Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Messages - Mohammad Nazrul Islam

Pages: [1] 2 3 ... 12
1
Common Forum / ফাল্গুণ
« on: February 23, 2023, 09:54:55 AM »
বাচিঁতে ইচ্ছা করে
সখি, নাচিতে ইচ্ছা করে,
-গাইতে সুর-গান’
আজি, ১লা ফাল্গুণে, ভরিয়া উঠিল
এ, মরা দেহ-প্রাণ।।

অম্রকাননে ফুটিল মুকুল
সহস্র ভ্রমরের দল,
আকুল তিয়াসে মধুর পিয়াসে
করছে কোলাহল।।

চারদিকে ফুটিছে শতদল
নন্দিত, আজ মেঠোপথ,
যোজন-বিয়োজন একসাথে
-প্রকাশিতে অভিমত।।

বন্ধ কুঠিরে বসিয়া অসার
শুকিতে চন্দনও ঘ্রাণ
অমুলকঃ ভাবিয়া পুলক
বাজাঁতে সানাই-তান।।

হৃদি কপাটে জাগে
ফুল মল্লিকার মেলা,
হৃদয় নীলাচলে ‘অপ্সীরা
খেলিতে প্রেম-খেলা।।

ডালে ডালে নতুন পাতা
তব, শাখাতে ফুটিতে ফুল
সোহাগী বাতাসের নরম ছোঁয়ায়
মুকুলে পড়িতে দোল।।

বলি-হরি মনোলোভা
চলিছে যৌবনের জয়গান
এ, চিন্ময়ীর আনন্দধারা
-চলিতে অভিরাম।



2
ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়  শিক্ষা বিস্তারে একটি বিশ্বস্ত নাম। সর্ম্পূণ একক মালিকানায় ‘জীবন ও জীবিকার অন্বেষায় প্রতিষ্ঠিত এই বিদ্যাপিঠটি সত্য-নিষ্ঠ পথে, দেশ-বিদেশী জ্ঞান-অন্বেষীদের অনুকরণীয় ও আলোর পথের দিশারী হিসাবে ভূমিকা রেখে চলছে।

আলোকিত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়টি আজ শিক্ষা বিতানে বহুলাংশেই সফল।  ৯ই ফ্রেরুয়ারী ২০২৩ ইং রোজ বৃহস্পতিবার সারাদিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ম সমাবর্তন।

সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মহামান্য রাষ্ট্রপতি জনাব মোঃ আব্দুল হামিদের প্রতিনিধি, মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন।

তিনি তার  জ্ঞানর্গব আলোচনায় বলেন, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি সত্যিকার অর্থেই দেশ শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠ। অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের মেবাধী ছাত্র/ছাত্রীরা ইতিমধ্যে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় আংশ গ্রহণ করে বাংলাদেশর জন্য বিরল সম্মান বয়ে এনেছে।

তাদের গবেষণায় শারীরিক ও মানসিক বিকাশ প্রতিফল হয়েছে। আমার বিশ্বাস এই বিশ্ববিদ্যালয়টি অদূর ভবিষ্যতে বিশ্বের শ্রেষ্ঠা বিদ্যাপিঠ হয়ে উঠবে। তিনি বলেন, আমার দেখা ও জানা মতে দক্ষ্য, যোগ্য, সৃজনশীল মানুষ গড়ে তুলতে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিকল্প নাই।

তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল, একটি অসাম্প্রদায়ীক স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়ে তোলা। বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে আমরা যুগোপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করেছি।

বিভিন্ন সমালোচনা, যাচাই-বাছাই করে আমরা আমাদের শিক্ষানীতির পরিমার্জন ও পরিবর্ধনে বদ্যপরিকর রয়েছি। আমরা একটি সৃজনশীল ও আত্ম-নির্ভশীল উৎপাদনমূখী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে চাই। এই জন্য উপস্থিত সকল শিক্ষিত ব্যক্তিবর্গের সর্বাত্বক সহযোগিতা কামনা করি এবং আমি আশা রাখি, ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ছাত্র/ছাত্রীবৃন্দ বঙ্গবন্ধুর গঠণমূলক শিক্ষানীতি ব্যাস্তবায়নে আমাদের সর্বাত্বক সহযোগিতা করবেন।

Convocation Speaker, হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর অতুল খোসালা (Prof. Atul Khoslৃ. Vice Chancellor, Shoolini University)। সমাবর্তন বক্তা হিসেবে তিনি (ভারতের হিমাচল প্রদেশের শোলিনী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর অতুল খোসালা) বলেন, ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় একটি High Ranking University in Bangladesh, আমি অত্র বিশ্বব্যিালয়ে আমন্ত্রীত হয়ে নিজেকে ধণ্যমনে করছি। আমি  ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র/ছাত্রী ও অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।

ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা আলোর পথের দিশারী বাংলাদেশের বিশিষ্ট শিল্প উদ্দ্যোক্তা  ড. মো. সবুর খান এক বক্তব্যে তার জীবন অভিজ্ঞতার কথা ছাত্র/ছাত্রীদের মধ্যে ব্যক্ত করে বলেন, জীবনে সফল হতে হলে অবশ্যই ধৈর্য্য একাগ্রতা, সততা এবং অধ্যাবসায় থাকতে হবে। সময় ও অবস্থার বিচারে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবেই সফলতা আসবে। আমার বিশ্বাস আমাদের প্রত্যেকটি ছাত্র/ছাত্রী উপরোক্তগুণে আত্মস্থ এবং নিশ্চিত সফলপথে ধাবমান হবেন।

উল্লেখ্য যে, বহুগুণের অধিকারী জনাব খান ব্যক্তিজীবনেও এক উজ্বল ‘সেলুকাস’। তার জীবন দর্শণ যে কোন ব্যক্তি বিশেষের অনুকরণীয়। তিনি অত্যন্ত সাধারন পরিবার থেকে জীবনযুদ্ধ করে আজ সফলতার র্শীষচূড়ায় পৌঁছিয়েছেন।

এই মহান ব্যক্তিত্ব, ২০০২-২০০৩ সালে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১২ সালের ২৯ ডিসেম্বর ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ৯০ দশক থেকে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবসায়ী হিসেবে বাংলাদেশ তথা বিশ্বে সফল ব্যবসায়ী হিসাবে নাম কুড়ান।

তৎপর তিনি ২০০৪-২০০৬ মেয়াদে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া ২০০২-২০০৩ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য-প্রযুক্তি টাস্ক ফোর্সের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। একই সঙ্গে ইসলামিক চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি প্রেসি-ডেন্টস ফোরামসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠনে দায়িত্ব পালন করছেন।

তিনি ওয়ার্ল্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সার্ভিসের (উইটসা) পরিচালনা পর্ষদের সদস্য এবং ২০২১-২০২২ মেয়াদের জন্য অ্যাসোসিয়েশন অফ ইউনিভার্সিটিজ অফ এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিকের (এইউএপি) প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।



সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. এম লুৎফর রহমান। তিনি বলেন, জ্ঞান অন্বেষায় ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের জুড়ি নাই। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন প্রায় বিশ হাজারের অধিক ছাত্র/ছাত্রী অধ্যায়ন করছে। প্রতি বছর সমাবর্তনী অনুষ্ঠানে প্রায় ছয়হাজারের অধিক ছাত্র/ছাত্রী গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সুনামের সাথে চাকুরী করে  দেশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে নাম উজ্বল করছে।

আজকের এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা আমাদের ছাত্র/ছাত্রীদেরকে হৃদয়ের গভীর হতে- প্রাণ ঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই এবং আশা রাখি আপনাদের কর্ম জীবনের প্রতিটি স্তরই সফল হোক। এবং দিন দিন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মান আরো উজ্বল করুন।


