Daffodil International University
Faculty of Allied Health Sciences => Nutrition and Food Engineering => Topic started by: saima rhemu on July 03, 2018, 04:54:33 PM
-
আমরা যখনি ক্যালরির কথা চিন্তা করি বেশিরভাগ সাধারণ মানুষই মনে করি কোন খাবারে কত বেশি ফ্যাট আছে। ক্যালরি মানেই যেন ওজন বৃদ্ধি। কিন্তু ডাক্তারি ভাষায় এটি হল আমাদের শক্তি যোগানোর উৎস। আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তির চেয়ে যদি বেশি নিয়ে নেই, তাহলে ওজন বাড়বে এবং যদি কম নেই তাহলে ওজন কমতে থাকবে, সাথে সাথে মাসেল এর জোরও। তাই প্রত্যেককেই ডাক্তারের দেয়া একটি ডায়েট চার্ট মেনে চলা উচিত। আজকে চলুন সাধারণত একটি মানুষের কতটুক ক্যালরি ও নিউট্রিশন গ্রহণ করা উচিত তা নিয়ে একটু কথা বলি।
আমরা যে টাইপ ও পরিমাণের খাবার খাই তা সাধারণত নির্ধারণ করে আমাদের গ্রহণকৃত ক্যালরির পরিমাণ। আবার কখন ও কিভাবে আমরা খাবারটা খাচ্ছি তাও কিন্তু অনেক পরিমাণ ভূমিকা রাখে। সাধারণত একজন প্রাপ্তবয়স্ক মহিলার প্রতিদিন ১৬০০-২৪০০ ক্যালরি গ্রহণ করা উচিত আর পুরুষদের ২০০০-৩০০০ ক্যালরি। একটি বাচ্চার ক্যালরি ইনটেক প্রতিদিন ১০০০ ক্যালরি, ১৬-১৮ বয়স যাদের, তাদের ৩২০০ ক্যালরি ও বয়স ১৯-২৫ যাদের তাদের জন্য ২০০০-২২০০ ক্যালরি। সাধারণত যত বয়স বাড়তে থাকে ক্যালরির প্রয়োজন তত কমতে থাকে কারণ বয়স বাড়ার সাথে সাথে শরীরের মেটাবলিজম কমতে থাকে।
ক্যালরি সংক্রান্ত কিছু তথ্য-
– একজন মানুষের ক্যালরি ইনটেক তার বয়স, উচ্চতা, লিঙ্গ ও শরীরের অবস্থা ও লাইফ স্টাইলের উপর নির্ভর করে।
– সকালে ভারী খাবার গ্রহণ শরীরের ওজন ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
– একটি ৫০০ ক্যালরির সবজি আর ফলমূলের খাবারের মেন্যু অন্য আরেকটি একই পরিমাণ ক্যালরির স্ন্যাকস জাতীয় খাবার থেকে অনেক গুণমানসম্পন্ন ও শরীরের খাবারের চাহিদা অনেকক্ষণ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারে।
– দিনে একসাথে অনেক খাবার না খেয়ে সারাদিনে অল্প অল্প করে খাওয়া উচিত, এতে করে অতিরিক্ত খাবার খাওয়া হবে না এবং অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি পাবে না।
এবার আসি প্রতিদিন আমাদের কি কি খাবার ও নিউট্রিশন গ্রহণ করা উচিত তা নিয়ে ছোট একটি আলোচনায়। একটি ব্যালেন্সড ডায়েট আমাদের প্রত্যেকের শরীরের জন্য অপরিহার্য। এটিই ঠিক করে আমরা প্রতিদিন কতটুকু শক্তি গ্রহণ করছি আমাদের শরীরের চাহিদা অনুযায়ী। সাধারণত একজন মানুষের প্রতিদিনকার খাবারের তালিকায় যা যা থাকা উচিত তা হল-
১) ফল- সিজনাল ফলমূল খাবারের তালিকায় রাখা অনেক জরুরী। ফলে প্রাকৃতিকভাবেই চিনি থাকে যা আমাদের শরীরের চিনির চাহিদা মেটায়। যেসব খাবারে প্রক্রিয়াজাতকৃত চিনি থাকে, সেসব খাবার না খেয়ে ফল বা ফলের জুস খেতে পারেন।
২) শাকসবজি- শাকসবজিতে থাকে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন আর মিনারেলস। প্রতিদিন প্রতিবেলার খাবারের তালিকায় আমাদের অনেক পরিমাণে সবুজ শাকসবজি রাখা উচিত। যেমন- পালং শাক, ব্রকলি, শিমের বিচি, বাধাকপি, ফুলকপি ইত্যাদি। মোটকথা যে মৌসুমে যে সবজি পাওয়া যায় সবই খাওয়া উচিত।
৩) শস্য জাতীয় খাবার- এসব খাবারের তালিকায় রাখা উচিত হোল-গ্রেন খাবার। বাজারে যে কোন রকম সিরিয়াল, পাস্তা, ব্রাউন রাইস, ওটমিল, গমের আটা ইত্যাদি। সাদা আটা এড়িয়ে যাওয়াই ভাল কারণ এতে নিউট্রিশনের পরিমাণ খুবই কম থাকে।
৪) প্রোটিনযুক্ত খাবার- মাংস, মাছ, বিনস-এ এসবে প্রোটিন প্রচুর পরিমাণে বাদামও প্রোটিনের অনেক ভালো একটি উৎস। ওয়ালনাট, কাঠবাদাম, চিনাবাদাম কিছু উদাহারণ।
৫) ডেইরি বা দুধ জাতীয় খাবার- এসব খাবার ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম-এর চাহিদা মিটায়। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে এতে ফ্যাটও আছে। তাই খেলেও অল্প পরিমাণ ও ফ্যাট ফ্রী দুধ, দই খাওয়া উচিত।
৬) তেল- লো ফ্যাট জাতীয় তেল আমাদের প্রতিদিনকার খাবারের জন্য অনেক প্রয়োজন। ভোজ্য তেল হিসেবে রাইস ব্র্যান অয়েল, অলিভ অয়েল ব্যবহার করুন। ভোজ্য তেল কেনার সময় তেলের গায়ে লেবেল পড়ে নিন। এক্ষেত্রে সাফোলা একটিভ অয়েল কিনে দেখতে পারেন। এতে ওরাইযেনল ও ওমেগা ৩ আছে যা খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে ওজন ঠিক রাখতে সাহায্য করে। ৮০% রাইস ব্র্যান অয়েল ও ২০% সয়াবিন অয়েল-এর সমন্বয়ে তৈরি বলে এটি একটি স্বাস্থ্যকর ভোজ্য তেল হিসেবে স্বীকৃত।
এভাবেই আমরা প্রতিদিনের খাবার গ্রহণের সময় এসব তথ্য মাথায় রাখলে থাকতে পারি সুস্থ, সবল ও প্রাণোজ্জ্বল। ভাল থাকুন এবং স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করুন।
-
good
-
Thanks