Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Messages - sanzid.swe

Pages: 1 2 3 [4]
46
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের একজন মহানায়ক– “অ্যালান টুরিং“। মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, একজন কম্পিউটার বিজ্ঞানী কিভাবে একটা যুদ্ধের মহানায়ক হতে পারে! হ্যাঁ, ঠিকই বলেছি। পরে বলছি সেসব কথা…

অ্যালান ম্যাথিসন টুরিং, ১৯১২ এর মাঝের দিকে ইংল্যান্ডে জন্ম, যাকে আধুনিক তত্বীয় কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর জনক বলা হয়। কম্পিউটার বিজ্ঞানের মৌলিক দুটি ধারণার সাথে তার নাম জড়িত– “টুরিং টেস্ট” এবং “টুরিং মেশিন“।

প্রথমটির মাধ্যমে তিনি কম্পিউটারের কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা এবং মানুষের মস্তিষ্কের চিন্তাচেতনার মধ্যে সম্পর্কের বিস্তর ধারনা দিয়েছেন যার রূপ আজকের এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা। এবং অন্যটি সেই বিখ্যাত যন্ত্র যার বর্তমান রূপ আমাদের এই আধুনিক কম্পিউটার মেশিন।

 



বালক টুরিং
তিনি গণিতের মাঝে লুকিয়ে থাকা নানান প্রকৃতিক রহস্য এবং কোড নিয়ে কাজ করতেন। অ্যালান টুরিং বিশ্বাস করতেন প্রকৃতির ফুল, ফল, মাছ ইত্যাদির মধ্যে কোড এবং রহস্য লুকিয়ে আছে এবং তার জীবদ্দশায় এসব উদঘাটন করার চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। তিনি চেষ্টা করেছেন সকল কিছুই ম্যাথম্যাটিক্যাল সমীকরণে প্রকাশ করতে এবং এই প্রকৃতিকে ডিকোডেড করতে!

তার এই ডিকোড করার আগ্রহকে কাজে লাগিয়ে তিনি স্বয়ং অবদান রেখেছেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে। সেসময় জার্মান আর্মি এগিয়ে যাচ্ছিল তাদের তৈরি একটি যন্ত্রের জন্য, যার মাধ্যমে সৈন্যরা গোপন সংকেত ব্যবহার করে তথ্য আদান– প্রদান করতে পারতো। এই সময় ঐ সংকেত থেকে তথ্য সংগ্রহ করা খুবই প্রয়োজনীয় হয়ে যায় ব্রিটিশদের কাছে। আর সেই ডিকোড করার যন্ত্র আবিষ্কার করার নেত্রীত্ব দেন অ্যালান টুরিং, যে যন্ত্রটি “এনিগমা মেশিন” এর এনক্রিপ্ট করে পাঠানো সংকেত থেকে পুনরায় তথ্য উদ্ধার করতে পারতো। এভাবে বৃটিশরা গোপন তথ্য পাওয়ার মাধ্যমে যুদ্ধে এগিয়ে থাকতে সক্ষম হয় এবং ধারনা করা হয় অ্যালান টুরিং এর এই যন্ত্র আবিষ্কারের ফলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ দুই– তিন বছর আগেই শেষ হয়ে যায় এবং ১৪ মিলিয়ন অর্থাৎ ১৪০ লক্ষ মানুষের জীবন বেঁচে যায়!

 



এনিগমা মেশিন
 

অ্যালান টুরিং প্রকৃতির বস্তুসমূহের মধ্যে গণিতের সমীকরণ খুঁজে রহস্য উদঘাটন করার অর্থাৎ “ফিলোট্যাক্সিস” এর উপর গবেষণা করেছেন। যার একটি অন্যতম ফসল সূর্যমুখী ফুলের পাপড়িতে “ফিবোনাচ্চি ফিলোট্যাক্সিস” এর বিন্যাস দেখতে পাওয়া।

মৌলিক কিছু ধারণা প্রদানকারী এই বিজ্ঞানী খুব বেশিদিন কাজ করে যেতে পারেননি, তার কিছু পারসোনাল ইন্টারেস্ট থাকার কারণে। তিনি সমকামী হওয়ার করনে সেসময় বৃটিশ সরকার একটি ওষুধ গ্রহণ করতে বাধ্য করেন। এবং পরবর্তীতে, যে সরকারের জন্য এতটা কষ্ট করেছেন, সেই সরকারের দেয়া এই সিদ্ধান্ত তিনি মেনে নিতে পারেননি। ফলে ১৯৫৪ সালের দিকে সায়ানাইড যুক্ত একটি আপেল গ্রহণ করেন এবং স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণ করেন। পরে ২০০৯ সালের দিকে এসে বৃটিশ সরকার তাকে দেয়া সিদ্ধান্ত ভুল শিকার করেন এবং মরণোত্তর ক্ষমা প্রার্থনা করেন…

২০ শতকের সেরা একজন বিজ্ঞানী যার অনেক চিন্তাচেতনাই সেসময় অনেকে বুঝতে পারেনি, যা পরবর্তীতে কাজে লেগেছে। Code Breaker নামে তার উপর একটি ডকুমেন্টরি রয়েছে, যেটি দেখলে তার মাত্র ৪১ বছর বেঁচে থাকার কারণে আফসোসের সীমা থাকে না।

পারসোনালি আমার অনেক প্রিয় একজন বিজ্ঞানী যার নামে আমার ভার্সিটির একটি ল্যাবের নামকরণ করা হয়েছে, এবং সেখান থেকেই তার সম্পর্কে জানতে শুরু করি। আজ তার পৃথিবীতে পবর্তনের দিন উপলক্ষ্যে তার সম্পর্কে লেখা। পরবর্তীতে সময় হলে তার করা কম্পিউটারের কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা পরীক্ষার মজাদার টুরিং টেস্ট সম্পর্কে লিখবো। সেপর্যন্ত আশা রাখি, “বর্তমান সময় থেকে কয়েক ধাপ এগিয়ে থাকা এইসকল মানুষেরা চিরজীবন বেঁচে থাক সবার মাঝে”। ধন্যবাদ সবাইকে…

আমার ব্লগের মূল লেখাঃ https://bit.ly/2V7it20

47
আমরা যারা কম্পিউটার বিজ্ঞান নিয়ে ঘাটাঘাটি করি বা কম্পিউটার সায়েন্সে পড়াশোনা করি তাদের মধ্যে কতজন “Computer science trends in 2017” কথাটি লিখে একবার হলেও গুগলে সার্স করেছেন?

