Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Topics - shaiful

Pages: 1 2 [3] 4
31
আমরা হাত ধুচ্ছি, বাড়িতে থাকছি, বাইরে গেলে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখছি। করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে আর কী কী করতে পারি? জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে মুখে স্পর্শ ঠেকাতে পর্যাপ্ত কিছু করা হচ্ছে না। মুখে হাত দেওয়ার বিষয়টি ঠেকানো গেলে করোনাভাইরাস সংক্রমণে খুব বড় ব্যবধান তৈরি হতে পারে।

যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের সেন্টার ফল বিহেভিয়র চেঞ্জের পরিচালক সুজান মিচি বলেন, এ চ্যালেঞ্জ সহজে উতরে যাওয়া যায়। অনেক বেশি কিছু করার চেয়ে কিছু না করা অনেক কঠিন। নিয়মিত হাত ধোয়া, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সহজ হলেও মুখে হাত দেওয়া ঠেকানো অনেক সময় কঠিন বলে মনে হতে পারে।

বার্তা সংস্থা সিএনএন এক প্রতিবেদনে বলেছে, নানা কারণে মানুষ মুখে হাত দিতে পারে। দাড়ি কামানো, অঙ্গভঙ্গি বা সাধারণ চুলকানিতেও মুখে হাত চলে যেতে পারে। মানসিক চাপের সময় মুখে হাতের স্পর্শ আরামদায়ক মনে হতে পারে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি ঘণ্টায় ২৩ বার মুখে হাত দেয় মানুষ।

মজ্জাগত এ অভ্যাস দূর করতে সুজান মিচি সচেতন প্রচেষ্টার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ‘আপনার হাত সব সময় কাঁধের স্তরের নিচে রাখুন এবং আপনার মুখ স্পর্শ করার তাগিদকে প্রতিরোধ করতে নিজেকে প্রশিক্ষণ দিন।’

মুখমণ্ডলকে চিকিৎসকেরা টি-জোন বলে থাকেন। করোনাভাইরাস সংক্রমণের জন্য টি–জোনের চোখ, নাক ও মুখ মূল পথ। বাতাসে ড্রপলেটের মাধ্যমে এবং সংক্রমিত পৃষ্ঠ ও বস্তু, যেমন: মোবাইল ফোন, গাড়ির চাবি, দরজার হাতল বা এলিভেটর থেকে এটি ছড়াতে পারে।

ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের হেলথ সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক রবার্ট ওয়েস্ট বলেন, ‘আপনি যদি কখনো মুখে হাত না দেন, তবে হাত ধুয়েছেন কি না, তা ব্যাপার নয়। মুখে হাত না দেওয়ার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ এ কারণে যে আপনার হাত শ্লেষ্মা ঝিল্লির (মিউকাস মেসব্রেন) সংস্পর্শে আসতে পারে। এই শ্লেষ্মা ঝিল্লি দেহে ভাইরাসের প্রবেশের পথ হিসেবে কাজ করে।’

যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসা ত্রাণ গ্রুপ ‘ফ্লোটিং ডক্টরস’ ইতিমধ্যে ‘ডোন্ট টাচ ইওর ফেস’ নামের কর্মসূচি চালু করেছে, যাতে মানুষের মুখ স্পর্শ করার শারীরিক ও মানসিক অভ্যাস ভাঙার অনুরোধ করা হচ্ছে।

মুখে হাত দেওয়া ঠেকানোর উপায় হিসেবে অভিনব এক পরামর্শ দিচ্ছে ফ্লোটিং ডক্টরস। তারা বলছে, মানুষ যখন বাইরে যাবে, তারা যেন মাথায় ছোট জাল ব্যবহার করে। মশা থেকে রক্ষা পেতে যেমন মশারি ব্যবহার করা হয়, এ জাল অনেকটাই সে রকম। মাথা থেকে গলা পর্যন্ত জাল দিয়ে ঢাকা থাকে।

ফ্লোটিং ডক্টরসের প্রতিষ্ঠাতা ড. বেন ল্যাবোর্ট বলেন, ‘এ জাল ব্যবহার করা স্বস্তিকর। জাল ব্যবহার করে দেখাও সহজ। এ জাল ব্যবহার করলে মুখে হাত দেওয়ার ব্যাপারে মন সচেতন থাকে। একটি বাধা সামনে থাকে বলে মুখে হাত যায় কম। এটি সব জায়গায় কম খরচে পাওয়া যায়। সংক্রমণ প্রতিরোধে সহজে এ পদ্ধতিটি অনুসরণ করা যেতে পারে। এ ধরনের শারীরিক বাধা দারুণ কার্যকর।

রবার্ট ওয়েস্ট বলেন, জালের পাশাপাশি মুখে হাত দেওয়া ঠেকাতে মাস্ক কাজে লাগতে পারে। তবে এটা খোলা ও লাগানোর সময় মুখে বেশি হাত চলে যাওয়ার ঝুঁকিও থাকে।

বিশেষজ্ঞ রবার্ট ওয়েস্ট পরামর্শ দিয়েছেন, ‘মুখে হাত দেওয়া ঠেকাতে এর বিপরীত আচরণের কথা মাথায় আনতে হবে। অর্থাৎ, এক আচরণের বিরুদ্ধে অন্য আচরণের অভ্যাস তৈরি করতে হবে। মুখে হাত দিতে উদ্যত হলেই তখন তা বাদ দিয়ে হাতের উল্টো দিক চুলকাতে শুরু করতে হবে। এতে আচরণ আরেক দিকে ঘুরে যাবে। আপনি যা করার চেষ্টা করছেন, তা হলো নিজেকে সচেতন করে তোলার কাজ। তবে মুখ চুলকানোর মতো বিষয়টি সহজে দূর করা যায় না। আঁচড় দেওয়ার জন্যও চুলকানির জায়গাগুলো তৈরি হয়। সাধারণত নানা ধরনের জীবাণু মুখের ওপর পড়ে এবং চামড়ার নিচে চলে যায়, যা আমাদের জন্য দারুণ বিপজ্জনক হয়ে ওঠে।’

ওয়েস্ট বলেন, যখন চুলকানি ওঠে, তখন খেয়াল রাখতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে চুলকাতে শুরু করা ঠিক হবে না। খেয়াল করে দেখে চুলকানির জায়গায় হাত নিয়ে যাওয়া মানেই বিপদ। এ বিষয়টি নিয়েই এখনো মানুষকে সচেতন করার কোনো কাজ করা হয়নি। ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে আচরণ পরিবর্তন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

রবার্ট ওয়েস্ট আরও বলেন, ‘আপনার যদি বড় সমস্যা থাকে তবে সমাধানটাও বড় হবে। কিন্তু মুখ স্পর্শ করার একটি তুচ্ছ বিষয়। এ সামান্য বিষয়টি পরিবর্তন করতে পারলেও বড় পার্থক্য দেখা যাবে। মানুষকে এটা মাথায় নিতে হবে যে মুখ এমন একটা জায়গা যা আপনি স্পর্শ করতে পারবেন না। মানুষের সামনে যেমন আপনি দিগম্বর হতে পারেন না, তেমনি জনসমক্ষে মুখে হাত দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। এতে আপনারই লাভ।’

সূত্র: প্রথম আলো

32
ধরা যাক, আপনার একটু গলা ব্যথা করছে। সঙ্গে সামান্য শুকনো কাশি। শরীরটাও একটু গরম মনে হচ্ছে। অন্য সময় হলে আপনি নিশ্চয়ই একে মৌসুম বদলের সময়কার সমস্যা বলে উড়িয়ে দিতেন। কিন্তু করোনাভাইরাসের সংক্রমণের এই সময়ে এসব সমস্যায়ও অনেকে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। গবেষকেরা বলছেন, অতিরিক্ত চাপ ও উদ্বেগ শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয়, আত্মবিশ্বাসে ভাঙন ধরায়। কাজেই যত সত্য জানবেন, তত সতর্কতা বাড়বে, আর মোকাবিলাও করতে পারবেন ভালোভাবে।

১. সংক্রমণ হলে কি মৃত্যু অনিবার্য?


প্রতিদিন শত শত মৃত্যুর খবর আমাদের ভয় ধরানোর জন্য যথেষ্ট। কিন্তু মনে রাখতে হবে, বিশ্বজুড়ে ৬৬ থেকে ৮০ শতাংশ কোভিড-১৯ রোগী মৃদু বা সামান্য উপসর্গ দেখা দেওয়ার পর সেরে উঠছেন। ৪ থেকে ৬ শতাংশ মানুষের অবস্থা জটিল হতে পারে, নিবিড় পরিচর্যার প্রয়োজন হতে পারে। কাজেই ভালো থাকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। যদি অসুস্থ বোধ হয়, তবে নিজেকে অন্য সবার কাছ থেকে আলাদা করে ফেলুন। পুষ্টিকর সুষম খাবার খান। পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে অনলাইনে বা ফোনে যোগাযোগ অব্যাহত রাখুন। উদ্বেগ কমাতে বই পড়ুন বা গান শুনুন। চিকিৎসকের পরামর্শ অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলুন। আর নিয়মিত নিজের উপসর্গগুলো লক্ষ করতে থাকুন।

২. উপকার পাওয়া যায়, এমন কোনো ওষুধ আছে?

নভেল করোনাভাইরাস একটি নতুন ভাইরাস। এখন পর্যন্ত এর কোনো কার্যকর ওষুধ বা টিকা নেই। তবে বিজ্ঞানীরা এর টিকা আর জুতসই ওষুধ খুঁজে বের করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। তাই নানা ধরনের চটকদার বিজ্ঞাপনে বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্টের ছলনায় ভুলবেন না। মনে রাখতে হবে, দীর্ঘমেয়াদি ও নির্ভরযোগ্য ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বা গবেষণা ছাড়া কোনো ওষুধ কার্যকরী কি না, তা জানা যায় না। আর এমন কিছু পাওয়া গেলে নিশ্চয়ই চিকিৎসকেরা আপনার ওপর তা যথাসময়ে প্রয়োগ করবেন। তাই আগে থেকে এসব নিয়ে চিন্তা করার কিছু নেই। বরং নিজেকে আর পরিবারকে নিরাপদ রাখার দিকে নজর দিন, সতর্ক থাকুন।

৩. আমার বয়স কম, চিন্তা কী?

বিশ্বজুড়েই অপেক্ষাকৃত তরুণেরা নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণকে সেভাবে গুরুত্ব দিচ্ছেন না, সামাজিক দূরত্বের নিয়মকানুন প্রায়ই মানছেন না। কেননা, তাঁদের ধারণা, এটা বয়স্কদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ রোগ। মনে রাখতে হবে, কেবল ষাটোর্ধ্ব বয়সই নয়, অন্তর্নিহিত কোনো রোগ বা রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থায় জটিলতার কারণে এই ভাইরাস যে কারও জন্য মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে। তা ছাড়া আপনি কোভিড-১৯ আক্রান্ত হলে প্রিয়জনদের জন্যও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারেন।

৪. আমার কাশিটা কি কোভিড-১৯–এর জন্য?

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, শুকনো কাশি, জ্বর, ক্লান্তি আর শ্বাসকষ্ট—এগুলো হলো কোভিড-১৯-এর মূল উপসর্গ। কারও কারও গায়ে ব্যথা, নাক বন্ধ, গলাব্যথা, ডায়রিয়া হতে পারে। এসব উপসর্গ দেখা দিলে ঘাবড়ে না গিয়ে আগে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন। প্রয়োজন হলে তিনিই আপনাকে পরীক্ষা করাতে বলবেন। পরীক্ষা হোক আর না হোক, নিজেকে আলাদা রাখুন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।

৫. মাস্ক পরে বাইরে গেলে কি সমস্যা হবে?

অনেকেই বাড়িতে থাকতে চাইছেন না। ভাবছেন মাস্ক পরে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়ে একটু বাইরে যাই, বন্ধুদের সঙ্গে মিশি, হাঁটাহাঁটি করি। মনে রাখতে হবে, মাস্ক আপনাকে পূর্ণ সুরক্ষা দিতে পারবে না। ভাইরাসটি বাতাসে ভেসে বেড়ানোর চেয়ে বরং বস্তু বা তলে লেগে থাকে বেশি। বাইরে যাওয়া মানে আপনি নিজের ও পরিবারের জন্য বিপদ ডেকে আনছেন। আপনার এই সামান্য ভুল সর্বনাশ ডেকে আনতে পারে। তাই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন। অত্যন্ত প্রয়োজন ছাড়া বাইরে যাবেন না।

৬. আমার অস্থির লাগছে

নানা উৎস থেকে নানা ধরনের খবর আর পরামর্শে আপনাকে অস্থির, ভীত আর উদ্বিগ্ন করে তুলতে পারে। কাজেই খুব বেশি খবর জানার প্রতি মনোযোগী না হয়ে পরিবারকে সময় দিন। ভালো কিছু করুন। দিনে এক বা দুবার নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্র থেকে খবর পাওয়ার চেষ্টা করুন।

মেডিসিন ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ

source: prothom alo

33
A Good CV/Resume / কীভাবে সিভি তৈরি করব?
« on: September 23, 2018, 06:05:10 PM »
বিশ্ববিদ্যালয়-জীবনের শুরু থেকেই নানা প্রয়োজনে জীবনবৃত্তান্ত বা সিভি তৈরি করতে হয়। আর বৃত্তি বা কোনো সভা-সম্মেলন-ফেলোশিপে অংশগ্রহণের জন্যও এখন সিভি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নিজের পরিচয়, অর্জন, যোগ্যতার কথা সংক্ষেপে কীভাবে তুলে ধরব? সিভিতে কী থাকবে আর কী থাকবে না? পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) সহকারী অধ্যাপক ও ব্যবসায় যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ সাইফ নোমান খান। নমুনা হিসেবে এখানে বাংলায় লেখা সিভি তুলে ধরা হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে যেহেতু ইংরেজি ভাষায় সিভি লিখতে হয়, তাই একই নিয়ম ইংরেজি ভাষার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।

