Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Topics - Mohammad Nazrul Islam

Pages: 1 ... 7 8 [9] 10 11 12
121
দায়মুক্তিতেই জীবনের স্বার্থকতা। বস্তুবাদী পৃথিবীতে সৃষ্টির দায়মুক্তি পরমার্থীকতায়। আর মানবের দায়মুক্তি সৃষ্টি জগতের কল্যাণে। তাই সনাতন ধর্মে বলা হয়-‘সর্ব মঙ্গল; মঙ্গলও শিবে--।

সার্বজনীন সত্য যে, জন্মের কারণ ও বিনাশ সৃষ্টিকূলকে সার্বক্ষনীক ভাবায় । অথচ এই ভাবনার উৎস সৃষ্টকূ’লের অজানা। এর বৈজ্ঞানিক বাখ্যা অনুমান নির্ভর। আবার ধর্মীয় বাখ্যা আত্ম-তৃপ্তির অন্বেষা। এই  সর্ম্পকে পবিত্র কুরআনের বাখ্যা সার্বজনীন। কারণ কুরআনে মানুষকে তথা সৃষ্টিকূলকে ‘আত্ম-সমর্পন করতে বলা হয়েছে। আর ধর্মকে উল্লেখ করা হয়েছে শান্তির অন্বেষা হিসাবে।

বর্তমান বিশ্ব বিবাদ-বিভাজন, ও শ্রেনী বৈষ্যমের চারণ ভূমিতে পরিনত হতে চলেছে। মানুষ-মানুষে, তো বটেই; ধর্মে-ধর্মে, ধনে-জনে, জাতিতে-জাতিতে, রাষ্ট্রে-রাষ্ট্রে, সমাজ-সমাজে কিম্বা পরিবার-পরিবারে এই বৈষম্য চরম আকার ধারন করে চলেছে। যা আত্ম-অশান্তির মূল কারণ। অথচ, শ্রষ্ঠার দান সর্বভোগ্য, সমতায় স্থীতি।

-কবি নজরুল  তার ফরিয়াদ কবিতায় বলেছেন- ‘সু-স্নিগ্ধ মাটি, সুধাসম জল, পাখির কন্ঠে গান, সকলের এতে সম-অধিকার এই তার ফরমান-ভগবান, ভগবান. ভগবান।।

সভ্যতার আদি লগ্নকে ‘মাৎস্যের ন্যায়’ বলে হতো। সব্যতার উন্নতির এতো দিনেও এই  বর্বর ধারনা  মানুষের মন হতে মুছে যায়নি। ‘দুর্বলের প্রতি সবলের আক্রমন, আধিপত্য প্রতিষ্ঠা এই কুপ্রবৃত্তি থেকে মানুষ আজ বেরিয়ে আসতে পারেনি। বর্তমান সভ্যতার স্বর্ণযুগেও এই ধারনা সু-কৌশলে দিদিব্যমান।

বলা যায়, হাজার বছরের গবেষণা ও মানবিক আত্ম-উপলব্ধি, জ্ঞান-অন্বেষার কষর্ণ সীমা রেখায় আবদ্ধ হতে চলেছে। এ যুগেও সবল দুর্বলকে শোষন করে আনন্দ পায়, মালিক-কর্মচারীকে, পুরোহিত ধর্মকে-জাতি-গোত্রকে, কিম্বা রাষ্ট্র প্রজাবর্গকে।

অধাকথিত, শিক্ষিতরা অনেকাংশেই অর্থলোভী। ভুলতার রস আরোহণে চামচামী কিম্বা চাটুকারী করে নিজ নিজ প্রতিভা প্রকাশে ব্যস্ত। ভীতু কাপুরুষ সূচক জীবনকে  আক্রিয়ে ধরে শিক্ষার অবমূল্যয়ণ করছে। এদের সভ্য বলার অর্থ অসভ্যতাকেই পুরস্কৃত করার নয় কি??। সার্বজনীন বাখ্যায়ঃ কড়ি নড়ে তো, আমি নড়ি ভাবনা।

আজ বিশ্বের ধরীবাজ-অনৈতিক রাষ্ট্র গুলো পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ । স্বার্থপর-বেঈমান, ভন্ড-প্রতারকরা সমাজ-রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রকর্তা।  অসী বড় না মসী বড় সেই প্রশ্নে জাতি দিশে হারা। তাহলে হাজার বছরের গবেষণার অর্থ কি? জন্মের স্বার্থকতাই বা কি? দায়মুক্তির উপায় কোথায়? সভ্য-সভ্যতার সংজ্ঞা কি? সত্য মিথ্যা কাকে বলে? জীবনের অর্থ কি??

122
যুগ যুগ ধরে বিজ্ঞান ও ধর্মীয় দ্বন্দ মানব সমাজকে একে অপরের প্রতি, প্রতিহিংসা পরায়ণ ও নৃশংস করে তুলেছে। মায়াবী দুনিয়ার সমাজনীতি, রাজনীতি কিম্বা অর্থনৈতিক প্রতিটি ক্ষেত্রেই ধর্মীয় ‘উস্কানী’ বিশেষ ভূমিকা রেখে চলেছে। মানুষ জন্মগত ভাবেই ‘ভাব-সত্যে বিশ্বাসী’। এই সত্যকে আবিস্কারে মানুষ দিন-কে দিন নানা অভিমত বাখ্যা করে চলেছে যাকে তারা ‘ধর্মীয় বানী’ বলে প্রচার করছে। ফলে এই অভিমত বা ধর্মীয় বানীর অনুকূলে গড়ে উঠছে ভিন্ন ভিন্ন জাতি-গোষ্ঠি; যারা এক অপরের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দাবি করে নানা প্রকার বিভ্রান্তিমূলক আচার-আচরনে প্রবৃত্ত রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ধর্মীয় সংজ্ঞা সমদ্ধে একটু আলোচনার দাবি রাখে। যুগ যুগ বিশ্লেষনে, ধর্মীয় সংজ্ঞা বলা হয়েছে ‘আত্মায় সত্যের আসন প্রতিষ্ঠা করাই ধর্ম। মহাকবি মাওলানা রুমী তার কবিতায় ধর্মের বাখ্যা করেছেন এই ভাবে ‘মানুষের মধ্যে দেবত্ব-পশুত্ব দু‘টুই রয়েছে, যদি পশুত্বকে দূর করতে পার, তবে দেবত্বকেও অতিক্রম করতে পারবে। আবার অনেকে বলেছেন ‘শয়তানের উপর জয়যুক্ত হওয়া-ই মনুষ্যত্বের শ্রেষ্ঠ ধর্ম। অথবা ‘সত্যের উপর যে প্রাণবন্ত ঝংকার, মানুষের আপন আত্মায় অনুভূত হয় তাই -ধর্ম। ‘বিশ্ব-মানব’ ধর্মেরই মূলমন্ত্র।

প্রশ্ন আসতে পারে সত্য কি? আদি-অনন্তে শ্রষ্ঠা নিজেই গুপ্ত বলে পবিত্র কুর-আনে তাকে ‘আলিমুল গায়েব’ বলা হয়েছে। মানুষ সৃষ্টির মাধ্যমে স্রষ্ঠার আত্ম -প্রকাশ ঘটেছে । কাজেই মহান প্রভুর শ্রেষ্ঠর সৃষ্টি মানুষ-ই সত্য। তাই কবি বলেছেন ‘সবার উপরে মানূষ সত্য তাহার উপরে নাই’।

যদি মানুষকে সত্য জ্ঞান করা হয় তবে মানব জীবনের মূলমন্ত্র ভালবাসা প্রেম-ভক্তি। বুদ্ধদের মতে ‘জীবে দয়া করে যে জন, সে‘জন সেবিছে ঈশ্বর’। কাজেই বলা যায় বৃহত্তর ধারনাকে মনের ভিতর পুঞ্জিভূত করে একাগ্র চিত্তে তাকে পাবার বাসনাই ‘প্রাথর্না। এই প্রার্থনার মূলমন্ত্র হল ভালবাসা বা প্রেম-ভক্তি।

সৃষ্টির সার তত্ত্ব প্রেম বা ভালবাসায় আড়ষ্ট। সৃষ্ঠির গুণেই জীবে-ভালবাসা ‘শ্রষ্ঠার আরাধ্য’। জীবন লয়ের ধারায় বয়োঃ সন্ধিক্ষনে জীবের ভালবাসার প্রেম-ভক্তির রুপ পরিবর্তিত হয়। শ্রষ্টার প্রতি জীবের আদি ভালবাসা, জন্মের পর চলন্ত ভালবাসা, যৌবনে আসক্তির ভালবাসা, মৃত্যুতে অনন্ত ভালবাসা জীবনকে কাদাঁয়। শ্রষ্ঠা আর সৃষ্ঠির দূরত্ব সৃষ্ঠিকারী ‘আসক্তি নামক ভালবাসা মানুষকে পরমার্থিক মুক্তিতে বাধাঁর সৃষ্ঠি করে। এই বাধাঁ অতিক্রম করাই প্রতিটি মানুষের কতর্ব্য। আবার এ কথা সত্য যে, আসক্তিমূলক ভালবাসা না থাকলে দুনিয়ায় ‘মানব বাগান’ সৃষ্টি হতো না। তাই বলা হয় প্রত্যেকটি ভালবাসার ধাপ পরিক্রমায়  আল্লাহর অস্তিত্ব নিহিত।

কাজেই বলা যায় বিশুদ্ধ চিত্তে ভালবাসা বা প্রেম-ভক্তিতেই মানুষের মুক্তি। যেহেতু প্রত্যেকটি জীবনে-ই শ্রষ্ঠার অস্তিত্ব। তাই জীব শ্রষ্ঠারই অংশ বিশেষ। তাই বলা হয় ‘নৈঃবস্ব্য লীলা চারণ। এই ধরা জীব আত্মা আর পরম আত্মার লীলাভূমি। নিদিষ্ট সময় শেষে জীব আত্মা পরমে বিলিন হয়ে চরম সত্যে পৌছিয়ে যাবে। ফলে একা নিরাঞ্জন শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করবে। জীবন-মৃত্যু-প্রেম-ভালবাসা এই ধরা পরিচালনার তন্ত্রখেলা। তাই কবি বলেছেন ‘যে দিন শ্রষ্ঠার বুকে জেগে ছিল আদি সৃষ্টি কাম সে দিন তুমি আসিলে আমি আসিলাম। কাজেই নারী শ্রষ্টারই অংশ আর পুরুষ শ্রষ্ঠার রুপ। দুনিয়া সৃষ্টির অযুহাতেই শ্রষ্ঠা নিজেই দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পৃথিবী নামে এই লীলাভূমি সৃষ্টি করেছেন প্রেম/ভক্তি ভালবাসার আশায়।

কাজেই সৃষ্টি, সত্য, ধর্ম ভাব-ভালবাসা, প্রেম-ভক্তি সকলই দৈব অস্তিত্ব পরম সত্ত্বার সার সংকলন। ভক্তের ভক্তিতেই শ্রষ্ঠার অস্তিত্ব। তাই সর্বকালের শ্রেষ্ঠ আসমানী কিতাব পবিত্র কুর-আনে আল্লাহ নিজেই ঘোষনা করেছেন ‘সিরাতুয়াল-লা-জিনা আন্ আমতা আলইহীম, গায়রুল মাহ্গদু‘বে আলাহীম ওয়া-লা- দুয়াল্লিম।
মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম।


123
সে কালে পিতা-মাতার ভালবাসা ছিল স্বচ্ছ আয়নার ন্যায়, একে-অপরের প্রতিছব্বি সমতুল্য। বাংলার অধিকাংশ মা তার স্বামীকে আদর করে, সোহাগ করে,  বিশেষ বিশেষ বিশেষনে ডাকতেন- এ্যাদোঁ শুনছ নাকি গো; তোর পুলারে ডাক তো মনি ;  ইত্যাদি মায়াবী সম্ভোধনের মাধ্যমে। রীতি-নিয়ম ছিল; মায়েরা কখনো স্বামীর আগে আহার করতেন না, স্বামীর সামনে ঘোমটা করে চলতেন। অধিকাংশ সময়ই ছেলেকে মাধ্যম করে কথা বলতেন। স্বামীর হুকুম ছাড়া এক চুলও নড়তেন না। বিনা অনুমতিতে কোন সিদ্বান্ত নিতেন না। জীবনে কখনো স্বামীর নাম উচ্চারণ করতেন না স্বামীর অমঙ্গলের কথা চিন্তা করে।

এটি তাদের ভয় ছিল না বরং ছিল স্বামীর প্রতি তাদের নিবিড়, নিখাঁত প্রেম  ও মাধুর্য্যপূর্ণ ভালবাসা।  প্রাচীন কাব্য মালায় উল্লেখ পাওয়া যায় ‘এক গৃহবধূ তার ভাসুরকে একটি চিরুণী কিনতে দিবেন, কিন্তু ঘটনা চক্রে ভাসুরের নাম চিরুণী হওয়াতে ভাসুরের সম্মানে তিনি চিরুনী শব্দটি উচ্চারণ না করে ছড়া কেঁটে বলে ছিলেন-

‘ভাসুরের নামে চিড়ার ন্যায়ে
চ্যাপ্টা পিঠা কোন দোকানে
ধইর‌্যা এনে ঠুক্ক দিয়ে মারে
তাই যেন একটা ভাসুরে  আনে’।

যুগের হু‘যুগে বর্তমান সমাজ ব্যাবস্থা এখন অনেকটা ‘টেডিশনাল’। নারী-পুরুষ এখন আসল ভালবাসা ভুলে নতুনত্বের ভালবাসায় অনেকটা হাওয়ার মিঠাই খেতে অবস্থ্য হয়ে পড়ছে। উন্নত দেশগুলোর ‘আকাশ সংস্কৃতির প্রভাব মায়াবী পল্লী নর-নারীদেরকেও সজোড়ে  ধাক্কা দিয়েছে। পুরুষের তুলনায় নারীরাই এখন ক্ষণীকের আনন্দকে প্রাধান্য দিয়ে চলেছে- কারন কর্তার টানে কর্তৃত্বে জোয়ার। ফলে সাময়িক তৃপ্তিতে অতৃপ্ত হয়ে উঠেছে ‘ভালবাসা’ নামক চিরস্থায়ী অমূল্য সম্পদটি।