আমার মনে হয় না ১০% পাঠকও এই টাইপের কোনকিছু গুগলে লিখে কখনো জানার চেষ্টা করেছেন। কারন আমাদের হয়তো ক্লাস, এসাইনমেন্ট, প্রেজেন্টেশন আর ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বানানোর ব্যস্ততায় অন্যকিছু করা দুরূহ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আসলেও কি তাই? আমরা যে কোডব্লক ইউজ করে কোডের হাতেখরি নিয়েছি, এরপরে সারাজীবন যদি সেই কোডব্লকটা ইউজই করে যাই তাহলে এইরকম আরও হাজারো কোডব্লক কারা বানাবে? একটু ডিফারেন্ট চিন্তা করা কি আপনার, আমার উচিৎ না??

আপনি ধরলাম ওয়েব ডেভেলপিংই করেন। যেখানে পিএইচপি দিয়ে ডেভেলপ করলে আপনি $৫ প্রতি ঘন্টা পাচ্ছেন আর জ্যাঙ্গো দিয়ে করলে পাচ্ছেন $২০, তাহলে আপনি কোনটা চুজ করবেন??
আমি জানি অনেকেই চাইবেন না নতুন করে জ্যাঙ্গো শিখতে। কারন এটা তার বাপ-দাদা কেউ করে আসেনি, এবং সে পিএইচপিতে আগে থেকে অভ্যস্ত। এখানেই আমাদের সীমাবদ্ধতা..

এবার ভার্সিটির কথায় আসি। আমরা যারা ভার্সিটিতে প্রতিটা সেমিস্টারের ল্যাবের জন্য কোন প্রোজেক্ট করে থাকি, বছরের পর বছর সেই ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ছাড়া আর কিছু আমাদের মাথায় আসে কি?
আমাদের এপ্রোচ দেখে মনে হয় বাবা-মা জন্মের পর পরই ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের একটা টীকা দিয়ে দিয়েছিলেন শরীরে। যার ফলে লাইব্রেরী ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমকে বানাচ্ছি হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, পরবর্তী সেমিস্টারে সেটাকে আবার বানাচ্ছি হোস্টেল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, আবার হয়তো সেই হোস্টেল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমটাকেই বানাচ্ছি হোটেল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম! ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম করার জন্যই হয়তো একেকটা কম্পিউটার বিজ্ঞানীদের জন্ম..



এবার ক্যারিয়ার গোল নিয়ে কথা বলি। চার বছরের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে “তুমি ভবিষ্যতে কী নিয়ে কাজ করতে চাও?” এই প্রশ্নটার সম্মুখীন হতে হয় কয়েকশো বার! আমিই বলছি-

সফটওয়্যার ডেভেলপার
ওয়েব ডেভেলপার
এনড্রয়েড ডেভেলপার
সিস্টেম এডমিনস্ট্রেটর
আইটি ফার্ম দেয়া
প্রোগ্রামার হওয়া
টিচার হওয়া
এসবের বাইরে কেউ কখনো প্রশ্নটির উত্তর করেছেন কিনা? করলেও সেটা কত শতাংশ?? এখানেই আমাদের চিন্তার মাপকাঠি স্পষ্ট হয়..

ভার্সিটিতে থাকা অবস্থায় কতজন বলেছেন আমি একজন বিজ্ঞানী বা ডেটা সায়েন্টিস্ট হতে চাই? অথচ তিনি কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং প্রকৌশল নিয়েই পড়াশোনা করছেন।
কতজনই বা বলেছেন আমার লক্ষ্য হল IEEE-তে ৩ টা পাবলিকেশন পাবলিশ করা।
কতজন ভেবেছেন, আমি বাংলাদেশের ট্রাফিক সমস্যার সমাধান কম্পিউটার সায়েন্স দিয়ে কিভাবে করা যায় সেটা একটু গবেষণা করে দেখি, আমি যদি সফল নাও হই পরবর্তীতে হয়তো কেউ এটা নিয়ে কাজ করবে এবং সফল হবেই..

কতজন ভেবেছেন তিনি ফাইনাল ইয়ারের প্রজেক্ট বা থিসিসটা IoT, AI বা ML নিয়ে করবেন? কতজন ভেবেছেন বাংলাদেশে থেকেই ইউএসএতে চলা টেসলা গাড়ির সিস্টেম আপগ্রেটে তারও কন্ট্রিবিউশন থাকতে পারে??
জানি খুব কম লোকেই ভেবেছেন, কারন এই ব্যাপারগুলো অন্যান্য কাজের চাপে জানা হয়ে ওঠেনি কখনো।

তাহলে কী হতে পারে আমাদের একেকজন কম্পিউটার সায়েন্টিস্টদের চিন্তার সিলেবাস? আপনারাই ভেবে দেখুন… আমি পরবর্তীতে এটা নিয়ে আরও কিছু লেখালেখির ট্রাই করবো।

Learn Python! ধন্যবাদ… 🙂

আমার ব্লগের মূল লেখাঃ https://bit.ly/2V1OCYG

49
আপনি যদি একজন কম্পিউটার প্রোগ্রামার হয়ে থাকেন তাহলে আজকের দিনটি বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে আপনার জন্যই। আর প্রোগ্রামার হওয়ার পাশাপাশি আপনি একজন রাশিয়ান হয়ে থাকলে একদিন সরকারি ছুটিও মিলবে আপনার কার্যদিবস থেকে!

