্যথা থাকলে সতর্ক হোন।

মনে রাখুন
নখের কোনা দেবে যাওয়া বেশ কষ্টকর একটি সমস্যা। এটি নিয়ে অবহেলা করবেন না। প্রদাহ ও সংক্রমণ বাড়লে বিপদ হতে পারে।

নিয়মিত পায়ের যত্ন নেবেন ও পায়ের যেকোনো সমস্যায় দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাবেন।

অধ্যাপক মো. আসিফুজ্জামান, বিভাগীয় প্রধান, চর্মরোগ বিভাগ, গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ
Ref: https://www.prothomalo.com/lifestyle/health/05w3xsuu9z

8
স্মার্টফোনে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করাতে সক্ষম ৩৫টি অ্যাপের সন্ধান মিলেছে প্লে স্টোরে। অ্যাপগুলো নামালেই স্মার্টফোনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন প্রচার করতে থাকে। এসব বিজ্ঞাপনে ক্লিক করলেই ব্যবহারকারীর স্মার্টফোনে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করে। ক্ষতিকর এসব অ্যাপের সন্ধান পেয়েছে সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান বিটডিফেন্ডারের একদল গবেষক।

গুগলের নিরাপত্তাব্যবস্থা এড়িয়ে প্লে স্টোরে জায়গা করে নেওয়া অ্যাপগুলো বিশ্বজুড়ে এরই মধ্যে প্রায় ২০ লাখবার নামানো হয়েছে। তাই ব্যবহারকারীদের স্মার্টফোন থেকে অ্যাপগুলো দ্রুত মুছে ফেলার পরামর্শ দিয়েছেন সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞেরা। বিটডিফেন্ডারের গবেষকদের দাবি, প্লে স্টোরে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করাতে সক্ষম অ্যাপগুলোর বিষয়ে গুগলকে সতর্ক করা হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এমনকি, বার্তার উত্তরও দেয়নি প্রতিষ্ঠানটি।

বিটডিফেন্ডারের গবেষকেরা জানিয়েছেন, অ্যাপগুলোর মধ্যে বেশ কয়েকটি ব্যবহারকারীদের কাছে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। স্মার্টফোনে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করাতে সক্ষম অ্যাপগুলোর মধ্যে ‘জিপিএস লোকেশন ম্যাপস’, ‘পারসোনালিটি চার্জিং শো’, ‘ইমেজ র‍্যাপ ক্যামেরা’ ও ‘অ্যানিমেটেড স্টিকার ফাইন্ডার’ অন্যতম। সব কটি অ্যাপই এক লাখবারের বেশি নামানো হয়েছে।

সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, ক্ষতিকর অ্যাপ থেকে রক্ষা পেতে অ্যাপ নামানোর আগেই নির্মাতাদের বিষয়ে অনলাইনে খোঁজখবর নিতে হবে। জানতে হবে অ্যাপটির বিষয়ে অন্য ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতাও। অনলাইনে পাওয়া অপরিচিত লিংকে ক্লিক করে অ্যাপ নামানো থেকেও বিরত থাকতে হবে।

সূত্র: জেডডিনেট

9
দীর্ঘদিন বিষণ্নতা আর দুশ্চিন্তার সঙ্গে লড়াই করেছেন কোলবি কাল্টজেন। এখন নিজেই তিনি ইনস্টাগ্রামে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে নানা পরামর্শ দেন। কোলবি জানান, প্রায় ২০ বছর ধরে নানা মানসিক সংকটে ভুগেছেন তিনি। ব্রেন ফগ বা মস্তিষ্ক স্বাভাবিকভাবে কাজ না করা, মনোযোগ ধরে রাখতে না পারা, কাজের ‘ফোকাস’ হারিয়ে ফেলা—এ রকম নানা সমস্যায় ভুগেছেন। এই সাত অভ্যাস তাঁকে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সাহায্য করেছে। কোলবি যেভাবে তাঁর অভিজ্ঞতার কথা লিখেছেন, তাঁর বয়ানে সেভাবেই উল্লেখ করা হলো।