সমাবতর্নী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. এসএম মাহবুব উল হক মজুমদার, ট্রেজারার মো.মমিনুল হক মজুমদার, রেজিস্ট্রার- ড. নাদির বিন-আলী, প্রফেসর ড. ইসমাইল জবিউল্লাহ প্রমুখ।

এবারের সমাবর্তনে প্রায় ৬,১১৪ জন ছাত্র/ছাত্রীদের বিভিন্ন বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী সনদ প্রদান করা হয়। নিজ নিজ বিভাগে বিশেষ কৃতিত্বের জন্য  ১২ জন ছাত্রছাত্রীকে Chancellor গোল্ড মেডেল, Vice- Chancellor গোল্ড মেডেল, এবং Chairman গোল্ড মেডেল পদক প্রদান করা হয়।

বৃহস্পতিবার সারাদিন, ছাত্র/ছাত্রীর অংশ গ্রহণ-পদচারনায় মূখরিত ছিল ‘অনন্য সৌর্ন্দয্যের চারণ-ভূমি আশুলিয়ায় প্রতিষ্ঠিত ড্যাফোডিল র্স্মাট সিটি ক্যাম্পাসটি।



সবুজ-শ্যামলা, ছায়া-ঘেরা এই ক্যাম্পাসটি সকল দিক দিয়েই অন্য যে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে এক-বিশেষ কৃতিত্বের দাবি রাখে। শিক্ষা ও সৌন্দর্য্য বিকাশের পথে মানবিক মননশীলতায় শিক্ষার্থীদের হাতছানি দিয়ে ডাকে। ঢাকার অদূরে সাভারের আশুলিয়ায় (ড্যাফোডিল স্মার্ট সিটিতে)  অনুষ্ঠিত এই সমাবর্তন অনুষ্ঠানটি সকাল ৮:৩০ মিনিটে শুরু হয়ে একটানা চলে বিকেল ৫ ঘটিকা পর্যন্ত।

দুপুরের লাঞ্চের পর এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উক্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সঙ্গীত পরিবেশন করেন দেশ খ্যাত বিশিষ্ট সংগীত শিল্পীগণ।

https://banglatopnews24.com/daffodil-besobidaloyaer-dosom/

3


‘আমি চাইনি তোমায়,
-চেয়েছে এ মন,
নিত্য বিরহে কাদুঁক আমার,
প্রেম বিলাশী মন,


কালের গহ্বরে বিলীন হয়ে গেল আরও একটি বছর। এলো নতুন বছর ২০২৩। আগামীর দিনগুলোতে অনিশ্চয়তা কেটে গিয়ে শুভময়তা ছড়িয়ে যাবে পৃথিবীময়, এ আশায় বুক বাঁধছে মানুষ।

রাতের অন্ধকার শেষে পুর্ব আকাশে লাল সূর্যের উদয়ে দূর হোক সব গ্লানি আর জরা। নতুন ভোর নিয়ে আসুক সুসংবাদ, করোনা মহামারি ও যুদ্ধ থেকে মুক্তি পাক বিশ্ববাসী। বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ুক শান্তি— এই প্রত্যাশায় সবাই কে নতুন বছরের শুভেচ্ছা।

গ্রেগরিয়ান পঞ্জিকা অনুযায়ী ইংরেজি নববর্ষের প্রথম দিন আজ। ২০২৩ সালের প্রথম দিন। নতুন বছরটি যেন প্রতিটি মানুষের মন থেকে সব গ্লানি, অনিশ্চয়তা, হিংসা, লোভ ও পাপ দূর করে। গত বছরের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির হিসাব খুঁজতে খুঁজতে নতুন বছরকে সামনে রেখে আবর্তিত হবে নতুন নতুন স্বপ্নের।

থার্টি ফার্স্টে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ পরমানন্দে ২০২৩ সালকে বরণ করেছে। আজ নতুন দিনের নতুন সূর্যা-লোকে স্নান করে সিক্ত হবে জাতি-বর্ণ-নির্বিশেষে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিগত বছরের সব কালিমা ধুয়ে-মুছে নতুন কেতন ওড়াতে ওড়াতে এগিয়ে যাবে সময় ও সভ্যতা।

অনাবিল স্বপ্ন আর অফুরন্ত প্রাণোন্মোদনা নিয়ে নতুন সূর্যের আলোয় অগ্রসর হবে মানুষ। বিগত সময়ের সব ভুল শুধরে নেওয়ার সময় এসেছে আজ।

পুরাতনকে হাসিমুখেই বিদায় দিতে প্রস্তুত দেশ। প্রস্তুত শেষ রজনী উদযাপনে। স্বাগত নতুন সূর্যকে। বাংলার সর্বস্তরের মানুষের জন্য শুভময় সফলতম বছর আসুক—এ প্রার্থনা করবে সব ধর্মের মানুষ।

সবশেষে বলতে হয়, ‘মুকুলিত সব আশা/স্নেহ, প্রেম, ভালোবাসা/জীবনে চির স্মৃতি হয়ে রয়, পুরাতন বর্ষ বিদায় লয়।/নববর্ষের আগমন হয়।’

সব আশা-স্নেহ-ভালোবাসা স্মৃতি হয়ে থাকুক। আগামী আসুক পুষ্পশোভিত হয়ে। বিদায় ২০২২, স্বাগত ২০২৩।

4
Common Forum / প্রজ্ঞাময়ী
« on: January 01, 2023, 03:18:37 AM »
     

অনঙ্গদারী প্রিয়সী আমার
হৃদি শাহিন বাগে,
প্রকাশ-বিকাশে গুলকেতনী
-রাগ- অনুরাগে।।

অসীম, অতল, অথৈই তুমি
-ধরা দাত্রী দাস,
অনিল-অনলে, সরস-সরোবর
তৃষিতের বিশ্বাস।।

রিক্ত কমলের আশার ভাষা
সিন্দু-বিন্দু-গিরি,
গহণ পথের অনন্ত দ্রুতি
শুভ্র প্রয়াসী সিড়িঁ।।

অন্ধ-জনার বন্দন গীত
বিশ্বাস-ভালবাসা,
কামুকের-কাঞ্চনযজ্ঞ
শব্দহীনের ভাষা।।

ভাললাগার আত্ম-তৃপ্তি
বিশ্ব, ভাষা, জ্ঞান,
অতল-তলের মানিক জ্যোতি
অন্বেষীদের ধ্যান।।

আমার তুমি কামলিওয়ালা
প্রেম প্রয়াসের দ্বার,
যজ্ঞে তুমি প্রজ্ঞাময়ী
অকূল- পারাবার।।

5
Common Forum / বিষাদ গদ্য
« on: December 05, 2022, 04:23:55 PM »

ছন্দে হয়েছিলাম বন্দি
সন্ধির শর্ত এঁটে,
পূর্ণ, পুরান শূণ্য-
দেখি, শ্লোক গেঁটে।।

বলনে, শক্তি ভারী
-উর্ধ্বমূখী চলন যার,
বলি হরি, কূল-মানে
আমি চাই পুজিঁবার।।

হাসিঁমাখা মুখে আমি
স্বরসতীর নাম লই,
পুজাঁর ঢালা নিয়ে
অভিরাম দুঃখ সই।।

স্বপ্ন দেখি, চাদেঁর আলো
অন্ধ কুটিরে বসি,
হৃদয়ের অটুট বিশ্বাস
ক্রমশ:ই পড়ছে খসি।।

নগ্ন পায়ে আমার আশা
বুকের উপর বসি,
-গর্দান চেপে ধরে,
তিরস্কারের বলন কষি।।

নিঃশ্বাস ক্রমশই হয় ক্ষীণ
তবু. বেহায়া মন,
চয়নিকার পিছেই ছুটে,
করে নিলর্জ্জ পণ।।