সিভিতে যা যা থাকবে

নাম ও যোগাযোগের ঠিকানা

সিভির প্রথম অংশে পুরো নাম লিখতে হবে। কোনোভাবেই ডাকনাম বা ছদ্মনাম লেখা যাবে না। মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক বা বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদপত্রে যে নাম লেখা আছে তা-ই লিখতে হবে। নামের আগে মিস্টার বা মিসেস ব্যবহার করা যাবে না।

ঠিকানা লেখার ক্ষেত্রে চিঠিতে যোগাযোগ করা যায়, এমন ঠিকানা স্পষ্ট কিন্তু সংক্ষিপ্ত আকারে লিখতে হবে। যোগাযোগের জন্য দিতে হবে মুঠোফোন নম্বর। অপ্রয়োজনে ২-৩টি ফোন নম্বর লেখা যাবে না। আর বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে ই-মেইল ঠিকানার ক্ষেত্রে। iamgreat@gmail. com বা sweetdreams@ymail. com—এ ধরনের হাস্যকর ই-মেইল ঠিকানা ব্যবহার করা যাবে না। নিজের নামের সঙ্গে মেলে এমন সংক্ষিপ্ত ই-মেইল ঠিকানা তৈরি করে সিভিতে ব্যবহার করতে হবে।

লিংকড–ইন প্রোফাইলের আইডি ব্যবহার করতে পারেন। প্রয়োজন না হলে ফেসবুক আইডি যুক্ত না করাই শ্রেয়। তবে ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট কিংবা নিজ কাজের পোর্টফোলিও প্রকাশিত হয়েছে এমন ওয়েবসাইটের নাম লেখা যেতে পারে।

ছবি

সিভিতে যে ছবি যুক্ত করবেন তা যেন সাম্প্রতিক সময়ে তোলা হয়। ছবির পটভূমি এক রঙের হতে হবে। চুল কিংবা দাড়ি পরিপাটি থাকতে হবে ছবিতে। চেহারা বোঝা যায় এমন যেকোনো ছবি ব্যবহার করতে পারেন।

পেশাগত লক্ষ্য

সিভিতে অবশ্যই আপনার পেশাগত লক্ষ্য লিখতে হবে। ভাষা হবে সংক্ষিপ্ত ও প্রাঞ্জল, গোছানো ভাষায়। যদি ইংরেজিতে লেখেন, বানান বা ব্যাকরণ যেন ভুল না হয়। যে পদে আবেদন করবেন তার সঙ্গে সম্পৃক্ত লক্ষ্য লিখতে হবে। আজগুবি, অপ্রাসঙ্গিক কিংবা কাল্পনিক কোনো বাক্য লেখা যাবে না।

শিক্ষা

সদ্য যে ডিগ্রি অর্জন করেছেন, সেটা লিখতে হবে প্রথমে। কোন বিষয়ে, কোন অনুষদে পড়েছেন, কত সালে পরীক্ষা দিয়েছেন, গ্রেড পয়েন্ট বা ফলাফল কী ছিল, এসবও উল্লেখ করতে পারেন। এখনো পাস করে না থাকলে ‘পরীক্ষার্থী’ শব্দটি লিখুন। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় থেকে ক্রমানুসারে মাধ্যমিক পরীক্ষা পর্যন্ত ফলাফলের তথ্য লিখতে হবে।

একাডেমিক প্রকাশনা বা প্রকল্প

স্নাতকপর্যায়ে পড়াকালীন কোনো গবেষণা বা রিপোর্ট প্রকাশিত হলে তা লিখুন। প্রকৌশল পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা নিজের কোনো প্রকল্পের নাম যুক্ত করতে পারেন। যাঁরা ব্যবসায়ে প্রশাসনে পড়ছেন, তাঁরা ইন্টার্ন হিসেবে কাজ করলে তার রিপোর্টের নাম লিখুন। কোনো জাতীয় বা আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিলে তার সংক্ষিপ্ত তথ্য যুক্ত করুন।

পেশাগত অভিজ্ঞতা

সাধারণত স্নাতকপড়ুয়া বা সদ্য উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের সরাসরি পেশাগত অভিজ্ঞতা থাকে না। কিন্তু যে পদের চাকরির জন্য সিভি তৈরি করছেন, সেই সংশ্লিষ্ট কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে তা যুক্ত করুন। যেমন কোনো মেলায় বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করলে তা লিখুন বা কোনো কল সেন্টারে কাজ করে থাকলে তা-ও লিখতে পারেন। কোন পদে কাজ করেছেন, কত দিন করেছেন তা উল্লেখ করুন। কোনো সম্মেলন বা অনুষ্ঠানে আয়োজক হিসেবে কাজ করে থাকলে তা-ও লিখুন।

স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ

আপনি স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যে কাজ বা সংগঠনে যুক্ত তার তথ্য লিখতে হবে। কত দিন ধরে কাজ করছেন, কোন পদে কাজ করছেন তা লিখুন। প্রয়োজন হলে, প্রতিটি কাজের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত করে কাজের বর্ণনা দিন।

কর্মশালা ও প্রশিক্ষণ

বিশ্ববিদ্যালয়-জীবনে যেসব কর্মশালায় অংশ নিয়েছেন বা প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন তার তালিকা যুক্ত করতে হবে। চাকরির পদের সঙ্গে গুরুত্ব বুঝে কর্মশালা ও প্রশিক্ষণের তথ্য যোগ করুন। কর্মশালার নাম ও আয়োজকদের তথ্য সংক্ষিপ্ত করে লিখুন। ধরুন, আপনি বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে চাকরির জন্য সিভি তৈরি করছেন, তাহলে বিক্রয় ও বিপণন-সম্পর্কিত তথ্য যোগ করুন। অনলাইনের মাধ্যমে কোনো ডিগ্রি বা প্রশিক্ষণ নিলে তা-ও সিভিতে যুক্ত করুন।

ভাষা দক্ষতা

সাধারণভাবে বাংলাদেশে চাকরির আবেদনের জন্য বাংলা ও ইংরেজি জানা আবশ্যিক। ইংরেজি ভাষা দক্ষতা-সংশ্লিষ্ট কোনো পরীক্ষা—যেমন আইইএলটিএস বা টোয়েফলে অংশ নিলে তার স্কোর লিখুন। অন্য কোনো ভাষা জানলে সেটিও উল্লেখ করুন।

কম্পিউটার-দক্ষতা

যে পদের জন্য সিভি তৈরি করছেন, সেই পদের কথা মাথায় রেখে কম্পিউটার–দক্ষতা লিখতে হবে। এখন সব পর্যায়ের চাকরির জন্য মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, এক্সেল ও পাওয়ারপয়েন্ট জানাকে সাধারণ দক্ষতা হিসেবে ভাবা হয়। মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, এক্সেল ও পাওয়ারপয়েন্টের কাজ খুব ভালো জানলে তা অবশ্যই সিভিতে যুক্ত করবেন। ডেটা অ্যানালাইসিস, ম্যাক্রো কিংবা মাইক্রোসফটের কোনো প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকলে তা লিখতে পারেন। এ ছাড়া টেকনিক্যাল সফটওয়্যার যেমন ম্যাটল্যাব বা এসপিএসএস শেখা থাকলে সেটিও উল্লেখ করুন।

শখ ও আগ্রহ

নিজের দু-একটি আগ্রহ ও শখের কথা লিখতে পারেন।

রেফারেন্স

সদ্য স্নাতকদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরাই ভালো রেফারেন্স হিসেবে কাজ করেন। এ ক্ষেত্রে শিক্ষককে জানিয়ে তাঁর নাম ও পদবি ব্যবহার করুন। কখনো কখনো চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান থেকে রেফারেন্সে যাঁর নাম থাকে, তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাই সঠিক পদ ও পরিচয় ব্যবহার করুন। অন্য কোনো পেশার পরিচিত কোনো পেশাজীবীর নাম ও পদবি যুক্ত করতে পারেন।

অঙ্গীকারনামা

সিভিতে যুক্ত আপনার সব তথ্য সঠিক ও নির্ভুল তা লিখতে হবে। লেখার নিচে আপনার স্পষ্ট স্বাক্ষর থাকতে হবে। চাকরিদাতা আপনার তথ্য যাচাই করার আইনগত অধিকার রাখেন, তাই কোনো ভুল তথ্য দেবেন না।

 

মনে রাখা জরুরি

■ অনেকেই অন্যের জীবনবৃত্তান্ত প্রায় হুবহু অনুকরণ করে নিজের সিভি তৈরি করেন। এটা একেবারেই ঠিক নয়। চাকরিদাতারা কিন্তু সিভিতে চোখ বুলিয়েই ব্যাপারটা বুঝতে পারেন। অন্য কাউকে দিয়ে সিভি তৈরি করালেও সেটা ধরা পড়ে যায়। যে নিজের সিভি নিজে তৈরি করতে পারে না, একজন চাকরিদাতা কোন ভরসায় তাঁকে দায়িত্বশীল পদে নিয়োগ দেবেন? তাই জীবনের প্রথম সিভি নিজেকেই তৈরি করতে হবে। ইন্টারনেট ঘেঁটে দারুণ কিছু সিভির নমুনা পাওয়া যাবে। সেগুলো দেখে একটা ধারণা নিতে পারেন। তারপর নিজের সিভি নিজেই লিখুন। এখানে আমরা একটা নমুনা সিভি তুলে ধরেছি স্রেফ ধারণা দেওয়ার জন্য। কোনোভাবেই এটা হুবহু অনুকরণ করা ঠিক হবে না।

■ সিভিকে আকর্ষণীয় করে তুলতে অনুচ্ছেদ বা প্যারাগ্রাফের বদলে বুলেট পয়েন্ট ব্যবহার করতে পারেন। কখনোই ‘প্রথম পুরুষে’ সিভি লিখবেন না। যেমন ‘২০১৬ সালে আমি জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছি’ না লিখে বুলেট দিয়ে লিখতে হবে, ‘জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রথম, ২০১৬’। সংবাদপত্রের শিরোনাম যেমন স্পষ্ট ও সংক্ষিপ্ত হয়, তেমন করে তথ্য যুক্ত করতে হবে।

■ প্রথম সিভি তৈরির পর তা অভিজ্ঞ দু-একজনকে দেখিয়ে নেওয়া যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষক বা বিভাগের কোনো সিনিয়রের মতামত নেওয়া যেতে পারে।

■ সিভিতে কোনোভাবেই বানান ভুল করা যাবে না। বারবার মনোযোগ দিয়ে পড়ে, সম্পাদনা করতে হবে। সিভি যেন কোনোভাবেই দুই পৃষ্ঠার বেশি না হয়। এক পৃষ্ঠায় শেষ করতে পারলে ভালো।

■ একই সিভি অনেক জায়গায় জমা দেওয়া বা ই-মেইল করা ঠিক হবে না। চাকরি ও পদভেদে সিভির ভাষা পরিবর্তন করতে হবে। পেশাগত লক্ষ্য কিন্তু একেক পদের জন্য একেক রকম হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

■ এ-ফোর আকারের কাগজের মাপে সিভি তৈরি করতে হবে। চারপাশে ১ ইঞ্চি পরিমাণ ‘মার্জিন’ রাখতে হবে। সাদা কাগজে কালো কালিতে তথ্যগুলো লেখা থাকবে। সিভির পটভূমিতে অন্য কোনো রং ব্যবহার না করাই ভালো।

■ শুধু সিভি কোথাও জমা দেবেন না বা ইমেইল করবেন না। সিভির সঙ্গে ‘কভার লেটার’ যুক্ত করতে হবে। আপনি কেন চাকরির জন্য আবেদন করছেন, আপনি কেন যোগ্য, তা সংক্ষিপ্ত আকারে কভার লেটারে লিখতে হবে।

Source: https://www.prothomalo.com/education/article/1558674/কীভাবে-সিভি-তৈরি-করব

34
তরুণদের সঙ্গে প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের একটা সখ্য ছিল। কথার জাদুতে মানুষকে মুগ্ধ করতে জানতেন। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আমন্ত্রণে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের সামনে বক্তৃতা দিয়েছেন, অনুপ্রাণিত করেছেন। গত ৩০ নভেম্বর তাঁর মৃত্যুর পর থেকে ফেসবুকে, ইউটিউবে আলোড়ন তুলছে তাঁর এই বক্তব্যগুলো। তেমনই একটি বক্তৃতা আজ থাকল স্বপ্ন নিয়ের পাঠকদের জন্য। গত বছরের ৩০ জানুয়ারি ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ১৪ বছর পূর্তি উপলক্ষে এই বক্তব্য দিয়েছিলেন তিনি

শুভ সকাল। ট্রাস্টি বোর্ডের সম্মানিত চেয়ারম্যান জনাব সবুর খান, সম্মানিত ভিসি মহোদয় জনাব ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম, সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ, আমার সামনে হাজারো ছাত্রছাত্রী, সুধীমণ্ডলী। মানুষের জীবনে এমন কতগুলো সময় আসে, যখন কথা গুলিয়ে যায়। যখন সমস্ত ভাবনা আগে-পরে এক হয়ে যায়। আমার মনে হয় আজকে আমার জীবনে তেমনি একটি সকাল। যে সকাল বর্তমানের সঙ্গে অনেক বছর আগেকার দিনগুলোকে এক করে ফেলে।

আজ আমরা যে বয়সে যেখানে এসে দাঁড়িয়েছি, সেই জায়গা থেকে আমরা অনেক নিচে দেখতে পাই। যে জায়গাটি ওখান থেকে তোমরা দেখতে পাও না। সেই নিচে দেখার অভিজ্ঞতা একেকজনের একেক রকম। সে জন্যই বিভিন্ন শিক্ষক, বিভিন্ন মানুষ, বিভিন্ন গুণীজন, বিভিন্ন অভিজ্ঞজন তোমাদের সামনে আসেন, তোমাদের সঙ্গে তাঁদের জীবনের কথা বলেন, তোমাদের সঙ্গে তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা বলেন। সেই অভিজ্ঞতাগুলো, সেই জীবনের কথাগুলো তোমরা মনোযোগ দিয়ে শুনবে।

যেই পরিবার বা সমাজের যে স্তর থেকে আমরা আসি, সেই স্তরে সবাই যে খুব আত্মবিশ্বাসী হয় তা নয়। আমাদের মধ্যে একধরনের হীনম্মন্যতা সৃষ্টি হয়, আমাদের মধ্যে একধরনের দুর্বলতা সৃষ্টি হয়, আমাদের মধ্যে একধরনের কম আত্মবিশ্বাসের সৃষ্টি হয়। এই প্রতিষ্ঠানগুলো সেই আত্মবিশ্বাস তৈরি করে দেয়। সেই আত্মবিশ্বাসের জায়গাগুলো কিন্তু তোমাদের ধরতে হবে।

আমি জানি, এটাই ভাবা স্বাভাবিক। অনেক শিক্ষার্থী আছে যারা ভাবছে, আমার বন্ধু তো অনেক বড়লোক। আমার জীবন তো অনেক কষ্টের। ওকে দেখি ভালো ইংরেজি জানে, আমি তো ইংরেজি জানি না। ওকে দেখি ও অনেক স্মার্ট, আমি তো স্মার্ট না। ওকে দেখি আরও ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ে! কেউ নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটিতে পড়ে, কেউ প্রিন্সটনে পড়ে, কেউ বোস্টন ইউনিভার্সিটিতে পড়ে...তাদের সঙ্গে তোমাদের প্রতিযোগিতা। অতএব, জীবনটা সহজ নয়। জীবন একটা যুদ্ধক্ষেত্র। এই জীবনযুদ্ধে কী করে বাঁচবে? এই জীবনযুদ্ধে কী করে এগোবে?

