Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Messages - Nazia Nishat

Pages: 1 2 [3] 4 5 ... 9
31

প্রিয় সন্তান,

আমি যখন বার্ধক্য উপনীত হবো আমি আশা করবো তুমি আমাকে বুঝবে এবং আমার সাথে ধৈর্যশীল হবে।

ধরো আমি যদি হঠাৎ থালা ভেঙ্গে ফেলি অথবা টেবিলে স্যুপ ফেলে নষ্ট করি, কারণ আমি দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেছি, আশা করি তুমি আমার প্রতি চিৎকার করবে না।

বয়স্ক মানুষ খুব স্পর্শকাতর

তুমি যখন চিৎকার করে কথা বলো তখন তারা নিজের কাছে খুব ছোট হয়ে যায়, অসহায় আর অপরাধী মনে করে নিজেকে। ।

যখন আমার শ্রবণ শক্তি শেষ হয়ে আসছে এবং আমি শুনতে পাচ্ছি না তুমি কি বলছ ।।

তোমার তখন আমাকে বধির বলা উচিত নয়।
দয়া করে তুমি পুনরায় বলো অথবা লিখে দেখাও।

আমি দুঃখিত বাবা আমি বৃদ্ধ হয়ে যাচ্ছি, আমার পা দুর্বল হয়ে আসে

আমি মনে মনে চাই তোমার সে ধৈর্য্য থাকবে আমাকে দাঁড়াতে সাহায্য করার জন্য।
যেভাবে আমি তোমার পাশে ছিলাম, যখন তুমি ছোট ছিলে হাঁটতে শিখছিলে পা পা করে....

আমার কথা শোন

যখন আমি অসহায়ের মত তোমার নিকট কথা বলবো.. ভাঙ্গা রেকর্ডের মত

আমি চাইবো তুমি শুধু আমার কথাটুকু শুনবে........
আমাকে নিয়ে ঠাট্টা করো না... অথবা আমার কথা শুনে বিরক্ত হয়ো না.....
তোমার মনে আছে??

তুমি ছোট থাকতে আমার কাছে একটা বেলুন চেয়েছিলে!!!!!
সেটা না পাওয়া পর্যন্ত তুমি বারবার আমাকে সেটাই বলতে.... সারাক্ষণ জিজ্ঞাসা করতে..... “কখন দেবে কখন দেবে...”

এবং আমার গন্ধ সহ্য করো...
বৃদ্ধের মতই আমার গন্ধ হবে....
এজন্য

দয়া করে আমাকে গোসল করার জন্য জোর করো না।

আমি যখন সহজে রেগে যাই............

এটা বয়স্ক হবার একটা সাধারণ দোষ,

বার্ধক্য আসলে তুমি নিজেই বুঝতে পারবে।
আর যখন তোমার অলস সময় থাকবে

আমি আশা করবো তুমি আমার সাথে একটু সময়ের জন্য হলেও কথা বলো............
আমি এ সময় সর্বদা একাকীত্বে ভুগি এবং কথা বলার মানুষ পাই না ।
আমি জানি তুমি ব্যস্ত থাকো কাজের মাঝে.....
যদিও তুমি আমার কথায় ও গল্পে আনন্দ না পাও.....
আমার জন্য কিছু সময় রেখো
তুমি যখন ছোট ছিলে তোমার কি মনে পড়ে ?
তোমার খেলনা টেডিবিয়ারের কথাও আমি শুনতাম.....

যখন সময় আসবে আমি অসুস্থ হয়ে পড়বো এবং
বিছানায় শায়িত হয়ে পড়বো

আমি আশা করি তুমি এটুকুধৈর্য্য রাখবে জীবনের শেষ মুহুর্তগুলো আমাকে দেখে রাখা জন্য।

আমি আর বেশি দিন বেঁচে থাকব না.....
যাই হোক
যখন আমার মৃত্যু আসবে......
তুমি কি আমার হাত ধরে থাকবে না, যা আমাকে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করার জন্য সাহস যোগাবে?

এবং চিন্তা করো না.....
যখন আমার সৃষ্টিকর্তার সাথে দেখা হবে
আমি তার কানে অবশ্যই বলবো........

তোমাকে অনুগ্রহ করতে....

কারণ তুমি তোমার বাবা-মাকে ভালোবেসেছিলে
তোমার যত্ন ও সহমর্মিতার জন্য ধন্যবাদ
আমরা তোমাকে ভালবাসি ।। ।।


32
আমরা প্রায়ই বিখ্যাত ব্যাক্তিদের জীবনী থেকে শিক্ষা নিয়ে থাকি। আমাদের কি পবিত্র ধর্মগ্রন্থে বর্ণিত নবীদের জীবনী থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিৎ? এটাই ডঃ ইউসুফ মাহাবুবুল ইসলাম এর প্রশ্ন।