সংসারে আজ অবলারা সবলা সেঁেজছে। কর্তৃত্বে প্রাধাণ্যতায় তারা হীনমান্য আচরনে প্রবৃত্ত রয়েছে। একটু লক্ষ্য করলেই দেখা যায় কর্মময় জীবন নিয়ে স্বামীরা স্ত্রীর হাতে নাযেহাল। অভাবী  বাবা-মা স্ত্রীর দৈরাত্বে সন্তানের মুখ দশনের্রও সুযোগ পাচ্ছে না। রাস্তা-ঘাটে মা-মেয়ের পাথর্ক্য ঘোচে গেছে। বিবাহ যোগ্য ছেলেরা এখন মেয়ের চেয়ে মার আকষর্নে বেশী প্রলুব্ধ।

এই ব্যাপারটি আরও একটু স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বর্তমান সরকারের একজন প্রভাবশালী মন্ত্রীর উচ্চারণে। তিনি এক বক্তিতায় বলেছেন ‘যারা দিনের আলোতে নারীর অধিকার নিয়ে আন্দোলন করেছে তারা রাতের বেলায় নিজ স্ত্রীর দ্বারা নির্যাতিত একথা র্নিধিধায় বলা যায়। বাংলাদেশে নারী নির্য়াতনের কঠিন আইন থাকলেও পুরুষ নির্যাতনের আইন নেই কেন? এই পরিস্থিতিতে কর্তৃত্ব হীন পুরুষ সম্পর্কে  কবি দূঃখ করে লেখেছেন-

‘উল্টে গেছে বিধির বিধি ধর্ম-বিচার-আচার জাতী
মেয়েরা সব করছে লড়াই পুরুষ খেলছে চড়–ই বাতি’।

বর্তমান সমাজ সংসারে ভালবাসার আয়োজনে এখন এক সের ঢুলায় দুই সের ধারনে পুরষের চেয়ে নারীই অগ্রগামী। কিছু উগ্র পুরুষের কার-সাজিতে নারীরা শাররীক আর্কষনে মাকাল ফল সেঁজেছে। একটু লক্ষ করলেই দেখায় যায় অফিস- আদালতে, ব্যবসা-বানিজ্যে. ব্যাংক-বীমার প্রতিটি ক্ষেত্রেই সুভাষীনি অভিসারীদের পুঁজনীয় করে রাখা হয়েছে বানিজ্যিক ভাবে লাভবান হবার কৌশলে; যা নারীর আসল মর্যাদা নয়। আমরা নারীবাদের  বিপক্ষ নই। নারীরা কামিনী ও ভগ্নী। এটি সত্য যে নারীত্বে কামীনির চেয়ে প্রনয়ীনির স্থান অনেক উর্ধেব। নারীর ভালবাসা স্বর্গীয় সাধু। সেই ভালবাসা নিয়তির নিয়মেই  স্বর্গীয় অনুভূ’তিপূর্ন । তাই আমরা বলতে পারি ফিরে এসো ফারিয়া----



124
Story, Article & Poetry / কানাঁ বগের গল্প-
« on: February 18, 2015, 01:01:13 PM »
আমরা কানাঁবগা। জীবনের প্রথম ভাগ থেকে-ই, কাদাঁ বসে মাছ শিকারে অপেক্ষমান! দিনের স্বচ্ছল আলোতেও ছ্যানীপড়া-চোঁখে আবছায় সারা দিন নোংরা-কাদাঁ বসে থাকার আবশ্যকীয়তা নিয়ে জন্ম গ্রহণ করেছি। তাই ধ্যান-তীর্থে থাকায়-ই আমাদের কর্ম। কারণ সময়ের চেয়ে জীবনের হিসাবই আমাদের কাছে মূখ্য। অন্যেরা খাওয়াতে বাচেঁ, আর আমরা বাচাঁর জন্য খাই..।

সারা দিন শিকার ধরার ধ্যানে মগ্ন থাকি। প্রতিদিন দুরে থাক, জীবনে কম সময়ই আমাদের পেট-পুড়ে। ক্ষুধার তীব্রতার চেয়ে শিকার ধরার আনন্দে আমরা সময় পার করি!! অনেকটা---- 

‘প্রতিপনার নিরন্ত প্রয়াস তব মনো বাঞ্চা;
এক ফোটাঁ পানি পানে ধন্য হবে আশা’।

হাটুঁ জলের মাছগুলো খুবই দূরন্ত। তারা অধিকাংশ সময়ই আমাদের ধোঁকা দেয় গোত্রীয় কাঁনাবগা ভেবে। অসারত্বে-লোকচুরি খেলে-ছলনার মনোবাঞ্চায়। যদিও আহারে পেটপুরে মোদের কদাচিৎ অসার-নিরিহ-নির্বোধ অ-চলা চুনুপুুটি তরে। তাই আমরা বগা সমাজে অ-চলায়ণে পদ-পৃষ্ঠ, অনেকটাই তারা শংকরের ‘ভবানীচরন’ বলতে পারেন।

আমাদের গোত্রীয় প্রতি-বগারা গভীর জল থেকে থাবা মেরে বা খাব্বি খেয়ে বড় বড় শিকার ধরে  ‘বগা-গোত্রের সুনামের দ্বারা অব্যাহত রেখে চলেছে। আনন্দে হৃদ হর্ষে সুস্বাস্থ্যে দিন যাপন করছে। ওরা ঘোলা কিম্বা স্বচ্ছ উভয় পানিতেই শিকার ধরাতে পারদর্শী। শুচাকৃতির ধারালো ঠোটের আঘাতে সমাজের সবচেয়ে পিচ্ছলদেরকেও সহজে শিকারে পরিনত করছে। আর আমরা অ-সারতায় অব্যয়। হতো এভাবে চলবে আমাদের জীবন। তবু আশাহত নই। তাই, এক পায়ে দাড়িয়ে ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে আশার গান করেছি-

‘এখনো অস্ত যায়নি সূর্য, সহসা হবে শুরু
অম্বরে ঘন ডম্বরে-ধ্বনি, গুরু-গুরু-গুরু।
আকাশ বাতাসে বাজিতে এ কোন ইন্দ্রের আগমনী?
শুনি, অম্বদি-কম্বু- নিনাদে ঘন বৃংহিত ধ্বনি।
বাজিবে চিক্কুর হ্রেষা -হষর্ণ-মেঘ-মন্দিরা মাঝে;
সাজিবে একদিন আষাঢ় হয়তো প্রলয়ংকর সাঁজে।
-

125
ভালবাসার অ-সারত্ব ও মানবিকমূল্যবোধহীন জীবন!!!
                                 এক.
`I forget my kingdom
With beloved my queen
For a cup of win’

ভালবাসা রাজ্যের সর্বশ্রেষ্ঠ এই উক্তিটি আজ, অ-সারে পদ-ধূলিত। বর্তমানে দেনা-পাওনার জীবনে ‘সর্ম্পক নামক হৃদয়স্পর্শী টান’ টিকে থাকে খোলসযুক্ত চিনুকের অ-দেখা মুক্তার অন্বেষায়। এই কথা সত্য যে, জীবন চলার পথে ‘ভালবাসা শব্দটি’ সমগ্র সৃষ্টি কূলকেই দারুন ভাবে প্রভাবিত করে; এবং আজীবন করবে।

সর্বকালের শ্রেষ্ঠ জ্ঞানী সক্রেটিস বলেছেন ‘জীবনমাপার মাপকাটি হল ‘ভালবাসা’ বা মানবিক মূল্যবোধ। যা একমাত্র মানুষের মধ্যেই সর্বাপেক্ষ বেশী উজ্বল থাকে। আর এই কারনেই মানূষ সমগ্র সৃষ্টিকূলের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হিসাবে বিবেচ্য।

যুগের বৈরিতায় বতর্মানে অমানবিক বা অনৈতিক ভালবাসা ক্রমেই দানবীয় রুপ ধারন করছে।  সময় ও সুযোগের সন্ধান, মানুষের বানিজ্যভিত্তিক চিন্তা-চেতনা ও শিক্ষা, এবং ভোগ-বিলাসীতার মানসিকতার কারনে হৃদয় স্পর্শী ভাব/মানবিকমূল্যবোধ হারিয়ে যেতে বসেছে। যা যুগ-প্রভাব ও মানুষের মনকে দারুন ভাবে কুলষিত করে চলেছে। যার বাস্তব উদাহারন আমাদের বর্তমান পরিবার, সমাজ, এবং রাষ্ট্রের বিভৎস্য চেহারায় ফুঁটে উঠেছে। এই বিভৎস্যতা সম্পর্কে কবির চিন্তা-
‘বন্ধু গো যেয়ো ভুলে-
প্রভাতে যে হবে বাসি, সন্ধায় রেখোনা সে ফুল তুলে!
উপবনে তব ফোঁটে যে গোলাপ- প্রভাতেই তুমি জাগি-
জানি তার কাছে যাও, শুধূ তার গন্ধ সুষমা লাগি’।

দুই.
এক বিংশ শতাব্দীকে বলা হয় জ্ঞান-বিজ্ঞানের যুগ। যদিও বিজ্ঞান আজ অব্দি সার্বিক সত্য আবিস্কার করতে পারে নাই; তবুও গবেষনায় সিদ্ধহস্ত রয়েছে। বিজ্ঞানের এই চিন্তার ধূ-ধূ সীমা রেখায় হৃদয়ের ‘স্পন্দন বা ভালবাসার’ বাস। কিন্তু এই ভালবাসার প্রয়োগিক কৌশল অনেকটাই ভ্রান্ত ভিত্তিতে দন্ডায়মান। যা বর্তমানে হৃদয়ত্বতা বর্জিত অপ-কৌশল।

কৌশলীর এই অপ-কৌশল অপ-চিন্তায় নিম্মর্জ্জিত বিধায় পরিস্থিতি ক্রমে ক্রমেই করুন থেকে বিদূর হয়ে উঠছে।
সভ্যতা বিকাশের যুগযুগান্তকারী মহাকাব্য ‘মেঘনাথবদ কাব্যে’ মেঘনাথের দ্বারা কবি মাইকেল মধুসুদন দত্ত তা অকুন্ঠ চিত্তে তুলে ধরেছেন। মেঘনাথের অকুন্ঠ অ-প্রিয় সত্য বাক্যের দ্বারা কবি বুঝাতে চেয়েছেন ‘মানুষ এখন সত্য বা মানবিক মূল্যবোধ/ভালবাসাকে কেঁটে -ছেঁেট এক প্রলেপযুক্ত সত্যের আলোতে মুখ দেখছে এবং ক্ষণীক সফলতায় বিভোর রয়েছে; যা ভোগ-বিলাষের জন্য সাময়িক শান্তি দিলেও ফলাফলে অ-সত্যকে উষ্কে দিয়ে এক ভয়াবহ সামাজিক অশান্তি সৃষ্টি করছে। ঠিক যেন-
‘যুধিষ্ঠিরের সম্মুখে রনে পড়িল সব্য-সাচী
ঐ-হের দুর; কৌরব সেনা উল্লাসে উঠে নাঁিচ’।

মন্তব্যঃ আজ, মানুষ/ভালবাসা, জ্ঞান-অন্বেষা, শিক্ষা-অধ্যাবসায়, গবেষনা-ফলাফল প্রভৃতি মানুষ ও মনুষ্যত্বের উপর অসম্পূর্ণ প্রশ্ন রাখছে যা ভালবাসার আসলত্ব আবিস্কারে ঁৈখই হাঁরিয়ে ফেলছে। জীবনকে ভোগ করার অ-মানবিক চিন্তায় প্রত্যেকটি মানুষই; প্রত্যেকে চরম ভাবে উপস্থাপন করছে যা দেশ ও সমাজের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনছে। এর ফলশ্র“তিতে ভালবাসা হারিয়ে যাচ্ছে অমানবিক ছাঁয়া পথের অতল গহব্বরে। আমার দ্বীন দরিদ্র ভালবাসার কাঙ্গাল। দেশ, জাতি ও মানুষের এহেন অবস্থায়, ভালবাসাই হোক একমাত্র অবলম্বন; এটিই সার্বজনীন কাম্য।

মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম
সম্পাদক, বাংলাটপনিউজ২৪.কম

126
ভালবাসার অ-সারত্ব ও মানবিকমূল্যবোধহীন জীবন!!!
                                 এক.
`I forget my kingdom
With beloved my queen
For a cup of win’

ভালবাসা রাজ্যের সর্বশ্রেষ্ঠ এই উক্তিটি আজ, অ-সারে পদ-ধূলিত। বর্তমানে দেনা-পাওনার জীবনে ‘সর্ম্পক নামক হৃদয়স্পর্শী টান’ টিকে থাকে খোলসযুক্ত চিনুকের অ-দেখা মুক্তার অন্বেষায়। এই কথা সত্য যে, জীবন চলার পথে ‘ভালবাসা শব্দটি’ সমগ্র সৃষ্টি কূলকেই দারুন ভাবে প্রভাবিত করে; এবং আজীবন করবে। 

সর্বকালের শ্রেষ্ঠ জ্ঞানী সক্রেটিস বলেছেন ‘জীবনমাপার মাপকাটি হল ‘ভালবাসা’ বা মানবিক মূল্যবোধ। যা একমাত্র মানুষের মধ্যেই সর্বাপেক্ষ বেশী উজ্বল থাকে। আর এই কারনেই মানূষ সমগ্র সৃষ্টিকূলের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হিসাবে বিবেচ্য।

