Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Topics - drrana

Pages: [1]
1
Business & Entrepreneurship / How to gain knowledge?
« on: February 09, 2019, 04:51:48 PM »
Why to gain knowledge?
We have not yet answered the question in the title. Have we? We will soon!

Lets us consider an example. Two animals are walking down a path. One of them falls into a quick sand, what would another animal do? We cannot say anything deterministically, however lets assume that the animal wants to help other animal with all its capability. It still cannot, because it doesn’t have enough knowledge to help the other animal. Lets us consider a different scenario, Earth and Mars are orbiting around Sun and an asteroid is in the orbit of Mars. Can Mars save itself from the danger? Probably no. But if somehow Mars could signal Earth that it needs help, collective knowledge of all the people in the earth can pitch in and help. Thus,

“Service that we can offer to others is a function of Knowledge that we possess.”
Source https://medium.com/@srkiranraj/why-to-gain-knowledge-693dd4f4b4ea

2

ভালো থাকুন

সারা দিন ক্লান্ত লাগে?
ডা. মো. ফিরোজ আমিন
০৭ আগস্ট ২০১৮, ২৩:২৪
আপডেট: ০৭ আগস্ট ২০১৮, ২৩:২৭
প্রিন্ট সংস্করণ
  ১


সারা দিন খুব ক্লান্ত লাগে, অবসন্ন লাগে? কোনো কাজ করতে মন চায় না? মনে হয় কেবল বিশ্রাম নিই। শরীর ব্যথা করে, ম্যাজম্যাজ করে। ঘুম ঘুম ভাব হয়।

আজকাল রোগীরা প্রায়ই এমন সব সমস্যার কথা বলেন। আদিম যুগে মানুষ শিকারি ছিল, বৈরী পরিস্থিতির সঙ্গে যুদ্ধ করতে হতো। তখন তাকে সাহায্য করত নানা স্ট্রেস হরমোন, যেমন কর্টিসল, এপিনেফ্রিন ইত্যাদি। বর্তমানে মানুষের স্ট্রেস বা মানসিক চাপের ধরন আলাদা। এখনো প্রচুর স্ট্রেস হরমোন তৈরি হয় বটে, কিন্তু তা আগের মতো খরচ হয় না। এই স্ট্রেস হরমোনের ক্ষতিকর প্রভাবে আমাদের রক্তে শর্করা, রক্তচাপ বাড়ে, হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি বাড়ে, অবসাদ বাড়ে, বিষণ্নতা বাড়ে, এমনকি ওজনও বাড়ে।

স্ট্রেস হরমোনের এই ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্তি লাভের উপায় হলো মানসিক চাপ কমানো, নিয়মিত ব্যায়াম বা পরিশ্রম করে হরমোনের লাগাম টেনে ধরা, সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও যথেষ্ট ঘুম। প্রার্থনা, যোগব্যায়াম, মানবসেবায় নিয়োজিত হওয়া, গাছপালা বা পশুপাখির পরিচর্যা, পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে আনন্দময় সময় কাটানো, ঘুরতে যাওয়া—এমন নানা কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আপনি স্ট্রেস হরমোন কমাতে পারেন। ভাবছেন সারা দিন এত পরিশ্রম করি, তারপর আবার ব্যায়াম? আসলে এই নিত্যনৈমিত্তিক পরিশ্রমে স্ট্রেস হরমোন খরচ হয় না, বরং ক্লান্তি বাড়ে।

স্ট্রেস হরমোন কমাতে সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন ৩০ মিনিট করে এমনভাবে হাঁটতে হবে, যাতে হৃৎস্পন্দন বাড়ে, রক্ত চলাচল বাড়ে। যত কাজই থাকুক, রাতে নিশ্ছিদ্র ঘুম চাই ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা। ঘুমের আগে ফেসবুক, মুঠোফোন, টিভি দেখা বন্ধ করুন।Eprothomalo

থাইরয়েড হরমোন, সেক্স হরমোন, ভিটামিন ডি কমে গেলেও ক্লান্তি ও অবসাদ দেখা দেয়। রক্তশূন্যতাও হতে পারে একটি কারণ। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসে আপনার ক্লান্তি ভাব আসবেই। কিছু ওষুধ শরীরের লবণ-পানি কমিয়ে দেয় ও অবসাদগ্রস্ত করে তোলে। তাই এসব দিকেও খেয়াল রাখুন।

ক্লান্তি ও অবসাদ কমাতে তাই প্রথমে প্রয়োজন আপনার সচেতনতা। বিভিন্ন খাবারের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন। ক্যালরি ও প্রয়োজনীয় ভিটামিন খনিজের মাত্রা বুঝে খাবার বেছে খান। জাঙ্ক ফুড, কোমল পানীয় এড়িয়ে চলুন। নিয়মিত ব্যায়াম করে স্ট্রেস হরমোন ঝেড়ে ফেলুন। ঘুমের ব্যাপারে কোনো আপস নয়। স্বাস্থ্যকর ও আনন্দময় জীবনযাপনের চেষ্টা করুন। এরপরও ক্লান্তিবোধ দূর না হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।