আমরা প্রায়ই মহিলা বা পুরুষ নির্বিশেষে বিখ্যাত ব্যাক্তিদের জীবনী বা আত্মজীবনী পড়ে থাকি।  কেন পড়ি?  এর এক বা একাধিক কারণ থাকতে পারে।  আমরা তাঁদের ব্যক্তিত্ব থেকে শিক্ষা নিতে পারি, আমরা জানতে পারি তারা কি অবদান রেখেছেন,  কিভাবে তাঁরা প্রতিকূলতা মোকাবেলা করেছেন,  তাঁরা মানুষের সাথে কিরকম আচরণ করেছেন এবং অন্যদের প্রভাবিত করেছেন অথবা তাঁরা কেন বিখ্যাত হয়েছেন।  আমরা কাদের বিষয়ে অধ্যয়ন করবো, এই প্রসঙ্গে বলা যায় কুরআনে যেসব ব্যক্তিদের ব্যাপারে বলা হয়েছে আমরা কি তাঁদের সম্পর্কে শিখবো?
বাইবেলের জেনেসিস ৩৭-৫০ এ ৪০০০ বছর{১} আগে বসবাসকারী নবী ইউসুফ (আঃ) অধিকাংশ কাহিনী বর্ণিত আছে।  ১৮৭১ সালে উইলিয়াম ব্রুস তার বই  The story of Joseph and his brethren: its moral and spiritual lessons. এ গুরুত্ব সহকারে লিখেছিলেন যে-
“নবী ইউসুফ (আঃ) এর  কাহিনী বাইবেল অথবা অন্যান্য বই থেকে পাওয়া সবচেয়ে সুন্দর ও নির্দেশনামূলক কাহিনী।  ওল্ড টেস্টামেন্টে যেসব চরিত্রের কথা বলা হয়েছে তার মধ্যে  নবী ইউসুফ (আঃ) এর চরিত্রকে সর্বাপেক্ষা নিখুঁত বলা হয়েছে,...মুসা (আঃ) ছিলেন নম্র, দাউদ (আঃ) ছিলেন উদার, সোলাইমান (আঃ) ছিলেন জ্ঞানী, কিন্তু প্রত্যেকের কিছু ত্রুটি ছিল যা তাঁদের গুণাবলীর দীপ্তিকে কিছুটা ম্লান করে দিয়েছিলো।  ইউসুফ (আঃ) এর এইসব ভাল গুণাবলী ছিল, কিন্তু কেউ তাঁকে দোষী প্রমাণ করতে পারেনি।  আমরা অবশেষে এটা বলবনা যে, তিনি ত্রুটিমুক্ত ছিলেন, কিন্তু তিনি  অধিকাংশ মানুষের থেকে কম ত্রুটিযুক্ত ছিলেন।......”{১}
পবিত্র কুরআনেও নবী ইউসুফ (আঃ) এর কাহিনী বর্ণিত হয়েছে।  যদিও কুরআনে যে বিস্তারিত বর্ণনা আছে তাতে কিছুটা পার্থক্য আছে,তবে কুরআনেও এর নির্দেশনামূলক মান নিশ্চিত করা আছে,
“প্রকৃতপক্ষেই ইউসুফ এবং তার ভাইরা সত্য অনুসন্ধানকারীদের জন্য চিহ্ন বা নিদর্শন স্বরূপ।” [১২:৭]
কুরআনে সম্পূর্ণ সূরা ১২ একান্তভাবে ইউসুফ (আঃ) এর কাহিনী নিয়েই রচিত হয়েছে এবং তাঁর নামেই নামকরন করা হয়েছে , এতেই বুঝা যায় সৃষ্টিকর্তা ইউসুফ (আঃ) এর জীবন থেকে শিক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে কত গুরুত্ব দিয়েছেন। এই গল্পটি ইউসুফ (আঃ) ও তাঁর পরিবারকে নিয়ে।  ইউসুফ (আঃ) এর জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে তাঁর ধৈর্য্য ও চরিত্রের পরিচয় এখানে প্রদর্শিত হয়েছে। তিনি ছিলেন ছোট ও সৎ ভাই ,তিনি ছিলেন বড় সৎ ভাইদের ঘৃণার পাত্র, এবং বাবার আদরের ছেলে,যাকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছিলো কূপের ভিতর, যাকে দাস হিসেবে বিক্রয় করা হয়েছিলো, যিনি দাসত্ব করেছিলেন,তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছিলো এবং অবশেষে তাঁর হাতে মিশরের শাসন কাজ তুলে দেওয়া হয়।  তাঁর জীবনের কষ্ট থেকে শিক্ষা নেওয়া যায় যে- তিনি কি ভূমিকা পালন করেছেন এবং সবশেষে আল্লাহ্‌র হাতেই সকল ক্ষমতা নিহিত, তিনি রক্ষাকর্তা এবং পুরষ্কারদাতা।
সৎ ভাইরা ইউসুফ (আঃ) কে কূপের তলদেশে ফেলে রাখার একটা চক্রান্ত করলো।  কূপ থেকে পানি উঠানোর সময় এক ক্রীতদাস ব্যবসায়ী তাঁকে আবিষ্কার করলো।  ব্যবসায়ী ইউসুফ (আঃ)কে খুঁজে পাওয়ার পর সৎ ভাইরা তাঁকে মাত্র কয়েক দিরহামের বিনিময়ে বিক্রয় করে দিলো!  তারা তাদের বাবার সাথে প্রতারণা করার জন্য ইউসুফ (আঃ) এর জামায় ছাগলের রক্ত মেখে নিল এবং বাড়িতে গিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বাবাকে বলল যে, নেকড়ে ইউসুফকে খেয়ে ফেলেছে,
    “তারপর তারা রাতের প্রথম প্রহরে কাঁদতে কাঁদতে বাবার কাছে আসলো।”[১২.১৬]
১২.১৭“তারা বললঃ বাবা, আমরা একে অন্যের সাথে  দৌড় প্রতিযোগিতা করতে গিয়েছিলাম এবং ইউসুফকে মালপত্রের কাছে রেখে গিয়েছিলাম। অতঃপর তাকে নেকড়ে  খেয়ে ফেলে। কিন্তু আপনি তো আমাদেরকে বিশ্বাস করবেন না, যদিও আমরা সত্যবাদী।”
এখানে আমরা দেখতে পাই যে ইউসুফ (আঃ) এর  প্রতি ঘৃণা থেকে ভাইরা তাঁকে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র করে এবং তাঁদের বাবার জন্য একটি মনগড়া গল্প তৈরি করে। এই যুগেও কি  সমাজ, রাষ্ট্র ও পরিবারে এই একই ধরণের ঘটনা ঘটে থাকে? আল্লাহ্‌ আমাদের সবাইকে সমানভাবে সৃষ্টি করেছেন।  আমরা সবাই যেন একে অপরের  ভাইএর মতো।  প্রত্যেক সৃষ্ট মানুষের সমান অধিকার আছে নিজের জীবন এবং আল্লাহ্‌র দেয়া নেয়ামত উপভোগ করার।  এভাবে কাউকে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র করে আমরা সৃষ্টিকর্তার দেয়া বেঁচে থাকার অধিকারের প্রতি অবিশ্বাস প্রদর্শন করছি। যখন আমরা অযথাই অন্য এক ভাইএর জীবন কেড়ে নেই তখন সৃষ্টিকর্তার কি প্রতিক্রিয়া হওয়া উচিৎ।

১২.১৮ “তারা ইউসুফের জামায় কৃত্রিম রক্ত লাগিয়ে নিল।  ইয়াকুব বললেন “এটা হতে পারেনা, বরং তোমরা নিজেদের  মনগড়া গল্প বলছ।  যাইহোক তোমরা যা দাবী করছ তার জন্য আমার ধৈর্য্য ধরাই একমাত্র পথ।  তোমরা যা বর্ণনা করছ, সে বিষয়ে একমাত্র আল্লাহই আমার সাহায্য স্থল।””

তাদের বাবা ইয়াকুব তাদের সাজানো গল্প বিশ্বাস করলেননা।  যাইহোক, যেহেতু সব ভাইরা এই গল্পকে সমর্থন করলো তিনি বুঝতে পারলেন না কিভাবে আসল ঘটনা জানতে পারবেন। সুতরাং তিনি ধৈর্য্য ধারণ করলেন এবং আল্লাহ্‌র উপর বিশ্বাস রাখলেন।

