Daffodil International University

Entertainment & Discussions => Story, Article & Poetry => Topic started by: kekbabu on May 01, 2020, 05:32:26 PM

Title: কর্মহীন শ্রমজীবী মানুষের পাশে দাঁড়ান (যুগান্তর, ১ মে ২০২০)
Post by: kekbabu on May 01, 2020, 05:32:26 PM
কর্মহীন শ্রমজীবী মানুষের পাশে দাঁড়ান
  ড. কুদরাত-ই-খুদা বাবু
 ০১ মে ২০২০, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

বর্তমান সময়ে বিশ্বে সবচেয়ে আতঙ্কের নাম করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯। গোটা বিশ্ব আজ মুখ থুবড়ে স্থবির হয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের কারণে।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত বিশ্বের ২১০টি দেশ ও অঞ্চলে প্রায় ৩২ লাখ ২০ হাজার ৯৭০ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। আর এ সময় পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২ লাখ ২৮ হাজার ২৫১ জন। বাংলাদেশ করোনাভাইরাসে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৭ হাজার ১০৩ জন আর মৃত্যুবরণ করেছেন ১৬৩ জন (সূত্র : আইইডিসিআর)। সুতরাং দেখা যাচ্ছে, দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের ও মৃতের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে, যা আমাদের সবার জন্যই উদ্বেগের বিষয়। সরকারের সামাজিক বিচ্ছিন্নতার নীতি এবং করোনা আক্রান্ত মানুষকে শনাক্ত ও তাদের সংস্পর্শে যারা এসেছেন, তাদের পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা লকডাউন করার কর্মসূচি এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কিন্তু করোনা সংকট দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে যেভাবে প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে এবং দেশের অর্থনীতির ওপর দীর্ঘ মেয়াদে যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে, তা-ই এখন সবার জন্য বড় চিন্তার বিষয়।

বেশ আগে থেকেই জনস্বার্থের বিষয়টি মাথায় রেখে সরকার দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সামাজিক বিচ্ছিন্নতা বা পুরোপুরি লকডাউন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। কিন্তু এতে করে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখোমুখি হচ্ছেন দেশের অসংখ্য খেটে খাওয়া মানুষ। পরিসংখ্যান মতে, দেশে এ ধরনের মানুষের সংখ্যা দুই কোটির বেশি। করোনার ফলে এসব লোকের আয়-রোজগার এখন প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে বললেই চলে। এ অবস্থায় মধ্যবিত্ত বা নিম্ন-মধ্যবিত্তরা বোধকরি সবচেয়ে বিপদের মধ্যে রয়েছেন। কারণ তারা চক্ষুলজ্জা ও লোকলজ্জার কারণে ত্রাণ নিতেও পারছেন না; আবার এ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণও পাবেন না। এ যেন ‘না পারি কইতে, না পারি সইতে’ অবস্থার মতো। দেশের ৬৪ জেলায় ২ হাজার ৬৭৫ জন নিম্নআয়ের মানুষের মধ্যে সম্প্রতি ব্র্যাক কর্তৃক পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, মানুষের উপার্জন ও খাদ্য নিরাপত্তায় প্রভাব ফেলেছে করোনাভাইরাস। জরিপে দেখা যায়, দারিদ্র্যরেখার নিম্নসীমার নিচে নেমে গেছেন ৮৯ শতাংশ মানুষ।
আর ১৪ ভাগ মানুষের ঘরে কোনো খাবারই নেই। জরিপে বলা হয়, নিম্নআয়ের মানুষের জীবিকায় করোনাভাইরাস প্রতিরোধের পদক্ষেপের মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৮৯ শতাংশ দারিদ্র্যরেখার নিম্নসীমার নিচে নেমে গেছেন।

এখন বাস্তবতা হচ্ছে, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা বা সবকিছু বন্ধ করে দেয়ার পর থেকেই দেশের দরিদ্র ও কর্মহীন মানুষের মধ্যে এক ধরনের হাহাকার শুরু হয়েছে। আয়ের অভাবে তাদের জীবনধারণ কঠিন হয়ে পড়েছে।

সরকার সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় দরিদ্র মানুষের ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দেয়ার কথা বলেছে ও ইতোমধ্যে অনেক লোকের কাছে তা পৌঁছেও দেয়া হয়েছে- যা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। তবে দেশের বিপুলসংখ্যক হতদরিদ্র ও নিম্নবিত্ত মানুষের ঘরে খাদ্যসংকট সংক্রান্ত যেসব খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসছে, তা উদ্বেগজনক।
কোনো কোনো স্থান থেকে ‘অবরুদ্ধ মানুষ’ টেলিফোন করে জানিয়েছেন, তারা খাবারের সংকটে রয়েছেন। এরপর প্রশাসন খবর পেয়ে তাদের কাছে খাবার পৌঁছে দিয়েছে। এ ধরনের বিক্ষিপ্ত ও বিচ্ছিন্ন কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে দেশের বিপুলসংখ্যক দরিদ্র মানুষের সবার ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছানো আপাতদৃষ্টিতে সম্ভব নয়।
সরকার সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় হতদরিদ্র মানুষের কাছে খাবার পৌঁছে দেয়ার যে মহতি পরিকল্পনা নিয়েছে, তা সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হবে না; যদি দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল আত্মসাতের ঘটনা ঘটে। অথচ করোনার কারণে দেশের এ সংকটময় মুহূর্তে হতদরিদ্র ও অভাবী মানুষের কাছে খাবারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পৌঁছানো এখন জরুরি বিষয়। সরকারি গুদামে মজুদকৃত খাদ্য যেন হতদরিদ্র মানুষের কাছে সঠিকভাবে পৌঁছে, সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করা আবশ্যক। অন্যথায় মানবিক বিপর্যয়ের ভয় থেকেই যাবে। করোনা সংকট উত্তরণে সরকার সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিগুলো জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে; যাতে বেশি সংখ্যক দরিদ্র মানুষ উপকার পায়।