অন্যের ভালোমন্দের সঙ্গে নিজেকে জুড়ে ফেললে নিজের হতাশা, বিষণ্নতা চেপে ধরার সুযোগ পায় না
অন্যের ভালোমন্দের সঙ্গে নিজেকে জুড়ে ফেললে নিজের হতাশা, বিষণ্নতা চেপে ধরার সুযোগ পায় নাছবি: পেক্সেলস ডটকম
১. দীর্ঘ আট বছর ধরে আমি ধ্যান করেছি। ধ্যান চাপ কমায়, মনে প্রশান্তি আনে আর মানসিকভাবে সচেতন করে।
২. নিজেকে সৃজনশীল কাজে যুক্ত রাখার কোনো বিকল্প নেই। নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। যখন আপনি কেবল ‘কনজিউম’ করতে থাকেন, তখনই দুশ্চিন্তা জড়ো হতে থাকে। যখন আপনি কিছু তৈরি করেন, তখন দুশ্চিন্তা আপনাকে ছেড়ে যায়।
৩. মাঝে মাঝে সবকিছু থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নিজেকে নিজের সঙ্গে জুড়ুন। সপ্তাহে অন্তত একবার বা দুবার এমন কিছু সময় রাখুন, যে সময়ে আপনি কিছুই দেখবেন না, শুনবেন না, পড়বেন না, কেবল ভাববেন। নিজেকে মাঝেমধ্যে এভাবে ‘বিযুক্ত’ করলে যেকোনো কিছু অল্প সময়ে অনুধাবন করা সহজ হয়।
৪. ব্যায়াম করুন। আশপাশের পার্কে কোনো একটা গ্রুপে যোগ দিন। সকালের স্বাস্থ্যকর হাওয়া খাওয়ার পাশাপাশি অন্যদের সঙ্গে সামাজিকীকরণটাও হবে। মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে থাকা খুবই জরুরি। যখনই আপনার বিষণ্ন লাগবে, কোনো একজন কাছের মানুষের সঙ্গে গল্প করুন। দেখবেন, অনেকটাই হালকা লাগছে। অন্যের ভালোমন্দের সঙ্গে মিলেমিশে থাকলে নিজের হতাশা, বিষণ্নতা চেপে ধরার সুযোগ পায় না। তা ছাড়া, শারীরিক পরিশ্রম করলে হ্যাপি হরমোন নিঃসৃত হয়। ফলে বিষণ্নতা উবে যায়।
৫. প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যান। একই সময়ে উঠুন। বিছানায় ফোন নিয়ে যাবেন না। সন্ধ্যের পর কোনো ক্যাফেইন নেবেন না। বেডরুম যেন ঠান্ডা আর অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়। ঘুমানোর তিন ঘণ্টার ভেতর কোনো ভারী খাবার খাবেন না।
৬. আপনাকে অবশ্যই মানুষের সঙ্গে কথা বলতে হবে। আমাদের নিজেদের মাথার ভেতরকার দুশ্চিন্তা আমাদের বাস্তবতা থেকে বেশি কষ্ট দেয়। তাই অন্যের সঙ্গে আপনার সমস্যা নিয়ে কথা বললে সেটা আমাদের একটা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দেয়। তবে অবশ্যই সেই মানুষটা সে রকম নির্ভরশীল হতে হবে। আমার ক্ষেত্রে সেই মানুষটা ছিল থেরাপিস্ট। আপনার ক্ষেত্রে পরিবারের কোনো সদস্য বা বন্ধু অথবা যে কেউ হতে পারে। যাকে আপনি ভরসা করতে পারেন।
৭. প্রতিদিন নেতিবাচক হাজারো চিন্তা আপনার মাথায় উঁকি দেবে। আপনাকে সেগুলো ঝেঁটিয়ে বিদায় করতে হবে। নেতিবাচকতাকে মাথার ভেতর বাসা বাঁধতে দেবেন না। এক দিনে এটা হবে না। ওপরের ছয়টা বিষয় আপনি যদি মেনে চলেন, তাহলে নেতিবাচকতাকে দূর করার মতো মানসিক অবস্থায় আপনি পৌঁছে যাবেন। তবে কোনোকিছু থেকেই তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ফলাফল আশা করবেন না। দুর্ঘটনা হুট করে ঘটে! অপর দিকে, ভালো কিছু ঘটতে সময় লাগে।