সহযোগী অধ্যাপক, এন্ডোক্রাইনোলজি ও মেটাবলিজম বিভাগ, বারডেম হাসপাতাল

3
Source Prothom Alo


বাজেটে শেয়ারবাজারের জন্য উল্লেখযোগ্য কোনো দাবিদাওয়া নেই। তবু বাজেট শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের জন্য এখন বড় ভাবনা। কারণ বাজেটকে কেন্দ্র করে টানা দরপতনে বাজারের সূচক তলানিতে এসে ঠেকেছে। বাজেট ছাড়া বছরটি নির্বাচনেরও। এ কারণে আগেভাগে শেয়ারবাজার ছাড়ছে বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও। আর নির্বাচনের বছর হওয়ায় বাজারে কারসাজির প্রবণতা বাড়তে পারে বলে মনে করছেন বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অনেকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাজারে নিয়ন্ত্রক সংস্থার তদারকি দুর্বলতা রয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে শুধু বাজেটের জুজুর ভয়ে সূচক কমতে কমতে ৫ হাজারের কাছাকাছি চলে এসেছে। অথচ এ সময়ে আর্থিক খাতে এমন কোনো অবস্থা তৈরি হয়নি, যাতে সূচকের টানা পতন ঘটতে পারে। শেয়ার-বাজারের টানা দরপতন নিয়ে গত কয়েক দিনে কথা হয় বাজারসংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে। তাঁদের কেউই এ দরপতনের যৌক্তিক কোনো কারণ জানাতে পারেননি।

দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) এক পরিচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাজারের প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেন সুশাসনের অভাবকে। তাঁর মতে, একদিকে ভালো কোম্পানির বড় ধরনের দরপতন ঘটছে, আরেক দিকে মানহীন কোম্পানির লাগামহীন দাম বাড়ছে। যৌক্তিক কারণে বাজারে পতন হলে খারাপ কোম্পানিরই বেশি দরপতন হওয়ার কথা। কিন্তু ঘটছে মূলত উল্টোটি। অথচ এসব দেখার যেন কেউ নেই।

সূচকের পতন
ডিএসইর তথ্য বলছে, গত ৫ মাসে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে মোট ৯৩৭ পয়েন্ট। এর মধ্যে টানা পতন শুরু হয় এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ থেকে। ২৬ এপ্রিল থেকে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত ডিএসইএক্স সূচকটি কমেছে প্রায় ৪৬৭ পয়েন্ট। ফলে গতকাল দিন শেষে সূচক নেমে আসে ৫ হাজার ৩৪৭ পয়েন্টে। চলতি বছরের শুরুর দিনে ডিএসইএক্স ছিল ৬ হাজার ২৫৪ পয়েন্টে।

বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গত এক মাসে প্রায় পৌনে ৫০০ পয়েন্ট সূচক কমাতে সবচেয়ে বেশি দরপতন ঘটানো হয়েছে ভালো মানের মৌলভিত্তির কোম্পানির শেয়ারের দামের। কারণ সূচকে এসব কোম্পানির শেয়ারের প্রভাব বেশি।

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, গত ১৪ মে থেকে মাত্র ১৩ কার্যদিবসে গ্রামীণফোনের শেয়ারের দাম ৬০ টাকার বেশি কমেছে। আর এ পতন হয়েছে একটানা। একক কোম্পানি হিসেবে ঢাকার বাজারে সূচকের উত্থান-পতনে বড় ভূমিকা রয়েছে কোম্পানিটির। এ ছাড়া খাত হিসেবে সূচকের উত্থান-পতনে বড় প্রভাব রয়েছে ব্যাংক খাতের। যে কোম্পানির মূলধন যত বেশি সূচকে সেই কোম্পানির প্রভাবও তত বেশি। সাম্প্রতিক দরপতনে সেসব কোম্পানিরই বেশি দরপতন ঘটেছে, যেসব কোম্পানির মূলধন বেশি।
বাজারের সাম্প্রতিক এ দরপতনের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসইর সাবেক পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, সাম্প্রতিক দরপতনে মৌলভিত্তির কোম্পানির শেয়ারের দাম যেভাবে কমেছে, তা অযৌক্তিক। এ কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক আরও বেড়েছে।

গুজব আর কারসাজি
গুজবে যাঁরা কান পাতেন, তাঁরা গত এপ্রিল থেকেই শুনছিলেন যে বাজেটের আগে সূচক ৫ হাজারের কাছে নিয়ে যাওয়া হবে। বাজেটের পরে আবার বাড়বে। ঠিক তা-ই হয়েছে। এ সময় ভালো কয়েকটি কোম্পানির শেয়ারের দর পড়ে যায়। যাঁরা বাজারের কারসাজির ওপর আস্থা রাখেন, তাঁরা এই সুযোগ ঠিকই কাজে লাগাচ্ছেন। বড় বড় কিছু বিনিয়োগকারী আগেভাগে শেয়ার বিক্রি করে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল সূচক কমে একটি পর্যায়ে নামলে কম দামে আবারও শেয়ার কিনে বাজারে সক্রিয় হবেন তাঁরা। এমনকি অনেক প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীও তাদের বিনিয়োগ কমিয়ে দিয়েছে বাজারে।