দিন কাঁটে কোলাহলে
-অবুঝ বির্দীণতায়,
সন্ধ্যায় জেকে বসে,
যৌবিক জড়তায়।।

রাত্রি দ্বি-প্রহরে
শুনি, চেনা শব্দ,
-সময়ের ধীর চলা
এ, জীবনের জব্দ।।

দু,চোখে অশ্রু ঝড়ে
-কালের গভীরে,
স্মৃতি গুলো কুড়ে খায়
শতাব্দীর সমীরে।।

বেচেঁ আছি এখনো
এটাই নাকি সত্য !!
ভাল লাগার পথ ধরে
-বাচিঁতে-ই, মত্ত।।

মূলহীন- ভুল চলা
কেলে ফোটাঁ পদ্ম,
রসহীন, কেনুকথা
-এ বিষাদের গদ্য।।

এটাই বুঝি ইতিকথা
-অসীমের চেনাপথ,
আশা নিয়ে উষা আসে
চিরচেনা অভিমত।।



6
Common Forum / জীবন
« on: September 29, 2022, 01:25:00 PM »
বন্ধু, দেখ চেয়ে ঐ ‘চন্দ্রিমা’
-অন্ধকারে নির্ভয়
হাত নেড়ে বার বার,
জীবনের কথা কয়।।

গিয়াছ কি তুমি ভুলে?
-ভাললাগা কাকে বলে!
বিবসনে ছল-ঢলে,
ভিজাইয়া আখিঁ-দ্বয়।।

মিটে নাই আশা
-বহুরুপির ভালবাসা
ঘৃনা আর ক্লান্তি,
পেয়েছ উপহার।।

জীবনে চেয়েছ যাহা
-পেয়েছ কি তাহা?
হিসাব কষে দেখ এইবার,
আপন মনে মনে ।।

সময় অতি কম
-ফেলনা দীর্ঘ দম
হাত বাড়িয়ে ডাকে ঐ
কালের কেতন।।

বুকে রেখে হাত
বল; বিশ্বাসের সাথ
বন্ধগলির অন্ধপথ
কার ভাল লাগে??

শুন, বন্ধু মহাশয়
বিভূতিভূষণ, মনস-কামনা
শ্রী চৈতন্যের,
চরণ তলে রয়।।

ঠুটে, মুখের ফাকাঁ বুলি
-যাকে ভালবাসা বলি
আসলে, সবই মিথ্যে,
- জীবনের পরাজয়।।

বন্ধু, যদি ইচ্ছে হয়
-ছেড়ে দিয়ে লাজ-ভয়
নির্ভেয় বুকে রাখ,
যাকে তুমি ভালবাস, নিশ্চয়।।

কি হবে ভাবনায়?
-সময় হলে পার
অচলার বিনিময়,
হয় কি বার বার ।।

বিনিত এই আখিঁ
-বন্ধুর চরণে রাখি
শান্তির পরশ খোঁজ
ভব জ্বালা জুড়াবার।।

 এ, সংসার মায়াপুরি
-ফাকাঁ তালে ঘুরে মরি
ভাললাগা-ভালবাসা,
হয় না, যার তার।।

ভালবাসা কাছে আসা
-ক্ষনে ক্ষণে অভিমান
বিনে সূতোয় বাঁধা মন,
এতো, জীবনের জয় গান।।





7
সভ্যতার এই উৎকর্ষন মানব জাতির বিশুদ্ধ ভাবনার উন্মুক্ত ফসল। জীবন যাত্রার ধাপ পরিক্রমায় এই উন্নতি বা অগ্রগতি; জীবন জিজ্ঞাসার কাছে অত্যাবশ্যকীয়, যা যুগ যুগ ধরে সমাজ-সভ্যতাকে প্রভাবিত করছে। মান, সময় ও নিরাপত্তা এই তিনটি শব্দই জীবনচক্রকে আবর্তিত করছে বিধায়, পরিশোধীত চিন্তার অধিকারী মানুষকে এই ‘চক্রাকার আর্বতন, ব্যাপক ভাবে প্রভাবিত করছে। জীবনচক্রের এই অন্তহীন পথে, সুশিক্ষাই-মানব মুক্তির একমাত্র পাথেয়; যা দেশ, কাল, জাতি এবং কি মহাকালের স্বাক্ষী!

একথা সত্য যে, আজ অব্দি পৃথিবীতে কোন পন্ডিতই শিক্ষার সুষম সংজ্ঞা প্রদান করতে পারেন নাই। যত গুলো সংজ্ঞা সভ্যতার এই যুগকে প্রভাবিত করছে, তার অধিকাংশ সংজ্ঞাই আত্ম-কেন্দ্রীক-ও ব্যক্তিক অভিজ্ঞতার ধারনা মাত্র।

অভিজাত পরিবারের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একজন শিক্ষিত ব্যক্তিকে ‘হিরার অংটির সাথে তুলনা করেছেন। তিনি তার ব্যাখ্যায় বলেছেন, ‘হিরার সু-দৃঢ়তা ও উজ্বলতা এই দু‘টিই একজন শিক্ষিত ব্যক্তির মাঝে দেদিব্যমান থাকা চাই। অনেকেই আবার এই ‘সংজ্ঞাটিতেও তার পারিবারিক আভিজাত্যের ইন্দনের ইংগিত করেছেন।

আবার পাশ্চ্যের পন্ডিরা বলেছেন, Education is the harmonious development to body mind and soul. এইসংজ্ঞা থেকে প্রশ্ন আসে, আত্মার সাথে দেহ ও মনের সমুন্বয়ের ধারনার ধরনের প্রকৃতি কি? অথবা আত্মার বাস্তব ভিত্তি কি?

এ ক্ষেত্রে ভাব-বাদীদের মতে, আত্মা এক অদৃশ্য বস্তু। যার বাস্তব ভিত্তি নাই। কিন্তু নিদিষ্ট নিয়ম বা শৃংখলার মধ্যে তার অনুভব লক্ষণীয়। অনেকে মনে করেন, আত্মার সাথে দেহ ও মনের ধারনা অনেকটাই রীতি-নীতি ভাব-আদর্শের দ্বারা কন্ঠুত;  যা জীবন পরিচালনা ও সৃষ্টি জগতের কল্যাণমূলক ভাবনায় মুহিত থাকা চাই। সেই অর্থে ধর্মীয় অনুশাসন ও বিশুদ্ধ চিন্তাশীল ব্যক্তি মাত্রই শিক্ষিত।

একথা সত্য যে, চিন্তার বিশুদ্ধতা শিক্ষিত সমাজকে সত্য প্রচারে ও প্রসারে বিধায়কের ভুমিকা পালনে সাহায্য করে বিধায়- অবশ্য অবশ্যই তাদেরকে চিন্তা বিশ্লেষনে মগ্ন থাকতে হয় এবং সেই সাথে যুগ যুগের ঘটনা-অভিজ্ঞতা ও তার সময় প্রেক্ষাপট বিশ্লেষনও প্রয়োজন পড়ে।

বাংলা সাহিত্যের প্রবাদ পুরুষ সৈয়দ মুস্তবা আলী বলেছেন, ‘শিক্ষার আশ্রয় অবশ্য অবশ্যই পুস্তকে; যাতে বহু কাল অব্দি মানব জীবনের শিক্ষামূলক জীবন ও সমস্যা সর্ম্পকে সম্মক ধারনা বা বিশ্লেষন রয়েছে। যদিও একথা সত্য যে, বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় শিক্ষা ও শিক্ষিত দুটি শব্দই বহুমাত্রীক রসায়নে মানুষকে দ্বিধান্বিত করছে।