আমি একটি কথাই বলছি। সবুর সাহেব বা টিচার যাঁরা আছেন, তাঁরা যদি আজকে এইখানে এত বড় স্বপ্নদ্রষ্টা হতে পারেন, আনিসুল হকের মতো একটি মধ্যবিত্ত ঘর থেকে উঠে আসা; যে একসময় মাইলের পর মাইল হেঁটে স্কুলে গেছে, মফস্বলের স্কুলে পড়াশোনা করেছে, মফস্বলের ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করেছে, তোমাদের মতো ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সুযোগ হয়নি, তোমাদের মতো এত ক্যাম্পাসে পড়ার সুযোগ হয়নি, সে-ই যদি ছোট্ট একটি মেয়র হতে পারে, তোমরা প্রত্যেকে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ছাত্র, সর্বশ্রেষ্ঠ নাগরিক হতে পারো। মনের মধ্যে আত্মবিশ্বাস রেখো।

আমি কিন্তু কোনো মিথ্যা কথা বলছি না!

জীবনে বড় বড় সংগ্রাম করে আমরা এসেছি। জীবনকে আমরা তখন দেখতে পেতাম না। তখন ইন্টারনেট ছিল না। আমাদের কাছে সারা পৃথিবী উন্মুক্ত ছিল না। আমরা জীবনকে দেখতে পেতাম না। তোমরা কিন্তু এখন জীবনকে দেখতে পাও। আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলো—আমিই পারব। মানুষ পারে না এমন কিছু নেই। মানুষের জন্যই বলা হয়, মানুষ স্বপ্নের সমান বড়। মানুষ কখনো কখনো স্বপ্নের চাইতেও বড়। সেই স্বপ্ন যদি তোমাকে ধরতে হয়, সেই স্বপ্ন দেখতে হবে।

আজ থেকে তিরিশ-চল্লিশ বছর আগে আমরা বা আমাদের মতো সবুর খান সাহেবরা, আমরা যারা একটু ভালো লেখাপড়া করেছিলাম, তখনো কিন্তু আমরা বেকার ছিলাম। আমিই দেড় বছর বেকার ছিলাম। আমিই খুঁজে খুঁজে বেড়িয়েছি যে কী করব। একবার ব্যবসা করি, একবার কাজ করি, এক বছরের জন্য চাকরি করি। সেই অনিশ্চয়তা তখন যদি থাকে, এখনো আছে। এবং এখন তোমাদের প্রতিযোগিতা কিন্তু ঢাকার অন্য কোনো ইউনিভার্সিটির সঙ্গে নয়। তোমাদের প্রতিযোগিতা তোমাদেরই অনেক ভাই-বোন, তোমাদেরই অনেক বন্ধুর সঙ্গে, যারা বিদেশের আরও ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে। কেউ প্রিন্সটনে পড়ছে, কেউ এমআইটিতে পড়ছে, কেউ ক্যালটেকে পড়ছে, কেউ করনেল ইউনিভার্সিটিতে পড়ছে। তাই বলে কি হারিয়ে যাব আমরা? আমরা কি প্রতিযোগিতা করে, সবুর সাহেব কি প্রতিযোগিতা করে আজকে এত বড় দুনিয়া তৈরি করেননি? আমাদের মতো সামান্য যারা মধ্যবিত্ত ঘর থেকে নিজেদের উঠিয়ে এনেছি, তারা কি সমাজে একধরনের নিজেদের পদাঙ্ক সৃষ্টি করিনি? আমরা যদি করতে পারি, তোমাদের মধ্যে যেই সুপ্ত সুযোগ আছে, তোমরা পৃথিবী জয় করতে পারো। সারা পৃথিবী জয় করতে পারো।

আমাকে যদি আজকে জিজ্ঞেস করা হয় তোমার জীবনের সবচেয়ে বড় শক্তি কী ছিল? আমি জানি না অন্য কে কী বলবে। আমি নিশ্চিত করে তোমাদের বলতে পারি, আমি যেকোনো জায়গায় বলব, যেকোনো পরিস্থিতিতে বলব, আমার জীবনের সবচেয়ে বড় শক্তি ছিল আমার মায়ের দোয়া। তোমাদের কাছে আজ এটা আবেগপ্রবণ কথা মনে হতে পারে। কিন্তু জীবনে যখন আমার জায়গায় আসবে অথবা আমাদের জায়গায় আসবে, তখন দেখবে ওটা কী শক্তি!

আমার কোনো কিছু হলেই আমি মায়ের পায়ের নিচে শুয়ে বলতাম, আমার গায়ের ওপর একটা পা রাখো তো। আর আমাকে একটা ফুঁ দাও। তো আমার জীবন এখনো ফুঁর মধ্যেই চলছে। আমি যখন মেট্রিক পরীক্ষা দিই, আগের রাতে আমার অনেক জ্বর। অনেক অনেক জ্বর, ১০৪ ডিগ্রি হবে। তো আমি সকালবেলা উঠে বললাম, ‘মা, আমি তো পরীক্ষা দিতে পারব না।’ আমার মা আর দশটা মায়ের মতো খুব শিক্ষিত নন। তো আমার মা বললেন, ‘এটা কি হয় নাকিরে বাবা? তুমি যদি এবার পরীক্ষা না দাও, তুমি তো এক বছর ফেল করে যাবে।’ আমি বললাম, ‘আমার তো কোনো উপায় নেই, আমি তো চোখে কিছু দেখছি না।’ তিনি অনেক দোয়াটোয়া পড়ে আমাকে একটা ফুঁ দিলেন। দিয়ে হাত ধরে বললেন, ‘চলো যাই।’ ৩ ঘণ্টার পরীক্ষা, আমি ২ ঘণ্টা দিয়ে বেরিয়ে গেলাম। বাইরে বিপর্যস্ত মা বসে আছেন, ছেলে না জানি কী করছে ভেতরে! বাইরে বেরোলাম, মা বললেন, ‘কী, পরীক্ষা শেষ হয়েছে? সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছ?’ আমি বললাম, ‘না, মাত্র ৩৪ নম্বরের উত্তর দিয়েছি।’

মা বললেন, ‘পাস কততে?’ আমি বললাম, ‘পাস তো তেত্রিশে।’

বললাম, ‘মা, তোমার ফুঁতে আর কোনো কাজ হবে না।’

বললেন, ‘আচ্ছা কাজ না হোক, আসো একটা ফুঁ দিই। এবার ফুঁটা একটু নামাজ পড়ে দিই।’ ওখানে দুই রাকাত নামাজ পড়লেন। একটা ফুঁ দিলেন সারা গায়ে।

বিশ্বাস করো, এটা হয়তো...হয়তো একধরনের কাকতালীয় ব্যাপার হতেই পারে, কিন্তু আমি আজও বিশ্বাস করি, চৌত্রিশে চৌত্রিশই পেয়েছিলাম।

আমার বাবা, যাঁর বয়স ৯৫ বছর। গত এক মাস ধরে যিনি খাট থেকে উঠতে পারেন না, তাঁকেও আমি স্বপ্ন দেখতে দেখি। আজ সকালে আমার বাবা বলেন, একটু দেশের বাড়িতে যাওয়া যায় না? আমি বলি, আমার বাবাকে তো হেলিকপ্টারেও নেওয়ার কোনো উপায় নেই। তার মানে কী? মানুষ মৃত্যুর আগের মুহূর্তেও স্বপ্ন দেখে। আর তোমরা কত ভাগ্যবান, তোমাদের স্বপ্নের সময় মাত্র শুরু হলো।

আমার বাবা বলতেন, মুরব্বিরা বলেন, তোমাদের টিচাররা বলেন, বড় করে স্বপ্ন দেখো। জীবনের চল্লিশ বছর বয়সে কী হতে চাও, পঁয়তাল্লিশ বছর বয়সে কী হতে চাও, পঞ্চাশ বছর বয়সে কী হতে চাও, সেই স্বপ্ন দেখো। যদি হাওয়া খেতে হয় তাহলে নদীর তীরে যেতে হয়, যদি সুন্দর সাগর দেখতে হয় কক্সবাজারে যেতে হয়, যদি সুন্দর পর্বত দেখতে হয় হিমালয়ে যেতে হয়, যদি ভালো মানুষ হতে হয় ভালো মানুষের সঙ্গে মিশতে হয়, ভালো মানুষের কথা পড়তে হয়। ভালো মানুষের বই পড়ো, ভালো মানুষের জীবনী পড়ো।

http://www.prothom-alo.com/we-are/article//1383592/জীবনের-সবচেয়ে-বড়-শক্তি-মায়ের-দোয়া

35
ধরুন, আপনার বিশ্ববিদ্যালয়-জীবন প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। অর্জিত শিক্ষা ঝুলিতে ভরে কর্মজীবন শুরু করার অপেক্ষায় আছেন। ঠিক এই সময়টাতে যদি স্বনামধন্য কোনো বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের হয়ে কিছু কাজ করার অভিজ্ঞতা অর্জন করা যায়, নিশ্চয়ই মন্দ হয় না! বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য তেমনই একটা সুযোগ করে দেয় ইউনিলিভার বাংলাদেশ। সপ্তমবারের মতো আয়োজিত এই মহাযজ্ঞ অনেক শিক্ষার্থীরই চেনা। কর্মজীবনে প্রবেশ করার আগেই নিজেদের প্রস্তুতি যাচাই করার এক মঞ্চ বিজমায়েস্ত্রোস। এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবসায়িক সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করার দায়িত্ব দেওয়া হয় শিক্ষার্থীদের। ইউনিলিভারের ব্যবসায়িক কার্যক্রম আছে যেসব দেশে, সেসব দেশের তরুণদেরই আয়োজকেরা এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার আহ্বান জানান।

গত ২৪ সেপ্টেম্বর আয়োজকদের কয়েকজন প্রতিনিধি হাজির হয়েছিলেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে। সঙ্গে ছিলেন বর্তমানে ইউনিলিভার বাংলাদেশে কর্মরত নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়েরই প্রাক্তন দুই শিক্ষার্থী ফারদিনা হাবিব ও ফারিয়া হক। তাঁরা দুজনই এই প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়েছিলেন। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক কুনাল শর্মা। ‘লার্ন টু লিড’ শিরোনামে নেতৃত্ব-বিষয়ক একটি পর্বে বক্তব্য দেন তিনি। কুনাল শর্মা বলেন, ‘নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য সঠিক বয়সের অপেক্ষা করতে হবে না। যেকোনো বয়সেই নেওয়া যায় নেতৃত্বের ভার। প্রয়োজন শুধু সামনে এগোনোর সাহস।’ বক্তব্যে তিনি তাঁর কর্মজীবন ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভাগাভাগি করেন। মিলনায়তনে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরও দেন তিনি।

এরপর মঞ্চে আসেন ইউনিলিভারের অ্যাকটিভেশন ম্যানেজার ফারদিনা হাবিব। বহুজাতিক এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা জানান তিনি। কিছুদিন আগেও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষার্থী ছিলেন। সে কথা স্মরণ করে ফারদিনা বলছিলেন, ‘আজ আমি দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কাজ করছি। এটা কোনোভাবেই সম্ভব হতো না, যদি এই সহায়তাটা না পেতাম।’ এ ছাড়া আয়োজনে বক্তব্য দেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আতিকুল ইসলাম।

ফারিয়া হক জানালেন বিজমায়েস্ত্রোসের বিস্তারিত। এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে হবে তিনজনের দল হিসেবে। বিজয়ী দলকে নিয়ে যাওয়া হবে লন্ডনে অনুষ্ঠেয় ইউনিলিভার ফিউচার লিডারস লিগে। সেখানে তাঁরা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে লড়বেন বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসা প্রতিযোগীদের সঙ্গে। মূল পর্বে বিজয়ী দলের জন্য থাকবে আকর্ষণীয় পুরস্কার। এখানেই শেষ নয়, এরপর বিজয়ীরা সুযোগ পেতে পারেন ইউনিলিভার ফিউচার লিডারস প্রোগ্রামে (ইউএফএলপি)। এটি মূলত একটি ‘ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি প্রোগ্রাম’।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত এক শিক্ষার্থী, তালহা বিন সাত্তারের সঙ্গে কথা হলো। তাঁর বক্তব্য, ‘আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এত বড় একটা প্রতিষ্ঠানে কাজ করার অভিজ্ঞতা জানতে পেরে আমিও বেশ অনুপ্রেরণা পেলাম।’ তালহা বিন সাত্তারের মতো আরও যেসব শিক্ষার্থী অনুপ্রেরণার খোঁজ করছেন, তাঁদের জন্য সব শেষে একটা তথ্য জানিয়ে রাখি। ২০১৬ সালে বিশ্বের নানা দেশ থেকে অংশ নেওয়া প্রতিযোগীদের পেছনে ফেলে ইউনিলিভার ফিউচার লিডারস লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদেরই একটি দল!