 “হে মুমিন গন! তোমরা ধৈর্য্য ও নামাযের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই  আল্লাহ ধৈর্য্যশীলদের সাথে রয়েছেন।”[২.১৫৩]
১২.১৯ “তারপর সেখানে এক দল ভ্রমণকারী এল। অতঃপর তাদের পানি সংগ্রাহককে প্রেরণ করল। সে কূপের ভিতর বালতি ফেলল। সে বললঃ “কি আনন্দের কথা। এ তো একটি কিশোর!”   তারা তাঁকে পন্যদ্রব্যের মতো গোপন করে ফেলল(যাতে তাঁকে দাস হিসেবে বিক্রয় করা যায়)!  আল্লাহ খুব জানেন যা কিছু তারা করেছিল!”
এক লোক কূপ থেকে পানি সংগ্রহ করতে গিয়ে ইউসুফ (আঃ) কে খুঁজে পেলো।  যাইহোক ইউসুফ (আঃ) এর ভাইরা দেখছিল কূপ থেকে কি বের করা হচ্ছে।  যখন তারা দেখল যে ভ্রমণকারী দল ইউসুফ (আঃ) কে নিয়ে চলে যেতে চাচ্ছে, তখন তারা আসলো এবং টাকা দাবী করলো-তারা তাঁকে কে দাস হিসেবে বিক্রি করতে সম্মত হল। ভাই হিসেবে ইউসুফ (আঃ)কে তারা কত সামান্য মূল্য দিলো!
১২.২০ “তারা তাঁকে মাত্র কয়েক দিরহামের বিনিময়ে বিক্রয় করে দিলো এবং তাদের অনুমানে ইউসুফের মূল্য কত সামান্য ছিল!”
ইউসুফ (আঃ) এর ভাইরা ইউসুফের প্রকৃতি বুঝলনা এবং তাঁর বিশ্বাসের শক্তিকেও বুঝলনা।  এখানে আমরা দেখতে পাই যে সৃষ্টিকর্তা ভাইদের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন হতে দিলেন এবং এভাবে তিনি তাদের প্রকৃতি দেখিয়ে দিলেন।  একই সময়ে তিনি নিশ্চিত করলেন যে ইউসুফ (আঃ) নিরাপদে থাকবেন এবং একদিন  তাঁর ভাইদের  শিক্ষা দিবেন।
১২.২১ “মিসরে যে ব্যক্তি তাকে ক্রয় করল, সে তার স্ত্রীকে বললঃ একে সম্মানের সাথে (আমাদের মাঝে) রাখ। সম্ভবতঃ সে আমাদের কাজে আসবে অথবা আমরা তাকে পুত্ররূপে গ্রহণ করে নেব। এমনিভাবে আমি ইউসুফকে এদেশে প্রতিষ্ঠিত করলাম এবং এ কারণে যেন তাঁকে ঘটনার  ব্যাখ্যা করার  শিক্ষা দেই।(উদাহরণস্বরূপ স্বপ্ন )। আল্লাহ নিজ কাজের উপর পূর্ণ ক্ষমতা ও নিয়ন্ত্রণ রাখেন , কিন্তু অধিকাংশ লোক তা জানে না।”
এই গল্পে আমরা দেখি যে সৃষ্টিকর্তা ইউসুফ (আঃ) কে রক্ষা করলেন এবং অবশেষে তাঁকে মিশরের শাসনকর্তা বানালেন। অনেক কষ্ট, ধৈর্য্য ও দৃঢ়তা প্রদর্শনের পর আল্লাহ্‌ তাঁকে রাজক্ষমতা দান করেন।  আল্লাহ্‌ কুরআনের ৯৪ নং সূরায় বলেছেন,

“আমি কি আপনার বক্ষ প্রসারিত করে দেইনি (আপনার হৃদয়ে খুশি দেইনি)? এবং আমি লাঘব করেছি আপনার বোঝা, যা ছিল আপনার জন্যে অতিশয় দুঃসহ। আমি আপনার খ্যাতিকে  সমুচ্চ করেছি। কিন্তু দেখুন কষ্টের সাথে স্বস্তি রয়েছে; নিশ্চয় কষ্টের সাথে স্বস্তি রয়েছে। অতএব,  আপনি যখন অবসর পান তখনও পরিশ্রম করুন আপনার পালনকর্তাকে খুশি করার জন্য।” [৯৪:১-৯৪:৮]
আমরা নিজের জীবনের জন্য কি শিক্ষা নিতে পারি? আল্লাহ্‌  ধৈর্য্য ধরার জন্য শুধু পুরষ্কারই দেন না বরং আমাদের মর্যাদাও উন্নত করেন তাদের সামনে যারা সৃষ্টিকর্তাকে মূল্য দেয়না। এত কষ্টের ভিতরেও ইউসুফ (আঃ) সৃষ্টিকর্তার প্রতি তাঁর বিশ্বাস হারাননি।  বরং তিনি ধৈর্য্য ও দৃঢ়তার সাথে সৃষ্টিকর্তার সাহায্য প্রার্থনা করেছেন এবং তাঁর প্রতি সর্বদা কৃতজ্ঞ ছিলেন । আমাদের জীবনে সৃষ্টিকর্তা কতবার কষ্টকে স্বস্তিতে রূপান্তর করেছেন। যাইহোক আমরা কি কৃতজ্ঞ ছিলাম এবং তাঁকে খুশি করার চেষ্টা করেছি?