মৌলভিত্তির ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ তালিকার শীর্ষে রয়েছে এসিআই। গত ১১ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ৩৯ টাকা কমেছে। গত এক মাসে ২৮ টাকা মূল্য হারিয়েছে ব্লু-চিপস কোম্পানির তালিকাভুক্ত স্কয়ার ফার্মা। অন্যদিকে দুর্বল ও মানহীন কোম্পানি হিসেবে জেড শ্রেণিভুক্ত মর্ডান ডায়িংয়ের শেয়ারের দাম গত ৫ কার্যদিবসেই বেড়েছে ৬২ টাকা। ২৯ মে কোম্পানিটির শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ১৯০ টাকা। গতকাল দিন শেষে তা বেড়ে হয়েছে ২৫২ টাকা। গত ৪ কার্যদিবসে ১৯ টাকা বেড়েছে জেড শ্রেণিভুক্ত নামসর্বস্ব আরেক কোম্পানি রহিমা ফুডের।

এ ছাড়া তালিকাভুক্ত নতুন বেশ কয়েকটি কোম্পানি কয়েক বছর না যেতেই নেমে এসেছে আইপিও মূল্যের নিচে। ২০১৫ সালে বাজারে আসে বস্ত্র খাতের কোম্পানি সিঅ্যান্ডএ। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে কোম্পানিটি প্রতিটি শেয়ার ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে বিক্রি করে। গতকাল দিন শেষে এ কোম্পানির শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ৬ টাকা ৪০ পয়সা। একই বছর আইপিওতে ২৬ টাকায় শেয়ার বিক্রি করে বাজারে তালিকাভুক্ত হয় তশরিফা ইন্ডাস্ট্রিজ। গতকাল দিন শেষে সেই দাম কমে নেমে এসেছে ১৮ টাকায়।

দরপতনের কারণ জানতে বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে গত মাসে বৈঠক করেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সাইফুর রহমান। সেখানে বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা পতনের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তিশ্রেণির বড় বিনিয়োগকারীদের নিষ্ক্রিয়তা, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির চাপসহ বাজেটকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন।

মন্দা বিদেশি বিনিয়োগে
বাজেট ইস্যুর পাশাপাশি বছরটি নির্বাচনেরও। এ কারণে বাজারে বিদেশি বিনিয়োগেও কিছুটা মন্দাভাব চলছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অনেকে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন। ডিএসই সূত্রে প্রাপ্ত সর্বশেষ বিদেশি বিনিয়োগের তথ্য অনুযায়ী, মে মাসে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা যে পরিমাণ শেয়ার কিনেছেন, তার দ্বিগুণ বিক্রি করেছেন। এ মাসে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির পরিমাণ ছিল ৬২৪ কোটি টাকার। তার বিপরীতে কেনার পরিমাণ ছিল ৩৪২ কোটি টাকা।

এদিকে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির সঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নাম জড়িয়ে আছে। কারণ বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে ১৯৯৬ ও ২০১০ সালের দুই দফায় কেলেঙ্কারির যে ঘটনা ঘটেছে, দুবারই রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার। তাই নির্বাচনের আগে বাজারের টানা দরপতনে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক বেড়েছে।

জানতে চাইলে বেসরকারি ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদের শিক্ষক মোহাম্মদ মুসা বলেন, নির্বাচনের বছরে দেশ থেকে অর্থ পাচার বেড়ে যায়। যে টাকাটা বিদেশে পাচার করা হয়, তা দেশের ভেতরে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করা থাকে। এখন হয়তো শেয়ারবাজার থেকে কেউ কেউ টাকা তুলে বিদেশে নিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া নির্বাচন সামনে রেখে কারসাজিকারকেরাও বাজারে সক্রিয় হয়ে ওঠেন। কৌশলে তাঁরা তখন দরপতন ঘটিয়ে কম দামে শেয়ার কিনে নেওয়ার চেষ্টা করেন। পাশাপাশি বাজেটকেও দরপতনের হাতিয়ার হিসেবে কাজে লাগানো হচ্ছে। সব মিলিয়ে বাজারের সাম্প্রতিক এ দরপতন।

দরপতনের বাজারে নিয়ন্ত্রক সংস্থার ভূমিকা সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএসইসির মুখপাত্র সাইফুর রহমান বলেন, ‘দরপতন ঠেকাতে আমরা আমাদের নীতি-সহায়তা অব্যাহত রেখেছি। পাশাপাশি নিয়মিত তদারকিও অব্যাহত রয়েছে। বেশ কিছু বিষয়ে তদন্ত চলছে।’