Source: http://www.prothom-alo.com/education/article/শিক্ষাজীবনেই-পেশা-জীবনের-অভিজ্ঞতা

36
প্রযুক্তি এখন জীবনের প্রধান অনুসঙ্গ হয়ে উঠেছে। বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে প্রযুক্তির ওপর ভর করে। প্রযুক্তি থেকে দূরে থাকা মানেই পিছিয়ে পড়া। প্রযুক্তির বিশ্ববাস্তবতায় তাই অনেকেই আইটি শিক্ষায় উত্সাহিত হচ্ছে। যুগের সঙ্গে তাল মিলাতে নিত্যনতুন বিষয় যোগ হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষা ব্যবস্থায়। শিক্ষার্থীদের সামনে পেশাজীবনে যোগ হচ্ছে নতুন নতুন সম্ভাবনা। তরুনরা খুজে পাচ্ছেন নতুন দিকনির্দেশনা। প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তি এখন সবচেয়ে যুগোপযোগি। প্রতিটি ভাল ছাত্রের স্বপ্ন হচ্ছে বিদেশে বিশেষ করে যুক্তরাজ্য, অষ্ট্রেলিয়া, কানাডা, জার্মানিসহ ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি অর্জন। তবে স্বপ্ন পূরনের প্রধান অন্তরায় হচ্ছে বিপুল খরচ যা আমাদের দেশের তুলনায় প্রায় দশগুণ। তাই ইচ্ছে থাকা স্বত্ত্বেও সকলের পক্ষে বিদেশে গিয়ে পড়াশোনা সম্ভব হয় না। একদিকে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি অর্জনের প্রবল আকাঙ্খা অন্যদিকে আর্থিক অস্বচ্ছলতা এই বাস্তবতাকে উপলব্ধিকরে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপদানের লক্ষ্যে একটি সহজ সুযোগ সৃষ্টি করেছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল একাডেমি (ডিআইএ)। শিক্ষা পদ্ধতি— এ শিক্ষা ব্যবস্থায় বৃটিশ কাউন্সিলের তত্ত্বাবধানে ফাইনাল পরীক্ষাগুলো অনুষ্ঠিত হয়। প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও উত্তরপত্র পরীক্ষিত হয় যুক্তরাজ্যে। এর যাবতীয় ক্লাশ অনুষ্ঠিত হয় ডিআইএতে। আরো বিস্তারিত জানতে কল করতে পারেন ০১৭১৩৪৯৩১৬৩ এই নম্বরটিতে। সার্টিফিকেট— এ শিক্ষা ব্যবস্থায় যুক্তরাজ্যের গ্রিনিচ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক বিএসসি অনার্স ইন বিজনেস ইনফরমেশন টেকনোলজি সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। ক্রেডিট ট্রান্সফার— যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের সহস্রাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রেডিট ট্রান্সফার করার সুযোগ রয়েছে। ইতোমধ্যে ডিআইএ হতে ২ সহস্রাধিক শিক্ষার্থী ক্রেডিট ট্রান্সফার করে যুক্তরাজ্য, কানাডা, জার্মানি, অষ্ট্রেলিয়াসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে এবং অনেকেই স্থায়ীভাবে বসবাস করছে। মান নিয়ন্ত্রণ— ডিআইএ ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মান নিয়ন্ত্রণ, অভিজ্ঞ শিক্ষক, শ্রেষ্ঠ ফলাফল ও অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থীর জন্য যুক্তরাজ্যের এনসিসি অ্যাডুকেশন কর্তৃক বেষ্ট পার্টনার ও একাডেমিক এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে, যা দেশের জন্য একটি বিরল সম্মান। পরীক্ষার মান নিয়ন্ত্রের জন্য রয়েছে ব্রিটিশ কাউন্সিল, ইউনিভার্সিটি অব গ্রিনিচ ও এনসিসি অ্যাডুকেশন, ইউকে। ভর্তির যোগ্যতা— যে কোন গ্রুপে এইচএসসি/এ লেভেল অথবা সমমান পাসরই ভর্তি হতে পারবে। এছাড়াও ৪ বছর মেয়াদি কম্পিউটার ডিপ্লোমাধারীরা দুই বছরে বিএসসি (অনার্স) ইন ইনফরমেশন টেকনোলজি প্রোগ্রামটি সম্পন্ন করতে পারবে। খরচ— যুক্তরাজ্যে একই প্রোগ্রাম সম্পন্ন করতে যেখানে ৮০-৯০ লাখ টাকা খরচ, সেখানে বাংলাদেশে একই প্রোগ্রাম মাত্র ৮ লক্ষ টাকা খরচ হয়, যা মাসিক কিস্তিতে পরিশোধ করা যায়। চাকরি সুবিধা— পাসকৃত গ্র্যাজুয়েটদের কর্মসংস্থানের হার শতভাগ। গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করার পর একজন শিক্ষার্থীও বেকার নেই। তাছাড়াও ডিআইএ’র শিক্ষার্থীরা ড্যাফোডিল গ্রুপের ২৫ টি প্রতিষ্ঠানে এবং বিভিন্ন ব্যাংক, সরকারি, বেসরকারি ও মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে কর্মরত রয়েছে। ডিআইএ’র প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পরিচালিত সফটওয়্যার ফার্মে কাজ করার বিশেষ সুযোগের পাশাপাশি শিক্ষাকালীন অবস্থায় আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে ঘরে বসে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারে। ভর্তির সেশন— ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল একাডেমিতে বছরে ৪ টি সেশনে (মার্চ, জুন, সেপ্টেম্বর ও ডিসেম্বর) চাকরিজীবীরা সান্ধ্যকালীন শিফটে অংশগ্রহণ করতে পারে। ভিজিট করতে পারেন প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইট www.daffodil.ac -এ

Source: http://www.ittefaq.com.bd/print-edition/cariar/2017/10/04/226562.html#.WdRiNXLFRiM.facebook

37
কখনো কি ভেবে দেখেছেন, জীবনটা একেক দিনে একেক রকম হয় কেন? কখনো হতাশার, মন খারাপের আবার কখনো আনন্দের-অনুপ্রেরণার। আপনার একেকটা দিন একেক রকম কেন হচ্ছে? টাইম ম্যাগাজিনে মনোবিদ অ্যামি মরিন জানাচ্ছেন, ‘আমাদের দিন কেমন কাটবে, সেটা নির্ভর করছে মানসিক অবস্থা-মনের জোরের ওপর।’

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকো সোশ্যাল কাউন্সেলর কাজী রুমানা হকের ভাষ্যও একই। আপনার মনের জোর যত হবে, দিনের ওপরে কিন্তু আপনার নিয়ন্ত্রণ তত বাড়বে।

ভালো থাকতে নিজের জন্য কয়েকটি অভ্যাস তৈরি করতে পারেন, যা কিনা মনের জোর বাড়াবে। টাইম ম্যাগাজিনে মনোবিদ অ্যামি মনের জোর বাড়ানোর কয়েকটি উপায় বাতলেছেন।

১. কৃতজ্ঞতাবোধ প্রকাশ করুন: আপনার গাড়ির চালক কিংবা ঘরের গৃহকর্মীকে শেষ কবে ধন্যবাদ জানিয়েছেন? মনে মনে কৃতজ্ঞ হওয়ার চেয়ে কৃতজ্ঞতাবোধ প্রকাশ করুন মুখে! অন্যকে ধন্যবাদ জানিয়ে, শুভেচ্ছা জানিয়ে দিন শুরু করুন। কৃতজ্ঞতাবোধের অভ্যাস করতে বেশি সময় কিন্তু লাগে না—দুই থেকে তিন মিনিটের মধ্যেই শুরু করা যায় কৃতজ্ঞতাবোধ প্রকাশ।

২. নিজের চেনা পরিবেশ থেকে বাইরে আসুন: প্রতিদিন একই কাজ করতে করতে আমাদের মধ্যে আলস্য ভর করে। িনজেই আলস্য কাটানোর উপায় তৈরি করতে পারেন। যে পথ ধরে প্রতিদিন বাজারে যান, অন্য পথে এখন থেকে বাজারে যাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। লিফটের বদলে সিঁড়ি দিয়ে হেঁটে চলার নতুন অভ্যাস করুন।

৩. নিজেকে একা সময় দিন: দৈনন্দিন জীবনের ব্যস্ততাকে একপাশে রেখে দিনের কোনো একটি সময় নিজেকে সময় দিন। মিনিট দশেক সময় দিন। একাকী এই সময়ে নিজের সঙ্গে নিজে কথা বলুন, নিজের সমস্যাগুলো কী কী, জীবন ১০ বছর পরে কোথায় যাবে, তা নিয়ে ভাবুন। ছুটির সময় টিভির সামনে সময় কম কাটিয়ে বই পড়ুন, কিংবা ছাদের এক কোণে নিজের জন্য একটু সময় দিন।

৪. নিজের দক্ষতা বাড়ান: ভালো প্রযুক্তি ব্যবহার জানেন, কিংবা অন্য কোনো কাজে দারুণ দক্ষ আপনি? এগুলোকে আপনি নিজের সুপারপাওয়ার ভাবতে পারেন। এগুলো আসলে সুপারপাওয়ার নয়! আপনি হয়তো খুব সকালে ঘুম থেকে ওঠেন, কিংবা যেকোনো সমস্যার গাণিতিক ও কার্যকর সমাধান নিয়ে ভাবতে পারেন—এসবই আপনার সুপারপাওয়ার। কী নিয়ে চিন্তা করতে হয়, তা না ভেবে কীভাবে চিন্তা করতে হয়, তা-ই জানা সুপারপাওয়ার। ছুটির সময় নিজের দুর্বলতা আর শক্তিগুলো একটি কাগজে লিখে আগামী ছয় মাস কীভাবে সুপারপাওয়ার বাড়াবেন, তা নির্ধারণ করুন।

৫. সমস্যাকে সুযোগ হিসেবে তৈরি করুন: অফিসে দেরি করে যান বলে বসের রাগ আপনার ওপর ঝরে? ঘুম থেকে দেরিতে ওঠেন বলেই তো দেরি হয়, আবার দেরি করে অফিসে গেলে কাজের চাপ, মনের চাপও বেশি থাকে। অফিসে প্রতিদিন নির্ধারিত সময়ের এক ঘণ্টা আগে আসুন, বাড়তি সময়টায় বই পড়ুন, পত্রিকা পড়ুন, সারা দিন কী কাজ করবেন, তা ঠিক করে নিন—এভাবে সমস্যা থেকে সুযোগ তৈরি করুন। ছুটির সময় প্রতিদিন ভোরে ঘুম ভাঙার অভ্যাস করুন।

Source: http://www.prothom-alo.com/life-style/article/1313001/মনের-জোর-বাড়াতে-যা-করবেন

38
নিত্যদিনের মাথাব্যথার সবচেয়ে বড় কারণ উদ্বেগ ও মানসিক চাপ, যাকে বলে টেনশন হেডেক। এই অসুখ সারাতে ব্যথানাশক বড়ি সেবনের পরিবর্তে অন্য কোনো উপায় আছে কি? কয়েকটি পদ্ধতি অনুশীলন করে স্বস্তি পেতে পারেন:

মালিশ বা ম্যাসাজ

এতে মাথা ও কপালের মাংসপেশিগুলো শিথিল হয়। ফলে রক্তনালিতে রক্তপ্রবাহ বাড়ে। তাই হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল ও তর্জনীর সাহায্যে ধীরে ধীরে ম্যাসাজ করলে স্বস্তি মেলে।

শিথিলায়ন

শিথিলায়ন ব্যায়াম রক্তে নানা ধরনের রাসায়নিক উপাদানের ওঠানামা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এবং মাথাব্যথা কমায়। এ জন্য বুকভরে গভীর শ্বাস নিন এবং ধীরে ধীরে ছাড়ুন। এভাবে বেশ কয়েকবার অনুশীলন করুন।

হাসি

প্রাণভরে হাসুন। হাসি-খুশি থাকলে এন্ডারফিন নামের রাসায়নিক উপাদান নিঃসৃত হয়। এটা আপনার শরীরের ব্যথা-বেদনা কমিয়ে আনন্দময় অনুভূতি বাড়িয়ে দেয়। একইভাবে উল্টোটা, মানে মন খারাপ বা মেজাজ খারাপ করে থাকলে, ভ্রু কুঁচকে থাকলে মাথাব্যথা আরও বাড়বে।

পর্যাপ্ত ঘুম

প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ছয় থেকে আট ঘণ্টা ঘুম দরকার। ঘুমের ব্যাঘাত মাথাব্যথার কারণ। তাই যত কাজই থাকুক, রাত জাগবেন না। রাত জেগে টিভি দেখা, কম্পিউটারে কাজ করা বা ফেসবুক ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।

গান শুনুন

বিদেশি গবেষণা বলছে, হালকা বা মৃদুলয়ের গান মাথাব্যথার তীব্রতা প্রায় ১৭ শতাংশ কমিয়ে দিতে পারে। কাজের ফাঁকে ঘর অন্ধকার রেখে চোখ বন্ধ করে কিছুক্ষণ গান শুনুন।

চাপ নেবেন না

সংসারে বা কর্মক্ষেত্রে কাজের চাপ থাকেই। যে পরিস্থিতিতে চাপ বেড়ে যাচ্ছে বলে মনে হয়, সেখান থেকে সরে আসুন। প্রয়োজনে বাইরে বেরিয়ে পড়ুন। মনোযোগ অন্য দিকে সরিয়ে নিন। প্রিয়জন বা বন্ধবান্ধবের সঙ্গে সময় কাটান। মাঝে মাঝে ছুটি নিন।

ডা. মো. মাইদুল ইসলাম

মেডিসিন বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল

Source: http://www.prothom-alo.com/life-style/article/1279941/ওষুধ-ছাড়াই-মাথাব্যথা-কমাতে-চান