আমাদের এই সমাজে অধিক অথের্র সাথে জীবনের সর্ম্পক, মানুষকে সুশিক্ষার বদৌলতে আত্মকেন্দ্রীক ও সংকীর্ন মনোভাপন্ন করে তুলেছে। তাই শিক্ষিত সমাজ আজ রীতি-নীতি বা বিশুদ্ধ-আদর্শে আটকীয়ে না থেকে, ভোগবাদী ও ক্ষনস্থায়ী ভাবনায় বিভোর রয়েছে। যা শিক্ষিত সমাজের জন্য অত্যন্ত গর্হিত কাজ। তাই কবি বলেছেন, দুর্জন; বিদ্বান হলেও পরিতাজ্য;।

মানব জীবন অত্যন্ত সংর্কীন। এই সংর্কীন সময়ে শিক্ষিত সমাজকে, অবশ্য অবশ্যই রীতি-নীতি, বিশুদ্ধ, আদর্শভিত্তিক একটি সুনিদিষ্ট পথের দিকে আঙ্গুলী নিদের্শ করা  প্রয়োজন; যার বিশ্লেষন ও ভাবনা গোটা মানব জাতিকে যুগ যুগ ধরে প্রভাবিত করবে-অভিযোজনিক ধারা পরিক্রমায়।

একথা অতিব সত্য যে, গোটা বিশ্বের  অধিকাংশ শিক্ষিত সমাজ আজ বিলাশ-ভাবনা ও নান্দিক শিক্ষার খোলসে ডিকভাজী খাচ্ছে। শিক্ষিত সমাজ সময় ও সুযোগ বুঝে অশুদ্ধ-বিশুদ্ধ দুই দিকেই তাদের বাস্তবিক অভিজ্ঞাতাকে কাজে লাগিয়ে ট্রেডিশন ও কমার্শিয়াল শিক্ষার কাছে তাত্ত্বিক ও বিশুদ্ধ আদর্শীক শিক্ষাকে বিক্রি করে দিচ্ছে। যার কারণে আমাদের সমাজে মেধাবী জন্ম হলেও সমাজে ভাল মানুষের অভাব থেকেই যাচ্ছে।

এখন, মুক্ত চিন্তার নামে অশুদ্ধতা মানুষকে গিলে খাচ্ছে। যার দরুন জীবনের কাছে জিজ্ঞাসার প্রশ্ন আজ ব্যতিকে পরিনত হচ্ছে। সাময়ীক ভোগ-বিলাশের চিন্তায় শিক্ষিত সমাজ মর্ডান-ট্রেডিশনের, ক্ষয়-প্রাপ্ত জীবন ভোগে ব্যতি-ব্যস্ত সময় পার করছে।

-মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি

8
Common Forum / পূজারিনী
« on: August 23, 2022, 10:04:46 AM »
এই বিশ্বালয়ের যত সুন্দর
-সকলই তোমার দান,
‘হে ধীরপতি অনন্য-
এই-দুলোক ভূলোক।।

স্বর্গমর্ত্ত্য জুড়িয়া
কেবল তোমারই ছবি
হেরী, প্রয়াস নিঃশ্বাস যত
হৃদয়ের আনন্দ ক্ষত।।

তোমারই যত মহত্ত্ব
কামনা বাসনা-সর্বগ্রাসী
সর্বকালে, সর্বলোকে
-অপয়ারে  ভালবাসি।।

যত গন্ধ, কবিতা, গান
হৃদয়ের ব্যাকুলতা,
ঘন মেঘ বরিষনে
-প্রাপ্তির প্রসারতা।।

সত্য, নিত্য তুমি
অদূর- অজানা
কাঁদিয়া ফিরে মমপ্রাণ
প্রনয় বেদনায়।।

তোমার উষ্ঠ, পুষ্ট
ভরা বুক, যৌবনধন
কালান্তের সুধামাখা
-বিবাহরী আয়োজন।।

‘হে মম প্রাণপতি
প্রিয়সী আমার-
ফিরাও না মোরে
-এইবার বুকে লহ টানি।।

পুজাঁ ‘লহ মোর
দিলাম অর্ঘডালাপাতি
শিরদাড়; তোমারই চরনে
রাখিলাম নত- দিবস-রাতি।।


[/b]

9
লেখাটি অনেক ভাল লেগেছে। জনাব, সূরা ফাতিহার বাংলা অর্থ বুঝিয়ে লিখলে আরও উপকৃত হতাম। লেখাটির জন্য ধণ্যবাদ।

10
Common Forum / কল্পকথা
« on: June 27, 2022, 09:02:35 AM »

গল্পশুন, অল্প কথায়
তল্প বাজার তালে,
একছিল এক কল্পলতা-
টোল পড়িত গালে।।

কপালে আঁকা চন্দ্রবাঁকা
ভ্রু‘র মাঝে টিপ,
খোঁপা বাধাঁ বেনীতে তার
দারু চিনির দ্বীপ।।

পায়ে তাহার কাঁসার খাড়ু
কানে তাম্বুল দু‘লে
কঠিন যজ্ঞের মধুর বচন
সদায় ছিল বুলে।।

ঠোঁটখানা তার আলতা রাঙ্গা
সিক্ত পৃথি দ‘লে,
আড়ু চোখের বাঁকা চাহনী
কামুক চেরী তুলে।।

গল্প করা পাড়া-জোড়া
-ক্লিওপেট্রা বেশ,
ইন্দ্রজালের প্রলেপ আঁটা
আওলা বেশী কেশ।।

সুন্দর অতি কমলমতি
-যেন ফনী বেশী পদ্ম
কল্পলোকে, নেবুচাদের,
মেডিস দেশীয় গদ্য।।

আমি নিশু খেলার শিশু
তালকাটা এক ল্যাড়ী,
চরপরা এক বালুর দ্বীপে
একেঁ ছিলাম বেড়ী।।

ঝড় তোলা এক প্রবল জোয়ার
-বিষণ ফনি নেড়ে,
স্মৃতি রেখার বাধঁন বেড়ী
সব নিয়েছে কেড়ে।।

চুপি চুপি ভাবি বসে
যায় না, এ-ছল বলা-
ভুল ছিল মোর তপ্তরোদে
নগ্ন পায়ে চলা।।

https://banglatopnews24.com/




11
Common Forum / উত্তম !
« on: June 11, 2022, 08:40:55 AM »
ছন্ন‘ ছড়া পথিক আমি
জীবন গিয়াছে থেমে-
মুক্তমনের অবাধ বিকাশ,
-বন্দি আটা ফ্রেমে।।

বদ্ধ ঘরে কেদেঁ মরে
বিপ্লবী এক সূর-
মুক্তিকামীর বিজনপরশ,
-শিশির ভেজা ভোর।।

হাতরিয়ে ফিরি, অগাত গিরি
-দুর্গম বালু চর,
নগ্নপায়ে তপ্তজ্বালায়,
-অঙ্গ জড়োজড়।।

তপ্ত পথে, রক্তঝড়ে
তবু বলার সাধ-
বলের সাথে দূবর্লেরই,
-হোক না প্রতিবাদ।।

হেরেই যদি যায় এ-মন
তবুও বলব প্রতিবার-
তুমার চেয়ে শ্রেষ্ঠ আমি,
-ধূর্ত চুপিসার।।


https://banglatopnews24.com/uttam/

12
কেন্দ্রীয় সরকারে সংবিধান প্রনয়ন নিয়ে অচল অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে গর্ভনর জেনারেল গোলাম মোহাম্মদ গণপরিষদ ভেঙ্গে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে খাজা নাজিমুদ্দিনকে অপসারন করে। এই সময়টিতে সারা পাকিস্তান ব্যাপি দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে মওলানা ভাষানী পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসন দাবি করেন। অনেক ঘটনা-অঘটনার মধ্যদিয়ে ১৯৫৬ সালে ৪ মার্চ জেনারেল ইস্কান্দার র্মীজা পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট হন। ২৩ শে মার্চ রাতে পাকিস্তান কেন্দ্রীয় পরিষদে পশ্চিমা তাবেদারী ভিত্তিক একটি নতুন সংবিধান প্রনীত হয়।