Ref:https://www.prothomalo.com/lifestyle/health/7p7xzo3g7e

10
এডিস ইজিপ্টাই নামের মশার কামড়ে ডেঙ্গু জ্বর হয়। ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী মশা কাউকে কামড়ালে চার থেকে ছয় দিনের মধ্যে তাঁর জ্বর হয়। আক্রান্ত এই ব্যক্তিকে কোনো জীবাণুবিহীন এডিস মশা কামড়ালে সেটিও ডেঙ্গু জ্বরের জীবাণুবাহী মশায় পরিণত হয়। এভাবে একজন থেকে অন্যজনে মশার মাধ্যমে ডেঙ্গু ছড়ায়।

ডেঙ্গু প্রধানত দুই ধরনের—ক্ল্যাসিক্যাল ডেঙ্গু ফিভার ও ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার। বেশি তীব্র হলে তাকে ‘ডেঙ্গু শক সিনড্রোম’ বলে।

ডেঙ্গু ভাইরাস চার ধরনের। তাই ডেঙ্গু জ্বরও চারবার হতে পারে। যাঁরা আগেও ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে পরবর্তী সময়ে ডেঙ্গু হলে তা মারাত্মক হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

লক্ষণ
ক্ল্যাসিক্যাল ডেঙ্গু জ্বরে সাধারণত তীব্র জ্বর (১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত), সঙ্গে সারা শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা হয়। শরীরে বিশেষ করে হাড়, কোমর, পিঠসহ অস্থিসন্ধি ও মাংসপেশিতে তীব্র ব্যথা হয়। এ ছাড়া মাথাব্যথা ও চোখের পেছনে ব্যথা হয়। অনেক সময় ব্যথা এত তীব্র হয় যে মনে হয় হাড় বুঝি ভেঙে যাচ্ছে। তাই এ জ্বরের আরেক নাম ‘ব্রেক বোন ফিভার’।

জ্বর হওয়ার চার বা পাঁচ দিনের মাথায় সারা শরীরে লালচে দানা (স্কিন র‌্যাশ) দেখা যায়। এর সঙ্গে বমি বমি ভাব, বমিও হতে পারে। রোগী অতিরিক্ত ক্লান্তিবোধ করে এবং রুচি কমে যায়।

সাধারণত চার–পাঁচ দিন থাকার পর জ্বর এমনিতেই চলে যায়। কোনো কোনো রোগীর ক্ষেত্রে এর দু–তিন দিন পর আবার জ্বর আসে। তাই একে ‘বাই ফেজিক ফিভার’ বলে।

চিকিৎসা
ডেঙ্গু রোগের নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই; লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়া হয়।

জ্বর কমানোর জন্য প্যারাসিটামল–জাতীয় ওষুধ খাওয়া যেতে পারে।

ব্যথা কমানোর জন্য কখনোই ব্যথানাশক ওষুধ যেমন ডাইক্লোফেনাক, ন্যাপ্রোক্সেন, আইবু প্রোফেন, কিটোরোলাক খাওয়া যাবে না।

বিশ্রাম নিতে হবে এবং পর্যাপ্ত তরল খাবার (খাওয়ার স্যালাইন, ডাবের পানি, গ্লুকোজের শরবত) খেতে হবে।

বিপজ্জনক লক্ষণ দেখা দিলে (পেটব্যথা ও বমি করা, গায়ে লাল-কালো দাগ, দাঁতের মাড়ি থেকে রক্তক্ষরণ, প্রসাব–পায়খানার সঙ্গে রক্তক্ষরণ, প্রস্রাব স্বাভাবিক কমে যাওয়া, কিছুই খেতে না পারা) হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে।

কখন প্লাটিলেট ট্রান্সফিউশন
প্লাটিলেট কমে যাওয়া নিয়ে অহেতুক আতঙ্কিত হওয়া যাবে না। প্লাটিলেট কমে যাওয়াই স্বাভাবিক। এটি নিজেই আবার বাড়তে শুরু করে। যদি রক্তক্ষরণ হয় কিংবা প্লাটিলেট কাউন্ট ১০,০০০–এর নিচে নেমে যায়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শমতো প্লাটিলেট দিতে হতে পারে।

ডা. মো. আরিফ উর রহমান, রক্তরোগ বিশেষজ্ঞ, বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট ইউনিট, হেমাটোলজি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল

Ref: https://www.prothomalo.com/lifestyle/health/0526uvuprx

11
চলন্ত বাসের যাত্রী কিংবা গর্ভবতী নারীর বমি হওয়াটাকে সাধারণত স্বাভাবিক বলেই ধরে নেওয়া যায়। পচা-বাসি খাবার খেয়ে বমি (ফুড পয়জনিং) হওয়াটাও তাই। তবে সব ক্ষেত্রেই বমির কারণটা একেবারে ‘সাধারণ’ কিছু না-ও হতে পারে। জটিল কোনো রোগের কারণেও সামান্য এই উপসর্গ সৃষ্টি হয়ে থাকতে পারে। পরিচিত সাধারণ রোগবালাইয়ের পাশাপাশি হৃৎপিণ্ডের সমস্যা (হার্ট অ্যাটাক), পিত্তথলির রোগ, মস্তিষ্কের টিউমার, পেটের ক্ষত (আলসার), খাদ্যনালিতে কোনো বাধা (অবস্ট্রাকশন), অ্যাপেন্ডিসাইটিসের মতো সমস্যাতেও বমি হতে পারে। আবার সাধারণ কারণে হয়ে থাকলেও অতিরিক্ত বমির কারণে সৃষ্ট পানিশূন্যতা থেকে হতে পারে কিডনি বৈকল্যের মতো জটিলতা।

বমি হলে যা করবেন
বমি হলেই ঘাবড়ে যাবেন না। অল্প অল্প করে পানি, স্যালাইন ও তরল খাবার খওয়ার চেষ্টা করুন। ধীরে ধীরে তরলের পরিমাণ বাড়াতে থাকুন। এরপর একটু একটু করে নরম খাবার খেতে পারেন। বমি বন্ধ হওয়ার ঘণ্টা ছয়েক পরে স্বাভাবিক খাবার খেতে পারেন। প্রাথমিক চিকিৎসায় বমি বন্ধ না হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

জরুরি পরিস্থিতি
বমির পাশাপাশি এসব উপসর্গ বা চিহ্ন থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে—

বুকে ব্যথা, প্রচণ্ড পেটব্যথা, জ্ঞানের মাত্রা কমে যাওয়া (যেমন এলোমেলো কথা বলা)।


বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া, সবুজ বা পীতাভ রং, কালচে কিংবা কফির মতো বাদামি রঙের বমি হওয়া।

তীব্র জ্বর, তীব্র মাথাব্যথা, তীব্র তৃষ্ণা, মুখ শুকিয়ে আসা।

শোয়া বা বসা থেকে উঠতে গেলে মাথা ঘোরা, দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসা।

শ্বাসকষ্ট বোধ করা বা ঘন ঘন শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়া।

প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া কিংবা গাঢ় রঙের প্রস্রাব হওয়া।

বমি হওয়ার পর রক্তচাপ বা পালস রেটের যেকোনো একটি বেড়ে বা কমে গেলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। যদি একটানা বমি হতে থাকে বা রোগী দুর্বল হয়ে পড়তে থাকে, কিছুদিনের ভেতর রোগীর ওজন হ্রাস পেতে থাকে, তাহলেও চিকিৎসকের কাছে নিতে দেরি করবেন না। আর বয়স্ক ব্যক্তিরা নানা ঝুঁকিতে থাকেন। তাই তাঁদের বমি হলে অবহেলা না করে চিকিৎসা নেওয়াই উত্তম।

Ref: https://www.prothomalo.com/lifestyle/health/hhcpz57ivv

12
ভাইরাস জ্বরের অন্যতম প্রধান লক্ষণ হঠাৎ জ্বর আসা। ভাইরাস জ্বর সাধারণত পাঁচ-সাত দিন থাকে। ১০২-১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত জ্বর হয়। শরীরের পেশিতে প্রচণ্ড ব্যথা, চোখ লাল হওয়া, নাক দিয়ে পানি পড়া, গলাব্যথা, কাশি ইত্যাদি থাকতে পারে। অনেক সময় জ্বরে প্যারাসিটামল খাবার পরও জ্বর পুরোপুরি ছেড়ে যায় না। বিশেষ করে ডেঙ্গু বা টাইফয়েড হলে জ্বর প্রথম দিকে নিচে নামতেই চায় না। তাই বলে অতিরিক্ত প্যারাসিটামল খাওয়া যাবে না। শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা হচ্ছে ৯৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট। একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির ১০১ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি যদি জ্বর থাকে এবং কিডনি অথবা লিভারে কোনো সমস্যা না থাকে তাহলে ৫০০ মিলিগ্রামের দুটি প্যারাসিটামল বড়ি দিনে ছয় থেকে আট ঘণ্টা অন্তর সেবন করতে পারেন।