হ্যাঁ ঠিকই বলেছি, প্রোগ্রামার দিবস! প্রতি বছরের ২৫৬ তম দিন অর্থাৎ সেপ্টেম্বরের ১৩ তারিখ (লিপ ইয়ার হলে ১২ তারিখ) দিনটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রোগ্রামার দিবস হিসেবে পালিত হয়। দিনটি ২৫৬ তম হওয়ার কারণ হয়তো অনেক প্রোগ্রামারই বুঝে গিয়েছেন ইতোমধ্যে। কারণ- এই সংখ্যাটি হল ৮ বিট বাইনারি সংখ্যা সিস্টেমের সর্বোচ্চ মান, অর্থাৎ টু- টু দি পাওয়ার- এইট (২^৮)= ২৫৬।
আবার আরেকটি কারণ হল ৩৬৫ এর মধ্যে ২৫৬-ই সবচেয়ে কাছাকাছি বাইনারি পাওয়ারের মান। এর পরের নাম্বারটাও (২^৯= ৫১২) ৩৬৫ থেকে বড় হয়ে যায়। এবং এই ২৫৬ ডেসিমেল নাম্বারটা আবার হেক্সাতে রিপ্রেজেন্ট করলে হয় ১০০! (হিসাবের ব্যাপারগুলো বুঝতে না পারলে একজন প্রোগ্রামারের সাথে একদিন বসে কফি খান, আপনাকে উত্তমরূপে বুঝিয়ে দিতে সক্ষম হবে আশা করি)।



এসকল কারণেই রাশিয়ান সরকার ২০০৯ সালের দিকে বছরের ২৫৬ তম এই দিনটি প্রোগ্রামার দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেন। বিষয়টি সর্বপ্রথম উত্থাপন করেছিলেন রাশিয়ান দুজন প্রোগ্রামার ভ্যালেন্টিন বল্ট এবং মাইকেল কার্ভিকভ।
এরপর থেকে দিনটি রাশিয়াতে সরকারি ভাবে স্বীকৃত , এছাড়াও বাংলাদেশ, আর্জেন্টিনা, ইসরায়েল, চিলি, ব্রাজিল, মেক্সিকো, অস্ট্রিয়া, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, যুক্তিরাষ্ট্র, ইতালি, কানাডা, ভারত, পোল্যান্ড, চীন, জাপান, রোমানিয়া সহ বিভিন্ন দেশে দিনটি বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে পালিত হয়।



এই দিন এবং সংখ্যাটি নিয়ে ডোনাল্ড নুথ এর একটি মজার একটিভিটি রয়েছে। কম্পিউটার প্রোগ্রামিং এর উপর মার্কিন এই কম্পিউটার বিজ্ঞানীর একটি যুগসূচনাকারী গ্রন্থ রয়েছে। বইটির নাম “The Art of Computer Programming”, যেটি কম্পিউটার প্রোগ্রামারদের অন্যতম পথপ্রদর্শক।

কোন ব্যক্তি যদি নুথ এর এই বই-এ কোন প্রকার ভুল ধরিয়ে দিতে পারে, তাহলে তাকে $২.৫৬ পুরষ্কৃত করা হয়। $২.৫৬ মানে হল ২৫৬ সেন্ট। এত সংখ্যা রেখে কেন এই পুরষ্কারের পরিমাণ ২৫৬ সেন্ট নির্ধারন করেছেন? বুঝে গিয়েছেন হয়তো অনেকেই…

বাংলাদেশ থেকেও অনেকেই বইয়ের ভুল ধরিয়ে দিয়ে ডোনাল্ড নুথের এই পুরষ্কার পেয়েছে, আপনিও চেষ্টা করে দেখতে পারেন!

 

তো কি করবেন এই প্রোগ্রামার দিবসে?

বিশ্বব্যাপী কম্পিউটার প্রোগ্রামিং এবং প্রোগ্রামারদের জনপ্রিয়তা যে হারে বেড়েই যাচ্ছে, কোন একদিন হয়তো দেখবেন বাংলাদেশ সহ অন্যান্য দেশেও এই দিনটিতে করবেন রাশিয়ার মত প্রোগ্রামারদের জন্য পাবলিক হলিডে ঘোষণা করে দিবে।

কিন্তু আপনি একজন প্রোগ্রামার হলে সেই দিনের জন্য অপেক্ষা কেন?



আপনার পরিচিত প্রোগ্রামার এবং সুভাকাঙ্খীদের শুভেছা জানিয়ে দিন প্রোগ্রামার দিবসের শুভেচ্ছাবার্তা পাঠানোর মাধ্যমে… ভালোবাসা মিশ্রিত প্রোগ্রামার দিবসের একটা শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়ে দিতে পারেন আপনার সেই প্রিয় মানুষটিকেও!

Happy Programmer’s Day… 🙂 <3

আমার ব্লগের মূল লেখাঃ https://blog.sanzidscloud.com/2017/09/13/programmer-day/

50
ভার্সিটির থার্ড ইয়ার শেষ হতে না হতেই স্টুডেন্টদের আরেক দফা হতাশাগ্রস্থ করে দেয় ফাইনাল ইয়ার প্রজেক্ট, থিসিস না ইনটার্ন… এই নিয়ে নিজের মধ্যেই টানপারাপারি এবং এই সিদ্ধান্তহীনতা!

অনেকে জানেনই না, “কেন সে সিএসই পড়ছে?” আর ভবিষ্যতে কী করবে, কিভাবে করবে সেটা জানা তো তার কাছে দুষ্কর ব্যাপারস্যাপার। এরই মধ্যে আবার সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে সে ফাইনাল ইয়ারে থিসিস করবে নাকি প্রজেক্ট! এ যেন একপ্রকার পরিবারের বড় ছেলে হওয়ার পরিস্থিতি…



আমাদের মধ্যে অনেকেই তাদের নিজেদের প্যাশান, ভাল লাগা এবং স্কিল সম্পর্কে জানা থাকলেও ফাইনাল ইয়ারের ডিফেন্স নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগে থাকেন। এর কারন, নিজের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ডিফেন্স হিসেবে কোন প্রোগ্রামটা তার জন্য সুফল বয়ে আনবে- থিসিস, প্রজেক্ট নাকি ইনটার্ন? এটি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারনা না থাকা।

এটি নির্ধারন করার ক্ষেত্রে আমি প্রথমেই বলবো, আন্ডার গ্রাজুয়েশন শেষে আপনি কি করতে চান? এটি সম্পর্কে স্পষ্ট উত্তর জানা থাকতে হবে-

মাস্টার্সে ভর্তি হবেন?
জব করবেন?
নাকি বিয়ে?
খুব সহজে বলতে গেলে-

যদি মাস্টার্সে ভর্তি হতে চান, কিংবা আপনার ইচ্ছে শিক্ষকতা লাইনে ক্যারিয়ার গড়ার, কিংবা মাস্টার্স-পিএইচডি করতে দেশের বাইরে ভালো কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যাবেন, তাহলে নিঃসন্দেহে একটি থিসিস করে ফেলাটা ভাল কাজ হবে।