----------
{Notes}:
{1} https://archive.org/details/storyjosephandh00brucgoog



33
আমরা প্রায়ই মানুষের সাথে মানুষের অন্যায় আচরণ নিয়ে আলাপ আলোচনা করি। আলাপ করার সময়ে আমরা কি ভেবে দেখেছি যে, মানুষ সৃষ্টিকর্তার প্রতি অন্যায় করে কিনা? এটাই ডঃ ইউসুফ ইসলামের নিজের কাছে প্রশ্ন।
আমরা যখন বন্ধু বান্ধবীর সাথে আড্ডা দেই, প্রায়শই ন্যায়নীতি বিষয়ক আলাপ আলোচনা হয়।  বেশির ভাগ সময় আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ঃ  মানুষের সাথে মানুষের অন্যায়।  এইসব আলোচনার মধ্যে কখনো কি সৃষ্টিকর্তার সাথে মানুষের অন্যায় বিষয়ক কথা বার্তা হয়? এর উত্তরে একজন বলে বসতেই পারে যে, সৃষ্টিকর্তা তো সর্বশক্তিমান–কিভাবে কেউ তাঁর সাথে অন্যায় করতে পারে?     
কারো ক্ষতি করা আর তার সাথে অন্যায় করা এক জিনিস না।  আমরা যতই অন্যায় করিনা কেন তাতে আসলে সৃষ্টিকর্তার কোন ক্ষতি হয়না! অন্যায় কাজ প্রকৃতপক্ষে অন্যায়কারীর চরিত্রের প্রতিফলন ঘটায়।  সাধারণত আমরা যখন কোন উপহার পাই তখন যে উপহার দিলো তাকে ধন্যবাদ জানাই। কৃতজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ না হলে আমাদের ভিতরে একরকম অপরাধবোধ কাজ করে।  একই সাথে যারা উপহার দেয়নি তাদের কৃতজ্ঞতা জানানোর কথা কি কখনো ভাবি? সৃষ্টিকর্তার ক্ষেত্রে একইভাবে, এটা কি অন্যায় হবে যদি আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রদর্শন করি যাদের সৃষ্টিকর্তার দেয়া নেয়ামতের সাথে কোন সম্পর্ক নেই? উদাহরণস্বরূপ আমরা জানি যে একমাত্র তিনিই আমাদের পরীক্ষায় সাফল্য দিতে পারেন।  তাই পরীক্ষার আগে সাফল্য পাওয়ার  জন্য আমরা অতিরিক্ত নামাজ পড়ে প্রার্থনা করি যাতে সৃষ্টিকর্তা আমাদের সাফল্য দেন।  আমাদের সৃষ্টিকর্তা কুরআন শরীফে উল্লেখ করেছেনঃ
“তারা আল্লাহ্‌র অনুগ্রহকে চিনতে পারলো; অতঃপর অস্বীকার করলো, এবং তারা বেশির ভাগই অকৃতজ্ঞ।”[১৬.৮৩]
একবার যখন আল্লাহ্‌ তালা পরীক্ষায় সাফল্য দিয়ে দেন তখন কি আমরা এর প্রেক্ষিতে সরাসরি তাঁকে কৃতজ্ঞতা জানাই?  বরং কৃতজ্ঞতা প্রদর্শনের জন্য শিক্ষকের বাসায় মিষ্টি নিয়ে যাই এবং নিজেদের সাফল্যের উপর খুশি হই এবং মনে করি আমরা নিজেরাই কেবল এই অর্জনের জন্য দায়ী।  আরেকটা এমন অবস্থার কথা চিন্তা করি যেখানে আমরা সৃষ্টিকর্তার কাছে কিছু চাচ্ছি, ধরে নেই, আমাদের একটি চাকরি দরকার এবং আমাদের ইন্টার্ভিউতে ডাকা হয়েছে।  এ অবস্থায় আমরা কি করি? আমরা সৃষ্টিকর্তার  কাছে প্রার্থনা করি! কিন্তু আমাদের প্রার্থনার প্রতি সৃষ্টিকর্তার উত্তরের জন্য ধৈর্য সহকারে অপেক্ষা না করে আমরা পাথরের আংটি কিনে ফেলি – যদি আংটি বা পাথর দ্বারা সৌভাগ্য লাভ হয়ে যায়! অতঃপর একজন হয়ত পীরের কাছে যাওয়ার উপদেশ দেয় অথবা ইন্টার্ভিউ বোর্ডের সদস্যদের সাথে দেখা করার  অথবা কোন ক্ষমতাশালী রাজনৈতিক নেতার সাথে দেখা করার উপদেশ দিতে পারে।  এ অবস্থায় আমরা সঙ্গে সঙ্গে এসব করতে যাই এটা ভেবে যে, যদি যেকোনো কিছুর দ্বারা কাজ হয়ে যায়, অর্থাৎ- সৃষ্টিকর্তা যদি আমাদের প্রার্থনার উত্তর দিয়ে দেন অথবা আংটি কাজ করে অথবা যদি ইন্টার্ভিউ বোর্ডের সদস্য সাহায্য করে অথবা ক্ষমতাশালী রাজনৈতিক নেতা আশাবাদী কথাবার্তা বলেন।  যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা চাকরি পাচ্ছিনা ততক্ষন পর্যন্ত যদি সবকিছুই কাজ করে তাহলে তো বেশ ভালো! আমাদের এই কাজগুলো প্রমাণ করে যে আমরা যুক্তি সহকারে বিশ্বাস করি যে- আংটি, পীর, বোর্ডের সদস্য, রাজনৈতিক নেতা সবকিছুরই সমান ক্ষমতা আছে আমাদের চাকরি দেয়ার ক্ষেত্রে! এটা চিন্তা করে আমরা কি সৃষ্টিকর্তার প্রতি অন্যায় করছিনা? এ সম্পর্কে আল্লাহ্‌ আমাদের কোরআনে বলেছেন যে তিনি শেষ বিচারের দিনে এসব শরীকদের আমাদের সামনে হাজির করে প্রশ্ন করবেন। 
“মুশরিকরা যখন ঐ সব বস্তুকে দেখবে, যেসবকে তারা আল্লাহর সাথে শরীক সাব্যস্ত করেছিল, তখন বলবেঃ হে আমাদের পালনকর্তা এরাই তারা যারা আমাদের শেরেকীর উপাদান, তোমাকে সহ আমরা যাদেরকে ডাকতাম। তখন ওরা তাদেরকে বলবেঃ তোমরা মিথ্যাবাদী।” [১৬:৮৬]
প্রকৃতপক্ষে সৃষ্টিকর্তা একজনই এবং বাস্তবে তিনিই সকল ক্ষমতার অধিকারী অর্থাৎ অন্য কোন সত্তা বা বস্তুর আমাদের উপকার করার কোন ক্ষমতাই নেই।  যখন আমরা ভাবি যে অন্যান্য জিনিসের ক্ষমতা আছে তখন আমরা অবিশ্বাস প্রদর্শন করি এবং সৃষ্টিকর্তার প্রতি অন্যায় করি যিনি আমাদের যা প্রয়োজন সবকিছু দেন। সৃষ্টিকর্তা ন্যায়কারী,  তিনি অন্যায়কারী মানুষের মতো না।  তিনি তাঁদের পুরষ্কার দিবেন যারা তাঁর প্রতি ন্যায় করেছে যেরকম পবিত্র কিতাবসমূহে বলা হয়েছে।  নিচের এই গল্পটি বর্ণনা করে কিভাবে ইউসুফ (আঃ) ন্যায় দাবী করেছিলেন যাতে কারাগার থেকে মুক্ত হওয়ার আগে তাঁর উপর থেকে মিথ্যা অভিযোগগুলো সরে যায় এবং কিভাবে সৃষ্টিকর্তা তাঁকে পুরস্কৃত করলেন।
