Daffodil International University

Religion & Belief (Alor Pothay) => Islam => Quran => Topic started by: Mrs.Anjuara Khanom on June 06, 2018, 11:30:52 AM

Title: কোরআন মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে আসে
Post by: Mrs.Anjuara Khanom on June 06, 2018, 11:30:52 AM
ইসলাম ডেস্ক: ১.আলিফ-লাম-রা। এই কিতাব আমি তোমার প্রতি অবতীর্ণ করেছি, যাতে তুমি মানবজাতিকে তাদের প্রতিপালকের নির্দেশে অন্ধকার থেকে বের করে আলোকে আনতে পারো। বের করে আনতে পারো তাঁর পথে, যিনি পরাক্রমশালী, প্রশংসিত। [সুরা : ইবরাহিম, আয়াত : ১ (দ্বিতীয় পর্ব)]

তাফসির : এ আয়াতের মূল কথা হলো, কোরআন আলোকময় গ্রন্থ। এই কোরআন মানুষকে আলোকিত করে। এটি মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে আসে।

‘অন্ধকারের যাত্রী’ ও ‘আলোকের যাত্রী’ বলে সমাজভাবুকদের একটি বিশেষ পরিভাষা আছে। কেউ কেউ মনে করে, ধর্মপ্রবণতা, ধর্মপরায়ণতা ও ধর্মভীরুতা হলো ‘অন্ধকারের পথে যাত্রা’। এর বিপরীতে যুক্তিবাদিতা, ধর্মবিযুক্ততা ও বস্তুবাদিতা হলো ‘আলোকের পথে যাত্রা’।

কিন্তু কোরআন বলছে, ঈমান হলো আলোকের পথে যাত্রা। খাঁটি ঈমানদারই প্রকৃত আলোকিত মানুষ। পবিত্র কোরআন প্রকৃত আলোকিত গ্রন্থ। এই কোরআন মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে আসে। যারা বিশ্বাসী মানুষ, তারাই আলোকিত মানুষ।

ঈমানের আলোয় তাদের অন্তর আলোকিত। চির আলোকময় জান্নাতে তাদের বসবাস হবে। আর যারা অবিশ্বাসী, তারাই অন্ধকারাচ্ছন্ন। তাদের অন্তর কুফর ও শিরকের আঁধারে ভরপুর। সব সময় তারা পাপ সাগরে নিমজ্জিত থাকে। চির অন্ধকারময় জাহান্নামে তাদের ঠিকানা হবে।

কোরআন নিজেই আলোর আধার। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘.... আল্লাহর কাছ থেকে এক জ্যোতি ও স্পষ্ট কিতাব তোমাদের কাছে এসে গেছে। যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করতে চায়, এটা দিয়ে তিনি তাদের শান্তির পথে পরিচালিত করেন এবং নিজ ইচ্ছায় অন্ধকার থেকে বের করে আলোকে নিয়ে আসেন। আর তাদের সরল-সঠিক পথে পরিচালিত করেন। ’ (সুরা : মায়েদা, আয়াত : ১৫-১৬)

কোরআন অবতীর্ণ হওয়ার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো আলোকিত মানুষ তৈরি করা। এ কথা পবিত্র কোরআনে বিভিন্ন স্থানে বর্ণিত হয়েছে। এক আয়াতে এসেছে, ‘তিনিই (আল্লাহ) তাঁর বান্দার প্রতি সুস্পষ্ট আয়াত অবতীর্ণ করেন, তোমাদের অন্ধকার থেকে আলোকে আনার জন্য। আল্লাহ তো তোমাদের প্রতি করুণাময়, পরম দয়ালু। ’ (সুরা : হাদিদ, আয়াত : ৯)

তবে এই কোরআন পাঠ করে তাদের পক্ষেই আলোকিত মানুষ হওয়া সম্ভব, মহান আল্লাহ যাদের তাওফিক দান করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা ঈমান আনে, আল্লাহ তাদের অভিভাবক। তিনি তাদের অন্ধকার থেকে আলোকে নিয়ে যান। আর যারা কুফরি করে, তাগুত তাদের অভিভাবক। এরা তাদের আলো থেকে অন্ধকারে নিয়ে যায়। এরাই জাহান্নামের অধিবাসী, সেখানে তারা চিরকাল থাকবে। ’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২৫৭)

আল্লামা ইবনে কাসির (রহ.) সুরা বাকারার এ আয়াতের ব্যাখ্যায় লিখেছেন, এ আয়াতের মাধ্যমে মহান আল্লাহ আমাদের জানিয়েছেন, তাঁর সন্তুষ্টি-সন্ধানীদের তিনি শান্তির পথ দেখান। তিনি বিশ্বাসী বান্দাদের অবিশ্বাস, সন্দেহ ও দ্বিধা-সংকোচ থেকে বের করে সত্যের উজ্জ্বল পথে নিয়ে যান। পক্ষান্তরে অবিশ্বাসীদের অভিভাবক হলো শয়তানেরা, যারা মানুষের মূর্খতা ও পথভ্রষ্টতাকে শোভনীয় করে দেখায়। এর মাধ্যমে তারা তাদের সত্যের পথ থেকে বের করে অবিশ্বাস ও সন্দেহের দিকে নিয়ে যায়। (ইবনে কাসির)

আল্লামা ওহাবা জুহাইলি (রহ.) আলোচ্য আয়াতের ব্যাখ্যায় লিখেছেন, এ আয়াতে ‘আলো’ বোঝাতে একবচন এবং ‘অন্ধকার’ বোঝাতে বহুবচন ব্যবহার করা হয়েছে। এর কারণ হলো, ঈমান ও হেদায়েতের পথ এক ও অভিন্ন। কিন্তু কুফর ও অজ্ঞতার পথ হাজারো। তাই ‘আলো’ বোঝাতে একবচন এবং ‘অন্ধকার’ বোঝাতে বহুবচন ব্যবহার করা হয়েছে। (আততাফসিরুল মুনির : ১৩/২২১)
গ্রন্থনা : মাওলানা কাসেম শরীফ
এমটিনিউজ২৪/এম.জে