কিন্তু পূর্বপাকিস্তানের ৯ জননেতা এই সংবিধান ভবিষ্যৎ সম্পর্কে এক অনৈতিক বিবৃতি প্রদান করেন। আওয়ামী লীগ নেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী গণ-পরিষদে সংবিধান সস্পর্কীত এক বক্তৃতায় বলেন ‘আমি এমন সংবিধান চাই না, যা দেশের একাংশের স্বার্থের উদগ্র তাগিদে অপরাংশের স্বার্থের পরিপন্থি হয়।

এতদ্ব্য সত্যেও পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী এই সংবিধানকেই পূর্বপাকিস্তানের জনগনের উপর চাপিয়ে দেয়। কিন্তু ১৯৫৭ সালের ২৭ জুলাই প্রধানমন্ত্রী সোহরাওয়ার্দী যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে প্রেসিডেন্ট আইজেন হাওয়ারের সাথে এক যুক্ত বিবৃতিতে কমিউনিজম কে ‘স্বাধীন বিশ্বের জন্য হুমকি হিসাবে উল্লেখ করেন এবং প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের দাবি পরিত্যাগ করেন।

এদিকে বিখ্যাত কাগমারী সম্মেলনে মওলানা ভাসানী প্রথম প্রকাশ্যে ‘স্বাধীন বাংলাদেশের’ কথা উল্লেখ করেন। দুই নেতার পাল্টা-পাল্টি অবস্থানের সুযোগে কেন্দ্রীয় সরকার বাঙ্গালীদের প্রতিবাদী কন্ঠরোধ করতে ও ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত করতে আইয়ুব খান নেতৃত্বে ১৯৫৮ সালে সামরিক শাসন জারি করে।

১৯৬২ সালের ১৭ই সেপ্টেম্বর ছাত্রদের ডাকে আইয়ুব আমলের প্রথম হরতাল পালিত হয়। এই সময় ছাত্রদের নেতৃত্বে ছিলেন কাজী জাফর আহম্মদ, আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এবং কাজী ফিরোজ রশিদগং। মূলতঃ তাদের নেতৃত্বে ছাত্র আন্দোলনে স্বাধীনতা নামে এক নতুন স্লোগান উঠে যার মূলহোতা ছিলেন সিরাজুল আলম খান।

এই ধারাবাহিকতায় তৎকালীন ছাত্রনেতারা সেনাবাহিনীতে অবস্থানরত বাঙ্গালী তরুন অফিসারদের সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক মাজেদ খানের বাসায় গোপনে এক বৈঠকে মিলিত হন। উক্ত বৈঠকে বাঙ্গালী তরুন অফিসার ক্যাপ্টেন আব্দুল হালিম চৌধূরী ছাত্রদের উদ্দেশ্যে এক বক্তব্যে বলেন ‘তোমাদের আন্দোলনের চূড়ান্ত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য যদি স্বাধীনতা হয়, তাহলে আমরা বাঙ্গালী অফিসাররা রাইফেল তোমাদের পক্ষ হয়ে ওদের দিকে ঘুরিয়ে দিব (ডঃ মোহাম্মদ হান্নানের বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস, পৃষ্ঠা-২৬৭) এদিকে ১৯৬২ সালে শেরে বাংলা এ.কে ফজলুল হকের অসুস্থ্যতা এবং ভাসানীকে জেল-হাজতে বন্দি করে আইয়ুব খান নিজেই সংবিধান ঘোষনা করে, নিবাচনীর্ক টোপ দিয়ে সোহরাওয়ার্দী এবং শেখ মজিবকে মুহিত করে।

ভাসানীর ন্যাপ এবং ছাত্র ইউনিয়নের অধিকাংশ নেতা কর্মীদের জেল ও পলাতকে বাধ্য করে সোহরাওয়ার্দী পন্থি ছাত্রলীগকে কিছু ছাড় দিলেও (উদাহারন স্বরুপ বলা যায় সাবেক মূর্খ্যমন্ত্রী নূরুল আমীনের মেয়ের বিয়েতে সোহরাওয়ার্দীসহ ছাত্রলীগের অন্যান্য নেতাদের উপস্থিতি) অল্প কিছুদিন পরেই আইয়ুবের আসল চেহারা বেড়িয়ে আসে। হঠাৎ করেই করাচী বিমান বন্দর থেকে সোহরাওয়ার্দী সাহেবকে গ্রেফতার করা হলে ছাত্র রাজনীতিতে এক নতুন ধারার সৃষ্টি হয়।

ছাত্রলীগ এবং ছাত্র ইউনিয়ন নামের দুইটি সংগঠন যৌথভাবে আন্দোলনের ঘোষনা দেয়। তাদের যুগপৎ আন্দোলনে পূর্ব-পাকিস্তানের ‘ছাত্র আন্দোলন’ চাঙ্গা হয়ে উঠে। ১৯৬২ সালের ২রা থেকে ৬ এপ্রিল আশি হাজার মৌলিক গনতন্ত্রীদের ভোটে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও ‘আওয়ামী লীগ’ এবং ‘ন্যাপ’ এই নির্বাচনকে বয়কট করে।

ছাত্রলীগ ও ছাত্র ইউনিয়ন প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনসহ আটদফা দাবি নিয়ে একটি ‘দাবিনামা’ প্রণয়ন করে বগুড়ার মোহাম্মদ আলী এবং খুলনার সবুর খানের সাহায্য কমনা করে ব্যর্থ হয়। ফলে ছাত্রনেতারা তাদের দাবি নিয়ে তেজগাঁও বিমান বন্দরে উপস্থিত হলে তৎকালীন ছাত্র ইউনিয়নের অন্যতম নেতা কাজী জাফর আহম্মদ ‘মোনায়েম খানের জামার কলার চেপে ধরে এক বক্তৃতায় বলেন ‘আপনি সেই মোনায়েম খান যিনি ভাষা আন্দোলনের বিরোধীতা করে ছিলেন; আপনি সেই মোনায়েম খান যিনি রাজবন্দিদের মুক্তির বিরোধীতা করার স্পর্দা দেখিয়েছেন। পাপীকেও পাপের প্রায়শ্চিত করার সুযোগ দিতে হয়, আপনাকেও দিচ্ছি; বলুন আপনি আইয়ুবের বিরোধী এবং রাজবন্দিদের মুক্তির কথা বলবেন।

পশ্চিমাদের শোষন-নিপীড়নের হাত থেকে বাঙ্গালীদের মুক্তির লক্ষ্যে ১৯৬২সালে শেখ মজিবুর রহমান আত্মগোপনকারী কমিউনিষ্ট নেতা মনি সিংহ ও খোকা রায়ের সঙ্গে গোপন বৈঠকে শেখ মজিবুর রহমান বলেন ‘দাদা একটি কথা আমি খোলা মনে বলতে চাই; আমার বিশ্বাস গণতন্ত্র ও শ্বায়িত্তশাসনে কিন্তু পাকিস্তানীরা তা মানবে না, কাজেই স্বাধীনতা ছাড়া বাঙ্গালীদের মুক্তির উপায় নাই।

ইতিমধ্যে কাস্মীর সংক্রান্ত গোলযোগের কারনে ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান-ভারতের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পড়ে। পাকিস্তান শাসক চক্র যুদ্ধে পূর্বপাকিস্তানের যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা না করে অধিকহারে বাঙ্গালিদের যুদ্ধ ক্ষেত্রে আত্মহুতির দিকে ঠেলে দেয়। অসীম সাহস ও দক্ষতা নিয়ে তারা প্রানপণ যুদ্ধ করলে জাতিসংঘের মধ্যস্তায় ‘তাসকন্দ চুক্তির’ মাধ্যমে যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে।