১২:৫০ “এবং মিশরের বাদশাহ বললেন,”তাঁকে আমার কাছে নিয়ে আসো।” কিন্তু যখন বার্তা বাহক তাঁর কাছে আসলো।  ইউসুফ বললেন “তোমার মালিকের কাছে ফিরে যাও এবং জিজ্ঞাসা কর, “ঐ মহিলাদের মামলার কি হল যারা নিজেদের হাত কেটেছিল?” প্রকৃতই আমার রব তাদের পরিকল্পনা সম্বন্ধে সম্পূর্ণরূপে জানেন।”
কারাগার থেকে মুক্ত হওয়ার আগে ইউসুফ (আঃ) চাইলেন বাদশাহ যাতে তাঁর নির্দোষ হওয়ার ব্যাপারটা ঐ মহিলাদের কাছ থেকে যাচাই করে নেয়। 
১২:৫১ “বাদশাহ মহিলাদের বললেন, “মামলাটি কি ছিল যখন তোমরা ইউসুফকে অশ্লীলতায় অভিযোগ দেখেছিলে?” মহিলারা বাদশাহকে বলল, “আল্লাহ্‌ তালা নিখুঁত (যিনি ইউসুফের মতো নির্মল চরিত্র সৃষ্টি করেছেন)!  তাঁর বিরুদ্ধে কোন খারাপ কিছু আমাদের জানা নেই!”  আযীযের স্ত্রী বলল , “এখন সত্য সামনে এসে গেছে; প্রকৃতপক্ষে আমিই তাঁকে অশ্লীল কাজে লিপ্ত করতে চেয়েছিলাম, সে সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত।”
ইউসুফ (আঃ) এর দীর্ঘ সময় ধরে ধৈর্যসহ কারাবাসের পর আযীযের স্ত্রী শেষপর্যন্ত নিজের দোষ স্বীকার করে নিল।  সে বাদশাহের সামনে ইউসুফ (আঃ) কে সব রকম দোষারোপ থেকে মুক্তি দিলো এবং নিজেকেও তার স্বামীর কাছে এই ব্যাপার নিয়ে সকল রকম সন্দেহ থেকে মুক্ত করতে চাইলো।
১২:৫২ “আযীযের স্ত্রী বলল, “এটা এজন্য বলছি, যাতে আযীয জেনে নেয় যে, আমি গোপনে তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করিনি।  আরও এই যে, আল্লাহ বিশ্বাসঘাতকদের প্রতারণাকে এগুতে দেন না।””
১২:৫৩ “আযীযের স্ত্রী বলল , “আমি নিজেকে (দোষমুক্ত) পাপমুক্ত করছিনা।  নিশ্চয় মানুষের আত্মা মন্দ কর্মের দিকে ঝুঁকে রয়েছে কিন্তু আমার পালনকর্তা যার প্রতি অনুগ্রহ করেন সে এর অন্তর্ভুক্ত নয়।  নিশ্চয় আমার পালনকর্তা ক্ষমাশীল,অসীম দয়ালু।””   
আযীযের স্ত্রী নিজের দোষ স্বীকার করলো যে, সেই ইউসুফ (আঃ) কে অশ্লীল প্ররোচনা  দিয়েছিলো।  যাহোক, যেহেতু আর বেশি কিছু ঘটেনি সে মাফ চেয়ে নিল।  বাদশাহ ইউসুফ (আঃ) এর চরিত্রের প্রতি মুগ্ধ হয়ে গেলেন যে, তিনি শুধুমাত্র ভালো চরিত্রের অধিকারীই নন, তিনি অন্যদের ভিতরকার ভালো সত্তাকে জাগাতেও সক্ষম।  তাই বাদশাহ চাইলেন এই ভালো চরিত্রের মানুষ তার কাজে নিযুক্ত হোক। 
১২:৫৪ “বাদশাহ বললেন, “তাকে আমার কাছে নিয়ে এসো; আমি তাকে আমার নিজের বিশ্বস্ত হিসেবে নিযুক্ত করবো।” অতঃপর যখন বাদশাহ ইউসুফের সাথে মতবিনিময় করল, তখন বললঃ “আপনি নিশ্চিত থাকুন যে আজ থেকে আপনার বিশ্বস্ততা পূর্ণরূপে প্রমানিত হল এবং আপনি বিশ্বস্ত হিসাবে মর্যাদার স্থানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন!”
বাদশাহ শুধুমাত্র ইউসুফ (আঃ) কে সকল রকম মিথ্যা অভিযোগ থেকে মুক্তই করলেন না, আদালতে তিনি তাঁকে একটি দায়িত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দিলেন।  এভাবে ইউসুফ (আঃ)এর ধৈর্য এবং পূর্ণ বিশ্বাসের কারণে আল্লাহ্‌ তাঁকে পুরস্কৃত করলেন।     
১২:৫৫ “ইউসুফ বললেন, “আমাকে দেশের রাজকোষের তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত করুন।  আমি এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ করবো তাঁর মতো যে জানে এগুলোর গুরুত্ব কতটুকু।””
 ১২:৫৬ “এবং এভাবে আমি এই ভূমির উপর আধিপত্য দিয়ে ইউসুফকে প্রতিষ্ঠিত করলাম এবং সে যেখানে চায় তাঁকে সেখানেই নিযুক্ত করলাম। আমি যার উপর খুশি হই তাঁর প্রতি দয়া দেখাই এবং যে ভালো কাজ করে তাঁর প্রতিদান নষ্ট করিনা।”
যেহেতু আল্লাহ্‌ ছাড়া আর কোন ক্ষমতা নেই, এটাই সঠিক এবং ন্যায় কাজ যে নামাজ পড়ার পর আমরা ধৈর্য সহকারে তাঁর দেওয়া সমাধানের জন্য অপেক্ষা করি- এটাই ন্যায়পরায়ণতা।  আমাদের মনে রাখতে হবে যে, যদি আল্লাহ্‌ কোন সমস্যার সমাধান না করেন অথবা উপশম না করেন, আর কেউ সেটা করতে পারবেনা! আমরা যদি নামাজ এবং ধৈর্যের মাধ্যমে আল্লাহ্‌র প্রতি বিশ্বাস প্রদর্শন (সমস্যার ভয় না পেয়ে এবং কল্পনায় বানানো শক্তির পিছে না ছুটে) করতে পারি তবে, আল্লাহ্‌র নেয়ামতের কোন সীমানা নেই।  তাঁর আসল পুরষ্কার শেষ বিচারের দিনের পরই সকলেরই বোধগম্য হবে।
১২:৫৭ “কিন্তু সত্যই পরকালের পুরষ্কারই সর্বোত্তম তাঁদের জন্য যারা আল্লাহ্‌র প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং দৃঢ়তার সাথে ন্যায়পরায়ণ থাকে।”

