Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Messages - Md. Rashadul Islam

Pages: 1 [2]
16
চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্সিতে (সিএ) আমার পাঠ শেষ হয় ২০১২ সালে। তার আগে পড়ালেখার সময়ই বিশ্বের অন্যতম হিসাবরক্ষণ প্রতিষ্ঠান ‘আর্নেস্ট অ্যান্ড ইয়ং’-এ পরামর্শক হিসেবে কাজ শুরু করেছিলাম। সিএ শেষ করে ২০১৩ সালে যোগ দিই এনআরএমএ গ্রুপে। তত দিনে আমি অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব পেয়ে গেছি। উচ্চতর ডিগ্রি, সঙ্গে ভালো চাকরি। ভালোই কাটছিল সময়। এর মধ্যে ২০১২ সালে ছোট ভাইও পড়ালেখার জন্য অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমায়। কিন্তু না, বেশি দিন এভাবে এগোল না। ২০১৩ সালের এপ্রিলে হঠাৎ করেই বাবা মারা গেলেন। দেশে ফিরতে হলো আমাকে। পরিবারের বড় সন্তান হিসেবে তখন মাথার ওপর অনেক বড় বড় দায়িত্ব। কী করব, কিছুই ঠিক বুঝতে পারছিলাম না। তবে মনে মনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা, কিছু একটা করতেই হবে। যেভাবেই হোক পরিবারের হাল ধরতে হবে।
ছোট দুই ভাইবোন তখনো বয়সে অনেক ছোট। তারা যে কিছু করবে, সে সুযোগ নেই। যা করার আমাকেই করতে হবে। ঠিক করলাম, বিদেশে আর ফিরে যাব না। পরিবারের কাছাকাছি থাকতে হবে। মাঝখানে অস্ট্রেলিয়া গিয়ে সেখানকার পাট চুকিয়ে ফিরে এলাম দেশে। ভবিষ্যৎ তখনো অনিশ্চিত। পরিবারের আর্থিক অবস্থাও এমন নয় যে ব্যবসাপাতি কিছু শুরুর কথা ভাবব। অগত্যা চাকরি ছাড়া বিকল্প কিছু ভাবার সুযোগ পেলাম না।
শুরু হলো চাকরি খোঁজা। এই হাত, ওই হাত, নানা বন্ধুবান্ধবের হাত হয়ে ‘রকেট ইন্টারনেট’ নামের একটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানে জমা পড়ল আমার জীবনবৃত্তান্ত। ডাক পড়ল সাক্ষাৎকারের। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ই-কমার্স ব্যবসার সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানটি এ দেশে তাদের ব্যবসা শুরুর পরিকল্পনা করছিল। এ জন্য তারা খুঁজছিল কান্ট্রি ডিরেক্টর। অনেকের সঙ্গে আমিও সাক্ষাৎকার দিলাম। তারা আমাকে নির্বাচিত করল।

আমার কাঁধে এসে পড়ল বিশাল এক চ্যালেঞ্জ। রকেট ইন্টারনেটের হয়ে ই-কমার্স ব্যবসা চালু করতে হবে দেশে। অদম্য সাহস ছিল বুকে, ছিল পরিবারের সহায়তা। আমি একটু একটু করে এগোতে থাকলাম। আমি জানতাম, দেশে ই-কমার্স ব্যবসার কয়েকটি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। আমি তাদের চেয়ে ভিন্ন কিছু করতে চাইলাম। এ জন্য কোন খাতে নতুন কিছু করার সুযোগ আছে খুঁজতে শুরু করলাম। রকেট ইন্টারনেট বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ই-কমার্সের সঙ্গে জড়িত বলে ব্যবসার নতুন কিছু ক্ষেত্র সম্পর্কে ধারণা পেলাম। প্রতিষ্ঠানটি থেকেও আমাকে প্রথম পরামর্শ দেওয়া হলো ‘লামুডি’র কার্যক্রম শুরু করার।
আমি দেখলাম, এ দেশে আবাসন খাতে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্যভান্ডার নেই, যার মাধ্যমে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে একটি আস্থা রাখার মতো যোগসূত্র তৈরি হতে পারে। এবার শুরু হলো আবাসন খাতের কোম্পানিগুলোর তথ্য সংগ্রহের পালা। দিনের পর দিন বিভিন্ন আবাসন কোম্পানিতে ধরনা দিতে থাকলাম। কারও কাছ থেকে খুব ভালো সাড়া পেলাম, কারও কারও বেলায় অভিজ্ঞতাটা সুখকর ছিল না। কিন্তু আমরা পিছপা হলাম না। একটু একটু করে এগোতে থাকলাম। আবাসন খাতের যেসব কোম্পানির শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিলিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছি, তাঁরা আমাদের প্রস্তাবে খুবই আগ্রহ দেখালেন।
প্রাথমিক পর্যায়ে হাতে গোনা কিছু কোম্পানির তথ্য ও ছবি নিয়ে লামুডি যাত্রা শুরু করে ২০১৩ সালের নভেম্বরে। শুরু থেকেই আমাদের প্রচেষ্টা ছিল গ্রাহকের সঙ্গে বিক্রেতার যোগসূত্র তৈরি করে দেওয়া। এমনভাবে পণ্যের তথ্য ও ছবি উপস্থাপন করা হয়েছে, যাতে করে গ্রাহকের সব ধরনের চাহিদা পূরণ হয়। সাড়া খারাপ মিলল না।

দেশে ফিরতে হলো আমাকে। পরিবারের বড় সন্তান হিসেবে তখন মাথার ওপর অনেক বড় বড় দায়িত্ব। কী করব, কিছুই ঠিক বুঝতে পারছিলাম না। তবে মনে মনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা, কিছু একটা করতেই হবে
এরপর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হলো লামুডি। আস্তে আস্তে জনপ্রিয়তাও বাড়তে লাগল সাইটটির। লামুডি নিয়ে কাজ করার পাশাপাশি আমরা ‘কারমুডি’ নামে গাড়ির বিপণনের একটি আলাদা সাইট নিয়েও কাজ শুরু করি। প্রথমে কারহাটের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে যাত্রা শুরু হয় কারমুডির। এরপর বিভিন্ন গাড়ির শোরুমে গিয়ে বিক্রেতাদের এর সঙ্গে যুক্ত করা হয়। বলতে গেলে আমার তত্ত্বাবধানেই লামুডি ও কারমুডি—এই দুটি ই-কমার্স সাইটের যাত্রা। লামুডি-কারমুডির পরপরই চালু হয় ‘কেইমু’। তিনটি সাইটই কাছাকাছি সময়ে চালু হয়। তবু কেন যেন আমার ভেতরে একটা অতৃপ্তি কাজ করছিল। নতুন কিছু করার তাড়নায় আমি চাকরি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিই।
এদিকে রকেট ইন্টারনেটের হয়ে তিনটি ই-কমার্স ব্যবসার যাত্রা শুরুর পর প্রতিষ্ঠানটির নির্ভরতা বেড়ে যায় আমার ওপর। তাদের পক্ষ থেকে আমাকে প্রস্তাব করা হয় ‘ফুডপান্ডা’র কার্যক্রম শুরু করার। এবারের প্রস্তাবটি ছিল ভিন্ন। বলা হলো, এবার চাকরিজীবী হিসেবে নয়, সহ-উদ্যোক্তা হিসেবে ফুডপান্ডার সঙ্গে যুক্ত হতে পারি। কোম্পানিতে আমারও মালিকানা থাকবে।
প্রস্তাবটি আমারও বেশ পছন্দ হলো। তাই হাতছাড়া করলাম না। কারণ, আমি তো এমন কিছুরই পরিকল্পনা করছিলাম। কিছু বিষয় নিয়ে দর-কষাকষি শেষে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুক্ত হলাম ফুডপান্ডার সঙ্গে।
প্রতিষ্ঠানটির দুই বছর এখনো পূর্ণ হয়নি। এরই মধ্যে ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম ও সিলেট নগরীতেও এটি এখন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বিষয়টি এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা উৎসাহিত হওয়ার মতো। ঘরে বসে আপনার বিশেষ কোনো রেস্তোরাঁর খাবার খেতে ইচ্ছে করছে? আমরা সে সুযোগটা করে দিচ্ছি। এভাবে তিনটি শহর মিলিয়ে আমাদের মাধ্যমে প্রতি মাসে এখন গড়ে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার খাবারের অর্ডার হচ্ছে। তাও আবার তিন শহরের সব জায়গায় আমরা খাবার সরবরাহ করতে পারছি না। খাবারের গুণগত মান যাতে নষ্ট না হয়, সে জন্য মূলত রেস্তোরাঁর আশপাশে তিন কিলোমিটারের মধ্যে আমরা আমাদের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রেখেছি। এত সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও দুই বছরের কম সময়ে প্রতিষ্ঠানটি ব্যবসায় সফল হয়ে উঠেছে। না লাভ, না লোকসান অবস্থায় আমরা পৌঁছে গেছি। নিজেদের আয়ে নিজেদের খরচ মেটাচ্ছি। কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলিয়ে ফুডপান্ডায় এখন ২০০ কর্মী। আমাদের সরবরাহকেন্দ্র রয়েছে ১৪০ থেকে ১৫০টি। শুধু ঢাকা শহরের ভেতরেই রয়েছে আটটি সরবরাহ অঞ্চল।
এই যে ২০১৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এত দূর আসা, সফলতা যেমন পেয়েছি, তেমনি বন্ধুর পথও পাড়ি দিতে হয়েছে। এমনও হয়েছে বিদেশ থেকে অফিস ভাড়া, বেতন-ভাতা আসতে দেরি হয়েছে অনেক। কারণ, রকেট ইন্টারনেট ছিল একটি বিদেশি প্রতিষ্ঠান। তারা টাকা পাঠালেও সেই টাকা ছাড় করতে অনেক ঝক্কি পোহাতে হয়েছে। এ কারণে বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে টাকা ধার করে অফিস চালিয়েছি। একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে নিজের গাড়িও বিক্রি করতে হয়েছে। এখন অবশ্য খুব বেশি সেই পরিস্থিতিতে পড়তে হয় না।
ই-কমার্স ব্যবসায় বাংলাদেশ ধীরে ধীরে অনেক উন্নতি করছে। তবু আমার মনে হয় তা সম্ভাবনার চেয়ে অনেক কম। এখনো অনলাইনে আমরা যত ক্রয়াদেশ পাই, তার বেশির ভাগই নগদে লেনদেন হয়। পণ্য বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো নগদ লেনদেনে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। অথচ বিদেশে বিভিন্ন ধরনের কার্ডে লেনদেনকে অনেক বেশি উৎসাহিত করা হয়। এমনকি কার্ডে লেনদেনকে উৎসাহিত করতে মূল্যছাড়ও দেওয়া হয়। আর আমাদের দেশে ঠিক তার উল্টোটি। এটি আমার কাছে খুবই আশ্চর্যজনক লাগে। বিষয়টি নিয়ে অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের কথা শুনে মনে হয়েছে, কার্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রে খরচ বেশি। ব্যাংকগুলো বেশি মাশুল আদায় করে। এ কারণে বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো কার্ডে লেনদেনের চেয়ে নগদে লেনদেন করতে বেশি আগ্রহ বোধ করে।
বর্তমানে এ দেশের, বিশেষ করে রাজধানীর মানুষের জীবনযাত্রার যে অবস্থা, তাতে আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হলো তথ্যপ্রযুক্তিকে ব্যবহার করে মানুষের জীবনকে সহজ করে দেওয়া। বিশেষ করে স্বাস্থ্য খাত, আর্থিক প্রযুক্তি নিয়ে নতুন কিছু করতে চাই। বিদ্যমান ব্যবসাকে হুমকিতে না ফেলে বরং তাদের ব্যবসার আরও প্রসার ঘটিয়ে মানুষের জীবন কীভাবে আরও সহজ করে দেওয়া যায়, সেটিই আমার স্বপ্ন।

17
জন্মের সময়ে কি কারও শরীরে “মিলিয়নিয়ার” খেতাব লাগিয়ে দেওয়া হয়? না, বরং আপনার-আমার মতো সাধারণ মানুষের মধ্য থেকেই নিজ গুণে একেক জন মানুষ হয়ে ওঠেন মিলিয়নিয়ার। জেনে রাখুন কী করে অন্যদের টেক্কা দিয়ে মিলিয়নিয়ার হয়ে উঠতে পারেন আপনিও!