অতিরিক্ত মাত্রায় প্যারাসিটামল সেবন নানা ধরনের বিপদ ডেকে আনতে পারে। যেমন কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা, হজমের সমস্যা, বিপাক হার কমে যাওয়া, লিভারের বা কিডনির ক্ষতি।

চট করে অ্যান্টিবায়োটিক নয়
আমাদের একটা প্রবণতা হলো, জ্বর হলেই আমরা অ্যাজিথ্রোমাইসিন, সিপ্রোফ্লক্সাসিন বা সেফিক্সিম–জাতীয় অ্যান্টিবায়োটিক কিনে খাওয়া শুরু করে দিই। কারণ, আগে কখনো এ ওষুধ ডাক্তার দিয়েছিল। অনেক সময় দোকানদার বা স্বজনেরা পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

এমনটা কখনো করবেন না। ভাইরাসজনিত জ্বরে অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করে না। এমনকি ডেঙ্গু বা কোভিড, ইনফ্লুয়েঞ্জাতেও অ্যান্টিবায়োটিকের কোনো ভূমিকা নেই। আবার ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ যেমন টাইফয়েডে অ্যান্টিবায়োটিকের পৃথক মাত্রা রয়েছে, যা চিকিৎসক ছাড়া বোঝা মুশকিল। প্রস্রাবের সংক্রমণে কালচারে প্রাপ্ত জীবাণু দেখে অ্যান্টিবায়োটিক খেতে হয়। শুরুতেই অ্যান্টিবায়োটিক খেলে বিপদ আছে। এটি অ্যান্টিবায়োটিক রেজিসট্যান্সের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পরবর্তী সময়ে জ্বর না কমলে ল্যাব পরীক্ষায় বা কালচারে যথাযথ ফল পাওয়া যায় না।

প্যারাসিটামল ও ঘরোয়া চিকিৎসায় পাঁচ দিনেও জ্বর না কমলে বা কোনো জটিলতা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

Ref: https://www.prothomalo.com/lifestyle/health/ii1ibzdo64

13
রোদে যাব, নাকি যাব না? ঘরে থেকে এমন চিন্তা কমবেশি সবার মনেই আসে। যার কারণও আছে। এই যেমন রোদের ক্ষতিকারক আলট্রা ভায়োলেট রে, ত্বক পোড়া, ঘাম হওয়া প্রভৃতি। তবে রোদ ত্বকের দারুণ উপকারে আসে। ভিটামিন ডি তৈরি করে। শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি থাকলে তা দিয়ে তৈরি হয় পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ক্যালসিয়াম। তাই তো ভিটামিন ডি-কে বলা হয় ‘সানশাইন ভিটামিন’। কিন্তু ত্বক কীভাবে পায় ভিটামিন ডি? রোদের সংস্পর্শে এলে ত্বকে থাকা কোলেস্টেরল দিয়ে তৈরি হয় এই ভিটামিন। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায় একটা, আর তা হলো কতটুকু রোদ দরকার ও রোদে থাকার সঠিক পদ্ধতি কী? 

ভিটামিন ডি কেন উপকারী

ত্বক ছাড়াও হাড় ও দাঁতের জন্য দরকারি এই ভিটামিন। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা, নার্ভ সিস্টেম ও মস্তিষ্কের জন্যও উপকারী ভিটামিন ডি। এ ছাড়া টাইপ ২ ডায়াবেটিস ও কয়েক ধরনের ক্যানসার সমস্যার সমাধানে কাজে দেয় ভিটামিন ডি।

ত্বকের জন্য কেন দরকার

ত্বকের জন্য কয়েক ধরনের উপকার করে ভিটামিন ডি। রুক্ষ ও প্রাণহীন ত্বক গ্লোয়িং, গ্রোথ ও রিপেয়ার, ত্বকের প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ানো, বয়সের ছাপ দূর করা, ব্রণ কমানো, ফাইন লাইন ও কালো দাগ কমানোর মতো কাজ করে এই ভিটামিন।