যদি উত্তর হয় জব করবেন, তাহলে একটা সুন্দর দেখে প্রোজেক্ট করার প্লান করে ফেলুন। জব করতে চাইলে যে থিসিস করা যাবেনা তা না। তবে আইটি সেক্টরগুলোতে সাধারনত একাডেমিক লাইফে রিয়েল লাইফ কিছু প্রজেক্ট করা থাকলে তাদেরকে প্রায়োরিটি বেশি দেয়।

আর যদি বিয়ে করতে চান তাহলে সেটা আপনিই ভাল জানেন, আপনাকে কিভাবে একটা ছেলে/ মেয়ের সামনে রিপ্রেজেন্ট করলে তাকে পটাতে পারবেন। তবে ইনটার্ন করলে সেখানে এই সুযোগটা একটু বেশি পাবেন আমি মনে করি। কিউটের ড্রাম দেখে একজন কলিগকে বাছাই করে নিতে পারবেন আপনার বউ হিসেবে। (তবে আমি শুধু বিয়ে করার জন্য রিকমেন্ড করছি না ইনটার্ন করতে, কারন এজন্য আরও অনেক ধরনের স্কিলের প্রয়োজন হয়)।

এই বিষয়ে সিনিয়র-জুনিয়রদের স্পষ্ট ধারনা দিতে আমি অনেক দিন ধরেই লিখবো ভাবছি। কিন্তু আমারও এই বিষয়ে জ্ঞান খুবই সীমিত থাকার কারনে শ্রদ্ধেয় জাবেদ মোরশেদ স্যারের একটা লেখাকে আমি একটু গুছিয়ে লেখার ট্রাই করছি-

প্রজেক্ট
প্রজেক্ট মূলত কোন একটা সফটওয়্যার সলুশন । সাধারণত প্রজেক্টে কোন একটি গ্রুপের কাছ থেকে মোটামোটি কমপ্লিট একটা সফ্টওয়ার প্রজেক্ট আশা করা হয়, যেখানে তারা তাদের কোন একটা প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজের দক্ষতা দেখাতে পারে। তবে তার চেয়েও বড় কথা, এখানে তাদের কাছ থেকে কোন একটা রিয়াল ওয়ার্ল্ড প্রবলেমের আইটি বেইজ সল্যুশন আশা করা হয়। অর্থাৎ প্রোগ্রামিংয়ের সাথে সাথে তাদের সফটয়্যার ইন্জিনিয়ারিং কনসেপ্ট ব্যবহারের সক্ষমতার দিকগুলোও দেখা হয়। সঠিক প্রবলেম আইডেনটিফিকেশন, সলুশন প্লান, ভায়াবিলিটি, কস্ট প্লান, রিকোয়ারমেন্ট অ্যানালাইসিস, ডিজাইন, টেস্টিং… ইত্যাদির ব্যবহার একটা প্রজেক্টে থাকতে হয়।



যেমন একটা উদাহরণ দেই- আমরা যদি বাংলাদেশের ম্যারিজ সার্টিফিকেশন প্রসেসকে ডিজিটালাইজ করতে চাই তাহলে আমাদের কি কি করতে হবে? কেমন হবে এর সিস্টেম আর্কিটেকচার, ডিজাইন ও ইম্পিমেনটেশন?

তবে বলে রাখি- প্রজেক্ট থেকে আশা করা হয়না যে, এটা পুরোপুরি রিয়াল ওয়ার্ল্ড ডিপ্লয়েবল সল্যুশন হবে। তবে তারা সফটওয়্যার ইন্জিনিয়ারিং প্রসেস ফলো করেছে কিনা সেটাই মূলত দেখা হয়। প্রজেক্ট বিভিন্ন ধরনের হতে পারে- ওয়েব বেইজড, মোবাইল অ্যাপ, নেটওয়ার্কিং, সিস্টেম সল্যুশন ইত্যাদি ইত্যাদি..

যেমন আরেকটি উদাহরন দেই- যদি আমারা চাই আমরা একটা মোবাইল পুশ-পুল বেইজড প্রজেক্ট করতে, যেখানে স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা স্বাসক্রাইব করবে। এতে তারা প্রতিদিন সকালে একটা গণিতের বা বিজ্ঞানের প্রশ্ন পাবে। তারা ফিরতি এসএমএস-এ তার উত্তর পাঠাতে পাড়বে। উত্তর ভুল বা সঠিক যাই হোক, পরের মেসেজে তাকে তা জানিয়ে দেয়া হবে।

মূল কথা এখানে সবসময় বাস্তব সম্মত সমস্যার স্মার্ট সমাধান আশা করা হয়…

ভালো দিক
প্রজেক্টে মূলত কোন ছাত্র/ছাত্রীর সফটওয়্যার ইন্জিনিয়ারিং সক্ষমতা যাচাই করা হয়। এখানে ক্রিটিকাল থিংকিংয়ের তেমন সুযোগ নাই বা থাকলেও এটাই এখানে মূল বিবেচ্য বিষয় নয় বরং ইম্পিমেনটেশন দক্ষতাই প্রধান বিবেচ্য। এই ধরনের প্রজেক্ট ছাত্র/ছাত্রীদের সফটওয়্যার ফার্মে কাজ করার প্রাথমিক জ্ঞানটুকু দিয়ে থাকে। তাই ভালো প্রজেক্ট করতে পারলে পরবর্তিতে তা সফটওয়্যার ফার্মে ইন্টারভিউয়ের সময় পজিটিভ অ্যাট্রিবিউট হিসেবে বিবেচিত হয়।

দুর্বলতা
একটা প্রজক্ট থেকে সাধারণত কোন পাবলিকেশন হয় না। তাই অ্যাকাডেমিক ওয়ার্ল্ডে প্রজেক্টের ভ্যালু কম। যারা উচ্চশিক্ষায় যেতে চায় তাদের জন্য এটা কোন বাড়তি ক্রেডিট যোগ করে না।