যুগের বৈরিতায় বতর্মানে অমানবিক বা অনৈতিক ভালবাসা ক্রমেই দানবীয় রুপ ধারন করছে।  সময় ও সুযোগের সন্ধান, মানুষের বানিজ্যভিত্তিক চিন্তা-চেতনা ও শিক্ষা, এবং ভোগ-বিলাসীতার মানসিকতার কারনে হৃদয় স্পর্শী ভাব/মানবিকমূল্যবোধ হারিয়ে যেতে বসেছে। যা যুগ-প্রভাব ও মানুষের মনকে দারুন ভাবে কুলষিত করে চলেছে। যার বাস্তব উদাহারন আমাদের বর্তমান পরিবার, সমাজ, এবং রাষ্ট্রের বিভৎস্য চেহারায় ফুঁটে উঠেছে। এই বিভৎস্যতা সম্পর্কে কবির চিন্তা-
‘বন্ধু গো যেয়ো ভুলে-
প্রভাতে যে হবে বাসি, সন্ধায় রেখোনা সে ফুল তুলে!
উপবনে তব ফোঁটে যে গোলাপ- প্রভাতেই তুমি জাগি-
জানি তার কাছে যাও, শুধূ তার গন্ধ সুষমা লাগি’।

দুই.
এক বিংশ শতাব্দীকে বলা হয় জ্ঞান-বিজ্ঞানের যুগ। যদিও বিজ্ঞান আজ অব্দি সার্বিক সত্য আবিস্কার করতে পারে নাই; তবুও গবেষনায় সিদ্ধহস্ত রয়েছে। বিজ্ঞানের এই চিন্তার ধূ-ধূ সীমা রেখায় হৃদয়ের ‘স্পন্দন বা ভালবাসার’ বাস। কিন্তু এই ভালবাসার প্রয়োগিক কৌশল অনেকটাই ভ্রান্ত ভিত্তিতে দন্ডায়মান। যা বর্তমানে হৃদয়ত্বতা বর্জিত অপ-কৌশল।

কৌশলীর এই অপ-কৌশল অপ-চিন্তায় নিম্মর্জ্জিত বিধায় পরিস্থিতি ক্রমে ক্রমেই করুন থেকে বিদূর হয়ে উঠছে।
সভ্যতা বিকাশের যুগযুগান্তকারী মহাকাব্য ‘মেঘনাথবদ কাব্যে’ মেঘনাথের দ্বারা কবি মাইকেল মধুসুদন দত্ত তা অকুন্ঠ চিত্তে তুলে ধরেছেন। মেঘনাথের অকুন্ঠ অ-প্রিয় সত্য বাক্যের দ্বারা কবি বুঝাতে চেয়েছেন ‘মানুষ এখন সত্য বা মানবিক মূল্যবোধ/ভালবাসাকে কেঁটে -ছেঁেট এক প্রলেপযুক্ত সত্যের আলোতে মুখ দেখছে এবং ক্ষণীক সফলতায় বিভোর রয়েছে; যা ভোগ-বিলাষের জন্য সাময়িক শান্তি দিলেও ফলাফলে অ-সত্যকে উষ্কে দিয়ে এক ভয়াবহ সামাজিক অশান্তি সৃষ্টি করছে। ঠিক যেন-
‘যুধিষ্ঠিরের সম্মুখে রনে পড়িল সব্য-সাচী
ঐ-হের দুর; কৌরব সেনা উল্লাঁসে উঠে নাচি।

মন্তব্যঃ আজ, মানুষ/ভালবাসা, জ্ঞান-অন্বেষা, শিক্ষা-অধ্যাবসায়, গবেষনা-ফলাফল প্রভৃতি মানুষ ও মনুষ্যত্বের উপর অসম্পূর্ণ প্রশ্ন রাখছে যা ভালবাসার আসলত্ব আবিস্কারে খেঁই হাঁরিয়ে ফেলছে। জীবনকে ভোগ করার অ-মানবিক চিন্তায় প্রত্যেকটি মানুষই; প্রত্যেকে চরম ভাবে উপস্থাপন করছে যা দেশ ও সমাজের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনছে। এর ফলশ্র“তিতে ভালবাসা হারিয়ে যাচ্ছে অমানবিক ছাঁয়া পথের অতল গহব্বরে। আমার দ্বীন দরিদ্র ভালবাসার কাঙ্গাল। দেশ, জাতি ও মানুষের এহেন অবস্থায়, ভালবাসাই হোক একমাত্র অবলম্বন; এটিই সার্বজনীন কাম্য।




127


পৃথিবীর সমগ্র কল্যানের মূলে রয়েছে ‘শিক্ষা’। তাই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব হযরত মুহাম্মদ (সঃ) বলেছেন ‘এলেম অজর্ন প্রত্যেকটি মানুষের জন্যই ফরজ। বুদ্ধরা বলেছেন, জ্ঞানীর পদপৃষ্ঠ আরসে আজিম। এই কথা সত্য যে, বর্তমানে নীতি ও আদর্শ বিচ্যুত শিক্ষা ক্রমে ক্রমেই গ্রাস করতে বসেছে আমাদের গোটা সমাজ কিম্বা রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে। তথাকতিথ ‘শিক্ষা’ বা ডিগ্রী নিয়ে এক শ্রেনীর দুর্জন সমাজ কিম্বা রাষ্ট্রতন্ত্রের বিভিন্ন উচ্চ পদে বসে শুরু করে দিয়েছে লুটতরাজ। গড়ে তুলেছে ব্যক্তিক শক্তির দুভের্দ্ধ ব্যুহৃ। এতে জাতীয় জীবনে নেমে আসছে ভয়াবহ ঘন-ঘোর অন্ধকার। আমাদের দেশে বর্তমানে শিক্ষার সন্তেুাষজনক হলেও মানষিক ও আদর্শীক উন্নতি-তে রয়েছে চরম বিপর্যয়।

প্রত্যকটি মানুষের জীবনে শিক্ষা অত্যাবশ্যকীয়। কারণ শিক্ষা মানুষের পশুবৃত্তিকে দমন করে ‘বুদ্ধিবৃত্তি’ প্রসারে যুগযুগান্তকারী ভুমিকা পালন করে। সমাজ বা রাষ্ট্রকে যেহেতু মানবিক কল্যান সংস্থা বলে ধরে নেওয়া হয়; তাই এটিকে সুনিদিষ্ট বৃত্তি বা মানবিক গুনের উপর প্রতিষ্ঠিত করতে হলে ‘আদর্শীক নীতি-জ্ঞান সমৃদ্ধ শিক্ষা/শিক্ষিত সমাজ প্রয়োজন।

আমাদের বর্তমানে সমাজ ব্যবস্থায় ‘আদর্শীক নীতি-জ্ঞান সমৃদ্ধ শিক্ষিত সমাজ অনেকাংশেই অনুপস্থিত। পাশ্চেত্যেও এই স-ুকৌশলি চিন্তার(পরাভূত) ভিত্তিহীন স্বচ্ছলী প্রলেপযুক্ত শিক্ষা সমাজ বা রাষ্ট্র উন্নয়নে অনেকটা মাকাল ফল হিসাবে পরিচয় দিযে আসছে। এক কথায় যার রুপ আসে কিন্তু গুন অনুপস্থিত। যেটির তীর্যক সৌন্দর্য মানুষকে কাছে টানলেও ভোগ অনুপযোগী। বর্তমানে মাকাল ফল সমতুল্য রুপ-সৌন্দয্যে স্বচ্ছল শিক্ষিতরা সমাজ কিম্বা রাষ্ট্রের ‘টেডিশনে’ পরিনত হচ্ছে। যাকে অনেকটাই রাষ্ট্র-দেহের মস্তিষ্কের অবক্ষয় সমতুল্য বলা যায়। ফলে জীবন-জীবনের কাছে লঞ্চিত ও পদ-পৃষ্ট হচ্ছে ক্রমাগতই। শ্রেষ্ঠ মনষীগনের হাজার বছরের মানব-কল্যানমুলক গবেষণা আজ অর্থের -অথৈই সাগরে হা-বু-ডু-বু খাচ্ছে। এতে করে এক শ্রেনী আভিজাত্যকামী অ-মানুষের স্বার্থ রক্ষার ব্যুহৃ প্রাচীর রচনা হচ্ছে। যারা মানুষকে টাকার জোড়ে ‘দাস’ বানিয়ে আনন্দ পায়।

মানুষ জন্মগত ভাবেই সত্যের উপর শ্রদ্ধাশীল বলেই সমাজের কাছে নিজেকে সৎ সুন্দর, নীতি-নিষ্ঠাবান হিসাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে চায়। এই সুমহানী চিন্তা-ভাবনার মূলে থাকে শিক্ষার সু-মহান প্রাপ্তি। কিন্তু শিক্ষার মাপকাটি যদি অর্থের মান-দন্ডে নিরুপিত হয় তাহলে সেই জাতির ধ্বংশ অনির্বায নয় কি!!!

অবশ্য অবশ্যই আমাদেরকে এই পথ পরিহার করে একটি সুচিন্তিত আদর্শীক পথে অগ্রসর হতে হবে। মুক্তচিন্তার দ্বার উন্মুচনের জন্য মাববিক কল্যাণমূলক গবেষণায় মগ্ন থাকতে হবে। আর্থীক কিম্বা শাররীক ভাবে নয়, আত্মীক-মানষিক ভাবে শিক্ষিত হতে হবে। এই ক্ষেত্রে অন্যন্য ভূমিকা পালন করতে হবে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সম্মানীত শিক্ষকবৃন্দগনকে। কারন শিক্ষকারাই হলে জাতির আদি-পিতা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোকেও মোটা অংকের টাকা অথবা আর্থিক ব্যবসা বাদ দিয়ে; হতে  হবে মাববিক মূল্যবোধ বিকাশের চারণ ক্ষেত্র -জাতি এটাই আশা করে।


128
পুঁজিবাদীদের নতুন সমীকরনের বিষ ফোড়ঁন ‘মুক্তবাজার অর্থনীতি’

দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সামনে এগিয়ে চলা দিকে দিন কষ্টদায়ক হয়ে-ই চলেছে। তাদের জীবন চলার প্রতিটি ভাঁজে ভাজেঁ মৃত্যুর ফাদঁ পাতা। ‘ব্যক্তি’ কিম্বা ‘রাষ্ট্রীয় জীবন’ উভয় ক্ষেত্রেই কথাটি ধ্র“ব সত্য। আধুনিক সমাজের স-চতুর পুজিঁবাদীরা অথনৈতিক মুক্তির কথা বলে অযথা ‘মুক্তবাজার অর্থনীতির’ ধোঁয়া ছড়াচ্ছে। কথাটা অনেকটাই ডুঙ্গা নিয়ে চাঁদে যাওয়ার স্বপ্ন।

দরিদ্র জনগোষ্ঠিকে নিয়ে পুজিঁবাদী চিন্তাবিদদের এমন নতুন সমীকরনের ফলে দরিদ্ররা আরও অসহায় হয়ে সর্বস্ব হারিয়ে রাস্তায় নামছে। ফলে লুটেরা পুজিবাদীরা এবং তাদের তাবেদার দালাল চেঁটিয়ারা স্থীর নিঃস্বাসে সুখের হাঁসি হাসঁছে- আজীবন আধিপত্য টিকিয়ে রাখার আনন্দে। দরিদ্র দেশগুলোর শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত নীতি-আদর্শহীন ও ক্ষমতা লিপ্সু সরকার গুলোও কম যাচ্চে না।

এই রুপ অনৈতিক প্রতিযোগিতার ফলে রাজনীতিতে নেমে আসছে তথাকথিত ‘কালো বিড়ালের’ থাবা। যুগ যুগের ঐতিহ্যের মেধাবী জীবন দর্শন ‘রাজনীতি’ সমাজনীতি, অর্থনীতি আস্তে আস্তে দখলে চলে যাচ্ছে অশিক্ষিত, ভন্ড, দুর্বৃত্ত, দলকানাদের হাতে। অনেকটা লাভের গুড় পিপিলিকায় খাওয়ার মত। নীতি-আদর্শ বিবর্জিত ‘রাজনীতি’ পেশিশক্তি ও অর্থশক্তিকে ভর করে মানবতাকে ছুড়ে ফেলছে ডাষ্টবিনের নোংরা ড্যামে।

আমাদের দেশের অনেক বুদ্ধিজীবিরাই মনে করেন ‘মুক্তবাজার অর্থনীতির ফলে আমরা দরিদ্ররা আমাদের উৎপাদিত সস্তা পন্য গুলো বিশ্ববাজারে অতি সহজেই রফতানী করতে পারছি। মেনে নেওয়া যায় একথার সততা আছে। কিন্তু প্রশ্ন থাকছে উৎপাদিত পণ্যের মালিক দরিদ্র কৃষক কি পাচ্ছে? ধরা যাক আমাদের দেশে তৈরী পোষাক শিল্পের কথা। বাংলাদেশে একটি পোষাক তৈরী করতে সর্বসাকুল্যে খরচ হয় মাত্র ১.৫ ডলারের মত। বিদেশে এই পোষাকটি কমপক্ষে ২০ ডলার বিক্রি হলেও দরিদ্র শ্রমিক তার ন্যায্য পায়ানা থেকে ক্রমাগত বঞ্চিত হয়েই চলেছে। সাথে চলমান রয়েছে মালিকদের ছলচাতুরী। অথচ দরিদ্র-অসহায় এই সকল শ্রমিকের তৈরী রক্তমিশ্রিত পোষাক বিক্রি করে লাভ পাচ্ছে সেই পুজিঁবাদীরা ও তাদের দোসর স্বদেশী চেটিয়া পুজিবাদীরা (মালিকরা)।

পরিসংখ্যানে দেখা গিয়াছে, বাংলাদেশের প্রায় ৯০ লাখ লোক বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শ্রম বিক্রি করছে। এই সকল শ্রমিকরা মানবেতর জীবন যাপন করলেও সরকার কোন সুনিদিষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে না ববং বৈদেশিক ‘রেমিটেন্সের’ কথা বলে দুধের নহর তুলে শ্রমিকদের উপার্জিত অর্থের উপর বিরাট অংকের কমিশন খাচ্ছে যা অতীব লজ্জাজনক।