প্রয়োজনীয় ভিটামিন ডি-র পরিমাণ

প্রতিদিন ভিটামিন ডি নিতে হবে নির্দিষ্ট একটি পরিমাণে। বাড়তি ভিটামিন ডির জন্য বেশি রোদে থাকলে হিতে হবে বিপরীত। ভিটামিন ডি মাপার দুটি পদ্ধতি রয়েছে। একটি মাইক্রোগ্রাম (এমসিজি) ও অন্যটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিট (আইইউ)। মেডিসিন ইনস্টিটিউটের খাদ্য ও পুষ্টি বোর্ডের মতে, শিশু ও তরুণদের প্রতিদিন ৬০০ আইইউ বা ১৫  এমসিজি ভিটামিন ডি দরকার।

কখন যাবেন রোদে

দুপুরের ঠিক আগমুহূর্তে রোদে যাওয়ার সঠিক সময়। কারণ এই সময়ে সূর্যের তাপ বেশি থাকে। তাই অল্প সময়েই আপনি পেয়ে যাবে ত্বকের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন ডি। বিভিন্ন গবেষণা বলে, এই সময়টাতে ভিটামিন ডি নেওয়ার জন্য শরীর সব থেকে বেশি উপযোগী থাকে। অন্য একটি গবেষণায় দেখা গেছে, মিড ডে-র পরে রোদে যাওয়া আরও বেশি ক্ষতিকর। এতে স্কিন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে।

১০ থেকে ৩০ মিনিট রোদে থাকলেই প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় ভিটামিন ডি পাওয়া যায়সঠিক উপায়

রোদে গেলেই প্রয়োজনীয় ভিটামিন ডি পাওয়া যাবে না। বরং মানতে হবে সঠিক নিয়ম। ১০ থেকে ৩০ মিনিট রোদে থাকলেই প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। এ সময়ে যতটা সম্ভব ছোট হাতার পাতলা কাপড় পরতে হবে, যেন রোদ সরাসরি গায়ে লাগে। মুখে রোদ লাগাতে না চাইলে সূর্যের দিকে পিঠ এলিয়ে দিয়ে বসতে পারেন। ত্বক খুব বেশি স্পর্শকাতর না হলে সানস্ক্রিন ছাড়া কিছু সময় রোদে বসলে ত্বক বেশি ভিটামিন ডি পাবে। এ ছাড়া চাইলে সানগ্লাস ও হ্যাট পরেও রোদে বসা যায়।

বেশি রোদে ক্ষতি

ত্বক রোদে পুড়লে কালচে ভাব আসা ছাড়াও অনেক ধরনের সমস্যা তৈরি হয়। যেমন ত্বক কিছু জায়গায় লালচে হয়ে যাওয়া, ব্যথা হওয়া, চুলকানি, র‍্যাশ, ফুলে যাওয়া প্রভৃতি। লম্বা সময় রোদে থাকলে আলট্রা ভায়োলেট রশ্মি (ইউভি রে)  চোখের রেটিনায় মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। এতে চোখে ছানির সমস্যা বাড়ে। রোদে অনেক সময় থাকলে ত্বকে দ্রুত বয়সের ছাপ পড়ে যায়। চামড়ায় ভাঁজ পড়া, চামড়া আলগা হওয়া ও ফেটে যাওয়ার মতো সমস্যা হয়। অনেক বেশি সূর্যের ইউভি রে ত্বকের ক্যানসারের জন্য দায়ী। তাই সারা দিনে কেবল ১০ থেকে ৩০ মিনিটের রোদই ভিটামিন ডি-র জন্য যথেষ্ট।

Ref: https://www.prothomalo.com/life/health/%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%A6%E0%A7%87-%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%A8%E0%A7%8B-%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%A8-%E0%A6%95%E0%A6%96%E0%A6%A8-%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%A8

14
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা অনেকেরই আছে। সাধারণত বুকজ্বলা, অতিরিক্ত ঢেকুর ওঠা, পেটব্যথা, পেটজ্বলা, পেটফাঁপা, পেটে অতিরিক্ত গ্যাস, বদহজম, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি উপসর্গকে গ্যাস্ট্রিক বলে। সময়মতো না খাওয়া, বাইরের খাবার খাওয়া, অতিরিক্ত তেল–মসলাযুক্ত খাবার খাওয়া, অতিরিক্ত খাবার খাওয়া, ধূমপান, মদপান, কম ঘুমানোর মতো অভ্যাসের কারণে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়।