আমরা সারাদিন যা যা করি, তার ৪০ শতাংশই হলো অভ্যাস। আর মিলিয়নিয়াররা এ ব্যাপারটাকেই কাজে লাগান। তারা তৈরি করে ফেলেন এমন কিছু উপকারী সুঅভ্যাস যা তাদের ধনী হয়ে ওঠার পথে এগিয়ে নিয়ে যায়। দেখুন তাদের এমনই ৫টি অভ্যাস:
১) তারা ভালো-খারাপ যাচাই করে কাজ করেন

ধনী হতে হলে লক্ষ্য ঠিক করতে হবে, এরপর সেই লক্ষ্য মাথায় রেখে আগাতে হবে। কিন্তু এমন কিছু লক্ষ্য আছে আদতে যেগুলোর কোনো মূল্যই নেই। ভালো লক্ষ্য হতে পারে আয় বাড়ানো, লাভজনক কোনো ব্যবসা শুরু করা, বাড়ি কেনা, বাচ্চাদেরকে ভালো স্কুলে দেওয়া ইত্যাদি। আবার খারাপ লক্ষ্যের নমুনা হতে পারে ফেরারি ব্র্যান্ডের গাড়ি কেনার ইচ্ছে। আপনার বর্তমান আয় অনুযায়ী তা কেনার সাধ্য আপনার নাও থাকতে পারে। সুতরাং যথেষ্ট টাকা জমাতে আপনাকে প্রচুর কাজ করতে হবে, হয়তোবা নিজের সঞ্চয়েও হাত দিতে হবে। এমন লক্ষ্য ঠিক করাটা আসলেই অপ্রয়োজনীয়। এ কারণে লক্ষ্য ঠিক করার আগে ভেবে নিন ভালো করে।
২) তারা সময় নষ্ট করেন না

ধনী মানুষরা সাধারণত দিনে এক ঘণ্টারও কম সময় টিভি দেখেন এবং এক ঘণ্টারও কম সময় ইন্টারনেটে ব্রাউজ করেন। তবে তাদের কাজের সাথে সম্পর্ক থাকলে অবশ্যই বেশি সময় ইন্টারনেটে থাকতে দেখা যায়। তারা নিজেদের অবসর সময়টা ব্যয় করেন নিজের জীবন আরো উন্নত করার কাজে। এ সময়ে তারা নেটওয়ার্কিং করে থাকেন, নিজের ছোট কোনো ব্যবসা বা পেশায় সময় দেন অথবা এমন কিছু করেন যাতে ভবিষ্যতে লাভ হয়।
৩) লক্ষ্যের আগে স্বপ্ন

লক্ষ্য ঠিক করা জরুরী কিন্তু তারও আগে ঠিক করা জরুরী আপনার স্বপ্ন। আপনি ভবিষ্যতে কী করার স্বপ্ন দেখেন? এর ওপরেই ভিত্তি করে গড়ে উঠবে আপনার লক্ষ্য। স্বপ্ন ছাড়া লক্ষ্যের কোনো মূল্য নেই। কিন্তু আপনি যা করার স্বপ্ন দেখছেন, তাকেই আবার লক্ষ্য বলে ভুল করবেন না। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, বছরে এক লাখ টাকা জমানো একটা স্বপ্ন, এটা লক্ষ্য নয়। এই স্বপ্ন পূরণ করতে আগামি কয়েক মাস বা বছরে আপনার কতো টাকা আয় বাড়াতে হবে অথবা কোন প্রতিষ্ঠানে চাকরি নিতে হবে- সেটা হতে পারে আপনার লক্ষ্য।
৪) স্বপ্নের পিছু ছাড়েন না কখনোই

সাধারণ মানুষ থেকে মিলিয়নিয়ার হয়ে উঠতে চাইলে একেবারে জোঁকের মতো নিজের স্বপ্নের পিছনে লেগে থাকতে হবে আপনাকে। যতো দেরিই হোক না কেন, স্বপ্নকে পূরণ করেই ছাড়বেন- এমন মনোভাব থাকা উচিত আপনার। একবার বিফল হলেও সেই কাজে সফল হবার জন্য বারবার করার সংকল্প থাকতে হবে। অনেক সময়ে আপনার কাছের মানুষের আপনার এই সংকল্পকে গোয়ার্তুমি মনে করে বাধা দিতে চাইবে। কিন্তু মিলিয়নিয়ার হতে চাইলে আপনার হেরে গেলে চলবে না। আপনি যদি নিশ্চিত থাকেন এই স্বপ্ন পূরণ আপনার জন্য জরুরী তবে অবশ্যই তার পেছনে লেগে থাকতে হবে।
৫) আয়ের একাধিক উৎস থাকা চাই

শুধু মিলিয়নিয়ার নয়, যে কোনো রকমের ধনী হতে হলে আপনি একটিমাত্র আয়ের ওপরে নির্ভর করে থাকতে পারবেন না। একাধিক আয়ের উৎস থাকতে হবে। বেশীরভাগ সময়ে তিন বা তারও বেশি আয়ের উৎস থাকে মিলিয়নিয়ারদের। এসব ক্ষেত্রে একটি আয়ের উৎস বসে গেলেও অন্যগুলো থেক এয়ায় অব্যহত থাকে তাদের।

18
ভাবুন তো , প্রতিমাসে আপনার বর্তমান স্যালারির দ্বিগুণ পরিমাণ টাকা যদি পেতেন তবে কতোই না ভালো হতো? বাড়ি ভাড়া দিতে প্রতি মাসে হিমশিম খেতে হতো না, ভালো রেস্টুরেন্টের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলতে হতো না, লোনের বোঝাটা একটু হলেও হালকা হতো। আয় দ্বিগুণ করার প্রক্রিয়াটি অসম্ভব মনে হতে পারে, কিন্তু কিছু কৌশল জানা থাকলেই তা হয়ে যাবে অনেক সহজ। চলুন জানি সেই ৮টি উপায়।
১) নিজের দক্ষতা বাড়ান

সবারই কিছু না কিছু ক্ষেত্রে দক্ষতা থাকে, প্রতিভা থাকে, নিজের এসব দক্ষতাকে চিহ্নিত করুন এবং এগুলোকে আরো উন্নত করার জন্য দরকার হলে প্রশিক্ষণ নিন। শুধু তাই নয়, অন্যদের চাইতে আলাদা কোনো দক্ষতা তৈরি করার চেষ্টা করুন যাতে কর্মক্ষেত্রে আপনার কদর দেওয়া হয়।
২) নিজে থেকে অগ্রসর হন

জব ডেসক্রিপশনে যা যা করার কথা তার বাইরেও কিছু কাজ করুন নিজে থেকে। প্রতিষ্ঠানের উপকার হবে এমন কোনো বুদ্ধি খুঁজে বের করুন এবং নিজে থেকেই সে কাজটি করা শুরু করুন। এতে বোঝা যাবে আপনি উন্নতি করতে প্রস্তুত। ফলে আপনার সুনাম তৈরি হবে।
৩) ইন্টারভিউ দিতে পিছ পা হবেন না

বছরে অন্তত একবার হলেও অন্য কোথাও ইন্টারভিউ দিন। এতে অন্যত্র কাজের সুবিধা এবং স্যালারির ব্যাপারে আপনার জানা থাকবে। নিজের প্রতিষ্ঠানেও আরও ভালো কোনো পদে চাকরির জন্য ইন্টারভিউ দিন। এতে হুট করেই দেখবেন খুব ভালো কোন পদে চাকরি হয়ে গেছে। তা না হলেও আপনার রেজুমি সবসময়ে হালনাগাদ থাকবে এবং যে কোনো পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত থাকবেন আপনি।
৪) জ্ঞান বাড়ান

আপনি যে পেশাতেই থাকুন না কেন, জেনে রাখুন তাতে নতুন কিছু শেখার আছে অবশ্যই। প্রশিক্ষণ নিতে কখনোই পিছ পা হবে না। প্রমোশনের জন্যেও আপনাকে যোগ্য করে তুলবে এসব জ্ঞান। আর আপনার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে রাখুন যে আপনি পেশা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।
৫) মূল্য বৃদ্ধি করুন

যাদের ব্যবসা আছে তাদের জন্য প্রযোজ্য এই উপদেশ। পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি করতে গেলে তার মান বা পরিমাণ বাড়াতে হবে। কিন্তু এর মাধ্যমে আপনার আয়ও বাড়বে।
৬) অন্যদের সাহায্য করুন

কোম্পানির আয় বাড়াতে নিজের সাহায্য যে কতোটা গুরুত্বপুর্ন তা প্রমাণ করতে পারলে আপনার আয়ও বেড়ে যাবে।
৭) নিজের ব্যবসা দাঁড় করান

হয়তো এমন কোনো কাজ আছে যাতে আপনার দক্ষতা অনেক বেশি, তাহলে সেই কাজটিকে দিয়েই নিজের ব্যবসা শুরু করে ফেলুন। চাকরির পাশাপাশি এই ব্যবসাটিও আপনার আয় জোগাবে।
৮) চাকরি পরিবর্তন করুন

যদি আপনার মনে হয় বর্তমান চাকরিতে উন্নতির জায়গা কম, বা বেতন বাড়ারও সম্ভাবনা নেই তবে চাকরি পরিবর্তন করুন এবং এমন কোনো চাকরি খুঁজে নিন যাতে আপনার বেতন বাড়ার সম্ভাবনা আছে।

19
বসুন্ধরা সিটি, গ্রামীণফোন হেডকোয়ার্টার, চট্টগ্রামের রেডিসন হোটেলসহ বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য সুরম্য ভবনের স্থপতি মুস্তাফা খালীদ পলাশ ও শাহজিয়া ইসলাম অন্তন দম্পতির প্রতিষ্ঠান ভিস্তারা আর্কিটেক্টস। তাঁদের নিয়ে আজকের প্রচ্ছদ। লিখেছেন নাদিম মজিদ, ছবি তুলেছেন সাজেদুল ইসলাম শুভ্র

মুস্তাফা খালীদ পলাশ

১৯৬৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ঢাকার সিদ্ধেশ্বরীতে জন্ম। সিদ্ধেশ্বরী বয়েজ হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক, বিএএফ শাহীন কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং বুয়েট থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। ১৯৮৮ সালে যোগ দেন প্রস্থাপনা লিমিটেডে। ১৯৯৪ সালে বুয়েটে শিক্ষকতায়। একই বছর ভিস্তারা আর্কিটেক্টসের যাত্রা শুরু।

 

শাহজিয়া ইসলাম অন্তন

১৯৬৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ওয়ারি র‌্যাংকিং স্ট্রিটে জন্ম। ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল ঢাকা থেকে মাধ্যমিক, হলিক্রস কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং বুয়েট থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। ১৯৮৮ সালে যোগ দেন প্রস্থাপনা লিমিটেডে। ১৯৯৪ সালে তাঁদের প্রতিষ্ঠান ভিস্তারা আর্কিটেক্টস যাত্রা শুরু করে।

স্থাপত্যের জোড়া প্রাণগ্রামীণফোন হেডকোয়ার্টার

চাচা ড. সিরাজুল ইসলাম ছিলেন বিজ্ঞান জাদুঘরের পরিচালক আর বাবা কে এম জি মুস্তাফা এবং মা আফরোজ মুস্তাফা ছিলেন চিত্রকলার মানুষ। বিজ্ঞান ও চিত্রকলা দুটোই তাঁকে টানত। আর ভালো লাগা দুটো বিষয়কে সমন্বয় করতে ভর্তি হন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্যবিদ্যা বিভাগে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু হওয়ার কদিনের মধ্যেই বিভাগের শিক্ষক ও ক্লাসের শিক্ষার্থীদের নজর কাড়েন মুস্তাফা খালীদ পলাশ। বুঝতে পারেন, তাঁর চিন্তাভাবনা আলাদা। দারুণ ছবি আঁকতে পারেন। সেতার বাজানোতে হাত পাকা। সহপাঠী শাহজিয়া ইসলাম অন্তন বলেন, 'ক্লাসের ৪৯ জন একভাবে চিন্তা করত, আর পলাশ চিন্তা করত আলাদাভাবে। তার চিন্তাটাকেই আমার মনে হতো সেরা।'

স্ত্রীর প্রশংসা শুনে হাসলেন পলাশ-'অন্তন নিজের কথা কিছু বলছে না। সে ভালো রবীন্দ্রসংগীত গায়। তার রয়েছে মাতৃসুলভ আচরণ।'

১৯৮৮ সালে বুয়েট থেকে পাস করে বের হয় এ দম্পতি। পলাশ প্রথম শ্রেণিতে দ্বিতীয়। যোগ দেন 'প্রস্থাপনা লিমিটেড' নামে একটি আর্কিটেকচার ফার্মে। তখনো আর্কিটেকচার ফার্মের ক্ষেত্র আমাদের দেশে সেভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। বিভিন্ন জন তাঁকে দিয়ে ডিজাইন করিয়ে নিত কিন্তু পয়সাপাতি দিত না। আয় হচ্ছিল না। চলতে হচ্ছিল খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। ১৯৯৪ সালে নিজের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষকতার ডাক আসে। নিজের সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে যোগ দেন প্রভাষক হিসেবে।

১৯৮৮ সালে অন্তন যোগ দেন প্রস্থাপনা লিমিটেডে। তিন বছর কাজ করার পর বড় ছেলে নৈঋতের জন্ম হলে এক বছর বিরতি নেন। পরের বছর একই প্রতিষ্ঠানে আবার কাজ শুরু করেন।