4
Source Prothom Alo


ঈদুল আজহা ঘনিয়ে আসতেই চট্টগ্রামের পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জ-আছদগঞ্জে বাড়ল মসলার দাম। এক থেকে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ছয় ধরনের মসলার দাম কেজিতে ২০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ঈদের বাজার ধরতে খুচরা ব্যবসায়ীরা যখন পাইকারি বাজার থেকে কেনাকাটা শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তখনই এসব মসলার দাম বাড়ানো হয়েছে।

আমদানিকারকেরা বলছেন, মৌসুম শেষ হওয়ায় কিছু মসলার বিশ্ববাজার এখন চড়া। বন্দরে কনটেইনারজটের কারণে সময়মতো আমদানি করা মসলা হাতে আসছে না। এর পাশাপাশি চাহিদাও বেশি।

জানতে চাইলে আমদানিকারক ফারুক ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের কর্ণধার ফারুক আহমেদ গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, বাজারে এলাচির দাম সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। পাশাপাশি জিরা, দারুচিনি, গোলমরিচ, জায়ফল ও লবঙ্গের দাম প্রতি কেজি ২০ থেকে ৬০ টাকা বেড়েছে। দেশ ও মানভেদে মসলার দামে অনেক বেশি ব্যবধান থাকে।

দেশে মসলার চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে ঈদুল আজহায়। এ সময় মাংস রান্নার জন্য বাড়তি পরিমাণে জিরা, এলাচি, দারুচিনি, গোলমরিচ, লবঙ্গ ইত্যাদি মসলা কেনেন ক্রেতারা। এসব মসলাকে দেশে গরমমসলা বলা হয়। এগুলো দেশে উৎপাদিত হয় না, চাহিদার প্রায় পুরোটুকুই বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করে মেটানো হয়।

চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ পাইকারি বাজারে গুয়াতেমালা থেকে আমদানি করা সবচেয়ে ভালো মানের এলাচির দাম প্রতি কেজি ১০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫৫০ টাকায়। খুচরায় প্রতি ১০০ গ্রাম এলাচি মিলছে ১৭০-১৮০ টাকা দরে, অর্থাৎ প্রতি কেজির দাম ১ হাজার ৭০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা। পাইকারিতে ভারতীয় জিরার দাম প্রতি কেজি ৪০ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকায়। এই জিরা খুচরা বাজারে প্রতি ১০০ গ্রাম বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। বাজারে অবশ্য সিরিয়া ও তুরস্ক থেকে আমদানি করা জিরার দাম ভারতীয় জিরার চেয়ে বেশি। এ দুটি দেশের জিরা প্রতি কেজি ৩৬০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

দারুচিনি আমদানি হয় চীন ও ভিয়েতনাম থেকে। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে দারুচিনির দাম বেড়েছে প্রতি কেজি ৫০ টাকা। খুচরা ব্যবসায়ীরা গতকাল খাতুনগঞ্জ থেকে প্রতি কেজি চীনা দারুচিনি কিনেছেন ২৭০ টাকায়। ভিয়েতনামের দারুচিনি বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ২৪০ টাকা। খুচরা বাজারে দারুচিনি প্রতি ১০০ গ্রাম ৩৫ টাকা দরে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।

এলাচির দর কেজিতে ১০০ টাকা এবং জিরা, দারুচিনি, গোলমরিচ, জায়ফল ও লবঙ্গ কেজিতে ২০-৬০ টাকা বেড়েছে।
দেশে জায়ফলের চাহিদা তুলনামূলক কম। এটি আমদানি হয় শ্রীলঙ্কা ও ভারত থেকে। পাইকারি বাজারে জায়ফল প্রতি কেজি ৪০০ টাকা ও গোলমরিচ প্রতি কেজি ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই দুটি মসলা খুচরায় ১০০ গ্রাম বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকায়, অর্থাৎ প্রতি কেজি ৫৫০ টাকা।

লবঙ্গ আমদানি হয় ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মাদাগাস্কার ও ব্রাজিল থেকে। দেশ ও মানভেদে লবঙ্গের দাম বেড়েছে প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা। বাজারে ভারতীয় লবঙ্গ প্রতি কেজি ৮৮০-৮৯০ টাকা ও ইন্দোনেশিয়ার লবঙ্গ ৯২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরায় প্রতি ১০০ গ্রাম লবঙ্গ মিলছে ১০০ টাকায়।

 

আমদানি বেড়েছে

চট্টগ্রাম বন্দরের আমদানি তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সদ্য সমাপ্ত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে প্রধান ছয় ধরনের মসলা আমদানি হয়েছে ৪ কোটি ৫৪ লাখ কেজি। বন্দর থেকে খালাসের পর এসব মসলার দাম পড়ে ১ হাজার ২৪৯ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে মসলা আমদানি বেড়েছে ৪৪ লাখ কেজি। অবশ্য চট্টগ্রাম বন্দর ছাড়াও স্থলবন্দর দিয়ে সামান্য পরিমাণে মসলা আমদানি হয়ে থাকে।