এন্ডোস্কপি করলে পাকস্থলী বা ক্ষুদ্রান্ত্রের অগ্রভাগে ক্ষত পাওয়া গেলে তাকে পেপটিক আলসার বলা হয়। এর নির্দিষ্ট চিকিৎসা আছে। আবার কোনো ক্ষত বা আলসার না থেকে কেবল গ্যাস্ট্রাইটিস (প্রদাহ) থাকতে পারে। অনেক সময় হেলিকোব্যাকটার পাইলোরি নামের সংক্রমণ থেকে প্রদাহ বা ক্ষত হয়। এরও চিকিৎসা আছে। এর বাইরে একটি বড়সংখ্যক রোগীর কোনো ক্ষত বা প্রদাহ নেই। তাঁদের যা হয়, তা হলো নন–আলসার ডিসপেপসিয়া। মানে হজমের রস ওপরে উঠে এসে অস্বস্তি সৃষ্টি করে।

গ্যাস্ট্রিকের সঠিক চিকিৎসা না করে অনেকে মাসের পর মাস এন্টাসিড সিরাপ, ওমিপ্রাজল গোত্রের ওষুধ, ডমপেরিডোন গোত্রের ওষুধ সেবন করেন। গ্যাস্ট্রিক সমস্যা সমাধানে এসব ওষুধের বেশির ভাগেরই কোনো প্রয়োজন নেই। শুধু খাওয়াদাওয়া ও জীবনযাপনের নিয়ম মেনে চললেই সুস্থ থাকতে পারবেন। যাঁদের বয়স বেশি, তাঁদের উচিত চিকিৎসকের কাছে গিয়ে রোগ নির্ণয় করে ব্যবস্থা নেওযা।

দীর্ঘ মেয়াদে গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খাওয়ার কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও আছে। এতে টাইফয়েডের মতো কিছু সংক্রমণ হতে পারে। এ ছাড়া রক্তশূন্যতা ও হাড়ক্ষয় রোগ হতে পারে। কিডনি রোগীদের অ্যান্টাসিড–জাতীয় ওষুধে মারাত্মক সমস্যা হতে পারে। দীর্ঘ মেয়াদে এসব ওষুধ খেলে পাকস্থলীর পিএইচ পরিবর্তিত হয়ে যায়, এমনকি পাকস্থলীর ক্যানসারও হতে পারে।

করণীয় কী
রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধই খাওয়া উচিত নয়। চিকিৎসক এক মাস বা দুই মাসের জন্য লিখে দিলে তা সারা বছর খাওয়া যাবে না।

পেটের সমস্যা যদি দীর্ঘ হয়, তাহলে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে সঠিক রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা নিতে হবে। খাবার ও জীবনযাপনের সঠিক নিয়ম মেনে চলতে হবে। যেমন সঠিক সময়ে খাবার খাওয়া, বাইরের খাবার যথাসম্ভব এড়িয়ে চলা, অতিরিক্ত তেল–মসলাযুক্ত খাবার পরিহার করা, বাসি খাবার না খাওয়া, পরিমিত পরিমাণে খাওয়া, ধূমপান ও মদপান না করা এবং অধিক রাত না জাগা।

Ref: https://www.prothomalo.com/life/health/%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A7%87-%E0%A6%A6%E0%A7%80%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%98%E0%A6%A6%E0%A6%BF%E0%A6%A8-%E0%A6%93%E0%A6%B7%E0%A7%81%E0%A6%A7-%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%AC%E0%A6%A8-%E0%A6%A8%E0%A7%9F