স্বাধীনতাত্তর কাল থেকেই পুজিঁবাদী ও চেটিয়া পুজিবাদীদের সমর্থন পোষ্ট শাসন জাতীয় উন্নয়নের কথা বলেও দিনকে দিন- রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে কোটি কোটি টাকা লুট-পাট করেই চলেছে এবং একশ্রেণীর ফ্যাসীবাদী জনমতের সৃষ্টি করছে যারা সরকারকে অকুন্ঠ সমর্থন দান করছে। সরকারের এই ভ্রান্ত নীতির ফলে দেখা যাচ্ছে; নিত্য-নতুন ধনিক শ্রেনীর উত্থান যা কালের ইতিহাসকেও হার মানাচ্ছে।

সরকারী সমর্থনে ধারাবাহিক লুট-পাটে ক্রমাগত রাজার ছেলে রাজা, মন্ত্রীর ছেলে মন্ত্রী, শিল্পপতির ছেলে শিল্পপতি বনেই চলেছে। এ ব্যাপারে সাম্যবাদীরা মনে করেন  করেন ‘অবাদ বাণিজ্য নীতির’ আরেক নাম ভাগ-বাটোয়ারার পয়ঁতারা। এই নীতিতে শিল্পকারখানা গুলোতে চলছে মালিকানার নব-উলংগ নৃত্য এবং শ্রমিক নিপীড়নের; ইতিহাসের স্বরনীয় নিকৃষ্ট উদাহারণ।

আধুনিক কালের আকাশ সংস্কৃতির প্রভাব বা ডিজিটাল দেশ গড়ার স্বপ্ন ‘সময়োচিত ভাবনা’। তবে কেযাল রাখতে হবে এটা যেন আধিপত্যকামীদের সুচারু ‘রাজনৈতিক খেলা’ না হয়। দরিদ্র মানুষদের হাজার বছরের কৃষ্টি-কালচার, সমাজ-সংস্কৃতি, ধমীয়-আচার, রীতি-নীতি উপর আঘাত বর্ষিত না হয়।

সকল র্স্বাথক ও সফল সম্ভবাবনা একটি ‘সচেতন জাতি’ আরাধ্য। আমরা জন্মগত ভাবে সুবিধা ভোগী শ্রেনীর বিরুদ্ধি। জীবন বঞ্চণার শেষ ধাপটি পযর্ন্তও আমরা সমতা চাই? জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের মৌলিক অধিকার চাই। বাঁচার মত বাঁতে চাই। পুজিবাদীদের  বিনাষ চাই।।।

129
জীবনের জয় গানে ‘ভালবাসাই’ একমাত্র অবলম্বন। যৌবন দ্বীপ্ত ভালবাসা; যুবক-যৌবতীদের দারুন ভাবে মোহিত এবং মহামান্বিত করে। আর ভালবাসায় ভরপুর জীবন সদানন্দন; এক বিপুল সম্ভাবনা-আকাংঙ্খার অধিকারী হয়, শত বাধাঁ-ব্যস্ততায়ও সুনির্মল, স্বাচ্ছন্দ প্রফুল্ল থাকে।

ভালবাসার এই বয়স সু-নিদিষ্ট নিয়ম দ্বারা আটকানো সম্ভব নয়। তবে নিরন্কুশ ভালবাসা সাধারনত ১৮ থেকে ২৫ বছরের মধ্যেই প্রকাশ ঘটে যাকে মধুর ভালবাসা বলা যেতে পারে। এই সময়টিতে জীবন-জয়গানে নিরন্তন আবেগ উল্লাসের ফুল‘সুরত। ভালবাসা এই পবিত্রতা সম্পর্কে এক চিরন্তন বানী উচ্চারণ করেছেন সম্রাট জাহাঙ্গীর।

তিনি বলেছেন I forget my kingdom, with beloved my queen, for a cup of wine . এ কথা সত্য যে, অপরিপক্ক বা অশুদ্ধ ভাব-আবেগ জীবন ও যৌবনের ব্যত্যয় ঘটায়। একথা সর্বজন যে, পৃথিবীর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পদ ‘বিশুদ্ধ ভালবাসা’। আমরা ‘পথ-পাখী’ সারা জীবনই ভালবাসার জয়গানে ‘উন্মুখ’।

আমরা যেমন ভালবাসী, আমাদের পরিবার-পরিজনকে; তেমনী ভালবাসী আমাদের প্রিয় জন্ম-ভূমির মাটি ও মানুষকে। স্বাধীনতা উত্তোর থেকে আজ অব্দি আমরা দেখেছি, কতিপয় ভন্ড-প্রতারকরা আমাদের এই সহজ-সরল জনসাধারনকে নানান লোভে -ঠকিয়ে নিজেরা নেতৃত্বের ভন্ডামীতে অভিনয় করে চলেছে। মানুষের রক্ত চুষে টাকা-পয়সা বানিয়ে কেউ‘বা গড়েছে পারিবারিক আভিজাত্য; বাস করছে সু-উচ্চ অট্রলিকায়।

এমতবস্থায়, জীবন যৌবনের জয়গানে আমরা সতেচন বাঙ্গালী জাতির পক্ষ থেকে একজন সৎ ও সাহসী মানুষের প্রয়োজন অনুভব করছি। যে কি-না’ যৌবন দ্বীপ্ত ভালবাসার স্লোগানে মুখরিত; এক অনন্ত দুর্বার ও লোহ কঠিন প্রত্যয়- প্রতিজ্ঞার অধিকারী। আগামীর সুন্দর, স্বনির্ভর, দরিদ্রমুক্ত বাংলাদেশই যার স্বপ্ন। আমরা সমগ্র বাঙ্গালী জাতি তার নেতৃত্বে এক হতে চাই।

চাই, বাংলাকে এক মনোরম সৌর্ন্দয্যে ও অক্ষরীক শিক্ষার ছন্দের ‘স্বপ্নপুরী’ হিসাবে গড়তে। অলংকার করতে চাই; সততা ও ভালবাসাকে আর দুর্বল-অসহায়দের জাগ্রত করতে চাই -আগামীর সুন্দর, সুনির্মল ও অহিংসার স্বপ্নে। আসুন আমরা এক হই; জীবন ও ভালবাসায় জয় গানে।

