Daffodil International University

Help & Support => Common Forum/Request/Suggestions => Topic started by: ashraful.diss on May 16, 2022, 03:04:13 PM

Title: যদি ঈমানদার হও, তাহলে সকল অঙ্গীকার পূরণ করো — আল-মায়িদাহ ১
Post by: ashraful.diss on May 16, 2022, 03:04:13 PM
যদি ঈমানদার হও, তাহলে সকল অঙ্গীকার পূরণ করো — আল-মায়িদাহ ১

নিচের এই আয়াতটি আমাদের বড় করে প্রিন্ট করে কম্পিউটারের সামনে, অফিসের দেওয়ালে দেওয়ালে, ট্রাফিক সিগন্যালের উপরে ঝুলিয়ে রাখা দরকার—

(https://quranerkotha.com/wp-content/uploads/2013/12/5_1_frame.jpg)

আমরা অনেক মুসলিমরাই, কোনো এক বিশেষ কারণে আমাদের অঙ্গীকারগুলোর ব্যাপারে খুবই উদাসিন। অফিসে গেলে যাই দশ মিনিট দেরি করে: ট্রাফিক জ্যামের অজুহাত দেখিয়ে, কিন্তু বের হওয়ার সময় ঠিকই বের হই আধা ঘণ্টা আগে। অথচ চাকরিতে যোগ দেওয়ার সময় কন্ট্রাক্টে সাইন করেছি: সপ্তাহে কমপক্ষে ৫৬ ঘণ্টা কাজ করব, ৮-৪টা অফিসের সময় মেনে চলব। যুহরের নামাযের সময় আধা ঘণ্টার বিরতির জায়গায় এক ঘণ্টা বিরতি নেই, এই মনে করে: আল্লাহর تعالى জন্য আধা ঘণ্টা বেশি বিরতি নিচ্ছি, এটা তো সওয়াবের কাজ! মাস শেষে বিদ্যুতের, পানির বিল দেওয়ার আগে মিস্ত্রি ডেকে মিটারের রিডিং কমিয়ে দেই। ট্যাক্স দেওয়ার সময় চেষ্টা করি: বিভিন্নভাবে মূল বেতনের পরিমাণকে কমিয়ে, নানা ধরনের বেনিফিট হিসেবে দেখানোর, যাতে করে কম ট্যাক্স দিতে হয়। কর্মচারীদের বেতন দেওয়ার সময় সুযোগ খুঁজি তাদের কাজে বিভিন্ন ত্রুটি দেখিয়ে কতভাবে বেতন কাটা যায়। ঘণ্টা হিসেবে কন্ট্রাক্টে কাজ করার সময় চেষ্টা করি যত বেশি সম্ভব ঘণ্টা দেখিয়ে বেশি করে ক্লায়েন্টকে বিল পাঠানোর। কারও সাথে দেখা করার সময় ঠিক করি সকাল দশটায়, কিন্তু দেখা করতে যাই এগারটায়। উঠতে বসতে আমরা অঙ্গীকার ভাঙছি।

কোনো এক অদ্ভুত কারণে মুসলিমদের ‘দুই নম্বর স্বভাবের জাতি’ হিসেবে পৃথিবীতে ব্যাপক বদনাম হয়ে গেছে। মুসলিমদের সাথে ব্যবসা করতে অমুসলিমরা তো দূরের কথা, মুসলিমরা পর্যন্ত ভয় পায়। বরং উল্টো অনেক মুসলিমরাই চেষ্টা করে হিন্দু বা খ্রিস্টান কাউকে ব্যবসায় পার্টনার বানানোর, না হলে অন্তত একাউন্টেন্টের দায়িত্বটা দেওয়ার। অথচ আল্লাহ تعالى কু’রআনে কমপক্ষে তিনটি আয়াতে খুব কঠিনভাবে আমাদেরকে সব ধরনের চুক্তি, কন্ট্রাক্ট, অঙ্গীকার, আইন মেনে চলার জন্য বারবার আদেশ করেছেন।

হে বিশ্বাসীরা, তোমরা সকল অঙ্গীকার পূর্ণ কর। …  [৫:১]

… তোমাদের অঙ্গীকার পূর্ণ কর। নিশ্চয়ই তোমাদেরকে অঙ্গীকারের ব্যপারে জিজ্ঞেস করা হবে। [১৭:৩৪]

… নিশ্চিত করার পরে কোনো অঙ্গীকার ভাংবেনা, কারণ তোমরা আল্লাহকে সাক্ষি করেছ। তোমরা যা কিছু করো, আল্লাহ তা জানেন। … [১৬:৯১]