স্থাপত্যের জোড়া প্রাণ হোটেল রেডিসন

ভিস্তারা আর্কিটেক্টস

১৯৯৪ সালে ছোট পরিসরে ভিস্তারা আর্কিটেক্টসের যাত্রা শুরু। অফিস গুলশান-১-এ। ১৯৯৭ সালে পান্থপথে নির্মাণ করেন ইউটিসি বিল্ডিং। পরের বছর বসুন্ধরা সিটি নির্মাণের জন্য ডাক পান। সে শপিং মল নির্মাণ শেষ হয় ২০০৪ সালে। প্রতিষ্ঠা হলে শুরু হয় চারদিকে হইচই। ভবনের পরিকল্পনা দেখে সবাই খুশি। ভবনের সামনে ফোয়ারা। দুই লেনের রাস্তা। বসুন্ধরা সিটি নির্মাণে পলাশের সঙ্গে ছিলেন আরেক জন স্থপতি মোহাম্মদ ফয়েজ উল্লাহ। তারপর ভিস্তারা আর্কিটেক্টসকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। নির্মিত হয়েছে ওয়েস্টিন ঢাকা, গ্রামীণফোন, রবি এবং বাংলালিংকের সদর দপ্তর, গ্র্যান্ড ডেলভিস্তা, ইউনিক ট্রেড সেন্টার, আবদুল মোনেম ফিন্যান্সিয়াল ডিসট্রিক্ট, রেডিসন বে ভিউ হোটেল (চট্টগ্রাম), হিলটন (ঢাকা), ল্যাবএইড কার্ডিয়াক হাসপাতাল ইত্যাদি।

২০০৫ সালে গ্রামীণফোন তাদের সদর দপ্তরের নির্মাণ নিয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা আহ্বান করে। প্রতিযোগিতায় তিনটি দেশীয়, ব্রিটিশ এবং নরওয়ের প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাবনা প্রাথমিকভাবে মনোনীত হয়। এর মধ্যে নরওয়ের প্রতিষ্ঠান এনবিবিজে ছিল গ্রামীণফোনের মূল মালিক টেলিনরের সদর দপ্তরের নির্মাতা। সব প্রতিষ্ঠান পেছনে ফেলে ভিস্তারা আর্কিটেক্টস কাজটি পেয়ে যায়। পলাশ জানান, 'আমরা আন্তর্জাতিক মানের কাজ করে থাকি। পাশাপাশি আমাদের ছিল দেশীয় উপাদান নিয়ে অভিজ্ঞতা। ভবনের নকশায় আমরা দেশজ ঐতিহ্য, জীবনধারা, অফিসরীতি এবং সবুজকে প্রাধান্য দিয়েছিলাম।'

 ডেলভিস্তা ফাউন্ডেশন

ভিস্তারা আর্কিটেক্টস সামাজিক কাজে অংশ নেওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠা করে ডেলভিস্তা ফাউন্ডেশন। এ প্রতিষ্ঠানের দেখভাল করেন স্থপতি শাহজিয়া ইসলাম অন্তন। ৩০ জন গরিব শিক্ষার্থীর পড়াশোনার পূর্ণ খরচ বহন করছে এ প্রতিষ্ঠান। বিশেষ করে বাসার কাজের বুয়া, দারোয়ান কিংবা গাড়ির ড্রাইভারের সন্তানদের উচ্চশিক্ষার বিষয়ে সহযোগিতা করা হয়। 'আমাদের বাসার দারোয়ানের ছেলেকেও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়িয়ে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার বানিয়েছি,' জানান অন্তন।

প্রতি মাসে চারজন দুস্থ মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়মিত অনুদান দেওয়া হয়। এ প্রতিষ্ঠানের আওতায় সংগীত এবং চিত্রকলার প্রসারের কাজও হচ্ছে। স্থাপত্য, চিত্রকলা, সংগীত এবং জীবনীভিত্তিক ১০টি বই ও সংগীতের ১৩টি সিডি প্রকাশিত হয়েছে।

বিদেশে বাংলাদেশকে উপস্থাপনের কাজ করে যাচ্ছে ডেলভিস্তা ফাউন্ডেশন। গেল বছরের ২৫-২৬ এপ্রিল কলকাতায় প্রদর্শনীর আয়োজন করে। এতে স্থান পায় বাংলাদেশের পত্রিকা, বিলবোর্ড এবং ৬০টি প্রকল্পের নকশা। সাড়া পড়ে বেশ। মুস্তাফা খালীদ পলাশ জানান, প্রতিবছর এ ধরনের প্রদর্শনী বিভিন্ন দেশে আয়োজন করতে চাই। এতে বাংলাদেশের স্থাপত্যশৈলী ফুটে উঠবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে।'

স্থাপত্যের জোড়া প্রাণ মুস্তাফা খালীদ পলাশের চিত্রকর্ম

হচ্ছে স্থাপনার আর্কাইভ

বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থাপনার আর্কাইভ তৈরির কাজ করছে এই দম্পতি। এতে স্থাপত্যবিদ্যায় আগ্রহী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জ্ঞান বিনিময়ের কাজ সম্ভব হবে। অন্তন জানান, 'আমাদের তৈরি ভবনগুলোর বিষয়ে স্থাপত্যবিদ্যার শিক্ষার্থীদের আগ্রহ আছে। নকশার পাশাপাশি বর্ণনাগুলোর গুরুত্ব রয়েছে তাদের কাছে। আমাদের ভবনগুলোর তথ্য সহজলভ্য করতে বনানীতে একটি আর্কাইভ তৈরি করছি।'

তাঁদের অফিস সময় সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা। অফিস শেষ হলে দুজনে বসে যান সংগীত সাধনায়। সময় পেলে পলাশ ছবি আঁকেন। তাঁর একক চিত্র প্রদর্শনী কনফ্লিক্ট অব টিয়ার্স অ্যান্ড হারমনি প্রদর্শিত হয় ২০০৯ সালে ঢাকার এশিয়াটিক সোসাইটির চিত্রশালায়। পলাশের একটি একক, একটি যৌথ গানের অ্যালবাম এবং অন্তনের একটি একক, দুটি যৌথ গানের অ্যালবাম রয়েছে। তাঁদের দুই ছেলে নৈঋত এবং ঈশান। মুস্তাফা খালীদ পলাশ বেশ কিছু স্বীকৃতি পেয়েছেন। ২০০৭ সালে 'বার্জার অ্যাওয়ার্ড ফর এক্সিলেন্স-ইন-আর্কিটেকচার', ২০০৩ সালে ভারত থেকে পাওয়া 'আর্কিটেকচার অব দ্য ইয়ার' বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

20
বেশির ভাগ ব্যবসায়ীই তাদের ব্যবসা শুরু করে অল্প পুঁজি নিয়ে। পৃথিবীর বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাবো এদের বেশির ভাগই শুরু হয়েছিল অল্প পুঁজি নিয়ে। এদের মধ্যে যেসব প্রতিষ্ঠান সফল হয়েছে তাদের নামই আমরা শুনতে পাই। যেসব প্রতিষ্ঠান সফল হতে পারে নি তাদের নাম আমরা শুনতে পাই না। তবে নিশ্চয়ই আমরা অনুমান করতে পারি যে, যারা সফল তাদের কাজের ধরণ আর যারা ব্যর্থ তাদের কাজের ধরণ এক ছিলো না। এখন আমরা এমন কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলবো যেগুলো সফল ব্যাক্তিরা তাদের ব্যবসা শুরু করার সময় অনুসরণ করতেন।
যারা স্বল্প পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরুর চিন্তা করছেন তারা যদি এ বিষয়গুলো মেনে কাজ চালিয়ে যেতে পারেন তবে তাদের দ্বারা সফল হওয়ার সম্ভাবনা অন্যদের চেয়ে অনেক বেশি হবে।
অন্যের কথায় ভয় পাওয়া যাবে না

অনেকেই খুব সহজে বলে থাকে তুমি যা করছো তা ঠিকমতো হচ্ছে না, তোমার এখন অন্য কিছু শুরু করা উচিত। এরকম কথা বলা খুবই সহজ। যদি আপনি এসব কথায় প্রভাবিত হোন তাহলে ভাববেন বিষাক্ত কোন ঔষধ গেলা আরম্ভ করছেন। আপনি যদি এরকম কথায় প্রভাবিত হয়ে থাকেন তবে এখনই এ প্রভাব থেকে বেরিয়ে আসুন। নিজের মত করে আপনার প্রতিষ্ঠানকে চালিয়ে নিয়ে যান। আপনার নিজের কাছে যখন মনে হবে আর চালিয়ে নেয়া সম্ভব না ঠিক তখনই থামেন। অন্যের কথায় কখনো আপনার প্রতিষ্ঠানকে বন্ধ করা যাবে না।
মিতব্যায়ী হোন

কাস্টমার নিয়মিত আসা শুরু করার আগে জাঁকজমক অফিস নির্মানের কোন প্রয়োজন নেই। যদিও বেশিরভাগ উদ্যোক্তাই এ ভুলটা করে থাকে। প্রথমেই সুন্দর ও আকর্ষনীয় অফিস দিয়ে কাস্টমারদের আকর্ষনের চেষ্টা করেন অনেকেই। তবে শুরুতেই এটা করতে যাওয়া এক ধরণের বোকামি। একইভাবে প্রথমেই উচ্চ প্রযুক্তির কম্পিউটার বা সফটওয়্যার এর কোন প্রয়োজন নেই। কারণ এর জন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন যা একজন উদ্যোক্তা হিসেবে আপনার পক্ষে ব্যবস্থা করা কঠিন হয়ে পড়বে।
উৎসাহ ধরে রাখুন

উৎসাহ ধরে রাখা হচ্ছে সবচেয়ে কঠিন কাজ। শুরুর দিকে উৎসাহ ধরে রাখা আরও বেশি কঠিন কাজ। শুরুর কিছুদিনের মধ্যেই আমাদের হতাশা চলে আসে। ব্যর্থতা মেনে নিতে খুব কষ্ট হয়। সামান্য ব্যর্থ হলেই কাজ বন্ধ করে দেয় অনেকেই। এরকম কখনোই করা যাবে। সাফল্য আসার আগ পর্যন্ত নিজের উৎসাহ উদ্দীপনা ধরে রাখতে হবে।
আপনার টিমের ব্যাপারে সচেতন থাকুন

মনে রাখবেন আপনার টিম আপনাকে সাফল্য এনে দিতে পারে আবার ব্যর্থতাও এনে দিতে পারে। একা একা কখনোই কোন প্রতিষ্ঠান দাঁড় করানো সম্ভব নয়। আপনি যে কোন সফল উদ্যোক্তাকে যদি প্রশ্ন করেন, আপনার সফলতার রহস্য কি? তিনি একবাক্যে উত্তর দিবেন, আমার টিমের কারণে আমি সফল। সুতরাং টিমের দিকে আপনাকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। টিম যদি সর্বোচ্চ ত্যাগ করে আপনার জন্য কাজ করে তবেই আপনি সফল, আর যদি তা না করে তবে আপনি ব্যর্থ।

তথ্যসূত্র: এনজে বিডি নিউজ.কম

21
বর্তমানে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। সাড়া বিশ্বে ৭.২ বিলিয়ন মানুষের মধ্যে ২ বিলিয়ন ফেসবুক ব্যবহারকারী রয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মধ্যে ১.৭ বিলিয়ন ব্যবহারকারীই মোবাইলে ফেসবুক চালায়।

অনেক কোম্পানি ফেসবুক মার্কেটিং করে কয়েক মাসেই সাফল্য পেয়েছে। আবার অনেক কোম্পানী শত চেষ্টা করেও সাফল্য পাচ্ছে না।কিন্তু কেন এই বৈষম্য হচ্ছে তার কারণ দেখে নিতে পারেন।



১। ফেসবুকে টাকা খরচ করে পোস্ট বুস্ট করতে হয়

প্রতিদিন ৮৯০ মিলিয়ন মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করছে। শুধু বিজ্ঞাপন দিয়েই গত বছর ফেসবুক ১২.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার লাভ করেছে। তাই ফেসবুক তাদের ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেশী জেনেই বিজ্ঞাপন দেয়ার মূল্য বাড়িয়ে দিয়েছে। আর তাই এখন আর সব ব্যবসায়ী চাইলেই ফেসবুক পেজ খুলে নিজের ব্যবসাকে বাড়িয়ে নিতে পারবে।আর নতুন ব্যবসায়ীদের এত টাকা খরচ করে বুস্ট করাও সম্ভব হয় না।
 
২। ব্যবসায়ীরা অনেকেই মনে করছেন শুধু ফেসবুকেই ব্যবসা বেড়ে যাবে

অনেক ব্যবসায়ীই মনে করেন শুধু ফেসবুকে মার্কেটিং করলেই তাদের পণ্যের কথা সবাই জানবে। কিন্তু আসল কথা হল ফেসবুকই মার্কেটিংয়ের একমাত্র মাধ্যম নয়। এটা অন্যতম কার্যকর মাধ্যম কিন্তু একমাত্র নয়।