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল রাজনৈতিক পরিচয়ধারীরা আত্মসাৎ করলে দরিদ্র জনগোষ্ঠী উপকারভোগী হবে কীভাবে? অতীতে দেখা গেছে, রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকা এ ধরনের অপরাধীরা খুব কম ক্ষেত্রেই শাস্তি পেয়েছে। তবে এবারে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আত্মসাৎ করা চাল উদ্ধার এবং চালচোরদের গ্রেফতারের ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন অবশ্যই সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। প্রশাসন যদি সর্বদা এভাবে সক্রিয় থাকে, তবে এ ধরনের দুর্নীতিবাজ, অসাধু, ও দুর্বৃত্তরা অনেকটাই নিরস্ত হবে আর তখনই সরকারের পক্ষে দরিদ্র ও কর্মহীনদের খাবার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। তবে সব সময়ই যে তা সরকারের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা সম্ভব হবে, তা নয়। কারণ, সরকারেরও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এজন্য সমাজের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, উদ্যোক্তা, বিত্তবান, বিভিন্ন এনজিও, দাতা সংস্থা, গণমাধ্যম, সুশীল সমাজসহ নিজ নিজ অবস্থান থেকে সবারই এগিয়ে আসা প্রয়োজন। প্রয়োজন সবার সার্বিক সহযোগিতা ও সম্মিলিত প্রয়াস। সবাই মিলে আন্তরিকভাবে এগিয়ে এলে নিশ্চয় করোনা সংকটকালীন দেশের দরিদ্র ও কর্মহীনদের খাবার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। তাই আসুন, দরিদ্র ও কর্মহীন শ্রমজীবী মানুষের খাদ্য-চাহিদা পূরণে আমরা সবাই আন্তরিকভাবে কাজ করি।
ড. কুদরাত-ই-খুদা বাবু : সহযোগী অধ্যাপক, আইন বিভাগ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি; অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সদস্য
kekbabu@yahoo.com

Link: https://www.jugantor.com/todays-paper/editorial/303238/%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A6%B9%E0%A7%80%E0%A6%A8-%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%AE%E0%A6%9C%E0%A7%80%E0%A6%AC%E0%A7%80-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%81%E0%A6%B7%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%B6%E0%A7%87-%E0%A6%A6%E0%A6%BE%E0%A6%81%E0%A7%9C%E0%A6%BE%E0%A6%A8?__cf_chl_jschl_tk__=13049bbdba4c07d27253562af529fc1933a26264-1588332326-0-AaIaHzCZsnDRCTigtmEHJNUj3wW6nqyOM78YeR9URljRb3MgCBmj5c364vAmevtrvaBd96ySr7OvqmZeqfRhkniN6yrylnSv-xiLaauPrGpp97pgEJEyKDoaDkalNz7xh4-vrijDsVKa513BtodWIhpwPkQQX0ZFPCIG197U8c4dSKF8Vpt-l-mX34MFwVqY4Jt7gBIjmR5hTPk-BbNjs4YkF3J0mc99SGhw3H9YDT-I3OW0HeAe3h3rPrzfFYEl1F-urAbB3YFf3NVZxPeSCxEP0RYEuF1L5KBruP_fC3IdS6K07XCUSSgJ0rvChBodWyB8gx-oplEswX_axHosoDqmEFRiYPwn4XADJlvOW5s86JTPh8AdZZ0gotNzXKtChClAWtY_PRTiSZpGZQAlIcn5Bzv9ygJQqugbnlAwMi_TcqNYzkygkutbVtC04P1AJH8E00BLdTU_16uXFYMBnP84NaNn4BFZZTQwiparsj6V2oCvh8mn3jsngxHlOZOumcSTJa3RBk2NZW53MFaKxXWgVyir3zQxtFfSMhKVKlhwMoXidEfaL8iUND5vVBWemRBdL15CZhcNn1AUhVlbik3KW2UrK5Q4amqoLDkyz2gwKlzFTyo7I4tJD8pAd8qWwE7kNsHws34oML7Ig5QQUGhk1Ac21nivhfZXnRAuhWF4CCwLYYwVG-cd_wlN2yZ5CQ