Daffodil International University

Entertainment & Discussions => Sports Zone => Table Tennis => Topic started by: Mohammed Abu Faysal on October 14, 2012, 12:26:00 PM

Title: উপেক্ষিতই থাকবে নড়াইলের টিটি?
Post by: Mohammed Abu Faysal on October 14, 2012, 12:26:00 PM
নড়াইলকে বলা হয় দেশের টেবিল টেনিসের (টিটি) সূতিকাগার। অথচ জেলার টেবিল টেনিস একরকম বঞ্চনার শিকার। লিখেছেন কার্ত্তিক দাস

৬০ বাই ১৮ ফুট। জরাজীর্ণ টিনের ঘর। নড়াইল পৌরসভার পুকুরপাড়ের এই ঘর দেখে কে বলবে, এটাই বাংলাদেশের টেবিল টেনিসের একটি উজ্জ্বল অধ্যায়ের সূতিকাগার! মোস্তফা বিল্লাহ, মাহবুব বিল্লাহ, এডিসন, গৌতম, পাপ্পু, সালেহা, রুমি ও মিশুর মতো দেশের টিটি অঙ্গনের নামী খেলোয়াড়েরা এই নড়াইলেরই সন্তান। সবার টেবিল টেনিসে দীক্ষা এই ঘরেই। বছরের পর বছর জাতীয় টিটি দলের খেলোয়াড় জোগান দিয়ে চলেছে যে নড়াইল, তার মূলে আছে মরচে পড়া টিনের এই ঘর। এটাই নড়াইল টেবিল টেনিসের একমাত্র সম্বল।
সত্তরের দশকে সেই সময়ের নড়াইল মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিমের হাত ধরে নড়াইলে টেবিল টেনিসের গোড়াপত্তন। পরে আরও অনেকের সহযোগিতায় সেটি ডালপালা ছড়িয়েছে। তারই ফল ভোগ করছে দেশের টেবিল টেনিস; কিন্তু নড়াইল টিটির প্রাণকেন্দ্র টিনের ঘরটি জীর্ণ থেকে জীর্ণতরই হয়েছে।
প্রায় সারা বছরই এখানে অনুশীলন চলে। খেলোয়াড়ের সংখ্যা বেড়েছে; এ তুলনায় বাড়েনি সুযোগ-সুবিধা। অনুশীলনের জন্য দুটি মাত্র টেবিল। পালাক্রমে অনুশীলন করতে হয় টিটি খেলোয়াড়দের। বিচ্ছু থেকে পিঁপড়া, আরশোলা থেকে টিকটিকি, ভ্যাপসা গরম থেকে ঘামস্নান—এসবের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয় এখানে অনুশীলন করতে আসা নবীন শিক্ষার্থীদের। যে ঘরে সারা বছরই অনুশীলন চলে, সেটিতে দীর্ঘদিন বিদ্যুতের সংযোগ নেই। পুকুরপাড় ভাঙনের কবলে পড়ায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে ঘরটি। অনুশীলনের জন্য প্রয়োজনীয় যেসব সুযোগ-সুবিধা থাকা প্রয়োজন, বলতে গেলে তার কিছুই নেই। অর্থসংকটে ভুগতে থাকা জেলা ক্রীড়া সংস্থার যৎসামান্য সহযোগিতা এবং টিটির জাতীয় তারকাদের ঐকান্তিক চেষ্টায় চলে অনুশীলন। টেবিল টেনিসের বড় কর্মকর্তাসহ নামীদামি অনেকেই এখানকার পরিবেশ দেখে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সেই প্রতিশ্রুতিও আলোর মুখ দেখেনি; কিন্তু আর কত দিন?
অনাদর-অবহেলা, অনুশীলনের জীর্ণশীর্ণ ঘর, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং মিথ্যা প্রতিশ্রুতি-আশ্বাস নিয়ে আর কত দিন চলবে নড়াইল টিটির এই প্রাণকেন্দ্র? এ অবস্থা চলতে থাকলে কি আর জাতীয় টিটিতে মানসম্পন্ন খেলোয়াড়ের অন্তহীন প্রবাহ ধরে রাখতে পারবে নড়াইল? এ প্রশ্ন আজ বড় হয়ে উঠেছে। স্থানীয় খেলোয়াড়দের দাবি খুব সামান্য—অনুশীলন করার মতো একটি ঘর কিংবা জিমনেশিয়াম।
নড়াইল থেকে উঠে আসা জাতীয় টিটি-তারকাদের ক্ষোভ, ‘আমরা ছোট শহর নড়াইল থেকে উঠে এসে জাতীয় পর্যায়ে নেতৃত্ব দিচ্ছি। যে পরিবেশে নড়াইলের ছেলেমেয়েরা অনুশীলন করে, তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করার উপায় নেই। অনেকেই সাহায্য-সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন; কিন্তু কেউ কথা রাখেননি।’
জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও ভলিবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান ক্রীড়া সংস্থার আর্থিক দৈন্যের কথা স্বীকার করে বলেছেন, টিটি-ঘরের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের জন্য তহবিল সংগ্রহ করা হচ্ছে। ব্যক্তিগত উদ্যোগে বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে সাড়াও পাওয়া গেছে। তা দিয়ে সম্প্রসারণের কাজও শুরু করা হয়েছে।
সবচেয়ে বড় সহযোগিতা দরকার ফেডারেশনের। নড়াইলকে দেশের টেবিল টেনিসের সূতিকাগার বলা হলেও এদিকে টিটি ফেডারেশনের তাকানোর সময় নেই। নড়াইল টিটির উন্নয়নে টিটি ফেডারেশনের এ পর্যন্ত খরচ মাত্র ২৫ হাজার টাকা! বিষয়টি নিয়ে একটু কি ভাবার সময় হবে টিটি ফেডারেশনের?