গত অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ৪০ লাখ কেজি এলাচি আমদানি হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ৯ লাখ কেজি বেশি। একই সময়ে ২ কোটি ৭২ লাখ কেজি জিরা আমদানি হয়, যা আগের বছরের চেয়ে ৩২ লাখ কেজি বেশি। দারুচিনি আমদানিও বেড়েছে। গত অর্থবছর দারুচিনি আমদানি হয় ১ কোটি ১৩ লাখ কেজি, যা আগের বছরের চেয়ে ৩৮ হাজার কেজি বেশি। আলোচ্য সময়ে জায়ফল আমদানি হয় ২ লাখ ৮০ হাজার কেজি।

বাংলাদেশ পাইকারি গরম মসলা ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি অমর কান্তি দাশ গতকাল বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, মসলার পর্যাপ্ত মজুত আছে। ফলে ঈদে সরবরাহে কোনো সংকট হবে না। তিনি বলেন, ভারতে কয়েকটি প্রদেশে বন্যার কারণে এলাচির আবাদ নষ্ট হয়েছে। ফলে সেখানে দাম বেড়ে গেছে। যার প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশে। তবে জিরা, দারুচিনি, গোলমরিচসহ অন্যান্য মসলার দাম তেমন একটা বাড়েনি।

5
source Daily Prothom Alo
রাজধানীর কাঁচাবাজারে চারটি পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। এখন বাজারে গেলে এক ডজন ফার্মের মুরগির ডিম কিনতে ক্রেতাকে বাড়তি ব্যয় করতে হবে প্রায় ২০ টাকা। বেড়েছে ব্রয়লার মুরগি, পেঁয়াজ ও কাঁচা মরিচের দামও।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, চারটি পণ্যের দামই বেড়েছে সরবরাহে টান পড়ার কারণে। টানা বৃষ্টি শেষ হলে দর কিছুটা কমতে পারে।

ডিমের দাম সাম্প্রতিক কালের মধ্যে সর্বোচ্চ। ঢাকার অলিগলির খুচরা দোকানে ফার্মের লাল ডিম প্রতি হালি ৩৫-৩৬ টাকায় বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। কাঁচাবাজারে প্রতি ডজন ডিম ১০০-১০৫ টাকায় কেনা যাচ্ছে। দেশি মুরগি ও হাঁসের ডিম কিনতে চাইলে হালিপ্রতি বাড়তি ১০ টাকা দিতে হবে। খুচরা দোকানে হাঁস ও দেশি মুরগির ডিম প্রতি হালি ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

তেজগাঁওয়ের কলমিলতা বাজারে ডিম কিনছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা শফিকুর রহমান খান। তিনি বলেন, তাঁর পাঁচজনের পরিবারে এক ডজন ডিমে দুই দিন যায়। ডিমের দাম না কমলে তাঁর খরচ বাড়বে মাসে ৬০০ টাকার মতো।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, এক মাস আগে প্রতি হালি ফার্মের মুরগির ডিম ২২-২৬ টাকা ছিল। সে হিসেবে এখনকার দর প্রায় ৪২ শতাংশ বেশি। জানতে চাইলে তেজগাঁওয়ের ডিমের আড়তের ব্যবসায়ী মিজানুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বিগত তিন-চার বছর দেশে ডিমের দাম উৎপাদন খরচের চেয়ে কম ছিল। এতে অনেক কৃষক খামার বন্ধ করে দিয়েছেন। এখন সে কারণে ডিমের সরবরাহ কম। আবার বর্ষায় হাঁসের ডিম পাড়ার হার কমে যায়। মূল্যবৃদ্ধির এটিও একটি কারণ।

বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৫৫-১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, যা সপ্তাহখানেক আগেও ১৪০-১৪৫ টাকা ছিল। সাধারণত পবিত্র শবে বরাত ও ঈদুল ফিতরের উৎসবের সময় বাড়তি চাহিদা তৈরি হলে ব্রয়লার মুরগি কেজিপ্রতি ১৬০ টাকা বা তার ওপরে ওঠে। গত ঈদুল ফিতরের সময় বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম ১৬০-১৭০ টাকায় উঠেছিল। এরপর তা কমে যায়।

গাজীপুরের শ্রীপুর এলাকার খামারমালিক ও পোলট্রি খামার রক্ষা জাতীয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মো. মহসিন প্রথম আলোকে বলেন, আবহাওয়া বৈরী থাকলে সাধারণ বাজারে মাছের সরবরাহ কম থাকে। এতে মুরগির বাজারে কিছুটা চাপ সৃষ্টি হয়। এ কারণে এখন মুরগির দাম কিছুটা বাড়তি।