৩। সব ধরণের ক্রেতার কথা চিন্তা না করা

শুধু এককেন্দ্রিক ক্রেতার কথা চিন্তা করে ফেসবুক মার্কেটিং করার মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা বিশাল ভুল করে। এতে করে তাদের ক্রেতার সংখ্যা অনেক কমে যায়। সবচেয়ে বড় কথা যত বেশী গ্রাহকদের কাছে পৌঁছানো যাবে ব্যবসা তত বেশী বেড়ে যাবে।

৪।কার্যকর ফেসবুক পোস্ট এবং ছবি না দেয়া

ব্যবসাটি যে ধরণের সেই চিন্তাকে মাথায় রেখে সবসময় ফেসবুক পোস্ট দেয়া উচিৎ। তাই সবার আগে ফেসবুক পোস্ট কিংবা অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিস্থিতি বুঝে পোস্ট দেয়া উচিৎ। প্রতিটি পোস্টের সাথে সুন্দর একটা ছবি বাড়তি ক্রেতাদের আকৃষ্ট করবে।

22
দর কষাকষির ক্ষেত্রে যে ভুলগুলো করা যাবে না

দর কষাকষিকেও এক ধরনের শিল্প বলা হয়।অনেক সময় দর কষাকষির মাধ্যমে অনেক দামী জিনিশও সাধ্যের মধ্যে কেনা যায়।ব্যবসায়ীক ক্ষেত্রে কিংবা প্রতিদিনের কেনা কাটায় দর দাম করার প্রয়োজন পড়ে। আর তাই ভবিষ্যতে ব্যবসাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে দর দাম করার বিষয়টি অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

কিছু ভুল শুধরে নিলে উপকারী হব আমরাই। দেখে নিন দর কষাকষির ক্ষেত্রে যে ভুলগুলো করা যাবে না ,

আত্মবিশ্বাসী হতে হবে,

অনেকে মনে করে খুব বেশী উচ্চস্বরে কথা বললেই দর কষাকষিতে জিতে যাওয়া সম্ভব হবে। আবার কেউ কেউ ভাবেন নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করবেন। কিন্তু তাদেরকে অতি আত্মবিশ্বাসী না হতে উপদেশ দিয়েছেন ডাইনামিক ভীষণ ইন্টারন্যাশনালের সিইও এবং ‘থিংক লাইক আ নেগোশিয়েটর’ বইয়ের লেখক লুইস ফার্নান্দেজ। তিনি মনে করেন ব্যবসায়ীক দর কষাকষির আগে একটু প্র্যাকটিস করে নেয়া উচিৎ। আগে থেকেই কিছুটা প্রস্তুতি নিয়ে রাখলে দর কষাকষিতে এগিয়ে থাকা যাবে।
 
ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে আলোচনা করা থেকে বিরত থাকতে হবে,
 
খুব বেশী ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে আলোচনা হলে অনেক সময়ে ব্যবসায়ীক চুক্তি ভেস্তে যেতে পারে। তাই ছোট বেলার প্রিয় কোন শখ বা ঘটনা নিয়ে অপ্রয়োজনীয় আলোচনা করা উচিৎ নয়। তবে ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত কোন তথ্য থাকলে অনেক সময় ব্যবসায়ীক চুক্তিকে আরও পাকাপোক্ত করতে হবে।

ঘুরিয়ে প্রশ্ন করা যাবে না,

কোন চুক্তি সংক্রান্ত কিছু জানতে চাইলে তা ঘুরিয়ে না জেনে সরাসরি প্রশ্ন করাই ভাল। কারণ সরাসরি প্রশ্ন না করার অভাবে চুক্তির মধ্যে ধোঁয়াশা থেকে যায়। ফলে পরবর্তীতে আরও বড় বিপদ আসার সম্ভাবনা থেকে যায়।

খুব বেশী কথা বলা থেকে বিরত থাকতে হবে,

ব্যবসায়ীক পার্টনারদের সাথে অনেক বেশী কথা বলা হলে উপকারের চেয়ে বিপদই হতে পারে বেশী। তাই প্রয়োজনের চেয়ে বেশী কথা বলা উচিৎ নয়। কারণ বেফাঁস অনেক মন্তব্যের কারণে আপনার গুরুত্বপূর্ণ পার্টনার চলে যেতে পারেন। এতে করে আপনার ব্যবসাই বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

23
আমদানি ও রপ্তানি সার্টিফিকেট বানাতে আপনার যা যা লাগবে:

আপনারা যদি কেউ মনে করেন দেশে বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি কিংবা রপ্তানি করবেন কিন্তু কিভাবে আমদানি ও রপ্তানি সার্টিফিকেট বানাতে হয় জানেন না তারা বিস্তারিত জেনে নিন-

আমাদের দেশে আমদানি এবং রপ্তানি এই দুই কাজের জন্য সরকার বিশেষ দুই লাইসেন্স দিয়ে থাকে এক্ষেত্রে আপনি দেশে আমদানি এবং রপ্তানি যোগ্য যেকোনো পণ্য যেকোনো পরিমাণে আনতে বা বাইরে পাঠাতে পারবেন। আর এই লাইসেন্স করার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি অনেক স্বচ্ছ এবং নিরাপদ। নিচে বিস্তারিত দেয়া হলো।

আমদানি নিবন্ধন সনদপত্র ও রপ্তানি নিবন্ধন সনদপত্র জারির জন্য আপনার যা যা লাগবে-

১) ট্রেড লাইসেন্স;
২) চেম্বার অথবা স্বীকৃত ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনের বৈধ সদস্যতা সনদপত্র;
৩) টিআইএন;
৪) ব্যাংক প্রত্যায়ন পত্র;
৫) লিমিটেড কোম্পানীর ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রার, জয়েন্ট স্টক কোম্পানী কর্তৃক অনুমোদিত সংঘ স্মারক ও সংঘবিধি এবং সার্টিফিকেট অব ইনকর্পোরেশন।

 উপরের সব কাগজ পত্র যদি আপনার করা থাকে তবে তা নিয়ে আপনি তিন ঘন্টার মধ্যে অর্থাৎ একই দিনে আমদানি ও রফতানি সনদ জারি করিয়ে নিতে পারবেন।

আমদানি রপ্তানি কারকদের জন্য ৬টি ধাপে আমদানি রপ্তানি সীমার উপর ফিস প্রদান করতে হয়ঃ

১) ১ লক্ষ টাকার সমমান পণ্য এর ক্ষেত্রে
Registration fee -১,০০০
Renewal fee – ১,০০০

২) ৫ লক্ষ টাকার সম পরিমান পণ্য এর ক্ষেত্রে
Rgistration fee – ২,০০০
Renewal fee – ২,০০০

৩) ১৫ লক্ষ টাকার সম পরিমান পণ্য এর ক্ষেত্রে
Registration fee – ৩,০০০
Renewal fee – ৩,০০০

৪) ৫০ লক্ষ টাকার সম পরিমান পণ্য এর ক্ষেত্রে
Registration fee ৬,০০০
Renewal fee – ৫,০০০

৫) ১ কোটি টাকার সম পরিমান পণ্য এর ক্ষেত্রে
Registration fee – ১০,০০০
Renewal fee – ৪,০০০

৬) ১ কোটির উপরে পরিমান পণ্য এর ক্ষেত্রে
Registration fee – ১৫,০০০
Renewal fee – ১০,০০০
[/size]

24
ক্লিয়ারিং এন্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট

পণ্য আমদানী রপ্তানীতে কিছু আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে হয়। আমদানীকারক এবং রপ্তানীকারকদের পক্ষে এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করা কিছুটা কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। তাদের পক্ষে এই কাজটি সম্পন্ন করে থাকে ক্লিয়ারিং এন্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট।

 ক্লিয়ারিং

বিদেশ হতে সড়ক, রেল, বিমান বা সমুদ্রপথ যেভাবেই পণ্য আমদানি করা হোক না কেন, সেটা সরাসরি ডেলিভারি নেয়া যায় না। কস্টমস কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে হয়। সেই সাথে পণ্য বহনকারী কর্তৃপক্ষেরও বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে হয়। কারণ পণ্য বহনকারী কর্তৃপক্ষ একই সাথে বিভিন্ন আমদানিকারকের পণ্য বহন করে এবং বহনকারী কর্তৃপক্ষ সঠিক প্রাপকের কাছে পণ্য পৌঁছে দিতে বাধ্য। এটা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়। এই পুরো প্রক্রিয়াটি আমদানীকারকের পক্ষে সম্পন্ন করে ক্লিয়ারিং এন্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট।

আমদানি করার সময় যেসব কাগজপত্র সি এন্ড এফ এজেন্টকে সরবরাহ করতে হয়।

প্যাকিং লিস্ট।
ক্লীন রিপোর্ট ও ফাইন্ডিংস (CRF).
বাণিজ্যিক চালানপত্র।
মাস্টার এল সি।
ইন্স্যুরেন্স কভার নোট।
এছাড়া দেশে থেকে পণ্য সামগ্রী আমদানী করা হচ্ছে তাও উল্লেখ করতে হয়।

 ফরওয়ার্ডিং

অনুরুপভাবে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রেও বিভিন্ন প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। যে কাজটি রপ্তানীকারকের পক্ষে ক্লিয়ারিং এন্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট সম্পন্ন করে থাকে।

রপ্তানির সময় যেসব কাগজপত্র সি এন্ড এফ এজেন্টকে সরবরাহ করতে হয়

রপ্তানি নিবন্ধীকরণ সনদপত্র (ই আর সি),
বিক্রয় চুক্তিপত্র/ প্রত্যায়নপত্রের অনুলিপি।
বাণিজ্যিক ইনভয়েস।
প্যাকিং লিস্ট।
রপ্তানিকারকের ব্যাংক হতে যথাযথভাবে পূরণকৃত চার কপি ই এক্স পি ফরম।
রপ্তানি পণ্য ঘোষণার জন্য শুল্ক কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত ডিবিএফ ৯/এ ফরম।
পণ্য বীমার সনদপত্র।
পণ্য বোঝাইকরনের বন্দরে পণ্য মাশুল/ভাড়া পরিশোধের জন্য ব্যাংক হতে পণ্য মাশুল সনদপত্র।
এছাড়া পাটজাত দ্রব্য এবং কাঁচাপাট জাহাজীকরণের জন্য ই পি ই এবং ই পি সি ফরম প্রয়োজন হয়।
 
সি এন্ড এফ এজেন্টের কার্যসম্পাদনের পদ্ধতি।

আমদানিকারক/ রপ্তানিকারকের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করে বিল অব এন্ট্রি পূরণ করতে হয়। কাষ্টম হাউজ বা শুল্ক ষ্টেশনে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা যাচাই-বাচাই শেষে ক্রমানুসারে কিছু কাজ সম্পাদন করেন।

বিল অব এন্ট্রি শাখায় এন্ট্রি করেন।
বিল অব এন্ট্রি প্রিন্ট করেন।
পর্যালোচনা করেন।
(বাণিজ্যিক আমাদানিকারক গণের ক্ষেত্রে কায়িক পরীক্ষা করে পর্যালোচনা করা হয়।)

পর্যালোচনা শেষে ডিউটি ফাইনাল প্রিন্ট করেন।

25
Business Information / এলসি (LC) করার নিয়ম
« on: June 04, 2015, 03:06:21 PM »
এলসি (LC) করার নিয়ম:

বিদেশ থেকে পণ্য বা যন্ত্রাংশ আমদানী করার জন্য অবশ্যই ব্যাংকের মারফত এলসি করতে হয় । এই এলসির মাধ্যমেই সরবরাহকারীরা একদেশ থেকে অন্য দেশে পন্য আমদানি রপ্তানি করে থাকে। এলসি করতে হলে সবার আগে আপনার কোম্পানীর টিন ভ্যাট করাতে হবে। এরপর ব্যংকে গিয়ে কোম্পানীর নামে অ্যাকাউন্ট খুলতে হয়। তারপর ব্যাংক থেক এলসিএ ফর্ম কালেক্ট করে পূরণ করে ব্যাংকে জমা দিতে হয়। এই ফর্মে কিছু তথ্য প্রদান করতে হয়। যেমন কি পন্য, দাম কত, কোন দেশ থেকে আসবে প্রভৃতি। এ বিষয়ে নিচে বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।

 
পর্যায় ১: কোম্পানীর ট্রেড লাইসেন্স, টিন, ভ্যাট করা। আইআর সি (ইমপোর্ট রেজি: সার্টিফিকেট) করা।

 
পর্যায় ২: কোন ব্যাংক এ কোম্পানীর একাউন্ট করা।

 
পর্যায় ৩: যে পন্য আনবেন তার ইনডেন্ট কালেক্ট করা (ধরা যাক আপনি ১৫ টন নিউজপ্রিন্ট কাগজ আনবেন কোরিয়া থেকে। এখন যে কোম্পানী থেকে আনবেন সে কোম্পানীর বাংলাদেশ প্রতিনিধির কাছে গিয়ে দাম দর ঠিক করে একটা ডকুমেন্ট নেবেন। এটাই ইনডেন্ট। আর সে কোম্পানীর যদি বাংলাদেশ প্রতিনিধি না থাকে তাহলে সে কোম্পানীতে সরাসরি মেইল করে দাম ঠিক করে ডকুমেন্ট আনাতে হবে। তখন এটাকে বলা হয় পি আই বা প্রফরমা ইনভয়েস। এতে পণ্যের বিস্তারিত, দাম, পোর্ট অব শিপমেন্ট এসব তথ্যাদি থাকে।)