39
সময়টা এখন প্রযুক্তির। প্রযুক্তি এখন জীবনের প্রধান অনুসঙ্গ হয়ে উঠেছে। বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে প্রযুক্তির ওপর ভর করে। প্রযুক্তি থেকে দূরে থাকা মানেই পিছিয়ে পড়া। প্রযুক্তির বিশ্ব বাস্তবতায় তাই অনেকেই আইটি শিক্ষায় উত্সাহিত হচ্ছে। যুগের সঙ্গে তাল মিলাতে নিত্যনতুন বিষয় যোগ হচ্ছে তথ্য-প্রযুক্তি শিক্ষা ব্যবস্থায়। শিক্ষার্থীদের সামনে পেশাজীবনে যোগ হচ্ছে নতুন-নতুন সম্ভাবনা। তরুণরা খুঁজে পাচ্ছেন নতুন দিক-নির্দেশনা। প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে তথ্য-প্রযুক্তি এখন সবচেয়ে যুগোপযোগি। প্রতিটি ভালো ছাত্রের স্বপ্ন হচ্ছে বিদেশে বিশেষ করে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জার্মানিসহ ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি অর্জন। তবে স্বপ্ন পূরণের প্রধান অন্তরায় হচ্ছে বিপুল খরচ যা আমাদের দেশের তুলনায় প্রায় দশগুণ। তাই ইচ্ছে থাকা স্বত্ত্বেও সকলের পক্ষে বিদেশে গিয়ে পড়াশোনা সম্ভব হয় না। একদিকে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি অর্জনের প্রবল আকাঙ্ক্ষা অন্যদিকে আর্থিক অস্বচ্ছলতা এই বাস্তবতাকে উপলব্ধি করে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপদানের লক্ষ্যে একটি সহজ সুযোগ সৃষ্টি করেছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল একাডেমি (ডিআইএ)।

শিক্ষা পদ্ধতি :এ শিক্ষা ব্যবস্থায় ব্রিটিশ কাউন্সিলের তত্ত্বাবধানে ফাইনাল পরীক্ষাগুলো অনুষ্ঠিত হয়। প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও উত্তরপত্র পরীক্ষিত হয় যুক্তরাজ্যে। এর যাবতীয় ক্লাস অনুষ্ঠিত হয় ডিআইএতে।

ভর্তির যোগ্যতা :যেকোনো গ্রুপে এইচএসসি/এ লেভেল অথবা সমমান পাস। এছাড়াও ৪ বছর মেয়াদি কম্পিউটার ডিপ্লোমাধারীরা দুই বছরে বিএসসি (অনার্স) ইন ইনফরমেশন টেকনোলজি প্রোগ্রামটি সম্পন্ন করতে পারবে। এ বিষয়ে আরও জানতে যোগাযোগ করতে পারেন ০১৭১৩৪৯৩১৬৩ নম্বরে এবং প্রতিষ্ঠানটির www.daffodil.ac এই ওয়েবসাইটে।

খরচ :যুক্তরাজ্যে একই প্রোগ্রাম সম্পন্ন করতে যেখানে ৮০-৯০ লাখ টাকা খরচ, সেখানে বাংলাদেশে একই প্রোগ্রাম মাত্র ৮ লক্ষ টাকা খরচ হয়, যা মাসিক কিস্তিতে পরিশোধ করা যায়।

চাকরি সুবিধা :পাসকৃত গ্র্যাজুয়েটদের কর্মসংস্থানের হার শতভাগ। গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করার পর একজন শিক্ষার্থীও বেকার নেই। এছাড়া ডিআইএ’র শিক্ষার্থীরা ড্যাফোডিল গ্রুপের ২৫টি প্রতিষ্ঠানে এবং বিভিন্ন ব্যাংক, সরকারি, বেসরকারি ও মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে কর্মরত আছে। ডিআইএ’র প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পরিচালিত সফটওয়্যার ফার্মে কাজ করার বিশেষ সুযোগের পাশাপাশি শিক্ষাকালীন অবস্থায় আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ঘরে বসে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারবে। উল্লেখ্য ডিআইএ থেকে পাসকৃত বহুসংখ্যক শিক্ষার্থী ফ্রিল্যান্সিং করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছে, যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখছে।

স্কলারশিপ সুবিধা :মেধাবী ও অসচ্ছলদের জন্য রয়েছে ১০-১০০ ভাগ পর্যন্ত ড্যাফোডিল ফাউন্ডেশন কর্তৃক স্কলারশিপের সুবিধা। মুক্তিযোদ্ধা, স্কুল শিক্ষকের সন্তান ও মেয়েদের জন্য রয়েছে বিশেষ স্কলারশিপের সুবিধা।

Source: http://www.ittefaq.com.bd/print-edition/cariar/2017/08/02/213097.html

40
জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৩১ আগস্ট পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। এবার যাঁরা হজে যাচ্ছেন, তাঁদের প্রস্তুতি নিতে হবে এখনই। এ সম্পর্কে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবদুল জলিল জানালেন, এবার যাঁরা হজে যাচ্ছেন, তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা, টিকা দেওয়া, স্বাস্থ্যসনদ সংগ্রহ, হজের জন্য প্রয়োজনীয় মালপত্র সংগ্রহ করা দরকার। হজের প্রশিক্ষণও নিতে হবে। হজ প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য তথ্য ঢাকার আশকোনা হজ কার্যালয় থেকে জানা যাবে। এ ছাড়া প্রয়োজনীয় বইপুস্তক বা পরিচিতদের কাছ থেকেও হজবিষয়ক তথ্য জানতে পারেন। আর হজের প্রয়োজনীয় তথ্য (www.hajj.gov.bd) ঠিকানায় পাওয়া যাবে।
হজে যাচ্ছেন, আল্লাহ তাআলার কাছে প্রার্থনা করুন: ‘হে আল্লাহ! আমার হজকে সহজ করো, কবুল করো’—দেখবেন, আপনার সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। হজের দীর্ঘ সফরে ধৈর্য হারাবেন না। সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করার মানসিকতা রাখবেন, তাহলে অল্পতেই বিচলিত হবেন না।

হজে যাওয়ার আগে
পাসপোর্ট, বিমানের টিকিট সংগ্রহ করুন ও তারিখ জেনে নিন। প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করতে ভুলবেন না। নিয়ম মেনে ম্যানিনজাইটিস টিকা বা অন্যান্য ভ্যাকসিন দিয়ে নিন। হজের নিয়ম জানার জন্য একাধিক বই পড়তে পারেন। চাইলে ‘প্রথম আলো হজ গাইড’ সংগ্রহ করতে পারেন। এটা (www.prothom-alo.com/hajj) থেকে ডাউনলোড করতে পারেন। অথবা যাঁরা পড়তে পারেন না, তাঁরা অন্য হাজিদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করতে পারেন। হজের কোনো বিষয়ে ভিন্নমত দেখলে ঝগড়া করবেন না। আপনি যে আলেমের ইলম ও তাকওয়ার ওপর আস্থা রাখেন, তার সমাধান অনুযায়ী আমল করবেন। তবে সে মতে আমল করার জন্য অন্য কাউকে বাধ্য করবেন না।

প্রয়োজনীয় মালপত্র
হজের জন্য প্রয়োজনীয় মালপত্র সংগ্রহ করা দরকার। যেমন ১. পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, টাকা রাখার জন্য গলায় ঝোলানো ছোট ব্যাগ, ২. পুরুষের জন্য ইহরামের কাপড় কমপক্ষে দুই সেট (প্রতি সেটে শরীরের নিচের অংশে পরার জন্য আড়াই হাত বহরের আড়াই গজ এক টুকরা কাপড় আর গায়ের চাদরের জন্য একই বহরের তিন গজ এক টুকরা কাপড়। ইহরামের কাপড় সাদা, সুতি হলে ভালো হয়, আর নারীদের জন্য সেলাইযুক্ত স্বাভাবিক পোশাকই ইহরামের কাপড়) ৩. নরম ফিতাওয়ালা স্যান্ডেল, ৪. ইহরাম পরার কাজে ব্যবহারের জন্য প্রয়োজন হলে কটিবন্ধনী (বেল্ট), ৫. গামছা, তোয়ালে, ৬. লুঙ্গি, গেঞ্জি, পাজামা, পাঞ্জাবি (আপনি যে পোশাক পরবেন), ৭. সাবান, পেস্ট, ব্রাশ, মিসওয়াক, ৮. নখ কাটার যন্ত্র, সুই-সুতা, ৯. থালা, বাটি, গ্লাস, ১০. হজের বই, কোরআন শরিফ, ধর্মীয় পুস্তক, ১১. কাগজ-কলম, ১২. প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র, চশমা ব্যবহার করলে অতিরিক্ত একটি চশমা (ভিড় বা অন্য কোনো কারণে ভেঙে গেলে ব্যবহারের জন্য), ১৩. বাংলাদেশি টাকা (দেশে ফেরার পর বিমানবন্দর থেকে বাড়ি ফেরার জন্য), ১৪. নারীদের জন্য বোরকা, ১৫. যত দিন বিদেশে থাকবেন, সেই অনুযায়ী নিবন্ধিত চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্রসহ ওষুধ নেবেন, ১৬. মোবাইল ফোন সেট (সৌদি আরবে ব্যবহার করা যায়, তেমন সিম কিনে নিতে হবে), ১৭. মালপত্র নেওয়ার জন্য ব্যাগ অথবা স্যুটকেস (তালা-চাবিসহ) নিতে হবে। ব্যাগের ওপর ইংরেজিতে নিজের নাম-ঠিকানা, ফোন নম্বর, পাসপোর্ট নম্বর লিখতে হবে। এর বাইরে আরও কিছু প্রয়োজনীয় মনে হলে তা নিয়ম মেনে সঙ্গে নিতে হবে।

ঢাকার হজ ক্যাম্প
বিমানে যাত্রার আগে হজ ক্যাম্পে যত দিন অবস্থান করবেন, আপনার শরীর ও মালপত্রের প্রতি খেয়াল রাখবেন। কোনো টিকা বা ভ্যাকসিন নেওয়া বাকি থাকলে অবশ্যই তা নিয়ে নিন। প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করে নিন।

ব্যাগেজ নিয়মকানুন
বিমানে উড্ডয়নকালে হাতব্যাগে ছুরি, কাঁচি, দড়ি নেওয়া যাবে না। নিবন্ধিত চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া কোনো ওষুধ নিতে পারবেন না। চাল, ডাল, শুঁটকি, গুড় ইত্যাদিসহ পচনশীল খাদ্যদ্রব্য, যেমন রান্না করা খাবার, তরিতরকারি, ফলমূল, পান, সুপারি ইত্যাদি সৌদি আরবে নেওয়া যাবে না।

ইহরাম
আপনার গন্তব্য ঢাকা থেকে মক্কায়, নাকি মদিনায়—তা জেনে নিন। যদি মদিনায় হয়, তাহলে এখন ইহরাম নয়ð; যখন মদিনা থেকে মক্কায় যাবেন, তখন ইহরাম করতে হবে। বেশির ভাগ হজযাত্রী আগে মক্কায় যান। যদি মক্কায় যেতে হয়, তাহলে ঢাকা থেকে বিমানে ওঠার আগে ইহরামের নিয়ত করা ভালো। কারণ, জেদ্দায় পৌঁছানোর আগেই ‘মিকাত’ বা ইহরাম করার নির্দিষ্ট স্থান। বিমানে যদিও ইহরাম করার কথা বলা হয়, কিন্তু ওই সময় অনেকে ঘুমিয়ে থাকেন; আর বিমানে পোশাক পরিবর্তন করাটাও দৃষ্টিকটু। বিনা ইহরামে মিকাত পার হলে এ জন্য দম বা কাফফারা দিতে হবে। তদুপরি গুনাহ হবে। ইহরাম গ্রহণের পর সাংসারিক কাজকর্ম নিষেধ, যেমন সহবাস করা যাবে না; পুরুষদের জন্য কোনো সেলাই করা জামা, পায়জামা ইত্যাদি পরা বৈধ নয়; কথা ও কাজে কাউকে কষ্ট দেওয়া যাবে না; নখ, চুল, দাড়ি-গোঁফ ও শরীরের একটি পশমও কাটা বা ছেঁড়া যাবে না; কোনো ধরনের সুগন্ধি লাগানো যাবে না; কোনো ধরনের শিকার করা যাবে না; ক্ষতিকর সব প্রাণী মারা যাবে, ক্ষতি করে না এমন কোনো প্রাণী মারা যাবে না।

ঢাকা বিমানবন্দর
উড্ডয়নের সময় অনুযায়ী বিমানবন্দরে পৌঁছান। বিমানবন্দরে লাগেজে যে মালপত্র দেবেন, তা ঠিকমতো বাঁধা হয়েছে কি না, দেখে নেবেন। বিমানের কাউন্টারে মালপত্র রেখে এর টোকেন দিলে তা যত্ন করে রাখবেন। কারণ, জেদ্দা বিমানবন্দরে ওই টোকেন দেখালে সেই ব্যাগ আপনাকে ফেরত দেবে। ইমিগ্রেশন, চেকিংয়ের পর নিজ মালপত্র যত্নে রাখুন।
বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া পরিচয়পত্র, বিমানের টিকিট, টিকা দেওয়ার কার্ড, অন্য কাগজপত্র, টাকা, বিমানে পড়ার জন্য ধর্মীয় বই ইত্যাদি গলায় ঝোলানোর ব্যাগে যত্নে রাখুন। সময়মতো বিমানে উঠে নির্ধারিত আসনে বসুন।

জেদ্দা বিমানবন্দর
বিমান থেকে নামার পর দেখবেন, একটি হলঘরে বসার ব্যবস্থা করা আছে। অবতরণ কার্ড, হেলথ কার্ড, পাসপোর্ট ইত্যাদি কাগজপত্র বের করুন। এই হলঘরের পাশেই ইমিগ্রেশন কাউন্টার। ইমিগ্রেশন পুলিশ ভিসা দেখে (ছবি ও আঙুলের ছাপ নিয়ে) পাসপোর্টের নির্দিষ্ট পাতায় সিল দেবেন। বিমানের বেল্টে মালামাল খুঁজে নিরাপত্তা-তল্লাশির জন্য মালামাল দিন। তারপর মোয়াল্লেমের কাউন্টার। লাল-সবুজ পতাকা অনুসরণ করে ‘বাংলাদেশ প্লাজায়’ পৌঁছাবেন।