বাজারে গত দুই সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ১০ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজের দাম ৫ টাকা বেড়েছে। খুচরা দোকানে এখন বাছাই করা দেশি বড় পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৬০ টাকা, মাঝারি দেশি পেঁয়াজ ৫৫ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ৩৫-৩৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পুরান ঢাকার শ্যামবাজারের পেঁয়াজের আড়ত নবীন ট্রেডার্সের মালিক নারায়ণ চন্দ্র সাহা প্রথম আলোকে বলেন, দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কম। ভারতে পেঁয়াজের দামও কিছুটা বাড়তি। এ কারণে দেশের বাজারে দাম বেড়েছে। তিনি জানান, এক সপ্তাহ আগে পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৩৫-৩৬ টাকা ছিল, যা ৪৬-৪৭ টাকা হয়ে গেছে।

বর্ষাজুড়েই কাঁচা মরিচের দাম ওঠানামার মধ্যে আছে। দুই সপ্তাহ আগে বাজারে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ ১৬০ টাকা ছিল। এরপর তা কমে ১২০ টাকায় নামে। গত কয়েক দিনের বৃষ্টির পর তা আবার বেড়ে কেজিতে ১৬০ টাকায় উঠেছে। তেজগাঁওয়ের কলমিলতা বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. জহির বলেন, তাঁর দোকানে শুধু কাঁচা মরিচের দরই বেশি। প্রতি আড়াই শ গ্রাম কাঁচা মরিচ তিনি ৪০ টাকায় বিক্রি করছেন। তবে অন্যান্য সবজির দাম ২৫ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে।

অবশ্য কারওয়ান বাজারের সবজির আড়তে কাঁচা মরিচের দাম বেশ কম। প্রতি কেজি ৯০-১০০ টাকা চাইছেন বিক্রেতারা।

বাজারে চাল, ডাল, আটা, ভোজ্যতেল, চিনি, আদা, গরুর মাংস ইত্যাদি পণ্যের দামে তেমন কোনো হেরফের নেই। রসুনের দাম বেশ কমেছে। কেজিপ্রতি ৩০-৪০ টাকা কমে তা ৫০-৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সবজির দরও স্বাভাবিক।

6
Marketing Management / Definition
« on: July 17, 2018, 03:16:14 PM »
Marketing is the tip of total iceberg of selling.

7
চলতি বছর আমাদের দেশে জাতীয় নির্বাচনের বছর। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দিক দিয়ে আমাদের জন্য এই বছরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি গ্রহণযোগ্য অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে অ্রগযাত্রার কালে লাগসই নীতি ও কর্মসূচি গ্রহণ করার উপর নির্ভর করছে আমাদের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের গতি-প্রকৃতি। এ ব্যাপারে এখনই চিন্তাভাবনা করা জরুরি। কেননা নির্বাচনকে সামনে রেখে গণতান্ত্রিক উত্তরণের সঙ্গে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

গত কয়েক বছরে বিশ্ব অর্থনীতির কারণে দেশের অর্থনীতি সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল। বিশেষ করে জ্বালানি তেল, চাল ও সারের দাম ছিল নিম্নমুখী। এতে আমদানি ব্যয় এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্তু এ পরিস্থিতির পরিবর্তন হচ্ছে। ইতিমধ্যে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতায় কিছুটা নড়বড়ে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।বিশেষ করে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগে স্থবিরতা, কর্মসংস্থানের অভাব, ব্যাংকিং খাতে সুশাসনের ঘাটতি এবং বিদেশে টাকা পাচার বাড়ছে। যা অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় ঝুঁকি তৈরি করছে।

তবে এ মুহূর্তে আমাদের সামনে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়শীল দেশের পথে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলাটাই প্রধান কর্তব্য হওয়া উচিত। উল্লেখ্য, জাতিসংঘ তার সদস্য দেশগুলোকে স্বল্পোন্নত (এলডিসি), উন্নয়নশীল এবং উন্নত- এ তিন শ্রেণিতে বিভক্ত করে। বাংলাদেশ ১৯৭৫ সাল থেকে এলডিসি শ্রেণিভুক্ত।এলডিসিভুক্ত দেশ হওয়ার সুবাদে বিশেষ আর্থিক সুবিধা ব্যবহার করে বাংলাদেশ গত গত চার দশকে বহু অবকাঠামো ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন ঘটিয়ে উপকৃত হয়েছে। পাশাপাশি আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তিগুলির অগ্রাধিকারমূলক সুযোগ ব্যবহার করে নির্দিষ্ট রপ্তানি বাজারে প্রবেশাধিকার পেয়েছে। এলডিসি থেকে এর উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ ঘটলে অনেক সুবিধা থেকে বাংলাদেশ বঞ্চিত হবে। যাইহোক, আমরা বিশ্বাস করি যে এই মাইলফলক বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় উদ্দীপনা হিসাবে কাজ করবে, বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করবে এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে সমৃদ্ধ করবে।