 
পর্যায় ৪: ব্যাংক থেকে এলসিএ (লেটার অব ক্রেডিট এপ্লিকেশন) ফর্ম কালেক্ট করে ইনডেন্ট/পিআই অনুযায়ী তা পূরন করে ব্যাংক এ জমা দেয়া।

 
পর্যায় ৫: এলসি মার্জিন জমা দেয়া । প্রথম দিকে ব্যাংক এ পুরো টাকাটাই জমা দিতে হবে। ধরা যাক এলসি ভ্যলু ২০,০০০ ডলার। ব্যাংক এ আপনাকে ১৬ লাখ টাকা জমা দিতে হবে। তবে আস্তে আস্তে ব্যাংকের সাথে ব্যবসা বাড়লে তখন ১০-২০% মার্জিন দিয়ে এলসি খুলতে হবে। টাকার সাথে অন্যান্য কিছু ডকুমেন্টও দিতে হবে। যেমন:

আপনার কোম্পানীর সব কাগজ (ট্রেড লাইসেন্স, টিন, ভ্রাট, আইআরসি)
ইনডেন্ট/পিআই এর ৩/৪ টি কপি।
সাপ্লায়ার কোম্পানীর ব্যাংক ক্রেডিট রিপোর্ট
ইন্সুরেন্স কভার নোট (যে কোন ইন্সুরেন্স কোম্পানীতে ইনডেন্ট দেখিয়ে ফি দিয়ে এটা নিত হবে)
 
এরপর ব্যাংক আপনাকে এলসির একটা কপি দেবে। অরিজিনালটা পাঠিয়ে দেবে বিদেশে সাপ্লাইয়ারের কাছে।

26
Investment / Format: How to Develop a Business Plan
« on: May 17, 2015, 01:21:08 PM »
DEVELOPING A BUSINESS PLAN for a New Venture:


27
নাম ও পেশা
রিয়াদ শাহির আহমেদ হুসাইন । “Magnito Digital” এর সিইও।
আপনি যখন আপনার স্টার্ট-আপ শুরু করেন তখন আপনার সবচে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল কোন বিষয়টি, তখন সেই বাঁধাটি আপনি কিভাবে অতিক্রম করলেন ?

২ বছর আগে আমি যখন কোম্পানি শুরু করি, তখন যে সমস্যাটির জন্য আমাকে সবচেয়ে বেশি নিজের সাথে যুদ্ধ করতে হয়েছিল সেটি হল   “মাইক্রো ম্যানেজমেন্ট “ । ব্যবসা সংক্রান্ত প্রায় সকল খুঁটিনাটি বিষয়ে আমাকে জড়িত থাকতে হত, যেটি একদিক দিয়ে ভাল কিন্তু এর খারাপ দিকও আছে। একজন সিইও কে অবশ্যই সুকৌশলী এবং একটি সলিড টিমের প্রতিনিধি হতে হবে। প্রথমদিকে আমাকে খুব বেশি বেগ পেতে হয়েছে আমার টিমের জন্য উপযুক্ত মানুষ খুঁজে বের করতে। অবশেষে উপযুক্ত মানুষদেরকে আমাদের কম্পানিতে কাজ করতে আকর্ষিত করতে পেরেছি। শুধুমাত্র তাদের কারনেই, আমার যে কাজগুলোর দিকে বেশি মনোযোগী হওয়া দরকার ছিল সেদিকে মনোযোগী হতে পারা আমার জন্য সম্ভব হয়েছে।

আপনার সফলতার পেছনে কোন জিনিসটির অবদান সবচেয়ে বেশি ?
আমার ক্ষেত্রে, ব্যবসায়ে সফলতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারনগুলো হচ্ছেঃ সততা, কঠোর পরিশ্রম এবং দূরদর্শিতা।

কোন ব্যাপারটিতে আপনার স্টার্ট-আপ অন্যান্য সব স্টার্ট-আপ থেকে আলাদা ?
আমাদের কোম্পানিতে একটি amazing young team আছে যারা অফিসের সবাইকে তাদের ফ্যামিলির মত করে দেখে। এই  সংস্কৃতিটিই সম্ভব করেছে,  আমাদের ক্লাইন্টদের চাহিদা অনুযায়ী সবচেয়ে বেষ্ট প্রোডাক্ট ডেলিভারি দিতে।

আগামী ৫ বছরে আপনি “Magnito Digital” কে কোথায় দেখতে চান?
Magnito Digital ২ বছরেরও কম সময়ের মধ্যে যা কিছু অর্জন করেছে তার জন্য আমি খুবই কৃতজ্ঞ। পরবর্তী ৫ বছরের মধ্যে আমি আশা করি Magnito Digital কমপক্ষে ৩টি দেশে সফলতার সাথে তার কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

প্রতিদিন আপনার কাছে এমন কি মনে হয়, যে আপনি সবার থেকে আলাদা ?
আমি মনে করি, আমার একটি গড গিফটেড গুণ আছে। আমি যখন যে কাজই করি না কেন তখন সেটির একদম গভীরে প্রবেশ করতে পারি।

আপনি অন্য কোন সহজ পথ গ্রহণনের পরিবর্তে কেন একজন উদ্যোক্তা হতে অনুপ্রাণিত হয়েছেন ?
শুরু থেকেই আমার ইচ্ছা ছিল, আমি যাই করি না কেন আমি যেন  আমার কাজের মাধ্যমে সমাজে প্রভাব তৈরি করতে পারি এবং পরিবর্তন আনতে  সক্ষম হই। আমি মনে করিঃ
I see entrepreneurship as the gateway that has allowed me to experiment such philosophy

অন্যান্য সব বিষয় খেয়াল রেখে আপনার ব্যবসা সঠিক ভাবে পরিচালনা করেন কিভাবে?
আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ বিষয়গুলো হলো আমার পরিবার, ব্যবসা, বন্ধুরা এবং ফুটবল। আমি সপ্তাহে কমপক্ষে দুই থেকে তিন দিন ফুটবল খেলি। আমার ৪ – ৫ টি ছোট ব্যবসা থাকার ফলে আমাকে সময় নিয়ে প্রায়ই একটু সমস্যায় পরতে হয়। যাইহোক, আমি ধীরে ধীরে  ব্যবসা সঠিক ভাবে পরিচালনার গোপন ব্যাপারটি বুঝতে পেরেছি সেটি হল আপনার ব্যবসার জন্য আপনার আশেপাশে স্মার্ট মানুষদের প্রয়োজন। বর্তমানে আমার সকল ব্যবসায়ের সাথে খুব চমৎকার চমৎকার মানুষ আছেন যাদের সাথে আমি খুব ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করি এবং তাদের জন্যই  আমার পক্ষে সিস্টেমিক ওয়েতে কাজ করা সম্ভব হয়েছে। যখন আপনি ব্যবসায় সম্প্রসারন করা শুরু করবেন তখন এটা খুবই গুরুত্বপুর্ণ।

আপনার প্রতিদিনকার কাজ সম্পাদন করার জন্য কোন ডিভাইসটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করে থাকেন এবং কেন ?
gadgets-riyadCamera, Go-Pro, iPAD, Smartphone & Mackbook Air
সত্যি বলতে, কয়েক বছর ধরে আমার দৈনন্দিন যা কাজ থাকে সেগুলো আমি স্মার্টফোন দিয়ে সেরে ফেলি। যেমন মেইল চেক করা, ড্রপবক্স, সোশ্যাল মিডিয়াতে যাওয়া সহ বিভিন্ন ব্লগ, সাইট ভিজিট করা ইত্যাদি। এর পরেই বলবো আমার ল্যাপটপের কথা, যেটি আমার কাজের প্রেজেন্টেশান এবং স্প্রেডশীটের জন্য খুবই জরুরি। আমি নিজেকে রেগুলার ট্যাব ইউজার বলব না। তবে রাতে প্রায়ই, ব্রাউজিং করার জন্য ট্যাব ব্যবহার করি। আমি ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করি ওয়ান প্লাস ওয়ান স্মার্টফোন, ম্যাকবুক এয়ার এবং আইপ্যাড।

তিনটি অ্যাপ্লিকেশন,সফটওয়্যার বা টুলস যেগুলো ব্যতিত আপনি একেবারেই  চলতে পারেন না ?
আর সবার মতো, Gmail অ্যাপটি লিস্টের সবার উপরেই থাকবে। তারপরেই বলব Dropbox । একটি মজার ব্যাপার হচ্ছে, আমার কাজের সংশ্লিষ্ট সব ধরনের ফাইল ও ডকুমেন্টস আমি আমার Paid Dropbox অ্যাকাউন্টে রাখি এবং এখন আর আমাকে হার্ডড্রাইভের উপর নির্ভর হয়ে থাকতে হয়না। তাই Dropbox For Android অ্যাপটিই হবে এমন একটি অ্যাপ যেটি ছাড়া চলা আমার প্রায়ই অসম্ভব।কারন এটির মাধ্যমেই আমার যত প্রয়োজনীয় ফাইল আছে সেগুলো সবসময় আমার সাথে বহন এবং শেয়ার করতে পারছি, আমি পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকি না কেন। তৃতীয়ত WhatsApp। যেখানে আমি ব্যবসা থেকে শুরু করে ফুটবল এবং পরিবারের খুবই দরকারি ৬-৭ টি গ্রুপের সাথে যুক্ত আছি। আমার খাবার রিলেটেড যে ব্যবসাগুলো আছে সেগুলোর আপডেট পাই WhatsApp এর গ্রুপ থেকে।

আপনার কাজের স্থানটি কেমন ?
সত্যিই অনেক সাধারণ! আমি আমার  ১৩ ইঞ্চি ম্যাকবুক সংযুক্ত করি ২২ইঞ্চি ডেল মনিটরের সাথে এবং এক্সটারনাল কিবোর্ড ও মাউস! আর কিছুই না!

প্রতিদিনের টু-ডু লিস্ট তৈরি করার জন্য কোন সফটওয়্যার/পন্থাটি আপনার কাছে সেরা মনে হয় ?
সবসময়ই Evernote আমার পছন্দের ছিল কিন্তু কিছুদিন হল Google Keep ব্যবহার করছি।

মোবাইল ফোন/কম্পিউটার ছাড়া এমন কোন প্রযুক্তি পণ্য আছে কি যেটি ছাড়া আপনি চলতে পারেন না ?
নিয়মিত আমি আমার অফিস শেষ করে সপ্তাহে অন্তত ২ দিন ফুটবল খেলতে পছন্দ করি। ফুটবল খেলার সময় Fitbit wrist band ব্যবহার করি, প্রতেকটি স্টেপস ও ক্যালোরি বার্ন হিসাব রাখার জন্য। আর আমার ছবি তোলার শখ আছে যার কারনে Go-Pro এবং DSLR Camera ব্যবহার করা হয়।

আপনার দৈনিক ঘুমানোর সময়সূচি কেমন ?
When it comes to sleep routine, I am a bit of a bad boy!
আমি অনেক রাত্র জেগে থাকি কিন্তু সবসময়ই এটা নিশ্চিত করি কাজে যাওয়ার আগে যেন আমার ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম হয়। যার কারনে অফিসে আমি কখনোই সকাল ১১টার আগে অফিসে উপস্থিত হতে পারিনা।

দিনের ঠিক কোন সময়ে আপনি খুব মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে পারেন ?