হজ টার্মিনাল
হজ টার্মিনালের ‘বাংলাদেশ প্লাজায়’ গিয়ে অপেক্ষা করুন। অপেক্ষা দীর্ঘ হতে পারে, ধৈর্য হারাবেন না। সেখানে অজু করা, নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে। বসার জন্য চেয়ারও রয়েছে।
প্রতি ৪৫ জনের জন্য একটি বাসের ব্যবস্থা। মোয়াল্লেমের গাড়ি আপনাকে জেদ্দা থেকে মক্কায় যে বাড়িতে থাকবেন, সেখানে নামিয়ে দেবে। মোয়াল্লেমের নম্বর (আরবিতে লেখা) কবজি বেল্ট দেওয়া হবে আপনাকে, তা হাতে পরে নেবেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া পরিচয়পত্র (যাতে পিলগ্রিম নম্বর, নাম, ট্রাভেল এজেন্টের নাম ইত্যাদি থাকবে) গলায় ঝোলাবেন। জেদ্দা থেকে মক্কায় পৌঁছাতে দুই ঘণ্টা সময় লাগবে। চলার পথে তালবিয়া পড়ুন (লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক...)।

মক্কায় পৌঁছানোর পর
 মক্কায় পৌঁছে আপনার থাকার জায়গায় মাল পত্র রেখে বিশ্রাম নিন। যদি নামাজের ওয়াক্ত হয়, নামাজ আদায় করুন। বিশ্রাম শেষে দলবদ্ধভাবে ওমরাহর নিয়ত করে থাকলে ওমরাহ পালন করুন।
 মসজিদুল হারামে (কাবা শরিফ) অনেক প্রবেশপথ আছে। সব কটি দেখতে একই রকম। কিন্তু প্রতিটি প্রবেশপথে আরবি ও ইংরেজিতে ১, ২, ৩ নম্বর ও প্রবেশপথের নাম আছে, যেমন ‘বাদশা আবদুল আজিজ প্রবেশপথ’। আপনি আগে থেকে ঠিক করবেন, কোন প্রবেশপথ দিয়ে ঢুকবেন বা বের হবেন। সফরসঙ্গীকেও স্থান চিনিয়ে দিন। তিনি যদি হারিয়ে যান, তাহলে নির্দিষ্ট নম্বরের গেটের সামনে থাকবেন। এতে ভেতরে ভিড়ে হারিয়ে গেলেও নির্দিষ্ট স্থানে এসে সঙ্গীকে খুঁজে পাবেন।
 কাবা শরিফে জুতা-স্যান্ডেল রাখার ক্ষেত্রে খুব সতর্ক থাকবেন, নির্দিষ্ট স্থানে জুতা রাখুন। যেখানে-সেখানে জুতা রাখলে পরে খুঁজে পাওয়া কঠিন। প্রতিটি জুতা রাখার র‌্যাকেও নম্বর দেওয়া আছে। এই নম্বর মনে রাখুন। চাইলে জুতা বহন করার ব্যাগ সঙ্গে রাখতে পারেন।
 কাবাঘরের চারটি কোণের আলাদা নাম আছে: হাজরে আসওয়াদ, রকনে ইরাকি, রকনে শামি ও রকনে ইয়ামেনি। হাজরে আসওয়াদ বরাবর কোণ থেকে শুরু হয়ে কাবাঘরের পরবর্তী কোণ রকনে ইরাকি। তারপর যথাক্রমে রকনে শামি (দুই কোণের মাঝামাঝি স্থান মিজাবে রহমত ও হাতিম) ও রকনে ইয়ামেনি। এটা ঘুরে আবার হাজরে আসওয়াদ বরাবর এলে তাওয়াফের এক চক্কর পূর্ণ হয়। এভাবে একে একে সাত চক্কর দিতে হয়।
 তাওয়াফ শেষে সাফা-মারওয়ায় গিয়ে সাঈ করুন। সাঈ সাফা থেকে শুরু করে মারওয়ায় গিয়ে শেষ হয়। সাফা থেকে মারওয়া প্রতিটি ভিন্ন ভিন্ন দৌড়। এভাবে সাতটি দৌড় সম্পূর্ণ হলে একটি সাঈ পূর্ণ হয় (মনে রাখার জন্য মারওয়াতে ১, ৩, ৫, ৭ নম্বর দৌড় বা চক্করগুলো হবে)।
 ওমরাহর নিয়মকানুন আগে জেনে নেবেন। এসব কাজ ধারাবাহিকভাবে করতে হবে, যেমন তওয়াফ করা (কাবা শরিফ সাতবার চক্কর), নামাজ আদায় করা, জমজমের পানি পান করা, সাঈ করা (সাফা-মারওয়া পাহাড়ে দৌড়ানো—যদিও মসৃণ পথ এবং শীতাতপনিয়ন্ত্রিত), মাথা ন্যাড়া অথবা চুল ছোট করা। ওয়াক্তের নামাজের সময় হলে, যতটুকু হয়েছে ওই সময় নামাজ পড়ে আবার বাকিটুকু শেষ করা।

ওমরাহ
 হিল (কাবা শরিফের সীমানার বাইরে মিকাতের ভেতরের স্থান) থেকে অথবা মিকাত থেকে ইহরাম করে বায়তুল্লাহ শরিফ তাওয়াফ করা, সাফা-মারওয়া সাঈ করা এবং মাথার চুল ফেলে দেওয়া বা ছোট করাকে ওমরাহ বলে।
 হজ তিন প্রকার—তামাত্তু, কিরান ও ইফরাদ। হজের মাসসমূহে (শাওয়াল, জিলকদ, জিলহজ) ওমরাহর নিয়তে ইহরাম করে, ওমরাহ পালন করে, পরে হজের নিয়ত করে হজ পালন করাকে হজে তামাত্তু বলে।
 হজের মাসসমূহে একই সঙ্গে হজ ও ওমরাহ পালনের নিয়তে ইহরাম করে ওমরাহ ও হজ করাকে হজে কিরান বলে। আর শুধু হজ পালনের উদ্দেশ্যে ইহরাম করে হজ সম্পাদনকে হজে ইফরাদ বলে।
পরামর্শ
 দেশে থাকাকালীন আপনার প্যাকেজের সুবিধাদি, যেমন মক্কা–মদিনায় থাকা, খাওয়া, কোরবানিসহ অন্য সুবিধার কথা হজ এজেন্সির কাছ থেকে লিখিতসহ খুব ভালোভাবে বুঝে নিন। সৌদি আরব গিয়ে তা মিলিয়ে নিতে পারবেন।
 কোরবানি বা দম দেওয়ার জন্য ইসলামি উন্নয়ন ব্যাংকের (আইডিবি) সৌদি সরকারের স্বীকৃত ব্যবস্থা। এতে সময় বাঁচে, নিরাপদ। হজের অন্যান্য কাজ সহজে সারতে পারবেন। এর বাইরে দেওয়া হলে প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
 সৌদি আরবে অবস্থানকালে ট্রাফিক আইন মেনে চলুন। সিগন্যাল পড়লে রাস্তা পার হতে হবে। রাস্তা পার হওয়ার সময় অবশ্যই ডানে-বাঁয়ে দেখেশুনে সাবধানে পার হতে হবে। কখনো দৌড়ে রাস্তা পারাপার হবেন না।
 কাবা শরিফ ও মসজিদে নববির ভেতরে কিছুদূর পরপর জমজম পানি (স্বাভাবিক ও ঠান্ডা) খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। প্রাণভরে জমজম পানি পান করুন।
 কোনো ধরনের অসুস্থতা কিংবা দুর্ঘটনায় পড়লে বাংলাদেশ হজ মিশনের মেডিকেল সদস্যের (চিকিৎসক) সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
 হজযাত্রীদের তথ্য, হারানো হজযাত্রীদের খুঁজে পাওয়া ইত্যাদি বিষয়ে বাংলাদেশ হজ মিশনে অবস্থিত আইটি হেল্প ডেস্ক সাহায্য করে।
 তাওয়াফ, সাঈ করার সময় অহেতুক কথা বলা বা ছবি তোলা থেকে বিরত থাকুন। টাকাপয়সা নিরাপদে রাখুন।
 মাহরাম (যেসব পুরুষের সঙ্গে দেখা করা জায়েজ। যেমন স্বামী, বাবা, আপন ভাই, আপন চাচা-মামা, ছেলে ইত্যাদি) ছাড়া নারী হজযাত্রী এককভাবে হজে গমনের যোগ্য বিবেচিত হন না।
 মক্কায় বাসার দূরত্ব নির্ধারিত হয় কাবা শরিফ থেকে। আর মদিনায় মসজিদে নববি থেকে। বাসস্থান কত দূর, তার ওপর নির্ভর করে হজের ব্যয়ের টাকা। অর্থাৎ কাবা শরিফ থেকে বাসার দূরত্ব কম হলে খরচ বেড়ে যাবে। যত বেশি দূরত্ব হবে, খরচও তত কম হবে।
 হজের সময় হজযাত্রীদের যেন কোনো রকম কষ্ট না হয়, আপনার হজ এজেন্সি আপনাকে যথাযথ সুবিধাদি (দেশ থেকে আপনাকে থাকা, খাওয়াসহ অন্য যেসব সুবিধার কথা বলেছিল) না দিলে আপনি মক্কা ও মদিনার বাংলাদেশ হজ মিশনকে জানাতে পারেন। এতেও আপনি সন্তুষ্ট না থাকলে সৌদির ওয়াজারাতুল হজ বরাবর লিখিত অভিযোগ করতে পারেন।
 মদিনা থেকে যদি মক্কায় আসেন, তাহলে ইহরামের কাপড় সঙ্গে নিতে হবে।
 হজযাত্রীদের অতিরিক্ত ভিড়ে পথ হারানোর আশঙ্কা থাকে। তবে এতে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। এ ব্যাপারে হজযাত্রীদের সচেতন থাকতে হবে। অনেক বাংলাদেশি হজযাত্রী হারিয়ে যাওয়ার কারণে হজের আহকাম বা নিয়মকানুন ঠিকমতো পালন করতে পারেন না।
 মক্কা-মদিনায় প্রচুর বাংলাদেশি হোটেল আছে। মক্কার হোটেলগুলোর নাম ঢাকা, এশিয়া, চট্টগ্রাম, জমজম ইত্যাদি। এসব হোটেলে ভাত, মাছ, মাংস, সবজি, ডাল—সব ধরনের বাঙালি খাবার পাওয়া যায়। হোটেল থেকে পার্সেলে একজনের খাবার কিনলে বাড়িতে বসে অনায়াসে দুজন খেতে পারেন।
 মক্কা-মদিনায় প্রচুর ফলমূল ও ফলের রস পাওয়া যায়। এগুলো কিনে খেতে পারেন।
 মক্কা-মদিনায় অনেক বাংলাদেশি কাজ করেন, তাই ভাষাগত কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কেনাকাটার সময় দরদাম করে কিনবেন।
 মক্কায় ঐতিহাসিক স্থান হেরা গুহা, সাওর পর্বত, মা’আলা কবরস্থান, মসজিদে জিন, মক্কা জাদুঘর, গিলাফ তৈরির কারখানা, লাইব্রেরি, মিনায় আল-খায়েফ মসজিদ, আরাফাতের ময়দান, নামিরা মসজিদ মুজদালিফা, জামারা (শয়তানের উদ্দেশে পাথর ছোড়ার স্থান) ঘুরে আসতে পারেন।
 মদিনায় মসজিদে নববি, রিয়াজুল জান্নাহ, বাকি কবরস্থান, ওহুদ পাহাড়, খন্দক, মসজিদে কুবা, মসজিদে কিবলাতাইন, মসজিদে জুমআ, মসজিদে গামামাহ, মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়, বাদশাহ ফাহাদ কোরআন শরিফ প্রিন্টিং কমপ্লেক্স ঘুরে আসতে পারেন।