থিসিস
থিসিসে সাধারনত ছাত্র/ছাত্রীরা যেকোন একটা একাডেমিক প্রবলেমের প্রথমে থিওরিটিক্যাল সল্যুশন দেয় ও পরে ছোট একটা ইমপ্লিমেনটেশন বা সিমুলেশনের মাধ্যমে ভেলিডেশন করে দেখায়। তবে আন্ডারগ্রাজুয়েট ছাত্র/ছাত্রীদের কাছ থেকে সাধারনত কোন যুগান্তকারি সল্যুশন আশা করা হয় না, বরং দেখা হয় তার মধ্যে ক্রিটিক্যাল থিংকিং করার ক্ষমতা আছে কিনা এবং গবেষণা করার যে বিভিন্ন ধাপ বা প্রক্রিয়া আছে তা শিখতে পেরেছে কিনা। যেকোন গবেষণায় প্রথমেই কোন একটি নির্দিষ্ট ফিল্ডে প্রবলেম আইডেন্টিফিকেশন করতে হয়। তারপর এই রিলেডেড অনান্যদের কাজ দেখতে হয়, যদিও প্রবলেম আইডেন্টিফিকেশনের সময়ই অনেকের কাজ সম্পর্কেই ধারনা হয়ে যায়।

তারপর সেই প্রবলেমের অন্য কোন থিউরির মাধ্যমে সল্যুশন আশা করা হয়। তারপর সেই সল্যুশনের একটা ভ্যালিডেশন তাকে করে দেখাতে হয়। ভ্যালিডেশন থিউরি বেইড (যেমন: ম্যাথমেটিক্যাল মডেল) বা সিমুলেশন বেইজড বা ছোটখাটো ইমপ্লিমেন্টেশন বেইজড হতে পারে।



যেমন একটা উদাহরণ দেই- ধরলাম আমরা ক্লাউড কম্পিউটিং নিয়ে কাজ করতে চাই। ক্লাউড কম্পিউটিংয়ে মূলত স্কেলিং, অনডিমান্ড রিকোয়ারমেন্ট, স্টোরেজ, সিকিউরিটিসহ বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। প্রথমেই আমাদের কোন ধরনের সমস্যা সমাধান করতে চাই তা ঠিক করতে হবে। তারপর একটা রিয়াল ওয়ার্ল্ড সিনারিও দাড় কারাতে হবে এবং এই গবেষনার ফলে কি কি উন্নতি আমি আশা করছি তা বলতে হবে (এটাকে মূলত রিসার্চের ভাষায় মটিভেশন বলা হয়ে থাকে)।

তারপর রিলেটেড কাজ ও বিভিন্ন কম্পিউটার সাইন্সের থিউরি ও ধারনার মাধ্যমে সেই সমস্যার সমাধান করতে হবে। থিসিসে যেহেতু কোন একটা নতুন প্রবলেম নিয়ে কাজ করা হয় তাই জানার চেষ্টা করা হয় আমার সলুশ্যন নিয়ে এই ফিল্ডে যারা গন্যমান্য এক্সপার্ট আছেন তাদের মতামত কি। এটি জানার সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো কনফারেন্স। তাই আশা করা হয় ছাত্র/ছাত্রীদের থিসিস কোন কনফারেন্সে যাতে পাবলিশ হয়। গবেষণা পাবলিশ হলে তা তার উচ্চশিক্ষাও কাজে লাগে।

ভালো দিক
থিসিসের সবচেয়ে ভালো দিক হল- এটা ছাত্র/ছাত্রীদের ক্রিটিক্যাল থিংকিং করতে শেখায় যা কিনা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রের থেকে সবচেয়ে বেশি কাম্য। কারণ তাকে সামনের জীবনে সমাজের, দেশের অনেক আনসিন সমস্যার সমাধানের জন্য তৈরি করা হয়। এটাই মূলত একজন বিশ্ববিদ্যালয় গ্রাজুয়েট ও একজন কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত ছাত্রের মধ্যে পার্থক্য তৈরি করে।

যাই হোক- থিসিসের আরো একটি ভালো দিক হলো, যদি গবেষণাটি ভালো কোন কনফারেন্সে পাবলিশ করে তবে তা তাকে ভালো স্কলারশিপের ক্ষেত্রে সাহায্য করবে।

দুর্বলতা
যেহেতু থিসিসের সময় কোন ছাত্র/ছাত্রী তার বেশিরভাগ সময় কোন একটি নতুন সমস্যা খোজা ও তার সমাধান খুজতে ব্যয় করে তাই তাদের কাছ থেকে প্রজেক্টের মতো কোন রানিং সলুশ্যন পাওয়া যায় না। ইনফ্যাক্ট আশাও করা হয় না বা এটা এর রিকোয়ারমেন্টও নয়।

তাই থিসিস করা ছাত্র/ছাত্রীদের কোন একটি প্রোগ্রামিং ল্যাংগুযের খুটিনাটি সম্পর্কে ধারনা কম থাকে। যেহেতু সে নিজে কোন পুর্ণাঙ্গ সফ্টওয়ার প্রজেক্ট করে নাই, তাই অনেক সময় তাকে নিজে থেকে এইসব শিখে নিতে হয়। তবে যেহেতু তার ক্রিটিক্যাল থিংকিং করার ক্ষমতা আছে তাই খুব সহজেই সে এই ঘাটতি পুরন করে উঠতে পারে।

সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, প্রজেক্ট হলো মুলত কোন একটি সফ্টওয়ার সলুশ্যন তৈরি যা সাধারণত সফ্টওয়ার ফার্মে কাজ করার সময় কাজে লাগে। আর থিসিস হলো গবেষণা শেখার ও তার ব্যবহার করে সমস্যা সমাধানের উপায়। তাই এটি একাডেমিক ক্ষেত্রে কাজে লাগে। তবে এটা এমনই হবে তারও কোন ধারা বাধা নিয়ম নাই।

তবে যে যাই করুক! লক্ষ্য, সিনসিয়ারিটি ও পরিশ্রম করার মানসিকতা নিয়ে কাজ করলে সাফল্য আসবেই।

শুভ কামনা সবার জন্যই… ☺

মূল লেখাঃ স্যার, প্রজেক্ট করবো নাকি থিসিস করবো ?