আমার অফিস সকাল ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। তবে আমার সবচেয়ে বেশি প্রডাকটিভ টাইম স্লট সকাল ১১টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত।

কাজ করার সময় আপনি কোন ধরনের গান শুনতে পছন্দ করেন ?
সবাই অফিসে যে মিউজিক/গান বাজায় তাই আমি পছন্দ করি! আমরা অফিসে মিউজিক বা গান বাজানোকে উৎসাহিত করি।

একজন বাংলাদেশি হিসেবে যানজট আমাদের নিত্য দিনের সঙ্গী। আপনি যানজটের সময়টাকে সদ্ব্যবহার করার জন্য কি করেন ?
যখন ট্র্যাফিক জ্যামে বসে থাকি সেই সময়টা আমার স্মার্টফোনের সাথেই কাটাতে হয়ে থাকে।

কঠিন সময়গুলোতে আপনি কিভাবে নিজেকে অনুপ্রাণিত রাখেন?
আমার ব্যাপারটা হল, আমার যখন কোন কাজ না থাকে তখন আমি নিষ্প্রভ (dull) হয়ে যাই। যখন আমি অনেক কাজের চাপে থাকি, তখন আমার মস্তিষ্ক শার্প হয়ে উঠে এবং আমি আমার সর্বোচ্চটুকু দিতে পারি। এইভাবে কঠিন সময়গুলোই আসলে আমাকে অনুপ্রাণিত করে তোলে।

আপনার পাওয়া সবচেয়ে ভালো উপদেশ বা উদ্ধৃতি কি ?
এটি আসলে আমার নিজের একটি উদ্ধৃতি
The key to being a successful entrepreneur is to have that same zeal you once had as a 5 year old, when you were confident of jumping from the rooftop in your superman cloak – Riyad S.A. Husain

একজন উদ্যোক্তার কোন তিনটি বই বা সিনেমা অবশ্যই পড়া বা দেখা উচিৎ ?
আমার সবসময় বই পড়া হয়না কিন্তু আমার মতে সবার  “Richard Branson’s bestselling autobiography” এবং “Screw it, lets do it” বই দুইটি পড়া উচিৎ।losing-my-virginityRichard Branson’s bestselling autobiographyScrew-it-lets-do-itScrew It, Let’s Do It: Lessons In Life Richard Branson
বাংলাদেশের কিছু সম্ভাবনাময় উদ্যোক্তাদের সম্পর্কে বলুন যাদের সফলতার গল্প আপনার কাছে উল্লেখযোগ্য মনে হয় ।

ইউনিভার্সিটি জীবন থেকে আমার খালু জনাব সালমান মাসুদ, ডানা গ্রুপ এর এম.ডি. ছিলেন আমার আইকন। আমি তাকে শুন্য থেকে শুরু করে দেশের অন্যতম একজন সফল ব্যবসায়ী হতে দেখেছি। আমি তার কাছ থেকে যে জিনিস গুলোকে খুজে পেয়েছি তা হল তার লক্ষ্য, একাধিক ব্যবসা পরিচালনা করার ক্ষমতা এবং সঠিক সময়ে সঠিক বিনিয়োগ করা । আমি সর্বদা তার ফুটস্টেপ অনুসরণ করতে চেয়েছিলাম এবং তাই আমি ব্যবসায় যুক্ত হই। তরুন প্রজন্মের মধ্যে আমি NewsCred এর ইরাজ ইসলাম এর মধ্যে সেই জিনিসগুলোকে দেখতে পাই। সে Magnito Digital এর একজন শুভাকাঙ্ক্ষী এবং আমাদের মধ্যে ভাল সম্পর্ক আছে। তার কাছ থেকে শেখার অনেক কিছু আছে, বিশেষ করে যখন ব্যবসাকে জাতীয় থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নেয়ার কথা আসে।

যারা ভবিষ্যতের উদ্যোক্তা হতে যাচ্ছে তাদেরকে আরও উৎসাহিত করতে আপনার উপদেশ কি হবে?
আমি খুবই সাধারন একটি উপদেশ দিব। যে কেউই অসাধারন আইডিয়া নিয়ে আসতে পারে। কিন্তু সকলেই তা বাস্তবায়ন করতে পারে না। যথার্থ বাস্তবায়ন ছাড়া একটা আইডিয়া আসলে কিছুই না! তাই আমার উপদেশ হল –
To be focused and go into action and executing things rather than talking!

28
কোনো ব্যক্তি চমত্কার কোনো ভাবনা বা আইডিয়া আত্মস্থ করার পর ব্যস্ত হয়ে পড়েন আইডিয়াটি বাস্তবায়নে। এত উতলা হওয়ার কারণ তার ধারণা, আইডিয়াটি অতুলনীয়, অভূতপূর্ব ও বিশ্বসেরা। এমন চমত্কার আইডিয়া এর আগে কখনো কারো মাথায় আসেনি (প্রত্যেক মা ভাবেন, তার সন্তান বিশ্বসেরা; তেমনি প্রত্যেক আইডিয়া তৈরিকারকও)। কিন্তু আইডিয়া বাস্তবায়ন যে কঠিন। অনেক কিছু দরকার— একটা অফিস ও কারখানা, কাঁচামাল, কর্মচারী, প্রচার, আরো কত কি! আর এসব কিছু জোগাতে প্রয়োজন টাকা। কোথায় মিলবে টাকা? ব্যাংকের দ্বারে দ্বারে ঘুরে হবু উদ্যোক্তা একসময় ‘মূল্যবান কিছু’ অর্জন করেন।

অর্থ নয়, অভিজ্ঞান
ব্যাংকের ঋণ তাদের জন্য নয়। স্বপ্নের জন্য তার বুকে তুমুল ভালোবাসা। নিজের জমানো টাকা দিয়ে তাই হাঁটি হাঁটি পা পা করে শুরু করেন অনেকে; আইডিয়াটা মহীরুহ থেকে কাটছাঁট করে বনসাই আকারে। পথে নামলে পথ চেনা যায়। কিছু কিছু সহায়তা মেলে। পরিবার থেকে। বন্ধুদের কাছ থেকে। কিন্তু হায়! স্বপ্নের গাছ যত বাড়ে, ততই যে তার খিদে বাড়ে! টাকা দরকার। আরো টাকা। অভাগা যেদিকে চায়, সবই শুকিয়ে যায়। কত সম্ভাবনাময় মহীরুহ অঙ্কুরে মারা যায়! অথচ বাংলাদেশে যদি ভেঞ্চার ক্যাপিটাল থাকত, তাহলে এসব অঙ্কুর মহীরুহ না হোক, বৃক্ষ বা নিদেনপক্ষে ঝোপঝাড় হয়ে বেড়ে উঠতে পারত।

ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ব্যবসা শুরু বা সম্প্রসারণের জন্য পুঁজির জোগান দেয়। তবে সব ব্যবসায় নয়। যে ব্যবসা উদ্ভাবনীয়, বৃদ্ধির যথেষ্ট সুযোগ আছে, সেটাই পছন্দ এবং সেখানে বিনিয়োগ করে। উদ্ভাবন শুধু যে বৈজ্ঞানিক হবে, তা নয়। নতুন ধরনের পণ্য বা সেবা অথবা নতুন কোনো চাহিদা মেটানোও হতে পারে। কারণ এসব ব্যবসায় লাভের সম্ভাবনা বেশি। লাভের সঙ্গে ঝুঁকিও হাত ধরাধরি করে চলে। তাই ভেঞ্চার ক্যাপিটাল একটা ‘অধিক লাভ অধিক ঝুঁকি’ মডেলের অর্থায়ন।

ভেঞ্চার ক্যাপিটালের কাজের পদ্ধতি
ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্ম বা কোম্পানি নির্দিষ্ট উদ্দেশে (যেমন আইটি, কৃষি অথবা এসএমই) গঠিত ‘ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ড বা তহবিল’ উত্তোলন করে। বড় বড় প্রতিষ্ঠান বা বিত্তশালী ব্যক্তিরা এ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ডে বিনিয়োগ করেন। সাধারণ বা খুচরা বিনিয়োগকারীকে এ ধরনের তহবিলে বিনিয়োগ করতে নিরুত্সাহিত করা হয়। কারণ এতে ঝুঁকি বেশি ও ফল আসে দেরিতে। ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্ম বা কোম্পানি এ তহবিল ব্যবস্থাপনা করে। বিনিময়ে তারা ব্যবস্থাপনা ফি পায়। ভেঞ্চার ফান্ডের মেয়াদ দীর্ঘ। ৫ থেকে ১০ বছর। ভেঞ্চার ফান্ডে যারা বিনিয়োগ করেন, তাদের লিমিটেড পার্টনার বা এলপি বলে। আর যারা এ ফান্ড ব্যবস্থাপনা ও বিনিয়োগ করেন, তাদের জেনারেল পার্টনার বা জিপি বলে। জেনারেল পার্টনাররা সাধারণত বিনিয়োজিত প্রতিষ্ঠানের পর্ষদে পরিচালক হিসেবে মনোনীত হন। ভেঞ্চার ফান্ড থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করা হয়। ভেঞ্চার ফার্ম বা কোম্পানি এ বিনিয়োগের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়। বিনিয়োগ দীর্ঘমেয়াদের। তিন থেকে আট বছর পর্যন্ত। বিনিয়োগ প্রধানত সাধারণ ও অগ্রাধিকার শেয়ার কেনার মাধ্যমে করা হয়। মেয়াদ শেষে অথবা সুবিধাজনক সময়ে ভেঞ্চার ফার্ম সে শেয়ার বিক্রি করে দেয়। কখনো লাভে আবার কখনো লোকসান দিয়ে বিক্রি করতে হয়। বিনিয়োজিত কোম্পানি দেউলিয়া হলে পুরো বিনিয়োগ জলে যেতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অ্যাসোসিয়েশনের হিসাব অনুযায়ী পাঁচ বছরের গড়ে দেখা যায়, ২৫ শতাংশ ক্ষেত্রে ক্রয়মূল্যের কমে অর্থাৎ লোকসান দিয়ে শেয়ার বিক্রি করতে হয়েছে। পক্ষান্তরে ২০ শতাংশ ক্ষেত্রে প্রায় পৌনে ছয় বছরে বিক্রয়মূল্যের ১০ গুণ বা ততোধিক মূল্য মিলেছে।

উদ্যোক্তা উন্নয়নে ভেঞ্চার ক্যাপিটালের ভূমিকা
ভেঞ্চার ক্যাপিটাল একটি উদ্যোগের বিভিন্ন পর্যায়ে অর্থায়ন করে। যথা— বীজ, অর্থাৎ ব্যবসা যখন উদ্যোক্তার মনে আইডিয়া আকারে থাকে। ২. প্রাথমিক পর্যায় উদ্যোক্তা ব্যবসা শুরুর জন্য কাজ শুরু করেছেন; কিন্তু বিক্রি শুরু হয়নি। ৩. সম্প্রসারণ বিক্রি শুরু হয়েছে; কিন্তু কোম্পানি লাভ করছে না। ৪. বর্ধিষ্ণু আইডিয়া পরীক্ষিত। ভালো আয় আসছে। ব্রেক ইভেন হয়েছে বা কাছাকাছি।

আমরা জানি, নতুন কোনো উদ্যোক্তার ক্ষেত্রে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান উপরিউক্ত পর্যায়ে কোনো প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেয় না। তবে প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীর ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ঘটে। তার পূর্ববর্তী রেকর্ড বা অন্যান্য ব্যবসার ওপর নির্ভর করে। ব্যাংকঋণ পাওয়ার জন্য আমাদের দেশে সবচেয়ে বড় নিয়ামক ১. ব্যবসাটি লাভজনক হতে হবে। ২. ব্যবসা বা উদ্যোক্তার পূর্বসাফল্যের উদাহরণ থাকতে হবে। ৩. জামানত হিসেবে বন্ধক দেয়ার মতো যথেষ্ট স্থাবর সম্পত্তি থাকতে হবে। নতুন উদ্যোক্তার এসব কোনো যোগ্যতাই থাকে না। সেক্ষেত্রে ভেঞ্চার ক্যাপিটালই তার একমাত্র ভরসা। এর ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠবে আগামীর বাংলাদেশ।

শুধু দুষ্প্রাপ্যতা বা প্রাপ্তির জটিলতা নয়, নতুন উদ্যোক্তার জন্য ব্যাংকঋণ প্রকৃতিগতভাবে অসুবিধাজনক। ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার পর থেকেই সুদ আরোপ শুরু হয়। অথচ ব্যবসার প্রাথমিক পর্যায়ে লোকসান হওয়া স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে সুদ বোঝার ওপর শাকের আঁটি হয়ে দাঁড়ায়। তদুপরি ঋণ বা ঋণের কিস্তি পরিশোধের জন্য বড়জোর তিন বা ছয় মাস গ্রেস পিরিয়ড পাওয়া যায়। তার পর ঋণ পরিশোধ করতে হয়। অথচ বাড়ন্ত শিশুর খাদ্যচাহিদার মতো ব্যবসারও তখন প্রয়োজন অতিরিক্ত অর্থ।
ভেঞ্চার ক্যাপিটাল শুধু অর্থ নয়, তারও অধিক কিছু জোগায়। ভেঞ্চার ক্যাপিটালের (বিনিয়োজিত কোম্পানিতে) বিনিয়োগ ঋণের মতো নিরাপদ নয়। ঋণের ক্ষেত্রে জামানত থাকে। জামিনদার থাকে। আইনের সুরক্ষা থাকে। ঋণীকে একগাদা আইনি কাগজপত্রে স্বাক্ষর দিতে হয়। পক্ষান্তরে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল বিনিয়োজিত কোম্পানির লাভ-লোকসানের ভাগীদার। ওই কোম্পানির লোকসান মানে তার লোকসান। তাই ভেঞ্চার ক্যাপিটালের পার্টনাররা বিনিয়োজিত কোম্পানিতে অনেক বেশি জড়িত হন। সেজন্য ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তুলনায় ভেঞ্চার ক্যাপিটালের বিনিয়োজিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা     অনেক কম।