130
প্রফেসর ডঃ ইয়াজ উদ্দিন ও ডঃ ফকরুদ্দীনের শাসনকালঃ
২৮ অক্টোবর ডঃ ইয়াজ উদ্দিন আহম্মদ নিজেকে প্রধান উপদেষ্ঠা ঘোষনা করে ২৯ অক্টোবর শপথ ঘোষনা করেন। ৩১ অক্টোবর তিনি ১০ জন উপদেষ্ঠা নিয়ে বাংলাদেশের জন্য একটি অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচনের ঘোষনা দেন। তার উপদেষ্ঠা পরিষদের সদস্যবৃন্দ হলেন-
১.   ডঃ আলী আকবর খান।
২.   লেঃ জেঃ (অব:) হাসান মশহুদ চৌধুরী।
৩.   বিচারপতি ফজলুর হক।
৪.   সি.এম. সামি।
৫.   এম  আজিজুল হক।
৬.   ধীরাজ কুমার নাথ।
৭.   সুলতানা কামার।
৮.   মাহ্বুবুর আলম।
৯.   সুপিয়া রাহমান।
১০.   ইয়াসমিন মুশের্দ।
উপদেষ্ঠা পরিষদ গঠনের অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই বি.এন.পির পক্ষপাত দুষ্টের কারনে প্রধান উপদেষ্ঠার সাথে অন্যন্য উপদেষ্ঠার মধ্যে দূরত্বের সৃষ্টি হয়। ২০০৬ সালের ১১ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্ঠার প্রতি আঙ্গুল নির্দেশ করে সর্বজন শ্রদ্ধেয় উপদেষ্ঠা ডঃ আলী আকবর খান, সি.এম সামি, সুলতানা কামাল এবং লেঃ জেঃ (অব:) হাসান মশহুদ চৌধুরী পদত্যাগ করেন। তাদের পদত্যাগের সাথে সাথে প্রধান উপদেষ্ঠা ডঃ ইয়াজ উদ্দিন আহম্মদ কাল বিলম্ব না করে কতিপয় বির্তকীতদের উপদেষ্ঠা নিয়োগ করলে জনমনে অসন্তোষ বৃদ্ধি পায়। ঠিক এই সময়টিতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বধীন ১৪ দলীয় জোট-প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নতুন ত্র“টিমুক্ত ভোটার তালিকা প্রনয়ন এবং বিভিন্ন প্রকার অসম্পূর্ন ইস্যু নিয়ে আন্দোলনের লক্ষ্যে সমমনা দলগুলোকে নিয়ে ‘মহাজোট’ গঠন করেন। মহাজোট গঠনে ডঃ কামাল হোসেন  অসামান্য অবদান রাখেন। কর্নেল অলি আহম্মদ, ডাঃ বদরুদ্দোজা চৌধূরী, হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ প্রমুখ-নেতৃবৃন্দ দলবলসহ মহাজোটে যোগদান করেন। গঠনের পরপরই মহাজোট তাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে  একের পর এক হরতাল- অবরোধ দিতে থাকলে সরকার বাধ্য হয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এম,এ আজিজকে ছুটিতে পাঠিয়ে বিচারপতি মাহফুজুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করেন।
ডঃ ইয়াজউদ্দিন আহম্মদের তত্ত্বাবধায়ক সরকার সুষ্ঠ ভোটার তালিকা প্রনয়ন না করেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করেন এবং একই সাথে নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রধান এইচ.এম এরশাদকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষনা করেন। ফলে মহাজোট এর তীব্র প্রতিবাদ জানায় এবং ৩রা জানুয়ারীর নির্বাচন বর্জনসহ সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে আন্দোলনের সিদ্ধান্তে অটল থাকে। এদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং প্রদান উপদেষ্ঠা যৌথভাবে দ্বিতীয় দফা তারিখ অনুসারে ২২ জানুয়ারী নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে তাদের দৃঢ় ও অনঢ় অভিমত ব্যাক্ত করেন। মহাজোটের নির্বাচন বর্জনের ঘটনায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার অভিমত ব্যক্ত করে বলেন ‘তাদের এই নির্বাচন বর্জনের ঘোষনায় আমি হতাশ নই; বরং উল্লাসিত। সব সময় আমি উল্লাসিত থাকতে পছন্দ করি। ২২ জানুয়ারী নির্বাচন হবেই হবে’।
৪ জানুয়ারী মহাজোট নেতৃবৃন্দ এক সাংবাদিক সম্মেলনে ঘোষনা করেন ত্র“টিমুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়ন, প্রধান উপদেষ্ঠার পদত্যাগ ব্যতীত মহাজোট নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবে না। মহাজোট নেত্রী শেখ হাছিনা ৫ জানুয়ারী সারা দেশে বিক্ষোভ এবং ৭ ও ৮ তারিখে পূর্বঘোষিত অবরোধ অব্যাহত রাখার ঘোষনা দেন। তিনি আরও বলেন ‘এর পর দাবি মানা না হলে, ডঃ ইয়াজ উদ্দিন আহম্মদ পদত্যাগ না করলে, বঙ্গভবন ঘেরাও কর্মসূচী দেওয়া হবে। এদিকে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সকল দলের অংশ গ্রহন নিশ্চিতের দাবি জানান। এইরুপ পরিস্থিতিতে গাজীপুরে এক দলীয় সম্মেলনে খালেদা জিয়া ‘দেশকে সংবিধান সংকট থেকে রক্ষা করার জন্য নির্বাচনকে সঠিক সিদ্ধান্ত বলে মন্তব্য করেন।
এদিকে শেখ হাছিনাও মহাজোটের পক্ষ থেকে নির্বাচন বর্জনের ঘোষনা করেন। ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার এইরুপ পরিস্থিতিতে ৫ জানুয়ারী গন-গ্রেফতার শুরু করেন। ৬ জানুয়ারী রাষ্ট্রপতি নির্ধারীত সময়েই নির্বাচনের ঘোষনা দিয়ে ব্যালট পেপার ছাপানোসহ সেনাবাহিনীর সহায়তায় তা সারা দেশব্যাপি পাঠানোর  নির্দেশ দেন। ফলে সমগ্র দেশব্যাপী এক ভয়াবহ নৈরাজ্যের আশংঙ্খা দেখা দিলে এফ.বি.সি.সি আই দেশব্যাপী জরুরী অবস্থা ঘোষনার দাবি জানান। সরকারও গন-গ্রেফতারের অটল থাকেন। বি.এন.পির নেতৃত্বাধীন ৪দলীয় জোট এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট পরস্পর বিরুধী বক্তব্যসহ বিভিন্ন সমাবেশ, মিছিল, মিটিংয়ে একের অপরের প্রতি বিষাদাগার করতে থাকেন। ৭ জানুয়ারী আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট  ঢাকা অবরোধের ডাক দিলে দেশের অধিকাংশ জনগন তাদের সাথে একাত্ম ঘোষনা করে। ডঃ ইয়াজ উদ্দিনের  তত্ত্বাবধায়ক সরকারও অবরোধের বিপক্ষে কঠোর অবস্থানের ঘোষনা দেন। এতদ্ব্য সত্যেও  অবরোধে পুরো ঢাকা- সারাদেশ থেকে বিছিন্ন হয়ে পড়ে। মহল্লা  মহল্লায় আওয়ামী লীগের কর্মীদের সাথে পুলিশের সংর্ঘষ শুরু হয়ে যায়। ৮ জানুয়ারী পরিস্থিতি মারাত্বক আকার ধারন করে। ফলে আন্দোলনরত জনতার উপর পুলিশ ব্যাপক লাটিচার্জ ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। শহীদ নূর হোসেন চত্বরে মহাজোটের এক সমাবেশে তোফায়েল আহম্মদ, রাশেদ খান মেনন, নূরুল ইসলাম নাহিদ, হাসানুল হক ইনু, দীলিপ বড়ূয়াসহ অনেক নেতার উপর পুলিশ নির্বিচারে লার্ঠি চার্জ করে। এই রুপ পরিস্থিতিতে  আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের আান্ডার সেক্রেটারী নিকোলাস বার্নস প্রধান উপদেষ্ঠাকে সব দল নির্বাচনে অংশ গ্রহনে একটি অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচনের আহব্বান জানান। ৯ জানুয়ারী বেশ কিছু পশ্চিমাদেশ এক দরফা নির্বাচন এড়াতে সক্রিয় হয়ে উঠলেও সেনাবাহিনী পরোয়ানা ছাড়াই গন-গ্রেফতার চালিয়ে যায়।
১০ জানুয়ারী অবরোধ কর্মসূচীর শেষ দিনে পল্টনের এক বিশাল জনসভায় শেখ হাছিনা, ডঃ কামাল হোসেন, বদরুদ্দোজা চৌধূরী, কনের্ল (অব:)অলি আহাদ, এইচ. এম এরশাদ ঐক্যমতে ২২ জানুয়ারীর নির্বাচন প্রতিহতের ঘোষনা দেন। সেই লক্ষ্যে ১৪, ১৫, ১৭, ও ১৮ই জানুয়ারী দেশ ব্যাপী সবার্ত্মক অবরোধ এবং ২১ ও ২২ জানুয়ারী দেশব্যাপী হরতালের ঘোষনা দেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও পরিস্থিতি আচর করে (এন.ডি.আই, কমনওয়েলথ ও ইইউ) এক যোগে নির্বাচন  পর্যবেক্ষনের আস্বীকৃতি জানায়।
এই পরিস্থিতিতে কুমিল্লার চান্দিনায় এক জনসভায় বি.এন.পি তথা ৪দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া স্পষ্ট ঘোষানা করেন ‘যে কোন মূল্যে ২২ জানুয়ারী নির্বাচন হতে হবে। দেশের এইরুপ ভয়ন্কর পরিস্থিতিতে ও আন্তজার্তিক চাপের মুখে ১১ জানুয়ারী বিকেল সাড়ে চারটায় প্রধান উপদেষ্ঠা প্রফেসর ডঃ ইয়াজ উদ্দিন আহম্মদ প্রধান উপদেষ্ঠার পদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং রাষ্ট্রপতি হিসাবে সমগ্রদেশে জরুরী অবস্থা জারি করেন। ১২ জানুয়ারী থেকে সগ্রমদেশ ব্যাপী জরুরী অধ্যাদেশ আইন কার্যকর হলে অন্যান্য উপদেষ্ঠাবৃন্দ পদত্যাগে বাধ্য হন।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে ফখরুদ্দীনের শাসনকাল একটি অবিস্মরনীয় অধ্যায়। ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারী রোজ বৃহস্পতিবার বিকেল চারটায় জনাব ফখরুদ্দীন প্রধান উপদেস্ঠা হিসাবে শপথ ঘোষআ করেন। ইতিপূর্বে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভণরসহ জাতি সংঘের গুরুত্বপুর্ন পদে সফলতার সহিত দায়িত্ব পালনে অভিজ্ঞ ছিলেন।তার শপত গ্রহন অনুষ্ঠানে সাবেক উপদেষ্ঠা বিচারপতি হাবিবুর রহমান, লতিফুর রহমান, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাছিনাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। দুভার্গ্য জনক হলেও সত্য যে আমন্ত্রন থাকা সত্যেও বি.এন.পি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া উক্ত শপথ গ্রহন অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন। শপথ গ্রহনের পরপরই তিনি নির্বাচন কমিশনের গৃহিত নির্বাচন সংক্রান্ত সকল কার্যবলী স্থগিত ঘোষনা করেন। ১৩ই জানুয়ারী রাত ৮টায় বঙ্গভবনের দরবার হলে ৫জন উপদেষ্ঠা শপত গ্রহন করেন। উপদেষ্ঠার স্বল্পতাহেতু পরবর্তিতে ১৬ জানুয়ারী আরও ২জন উপদেষ্ঠা নিয়োগ করা হয়। ডঃ ফখরুদ্দিনের নেতৃত্বাধীন উপদেষ্ঠা পরিষদের সদস্যগন হলেন-
১.   ডঃ ফখরুদ্দিন আহম্মদ-প্রধান উপদেষ্ঠা।
২.   ঊ্যারিষ্টার মঈনুল ইসলাম-আইন,বিচার, সংসদ বিষয়ক, গৃহায়ন ও পূর্তমন্ত্রণালয় এবং ভূমি ও তথ্য মন্ত্রণালয়।
৩.   ডঃ এ.বি.এম মীর্জ্জা আজিজুল ইসলাম-অর্থও পরিকল্পনা, বানিজ্য, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়।
৪.   মেজর জেনারেল (অব:) আব্দুল মতিন-যোগাযোগ মন্ত্রণালয়।
৫.   তপন চৌধূরী-বিদ্যুৎ, জ্বালানী খনিজ সম্পদ, খাদ্য দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা, বিজ্ঞান, তথ্য প্রযুক্তি, যুব ও সাংস্কৃতি মন্ত্রণালয়।
৬.   গীতি আরা সাফিয়া চৌধুরী- শিল্প, প্রাথমিক ও গন-শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়।
৭.   আইয়ুব কাদরী-শিক্ষা প্রাথমিক ও গন-শিক্ষা এবং সাংস্কৃতিক মন্ত্রনালয়।
৮.   মেজর জেনারেল (অব:) ডা: এ.এস.এম মতিউর রহমান-স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান, পানি সম্পদ, ও ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
৯.   মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম- স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন, সমবায়, শ্রম ও কর্মসংস্থাপন মন্ত্রণালয়।
১০.   ডঃ ইফতেখার আহম্মেদ চৌধূরী-পরলাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
১১.   ডঃ চৌধূরী সাজ্জাদুল করিম-কৃষি মন্ত্রণালয়।
উপদেষ্ঠা পরিষদের সদস্যগনের মধ্যে ২০০৭ সালের ২৬ ডিসেম্বও ফ্রান্সে পাঠানোর উদ্দেশ্যে ঢাকা বিমা বন্দও থেকে পুরাকীর্তি চুরির নৈতিক দায় নিয়ে শিক্ষা উপদেষ্ঠা আইয়ুব কাদরী পদত্যাগ করেন। ২০০৮ সালের ৮ জানুয়ারী আরও ৪ জন উপদেষ্ঠা পদত্যাগ করলে প্রধান উপদেষ্ঠা আরও পাচঁজন উপদেষ্ঠা মনোনয়ন করে রাষ্ট্রপতির দ্বারা অনুমোদন করেন। ১০ জানুয়ারী প্রধান উপদেষ্ঠা উপদেষ্ঠাদের দফতর পূর্নবন্টন করেন। তার নব-গঠিত উপদেষ্ঠা পরিষদএবং পূর্ন গঠিত দফতর হল-
১.   ডঃ ফখরুদ্দিন আহম্মদ-প্রধান উপদেষ্ঠা।
২.   ডঃ এ.বি.এম মীর্জ্জা আজিজুল ইসলাম-অর্থও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়।
৩.   মেজর জেনারেল (অব:) এম.এ মতিন- স্বরাষ্ট্র, নৌ-পরিবহন, ভূমি এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
৪.   ডঃ ইফতেখার আহম্মেদ চৌধূরী-পরলাষ্ট্র  প্রবাসী কল্যান, বৈদেশিক ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
৫.   মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম- স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন, সমবায়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়।
৬.   ডঃ চৌধূরী সাজ্জাদুল করিম-কৃষি ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়।
৭.   ডাঃ এ.এস.এম শওকত আলী-স্বাস্থ্য, পরিবার কল্যান, খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়।
৮.   এ.এফ হাসান আরিফ- আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
৯.   মেজর (অব:) গোলাম কাদের-যোগাযোগ, গৃহায়ন ও পূর্ত মন্ত্রণালয়।
১০.   রাশেদা কে. চৌধূরী-প্রাথমিক ও গন-শিক্ষা এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়।
১১.   ডঃ হোসেন জিল্লুর রহমান-শিক্ষা ও বানিজ্য মন্ত্রনালয়।
প্রধান উপদেষ্ঠা ডঃ ফখরুদ্দীনের বিশেষ সহকারী-
১. রাজা দেবাশীষ রায়-পার্বত্য চট্রগ্রাম, পরিবেশ এবং বন মন্ত্রণালয়।
২.ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব:) এম.এ মালেক-ডাক,তার টেলিযোগাযোগ ও সমাজ কল্যান মন্ত্রণালয়।
৩. অধ্যাপক ম. তামিম- জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিবাগ এবং বিদ্যুৎ বিভাগ মন্ত্রনালয়।
৪. মাহ্বুব জামিল-বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পযৃটন শিল্প এবং যুবও ক্রিয়া মন্ত্রণালয়।
৫. মানিক লাল সমাদ্দার-মৎস্য পশু সম্পদ, বিজ্ঞান, তথ্য-প্রযুক্তি ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়।
২০০৮ সালের ১২ই জানুয়ারী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্ঠা ড: ফখরুদ্দিন আহম্মেদ রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সরকারের সংলাপ ঘোষনা করেন। সেই ধারাবাহিকতায় ২৪ ফের্রুয়ারী বিকল্পধারা, ওয়ার্কাস পার্টি, ও সাম্যবাদী দলের সাথে নির্বাচন কমিশনার সংলাপে বসেন। আলোচনায় এই সকল দল ডিসেম্বর নাগাদ নির্বাচনের দাবি তুলেন। ২৫শে ফ্রেরুয়ারী আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, ও সিপিবির সাথে সংলাপ হয়। ২৮শে ফ্রেরুয়ারী কৃষক শ্রমিক জনতালীগ, ইসলামী ঐক্যজোট ও এলডিপির সাথে আলোচনায় বসলেও বি.এন.পি ৭ দফা দাবি তুলে নির্বাচনে আসতে অনিহা প্রকাশ করেন। সরকার ২০০৮ সালের ২৯শে নভেম্বও জাতীয় সংসদেও নির্বাচনী তফসিল ঘোষনা করেন। তারিখ অনুসাওে ১৮ ডিসেম্বও সংসদ নির্বাচন এবং ২৮ ডিসেম্বও উপজেলা নির্বাচনের তারিখ নির্ধারন করা হয়।
৩রা ডিসেম্বও বি.এন.পি তাদেও দাবি মেনে পুনরায় তফসিল ঘোষনার দাবি জানালেও শেখ হাছিনা দীর্ঘ পাচঁ মাস যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসা শেষে দেশের মাটিতে  এসেই সাংবাদিক সম্মেলনে ঘোষনা করেন ‘ নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তারিখেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই ঘোষনার প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগকে সরকারের সাথে আতাতের অভিযোগ আনেন।
বি.এন.পির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সরকারকে ৪টি শর্ত দিয়ে তা মেনে নেওয়ার জন্য ৪৮ঘন্টা সময় বেধেঁ দেন। ১৮ নভেম্বও দুই নেত্রীকে সমঝোতায় আনয়নের লক্ষ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার তাদেও সাথে বৈঠক করেন। কিন্তু তাদেও সাথে এক্যমত না হলে ১৯ নভেম্বও নির্বাচন কমিশনার ১৮ই ডিসেম্বও সংসদ নির্বাচন এবং২৮ ডিসেম্বও উপজেলা নির্বাচনের তারিখে পূর্নবহাল রাখেন। ২০ডিসেম্বও হঠাৎ করেই বি.এন.পি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ঘোষনা করেন যে ২৮শে ডিসেম্বও সংসদ নির্বাচন এবং উপজেলা নির্বাচন একমাস পিছিয়ে দিলে তারা নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবে। ফলে ২৩ নভেম্বও নির্বাচন কমিশনার বাধ্য হয়ে পূর্নতফসিল ঘোষনা করেন। পূর্নতফসিল অনুসারে ২৯ ডিসেম্বর জাতীয সংসদ নির্বাচন এবং ২২জানুয়ারী উপজেলা নির্বাচনের তারিখ ঘোষনা করা হয়। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটও নির্বাচনের তারিখ মেনে নেন। ৩০ নভেম্বর সমগ্রদেশে মনোনয়ন দাখিল করা হয়। প্রধান উপদেষ্ঠা ড: ফখরুদ্দীন আহম্মদ কঠোর হস্তে বাংলাদেশের সমগ্র ব্যাংক গুলোকে  ঋণ খেলাফিদেও চিহিৃত করতে  আদেশ প্রদান করেন এবং তাদেরকে নির্বাচনে  অযোগ্য ঘোষনা করা হয়। ৩রা ডিসেম্বও ঢাকার লালমাটিয়ার বাসায় কতিপয় দুবৃর্ত্ত কর্তৃক গনতন্ত্রী পার্টিও সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধা নূরুল ইসলাম স-পরিবারে নিহত হন। এই হত্যাকান্ডের পিছনে দুবৃর্ত্তায়নের রাজনীতি ও নির্বাচন বানচালের উদ্দেশ্য থাকলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকার তার সিন্ধান্তে অটল থেকে দৃঢ়তার পরিচয় দেন।
৪ ডিসেম্বর মনোনয়ন বাছায়ের চূড়ান্ত পর্বে সারা দেশ থেকে ৫৫৭ জন প্রার্থীও মনোনয়ন পত্র বাতিল বলে ঘোষনা করা হয়। ৫ ডিসেম্বর থেকে বিল ও ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালিত হয়। সারা দেশে আওয়ামী লীগ ও বি.এন.পি থেকে ঋণ ও বিল খেলাপির দায়ে ১২১জন প্রার্থীও মনোনয়ন বাতিল করা হয়। অজ্ঞাত কারনে শতাব্দির শ্রেষ্ঠ স্বৈরাশাসক ্এইচ.এম এরশাদকে নির্বাচনে যোগ্য ঘোষনা করা হলে তিনি একর পর এক আওয়ামী-বি.এন.পি দলের পক্ষে নিজ সুবিধা আদায়ে বিস্মকর বক্তব্য রাখার সুযোগ পান এবং সকল জলপনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে জোটবদ্ধ রাজনীতিকরনে মহাজোটে যোগ দেন। সর্বশেষ পরিক্রমায় সারা দেশে ১৫৯৭ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ গ্রহনের সুযোগ পান।
১২ই ডিসেম্বও থেকে মহাজোট ও চারদলীয় জোটের নির্বাচনী প্রচারনা শুরু হয়। নির্বাচনী ইস্তেহারে শেখ হাছিনার নেতৃত্বাধীন মহজোট ২১ দফা প্রতিশ্র“তি প্রদান করেন। বিশেষ কওে দ্রব্য মূল্যের হ্রাস ও দিন বদলের প্রচারনায় সমগ্রদেশে এক নতুন মাত্রা যোগ হয়। ১৩ ডিসেম্বর ‘দেশ বাচাঁও; মানুষ বাচাঁও ধ্বনি তুলে বি.এন.পির নেতৃত্বাধীন চার দলীয় জোট নির্বাচনী ইস্তেহার ঘোষনা করেন। প্রকাশ্য রাজনৈতিক মঞ্চে শেখ হাছিনা –চারদলীয় জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে দুনীর্তি ও জঙ্গীবাদের অভিযোগে অভিযুক্ত করেন। অন্য দিকে বেগম খালেদা জিয়াও শেখ হাছিনাকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাথে গোপন আতাতের অভিযোগ তুলেন। ২০ ডিসেম্বর তত্ত্বাবধায়ক সরকার সারাদেশে একটি সুষ্ঠ অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ৫০,০০০ পঞ্চাশ হাজার সশ্রস্ত্র বাহিনী নিয়োগ করেন। এই সময় হঠাৎ করেই সারাদেশে বি.এনপির নেতৃত্ত্বাধীন চারদলীয় জোটের নির্বাচন বর্জনের রব উঠে। অপর দিকে শেখ হাছিনার বিরুদ্ধে দুনীর্তির মামলা দায়েরকারী আজম জে. চৌধূরী বিখ্যাত আওয়ামী ব্যবসায়ী নুর আলী এক জনসভায় শেখ হাছিনাকে একজন ভাল লোক বলে উল্লেখ্য  করেন। তারা বলেন কতিপয় দুবৃর্ত্ত তাদেরকে মুত্যৃও ভয় দেখিয়ে শেখ হাছিনার বিরুদ্ধে মামলা করতে বাধ্য করেছে। আমরা এই জনসভায় ঘোষনা পূর্বক তার বিরুদ্ধে আমাদের দায়ের করা সকল মামলা তুলে নিলাম। ২৯ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী নেতৃত্বাধীন মহাজোট এক অবিশ্বাস্য সফলতা অর্জন করে। মহাজোটের নিন্কুশ সফলতার এই নির্বাচন ফলাফল বিশ্লেষনে এক অনন্য ইতিহাসÑ
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফলঃ
মহাজোট-২৬২
আওয়ামী লীগ-২৩০, জাতীয় পার্টি-২৭, জাসদ-৩, ওয়াকার্স পার্টি-২