উন্নয়ন কর্মসূচির উপর ভিত্তি করে জাতিসংঘ দেশগুলিকে শ্রেণিবদ্ধ করেছে।তিনটি সূচক ব্যবহার করে এই উন্নয়ন পরিমাপ করা হয়েছে: মাথাপিছু মোট জাতীয় আয় (জিএনআই), মানব সম্পদ সূচক (এইচএআই) এবং একটি অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচক (ইভিআই)। স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জন্য প্রতিটি দেশের এই সূচকগুলির প্রান্তিক মানের হতে হয়: মাথাপিছু আয় কমপক্ষে ১২৩০ মার্কিন ডলার, মানবসম্পদ সূচকে ৬৬ এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচকে স্কোর ৩২ বা তার কম। ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে সরকারি তথ্য মতে, মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে ১২৭১ ডলার। মানবসম্পদ সূচকে বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়িয়েছে ৭২ দশমিক ৯ এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচকে স্কোর ২৪.৮ উন্নীত হয়েছে।

জাতিসংঘের উন্নয়ন নীতি কমিটির পক্ষ থেকে প্রতি তিন বছর পর পর এলডিসির অবস্থা পর্যালোচনা করা হয় এবং সর্বশেষ ১৭ মার্চ এই পর্যালোচনা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই পর্যালোচনা বৈঠকে, কমিটি নিশ্চিত করেছে যে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হওয়ার পথে প্রাথমিক মানদণ্ড পূরণ করেছে। নিয়ম অনুযায়ী একটি দেশকে এলডিসি উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য দুইবার তিন বছর অন্তর অনুষ্ঠিত পর্যালোচনায় তিনটি মানদণ্ডেই কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি দেখাতে হবে। সেই হিসেবে কমিটি ২০২১ সালে আবার বাংলাদেশের এর অগ্রগতি পর্যালোচনা করবে। এর পরে আরও তিন বছর পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনার পর ২০২৪ সালে বাংলাদেশকে জাতিসংঘের সংজ্ঞা অনুযায়ী একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হবে। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে সম্ভাব্য রূপান্তরে বাংলাদেশকে অনেক চ্যালেঞ্জেরই সম্মুখীন হতে হবে। এর মধ্যে প্রধান হচ্ছে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে ভোগ করা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সাহায্য-সহযোগিতা প্রত্যাহার। আছে বাণিজ্য অগ্রাধিকার সুবিধা, উন্নয়ন অর্থায়ন এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে কারিগরি সহায়তাও।

বাণিজ্য সুবিধা হ্রাস

উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের স্বীকৃতির কারণে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) চুক্তির অধীনে তাদের বাধ্যবাধকতার জন্য স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করে। উদাহরণস্বরূপ, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মেধাস্বত্ত্ব অধিকার (ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি রাইটস)-এর সঙ্গে সম্পর্কিত ঔষধজাত (ফার্মাসিউটিক্যাল) পণ্যের নির্দিষ্ট কিছু বিশেষ শর্তের দায় থেকে স্বল্পোন্নত দেশগুলিকে ছাড় প্রদান করা হয়, যার ফলে সস্তায় উৎপাদন সুবিধা পাওয়া যায়। স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে,  সাধারণ অগ্রাধিকার ব্যবস্থায় (জেনারেলাইজড সিস্টেম অফ প্রিফারেন্সেস-জিএসপি) বাংলাদেশ বিভিন্ন দেশের বাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে শর্তহীন সুবিধা ভোগ করে। উদাহরণস্বরূপ, একটি স্বল্পোন্নত হিসাবে, ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের জিএসপি সুবিধার আওতায় বাংলাদেশ ইউরোপে শুল্ক ও কোটামুক্ত বস্ত্র রপ্তানি করতে পারে। ফলস্বরূপ, ২০০৮ সাল থেকে ইউরোপের দেশগুলোতে রপ্তানি বেড়েছে। বর্তমানে  প্রায় ৫০% ভাগ তৈরি পোশাক রপ্তানি হয় ইউরোপে। স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশেষ আর্থিক ও বাণিজ্যিক সুবিধার আওতায় দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তির মাধ্যমে অগ্রাধিকারমূলক বাজারে প্রবেশের সুযোগ পায়। উদাহরণ হিসেবে দক্ষিণ এশিয়ার মুক্ত বাণিজ্য এলাকা বিশেষ করে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য সুবিধার বিষয়টি উল্লেখ করা যায়।

এই সুবিধাগুলো বাংলাদেশের তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাতের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে, যা চীনের পর দ্বিতীয় তৈরিপোশাক রপ্তানিকারী দেশ হওয়ার সুযোগ করে দেয়। তৈরিপোশাক রফতানি এখন বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল ভিত্তি, মোট রপ্তানি আয়ের ৮০% ভাগই আসে এই খাত থেকে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের হিসেব মতে, (জানুয়ারি, ২০১৮), স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হওয়ার পর, প্রতি বছর ৬.৭% অতিরিক্ত শুল্ক দিলে বাংলাদেশ প্রতিবছর প্রায় ২.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি আয় হ্রাস করতে পারে। এদিকে, জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন বিষয়ক সম্মেলনে ধারণা করা হয় যে, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হওয়ার পর বাংলাদেশের রপ্তানি ৫.৫ শতাংশ থেকে ৭.৫ শতাংশ কমে যেতে পারে।  অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান এবং দারিদ্র্যের মাত্রার উপর  ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে।