ভেঞ্চার ক্যাপিটালের সাফল্য
যুক্তরাষ্ট্র ভেঞ্চার ক্যাপিটালের সূতিকাগার। সিলিকন ভ্যালির ডটকম বিপ্লবের পেছনে ভেঞ্চার ক্যাপিটালের অবদান অনস্বীকার্য। আমেরিকা উদ্যোক্তার জাতি। ভেঞ্চার ক্যাপিটালের তাই সেখানে রমরমা অবস্থা। ভেঞ্চার ক্যাপিটালের কারণেই আমেরিকা এত উদ্যোক্তার মুখ দেখতে পেয়েছে। মাইক্রোসফট, স্টারবাক্স, অ্যাপল, ইন্টেল, ফেসবুক, গুগল, ই-বে, অ্যামাজন— এ রকম অনেক জগদ্বিখ্যাত কোম্পানির বেড়ে ওঠার পেছনে ভেঞ্চার ক্যাপিটালের সহায়তা রয়েছে।
২০১৩ সালে আইটি খাতে ২ হাজার ৩৬০টি কোম্পানিতে ২ হাজার ৭৮৪ ডিলে ২০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে; যার মধ্যে নতুন কোম্পানি ১ হাজার ৯টি, যাতে সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে। মোট বিনিয়োগের ৩৭ শতাংশ সফটওয়্যার, ১৫ শতাংশ বায়োটেকনোলজি ও ১০ শতাংশ মিডিয়া এন্টারটেইনমেন্টে বিনিয়োগ করা হয়েছে। এগুলো নতুন ও উদ্ভাবনী উদ্যোগ। ভারতে ২০১১ সালে ৫৩১টি ডিলে ১৪ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার ও ২০১২ সালে ৫৫১টি ডিলে ১০ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে। তার মধ্যে আইটি ও আইটি উদ্ভূত সেবা খাতে ২০১১ সালে ২৭ ও ২০১২ সালে ৪০ শতাংশ বিনিয়োগ করা হয়েছে।

শেয়ারবাজারে প্রভাব
ভেঞ্চার ক্যাপিটাল বিনিয়োজিত কোম্পানি থেকে আইপিওর (উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অনুমতিসাপেক্ষে) মাধ্যমে শেয়ার বিক্রি করে (লক-ইন পিরিয়ড শেষে) বের হতে পারে। তার মাধ্যমে ভালো মুনাফা অর্জনের সুযোগ মেলে। তাই বিনিয়োগ নয়, ভেঞ্চার ক্যাপিটালের আসল সাফ্যলের মাপকাঠি এক্সিট।
আইপিওতে আসার জন্য নতুন কোম্পানি সৃজনে ভেঞ্চার ক্যাপিটালের ভূমিকা ওপরের সারণিতে প্রতিভাত। অবশ্য ভেঞ্চার অর্থায়িত কোম্পানির একটি ক্ষুদ্র অংশ আইপিওতে আসে। একটা বড় অংশ মার্জার অ্যাকুইজিশন (২০১৩ঃ ৮০২), ট্রেড বিক্রির মাধ্যমে এক্সিট করে থাকে।

বাংলাদেশ প্রেক্ষিত
বাংলাদেশে ভেঞ্চার ক্যাপিটালের জন্য নীতিমালা এখনো প্রণয়ন করা হয়নি। আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন, ১৯৯৩-এ আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ‘ভেঞ্চার ক্যাপিটাল’-এর উল্লেখ আছে। কিন্তু বিস্তারিত নীতিমালা বা বিধিবিধান নেই। সরকার ২০০০-০১ সালের বাজেটে ইইএফ (ইকুইটি এন্ট্রাপ্রেনিউর ফান্ড) চালু করেছে, যা ভেঞ্চার ক্যাপিটালের ভাবধারায় গঠিত। গ্রামীণ ফান্ড ১৯৯৪ সালে ভেঞ্চার ক্যাপিটল চালু করে ১৯৯৬ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত ১০টি কোম্পানিতে প্রায় ১৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছে (সূত্র ওয়েবসাইট)। ২০০২ সালের পর পুঁজি হিসেবে বিনিয়োগের আর কোনো তথ্য নেই। তবে ভেঞ্চার ক্যাপিটালের জরুরি যে বৈশিষ্ট্য, এক্সিট, সেটির উল্লেখ নেই। এছাড়া ভিআইপিবি ২০০৮ সালে, সিফ (স্মল এন্টারপ্রাইজ অ্যাসিস্ট্যান্স ফান্ড) ২০১০ সালে ও বিডি ভেঞ্চার ২০১২ সালে কার্যক্রম শুরু করেছে।

বাধা ও সম্ভাবনা
বাংলাদেশে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল বা ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ডের জন্য কোনো আইন বা নীতিমালা নেই। যুক্তরাষ্ট্র ১৯৫৮ সালে ‘ক্ষুদ্র ব্যবসা বিনিয়োগ আইন’ প্রণয়ন করে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ব্যবসা শুরু করেছে। ভারতে ১৯৯৬ ও পাকিস্তানে ২০০১ সালে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল আইন প্রণীত হয়েছে। বাংলাদেশে আইন না থাকায় ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ড উত্তোলন করা সম্ভব নয়। বিদেশী ভেঞ্চার ক্যাপিটাল (ভিসি) ফান্ড আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও আইনের অভাবে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে পারছে না। বিদেশী ভিসি ফান্ড বাংলাদেশে এলে শুধু অর্থ নয়, সঙ্গে জ্ঞানও আনবে। বাংলাদেশে ভেঞ্চার ক্যাপিটালে দক্ষ ও অভিজ্ঞ জনশক্তি নেই। বিদেশী ভিসি ফার্ম সে অভাব দূর করতে পারে। ভিসি ফার্মের বিনিয়োগকৃত কোম্পানি ডিভিডেন্ড ঘোষণা করলে বর্তমানে দ্বৈত করের মুখোমুখি হতে হয়। ভিসি আইন না থাকায় কর অব্যাহতি চাওয়ার আইনি ভিত্তিও তৈরি হয়নি। তদুপরি ভিসি ফার্মগুলো চরিত্রগতভাবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান। ভিসি আইন প্রণয়ন হলে তারা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিভিন্ন কাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা (যেমন বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি তথ্যে প্রবেশাধিকার) পেতে পারে, যা তাদের বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক হবে। ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানি দ্রুত বর্ধনশীল ব্যবসায় বিনিয়োগ করে বিধায় ব্যাপক কর্মসংস্থান তৈরি হয়,প্রয়োজনীয় আইন বা নীতিমালা প্রণয়ন করে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ব্যবসার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে দিলে বাংলাদেশে নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও কর্মসংস্থানের অপার সম্ভাবনা তৈরি হবে। সৃষ্টি হবে অর্থায়নের নতুন এক যুগের।

29
Venture Capital (ভেঞ্চার ক্যাপিটাল) কি?
একজন উদ্যোক্তার মাথায় যখন ব্যবসায়িক বুদ্ধি আসে, তখন নিজের সাধ্যমত অর্থ দিয়ে তিনি ব্যবসা শুরু করেন৷ তার পর হাত পাতেন পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয় স্বজনদের কাছে৷ এর পর চড়াই উত্‍রাই পার করার পর ব্যবসায় সাফল্য এলে উদ্যোক্তা আগ্রহী হন ব্যবসাটাকে বাড়ানোর জন্য৷ কিন্তু এখন এই অর্থের যোগান আসবে কোথা থেকে? কে দেবে এই অর্থ? অনেকের কাছেই যেতে হয় অর্থের যোগানের জন্য কিন্তু হতাশার বাণী ছাড়া আর কিছুই মেলেনা৷ শেষ ভরসা ব্যাংক৷ কিন্তু ব্যাংক যখন দেখে, এখনো ব্যবসা লাভের মুখ দেখিনি আবার ব্যবসার বয়স এখনো দুই বছর পার হয়নি, তখন উদ্যোক্তাকে কোন আশার বাণী শোনাতে পারেনা৷ ব্যাংক এবং লিজিং কোম্পানির সাথে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্মের মধ্যে সবচেয়ে বড় পার্থক্য হল; তারা ঋণ দেয় না৷ তারা কোম্পানির অংশীদার হিসেবে কাজ করে; এমনকি অনেক ক্ষেত্রে তার কোম্পানি পরিচালনায় অংশ গ্রহন করে যাতে কোম্পানি লোকসানের মুখে না পড়ে৷ যেহেতু কোম্পানির সাফল্য মানে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্মের সাফল্য সেহেতু কোম্পানিকে লাভজনক করারার জন্য চেষ্টার কোন ত্রুটি  থাকেনা৷ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল বিনিয়োজিত কোম্পানিতে চিরদিন অংশীদার হিসেবে থাকার জন্য আসেনা৷

ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কি ভাবে কাজ করে?
ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্ম বা কোম্পানি নির্দিষ্ট উদ্দেশে তহবিল বা ফান্ড উত্তোলন করে৷ সাধারণত বিত্তশালীদের এই ফান্ডে বিনিয়োগ করার জন্য উত্‍সাহিত করা হয়৷ ঝুঁকি বেশী থাকার কারণে সাধারণ এবং খুচরা ব্যবসায়ীদের আহ্বান করা হয়না৷ যেহেতু ফান্ড বা তহবিল সংগ্রহ করে বিনিয়োগের জন্য, এজন্য তারা ব্যবস্থাপনা ফি নিয়ে থাকে৷ ভেঞ্চার এর মেয়াদ ৫ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত হয়৷ ভেঞ্চার ফান্ডে যারা বিনিয়োগ করে তাদের লিমিটেড পার্টনার বা এলপি বলে; আর যারা ফান্ড ব্যবস্থাপনা ও বিনিয়োগ করে , তাদের জেনারেল পার্টনার বা জিপি বলে৷ ভেঞ্চার ফার্ম বিনিয়োগের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়৷ এই বিনিয়োগ সাধারণত ৩ থেকে ৮ বছর পর্যন্ত হয়ে থাকে৷ বিনিয়োগ পার্টনারশীপের মাধ্যমে হয় তাই মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে সুবিধাজনক সময়ে ফার্ম সে শেয়ার বিক্রি করে বা সমঝোতার মাধ্যমে ভেঞ্চার ক্যাপিটালকে পে-করে একক মালিকানা বা অন্য কোন ব্যক্তি বা ফার্মের সাথে আবার পার্টনারশীপ করতে পারে৷ শেয়ার সবসময় যে লাভজনক হবে তা কিন্তু নয়; অনেক সময় লসেও শেয়ার বিক্রি করতে হয়৷ ফান্ড খরচ এবং ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে  উদ্যোক্তাই নিজেই সিন্ধান্ত  নিবে৷ তবে যেহেতু ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্ম পার্টনার সেহেতু তার সাথে পরামর্শ করেও সে ব্যবসায় খরচের এবং পরিচালনা করতে পারে৷ যেহেতু উদ্যোক্তার % শেয়ার বেশি তাই তাকেই বেশি প্রাধান্য দেয়া হবে৷

উদ্যোক্তা উন্নয়নে ভেঞ্চারের ভূমিকা কি?
ভেঞ্চারের বিনিয়োগের পদ্ধতিটা ব্যাংক বা অন্য কোন লিজিং কোম্পানী থেকে সম্পূর্ণ আলাদা৷ যেহেতু ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্ম উদ্যোক্তার লস (লোকসান) এবং প্রফিট (লাভ) দুটোই সমানভাবে শেয়ার করে সেহেতু বিনিয়োগের ধরণ কিছুটা ব্যবসার পরিধি বা আইডিয়ার উপর নির্ভর করে৷ যেমন: ১৷ একটি আইডিয়া উদ্যোক্তার মাথায় আছে কিন্তু বাস্তবায়ন করার জন্য কিছু ফাইন্যান্স দরকার৷ ২৷ ব্যবসার প্রাথমিক পর্যায় পার করে ফেলেছে কিন্তু বিপনণ বা বিক্রি শুরু করতে পারেনি৷ ৩৷ শুরু করেছে এবং বিক্রিও করছে কিন্তু লাভের মুখ এখনো দেখেনি৷ ৪৷ সর্বশেষ ধাপে আপনার আইডিয়া পরিক্ষিত, ভালো আয় করছে, ব্রেক ইভেন হয়েছে বা কাছাকাছি তখনো আপনার ব্যবসাকে ফাইন্যান্স করা হয়

কিভাবে আমরা ব্যাংক থেকে আলাদা?
ব্যাংক সাধারণত নতুন উদ্যোক্তাদের ফাইন্যান্স করতে পারেনা৷ ব্যাংক যখন কোন উদ্যোক্তাকে ফাইন্যান্স করবে তখন তার পূর্বের ব্যবসায়িক রেকর্ড চেক করার পাশাপাশি ব্যবসাটি লাভজনক কিনা, জামানত দিতে পারবে কিনা, স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি কি পরিমাণে আছে এবং ট্রেড লাইসেন্সের বয়স নূন্যতম ২ বছর হয়েছে কিনা তা যাচাই করবে৷ সেক্ষেত্রে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্ম-ই একমাত্র ভরসা৷ শুধু তাই নয় ব্যাংক থেকে টাকা নেয়ার ২ বা ৩ মাস গ্রেস পিরিয়ড পার হলেই সুদ সহ ঋণ পরিশোধ করতে হবে৷ অপরদিকে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল বিনিয়োজিত কোম্পানীর লাভ-লোকসান সমানভাবে % অব শেয়ার অনুযায়ী বহন করে৷ এজন্যই বিয়োজিত কোম্পানিতে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্ম অনেক বেশি জড়িত থাকে৷