           চারদলীয় জোট-৩৩
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী পার্টি-৩০, জামাতে ইসলামী-২, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-১

অন্যন্য প্রাপ্ত আসন-০৫
স্বতন্ত্র-৪, এল ডিপি-১

২০০৮ সালের নির্বাচনে দলওয়ারী প্রাপ্ত ভোটের তুলনাঃ
আওয়ামী লীগ-৪৯.০২%
বাাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী পার্টি-৩২.৭৪%
জাতীয় পার্টি-৬.৬৫%
জামাতে ইসলামী-৪.৫৫%
স্বতন্ত্র ওঅবশিষ্ঠরা-৭.০৪%
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনটি ছিল বিশেষ গুরুত্বপূর্ন। বিশেষ আইনের এই নির্বাচনে বিশ্বেও বিভিন্ন দেশ নির্বাচনী পযবেক্ষনে ব্যাপক উৎসাহী ছিলেন এবং নির্বাচন পরবর্তী এক প্রতিক্রিয়ায় তারা এই নির্বাচনকে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ এবং সুষ্ঠ নির্বাচন বলে আখ্যা দেন।( চলেব--)




131
শেখ হাসিনার শাসনামল (১৯৯৬-২০০০)
দীর্ঘ ২১বছর পর ১৯৯৬ সালের ২৩শে জুন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ, নিরপেক্ষও কারচুপিবিহীন নির্বাচনে ১৪৭টি আসনে জয়যুক্ত হয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনা দশম এবং দ্বিতীয় মহিলা প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ গ্রহন করেন। প্রেসিডেন্ট আব্দুর রহমান বিশ্বাস সংবিধানের ৫৬(২) ধারা বলে বঙ্গবভনের দরবার হলে এক-জাকজমকপুর্ন অনুষ্ঠানে নব-নিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সংবিধান সংরক্ষন, দায়িত্ব পালন এবং রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা সংরক্ষনের প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ বাক্য পাঠ করান। ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েই শেখ হাসিনা ‘জাতীয় ঐক্যমতের’ সরকার গঠনের দিকে অগ্রসর হন। সেই লক্ষ্যে ১৩জন মন্ত্রী, ১৩ জন প্রতি-মন্ত্রী, এবং জনগনের অফুরান্ত ভালবাসা আর বিশ্বাসকে সম্বল করে সরকার গঠন করেন। তার গঠিত মন্ত্রীসভার সদস্যবৃন্দগন হলেন-
১. জনাব আব্দুস সামাদ আজাদ- পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
২. জনাব জিল্লুর রহমান-স্থানীয় সরকার ও সমবায় মন্ত্রনালয়।
৩. জনাব এস.এম.এস কিবরিয়া-অর্থমন্ত্রনালয়।
৪. জনাব আব্দুর রাজ্জাক-পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়।
৫. জনাব এ. এস. এইচ. কে সাদেক-শিক্ষামন্ত্রনালয়।
৬. লে: জেনারেল (অব:) নুরুদ্দীন খান -–বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয়।
৭. মেজর (অব:) রফিকুল ইসলাম (বীর উত্তম)- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়।
৮. মোহাম্মদ নাছিম- ডাক, তার ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রনালয়।
৯. বেগম মতিয়া চৌধুরী- কৃষি, খাদ্য, দুযোর্গ ব্যস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়।
১০. জনাব আনোয়ার হোসেন মঞ্জু- যোগাযোগ মন্ত্রনালয়।
১১. জনাব তোফায়ের আহম্মদ -শিল্প ও বানিজ্য মন্ত্রনালয়।
১২. জনাব সালাহ উদ্দিন ইউসুফ-স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়।
১৩. জনাব আ.স. ম আব্দুর রব-নৌ-পরিবহন মন্ত্রনালয়।
প্রতি-মন্ত্রীগন হলেন-
১. জনাব মোজাম্মেল হোসেন-মহিলা ও শিশু বিষয়ক এবং সমাজ কল্যাণ মন্ত্রনালয়।
২. জনাব ওবায়দুল কাদের-যুব ক্রীয়া, ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয়।
৩. জনাব আবুল হাসান চৌধুরী কায়সার-পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়।
৪. মি: ক্ষিতিশ চন্দ্র রায়-মৎস্য ও পশু সম্পদ মন্ত্রনালয়।
৫. আলহাজ্ব সৈয়দ আবুল হোসেন-স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়।
৬. মওলানা মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম-ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রনালয়।
৭. জনাব আফসার উদ্দিন-গৃহায়নও গনপূর্ত মন্ত্রনালয়।
৮. এডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু-আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রনালয়।
৯. জনাব এ.কে ফয়জুল হক- পাটমন্ত্রনালয়।
১০. জনাব এম. এ মান্নান-শ্রম ও জন শক্তি মন্ত্রনালয়।
১১. জনাব হাজী রামেদ মোশারফ-ভূমি মন্ত্রনালয়।
১২. অধ্যাপক আবু সাইয়িদ-তথ্য মন্ত্রনালয়।
১৩.
শেখ হাসিনা জাতীয় সরকারে প্রধান বিরোধীদল বি.এন.পিকে যোগদানের আহব্বান করা হলেও তারা তাতে অংশ গ্রহন করতে অস্বীকার করেন। ১৯৯৬ সালের ২২শে আগষ্ট রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আওয়ামী লীগ; সাবেক প্রধান বিচারপতি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি প্রার্থী ঘোষনা করলে বি.এন.পি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কূট-কৌশলীর নিবার্চন বলে ধূয়া তুলে এবং রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে অংশ গ্রহনের অস্বীকৃতি জানায়। ফলে বিনা প্রতিদ্বন্দীতায় বিচারপতি সাহাবুদ্দিন রাষ্ট্রপতি নিবার্চিত হন।
শেখ হাছিনার নেতৃত্বে তার শাসনামলে স্মরকালের বেশ কিছু সফলতা আসে। ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর ৩০ বছর মেয়াদী ভারতের সাথে ‘গঙ্গা পানি চুক্তি’ স্বাক্ষরিত হয়। ১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর ‘পার্বত্য চট্রগ্রাম শান্তি’ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়্। চুক্তি মোতাবেক ৩টি জেলা নিয়ে একটি আঞ্চলিক পরিষদ গঠন এবং পার্বত্য চট্রগ্রামকে ‘উপজাতি অধ্যাষিত’ এলাকা হিসাবে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। এই চুক্তি সম্প্রদানের ফলে দীর্ঘদিন পর পাহাড়ী এই-তিন জেলায় শান্তি ফিরে আসে। কিন্তু বিরোধী দল বি.এন.পি এই চুক্তিকে সংবিধান বিরোধী ও বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ত্বের জন্য হুমকী হিসাবে আখ্যায়িত করে। আওয়ামী লীগ শাসনামলে কতিথ খাদ্য খারতি কাটিয়ে শেখ হাছিনা সরকার খাদ্যশস্য এবং নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য-সামগ্রীর মূল্য স্থীতিশীল রাখতে সমথ্য হন। ফলে জনগনের মনে ভ্রান্ত ধারনা দূরিভূত হয়। এই শাসনামলে বাংলা ভাষার মযার্দা বৃদ্ধিও লক্ষ্যে কানাডায় বসবাসকারী বাংলাদেশের প্রবাসী নাগরিকদের উদ্দ্যোগে ও আন্তরিক প্রচেষ্ঠায় আর্ন্তজাতিক সম্প্রদায় বিশেষ করে ইউনেস্কো টঘঊঝঈঙ (টহরঃবফ হধঃরড়হং বফঁপধঃরড়হধষ ংপরবহঃরভরপ ধহফ পঁষঃঁৎধষ ঙৎমধহরুধঃরড়হ) কর্তৃক একুশে র্ফেরুয়ারীকে ১৯৯৭ সালের ১৭ নভেম্বর আর্ন্তজার্তিক মাতৃৃভাষা দিবস রুপে ঘোষনা করা হয়। ফলে দিবসটি নতুন মাত্রা ও নতুন মর্যাদায় ভূষিত হয়। এতদ্ব সত্যেও সরকার সন্ত্রাস, তথ্য মাধ্যমের উপর সরকারের একক আধিপত্য, প্রশাসনিক দলীয়করন, বিরোধীদলের উপর নির্যাতন ইত্যাদিও কারনে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের তাদের ২০০০ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে বিশ্বেও ১নম্বর দুর্ণীতি গ্রস্থ্য দেশ হিসাবে ঘোষনা করে। সরকার নানা আলোচনা-সমালোচনায় পূর্নমেয়াদ পুরন করে সংবিধান মোতাবেক ক্ষমতা ছেড়ে দিলে প্রধান বিচারপতি লতিফুর রহমান ২০০১ সালের ১৫ জুলাই প্রধান উপদেষ্ঠারুপে শপথ গ্রহন করেন।