আমার ব্লগের মূল লেখাঃ https://blog.sanzidscloud.com/2017/09/19/thesisorproject/

51
মানুষ কিভাবে সময়ের সাথে সাথে বড় হয়? কিভাবে তার চিন্তাশক্তি দিনে দিনে বৃদ্ধি পায়, ম্যাচিউর হয়ে ওঠে, এবং এভাবে একসময় বুদ্ধিবৃত্তিক প্রাণী হিসেবে পরিচিতি পায়?

এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুজতে গিয়েই তৈরী হয়েছে আরেক প্রশ্ন। মানুষকে কি আদৌ মেশিনের দ্বারা রিপ্লেস করা যাবে? গেলে তা কতটুকু করা যাবে? এবং এই ধারনাকে বাস্তবায়ন করতে গিয়েই আমরা পরিচিত হই ডেটা-সায়েন্স, মেশিন লার্ণিং, ডিপ লার্নিং, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং এরকম আরও অনেক নিত্য নতুন কম্পিউটার সায়েন্সের ফিল্ডের সাথে।

শুধু কম্পিউটার সায়েন্সের বললে ভুল হবে। এর পরে যুক্ত হয়েছে ম্যাথমেটিকস, প্রোবাবিলিটি, স্ট্যাটিসটিকস, এমনকি পদার্থবিজ্ঞান, চিকিৎসা এবং মহাকাশ বিজ্ঞানও। সব মিলিয়ে এখন আমাদের কম্পিউটার সায়েন্সের সবচেয়ে বড় রিসার্চ এরিয়া হল এই ডেটা-সায়েন্স। আর মেশিন লার্ণিং হলো এর আরেকটি শাখা-প্রশাখা। আজকে আমরা জানবো কিভাবে একজন রিসার্চ শুরু করতে পারবে এবং রিসার্চের ফিল্ড হিসেবে মেশিন লার্ণিং কিভাবে শিখবে।

রিসার্চ কোথা থেকে শুরু করবো?
রিসার্চ এবং মেশিন লার্ণিং সম্পর্কে অল্প কিছু হলেও জানে এবং অনেক বেশি ইন্টারেস্ট আছ, এমন যে কেউ আমার এই লেখা থেকে উপকৃত হতে পারে। রিসার্চ এবং মেশিন লার্নিং শেখার জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে অনেক অনেক ম্যাথ বা প্রোগ্রামিং, কোনোটাই দরকার হবেনা। শুধুমাত্র ইচ্ছা এবং আশক্তি থাকলেই শুরু করতে পারবে এবং পরবর্তী কোনো সময়ে প্রয়োজন অনুযায়ী কোনো স্কিল জেনে নিতে হবে।

এই লেখায় আমি আর নতুন করে রিসার্চ কি বা কেন, বিস্তারিত কিছু বলবো না। এই প্রশ্নগুলোর উত্তরে, রিসার্চের টপিক সিলেকশন থেকে শুরু করে রিসার্চ পেপার পাবলিশ করা পর্যন্ত সম্পূর্ণ গাইডলাইন নিয়ে একটা অনলাইন ফ্রি হ্যান্ডবুক লিখেছি- হতে চাই ক্ষুদে গবেষক

রিসার্চ শুরু করার আগে আমি এই হ্যান্ডবুকটি এক থেকে দেড় ঘন্টা সময় নিয়ে পড়ে শেষ করতে বলবো। তাহলেই অনেক প্রশ্নের উত্তর এবং রিসার্চ কিভাবে শুরু করতে হবে সবই জানা হয়ে যাবে।

মেশিন লার্ণিং কিভাবে শিখবো?
আমি আগেই বলেছি মেশিন লার্ণিং শুরু করতে অনেক বেশি ম্যাথমেটিকস দরকার হবেনা। এরপরেও তিন টাইপের ম্যাথমেটিকস সম্পর্কে বেসিক ধারণা থাকলে ভালো হয়- লিনিয়ার অ্যালজেবরা, ক্যালকুলাস এবং প্রোবাবিলিটি-স্ট্যাটিসটিকস। এজন্য নিচের রিসোর্সগুলো ফলো করা যেতে পারে-

লিনিয়ার অ্যালজেবরার জন্যঃ
Essence of linear algebra (by 3Blue1Brown)
ক্যালকুলাসের জন্যঃ
Essence of Calculus (by 3Blue1Brown)
প্রোবাবিলিটির জন্যঃ
Referance book (3rd Chapter, by Goodfellow)
প্রোপার ইন্টারেস্ট থাকলে এবং সময় দিলে এই তিন টাইপের ম্যাথমেটিকস সম্পর্কে উপরের লিংক থেকে ধারণা নিতে ১ সপ্তাহের বেশি সময় প্রয়োজন হবে না।

এরপরই আমি বলবো মেশিন লার্ণিং বেসিক এবং অ্যালগোরিদমগুলো জানতে হলে নিচের অনলাইন কোর্সটি, কোর্সইরা থেকে ফ্রিতে শুরু করতে-

ইন্ট্রোডাকশন টু মেশিন লার্ণিং
Coursera ML course (by Andrew Ng)
স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এই কোর্স সম্পর্কে আর নতুন করে বলার কিছু নাই। ইনস্ট্রাক্টর এখানে একদম জিরো থেকে আপনাকে মেশিন লার্ণিং এর হিরোতে রূপান্তরিত করবে। বেসিক বিল্ড করার জন্য এরচেয়ে কার্যকরী কোর্স দ্বিতীয়টি আমার চোখে পড়েনি।

কিন্তু এই কোর্সটি পুরাতন হওয়ায় কিছু ট্রিকসস ফলো করতে হবে। এখানে অ্যালগোরিদমগুলো ইমপ্লিমেন্টেশনের জন্য ম্যাটল্যাব-অকটেভ রিকমেন্ড করা হয়েছে। আমরা করার সময় এই কাজগুলোই পাইথনে প্র্যাকটিস করবো।

এই কোর্সটির ৬ থেকে ৭ টি উইক শেষ হলেই বেশ কিছু টেকনিকস এবং প্রসিডিউর সম্পর্কে জানা যাবে। এর পরেই কিছু রিয়েল ডেটাসেট ইন্টানেটে সার্চ দিয়ে সেগুলোর উপর এপ্লাই করা শিখতে হবে। এবং এভাবে প্রতিটা উইকের পর হাতেকলমে কিছু কাজ করার মাধ্যমে কোর্সটি শেষ করা উচিৎ।