হজের সময় লক্ষ করুন
 হজের পাঁচ দিন মিনা, আরাফাত, মুজদালিফা, মিনায় অবস্থান করবেন। তাই হাতব্যাগে এক সেট অতিরিক্ত ইহরামের কাপড় ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে যাবেন।
 কোনো কোনো হজযাত্রী হেঁটে হজের আমলগুলো করে থাকেন। যেমন মক্কা থেকে মিনার দূরত্ব প্রায় ৮ কিলোমিটার। আরাফাত থেকে মুজদালিফার দূরত্ব প্রায় ১২ কিলোমিটার। মুজদালিফা থেকে মিনার দূরত্ব প্রায় সাড়ে ৫ কিলোমিটার। এসব স্থানবিশেষে হেঁটে যেতে এক থেকে দুই ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।
 দিনের বেলা বাইরে বের হলে ছাতা সঙ্গে নেবেন। মুজদালিফায় রাতে থাকার জন্য প্লাস্টিকের পাটি ব্যবহার করতে পারেন। সঙ্গে কিছু শুকনা খাবার রাখতে পারেন। মক্কাসহ বিভিন্ন জায়গায় ছাতা, পাটি কিনতে পাওয়া যায়।
 মিনার ম্যাপ থাকলে হারানোর ভয় নেই। মিনার কিছু অবস্থান চিনে নিজের মতো করে আয়ত্তে আনলে এখানে চলাচল করা সহজ হয়। যেমন জামারা (শয়তানকে কঙ্কর নিক্ষেপের স্থান), মসজিদে খায়েফ, মিনায় তিনটি ব্রিজ—বাদশাহ খালেদ ব্রিজ ১৫ নম্বর, বাদশাহ আবদুল্লাহ ব্রিজ ২৫ নম্বর, বাদশাহ ফয়সাল ব্রিজ ৩৫ নম্বর। হাঁটার পথ (টিনশেড নামে পরিচিত)। এখানে সাতটি জোন রয়েছে। মিনার বড় রাস্তাগুলোর ভিন্ন ভিন্ন নাম ও নম্বর রয়েছে।
 রাস্তার নাম ও নম্বর জানা থাকলে মিনায় চলাচল সহজ হয়। পথ হারানোর সুযোগ কম থাকে। বড় রাস্তাগুলো হলো: বাদশাহ ফয়সাল রোড ৫০ নম্বর রাস্তা, আলজাওহারাত রোড ৫৬ নম্বর রাস্তা, সুক্কল আরব রোড ৬২ নম্বর রাস্তা, কিং ফাহাদ রোড ৬৮ নম্বর রাস্তা। মিনায় রেলস্টেশন তিনটি। মুজদালিফায় রেলস্টেশন তিনটি। এ ছাড়া রয়েছে সুড়ঙ্গপথ, টানেল, পায়ে চলার রাস্তা, হাসপাতাল, মসজিদ, পোস্ট অফিস, মিনার বাদশাহ বাড়ি, রয়েল গেস্ট হাউস (রাজকীয় অতিথি ভবন) মোয়াচ্ছাসা কার্যালয়।
 ছাপানো অথবা ইন্টারনেটে মক্কা, মদিনা, মিনা, আরাফাতের মানচিত্র পাওয়া যায়। সম্ভব হলে মানচিত্র দেখুন, তাহলে ওখানকার রাস্তাঘাট ঘরবাড়ি সম্পর্কে একটা ধারণা পাবেন।
 মিনায় মোয়াল্লেম নম্বর বা তাঁবু নম্বর জানা না থাকলে যে কেউ হারিয়ে যেতে পারেন। মোয়াল্লেম অফিস থেকে তাঁবুর নম্বরসহ কার্ড দেওয়া হয়। তা যত্নে রাখতে হবে। বাইরে বের হওয়ার সময়ও কার্ডটি সঙ্গে রাখুন। সমস্যা এড়ানোর জন্য যে তাঁবুতে অবস্থান করবেন, সেই তাঁবু চিহ্নিত করে নিন।
 মিনায় জামারা থেকে আপনার তাঁবুর অবস্থান, তাঁবু থেকে মসজিদুল হারামে যাওয়া-আসার পথ সম্পর্কে ধারণা নিন। ভিড় এড়াতে কেউ কেউ হেঁটে সুড়ঙ্গ (টানেল) পথ দিয়ে মসজিদুল হারামে পৌঁছান। হাঁটার পথ চিনতে স্থানীয় (বাংলাদেশি কাউকে বললে দেখিয়ে দেবেন) বা গুগল ম্যাপের সহায়তা (https://goo.gl/WPBR25) নিতে পারেন।
 অনেকে ট্যাবলেট বা আইফোন নিয়ে যান। রাস্তাঘাট, অবস্থান ইত্যাদি জানতে হজ ও পিলগ্রিম অ্যাপসের সহায়তা নিতে পারেন।
 আরাফাতের ময়দানে অনেক প্রতিষ্ঠান বিনা মূল্যে খাবার, জুস, ফল ইত্যাদি দিয়ে থাকে। ওই সব খাবার আনতে গিয়ে ধাক্কাধাক্কির মধ্যে পড়তে হয়। তাই এ ব্যাপারে সাবধান থাকতে হবে।
 মিনায় চুল কাটার লোক পাওয়া যায়। নিজেরা নিজেদের চুল কাটবেন না, এতে মাথা কেটে যেতে পারে।
 মিনায় কোনো সমস্যা হলে বাংলাদেশ হজ মিশনের তাঁবুতে যোগাযোগ করবেন।

দোয়া কবুলের জায়গা
পবিত্র মক্কায় কাবা শরিফের বিভিন্ন জায়গায় দোয়া কবুল হয়ে থাকে।
 মাতাফ—তাওয়াফ করার স্থানকে মাতাফ বলে।
 মুলতাজাম।
 হাতিমের মধ্যে।
 মিজাবে রহমতের মধ্যে।
 কাবাঘরের ভেতরে।
 জমজম কূপের কাছে (যদিও কূপ এখন বেসমেন্টের নিচে, চাইলেও এখন দেখা যায় না)।
 মাকামে ইবরাহিমের কাছে।
 সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের ওপর।
 সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের মাঝখানে।
 বায়তুল্লাহর দিকে যখন নজর পড়ে।
 রকনে ইয়ামানি ও হাজরে আসওয়াদের মাঝখানে।
 আরাফাতের ময়দানে।
 মুজদালিফার ময়দানে।
 মিনার ময়দানে এবং মিনার মসজিদে খায়েফে।
 কঙ্কর মারার স্থানে।

তালবিয়া
লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা, ওয়ান্নিয়মাতা লাকা ওয়াল্ মুলক, লা শারিকা লাক্।

লক্ষ করুন
টিকা দেওয়া
হজযাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু হয়েছে। সিভিল সার্জনের কার্যালয় এবং যেসব জেলায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আছে, সেখান থেকে টিকা দিতে পারবেন।

তথ্য
(www.hajj.gov.bd) ওয়েবসাইটে ১০ সংখ্যার ট্র্যাকিং নম্বরটি প্রাক নিবন্ধনের সময় কম্পিউটারের দেওয়া নম্বর যেমন H7F94C53C1 জানা থাকলে হজযাত্রী ও তাঁর আত্মীয়স্বজন ওই হাজির তথ্য পেতে পারেন সহজে। হজ তথ্য সেবা কেন্দ্রে +৮৮০৯৬০২৬৬৬৭০৭ ফোন করতে পারেন।

প্রয়োজনীয় মালপত্র
হজের জন্য প্রয়োজনীয় মালপত্র সংগ্রহ করা এখন থেকেই শুরু করুন। আপনার মালপত্র হালকা রাখুন। কারণ, আপনাকেই তা বহন করতে হবে।

নিয়মকানুন
হজের নিয়মকানুন জানতে প্রয়োজনীয় বইপুস্তক পড়ুন। প্রথম আলো হজ গাইড সংগ্রহ করতে পারবেন হজ ক্যাম্প অথবা প্রথম আলো কার্যালয় থেকে।
(www.prothom-alo.com/hajj) থেকেও ডাউনলোড করতে পারেন

হজযাত্রীদের জন্য নতুন নিয়ম
 সৌদি সরকার এবার হজযাত্রীদের জন্য ই-ভিসা চালু করেছে। ই-ভিসার কাগজ আলাদাভাবে প্রিন্ট করে হজযাত্রীদের দেওয়া হবে। এই ভিসা পাসপোর্টের সঙ্গে লাগানো থাকে না। ফলে হজযাত্রীদের এটি আলাদা করে সংরক্ষণ করতে হবে। আগে পাসপোর্টের সঙ্গে ভিসা লাগানো থাকায় আলাদা করে সংরক্ষণের প্রয়োজন হতো না। এবার ই-ভিসা ও পাসপোর্ট বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশ পাসপোর্টের নির্দিষ্ট পাতায় সিল মারার পরও সেটি যত্ন করে রাখতে হবে।
 হজযাত্রীদের যাওয়া-আসার জন্য বিমানের দুটি বোর্ডিং কার্ড যাত্রীদের আগেই দিয়ে দেওয়া হবে। সেটি যত্ন করে রাখতে হবে।
 মক্কা–মদিনায় হজযাত্রীদের জন্য বিমানের সিটি চেকিং থাকছে না।

Source: http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/1260486/হজযাত্রা-প্রস্তুতি-নিতে-হবে-এখনই

41
Career Advice / গুগলে যোগ দিতে চাইলে
« on: October 16, 2016, 12:04:47 PM »
কর্মক্ষেত্র হিসেবে গুগল একটি চমৎকার প্রতিষ্ঠান হতে পারে। তবে সেখানে কাজের সুযোগ পাওয়াটা সহজ নয়। আর তা হাড়ে হাড়েই টের পেয়েছেন সুইজারল্যান্ডের নাগরিক পিয়েরে গোথিয়ের। গুগলে যোগ দিতে চেয়েছিলেন, সাক্ষাৎকার পর্বে বাদ পড়েন। এরপর তাঁকে করা সব প্রশ্ন এক ব্লগ পোস্টে প্রকাশ করেন তিনি।
প্রকৌশল পরিচালক পদে যোগ দিতে টেলিফোন সাক্ষাৎকারে অংশ নেন পিয়েরে। টেলিফোনের ওপারে সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী ১০টি প্রশ্ন করেন তাঁকে। মোটামুটি চারটি প্রশ্নের ঠিকঠাক উত্তর দেন, এরপর আর পারেননি। একপর্যায়ে রীতিমতো তর্ক জুড়ে দেন। নবম প্রশ্নের উত্তরে পাল্টা প্রশ্ন করে বসেন, এমন অদ্ভুত প্রশ্ন করার কারণ কী? গুগলে যোগ দেওয়ার সুযোগ যে পাননি, তা বলা বাহুল্য। কিছুটা রেগেই হোক কিংবা হতাশা থেকেই হোক, তাঁকে জিজ্ঞেস করা ১০টি প্রশ্নের সঙ্গে নিজের মতামত জুড়ে দিয়ে তিনি প্রকাশ করেন।
সেই ১০টি প্রশ্ন এখানে দেওয়া হলো। কখনো গুগলে সাক্ষাৎকার দিতে চাইলে উত্তরগুলো তৈরি রাখতে পারেন। অন্তত কেমন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা হয় তা সম্পর্কে একটা ধারণা তো পাওয়া যায়।
১. সি প্রোগ্রামিং ভাষায় malloc()-এর বিপরীত ফাংশন কী?
২. কোন ইউনিক্স ফাংশনের মাধ্যমে সকেটে সংযোগ দেওয়া হয়?
৩. ম্যাক ঠিকানা সংরক্ষণ করতে কত বাইট প্রয়োজন?
৪. প্রয়োজনীয় সময় অনুযায়ী ক্রম করুন: সিপিইউ রেজিস্টার রিড, ডিস্ক সিক, কনটেক্সট সুইচ এবং সিস্টেম মেমোরি রিড।
৫. লিনাক্স ইনোড কী?
৬. কোন লিনাক্স ফাংশনের ফলাফলে ইনোড পাওয়া যায়?
৭. KILL সংকেতের নাম কী?
৮. অ্যারে বাছাই করতে কুইকশর্ট কেন সেরা পদ্ধতি?
৯. ১৬ বিট ভ্যালুর ১০ হাজারের অ্যারের বিটগুলো কীভাবে সবচেয়ে কার্যকর উপায়ে গণনা করবেন?
১০. টিসিপি সংযোগ প্রতিষ্ঠা করতে কী ধরনের প্যাকেটের বিনিময় করতে হয়?
প্রশ্ন করা হয়েছিল, উত্তর দিতে পারেনি। চাকরিটা পিয়েরের হয়নি। এ পর্যন্ত ঠিক আছে। কিন্তু সে ব্লগ পোস্টে তিনি আরও কিছু কথা লিখেছেন নিজের সম্পর্কে, সে সাক্ষাৎকার সম্পর্কে। পিয়েরের কাছে মনে হয়েছে, তাঁর কিছু উত্তর ঠিক থাকলেও নিয়োগদাতা তা সঠিক বলে গ্রহণ করেননি।
১৮ বছর আগে পিয়েরে তাঁর নিজের প্রযুক্তিভিত্তিক প্রতিষ্ঠান চালু করেন। গুগলের বয়সও ১৮ বছর। ৩৭ বছর ধরে তিনি প্রোগ্রামিং সংকেত লেখার সঙ্গে যুক্ত। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন। তাঁর সব অভিজ্ঞতার কথা লিখে পিয়েরে প্রশ্ন রেখেছেন, নিয়োগ পাওয়া কি খুব কঠিন করে তুলছে গুগল? নাকি তাদের নিয়োগকর্তাদের প্রয়োজনীয় জ্ঞান নেই?
সূত্র: ম্যাশেবল

Source: http://www.prothom-alo.com/technology/article/1000651

42
Career Advice / সফলতার দশ সূত্র
« on: June 20, 2016, 12:41:22 PM »
প্রতিবছর বিশ্বের সবচেয়ে ধনী মানুষের তালিকা প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের ফোর্বস সাময়িকী। সে তালিকায় গত ২২ বছরে মোট ১৭ বার যাঁর নাম শীর্ষে ছিল, তিনি বিল গেটস। মাইক্রোসফটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। বিভিন্ন সাক্ষাৎকার, ভাষণে তরুণদের উদ্দেশে চমকপ্রদ সব পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

