Daffodil International University

DIU Activities => Campus Tour => Campus Articles => Topic started by: Md. Anikuzzaman on June 28, 2020, 06:01:16 PM

Title: কোয়ারান্টাইনে পার্মানেন্ট ক্যাম্পাসে থাকাকালীন একজন শিক্ষকের অনুভূতি
Post by: Md. Anikuzzaman on June 28, 2020, 06:01:16 PM
আমরা তথা গোটা পৃথিবী আজ একটি সংকটময় পরিস্থিতি অতিক্রম করছে। করোনা সংক্রমনের ভয়াবহতায় জনজীবন এখন আতংকিত। মৃত্যুভয়ে আজ আমরা আস্বাদন করতে ভুলে গেছি আমাদের চারিপাশের অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দয্যকে। মাসের পর মাস গৃহবন্দি থেকে আমাদের মন ও মস্তিষ্ক হাহাকার করছে একটু মুক্ত বাতাস ও খোলামেলা পরিবেশের জন্য। আর এমনই এক দমবন্ধ পরিস্থিতির মধ্যে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির নিজস্ব পার্মানেন্ট ক্যাম্পাসে থাকার সুযোগের কারণে এর মনোরম সাজ ও সৌন্দর্য্য আহোরণের সৌভাগ্য আমার হয়েছে।

আমি প্রতিদিন সকালে ভোরের স্নিগ্ধ আলোয় দোতলায় আমার শয়নকক্ষে কাঁচের দেয়ালের সামনে এসে দাঁড়াই এবং অবাক হয়ে দেখি সামনে, পাশে ও দূরে দাঁড়িয়ে থাকা সদ্যনির্মিত এবং নির্মাণাধীন সুসজ্জিত ভবনগুলো। দেখি বনমায়ার অপরূপ এক অভূতপূর্ব মায়াবী রূপ। রাতে বিশ্ববিদ্যালয় চত্তরে মাঝে মধ্যে হাঁটতে বের হই। হাঁটতে হাঁটতে প্রায়ই রাতে কখন যে বনমায়া পেরিয়ে যাই আমি নিজেও বুঝতে পারি না।
নজর কেড়ে নেয় গলফ চত্তর, এবি-৪ ভবন, পাশে দাঁড়িয়ে থাকা সারিবদ্ধ গাছগুলো, শিল্পসম্মত ভৌত নির্মান, স্বাধীনতা মিলনায়তন, ছোট বড় দুটি সবুজ চত্তর, সুবিন্যস্ত ফল ফুল সবজির বাগান ও দুই পাশের পরিবহন স্টপেজ। দৃষ্টি কেড়ে নেয় দুরে দাঁড়িয়ে থাকা নির্মানাধীন প্রকৌশল কমপ্লেক্স। নজরে আসে ফুড কোর্ট ভবন, জিমনেশিয়াম, বনমায়ার অদূরে এক পাশ ঘিরে থাকা ঘন জঙ্গল, নিরবে দাঁড়িয়ে থাকা বিদ্যুতের আলোয় উদ্ভাসিত আনিসুল হক অতিথি ভবন ইনোভেশন ল্যাব, উল্টো পাশে ছোট ছোট সবজি ক্ষেত, তার পেছনে ফল বাগান, এর পাশেই ঘিরে থাকা ঝোপঝাড় ইত্যাদী। এ সবের সাথে ও মাঝে মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে থাকা ফুল ফলের গাছপালা রাতের বনমায়ায় দেয় এক অন্যন্য রূপ। দ্বীপ সদৃশ্য ছোট ছোট মাঠের বুকে জেগে থাকা সবুজ সতেজ ঘাস সে রূপে এনে দেয় এক অন্যন্য মাত্রা, এ যেন এক অন্য ভুবনের মায়া। তারই মাঝে প্রহরারত প্রহরীদের আনাগোনা ও কথাবার্তা রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়কে দেয় প্রাণের স্পন্দন।

ঘরে ফিরে অনেকক্ষণ ঘোরের মধ্যে থাকি। ভাল লাগার আবেশে আচ্ছন্ন হই। মুগ্ধতা আমাকে পেয়ে বসে। আমি তাজমহল দেখিনি। দেখলে কি এমন ভাল লাগতো? এমন মুগ্ধ হতাম? এমন একটি রূপ হয়তো কল্পনায় ধারণ করা যায়, বাস্তবেও কি দেখা দেয়? এ বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে এমন একটি সরূপ অতিতে কোন এক সময় আপনি কল্পনায় ধারণ করেন। যা কেবল কোন শিল্পীর পক্ষেই সম্ভব। শিল্পী কেবল তুলির আঁচড়ে এমন রূপ খানিকটা ছবিতে প্রকাশ করে। জীবন দিতে পারেনা। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে তা জীবন্ত। এখানে না থাকলে নিজেকে এভাবে আবিষ্কার করা হতো না। একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আমার জানা ও বুঝার বাইরে থেকে যেত !
 
আমি এখন অনলাইনে বিএলসি প্লাটফর্মে পড়াই। শিক্ষার্থীরা পড়ে। বুঝতে পারি বিএলসি মুখোমুখি শিক্ষাকে সমৃদ্ধ করতে পারে। আমার অনুষদের অধিকাংশ শিক্ষক বিএলসি ব্যবহারে যথেষ্ট দক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় এখন একচ্যুয়াল জগৎ থেকে ভারচ্যুয়াল জগতে অনেক বেশী সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী। বিএলসি এবং স্মার্টএডু উভয়েই ভারচ্যুয়াল জগতে বিশ্ববিদ্যালয়কে করেছে মায়াময় ও মহিমান্বিত। বিদ্যমান বিশ্ববিদ্যালয়ের মতই ভারচ্যুয়াল জগতে এই অলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্বপ্নকেও হার মানায়। এটাই ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সরূপ। আর এখানেই ড্যাফোডিলের প্রকৃত সাফল্য। দৃশ্যমান ও অলিক এই উভয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন গর্বিত শিক্ষক হিসেবে আমি অভিভূত এবং সেই সাথে আমি অনুভব করি ও স্বপ্ন দেখি, এই বিশ্ববিদ্যালয়কে আরো বিকশিত ও প্রতিষ্ঠিত করা গেলে ভবিষ্যতে এটি দেশ ও জাতি গঠণে তথা শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন ও লক্ষ্য পূরণে কি পরিমাণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। সেই দিন নিশ্চই আর বেশী দূরে নয়। তাই তো আমি স্বপ্ন দেখি পরিবর্তনের, আমি স্বপ্ন দেখি ড্যাফোডিল থেকে বের হওয়া আগামী সফল প্রজন্মের যারা এই পরিবর্তনকে গোটা দেশ তথা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হবে।

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির পার্মানেন্ট ক্যাম্পাসের কিছু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যঃ https://www.facebook.com/photo.php?fbid=1437643893066247&set=pcb.1437648993065737&type=3&theater