ইতিমধ্যে দেশের সাধারন জনগন স্বাধীনতার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। ফলে মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরীর নেতৃত্বে ‘ইনার সার্কেল নামে স্বাধীনতাকামী গ্রুপের’ আহব্বানে শেখ মজিবুর রহমান আগরতলায় যান। সেখানে স্বাধীনতাকামী সামরিক ও বেসামরিক কর্মকতাদের সাথে কয়েক দফা বৈঠক করেন এবং স্বাধীনতা সংগ্রামে ভারতের সহযোগিতা চান।

আগরতলা থেকে ফিরে এসেই তিনি ১৯৬৬ সালের ফ্রেরুয়ারী মাসে বাঙ্গালীর ‘মুক্তির সনদ’ হিসাবে ঐতিহাসিক ছয় দফা দাবি প্রেস করেন। এই ছয় দফা প্রস্তাবে বলা হয়-

১. লাহোর প্রস্তাব এর ওপর ভিত্তি করে সংবিধান একটি ফেডারেল ও সংসদীয় সরকারের অস্তিত্ব নিশ্চিত করবে, যে সংসদের সদস্যরা জনসংখ্যার ভিত্তিতে গঠিত নির্বাচনী এলাকা থেকে প্রতিনিধি হিসেবে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ভোটে নির্বাচিত হবেন। আইন প্রণয়নকারী পরিষদ প্রশাসনের চেয়ে উচ্চতর বলে বিবেচিত হবে।

২. ফেডারেল সরকার শুধুমাত্র প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র বিষয়ে নীতি নির্ধারণ করবে, অবশিষ্ট বিষয় পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান প্রাদেশিক সরকারের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে।

৩. উভয় ভাগে নিজস্ব মুদ্রা ও তহবিল থাকবে। পূর্ব পাকিস্তান থেকে সম্পদ পশ্চিম পাকিস্তানে যাওয়া রোধ করা গেলে অভিন্ন মুদ্রা চালু থাকতে পারে।

৪. কর ও রাজস্ব আদায় প্রাদেশিক সরকারের এখতিয়ারভুক্ত হবে, এবং ফেডারেল সরকার সংবিধানে স্বীকৃত পদ্ধতিতে প্রাদেশিক সরকারের কাছ থেকে অর্থের যোগান পাবে।

৫. প্রাদেশিক সরকার তার অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার ওপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখবে, স্বাধীণভাবে বিদেশে বাণিজ্য প্রতিনিধি প্রেরণ করতে পারবে এবং অন্য দেশের সাথে বাণিজ্য চুক্তিতে আবদ্ধ হতে পারবে। ফেডারেল সরকারের প্রয়োজনীয় বৈদেশিক অর্থ প্রাদেশিক সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া হবে।

৬ . প্রাদেশিক সরকার তার নিজস্ব মিলিশিয়া বা আধাসামরিক বাহিনী গঠন করতে পারবে।

ছয় দফার স-পক্ষে ব্যাপক জনপ্রিয়তা গড়ে উঠে। বাঙ্গালীরা এটিকে তাদের ‘মুক্তিরসনদ’ হিসাবে বিবেচনা করে। ১৯৬৬ সালে ৭মার্চ ছয়দফা ঘোষনাটি সারা পাকিস্তানের পত্র-পত্রিকায় ফলাও করে ছাপা হয়। শেখ মজিবুর রহমান ১১ মার্চ ঢাকা বিমান বন্দরে সাংবাদিক সম্মেলনে ছয়দফা ব্যাখ্যা করেন।

১৯৬৬ সালের ১২ই মার্চ ‘রমনাগ্রিনে বেসিক ডেমোক্রেসিস সম্মেলনে আইয়ুর খান ছয়দফা দাবি অবজ্ঞা করে অস্রের ভাষায় কথা বলতে থাকেন। মুসলিম লীগ, জামায়তে ইসলামী, পিডিপিসহ ডানপন্থিরা ছয়দফা দাবিকে পাকিস্তানের ঐক্য ও সংহতির জন্য বিপদজনক বলে উল্লেখ করেন।

 

সালের ১৮মার্চ মতিঝিলের হোটেল ইডেন গার্ডেনে আওয়ামী লীগ কাউন্সিলে ছয়দফা অনুমোদিত হলে পাকিস্তান সরকার শেখ মজিবুর রহমানসহ ৩৫ জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র নামে একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করেন। ১৯৬৮ সালের প্রথম ভাগে দায়ের করা এই মামলায় অভিযোগ করা হয় যে, শেখ মুজিব ও অন্যান্যরা ভারতের সাথে মিলে পাকিস্তানের অখন্ডতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। এই মামলাটির পূর্ণ নাম ছিল রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিবর রহমান গং মামলা’।

তবে এটি আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা হিসাবেই বেশি পরিচিত, কারণ মামলার অভিযোগে বলা হয়েছিল যে, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় কথিত ষড়যন্ত্রটি শুরু হয়েছিল। মামলা নিষ্পত্তির চার যুগ পর মামলার আসামী ক্যাপ্টেন এ. শওকত আলী ২০১১ সালে প্রকাশিত একটি স্বরচিত গ্রন্থে এ মামলাকে সত্য মামলা’ বলে দাবী করেন।

এই মামলার ফলেশ্রুতিতে পূর্ববাংলার জনমনে স্বঃ্স্ফুর্ত ভাবে পশ্চিম পাকিস্তান বিরোধী এক গণ-আন্দোলনের সৃষ্টি হয়। এই গণঅভূস্থানের পটভূমি এবং ফলাফল ছিল সুদূর প্রসারী। ১৯৬৯ সালের ৫ জানুয়ারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনে ‘ঢাকসুর’ কার্যালয়ে তৎকালীন ছাত্রলীগের নেতা ঢাকসুর ভি.পি তোফায়েল আহম্মদের সভাপতিত্বে চার ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

উক্ত সম্মেলনে ছাত্রদের ঐক্যবদ্ধ প্লাটফর্মে কেন্দ্রীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। এই কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে ১১ দফা দাবি ঘোষনা করা হয়। 8ই জানুয়ারী সম্মিলিত বিরোধী দল সন্ধ্যায় শেখ মুজিবের বাসভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ‘আটদফা ভিত্তিক একটি ঘোষনাপত্র প্রকাশ করে।

৯ই জানুয়ারী এই ঐক্যফ্রন্টের ঐক্যের ভিত্তিতে ‘Democratic Action Committee’ সংক্ষেপে ‘ডাক’ গঠন করে। ১২ই জানুয়ারী ডাকের পক্ষ্যে ‘প্রাদেশিক সমুন্বয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। আট দফা দাবির ভিত্তিতে ১৭ইজানুয়ারী দাবি দিবস’ পালনের সিন্ধান্ত গৃহিত হয়।

কিন্তু আইয়ুব সরকার এই দিন  দ্বারা জারি করেন। ছাত্র জনতা ১৪৪ দ্বারা ভঙ্গ করে ডাকের পক্ষ থেকে বায়তুল মোকারমে, এবং ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় সমাবেশের আহব্বান করা হয়। সমাবেশে পুলিশ ব্যাপক লাঠিচার্জ করলে ১৮ই জানুয়ারী শনিবার ঢাকা শহরের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট পালিত করা হয়।

সেই দিন ভোরে বটতলায় এক সমাবেশ থেকে স্লোগান আসে ‘শেখ মজিবের মুক্তি চাই, আইয়ুব খানের পতন চাই। সন্ধ্যায় (জিন্নাহ হল) বর্তমান সূর্যসেন হলে ইপিআর কতৃর্ক ছাত্রদের উপর লাঠিচার্জ করা হলে ১৯ জানুয়ারী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রদের একটি মিছিল বের হয়। পুলিশ তাতে ব্যাপক লাঠিচার্জ এবং গুলাবর্ষন করে।

