(https://acdn.newshunt.com/cmd/resize/400x400_60/fetchdata15/images/22/f5/f9/22f5f97aa6c1597f2f96305e5e0c7701.jpg)
নাম অ্যাডাম হ্যারি, বয়স কুড়ি বছর। বর্তমানে তিনি বিমানচালক হওয়ার পথে। এই গল্পে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু আপনি তখনই অবাক হবেন যখন জানতে পারবেন আর পাঁচজনের মত স্বাভাবিক জীবন ছিল না হ্যারি। কারণ ইনিই প্রথম দেশের বিমানচালক হতে চলেছে, যিনি তৃতীয় লিঙ্গের প্রতিনিধি। হ্য়ারির সমস্ত খরচা বহন করেছে কেরল সরকার।
হ্যারি জীবনের উনিশ বছর বয়সে তাঁর পরিবার জানতে পারে তিনি একজন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ। একথা জানার পরই তাঁর ওপর শুরু হয় অকথ্য অত্যাচার। মানসিক তো বটেই শুরু হয় শারীরিক অত্যাচারও। চলে মারধর। প্রায় এক বছর টানা ঘরে আটকে রাখা হয়েছিল হ্যারিকে। শেষমেষ কোনও উপায় না পেয়ে ঘর থেকে পালিয়ে যায় সে। পৌঁছায় কেরলের এর্নাকুলামে। তিনি জানিয়েছেন, আমার কপাল ভালো যে সেখানে গিয়ে আমি তৃতীয় লিঙ্গের একজনের সঙ্গে পরিচিত হই। সেই সময় আমার মাথার উপরে না আছে ছাদ, সঙ্গে না আছে কোনও জিনিস। রাত কাটাতাম রেলস্টেশনেই। বাঁচার জন্য ফলের রসের একটা দোকানে কাজ শুরু করি। তারপরে উড়ানের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় এমন বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে আমি পড়াতে শুরু করি কিন্তু আমি তৃতীয় লিঙ্গ হওয়ায় তারা আমাকে খুব একটা বেশি টাকাপয়সা দিত না।
হ্য়ারির জীবন সম্পর্কে জানাজানি হতেই বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম তাঁকে নিয়ে খবর করা শুরু করে। বিষয়টি কেরল সরকারের নজরে আসতেই সমাজকল্যাণ দফতর থেকে ফোন যায় হ্যারির কাছে। এরপর সমাজকল্যাণ দফতরের আধিকারিকরা তাঁকে পরামর্শ দেন উড়ানের পরবর্তী প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য উপযুক্ত কোনও প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করতে।
সমাজকল্যাণ দফতরের এক সচিব তাঁকে বলেন, ট্রান্সজেন্ডার জাস্টিস বোর্ডে বৃত্তির জন্য আবেদন করতে। সেই আবেদন মঞ্জুর হতে আমি রাজীব গান্ধী ইনস্টিটিউট অফ অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড টেকনোলজিতে ভর্তি হই। সেখান থেকে আজ এই জায়গায় পৌঁছায় অ্যাডাম। তবে হ্য়ারির একটাই প্রশ্ন,যাঁরা তাঁরই মতো তৃতীয় লিঙ্গের প্রতিনিধি, আর পাঁচজনের মতো তাঁদেরও সসম্মানে বাঁচার অধিকার রয়েছে তাহলে তাঁদের এত সংগ্রাম করতে হবে কেন?
সূত্রঃ মহানগর ওয়েবডেস্ক