3
« on: June 04, 2015, 05:08:00 PM »
ছায়া মানুষের অবিচ্ছেদ্য অংশ, তবুও মানুষ কেন ছায়াকে ছুঁতে পারে না ? ছায়া আর মানুষের প্রেম অনন্তকালের । কিন্তু অস্পর্শী ছায়াকে না ছুঁতে পারার অভিমান তার সঙ্গীকে কুঁড়ে কুঁড়ে খায় । তাদের এ অভিমান চলতেই থাকে , যার প্রকাশ তাদের কথায়......
তুর্না=> তুই কি আমার দুঃখ হবি ?
তুই কি আমার শুষ্ক চোখে অশ্রু হবি ?
রুহিত=> হতে আমি রাজি যদি তুই চাস ।
অশ্রুসিক্ত নয়ন আমার, দেখতে কি তুই পাস ?
তুর্না=> তোর অশ্রুসিক্ত নয়নে আমি বইঠা বাইতে চাই,
তুই যদি মোর অশ্রু হবি তো তোকেই আমি চাই ।
রুহিত=> শুধু অশ্রু দিয়েই যায় না বোঝা দুঃখের অনুভূতি ,
সুখেও তো অশ্রুধারা ঝরে আঁকিবুকি ।
পাশাপাশি থাকতে চাইলে থাকুক সুখ-দুঃখ
আমি যে তোর পাশেই থাকব এটাই এখন মুখ্য !!
তুর্না=> তোর চোখে যদি আসে কভু দুঃখের শ্রাবণ-ঢল ,
আমায় শুধু বল.....
আমি চৈত্রের ফাটা মাঠ হব ,
আর শুষে নেব সব জল.....
তুই রবি মোর দুঃখে ,
তোর স্পর্শেই অশ্রু বইবে শুষ্ক এ দুই চোখে ,
তোর ভালবাসারই স্তুতি রয় তবু
নিত্য আমার মুখে !!
মোর দুঃখের সাথেই এত কিরে তোর সখ্য ?
তোর পাশেই তো আছি এই আমি ,
সেটাই কি নয় মুখ্য ?
রুহিত=> তুই যে আমার ছায়ার মত দুর্গেশনন্দিনী ,
ভয় করি নাকো পাশে যে তুই দুর্গতিনাশিনী ,
নির্ঝর তোর আঁখি বেয়ে আমি পরতে দেব না জল ।
যা বলবি তাই করব-করতে হবে কি বল ?
লাগবে না তোর কোন ত্রান মোর দুঃখ করতে জল...
আমি যে আছি তোর নিমিত্ত অটল-অবিচল ।
আমার দুঃখ রাখব পুষে তোর দুঃখ মুছতে ,
দেব না তোকে দুঃখ আমায়, যদি না পারিস বুঝতে ।
বুঝিস কিবা না বুঝিস তবু দুঃখ আমার নেই ,
তুই যে আমার স্বপ্নপরী , স্বপ্নে আসে সেই ।
তুর্না=> রাতের আঁধার ছিন্ন করে ,
আসব আমি তোরই ঘরে ,
এক টুকরো স্বপ্ন হয়ে ,
হারিয়ে যাব তোকে নিয়ে-
তোর ছায়াসঙ্গীনী হয়ে......!!
রুহিত=> তুই মোর পরিত্যাজ্য ছায়াসঙ্গীনী !!
অতলান্তে হারিয়ে যাবি তাতো আগে ভাবিনি ।
অস্পর্শী তোকে হারিয়ে খুঁজব আমি ,
তুই যে আমার অন্তর্যামী ।
নির্লিপ্ত সে দৃষ্টিতে তোর ছবিই-
ভাসবে আর কাঁদবে তুইহীনা আমি......!!
তুর্না=> হারাতে চাই না , হারাব না আমি......
তুই ছাড়া যে নিষ্প্রাণ আমি !!
কাঁদতে দেব না , সুহাসিনী আমি ,
আমি তোর চির- ছায়াসঙ্গীনী......!
রুহিত=> বিশাল তোর সামনে দাঁড়িয়ে ক্ষুদ্র আমি ,
তুই যে আমার জীবন পথের অন্তর্যামী ,
তোরে ছাড়া আমি কেমনে বাঁচি একদণ্ড ?
তোর কারনেই ফিরে পাই আমি অচীন পথের ছন্দ ।
তুই যে আমার সকল সময় সকল স্বরের রাগিণী ।
মায়াডোরে মোর বেঁধেছি তোরে ,
তুই যে আমার ছায়াসঙ্গীনী......!!!
তুর্না=> স্রোতহীন এই নদীতে তুই যে স্রোতের জোয়ার তুললি......
নিভে থাকা এই প্রদীপে তুই যে প্রথম আলো জ্বালালি......
তোর দিক-হারা পথে দ্রষ্টা আমি ,
তোরই আমি সেই মনমোহিনী ।
ভালবাসাডোরে বাঁধা পরেছি , আমি তোরই চির-ছায়াসঙ্গীনী.........
রুহিত=> শূন্যতায় পূর্ণতা দেই- এই আমারি ধর্ম ,
ভালবেসেছিস বুঝবি আমায় ভালবাসার কি মর্ম ।
তোর প্রেমেরই মায়ায় পরে লিখছি এখন কাব্য ।
এত কথার ভিড়ে আমি কখন তোকে ভাবব
তোকে নিয়ে আমি করছি তবু সবার কাছে গর্ব ,
তোর হৃদয়েই ঠাই পেয়ে আমি হয়েছি একলব্য......!!
অচীন পথের পাথেয় তুই , তুই যে আমার দিশা ।
তোর শুধা পান করে তবু মিটে না মোর তৃষা ,
চুরি করেছি মন বলে হারাবি না তুই জানি ।
আমার মাঝে তুই একাকার , তুই যে আমার ছায়াসঙ্গীনী......!!
তুর্না=> তোর কাব্যে সম্মোহিত আমি,
তাই ঠিক করেছি জল হব-
তোর তৃষ্ণা মেটাব আমি !!
শব্দ-গুচ্ছ হব-
আর তোর কাব্যে ঠাই করে নিয়ে প্রাণ খুঁজে পাব আমি ,
তোর হৃদয় গহীনে থাকব আমি তোরই হৃদয়-হরিণী ।
আমার মাঝে তুই একাকার , আমি যে তোর ছায়াসঙ্গীনী......!!
চল নিরুদ্দেশ হয়ে যাই......
দুজনে মোরা নামহারা পথে পথ যেন খুঁজে পাই ,
তোর কাব্যে সুর তুলে যেন আমি সুখ খুঁজে পাই ,
আঁধার মাড়িয়ে আলো হয়ে আমি দীপ্তি ছড়াতে চাই ,
কেবল তোর হতে আমি চাই......!!!
রুহিত=> এ তো দেখি অন্তের মিল......
অন্তকথার শামিল......
যেখানে দুজনের স্বার্থ এক উদ্দেশ্য অভিন্ন ,
গন্তব্য অবিচ্ছিন্ন......!!
তোর মোহে আজ আমি পুরপুরি আচ্ছন্ন ।
আমাকে আচ্ছাদিত কর , যাতে না পারি হারাতে ,
আর তোর দুঃখ যেন না পারি কভু বাড়াতে.........।
রচনায় :
পপরিনা আফরিন তুর্না
মেহেদী আনাম রুহিত
_______******_______