২০ই জানুয়ারী কেন্দ্রীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে ১১ দফার দাবিতে ঢাকাসহ প্রদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট পালিত হয়। এই সময় ছাত্র মিছিলে গুলি চালানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আসাদের মুত্যৃ হয়। শহীদ মিনারে শোকসমাবেশে ছাত্ররা ‘আসাদের রক্ত ছুয়ে শপথ গ্রহন করে এবং ২১শে জানুয়ারী পল্টন ময়দানে শহীদ ‘আসাদের’ গায়েবানা জানাজা শেষে ২২ জানুয়ারী শোক মিছিল, কালো ব্যাজ ধারন, কালো পতাকা উত্তোলন কর্মসূচী ঘোষনা করা হয়।

ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে ২৪ই জানুয়ারী সন্ধ্যায় মশাল মিছিল এবং হরতালের আহব্বান করা হয়। এই হরতাল ও গণ মিছিলে গুলি চালালে ঢাকার নবকুমার ইনষ্টিটিউটের নবম শ্রেনীর ছাত্র ‘মতিউর রহমান’ শহীদ হয়। এই সময় ক্ষিপ্তজনতা দৈনিক পাকিস্তান, মনিং নিউজ এবং পয়গাম পত্রিকা অফিসে আগুন লাগিয়ে দেয়।

ফলে ২৫, ২৬ ও ২৭ই জানুয়ারী আইয়ুব সরকার ‘সন্ধ্যা আইন’ জারি করে। ২৭ জানুয়ারী ঢাকায় গোলাবর্ষনের প্রতিবাদে পশ্চিম পাকিস্তানেও গন বিক্ষোভ শুরু হয়। ১লা ফ্রেরুয়ারী আইয়ুব খান বেতারে জাতির উদেশ্যে ‘ভাষন’ প্রদান করে। কিন্তু বিরোধীদল ও ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ এই ভাষন প্রত্যাখান করে।

৯ই জানুয়ারী সর্বদলীয় ‘ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ’ পল্টল ময়দানে ‘শপথ’ দিবস পালন করে। উক্ত শপথ দিবসে ১০জন সর্বদলীয় ছাত্রনেতা জীবনের বিনিময়ে হলেও ১১দফা দাবি প্রতিষ্ঠার ঘোষনা করে এবং শেখ মজিবসহ সকল রাজবন্দীর মুক্তির লক্ষ্যে দেশবসীর প্রতি আন্দোলন চালিয়ে যাবার আহব্বান জানান।

১১ই ফ্রেরুয়ারী পাকিস্তান প্রতিরক্ষা আইনে ধৃত রাজবন্দীদের মুক্তি দেয়া হলে ১২ই ফ্রেরুয়ারী তাজউদ্দিন আহম্মেদ মুক্তি লাভ করেন। ১৪ই ফ্রেরুয়ারী ‘ডাকের’ পক্ষ থেকে হরতালের আহব্বান করা হয় এবং অবাঞ্চিত বক্তব্যের কারনে নূরুল আমীন এবং ফরিদ উদ্দিন আহম্মদকে লাঞ্চিত করা হয়।

১৫ই ফ্রেরুয়ারী আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম আসামী সার্জেন্ট ‘জহুরুল হককে’ ক্যান্ট্রোনমেন্টের অভ্যন্তরে নিমর্ম ভাবে গুলি হত্যা করা হয়। আইয়ুব খান সরকার ২৫ ও ২৬ ফ্রেরুয়ারী ‘সন্ধ্যাআইন’ জারি করে আগরতলার মামলা প্রত্যাহার ও শেখ মজিবসহ সকল বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের প্যারেলে মুক্তি দিয়ে এক গোলটেবিল বৈঠকের আহব্বান জানালে ছাত্র জনতা তা প্রত্যাখান করে।

১৬ই ফ্রেরুয়ারী ছাত্র জনতার বিক্ষোভে ঢাকা শহর দাউ দাউ করে জ্বলে উঠে এবং ১৭ ফ্রেরুয়ারী সারা দেশে হরতাল পালিত হয়। ১৮ই ফ্রেরুয়ারী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও রসায়ন বিভাগের রিডার শামসুজ্জোহাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে পাকিস্তানী সেনারা বেয়োনেট চার্জে নিমর্ম ভাবে হত্যা করে। ফলে সারা দেশব্যাপী এক উত্তাল আন্দোলনের সৃষ্টি হয়।

২০ ফ্রেরুয়ারী ‘সন্ধ্যা আইন’ প্রত্যাহার করা হয় এবং ২১ই ফ্রেরুয়ারী পল্টনে মহাসমুদ্রে ছাত্রসমাজের অগ্রণায়কদের শপথ এবং শেখ মজিবসহ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় আটক সকল রাজবন্দীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে ২৪ ঘন্টার আল্ট্রিমেটাম দেওয়া হয়। ২২ই শে ফ্রেরুয়ারী নিরুপায় আইয়ুব খান শেখ মজিবসহ সকল রাজবন্দীদের নিঃশর্ত মুক্তি প্রদান করেন।

২৩শে ফ্রেরুয়ারী ‘সর্বদলীয় ছাত্রসংগ্রাম’ পরিষদ বিকেল ৩টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্দ্যানে এক জনসমাবেশের আহব্বান করলে ১০ লক্ষ মানুষের উপস্থিতিতে গনঅভূস্থানের অন্যমত ছাত্রনেতা তোফায়েল আহম্মদ শেখ মুজিবকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভুষিত করেন।

এখানে উল্লেখ থাকে যে, বঙ্গবন্ধু উপাধীর জন্য তিন জনের নাম নির্বাচিত করা হলেও (সোহরাওয়ার্দী, মওলানা ভাসানী এবং শেখ মজিবর রহমান) শেষ পর্যন্ত ছাত্রলীগের সিন্ধান্তেই শেখ মুজিবকে বঙ্গবন্ধু উপাধীতে ভূষিত করা হয়। ফলে অপমান-লাঞ্চনা নিয়ে আইয়ুব খান পদত্যাগ করেন।
-মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটি


https://banglatopnews24.com/sadinota-anduloner-potobumita-oetihasik/

13
Common Forum / আমার ‘মা’ !
« on: May 16, 2022, 09:12:30 AM »
আমার মা বাল্যশিক্ষা পর্যন্ত পড়া। এখনও কুড়িতে কুড়িতে গণেন। বাবা বড়জোড় পঞ্চম শ্রেণী পাশ। বাবা কৃষিকাজ ও ডিলারী করতেন। সে-কালে ডিলারদের অনেক মূল্য ছিল। সরকারের সমস্ত রিলিফ স্বল্প মূল্যে ডিলার-দের মাধ্যমে জনগনের কাছে পৌঁছিয়ে দেয়া হতো।

সাধারনত সৎও ভাল মনের মানুষদেরকেই ডিলার হিসাবে নিয়োগ দেয়া হতো। আর ডিলারী ব্যবসাটা আমাদের পৈতৃক ব্যবসা ছিল। সেজু ভাই বাবার ডিলারী ব্যবসা এখনও ধরে রেখেছেন। আমাদের বাড়ী, ‘ডিলার বাড়ী‘ হিসাবে সাটুরিয়া উপজেলার না হলেও; অন্তত দিঘলীয়া ইউনিয়নের প্রত্যেক গ্রামের মানুষ চিনেন।

আমাদের বাড়ীতে রিলিফের মাল ডেলিভারি দেয়ার দিন, হাজারো মানুষের উল্ল্যাস, চেঁচামেচি আর হাঁক-ডাক লেগেই থাকতো। বাবার সকল কাজের প্রধান সাহায্যকারী ও পরামর্শক কিম্বা বিষন্নতাভোগি ছিলেন মা।

