Daffodil International University

Faculties and Departments => Allied Health Science => Topic started by: 710002189 on September 05, 2020, 11:56:30 PM

Title: মাথাব্যথা
Post by: 710002189 on September 05, 2020, 11:56:30 PM
মাথাব্যথা নিয়ে প্রচলিত কথাটা অনেকের জানা, মাথা থাকলে মাথাব্যথা থাকবেই! জীবনে মাথাব্যথা হয়নি, এমন মানুষ বিরল। ৯৫ শতাংশের ক্ষেত্রে মাথাব্যথার কারণ প্রাথমিক পর্যায়ের, যার মধ্যে মাইগ্রেন অন্যতম। সারা বিশ্বে প্রায় ১৫ শতাংশ মানুষের মাথাব্যথা মাইগ্রেনজনিত। শিক্ষা ও কর্মস্থলে অনুপস্থিতি এবং কর্মক্ষমতা হ্রাসের জন্যও মাইগ্রেন অনেকাংশে দায়ী।
মাইগ্রেন কী? কেন হয়?
মাইগ্রেন বিশেষ ধরনের দীর্ঘমেয়াদি মাথাব্যথা। গ্রিক ‘হেমিক্রেনিয়া’ শব্দ থেকে এর উৎপত্তি, যার অর্থ আধকপালি ব্যথা। তবে এতে মাথার দুপাশেই ব্যথা হতে পারে। এ ছাড়া ব্যথার সঙ্গে অন্যান্য স্নায়বিক উপসর্গ থাকতে পারে। মাইগ্রেনের প্রকৃত কারণ এখনো জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হয়, সেরোটোনিন ও সিজিআরপি নামের রাসায়নিকের প্রভাবে মস্তিষ্কের বহিরাবরণের রক্তনালির অস্বাভাবিক প্রসারণ ঘটে এবং সংলগ্ন ট্রাইজেমিনাল নার্ভ উদ্দীপ্ত হয়। এর ফলে মাথাব্যথা শুরু হয়।
 