Exit Point (এক্সিট পয়েন্ট) কি?
ভেঞ্চার ক্যাপিটালেরও বিনিয়োগকারী আছে তাই নির্দিষ্ট সময় পর শেয়ার বিক্রি করে বিনিয়োগকারীকেও টাকা ফেরত দিতে হয়৷ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানি সাধারণত তিনভাবে বিনিয়োজিত কোম্পানি থেকে বেরিয়ে আসেঃ ১৷ উদ্যোক্তার কাছে শেয়ার বিক্রি করে, ২৷ তৃতীয় কোন পক্ষের কাছে কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করে ও ৩৷ কোম্পানির শেয়ার আইপিওতে ছেড়ে, লকইন পিরিয়ড শেষ, সেকেন্ডারি বাজারে বিক্রি করে৷ যদিও আইপিওর প্রক্রিয়াটি জটিল ও সময়সাপেক্ষ , কিন্তু লাভ অনেক বেশি হতে পারে৷

ভেঞ্চার ক্যাপিটালের সাফল্য:
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ভেঞ্চারের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক ধারার আমূল পরিবর্তন নিয়ে এসেছে৷ আমেরিকাতে ভেঞ্চার ক্যাপিটালের রমরমা অবস্থা৷ মাইক্রোসফট, স্টারবাক্স, অ্যাপেল, ফেসবুক, গুগল, অ্যামাজন ইত্যাদি অনেক কোম্পানি আজ দুনিয়াতে তার সাফল্যের চূড়ায় বসে আছে শুধুমাত্র ভেঞ্চার ক্যাপিটালের সহায়তার কারনেই৷

ROI (আর.ও.আই):
কোন ব্যবসাতে ইনভেষ্ট করার আগে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্ম লাভ বা খতির পরিমাপের জন্য আগে থেকেই ক্যালকুলেশান করে দেখে নিয়ে নিশ্চিত হতে চায় যে ইনভেষ্টমেন্ট থেকে কি পরিমান ফেরত বা রিট্রান আসতে পারে৷ ফাইন্যান্স এর ভাষায় এই প্রক্রিয়াকে রিটার্ন অন ইনভেষ্টমেন্ট বলে৷ আর.ও.আই সাধারণত শতকরা হিসেবে প্রকাশ করা হয় এবং ব্যবসায়িক আর্থিক সিদ্ধান্তের জন্য বা ব্যবসায়িক মুনাফা তুলনা বা বিনিয়োগের দক্ষতা তুলনার জন্য ব্যবহৃত হয়৷

Idea (আইডিয়া) চুরি ঠেকাতে কি করতে হবে?
আপনি যদি মনে করেন আপনার Idea Unique এবং এখন পর্যন্ত কেউ এই ধরনের প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করেনি তখন আপনি সরাসরি আপনার আইডিয়া বা প্রোডাক্ট নিয়ে পেটেন্ট, ডিজাইন এবং ট্রেডমার্ক অধিদপ্তরে যোগাযোগ করতে পারেন৷ এই লিংক (http://www.dpdt.gov.bd/) থেকে আপনি আপনার প্রয়োজনীয় প্রশ্নের উত্তরগুলোও পেতে পারেন৷

অর্থ-ই কি ব্যবসার সব?
না৷ সবার কিন্তু উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য অর্থ বা ফান্ড প্রাথমিক পর্যায়ে দরকার নেই৷ কারো কারো শুধু সাহস বা motivation দরকার৷ আবার কারো কারো শুধু একটু সাহায্য দরকার যেমন: ব্যবসা শুরু করে দিয়েছে এখন একটু বসার জায়গা বা অফিস দরকার৷ আমরা ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্ম থেকে একটি উদ্যোগ গ্রহণ করেছি- যারা নতুন উদ্যোক্তা হিসেবে আমাদের সাথে আত্নপ্রকাশ করতে চায় তাদের জন্য বসে আলাপচারিতা করার জন্য অথবা তাদের ব্যবসার জন্য অফিসের ব্যবস্থা আমরা আমাদের বিজনেস ইনকিউবেটর (Business Incubator) থেকে করবো৷

Business Incubator (বিজনেস ইনকিউবেটর) কি?
সাধারণত ছোট বা নতুন উদ্যোক্তা প্রায় সময়ই তাদেও স্বল্প পুঁজির কারণে তাদের অফিস এবং অন্যান্য আনুষ্ঠানিক স্থাপনা করতে পারে না৷ এই ধরনের উদ্যোক্তারা Bussiness Incubator এর মাধ্যমেই তারা ব্যবসা শরু করতে পারে৷ একটি Bussiness Incubator সাধারণত সব রকমের office furniture, phone, fax, PC, email, mail box, reception centre, conference room, library, waiting room, discussion room ইত্যাদি সমন্বয়ে একটি Bussiness Incubator স্থাপিত হয়ে থাকে৷ পৃথিবীর সব দেশে এটি একটি জনপ্রিয় ব্যবস্থা৷

বিনিয়োগ নিশ্চিত করার জন্য কি কি প্রস্তুতি প্রয়োজন?
ব্যাংক, লিজিং কোম্পানি, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল সহ অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বিনিয়োগের আগে বেশ কিছু কাগজ পরীক্ষা করে৷ আর সেই বিষয়গুলো একজন উদ্যোক্তাকে অবশ্যই পালন করতে হবে বিনিয়োগ নিশ্চিত করার আগে৷ ১৷ ব্যবসায়িক পরিকল্পনা (Business Proposal) তৈরি করা ২৷ ব্যবসার ধরণ বা প্রকৃতি নির্ধারণ করা ৩৷ ব্যক্তি মালিকানা/যৌথ উদ্যোগ/কোম্পানি হবে তা নির্ধারণ করা ৪৷ ব্যবসার একটি সুন্দর, সহজ এবং যুতসই নাম ঠিক করা ৫৷ ব্যবসায়ের স্থান নির্ধারণ করা ৬৷ বাণিজ্যিক লাইসেন্স এবং অন্যান্য দলিলপত্রাদি তৈরি করা ৭৷ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং ব্যবসায়িক TIN (Tax Identification Number) সংগ্রহ করা

Work-order (ওয়ার্ক অর্ডার) দিয়ে কি লোন পাওয়া যায়?
জীবনে চলার পথে যত বেশি সমস্যা আসবে তত বেশি শেখার সুযোগ থাকবে৷ ব্যবসার ক্ষেত্রে  তাই৷ অনেকে জানতে চেয়েছে Work-order থাকলে ব্যাংক বা লিজিং কোম্পানি থেকে লোন পাওয়া যাবে কিনা? আসলে এটি নির্ভর করে আপনি কোন প্রতিষ্ঠানের কার্যাদেশ পেয়েছেন৷ সেক্ষেত্রে  আলোচনার মাধ্যমে আপনাকে ব্যাংক বা লিজিং কোম্পানি এবং যেই প্রতিষ্ঠানে কার্যাদেশ পেয়েছেন, দুই পর্বের সাথেই আলাপ করে নিতে হবে যে আপনি কি ভাবে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করবেন৷ সরকারি বা বেসরকারী যে প্রতিষ্ঠানই হোক, সে আপনার ব্যাংক বা লিজিং কোম্পানিকে চিঠি দিয়ে আপনার সম্পর্কে যাচাই বাছাই করার পর তারা আপনার ওয়ার্ক অর্ডার অনুযায়ী কাজ শেষ করার পর আপনার পেমেন্টটা ব্যাংক বা লিজিং কোম্পানিকে দিয়ে দিবে৷ তার আগে তারা ব্যাংক এবং উদ্যোক্তাকেও এই বিষয়টি চিঠি দিয়ে জানাবে যে আমরা আপনাদের পেমেন্ট যথাসময়ে করবো৷

Trade License (ট্রেড লাইসেন্স) কি এবং কিভাবে পাবো?
ট্রেড লাইসেন্স সাধারণত সিটি কর্পোরেশন, মিউনিসিপ্যাল অফিস অথবা স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নিবন্ধন ফর্ম পূরনের মাধ্যমে করতে হবে৷ ব্যবসা শুরুর জন্য ইতোমধ্যে আপনি যে এলাকা নির্বাচন করেছেন সেই এলাকাটি যে কর্তৃপক্ষের অধীনে তার কাছ থেকেই আপনাকে ট্রেড লাইসেন্স নিতে হবে৷ ব্যবসাকে যথাযথভাবে এবং নির্ভুলভাবে পরিচালনা করার জন্য সিটি কর্পোরেশন একটি ভালো গাইডের ভূমিকা পালন করতে পারে৷ ট্রেড লাইসেন্স আপনার ব্যবসার স্বীকৃতি প্রদান করবে৷ আপনার ব্যবসা যদি পৌর এলাকার মধ্যে হয় তাহলে আপনাকে পৌরসভা কর্তৃপক্ষের নিকট হতে ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হবে৷ ব্যবসায়ীক এলাকাটা যদি সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভার বাহিরে হয় তবে আপনাকে ইউনিয়ন কাউন্সিল /উপজেলা কাউন্সিল থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিতে হবে৷

বাংলাদেশ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল লিঃ সর্বোচ্চ কত টাকা বিনিয়োগ করতে পারে?
আসলে বিনিয়োগের ব্যাপারটি পুরোপুরি নির্ভর করবে আপনার ব্যবসায়ীক আইডিয়া বা ইনোভেটিভ প্রোডাক্টের উপর৷ তবে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল সাধারণত ছোট ছোট প্রজেক্টগুলোতে বিনিয়োগ করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে৷ আপনার আইডিয়া বা প্রোডাক্ট যদি আমাদের কাছে মনে হয় এটি বাজারে একটি অভাবনীয় পরিবর্তন আনবে বা আনতে সক্ষম হচ্ছে সেক্ষেত্রে বিনিয়োগের পরিমান বড় আকারেও হতে পারে৷

কিভাবে Project Proposal/Business Proposal (প্রজেক্ট বা বিজনেস পরিকল্পনা) তৈরি করবো?
এটি একটি কমন প্রশ্ন যা আমরা সচরাচর সব জায়গায় শুনতে পাই কি ভাবে এটি তৈরি করবো৷ প্রথমত আপনাকেই খুঁজে বের করতে হবে কিভাবে এটি করা যায়৷ এতটুকু কাজ করার কৌশল আপনি আয়ত্ব করতে না পারলে সামনের পথচলাটা কঠিন হয়ে পড়বে৷ আপনার কাজ আপনাকেই করতে হবে৷ হ্যা!! শুরুতেই হয়তো ভাল কোন বিজনেস পরিকল্পনা করতে পারবেননা তবে চেষ্টা করলে কি না হয়৷ আপনি আপনার ব্যাংকার কোন বন্ধু বা আত্মীয়ের কাছ থেকে সাহায্য নিতে পারেন৷ অথবা আপনি কোন প্রফেশনাল লোককে দিয়েও আপনার এই কাজটা করাতে পারেন, তাতে করে আপনাকে বেশ কিছু টাকা খরচ করতে হবে৷ তার চেয়ে ভাল, আপনি ইচ্ছা করলেই বিজনেস পরিকল্পনার উপর একটি প্রশিক্ষণ নিয়ে নিতে পারেন৷ এতে করে আপনার ব্যবসা সম্পর্কে বাস্তবিক জ্ঞানটা বাড়বে এবং পরবর্তীতে আপনি নিজে নিজেই আপনার প্রজেক্ট/বিজনেস পরিকল্পনা সুন্দরভাবে তৈরি করতে পারবেন৷ আপনাকে আর মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হবে না৷ এই লিংক থেকে আপনি আপনার প্রশিক্ষণের  যাবতীয় তথ্য পেতে পারেন: http://www.sciti-sme.gov.bd/ , http://www.dhakachamber.com/dbi

উদ্যোক্তা হতে চাই, কিভাবে?
অনেকেই আমাদের কাছে জানতে চায়, আমি কি ভাবে উদ্যোক্তা হতে পারি৷ উদ্যোক্তা হতে হলে আপনার নিজেকে নিজেই তৈরি করতে হবে এবং নিজেকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে- আপনি কি হতে চান বা কি করতে চান৷ আপনি জনাব সবুর খান, চেয়ারম্যান ড্যাফোডিল গ্রুপ এবং বাংলাদেশ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল লিঃ, এর লেখা "উদ্যোক্তা উন্নয়ন নির্দেশিকা" বইটি সংগ্রহ করতে পারেন৷ এই বইটি থেকে আপনি আপনার ব্যবসা ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন সংক্রান্ত সকল প্রকার প্রশ্নের উত্তর পেতে পারেন৷

Pages: 1 [2]