34
সাধারণ পর্যবেক্ষণে দেখা যায় যে মানুষ একটি আবেগপূর্ণ সত্তা। আমাদের আবেগপ্রবন চিন্তায় যদি যুক্তির ভিত্তি না থাকে, তবে আমরা কি সমস্যায় পড়তে পারি? প্রশ্ন করছেন ডঃ ইউসুফ মাহাবুবুল ইসলাম।
এটা প্রায়শই বলা হয় যে মানুষ আবেগতাড়িত প্রাণী। এটা কি সত্যি? বিজ্ঞানীরা অবশ্য সেটাই মনে করেন। আমাদের মস্তিস্কে একটি অংশ আছে যেখানে আবেগ তৈরি হয়। স্নায়ুবৈজ্ঞানিক দামাসিও এটি আবিষ্কার করেছেন যে, ঐসব মানুষ যাদের মস্তিস্কের এই অংশে ক্ষতি হয়েছে তাদের সিদ্ধান্ত নিতে কষ্ট হয়। - এমনকি সিদ্ধান্তটা খুব সহজ হলেও।  এই ধরণের চিন্তার সমর্থনে, আমেরিকান লেখক কার্নেগী (১৮৮৮-১৯৫৫) বলেছিলেন,
“মানুষের সাথে লেনদেন করার সময় মনে রাখবে যে, তুমি যুক্তিবাদী প্রাণীর সাথে লেনদেন করছোনা তুমি আবেগতাড়িত প্রাণীর সাথে লেনদেন করছো।”
যদিও আবেগ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে মূল একটি ভূমিকা পালন করে তবুও সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় কিছু যুক্তিসম্পন্ন চিন্তা অন্তর্ভুক্ত করা দরকার, তা না হলে যখন আবেগ ফুরিয়ে যায়, ভরসা হিসাবে আর কিছুই থাকেনা –মানুষ চিন্তায় পড়ে যেতে পারে যে শুরুতে ঐ সিদ্ধান্তটা কি কারণে নেয়া হয়েছিল।  এটাও মনে রাখতে হবে যে যুক্তিহীন আবেগ পরিবর্তনশীল।   
 মানব চরিত্রের এই অবস্থা বুঝার পর, উদাহরণস্বরূপ এটাও বুঝা দরকার যে আদালতের সিদ্ধান্ত আবেগ বা অনুভূতি দিয়ে নেওয়া যায়না; কারণ আবেগপূর্ণ চিন্তার উপর ভিত্তি করে আদালতের সিদ্ধান্ত হতে পারেনা।  সিদ্ধান্ত নিতে হবে যুক্তির উপর ভিত্তি করে।  যুক্তি-প্রয়োগ হচ্ছে প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে একটি  সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার প্রক্রিয়া।  আদালতের আইনে,একবার যখন যুক্তি প্রয়োগ করে সাক্ষ্য প্রমাণের উপর ভিত্তি করে একটি মামলা উপস্থাপন করা হয়ে যায়, রায় ঘোষণা দেওয়ার সময় সেখানে আবেগ থাকতে পারে। 
তাই, সুস্থ সিদ্ধান্তে অবশ্যই যুক্তি অন্তর্ভুক্ত থাকবে যেটা ফলপ্রসূ করার সময় অনুভুতির আশ্রয় নেওয়া যেতে পারে।  উপরোক্ত আলোচনায় আমরা জানলাম যে, মানুষ কিভাবে চিন্তা করে; এখন পবিত্র কুরআন থেকে নবী ইউসুফ (আঃ) এর গল্পের একটি অংশ পর্যবেক্ষণ করা যাক।  আমরা গল্পের ঐ অংশ উল্লেখ করছি যেখানে ইউসুফ (আঃ) সৃষ্টিকর্তার অনুপ্রেরণায় তাঁর নিজ ভাই বেনইয়ামিনের জন্য পরিকল্পনা করলেন যে কিভাবে তাঁকে নিজের সাথে রাখা যায়।  নিচের গল্পে কে কি ধরণের চিন্তা করলো তা পরীক্ষা করা যাক, অর্থাৎ ইউসুফ (আঃ) ও তাঁর বৈমাত্রেয় ভাইদের নেওয়া সিদ্ধান্ত আবেগপূর্ণ ছিল, নাকি যুক্তিযুক্ত? যখন শাস্তির ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হল, তারা নিজেদেরকে সৎ ও ন্যায়পরায়ন দেখানোর জন্য অহংকার ও আবেগে পরিপূর্ণ এক উত্তর দিলো, এতে তাদের যেকোন ভাই যে বিপদে পড়তে পারে, এটা সম্পর্কে কোন চিন্তাই করলোনা।   
“তারা(ভাইরা) বললঃ এর শাস্তি এই যে, যার মালামাল থেকে মাপন পাত্র পাওয়া যাবে, শাস্তিস্বরূপ সে দাসত্বে যাবে। আমরা অন্যায়কারীদের এভাবেই শাস্তি দিয়ে থাকি।” [১২.৭৫]
ইউসুফ ১০ জন বৈমাত্রেয় ভাইদের ব্যাগ অনুসন্ধান করলেন এবং শেষে বেনইয়ামিনের ঘোড়ার সাথে আটকানো ব্যাগ অনুসন্ধান করলেন। 
১২.৭৬ “অতঃপর ইউসুফ তাদের(বৈমাত্রেয় ভাইদের) ব্যাগ অনুসন্ধান শুরু করলেন আপন ভাই বেনইয়ামিনের ব্যাগ অনুসন্ধানের পূর্বে।  অবশেষে সেই মাপন পাত্র আপন ভাইয়ের ব্যাগের মধ্য থেকে বের করলেন। এমনিভাবে আমি ইউসুফের জন্য পরিকল্পনা করেছিলাম।  সে বাদশাহর আইনে আপন ভাইকে কখনও সাথে রাখতে পারত না,  আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতীত।  আমি যাকে ইচ্ছা (জ্ঞানে) উন্নীত করি এবং প্রত্যেক জ্ঞানীর উপরে আছেন সর্বজ্ঞানী একজন।” 
আল্লাহ্‌র অনুপ্রেরণায় ইউসুফ (আঃ) তাঁর ভাই বেনইয়ামিনের ব্যাগে মাপন পাত্র গোপনে রেখেছিলেন যাতে সেই অজুহাতে আপন ভাইকে নিজের সাথে রেখে দিতে পারেন। বেনইয়ামিনের উপর দয়া দেখাতে গিয়ে তিনি এ কাজ করেছিলেন।  এখানে চিন্তার প্রক্রিয়া ছিল যুক্তিসম্পন্ন - কিভাবে বেনইয়ামিনকে তাঁর বৈমাত্রেয় ভাইদের থেকে রক্ষা করা যায় - সৃষ্টিকর্তা হযরত ইউসুফ (আঃ) কে এই পরিকল্পনা  দিলেন।
১২.৭৭ “তারা বলতে লাগলঃ “যদি সে চুরি করে থাকে - তবে তার আরেক আপন ভাইও ইতিপূর্বে চুরি করেছিল।” তখন ইউসুফ প্রকৃত ব্যাপার নিজের মনে গোপন করে রাখলেন এবং তাদেরকে জানালেন না।  তিনি মনে মনে বললেনঃ “তোমরা এই ব্যাপারে মন্দ ব্যাখ্যা করছো এবং আল্লাহ এই সম্বন্ধে সম্পূর্ণ জ্ঞান রাখেন যা তোমরা বর্ণনা করছ!””
ভাইদের আবেগের তাৎক্ষনিক পরিবর্তন লক্ষ্য করে দেখুন।  মাপন পাত্রটা বেনইয়ামিনের ব্যাগ থেকে বের করতে দেখে ভাইরা আবেগের বশবর্তী হয়ে বেনইয়ামিনের আপন মায়ের উপর দোষারোপ আরম্ভ করলো – বলল, বেনইয়ামিনের আপন ভাইও ইতিপূর্বে চুরি করেছে!  অপরপক্ষে ইউসুফ (আঃ) আবেগতাড়িত হয়ে বৈমাত্রেয় ভাইদের এই নিষ্ঠুর মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে উদ্যত হলেন না।  তিনি যুক্তি দিয়ে চিন্তা করলেন যে আল্লাহ্‌ তো সব গোপন কথাই জানেন; তাই ভাবলেন যে, আবেগের আশ্রয় নিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনে ভাইদের কথার উত্তর দেওয়ার দরকার নেই।   
১২.৭৮ “তারা বলতে লাগলঃ “হে আযীয(ইউসুফের দিকে সম্বোধন করে যিনি এখন এই পদে অধিষ্ঠিত), তার পিতা আছেন, যিনি খুবই বৃদ্ধ (যিনি ছেলের জন্য দুঃখ করবেন), সুতরাং আপনি আমাদের একজনকে তার বদলে রেখে দিন; আমরা আপনাকে অনুগ্রহশীল ব্যক্তিদের একজন হিসেবে জানি।””
আবেগের আশ্রয় নিয়ে ভাইকে দোষারোপ করার পর বৈমাত্রেয় ভাইরা তাদের পিতাকে দেওয়া প্রতিশ্রুতির কথা স্মরণ করলো-যে ঘটনাটি ছিল যুক্তিযুক্ত। 
এখন তারা ইউসুফ (আঃ) কে মানবীয় দিক থেকে(আবেগের অংশে) আবেদন করলো যে- আমরা জানি যে আপনি অনুগ্রহশীল ব্যক্তি।
১২.৭৯ “তিনি বললেনঃ “যার কাছে আমরা আমাদের চুরি যাওয়া জিনিস পেয়েছি, তাকে ছাড়া আর কাউকে গ্রেফতার করা আল্লাহর বিধান পরিপন্থী।  (যদি এটা করি) তাহলে তো আমরা নিশ্চয়ই অন্যায়কারী হয়ে যাব।”” 
কিভাবে একজন ব্যক্তিকে অন্য কারো অপরাধের জন্য দণ্ডিত করা যাবে? – ইউসুফ(আঃ) যুক্তির সঙ্গে উত্তর দিলেন।  ১০ ভাই এর আবেদন ইউসুফ (আঃ) এর দেওয়া যুক্তির মোকাবেলায় টিকতে পারলোনা।
১২.৮০ “অতঃপর যখন তারা নিরাশ হয়ে গেল,  তখন তারা আড়ালে পরামর্শ করলো।  তাদের জ্যেষ্ঠ ভাই বললঃ তোমরা কি জানোনা যে, পিতা তোমাদের কাছ থেকে আল্লাহর নামে অঙ্গীকার নিয়েছেন এবং পূর্বে ইউসুফের ব্যাপারেও তোমরা অন্যায় করেছো?  অতএব, আমি তো কিছুতেই এদেশ ত্যাগ করব না, যে পর্যন্ত না পিতা আমাকে আদেশ দেন অথবা আল্লাহ আমার পক্ষে কোন ব্যবস্থা করে দেন-তিনিই সর্বোত্তম বিচারক।”
অনেক বছর আগে করা একই ধরণের অপরাধের পুনরাবৃত্তি হবে এটা ভাইদের মধ্যে জ্যেষ্ঠ ভাই আর সহ্য করতে পারেনি।  এখানে যে তর্কবিতর্ক উপস্থাপিত হয়েছে তা যুক্তিসম্মত - তারা শপথ নিয়েছিল যে তারা বেনইয়ামিনের কোন ক্ষতি হতে দিবেনা।
১২.৮১ “তোমরা তোমাদের পিতার কাছে ফিরে যাও এবং বলঃ “হে পিতা! প্রকৃতই আপনার ছেলে চুরি করেছে, আমরা তার সাক্ষ্য দিচ্ছি যা আমরা জানি এবং আমরা তো অদৃষ্টকে বাধা দিতে পারিনা!””  যেহেতু তারা নির্ণয় করতে পারলো না যে, বেনইয়ামিনের এর ব্যাগে কিভাবে মাপন পাত্র পাওয়া গেলো ; তাই তাদেরকে এটাই সত্য বলে মেনে নিতে হল যে, বেনইয়ামিন চুরি করেছে।  পিতার সামনে অন্যদের সাক্ষী হিসাবে এনে বলল যে-   
১২.৮২ “জিজ্ঞেস করুন ঐ জনপদের লোকদেরকে যেখানে আমরা ছিলাম এবং ঐ কাফেলাদের যাদের সাথে আমরা এসেছি। তাহলে আপনি নিশ্চিত হবেন যে, আমরা সত্য বলছি।”
এখন বাবাকে সন্তুষ্ট করার জন্য, ভাইরা চাইলো যে - বেনইয়ামিন প্রকৃতপক্ষেই চুরি করেছে; তাদের এ দাবির সমর্থনে অন্যরা তাদের পিতার সামনে যুক্তি আর প্রমাণ উপস্থাপন করুক।  গল্প জুড়ে আমরা দেখতে পাই যে, ভাইরা তাদের এলোপাথাড়ি আবেগ ব্যবহার করে চিন্তা করার কারণে কিভাবে সমস্যায় পড়ে।  তবে দেখা যাচ্ছে যে, এপর্যন্ত ইউসুফ (আঃ) এর চিন্তাই ছিল সবচেয়ে যৌক্তিক কারণ আল্লাহর প্রতি তাঁর ভরসা ছিল সর্বাধিক।