মুসলিমরা যদি সত্যি ইসলাম মেনে চলত, তাহলে এত কষ্ট করে আর ইসলামের প্রচার করতে হতো না। মুসলিমদেরকে দেখে মুগ্ধ হয়ে মানুষ ইসলাম গ্রহণ করত; যেভাবে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়ার মানুষেরা ভারত এবং আরব মুসলিম বণিকদের সততা, নিষ্ঠা, দৃঢ় নৈতিকতা দেখে মুগ্ধ হয়ে ইসলাম গ্রহণ করে পরিণত হয়েছে পৃথিবীর অন্যতম মুসলিম-প্রধান দেশে।

أَوْفُوا۟ بِٱلْعُقُود একটি খুবই সাধারণ আদেশ, কিন্তু এর অর্থ ব্যাপক। আওফু হচ্ছে পূরণ করা, পরিশোধ করা, কথা রাখা, প্রাপ্য দেওয়া ইত্যাদি। উ’কুদ হচ্ছে অঙ্গীকার, চুক্তি।আওফু বিল-উ’কুদ এর অর্থ যদি এক কথায় বলা যায়, তাহলে এর মানে দাঁড়ায়—আমার কাছ থেকে নিয়ম বা অঙ্গীকার অনুসারে যা আশা করা হয়, সেটা ঠিকমতো করা। এটা ট্রাফিক লাইটে থামা, অফিসে সময় মতো ঢোকা এবং বের হওয়া থেকে শুরু করে সকল আইনগত ব্যাপার, যেমন ঠিকমতো ট্যাক্স দেওয়া, সত্য সাক্ষ্য দেওয়া, ঘুষ না নেওয়ার মতো বড় বড় ব্যাপারেও প্রযোজ্য।

যে আইন দেশের মানুষের সবার ভালোর দিকে লক্ষ রেখে নির্ধারণ করা হয়েছে এবং যে আইন কোনো মুসলিমকে পাপ করতে বাধ্য করে না—সেই আইন মানা প্রত্যেক মুসলিমের জন্য অবশ্য কর্তব্য—এই ব্যাপারে স্কলারদের মধ্যে কোনো মতবিরোধ নেই। এধরনের আইন ভাঙ্গা শারিয়াহ-এর দৃষ্টিতে হারাম—আবারও বলছি: হারাম। এতে কোনো ছাড় নেই, আইন মানতেই হবে। সেই আইন ভেঙ্গে কেউ পুলিশের কাছে ধরা না পড়লেও, কিয়ামতের দিন ঠিকই আল্লাহর تعالى কাছে ধরা পড়ে যাবে।

একটু সময় নিয়ে চিন্তা করে দেখুন: আমরা যখন ট্রাফিক সিগন্যালে না থেমে শোঁ করে গাড়ি নিয়ে পার হয়ে যাই, তখন আমরা কু’রআনের এই আয়াতটি ভাঙি, যার জন্য ট্রাফিক পুলিশের কাছে ধরা না পড়লেও, শেষ পর্যন্ত আল্লাহর تعالى সামনে দাঁড়িয়ে তার জবাব দিতে হবে। আমরা যখন তেল কেনার পর তেলের দাম বাড়িয়ে লিখে দিতে বলি, যেন কোম্পানি থেকে তেলের খরচ বাবদ বেশি টাকা তুলে নিতে পারি, তখন আমরা কু’রআনের একটি কঠিন আদেশের বিরুদ্ধে যাই। ইসলাম আমাদেরকে কত সুন্দর নৈতিকতা শিখিয়েছে, কিন্তু আমরা এই সুন্দর শিক্ষা প্রতিনিয়ত অমান্য করে শুধু নিজেরাই গুনাহ করছি না, একই সাথে মুসলিম বেশভূষা ধরে ইসলাম ধর্মের ব্যাপক বদনাম করছি।

আমাদের মতো নামে-মুসলিম, কাজে-মুনাফিকদেরকে দেখে অমুসলিমরা ধরে নেয়: “ইসলামের মতো বাজে ধর্ম আর নেই। তারা আরো বলে ,ঃ ইসলাম কী জিনিস, সেটা তো আমি এদের দেখেই বুঝতে পারছি। ইসলাম সম্পর্কে আমাদের আর না জানলেও চলবে। যা অত্যন্ত গর্হিত অন্যায় এবং গোনাহ এর কাজ