ডেটাসেট সার্চ করার মাধ্যমঃ https://toolbox.google.com/datasetsearch
এই লেখাটি অনেক ছোট করতে চেয়েছিলাম, এরপরও মোটামুটি বড় হয়ে গেছে। আর বেশি কিছু লিখবো না। সর্বশেষ একটি গিট রিপোজিটরী শেয়ার করছি, যেখানে এমন টাইপ আরও অনেক রিসোর্স একত্রিত করা আছে- https://github.com/Sanzidikawsar/resourcemarks

আশা করি রিসোর্সগুলো আগ্রহীদের, এই ফিল্ডে কাজ শুরু করতে উপকারে আসবে।

আমার ব্লগের মূল পোস্টঃ https://blog.sanzidscloud.com/2019/09/28/researchnml/

52
আলাপচারিতা একটি শিল্প, যেমনটি আমরা শিল্প হিসেবে দেখি চিত্রকলা, আলোকচিত্র কিংবা চারুশিল্পকে। আপনি যখন নতুন কারোর সাথে পরিচিত হচ্ছেন, আলাপ শুরু করছেন, তাতে একটি বন্ধন তৈরী হচ্ছে। আর এই বন্ধন কতটুকু শক্ত বা মজবুত হবে সেটা অনেকটাই নির্ভর করে তার সাথে আপনার কথোপকথনের উপর। আলাপচারিতা একটি আকর্ষণ, এটি নিজেকে অন্যের কাছে উপস্থাপন করার একটি অনন্য কৌশল। আলাপচারিতাই পারে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে, এই আলাপচারিতাই হতে পারে যুদ্ধের কারন।

চিন্তা করে দেখুন, আপনার চারপাশের প্রতিটি মানুষ আপনার পূর্ব-অপরিচিত, যতক্ষন পর্যন্ত না আপনি তাদের সাথে প্রথম কথোপকথন সম্পন্ন করেছেন। আপনার কাছের বন্ধু, বাড়ির পাশের মুদি দোকানদার, ট্যাক্সি-চালক এমনকি আপনার স্ত্রী এবং পিতা-মাতা! তাই আলাপচারিতা এবং প্রথম কথোপকথন অনেক গুরুত্ব বহন করে, এবং এটি হওয়া চাই একটু ভিন্নধর্মী ও চিন্তাপ্রসূত। চলুন দেখে নেই তা কিভাবে-

১. ছোট কিছু দিয়ে শুরু করুন
নতুন কারোর সাথে পরিচিত হওয়া, কথা বলা, অভিব্যক্তি প্রকাশ করা- এই সবকিছুই আপনাকে নতুন কিছু খুজে নেয়ার সুযোগ তৈরি করে দেয়। নতুন কারোর সাথে পরিচিত হতে যাচ্ছেন, এর মানে আপনি নতুন কোনো গল্প জানবেন, নতুন কিছু জ্ঞান আহরণ করবেন এমনকি পেয়ে যেতে পারেন আপনার জীবনের সবচেয়ে কাছের কোনো মানুষকে। এই নিয়ে অনেকের মধ্যে অনেক ভয় বা চিন্তা কাজ করে। তাই চিন্তা না করে কিছু একটা বলে ফেলুন, ছোট কিছু দিয়ে আপনিই শুরু করুন আলাপচারিতা।

ইংরেজিতে যেমন হাই/হ্যালো দিয়ে শুরু করাটা সুন্দর অভিব্যক্তি প্রকাশ পায়, তেমনি বাংলায়ও এরকম কিছু বলে কারোর সাথে কথা বলা শুরু করতে পারেন। মুসলিমরা অপর মুসলিমকে সালাম বিনিময় করে বা অন্য ধর্মের হলে তাদের ধর্মীয় সম্বোধন দ্বারা কথা বলা শুরু করাটা খারাপ না।

মনে রাখবেন, প্রথম দিকে আপনি যে কথাগুলো বলবেন তা অপরজনের কাছে আপনার গুরুত্ব তৈরি করবে এবং পরবর্তী কথোপকথনের আগ্রহকে প্রশস্ত করবে।

২. তার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করুন
কেমন আছেন, কি অবস্থা..? এসব ছোটছোট প্রশ্ন জিজ্ঞেস করার পরপরই আপনার সাথেরজনকে তার ব্যাপারে আরও কিছু জিজ্ঞেস করতে পারেন। হতে পারে সেটা তার ব্যাক্তিগত কোনোকিছু সম্পর্কে। এক্ষেত্রে তার নাম শোনার পর, তার নামটি সম্পর্কে কিছু বলতে পারেন। জিজ্ঞেস করতে পারেন এই সুন্দর নামটি তার কে দিয়েছে, তার নামের অর্থ কি বা অন্য কোনো ডাক নাম আছে কিনা।

আমার ক্ষেত্রে আমি জানার চেষ্টা করি তার বর্তমান জায়গা সম্পর্কে। সে এখানে কতদিন ধরে বসবাস করছে, কার সাথে থাকে, এসব। অথবা জিজ্ঞেস করতে পারেন তার এখানে আসার পেছনের কোনো গল্প সম্পর্কে।

আপনি এভাবে শুরু করুন, দেখবেন আপনার সাথে তার আলাপ বেড়েই যাচ্ছে। নতুন পরিচিত হওয়ার সময় অপরজন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আপনার কাছে প্রশ্ন আশা করবে, তাই তাকে প্রশ্ন করুন। কিছুক্ষণ পর দেখবেন সেও আপনাকে প্রশ্ন করা আরম্ভ করেছে।

৩. অন্যের ভাষ্যকে সম্মতি দিন
: আমার বাড়ি কুমিল্লা

: কুমিল্লা! কুমিল্লার লোকজন তো বেশিরভাগই ভালো হয় না।

দয়া করে এই টাইপের কথা বলবেন না। অন্যের সামনে কথা বলার সময় যতটা সম্ভব নেগেটিভিটি পরিহার করতে হবে। আপনি কোনো কিছু সম্পর্কে বলার আগে পজিটিভ কিছু খুজে বের করবেন এরপর সেটি তাকে বলবেন। এতে করে সে আপনাকে সহজে আপন ভাবতে পছন্দ করবে।