132
লাহোর থেকে বাংলাদেশ এবং স্বাধীনতাত্তর বাংলাদেশের রাজনীতিঃ
বেগম খালেদা জিয়ার শাসনামলঃ
প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শাসনামলের শেষের দিকে বিচারপতি কে.এম হাসানকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ এবং বিচারপতিদের বয়সবৃদ্ধি রাজনৈতিক অঙ্গনে বিশেষভাবে আলোড়ন সৃষ্টি করে। আওয়ামী লীগসহ সকল বিরুধীদলই এই সিদ্ধান্তকে ন নাকোচ এবং বিচারপতি হাসানের বিরুদ্ধে অতীতকালে বি.এন.পির রাজনীতির অভিযোগ আনেন। এরই মধ্যে বেগম খালেদা জিয়া বিচাপতি মোঃ আব্দুল আজিজকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ঘোষনা দিলে বিরুধী  দলীয় রাজনৈতিকদের  আন্দোলনে ‘ঘি’ ঢালার সমজ্ঞাপন হয়। এদিকে ভোটার তালিকা নিয়ে নির্বাচন কমিশনারের কর্মকান্ড এবং উগ্র বি.এন.পি পন্থ নেতা-কর্মীদের অসহিঞ্চু আচারনে বিরুধীদল ও বুদ্ধিজীবিসহ সকল শ্রেনীর মানুষের মনে হতাশা বৃদ্ধি পায়। দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতি এবং বিরুধী দলীয় নেতাকর্মীদের গন-গ্রেফতার, শান্তিপূর্ন মিছিলের উপর পুলিশের ব্যাপক লাঠি চার্জ ও নির্যাতনের ফলে শেষ পযর্ন্ত সরকার গন-রুশের কবলে পড়ে।
এ-দিকে প্রধান বিরুধীদল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের আন্দোলনের মুখে প্রধান বিচারপতি কে. এম হাসান তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধানের পদ গ্রহনে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করিলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক অবিশ্বাস্য নাটকীয়তার ঘটনা ঘটে। এই নাটকীয়তার ঘুরপাকেই ২০০৬ সালের ২৭ অক্টোবর বেগম খালেদা জিয়াকে বাধ্য হয়ে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ  করেন
২৮ অক্টোবর ডঃ ইয়াজ উদ্দিন আহম্মদ নিজেকে প্রধান উপদেষ্ঠা ঘোষনা করে ২৯ অক্টোবর শপথ ঘোষনা করেন। ৩১ অক্টোবর তিনি ১০ জন উপদেষ্ঠা নিয়ে বাংলাদেশের জন্য একটি অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচনের ঘোষনা দেন। তার উপদেষ্ঠা পরিষদের সদস্যবৃন্দ হলেন-
১.   ডঃ আলী আকবর খান।
২.   লেঃ জেঃ (অব:) হাসান মশহুদ চৌধুরী।
৩.   বিচারপতি ফজলুর হক।
৪.   সি.এম. সামি।
৫.   এম  আজিজুল হক।
৬.   ধীরাজ কুমার নাথ।
৭.   সুলতানা কামাল।
৮.   মাহ্বুবুর আলম।
৯.   সুফিয়া রাহমান।
১০.   ইয়াসমিন মুশের্দ।
উপদেষ্ঠা পরিষদ গঠনের অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই বি.এন.পির পক্ষপাত দুষ্টের কারনে প্রধান উপদেষ্ঠার সাথে অন্যন্য উপদেষ্ঠার মধ্যে দূরত্বের সৃষ্টি হয়। ২০০৬ সালের ১১ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্ঠার প্রতি আঙ্গুল নির্দেশ করে সর্বজন শ্রদ্ধেয় উপদেষ্ঠা ডঃ আলী আকবর খান, সি.এম সামি, সুলতানা কামাল এবং লেঃ জেঃ (অব:) হাসান মশহুদ চৌধুরী পদত্যাগ করেন। তাদের পদত্যাগের সাথে সাথে প্রধান উপদেষ্ঠা ডঃ ইয়াজ উদ্দিন আহম্মদ কাল বিলম্ব না করে কতিপয় বির্তকীতদের উপদেষ্ঠা নিয়োগ করলে জনমনে অসন্তোষ বৃদ্ধি পায়। ঠিক এই সময়টিতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বধীন ১৪ দলীয় জোট-প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নতুন ত্র“টিমুক্ত ভোটার তালিকা প্রনয়ন এবং বিভিন্ন প্রকার অসম্পূর্ন ইস্যু নিয়ে আন্দোলনের লক্ষ্যে সমমনা দলগুলোকে নিয়ে ‘মহাজোট’ গঠন করেন। মহাজোট গঠনে ডঃ কামাল হোসেন  অসামান্য অবদান রাখেন। কর্নেল অলি আহম্মদ, ডাঃ বদরুদ্দোজা চৌধূরী, হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ প্রমুখ-নেতৃবৃন্দ দলবলসহ মহাজোটে যোগদান করেন। গঠনের পরপরই মহাজোট তাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে  একের পর এক হরতাল- অবরোধ দিতে থাকলে সরকার বাধ্য হয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এম,এ আজিজকে ছুটিতে পাঠিয়ে বিচারপতি মাহফুজুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করেন।
ডঃ ইয়াজ উদ্দিন আহম্মদের তত্ত্বাবধায়ক সরকার সুষ্ঠ ভোটার তালিকা প্রনয়ন না করেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করেন এবং একই সাথে নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রধান এইচ.এম এরশাদকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষনা করেন। ফলে মহাজোট এর তীব্র প্রতিবাদ জানায় এবং ৩রা জানুয়ারীর নির্বাচন বর্জনসহ সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে আন্দোলনের সিদ্ধান্তে অটল থাকে। এদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং প্রদান উপদেষ্ঠা যৌথভাবে দ্বিতীয় দফা তারিখ অনুসারে ২২ জানুয়ারী নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে তাদের দৃঢ় ও অনঢ় অভিমত ব্যাক্ত করেন। মহাজোটের নির্বাচন বর্জনের ঘটনায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার অভিমত ব্যক্ত করে বলেন ‘তাদের এই নির্বাচন বর্জনের ঘোষনায় আমি হতাশ নই; বরং উল্লাসিত। সব সময় আমি উল্লাসিত থাকতে পছন্দ করি। ২২ জানুয়ারী নির্বাচন হবেই হবে’।
৪ জানুয়ারী মহাজোট নেতৃবৃন্দ এক সাংবাদিক সম্মেলনে ঘোষনা করেন ত্র“টিমুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়ন, প্রধান উপদেষ্ঠার পদত্যাগ ব্যতীত মহাজোট নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবে না। মহাজোট নেত্রী শেখ হাছিনা ৫ জানুয়ারী সারা দেশে বিক্ষোভ এবং ৭ ও ৮ তারিখে পূর্বঘোষিত অবরোধ অব্যাহত রাখার ঘোষনা দেন। তিনি আরও বলেন ‘এর পর দাবি মানা না হলে, ডঃ ইয়াজ উদ্দিন আহম্মদ পদত্যাগ না করলে, বঙ্গভবন ঘেরাও কর্মসূচী দেওয়া হবে। এদিকে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সকল দলের অংশ গ্রহন নিশ্চিতের দাবি জানান। এইরুপ পরিস্থিতিতে গাজীপুরে এক দলীয় সম্মেলনে খালেদা জিয়া ‘দেশকে সংবিধান সংকট থেকে রক্ষা করার জন্য নির্বাচনকে সঠিক সিদ্ধান্ত বলে মন্তব্য করেন।
এদিকে শেখ হাছিনাও মহাজোটের পক্ষ থেকে নির্বাচন বর্জনের ঘোষনা করেন। ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার এইরুপ পরিস্থিতিতে ৫ জানুয়ারী গন-গ্রেফতার শুরু করেন। ৬ জানুয়ারী রাষ্ট্রপতি নির্ধারীত সময়েই নির্বাচনের ঘোষনা দিয়ে ব্যালট পেপার ছাপানোসহ সেনাবাহিনীর সহায়তায় তা সারা দেশব্যাপি পাঠানোর  নির্দেশ দেন। ফলে সমগ্র দেশব্যাপী এক ভয়াবহ নৈরাজ্যের আশংঙ্খা দেখা দিলে এফ.বি.সি.সি আই দেশব্যাপী জরুরী অবস্থা ঘোষনার দাবি জানান। সরকারও গন-গ্রেফতারের অটল থাকেন। বি.এন.পির নেতৃত্বাধীন ৪দলীয় জোট এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট পরস্পর বিরুধী বক্তব্যসহ বিভিন্ন সমাবেশ, মিছিল, মিটিংয়ে একের অপরের প্রতি বিষাদাগার করতে থাকেন। ৭ জানুয়ারী আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট  ঢাকা অবরোধের ডাক দিলে দেশের অধিকাংশ জনগন তাদের সাথে একাত্ম ঘোষনা করে। ডঃ ইয়াজ উদ্দিনের  তত্ত্বাবধায়ক সরকারও অবরোধের বিপক্ষে কঠোর অবস্থানের ঘোষনা দেন। এতদ্ব্য সত্যেও  অবরোধে পুরো ঢাকা- সারাদেশ থেকে বিছিন্ন হয়ে পড়ে। মহল্লা  মহল্লায় আওয়ামী লীগের কর্মীদের সাথে পুলিশের সংর্ঘষ শুরু হয়ে যায়। ৮ জানুয়ারী পরিস্থিতি মারাত্বক আকার ধারন করে। ফলে আন্দোলনরত জনতার উপর পুলিশ ব্যাপক লাটিচার্জ ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। শহীদ নূর হোসেন চত্বরে মহাজোটের এক সমাবেশে তোফায়েল আহম্মদ, রাশেদ খান মেনন, নূরুল ইসলাম নাহিদ, হাসানুল হক ইনু, দীলিপ বড়ূয়াসহ অনেক নেতার উপর পুলিশ নির্বিচারে লার্ঠি চার্জ করে। এই রুপ পরিস্থিতিতে  আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের আান্ডার সেক্রেটারী নিকোলাস বার্নস প্রধান উপদেষ্ঠাকে সব দল নির্বাচনে অংশ গ্রহনে একটি অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচনের আহব্বান জানান। ৯ জানুয়ারী বেশ কিছু পশ্চিমাদেশ এক দরফা নির্বাচন এড়াতে সক্রিয় হয়ে উঠলেও সেনাবাহিনী পরোয়ানা ছাড়াই গন-গ্রেফতার চালিয়ে যায়।
১০ জানুয়ারী অবরোধ কর্মসূচীর শেষ দিনে পল্টনের এক বিশাল জনসভায় শেখ হাছিনা, ডঃ কামাল হোসেন, বদরুদ্দোজা চৌধূরী, কনের্ল (অব:)অলি আহাদ, এইচ. এম এরশাদ ঐক্যমতে ২২ জানুয়ারীর নির্বাচন প্রতিহতের ঘোষনা দেন। সেই লক্ষ্যে ১৪, ১৫, ১৭, ও ১৮ই জানুয়ারী দেশ ব্যাপী সবার্ত্মক অবরোধ এবং ২১ ও ২২ জানুয়ারী দেশব্যাপী হরতালের ঘোষনা দেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও পরিস্থিতি আচর করে (এন.ডি.আই, কমনওয়েলথ ও ইইউ) এক যোগে নির্বাচন  পর্যবেক্ষনের আস্বীকৃতি জানায়।
এই পরিস্থিতিতে কুমিল্লার চান্দিনায় এক জনসভায় বি.এন.পি তথা ৪দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া স্পষ্ট ঘোষানা করেন ‘যে কোন মূল্যে ২২ জানুয়ারী নির্বাচন হতে হবে। দেশের এইরুপ ভয়ন্কর পরিস্থিতিতে ও আন্তজার্তিক চাপের মুখে ১১ জানুয়ারী বিকেল সাড়ে চারটায় প্রধান উপদেষ্ঠা প্রফেসর ডঃ ইয়াজ উদ্দিন আহম্মদ প্রধান উপদেষ্ঠার পদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং রাষ্ট্রপতি হিসাবে সমগ্রদেশে জরুরী অবস্থা জারি করেন। ১২ জানুয়ারী থেকে সগ্রমদেশ ব্যাপী জরুরী অধ্যাদেশ আইন কার্যকর হলে অন্যান্য উপদেষ্ঠাবৃন্দ পদত্যাগে বাধ্য হন। (চলবে---)

133
Story, Article & Poetry / তবুও আশা থাকে!!!
« on: August 16, 2014, 04:09:43 PM »
তবুও আশা থাকে!!!

ইউরোপের ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শক্তিধর রাজা চতুর্দশ লুই ‘রাজ-শাসনে- ক্ষমতার গর্ব করে বলতেন ‘রাজাকে মান্য করাই প্রজার প্রথম ও প্রধান কাজ’। পরবর্তীতে তার বংশধর ষোড়শ লুই আরও একধাপ এগিয়ে বলতেন ‘রাজার ধর্মই প্রজার র্ধম’। কিন্তু  শেষাব্দি তাদের অপরিসীম ক্ষমতা ও আত্ম-কেন্দ্রীক চিন্তাধারার স্ব-মূল উৎপাটন হয়েছে ‘ফরাসী বিপ্লবের বদৌলতে।

ফরাসী বিপ্লবের জনক মুক্তচিন্তা ও মানবতাবাদের মূর্তপ্রতীক, জন রুশো ও ভলতেয়ারের কলমের অঁচরে ষোড়শ-শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ স্বৈরাচার, গোটা ইউরোপের অন্যতম শ্রেষ্ঠ শক্তিশালী-ক্ষমতা-লিপ্সু  লুই-বংশ; মানবতার-বানের পানিতে ধূঁয়ে মোছে পরিস্কার হয়ে গেছে। পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ মানবতাবাদী ও গনতন্ত্রের প্রবাদ পুরুষ জন রুশো ও ভলতেয়ারের জনক্যালন মূখী এই চিন্তাধারা প্রমান করেছে ‘মানবাধিকার প্রতিষ্ঠাই’ প্রস্ফুটিত জীবন বিকাশের শ্রেষ্ঠ মাধ্যম।

একথা আজ সর্বজন বিদূত যে, বহু প্রচীনকাল থেকেই আমাদের এই ভারতীয় ভু-খন্ডে একশ্রেণীর অতিকথন ও পেশি শক্তিতে বলীয়ান মানুষের উন্মেষ ঘটেছে যারা ছলচাতুরি কিম্বা মিথ্যা পান্ডিত্যের জ্ঞান দ্বারা খেটে খাওয়া সাধারন মানুষের উপর আধিপত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্ঠা করেছে এবং অনেকাংশেই সফল হলেও শেষাব্দি বিফল হয়ে-ছিটকে পড়েছে ইতিহাসের অতল গহব্বরে। এই ক্ষেত্রে আমাদের এই ফোরামটিও একটি অনন্য উদাহারন। এখানে পোষ্টকারী কয়‘জন লেখককে স্বকীয়তা আছে তা ভাববার বিষয়!! তার চেয়ে বেশী ভাববার বিষয় ফোরাম সৃষ্টিকারী কর্তপক্ষকে নিয়ে। তারা নকল পোষ্ট সংগ্রহ করতে ইচ্ছুক?? নাকি স্বকীয় বিবেক সৃষ্টি করাই উদ্দেশ্য!