১. যত দ্রুত সম্ভব, শুরু করুন: বুড়ো বয়সে ‘যৌবনে কী-ই না করতে পারতাম!’—এই আফসোস যেন আপনাকে না ভোগায়। তাই বিল গেটস সব সময় বলেছেন, ‘শুরু করুন।’ যে ‘আইডিয়া’ আপনি মাথায় নিয়ে বসে আছেন, সেটা কাজে লাগিয়ে হয়তো কয়েক বছর পর অন্য কেউ সফল হবে। ছাত্রজীবন থেকেই স্বপ্নপূরণের শুরুটা হলে আপনার সফলতার সম্ভাবনা যতটুকুই থাকুক, অন্তত হাল ছেড়ে দেওয়ার আশঙ্কা কম থাকবে।
২. প্রতিদিন নিজের সেরাটা দিতে হবে: বিল গেটস বলছেন, ‘জীবনটা সেমিস্টার হিসেবে ভাগ করা নেই, যে দশ সপ্তাহ পর পর আপনি ভুলগুলো শুধরে নেওয়ার সুযোগ পাবেন। এমনকি এখানে “ব্রেক” বলেও কিছু নেই।’ অতএব, প্রতিদিন আপনাকে আপনার সেরাটাই দিতে হবে।
৩. নিজেই নিজের বস হোন: আপনি নিজেই যদি নিজের স্বপ্নপূরণের কাজে না নামেন, অন্য কেউ তাঁর স্বপ্ন পূরণে আপনাকে নিয়োগ করবে। তার চেয়ে বরং এই শ্রম নিজের স্বপ্নপূরণের পেছনে খরচ করুন।
৪. ‘না’ বলা শিখুন: আপনি যতই প্রতিভাবান হোন না কেন, দিনে ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় আপনি পাচ্ছেন না। এই ২৪ ঘণ্টা কে কীভাবে ব্যবহার করে, সেটাই সফল এবং অসফল মানুষের মধ্যে পার্থক্য গড়ে দেয়। হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিতে এক বক্তব্যে একবার বিল গেটস বলেছিলেন, ‘জীবনের সেরা উপদেশ আমি পেয়েছি আমার বন্ধু ওয়ারেন বাফেটের কাছ থেকে। সে বলেছিল, তোমাকে “না” বলতে জানতে হবে।’ বিল গেটস মনে করেন, কখনো কখনো ‘না’ বলতে পারা আপনাকে লক্ষ্যে অবিচল থাকতে সাহায্য করবে।
৫. প্রতিজ্ঞ হোন, প্রত্যয়ী হোন: সব সফল উদ্যোক্তাই জোর দিয়ে এই পরামর্শ দিয়েছেন। যে কাজটি করছেন, তার প্রতি ভালোবাসা থাকতেই হবে। সফল মানুষেরা একমাত্র ভালোবাসা দিয়েই কঠিন কাজটাকে সহজে করেন।
৬. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, জীবনই সেরা স্কুল: যত বই-ই পড়েন না কেন, শিক্ষাজীবনে যত পরীক্ষাই দেন না কেন—এসব কখনোই পুরোপুরি আপনাকে সত্যিকার জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা শেখাবে না। নিজের জীবন থেকে শিখেই তৈরি হতে হবে।
৭. আশা হারাবেন না: লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে হতাশাবাদী হলে চলবে না। বরং সব সময় আশাবাদী হতে হবে। ২০১৩ সালে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিল গেটস বলেছিলেন, ‘আশাবাদ অনেক সময় মিথ্যে আশায় পরিণত হয়। কিন্তু মনে রাখতে হবে, “মিথ্যে হতাশা” বলেও কিছু আছে।’

৮. সমালোচনাকে স্বাগত জানান: বিল গেটস তাঁর বিজনেস অ্যাট দ্য স্পিড অব থট বইয়ে সমালোচনার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বলেছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, অভিযোগ আর অসন্তুষ্টি আপনাকে আরও ভালো করার সুযোগ করে দেয়। তিনি লিখেছেন, ‘আপনার সবচেয়ে অসন্তুষ্ট কাস্টমাররাই আপনার শেখার সবচেয়ে বড় উৎস।’

৯. সাফল্যের হিসাব করুন: ২০০৩ সালে বিল গেটস দ্য মোস্ট পাওয়ারফুল আইডিয়া ইন দ্য ওয়ার্ল্ড নামে একটা বই থেকে তাঁর শিক্ষা কী, তা বলেছেন। ‘আপনি যদি একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্য ঠিক করে সব সময় হিসাব করেন, আপনি কতটুকু এগোলেন, তাহলেই লক্ষ্যে অবিচল থাকতে পারবেন।’ সঙ্গে তিনি এ-ও যোগ করেছেন, ‘এটা বলা যত সহজ, করা ততটাই কঠিন।’

১০. জীবনটা সহজ নয়, এটা মেনে নিন: আপনি যতই কঠোর পরিশ্রম করেন না কেন, এমন একটা সময় নিশ্চয়ই আসবে, যখন সবকিছু আপনার মনমতো হবে না। সবকিছু আপনার নিয়ন্ত্রণে থাকবে না। আপনি পড়ে যাবেন, কিন্তু আপনাকে আবার দাঁড়াতে হবে।

Source: http://www.prothom-alo.com/education/article/892201/সফলতার-দশ-সূত্র

43
ক্যারিয়ারে এগিয়ে যেতে কে না চান? চাকরি ছেড়ে দেওয়া বা নতুন চাকরিতে যোগ দেওয়া বা নতুন করে লেখাপড়া শুরু করা- পরিস্থিত যাই হোক না কেন, সফলতা পেতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কিছু শিক্ষা অর্জন জরুরি। সাধারণত অভিজ্ঞজনরা নতুনদের এসব শিক্ষা দিতে পারেন। এখানে ফোর্বসের ক্যারিয়ার বিশেষজ্ঞ ট্রাভিস ব্রাডবেরি তুলে ধরেছেন সেই সব শিক্ষার কথা। আগে থেকেই এসব না শিখে রাখলে পরবর্তিতে পস্তানো ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না।

১. প্রথমেই আত্মবিশ্বাস : সফল মানুষের মাঝে আত্মবিশ্বাসের বিচ্ছুরণ দেখা যায়। কারণ তারা নিজেদের ওপর বিশ্বাস রাখেন। তাদের কাছে প্রথমেই আসে আত্মবিশ্বাস, তারপর অন্য বিষয়গুলো। আর তা আনতে হলে নিচের বিষয়গুলো বুঝে নিন।

ক. সন্দেহ সব সময় নতুন সন্দেহের জন্ম দেয়। আপনার ওপর কেন অন্য কেউ ভরসা আনবেন? যদি নির্ভরতার উপাদানগুলো আপনার কাছে আছে বলে মনে করতে পারেন, তবেই অন্যের কাছে নিজের বিশ্বস্ততা দাবি করতে পারেন।

খ. নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে হলে আত্মবিশ্বাস জরুরি। মানুষ যেখানে স্বস্তিবোধ করে না, সেখানে বিশ্বাস আনতে চায় না। কারো ওপর বিশ্বাস আনতে হলে তার সংস্পর্শকে নিরাপদ মনে হতে হবে। সফল ক্যারিয়ারের চারদিকে শক্ত ভিত্তি গড়তে থাকে আত্মবিশ্বাস।

গ. যাদের নিজের ওপর আত্মবিশ্বাস নেই, তারা অভ্যন্তরের নানা পেরেশানিতে ভুগতে থাকেন। সফল মানুষরা নিজের ভেতর থেকে কোনো বাধার সম্মুখীন হন না।   

২. জীনটা ছোট যা আপনিই গড়বেন : আপনি আসলে পরিস্থিতির শিকার নন। সিদ্ধান্ত নিতে কেউ-ই আপনাকে জবরদস্তির মাধ্যমে বাধ্য করতে পারে না। যে পরিস্থিতিতে আজকে রয়েছেন তার কারণ আপনি নিজেই। আপনিই তা সৃষ্টি করেছেন। হতে পারে লক্ষ্য অর্জনে যা করা দরকার ছিল তা করার সাহস আপনার মধ্যে ছিল না। যখন শুরু করবেন তখন মইয়ের নিচ থেকে বেয়ে বেয়ে ওপরে ওঠার পরিকল্পনা করবেন।

৩. ব্যস্ততাই উৎপাদনশীলতা নয় : আপনি সারা দিন কাজে ব্যস্ত থাকেন। এর অর্থ এই নয় যে, ব্যস্ততার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যেতে পারছেন। একের পর এক মিটিং শেষে আপনার অর্জন শূন্য হতে পারে। সফলতা কেবলমাত্র ব্যস্ততা থেকে আসে না। মনসংযোগ থেকে আসে যা উৎপাদনশীল কাজে ঢেলে দেওয়া হয়। জ্ঞানগর্ভ থেকে উৎপাদনশীল কাজ বেছে নিন। আপনার ব্যস্তাতার ফলে যা বেরিয়ে আসবে যা ফলপ্রসূ না হলে কোনো লাভই নেই।

৪. অন্যদের মতো আপনিও দক্ষ : এমন মানুষের চারপাশে অবস্থান করবেন যারা আপনাকে অনুপ্রেরণা দেবে। অন্য সব যোগ্য মানুষের মতো আপনার মাঝেও যোগ্যতা ও মেধা রয়েছে। যারে নিচে টেনে নেয় তাদের সঙ্গে থাকলে পতন ঘটবেই। জীবনের পরিসর অনেক ছোট। কাজেই এসব নেতিবাচক মানুষের চারপাশে থেকে ময় নষ্ট করবেন না।

৫. না চাওয়া পর্যন্ত 'হ্যাঁ' বলবেন না : ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার এক গবেষণায় বলা হয়, 'না' কথাটা বলতে যত অস্বস্তি বোধ করবেন, মানসিক চাপ ততই বেড়ে যাবে। 'না' কথাটা অনেক শক্তিশালী যার মাধ্যমে বহু বাজে পরিস্থিতি এড়িয়ে চলা যায়। যা করতে চাইছেন না, সেখানে 'না' বলুন। মন থেকে চাইলেই 'হ্যাঁ' বলতে পারেন।

৬. অতিমাত্রায় নেতিবাচক চিন্তা পরিহার করুন : ক্যারিয়ারে সব সময় আনন্দের উপকরণ পাবেন না। তখন নিজেকে নিয়ে সন্দেহ দানা বাঁধবে। নৈরাশ্যবাদ ভর করবে। এগুলো নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করলে আত্মবিশ্বাস হারাতে থাকবে। তবে ভেতর থেকে যা খুব বেশি সমস্যা সৃষ্টি করছে তা বোঝার চেষ্টা করুন।

৭. 'যদি এমন হয়' চিন্তাটা ত্যাগ করুন : লক্ষ্য নির্ধারণে এই চিন্তা পদে পদে বাধা সৃষ্টি করবে। 'যদি এমন হয়' কথাটি মনে উদয় হলেই তা না-বোধক শব্দ হয়ে যায়। এই সন্দেহ এমন এক পরিস্থিতিতে নিয়ে যায়, যেখানে কোনো সম্ভাবনা থাকে না।

৮. স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন : স্বাস্থ্য ঠিক না থাকলে কোনো কাজই সম্পন্ন হবে না। মস্তিষ্ককে কর্মক্ষমতা দেয় ঘুম। তাই নিয়মিত গভীর ঘুম অতি জরুরি। আবার নিয়মিত ব্যায়াম আপনাকে আরো বেশ কর্মক্ষম করে তুলতে পারে। আত্মনিয়ন্ত্রণ, মনোযোগ বৃদ্ধি এবং স্মৃতিশক্তি ধরে রাখতে ঘুম ও ব্যায়াম বিকল্প নেই। ইস্টার্ন অন্টারিও রিসার্চ ইনস্টিটিউটের এক গবেষণায় বলা হয়, যারা প্রতি সপ্তাহে দুই বার ব্যায়াম করেন, ১০ সপ্তাহ পর তারা নিজেদের প্রতিযোগী মনে করেন।

৯. ছোটখাটো বিজয় উদযাপন : সফলতা সব সময় বড় আকারে আসবে এমন কোনো কথা নেই। ছোটখাটো অর্জন কোনো না কোনো সময় ঠিকই আসছে। তাই এগুলো আপনাকে আরো উজ্জীবিত করে তুলতে পারে। এতে টেসস্টোস্টেরন হরমোনের ক্ষরণ বাড়ে। এই হরমোন আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করে।

১০. নিখুঁত কাজ আশা করবেন না : কোনো কাজই নিখুঁত হয় না। প্রকৃতিগতভাবেই কোনো কিছু নিখুঁত নয়। তাই এমনটা পেতে চাইলে কেবল সময়ের অপচয়ই হতে থাকবে। তা ছাড়া মানসিক পীড়া বাড়বে। এর প্রতি সব খেয়াল ঢেলে দিলে ব্যর্থতা চলে আসবে। তাই সফল হতে গুণগত মানসম্পন্ন কাজ করুন।

১১. সমাধানে মনোযোগ দিন : সমস্যা থাকবেই। তাই সব সময় সমাধানের খোঁজ করুন। যেকোনো সমস্যা সমাধানের উপায় রয়েছে। সমস্যা নিয়ে পড়ে থাকলে নেতিবাচক চিন্তা-ভাবনা উঁকি দেবে মনে।

১২. নিজেকে ক্ষমা করুন : মাঝে মাঝে ব্যর্থতার শিকার হবে। পিছলে পড়ে যাবেন। ভুল হতেই পারে। এ নিয়ে অনুতাপ করবেন না। ভুল তখনই মূল্যবান হয় যখন এর থেকে শিক্ষা নিতে পারবেন। অনুতাপে না ভুগে নিজেকে ক্ষমা করে দিন। এ কাজ না করতে পারলে ধীরে ধীরে আত্মবিশ্বাসে ক্ষয় ধরবে। তখন নিজের ওপর নিজেই আস্থা রাখতে পারবেন না। সূত্র : ফোর্বস

Source: http://www.kalerkantho.com/online/lifestyle/2016/05/03/354338

44
Common Forum / Notice for paying DIU academic fees through bKash
« on: April 18, 2016, 04:31:02 PM »
সম্মানিত অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, বাংলাদেশের যে কোন প্রান্ত থেকে bKash এর মাধ্যমে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা তাদের একাডেমিক ফি পরিশোধ করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে নিয়মিত বিকাশ ফি প্রতি হাজারে ২০ টাকার পরিবর্তে ১২ টাকা চার্জ প্রযোজ্য হবে।

সুতরাং লাইনে দাঁড়িয়ে কষ্ট করে টাকা জমা দেওয়ার চেয়ে bKash এর মাধ্যমে ফি পরিশোধের এই সুবিধা গ্রহণ করলে পরিশ্রম এবং সময় দুইটাই সাশ্রয় হবে।

বিকাশ নাম্বারঃ
Main Campus # 01847027541
Uttara Campus # 01811458886
Permanent Campus, Ashulia # 01811458885

বিকাশের মা্ধ্যমে টাকা পাঠানোর নিয়ম জেনে নিন নিচের সংযুক্তি থেকে-

45
Students of Electronics and Telecommunication Engineering (ETE) department of Daffodil International University visited Satellite Earth Station and ITX-IGW of Bangladesh Telecommunication Company Ltd (BTCL) Karail, Banani. . The tour was held on 13 August, 2015, Thursday. The faculty member, Mst. Najnin Sultana, Assistant Professor, Department of ETE conducted this study tour.

Engr. Md. Kamruzzaman, Sub Divisional Engineer (Satellite Communication) and Engr. Mansur Rahman, Sub Divisional Engineer (ITX, ITW) demonstrated on details about Satellite Communication among the students.

Pages: 1 2 [3] 4