তার সাথে আপনার কিছু মিল খুজে বের করতে চেষ্টা করুন এবং সেটা তাকে বলুন। হতে পারে সে শীতকাল পছন্দ করে আর আপনিও, আপনার পুরান ঢাকার খাবার ভালো লাগে আর তারও।

তার কোনো ব্যাপারে আপনার বিরোধ থাকলে সেটির গঠনমূলক সমালোচনা করুন। আর প্রথম আলাপে যতটুকু সম্ভব তাকে সম্মতি দিতে চেষ্টা করুন। তার সবকিছুতে সংক্ষিপ্ত প্রসংশা করুন। এতে করে তার কাছে আপনার গ্রহণযোগ্যতা বেড়ে যাবে।

৪. ব্যতিক্রম কিছু বলে প্রশংসা করুন
মানুষ হয়তো ভুলে যাবে আপনি কি করেছেন, আপনি কি বলেছেন। কিন্তু ভুলবেনা আপনি তাকে কেমন অনুভব করিয়েছেন, যেটা সে ফীল করেছে। তাই তাকে ভিন্ন কিছু অনুভুতি পাওয়াতে চেষ্টা করুন।

ধরুন কোনো সুপার-ডুপার টিভি মডেল আপনার এলাকায় বেড়াতে এসেছেন। আপনি তাকে দেখে বললেনঃ ওয়াও! আপনি কত সুন্দর, আপনার সবগুলো অভিনয় আমি দেখেছি। কিন্তু বিনিময়ে তার কাছে তেমন কোনো প্রতিউত্তর আপনি পাবেন না।

কেন, জানেন? কারন সে সুন্দর, ভালো অভিনয়.. এইসকল কথা আর প্রশংসা হাজার বার শুনেছে এবং শুনতে শুনতে খুবই অভ্যস্ত। তাই এইসকল কথা তার মনে তেমন কোনো দোলা দেয়নি।

তাই একটু ভিন্নভাবে কারোর প্রশংসা করতে শিখুন। এরজন্য মিথ্যা বলতে হবে তা না। এটা হতে পারে এমন- আপনার হাসিটা সুন্দর, দেখলে মনে হয় আপনার চোখও হাসছে। আপনার কপালের দিকে তাকালেও মনেহয় হাস্যোজ্জল একটি অংশ। দেখবেন সে আপনার এই কথাটা পছন্দ করেছে এবং আপনাকে মনেও রেখেছে।

৫. অপরজনের মতামত শুনুন
প্রতিটি মানুষ তার কাছে কোনো ব্যাপারে পরামর্শ বা মতামত নেয়া হোক- এটা সে পছন্দ করে। তাই তাকে কোনো ব্যাপারে মতামত প্রকাশ করতে বলুন।

এমন না যে আপনি তাকে ইরাক-আফগানিস্তানের পারমাণবিক সম্পর্ক নিয়ে তার মতামত জিজ্ঞেস করবেন, যেটাতে সে বিব্রত হতে পারে বা জানা না থাকতে পারে। তাকে জিজ্ঞেস করতে পারেন সে সর্বশেষ কোন মুভিটা দেখেছে, সেটা কেমন ছিল, তার কাছে কেমন লেগেছে। এরকম টাইপ মতামত।

৬. অন্যমনষ্ক হবেন না
অপরজন যখন আপনাকে কিছু সম্পর্কে বলবে বা মতামত প্রকাশ করবে, তখন তার কথা মনযোগ দিয়ে শুনুন। অন্যমনষ্ক হয়ে কথা শুনবেন না বা কথা বলবেন না।

এমন যেন না হয় যে- আপনি ডেস্কে বসে কথা বলছেন, আপনার সামনে আপনার ল্যাপটপ আর আপনি সেটার দিকে তাকিয়ে আপনার পাশেরজনকে বললেন, “আপনি বলুন, আমি শুনছি”। প্রথম সাক্ষাৎে কাওকে এমন কখনো বলবেন না যে আপনি একসাথে অনেকগুলো কাজ করতে পারেন। বা আপনার ওয়াইফাই পাসওয়ার্ড কি?

তার প্রতিটি কথায় আপনি প্রত্যক্ষ উপস্থিত থাকুন, এবং চোখাচোখি করুন। মনে রাখবেন, আপনি শোনার জন্য শুনবেন, জবাব দেয়ার জন্য না।

৭. নাম, স্থান, পছন্দ সম্পর্কে ধারনা রাখুন
কারোর সাথে প্রথম সাক্ষাৎে যদি তার পছন্দের কিছু বিষয় জেনে নিতে পারেন এবং পরবর্তী সময়ে সেগুলো সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন, সে স্বভাবতই খুশি হয়ে যায়। এমন কি অনেকদিন পর তার সাথে দেখা হওয়ার পর তার পোষা প্রাণিটির নাম বলে জিজ্ঞেস করলেন সে কেমন আছে, এভাবে তাকে তাক লাগিয়ে দিতে পারেন।

তার নাম, পছন্দের জায়গা, পোষা প্রাণি, পছন্দের খাবার বা অন্য কোনোকিছু মনে রাখার চেষ্টা করুন। পারলে প্রথম সাক্ষাতের আগে তার সম্পর্কে টুকিটাকি কিছু বিষয় জেনে যাবেন।

এভাবেই নতুন যে-কারোর সাথে শুরু করতে পারেন আলাপচারিতা। ডুবে যেতে পারেন গভীর কোনো কথার সাগরে।

খেয়াল করুন, আলাপচারিতা হলো একটি বইয়ের মতো। এর আছে আলাদা আলাদা পেইজ, চ্যাপ্টার এবং আপনি চাইলেই উল্টিয়ে পাল্টিয়ে দেখতে পারবেন, জানতে পারবেন অনেক কিছু।

নতুন নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হচ্ছেন মানে আপনি একটি নতুন বই পড়ছেন, প্রতিটি মানুষ একেকটি বই। আর এই পৃথিবীটা হলো একটি সুন্দর, গোছানো বইয়ের লাইব্রেরী।

আমার ব্লগের মূল লেখাঃ https://blog.sanzidscloud.com/2019/08/07/7technics/
© কৌশলগুলো মালভিকা নামের একজন রেডিও জকি’র টেড-টক থেকে পয়েন্টিং করা।

Pages: 1 2 3 [4]