আধুনিক গনতান্ত্রিক যুগেও আমরা বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় কাঠামো  কিম্বা সামাজিক রীতি-নীতিতে এই অদৃশ্য অপ-শক্তির নিয়ন্ত্রন লক্ষ্য করছি এবং এই শ্রেণীর বহু মাত্রিক অনাগুনায় সমাজ বা রাষ্ট্র অপরীসিম ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে। তা সত্যেও এক শ্রেণীর সরকারী দালালদের পৃষ্ঠপোষকতায় এই অদৃশ্যশক্তি ক্রমে ক্রমেই সমাজ কিম্বা রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রনের ভূয়াঁ-ফোর হয়ে উঠছে। ফলে রাষ্ট্রীয় জীবন থেকে শুরু করে সংখ্যানুক ক্ষুদ্র পারিবারিক জীবনও বঞ্চনার স্বীকারের সর্বনিন্ম স্তরে অবস্থান নেমে এসেছে।

অনৈতিক-কর্ম, ক্ষমতার-অপব্যবহার, দুর্নীতি, লুটতরাজ, ভন্ডামী, ঘুষের মহুরা চলছে রাষ্ট্রতন্ত্রের পৃষ্ঠপোষকতায়। যার প্রত্যক্ষ ফলাফলে জীবন জীবনের কাছে হয়ে উঠছে অসহনীয়-পদধূলীত এবং রং-বানিজ্যের খেলাঘর। চাটুকার সরকারী আমলা ও দলবাজরা দেশের উন্নতির নাম করে লুটে নিচ্ছে নিপীড়িত অসহায় গণ-মানুষের সর্বশেষ সম্বলটুকুও। তা‘হলে রাজনীতিক বা রাষ্ট্র দিয়ে আমাদের লাভ কোথায়?? বা আদিমতায় ফিরলে অসুবিধা কি?? হাজার বছরের শিক্ষা-গবেষণায় কি পেলাম?? কেন আমাদের শিক্ষার দরকার?

জীবন-মানের এই খেলায় ক্রমে ক্রমেই অসহিষুণ হয়ে উঠছে ‘ব্যক্তি জীবন’। লুটেরাদের হাত থেকে মুক্তির অভিপ্রায়ে জীবন, জীবনের কাছে প্রশ্ন রাখছে জিগাসার!! আত্ম-চিৎকারে মুক্তি চাচ্ছে শোষীত শ্রেনীর লৌহ-কপাটের পিঞ্জর থেকে। মুক্তি চাই? মুক্তি চাই? মুক্তি-ই সর্বজনীন। কবির ভাষায় ‘ আশায় বাদিনু এখেলা ঘর--------।

134
পুঁজিবাদীদের নতুন সমীকরনের বিষ ফোড়ঁন ‘মুক্তবাজার অর্থনীতি’

দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সামনে এগিয়ে চলা দিকে দিন দুঃস্বাদ্য হয়ে-ই চলেছে। তাদের জীবন ভাজের প্রতি পদে পদে মৃত্যুর ফ্্াঁদা পাতা। ‘ব্যক্তি’ কিম্বা ‘রাষ্ট্র’ উভয় ক্ষেত্রেই কথাটি ‘ধ্রব; সত্য। আধুনিক সমাজের স-চতুর পুজিঁবাদীরা অথনৈতিক মুক্তির কথা বলে অযথা ‘মুক্তবাজার অর্থনীতির’ ধোঁয়া ছড়াচ্ছে-অনেকটাই চাঁেদ যাওয়ার স্বপ্ন দেখাচ্ছে-ডোঙ্গা নৌকাকে সম্বল করে। এই সকল দরিদ্র জনগোষ্ঠিকে নিয়ে পুজিঁবাদী চিন্তাবিদদের এমন নতুন সমীকরনের ফলে দরিদ্ররা আরও অসহায় হয়ে সর্বস্য হারিয়ে রাস্তায় নামছে অকেকটই চৈত্র মাসের ডাক ঢোল কিম্বা আমড়া কাঠের ঢেকিঁর হয়ে।

ফলে লুটেরা পুজিবাদীরা এবং তাদের তাবেদার দালাল চেঁটিয়ারা সস্থীর নিঃস্বাস নিয়ে সুখের হাঁসি হাসছে- আজীবন আধিপত্য টিকিয়ে রাখার আনন্দে। দরিদ্র দেশ-গুলোর শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত নীতি আদর্শহীন ও ক্ষমতা লিপ্সু সরকাররাও কম যাচ্চে না। এই রুপ অনৈতিক প্রতিযোগিতার ফলে রাজনীতিতে খুব দ্রুতই নেমে আসছে তথাকথিত ‘কালো বিড়ালের’ থাবা।

যুগ যুগ ঐতিহ্যের মেধাবী জীবন দর্শন ‘রাজনীতি’ সমাজনীতি, অর্থনীতি আস্তে আস্তে দখলে চলে যাচ্ছে অশিক্ষিত, ভন্ড, দুর্বৃত্ত, দলকানাদের হাতে। অনেকটা লাভের গুড় পিপিলিকায় খাওয়ার মত। নীতি-আদর্শ বিবর্জিত ‘রাজনীতি’ পেশিশক্তি ও অর্থশক্তিকে ভর করে মানবতাকে ছুড়ে ফেলছে ডাষ্টবিনের নোংরা ড্যামে। অথচ রাজনীতির সংজ্ঞায় বলা হয়েছে politic is the public service for all kinds of national Interest.

আমাদের দেশের অনেক বুদ্ধিজীবিরাই মনে করেন ‘মুক্তবাজার অর্থনীতির ফলে আমরা দরিদ্ররা আমাদের উৎপাদিত সস্তা পন্য গুলোকে বিশ্ববাজারে অতি সহজেই রফতানী করতে পারছি। মেনে নেওয়া যায় একথার সততা আছে। কিন্তু প্রশ্ন থাকছে উৎপাদিত পণ্যের মালিক দরিদ্র কৃষক কি পাচ্ছে?

ধরা যাক আমাদের দেশে তৈরী পোষাক শিল্পের কথা । বাংলাদেশে একটি পোষাক তৈরী করতে সর্বসাকুল্যে খরচ পড়ে মাত্র ১.৫ ডলারের মত। বিদেশে এই পোষাকটি কমপক্ষে ২০ ডলার বিক্রি হলেও তৈরী কারক দরিদ্র শ্রমিক তার ন্যায্য পাওয়ানা থেকে ক্রমাগত বঞ্চিত হয়েই চলেছে মালিকদের ছলচাতুরীর কারনে। অথচ অনাথ-দরিদ্র-অসহায় এই সকল শ্রমিকের তৈরী রক্তমিশ্রিত পোষাক বিক্রি করে লাভ পাচ্ছে সেই পুজিঁবাদীরা ও তাদের দোসর স্বদেশী চেটিয়া পুজিবাদীরা (মালিকরা)।

পরিসংখ্যানে দেখা গিয়াছে বাংলাদেশের প্রায় ৯০ লাখ লোক বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শ্রম বিক্রি করছে। এই সকল শ্রমিকরা মানবেতর জীবন যাপন করলেও নীতি-আদর্শহীন সরকার কোন সুনিদিষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে না ববং বৈদেশিক ‘রেমিটেন্সের’ কথা বলে দুধের নহর তুলে শ্রমিকদের উপার্জিত অর্থের উপর বিরাট অংকের কমিশন খাচ্ছে যা অতীব লজ্জাজনক।

স্বাধীনতাত্তর কাল থেকেই পুজিঁবাদী ও চেটিয়া পুজিবাদীদের সমর্থন পোষ্ট শাসন জাতীয় উন্নয়নের কথা বলেও দিকে দিন সরকারী তহবিল থেকে কোটি কোটি টাকা লুট পাট করেই চলেছে এবং একশ্রেণীর ফ্যাসীবাদীর সৃষ্টি করছে যারা সরকারকে অকুন্ঠ সমর্থন দান করছে। সরকারের এই ভ্রান্ত নীতির ফলাফলে দেখা যাচ্ছে; নিত্তি-নতুন ধনিক শ্রেনীর উত্থান যা কালের ইতিহাসকেও হার মানাচ্ছে।

সরকারী সমর্থনে ধারাবাহিক লুট-পাটের এই স্বরুবরে ক্রমাগত রাজার ছেলে রাজা, মন্ত্রীর ছেলে মন্ত্রী, শিল্পপতির ছেলে শিল্পপতি বনেই চলেছে। সাম্যবাদীর অনেকে মনে করেন ‘অবাদ বানিজ্য নীতির’ আরেক নাম ভাগ-বাটোয়ারার পয়ঁতারা। এই নীতিতে শিল্পকারখানা গুলোতে চলছে মালিকানার নব-উলংগ নৃত্য এবং শ্রমিক নিপীড়নের; ইতিহাসের স্বরনীয় নিকৃষ্ট উদাহারন।

আধুনিক কালের আকাশ সংস্কৃতির প্রভাব বা ডিজিটাল দেশ গড়ার স্বপ্ন ‘কাকের ময়ুর সাজ সমতুল্য’। এই সকল স্লোগানের পিছনে রয়েছে আধিপত্যকামীদের সুচারু ‘রাজনৈতিক খেলা’। দরিদ্র মানুষদের হাজার বছরের কৃষ্টি-কালচার, সমাজ-সংস্কৃতি, ধমীয়-আচার, রীতি-নীতি ধ্বংশ ও নুন্যতম্য আর্থিক সমর্থকে পুঙ্গ করে নব উদ্দ্যামে পুজিবাদীবাদ প্রতিষ্ঠা করা।

তবে উপরোক্ত সকলই র্স্বাথক ও সফল সম্ভব!!! যদি একটি ‘সচেতন জাতি’ সৃষ্টি করা সম্ভব হয়। আমরা জন্মগত ভাবে সুবিধা ভোগী শ্রেনীর বিরুদ্ধি। বঞ্চনার জীবনের শেষ ধাপটি পযর্ন্তও আমরা সমতা চাই? জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের মৌলিক অধিকার চাই। বাচার মত বাঁতে চাই। পুজিবাদীদের বিনাষ চাই।।।

135
‘দেনা-পাওনার জীবনে’ আনন্দ-মূখর আরও একটি দিন ‘ঈদ-উল আযাহা’-২০২১ ইং কেঁটে গেল গত ২১শে জুলাই রোজ বুধবার। যদিও এই আনন্দ করোনানামক মরণব্যাধির যাতাকলে চাপা পড়ে বির্দীর্ণ তবু হাসিঁকান্নার দুনিয়ায় গরিবের ঈদ- আনন্দ জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণের স্বাস-প্রস্বাস। কর্ম-ব্যস্ত জীবনে, ঈদের এই ক্ষণিক আনন্দ অনেকের কাছেই স্বর্গময় সুখ তুল্য।

একথা সত্য যে, ঈদ পালনে কর্ম-ব্যস্ত প্রতিটি শহরমূখী মানুষ তাদের ঘ্রামাক্ত দেহ নিয়ে ছুটে চলে যান জন্মের শিকড়ে ‘শান্তির নীড় ছোট ছোট গ্রাম গুলোতে’ প্রিয়জনের মূখ দর্শনের জন্য। এক যুগ-দুই যুগ পর দেখা অবহেলিত অনাদরের-সেই মুখখানা কারও কাছে হয়ে উঠে স্বর্গের বাতায়নসম। কোন কোন ক্ষেত্রে বয়োঃবৃদ্ধ বাবা-মা, দাদা-দাদী কিম্বা নানা-নানী তার একমাত্র সহায়কে কাছে পেয়ে নব-জাতক শিশুর মত সোহাগে কেঁদে উঠেন ‘-অত দিনে আমার খোঁজ নিলি বাবা’- এই সুরে। শুরু হয় আদর-সোগাহের মান-ভাঙ্গনীর পালা। 

বিশেষ করে নিন্মবৃত্ত ও নিন্ম মধ্যবৃত্তদের কাছে ঈদ মানেই স্বর্গময় আনন্দের ছোঁয়া। ঈদের দুই-একদিনের আনন্দ যেন, খড়স্রোত নদীর প্রবাহে মলিন হয়ে যায় মূর্হূতের মধ্যে। আবার এই ক্লান্ত, পরিশ্রমী, সুবিধা বঞ্চিত, আনাথা শ্রেনীর মানুষ গুলোর মনের আবেগ ফুরাতে-না-ফুরাতেই পেটের টানে আবার ফিরে আসতে হয় শহরের কর্মময় রোদ্র তপ্তের চির অব্যস্থ্য বাস্তবতায়। এ যেন কবি কাজী নজরুলের ‘প্যাঁচার সুখ-দুঃখের কল্প-কাহিনী’। অবশ্য অভিজাত শ্রেনীর কাছে ঈদের আনন্দ অনেকটাই ‘পান্তা ভাতে ঘি ঢালার মত’।

এই শ্রেনীর মানুষেরা অনেকটাই টাকার ‘গোলাম’। ওদের জীবন ঘড়ি চলে টাকার সেকেন্টে। টাকার নেশায় তারা দয়া-মায়া বঞ্চিত। তারা অর্থের  কাছে জীবন বিক্রি করে শূন্য পাত্র হাতে চাদেরঁ আলোয় সুখ-খোঁজে। এর ফলাফলে দেখা যায় কোটিপতি বয়োঃবৃদ্ধ পিতা-মাতাকে শেষ বয়সে আশ্রয় নিতে হয় অনাথ আশ্রমে কিম্বা  মেনে নিতে হয় পৃথিবীর নিকৃষ্ঠতম যন্ত্রণা দায়ক মৃত্যূকে। ছেলে-পিতা-মাতা, কিম্বা-পিতা-মাতা ছেলের মুখে দেখা থেকে বঞ্চিত হন মৃত্যৃ নামক কঠিন সময়টিতেও। তাদের কাছে ঈদ কেন? কোন আনন্দই প্রশান্তিময় নয়।

জীবন বঞ্চনার ইতিহসে আমরা অসহায়-দরীদ্ররা কালের স্বাক্ষী। ঈদ মানেই আমাদের কাছে গ্রামে ফেলে আসা বয়োঃবৃদ্ধ মা-বাবা কান্নাভরা আদর, সোহাগের সুরধ্বনি। কিম্ব ছোট বেলার মায়ের ‘আচঁলে মুখ মুছার গল্প’। তাই ঈদ মানেই আমার মায়ের স্বর্গময় সুখের হাসিঁ; মাগো আমি তোমায় ভালবাসী।

Pages: 1 ... 7 8 [9] 10 11 12