মা, বাবাকে ‘এ্যাদু শুনছ নাকি’ বলে ডাকত।  চাল, চিনি, ডাল, লবণও তেল বিতরণ করার জন্য বাহির বাড়ী আলাদা একটা ঘর ছিল। যাকে আমরা ‘বাংলা-ঘর’ বলে জানতাম। সারা দিন বাংলাঘরে বাবা চাল, চিনি, ডাল, লবণ ও তেল বিলি করতেন আর নালিশ জমা হতো মায়েয় রান্না ঘরে।

নালিশের পাল্লা অতিশয় ভারি হলে মা রান্না ঘর হতে বাহির হয়ে বাংলাঘরের পাশে গিয়ে কাশি দিতেন। হাজারো লোকের ভীরে কাশির শব্দ শুনেই বাবা বুঝতে পারতেন। তাৎক্ষনীক তিনি ঘর হতে বাহিরে আসতেন। কাঁচু-মাঁচু হয়ে বলতেন- কি হয়েছে? তাড়াতাড়ি বল..।

মা, হুকুমের সুরে বলতেন-ছমিরণ চাল ডাল ও চিনি পায়নি, ওর পরিবারের সদস্য সংখ্যা তিন। হিসাব আনুয়ায়ী ছয় কেজী চাল, দুই কেজী ডাল ও এক কেজী চিনি পায়। নয়না মিয়াকে দিয়ে চাল, চিনি ও ডাল রান্না ঘরে পাঠিয়ে দিও। টাকা আমার কাছে জমা দিয়েছে। বাবার ইতস্ততায়ও কোন কাজ হতো না। সময় মত চাল, চিনি, ডাল রান্না ঘরে চলে যেত।

এদিকে ছমিরণ মায়ের রান্না ঘরে বসে উনুণে আগুন দিয়ে ফুপিঁয়ে ফুপিঁয়ে কাদঁতো, ভাউজ, কি করি-করি বলে! মায়ের হাত হতে চাল, ডাল, লবণ ও চিনি নিয়ে বাড়ী যাবার সময় মায়ের পা ছুঁতে চাইলে মা তাকে বুকেঁ জড়িয়ে দিতেন। ছমিরণ ভাউজ’ ভাউজ; বলে স্বজোড়ে কান্নাঁয় মায়ের বুকে ভেঙ্গে পড়তো।

তখন সমাজে অর্থহীন বৃত্তহীন ছমিরনদের একমাত্র ভরসা ছিলেন আমার মা। এই সকল ঘটনা এক-দুই দিন নয়, নিত্যই আমাদের বাড়ীতে ঘটতে দেখেছি।

অবসর, সন্ধায়-পাড়ার আফাজ পাগলা, রসূলদী কাকু, সুলতান মাষ্টার, জিন্দা পাগলা, আকালী কাকু আমাদের বাড়ীতে আসতেন। বাড়ীর উঠানে জমিয়ে বৈঠকী গানের আসর বসত। বাবার কণ্ঠে-‘সুন্দর এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হবে’- গানটি শুনে মা আমাকে কোলে নিয়ে খুব কাঁন্না-কাটি করতো।

বাবা প্রয়াত হয়েছেন, আজ প্রায় ২৩ বছর। মায়ের বয়স ৮০‘এর কাছা-কাছি। ভাল ভাবে চোখে দেখেন না। আমাদের চাচিতারা বাজার সংলগ্ন চল্লিশ শতকের বাড়ীর, ছোট একটি ঘরে মা থাকেন অনেকটাই একা, নিবৃত্তচারী হয়ে। আমরা তিন ভাই ঢাকা থাকি। সকলেরই সময়ে অভাব মায়ের খোজঁ-খবর তেমন রাখতে পারি না। কিন্তু মা আমাদের খোজঁ- খবর ঠিকই রাখেন। প্রতি শুক্রবার হলেই মা  শুবার ঘরের বারান্দায় এসে বসে থাকেন, আর মাঝে মাঝে আওয়াজ তুলেন- উ কে এলো গো ...!!

আমি মায়ের ছোট সন্তান। মায়ের কাছে ছোট্র বেলায় বেশী বেশী ঘোরঘুর করতাম। এখন আর মায়ের কাছে তেমন বসা হয় না। খাবার শেষে মায়ের আঁচলে হাত মুঁছা হয় না, মায়ের কাছে বায়না ধরতে হয় না, মায়ের নতুন কাথাঁ সিলায়ে গড়াগড়ি যেতে হয় না, মায়ের আঁচলের খিঁট বাঁধা টাকা চুরি করতে হয়না। কিম্বা ক্রান্ত চোখে সাঝের সন্ধায় মা-বাবার হাত, পা টিপে দিতে হয় না। এখন আমি বৌয়ের মরমী আঁচলের সুবাসে মায়ের ভালবাসার সলিল সমাধি দিয়েছি।

আজ মা দিবস। তাই কাগজের পাতায় দু‘ছত্র লিখে মায়ের প্রতি কৃজ্ঞতা জানালাম। জানি এটি নিন্দনীয়, তবু মা কে স্বরণে-বরনে রাখার প্রচেষ্টায় মন সব সময় কাঁদে।

পৃথিবী বড়ই অদ্ভূত। আশ্রয়দাতা এখানে প্রয়োজনে আশ্রয়হীন হয়। ব্যক্তিক সুযোগ-সুবিধার কাছে ভগবান অসহায়। ভাল লাগা, ভালবাসা এখানে বিনিময়ে বিক্রি হয়। কিন্তু মাতৃত্ব-পিতার ভালবাসার প্রকৃতির ধারা স্রোতের মতো বহমান রয়ে যায়।

মা ,আমি বড় অভাগা ছেলে। আজ ‘মা দিবসে’ অবনত মস্তকে তোমাকে প্রণাম করছি, যদিও সময়ে বেড়াজালে আমি জাগতিক; তুমি আমাকে ক্ষমা কর। তোমার ভালবাসার শূণ্যতা আজও আমাকে কাদাঁয়। এ জগৎ সংসারের প্রাপ্তি, ভাললাগা, ভালবাসা তোমার শূণ্যতা অসার মনে হয়। মা গো, আমি আজও তোমাকে আগের মতই ভালবাসি। আজকে মা দিবস। এই দিনে পৃথিবীর সমস্ত মা-দের পদচুম্বন করে পাপাসিক্ত দেহকে পবিত্র করতে চাই।

মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।

14
Common Forum / অচিন চেনা-
« on: March 15, 2022, 03:33:28 PM »
শব্দ দিয়ে জব্দ করা
শব্দ ভালবাসা,
শব্দে চলে মনের গতি
অনুষ্কশাতে আশা।।

শব্দ আছে বুকের ভেতর
অচিন চেনার ভাষা,
শব্দ দিয়ে রপ্ত করি
অবুঝ মনের আশা।।

শব্দে চলে লেনাদেনা
গোপন গিরীপথ,
শব্দ চয়ণ মধুরবীনা
প্রাণ প্রিয়সীর মত।।

শব্দে আছে আশার সিন্ধু
বিষাদ ভারি জল,
শব্দে ফুটে কামুকচেরী
পদ্ম শতদল।।

শব্দে চেনা শব্দ জানা
শব্দ অভিরাম,
শব্দে উঠে অট্রলিকা
ঝড়ে শ্রমিকের ঘাম।।

শব্দে আমার ধর্মকথা
নিয়ম নীতির বেড়ী,
শব্দে উঠে ডাক-প্রতিরোধ
বাধঁ ছেদীর তুড়ি।।





15
Common Forum / Re: আমার ভাষা আন্দোলন
« on: February 22, 2022, 09:12:51 AM »
আমার ভাষা আনন্দোলনের পটভুমি--ফিরে দেখা

Pages: [1] 2 3 ... 12