36
Quran / Tafseer Ayatul Kursi Part 1 - Nouman Ali Khan
« on: April 23, 2017, 12:44:12 AM »

39
Our Call, Allah’s (swt) Response

When reciting the opening of the book of Allah, we acknowledge the gifts of the lord of the people on us by giving thanks to Him: Al hamdulAllah, ar Rab al ‘lameen.

But more importantly, when we recite that ayah of the surah, Allah repeats, My servant has praised Me (Hadith Qudsi 8). It is the opening of our five daily conversations with the One who created all.

link:http://understandquran.com/why-you-must-understand-surah-al-fatiha-by-marie-matney.html

40
Software Engineering / What do we want from God?
« on: April 21, 2017, 02:04:45 PM »
Article appeared Friday, April 21st, 2017 in The News Today, Bangladesh
The Revelation (473)               yousuf mahbubul Islam, PhD

In places of worship all around the world, at other places during prayers, also while standing, walking, and sitting or lying on our sides how often do we ask God for something? Even, those who lead congregational prayers sometimes break into tears while asking. What is it that we ask for?

Before or while asking do we take stock of what God has already given us in the intelligent life that we are leading? Have we ever asked ourselves why He has given so many blessings? In fact, do we use God like we would a special medicine – medication that we take whenever we have a problem or need/want something? How many people thank the medicine when cured? Indeed, how many of us are grateful to God for the opportunity of intelligent life and the blessings that He has already given?

What is the situation we have here? We continually ask for things, yet we are not grateful for what we have or what we get? Should we analyse what this implies regarding the comparative perception we have of ourselves verses God? To help with the analysis, let us ask some further questions while looking at similar situations. For example, for household goods, manufacturers act as suppliers of furniture, ovens, fridges, washing machines, utensils, crockery, etc. Are the goods free? We not only have to pay, we give value and show respect to good manufacturers by referring them to neighbours, relatives and friends.

So in the case of home goods, the suppliers are valued and respected. This we do, in addition, after having paid them good money. In contrast, why/when do we approach God? Do we approach Him for things that other suppliers cannot provide? For example, do we ask for success in exams, for a safe flight in stormy weather, for safe delivery from a sinking ship, etc.? When God supplies what clearly only He can do, with exam success and safe delivery home on dry land how do we respond? Do we return the favour by praising and thanking Him? Do we, in turn, refer Him to others relating how He gave success or how He saved us using the most unexpected means? If we do not, why not? As an all powerful Supplier, does He not deserve at least the minimum courtesy we show our other suppliers?