কাদের বেশি হয়?
মাইগ্রেন সাধারণত বংশগত ও পরিবেশগত কারণে হয়ে থাকে। ১৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সে এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি। বয়ঃসন্ধিকালের পর পুরুষের চেয়ে নারীদের আক্রান্ত হওয়ার হার তিন গুণ। বিশেষত মাসিকের সময় এটি বাড়ে। অনেক সময় শিশুরা বা বয়স্ক লোকজনও এতে আক্রান্ত হতে পারেন। যদিও বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মাইগ্রেনের প্রকোপ কমে যায়।
কী কী কারণে মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হতে পারে?
•   অনিদ্রা, অতিরিক্ত ঘুম বা ঘুমের সময় পরিবর্তন।
•   অতিরিক্ত শারীরিক ও মানসিক চাপ।
•   দীর্ঘ ভ্রমণ, আবহাওয়ার পরিবর্তন।
•   অতি উজ্জ্বল আলো, উচ্চ শব্দ, তীব্র সুগন্ধি।
•   দীর্ঘ সময় টেলিভিশন দেখা, কম্পিউটার বা মুঠোফোন ব্যবহার।
•   চকলেট, পনির, কফি, অ্যালকোহল, টেস্টিং সল্ট অতিমাত্রায় গ্রহণ।
•   অনিয়মিত আহার, কোষ্ঠকাঠিন্য।
•   জন্মবিরতিকরণ পিল ও নাইট্রেট-জাতীয় ওষুধ সেবন ইত্যাদি।
যেভাবে বুঝবেন মাইগ্রেন হয়েছে
মাইগ্রেন রোগীদের মাথাব্যথার কিছু সুনির্দিষ্ট লক্ষণ থাকে। দুই-তৃতীয়াংশ রোগীর ক্ষেত্রে নিচের লক্ষণগুলো পাওয়া যায়, যা ‘কমন মাইগ্রেন’ নামে পরিচিত।
•   সাধারণত আধকপালি মাথাব্যথা।
•   মাথা দপদপ করা।
•   মাঝারি থেকে তীব্র মাথাব্যথা।
•   বারবার মাথাব্যথা হওয়া।
•   বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
•   আলো বা শব্দ সহ্য করতে না পারা।
•   পরিশ্রমে ব্যথা বেড়ে যাওয়া।
•   ব্যথার স্থায়িত্বকাল ৪ থেকে ৭২ ঘণ্টা।
এক-তৃতীয়াংশ রোগীর এসব বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে মাইগ্রেনের কিছু পূর্বলক্ষণ থাকতে পারে। ব্যথা শুরুর আগে রোগীর দৃষ্টিবিভ্রম বা চোখের সামনে আলোর ঝলকানি হতে পারে। কখনো কখনো মুখে বা হাতে-পায়ে ঝিমঝিম অনুভূতি অথবা কথা বলতে অসুবিধা হয়, যা ‘ক্ল্যাসিক্যাল মাইগ্রেন’ নামে পরিচিত।
এর বাইরেও মাইগ্রেন রোগীদের বিরল কিছু উপসর্গ পরিলক্ষিত হতে পারে; যেমন মাথাব্যথা চলাকালে দৃষ্টিশক্তি লোপ পাওয়া (রেটিনাল মাইগ্রেন), মাথা ঘোরানো ও ভারসাম্যহীনতা (ব্যাসিলার মাইগ্রেন), শরীরের এক পাশ অবশ হয়ে যাওয়া (হেমিপ্লেজিক মাইগ্রেন), শিশুদের ক্ষেত্রে প্রায়শই পেটব্যথা ও বমি করা (অ্যাবডোমিনাল মাইগ্রেন) ইত্যাদি।
পরীক্ষা-নিরীক্ষা কতটুকু প্রয়োজনীয়?
সাধারণত বিশেষ কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হয় না। সঠিক বিস্তারিত ইতিহাস এবং শারীরিক লক্ষণ বিশ্লেষণ করেই মাইগ্রেন শনাক্ত করা যায়। তবে যদি মাথাব্যথার ধরন হঠাৎ পরিবর্তিত হয় অথবা সব সময় মাথার একই স্থানে ব্যথা হয় কিংবা মারাত্মক কোনো স্নায়বিক উপসর্গ, যেমন অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, খিঁচুনি বা হাত-পা অবশ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি দেখা যায়, সে ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা, যেমন মাথার সিটি স্ক্যান বা এমআরআই করে জটিলতা আছে কি না, তা যাচাই করতে হবে।
মাইগ্রেনের চিকিৎসা কী?
মাইগ্রেনের চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি এবং রোগীর অবস্থা অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন হয়। জীবনযাপনের ধরন পরিবর্তন ও নিয়মিত ওষুধ সেবন রোগ নিরাময় ও নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মূলত দুই ধরনের ওষুধ ব্যবহার করা হয়; ব্যথানাশক ও প্রতিরোধক। মাথাব্যথা শুরু হলে প্যারাসিটামল, এসপিরিন, ডাইক্লোফেনাক, আইবুপ্রোফেন-জাতীয় ওষুধ সেবন করা যেতে পারে। বমিভাব কমানোর জন্য মেটোক্লোপ্রামাইড, ডমপেরিডন-জাতীয় ওষুধ কার্যকর। এতেও মাথাব্যথা না কমলে চিকিৎসকের পরামর্শে নানা ওষুধ সেবন করা যাবে। এসব ওষুধের নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে, তাই পরামর্শ ছাড়া গ্রহণ করবেন না। যাঁদের বারবার মাথাব্যথার কারণে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়, তাঁদের জন্য প্রতিরোধকারী কিছু ওষুধ আছে। দীর্ঘমেয়াদি মাইগ্রেন রোগী, যাঁদের ক্ষেত্রে ওষুধ কম কার্যকর, তাঁরা মেডিটেশন, যোগব্যায়াম, আকুপাংচার ইত্যাদিতে উপকার পেতে পারেন। এ ছাড়া বোটুলিনাম টক্সিন, সিজিআরপি মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি ও ‘সেফালি’ নামক ডিভাইস মাইগ্রেন চিকিৎসায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
 
মাইগ্রেন প্রতিরোধে
•   যেসব কারণে মাইগ্রেন ব্যথা শুরু হয়, সেগুলো শনাক্ত করুন ও এড়িয়ে চলুন। প্রয়োজনে মাথাব্যথার লক্ষণ উল্লেখসহ একটি ডায়েরিতে লিপিবদ্ধ করুন।
•   প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ও পরিমিতভাবে আহার করবেন ও ঘুমাবেন।
•   তীব্র অথবা কম আলোতে কাজ করবেন না। কড়া রোদ ও তীব্র ঠান্ডা পরিহার করুন।
•   উচ্চ শব্দ ও কোলাহলপূর্ণ পরিবেশ এড়িয়ে চলুন।
•   অনেক সময় ধরে কম্পিউটার, টিভি বা মুঠোফোন ব্যবহার করবেন না।
•   প্রতিদিন নিয়মিত হালকা ব্যায়ামের অভ্যাস করুন।
•   বেশি বেশি পানি পান করুন। সবুজ ও হলুদ শাকসবজি, আলু, খেজুর, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি-সমৃদ্ধ খাবার নিয়মিত খান।
•   মাথাব্যথা শুরু হলে অন্ধকার ও নীরব কোনো কক্ষে বিশ্রাম নিন এবং প্রয়োজনে মাথায় বরফের প্যাক বা ঠান্ডা কাপড় জড়িয়ে রাখুন।

Source: https://www.prothomalo.com/feature/pro-health/%E0%A6%89%E0%A6%AB-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A5%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%A5%E0%A6%BE
Title: Re: মাথাব্যথা
Post by: Raisa on September 25, 2020, 06:45:30 PM
thank you