15
রাত একটা, দুটো, তিনটে। অন্ধকারে পাহারা দিচ্ছে একটা রাতজাগা এক অ্যানড্রয়েড ফোন আর এক জোড়া নির্ঘুম চোখ। এটা কোনো কাল্পনিক দৃশ্য নয়। আধুনিক জীবনের খুবই স্বাভাবিক চিত্র। অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, হাঁটা বা শারীরিক পরিশ্রমের অভাব, স্নায়ুচাপ, গ্যাজেটনির্ভরতা, সর্বোপরি অনলাইন আর অফলাইন জীবনের ব্যস্ততায় অনেকেই ঘুমের সমস্যায় ভুগছেন। রাতে ভালো ঘুম হয় না, আপনি কি এমন সমস্যায় ভুগছেন? অনেক সময় দেখা যায়, শরীর প্রচণ্ড ক্লান্ত, কিন্তু ঘুম আসে না। জেনে রাখুন, আপনি একা নন। এই সমস্যার সঙ্গী হিসেবে পাবেন আরও অনেককে।

দিনে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঠিক সময়ে ঘুমানোর কোনো বিকল্প নেই
দিনে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঠিক সময়ে ঘুমানোর কোনো বিকল্প নেই। ঘুমহীনতায় তৈরি হয় নানা জটিলতা। তাই আপনার যদি ‘রাতে ঘুম না আসে’, তাহলে ঘুমানোর আগে এই খাবারগুলো খেয়ে দেখতে পারেন। ঘুমের জন্য যে হরমোন দায়ী, এই খাবারগুলো খেলে সেগুলো নিঃসৃত হয়।

কলা, দুধ, ডিম, মিষ্টিআলু, মধু, ওটস, আখরোট, কাঠবাদাম, ডার্ক চকলেট, পালংশাক—এগুলো খেয়ে দিব্যি ঘুমাতে পারেন। আমের সময় রাতে দুটো পাকা আম খেলেও ভালো ঘুম হবে। পাকা আমে প্রচুর ট্রিপটোফ্যান থাকে; যা নিদ্রাকর্ষী রাসায়নিক হিসেবে কাজ করে। দুধেও থাকে অ্যামাইনো অ্যাসিড ট্রিপটোফ্যান। তাই আমের মৌসুমে যদি রাতের খাবার হিসেবে গরম দুধে আম মিশিয়ে খান, তাহলে তো পোয়া বারো। আখরোটেও থাকে এই ট্রিপটোফ্যান। 

পাকা আম আর বাদামে ভালো ঘুম হয়
শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব হলে ঘুম কম হয়। মস্তিষ্কের নিউরনের যে অংশ ঘুমের সহায়ক হিসেবে কাজ করে, ডিটামিন ডি সেটাকে সক্রিয় করে। আর ডিমে থাকে ভিটামিন ডি। পটাশিয়ামযুক্ত খাবারেও ঘুম পায়। কলা আর পালংশাকে আছে প্রচুর পটাশিয়াম। মধু সেরোটোনিন ও মেলাটোনিন তৈরি করে। এই দুই হরমোনই ঘুমপাড়ানি মাসি আর পিসি। তাই নিয়মিত মধু খেলে ভালো ঘুম হয়। কাঠবাদামের ম্যাগনেশিয়াম ও ট্রিপটোফ্যান স্নায়ু এবং মাংসপেশিকে শান্ত করে। ফলে ভালো ঘুম হবে।

শস্যজাতীয় খাবারেও গভীর ঘুম হবে। এসবে সেরোটোনিন নামক শিথিলকরণ হরমোনের নিঃসরণ হয়, যা গভীর ঘুমের জন্য দায়ী। এ ছাড়া এতে থাকা ম্যাগনেশিয়ামও দেহের মাংসপেশি শিথিলকরণে সহায়ক। ডার্ক চকলেটেও সেরোটেনিন তৈরি হয়। অন্যদিকে ওটস খুবই উপকারী আর পুষ্টিকর একটি খাবার। এর জটিল কার্বোহাইড্রেটস হজমে বেশ সময় লাগে। ফলে রাতভর পেট ভরা থাকায় ঘুম ভালো হয়। একই কারণে এবং পটাশিয়াম সমৃদ্ধ হওয়ায় ঘুমের গুণগত মান বাড়াতে মিষ্টিআলুর জুড়ি নেই।

Ref: https://www.prothomalo.com/life/health/%E0%A6%8F%E0%A6%97%E0%A7%81%E0%A6%B2%E0%A7%8B-%E0%A6%96%E0%A6%BE%E0%A6%A8-%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A7%8B-%E0%A6%98%E0%A7%81%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A8

Pages: [1] 2 3 ... 25