At this point, we need to analyse our thought processes carefully and logically. We can do this by asking ourselves the following questions. The first question is do we shy away from thanking Him? If we do, why? On the one hand we proudly discuss the qualities of a brand manufacturer, yet on the other hand we shy away from discussing the all powerful qualities of God, especially when He has done us a clear favour? Does our ego get in the way – would we feel small or subservient? Or would we be afraid of being called “old-fashioned”?

On the contrary, should we feel honored that God has not only listened, He has given us importance by responding to the prayer and granting the favour – a favour that only He can grant? If we ignore Him in return, an important question to consider is how should God look upon our ignoring His Indulgence? If we deny Him the value and respect that is due rightfully to Him, could we be classified as disrespectful, unjust, arrogant, ungrateful or simply be demonstrating disbelief? To help understand human nature and the role of our egos, we need to relate the following practical situation to our life, as relayed by God in the Holy Qur’an.

18.32 “And present to them an example of two men: for one of them We granted two gardens of grapevines and We bordered them with date-palms. In between the two gardens We placed corn-fields.”
What does the human ego say when blessed with so much? As additional blessings,

18.33 “Each of those gardens abundantly produced its fruit and failed not in the least. Between the two gardens We caused a river to flow.”
Why – for the convenience of watering? Being so blessed, his ego took over,

18.34 “As he enjoyed the fruit of his blessings, he said to his companion in the course of a mutual argument, "I am greater than you in wealth, have more honor and power in (my following among) men."”
By letting loose his ego, did he prove his ingratitude towards the Giver of his blessings?

18.35 “He went into his garden in a state (of mind) unjust to his soul; He said (to himself), "I feel not that this will ever perish.”
Instead of working out the source of blessings, he felt like the lord of the blessings! Did he feel that he deserved everything he had, given his feelings of greatness?

18.36 “I do not think that the Hour (of Judgment) will (ever) come. Even if I am brought back to my Lord I shall surely find (there) something better in exchange.”
God gave him a companion to help him understand his nature (as another blessing?)

18.37 “His companion said to him in the course of the argument with him: "Do you deny Him Who created you out of dust then out of a sperm-drop then fashioned you into a man (and gave you all these blessings)?”

18.38 “As for me, He is God, my Lord and none shall I associate with my Lord.”
By denying God, the blessed friend had, in effect, raised himself to the level of God. Even when comparing himself with his friend, he did not recognize the special favors given by God.

18.39 “Why did you not, as you entered your garden say, “Allah has willed these blessings! There is no power except with Allah!”? Although when you compare me you find me less in wealth and sons.”

18.40 “It may be that my Lord will give me something better than your garden and that He will send on your garden thunderbolts (to jog your understanding) from heaven making it (but) slippery mud!”
We should fear God as He may do anything to jolt our understanding – He may even withdraw His blessings.

18.41 “Or the rivers of the garden will disappear so that you will never be able to find water.”

18.42 “So his fruits (and enjoyment) were encompassed (with ruin) and he remained twisting and turning his hands over what he had spent on his property which had (now) tumbled to pieces to its very foundations and he could only say, "Woe is me, I wish I had never associated partners to my Lord and Cherisher!"”

18.43 “Nor had he any power to help himself against God nor was he able to deliver himself.”
Who had he equated as a partner with God and what was the result? Are there any lessons for us?







Link:https://www.scribd.com/document/345753956/What-do-we-want-from-God

41
Software Engineering / Why You Should Read Books You Hate
« on: April 21, 2017, 09:22:47 AM »
But reading what you hate helps you refine what it is you value, whether it’s a style, a story line or an argument. Because books are long-form, they require more of the writer and the reader than a talk show or Facebook link. You can finish watching a movie in two hours and forget about it; not so a novel. Sticking it out for 300 pages means immersing yourself in another person’s world and discovering how it feels. That’s part of what makes books you despise so hard to dismiss. Rather than toss the book aside, turn to the next page and wrestle with its ideas. What about them makes you so uncomfortable?
https://getpocket.com/a/read/1704875597

42
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট কর্তৃক আয়োজিত হতে যাচ্ছে একটি ইন্টার ইউনিভার্সিটি অ্যাপ কন্টেস্ট, ডি.আই.ইউ অ্যাপ কন্টেস্ট। আগামী মে মাসের ১৯ এবং ২০ তারিখ দীর্ঘ ২৪ ঘন্টা সময়কালের এই কন্টেস্টে সমগ্র বাংলাদেশের বিভিন্ন পাবলিক এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ছাত্র-ছাত্রীরা অংশগ্রহণ করতে পারবে। এই কন্টেস্টের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, একটি অ্যাপ্লিকেশন কিভাবে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে সম্পৃক্ত বিভিন্ন সমস্যার সমাধান ঘটাতে সক্ষম এবং সেই ক্ষেত্রে সৃজনশীলতা কি করে একটি সহজ সমাধানের পথ তৈরি করে থাকে। তাহলে বুঝাই যাচ্ছে, কন্টেস্টের মাধ্যমে কিছু ভালো সমাধানের পাশাপাশি নিজ নিজ ক্ষেত্রে সৃজনশীলতার প্রকাশটাও কাম্য।
https://www.facebook.com/DIUAppContest/

43
Software Engineering / What Is Google Hummingbird?
« on: April 21, 2017, 08:18:36 AM »
“Hummingbird” is the name of the new search platform that Google is using as of September 2013, the name comes from being “precise and fast” and is designed to better focus on the meaning behind the words.Hummingbird is paying more attention to each word in a query, ensuring that the whole query — the whole sentence or conversation or meaning — is taken into account, rather than particular words. The goal is that pages matching the meaning do better, rather than pages matching just a few words.
http://searchengineland.com/library/google/hummingbird-google

44
It's currently only available on Chrome and Android, but Google says its latest version of Google Earth will soon roll out on iOS and other browsers.
Google launched a new Google Earth for the web and on Android today, complete with interactive guided tours, 3D images and a new “I’m feeling lucky” feature.

For its newest version of Google Earth, Google partnered with storytellers, scientists and nonprofit organizations to create Voyager, a showcase of interactive guided tours.

Right now, the site has more than 50 tours via Voyager, and Google says it is adding more on a weekly basis. The announcement on the Google Earth Blog listed a sampling of the tours currently available:

    Start with Natural Treasures from BBC Earth, and journey to six habitats — from islands to mountains to jungles — and learn about the unique and thrilling wildlife in each. Then head to Gombe National Park in Tanzania and hear from Jane Goodall about her team’s chimpanzee research and conservation efforts.

The new Google Earth also includes an “I’m feeling lucky” button that will randomly surface an image and information for 20,000 different locations curated by the Google Earth team.
http://searchengineland.com/new-google-earth-delivers-guided-tours-3d-images-im-feeling-lucky-feature-273344

45
Yes We should not intake vitamin more than necessity..Indeed

Pages: 1 2 [3] 4 5 ... 9