তবে এগুলো নাও ঘটতে পারে। এমনকি স্বল্পোন্নত দেশের তালিকায় আর না থাকলেও, বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য ডব্লিউটিও চুক্তি ও ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের জিএসপির আওতায় ভঙ্গুর উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে কম কিংবা বিনা শূল্কের বিশেষ-বিধানের জন্য যোগ্য হতে হবে এবং তৈরি পোশাক খাতের অগ্রগতি ধরে রাখতে অব্যাহত সহযোগিতা দিতে হবে। যাহোক, স্বল্পোন্নত দেশ উন্নয়নশীল দেশে পদার্পণের (২০১৮-২২) সময় সম্ভাব্য সংকট মোকাবিলা করে একটি মসৃন পথে চলতে হলে বাংলাদেশকে এখন অতিরিক্ত নজর দিতে হবে দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) নিয়ে আলোচনার দিকে।

বাংলাদেশ ইতিমধ্যে শ্রীলংকার সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির শর্তাদি নিয়ে আলোচনা করছে, যা ২০১৮ সালের শেষ নাগাদ চূড়ান্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। থাইল্যান্ড, আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের সঙ্গেও এফটিএ নিয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছানো। ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের পর বাংলাদেশর সবচেয়ে বড় রপ্তানিকারক দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আগামী কয়েক বছর ধরে এই আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে। ২০১৩ সালের রানা প্লাজা দুর্ঘটনা, যেখানে তেরশরও বেশি গার্মেন্ট শ্রমিকের জীবন কেড়ে নিয়েছে, এর পর যুক্তরাষ্ট্র শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার শর্তে বাংলাদেশ রপ্তানির জন্য শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার প্রত্যাহার করে। ২০১৮ সালের মার্চ মাসের প্রথম দিকে বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত বাণিজ্য বিষয়ক শীর্ষ সম্মেলন উদ্বোধনের সময় একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (এফটিএ) প্রস্তাব করেন। তিনি বলেন যে, ২০২৪ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ সত্ত্বেও বাংলাদেশ ২০২৭ সাল পর্যন্ত  ইইউ জিএসপি সুবিধা বাণিজ্য সুবিধা পাবে, পরে তা জিএসপির অতিরিক্ত সুবিধা হিসেবে হিসেবে অগ্রাধিকারমূলক বাজার প্রবেশাধিকার হিসেবে গ্রহণ করা যাবে।

উন্নয়ন সম্পর্কিত সহায়তা এবং সহায়তা হ্রাস পাবে

বাণিজ্য ছাড়াও, বিদেশি অর্থায়নের ব্যাপারে আরও অনেক বড় বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হওয়ার পর, বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংকের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন তহবিলের(ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এসোসিয়েশনের) ছাড়কৃত অর্থসুবিধাসহ কয়েক ধরনের ছাড়ের বহুমুখী সহায়তার জন্য উপযুক্ত হবে না। এটি পরিকল্পিত অবকাঠামো নির্মাণের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। ব্যাংকের ছাড়কৃত অর্থসুবিধা পাবার মাপকাঠি অনুযায়ী, যখন একটি দেশের মাথা পিছু আয় পর পর তিন বছর ১৪০০ মার্কিন ডলারের উপরে থাকে তখন সুদের হার ০.৭৫% থেকে প্রায় ২% বৃদ্ধি পায়।

এই ধরনের বিশেষ সুবিধা হারানোর ক্ষতি সত্ত্বেও, আমরা মনে করি না যে, বৈদেশিক সাহায্যের উপর নির্ভরশীলতা কমে যাওয়ার কারণে অবকাঠামো বা সামাজিক-অর্থনৈতিক কর্মসূচির জন্য পরিকল্পনা মাফিক এগিয়ে চলার ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হবে। এর প্রধান কারণ দেশটি জাপান, ভারত ও চীনের মতো দেশ থেকে সফলভাবে দ্বিপক্ষীয় ঋণ গ্রহণ করছে। প্রকৃতপক্ষে, বিশ্বব্যাংকের মতে, ১৯৭৫ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকায় যুক্ত হওয়ার পর থেকেই ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশ উন্নয়ন সহযোগিতা  ৫.৫% থেকে কমে ২০১৫ সালে প্রায় ১.২% এসে দাঁড়িয়েছে। উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হওয়ার সময়ে দেশগুলি প্রস্তুতিমূলক উন্নয়নমূলক সহায়তাও পেয়ে থাকে। জাতীয় গর্ব বৃদ্ধির পাশাপাশি উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হওয়ার অন্যান্য সুবিধাগুলোও যথাযথভাবে ব্যবহার করতে হবে। উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারলে তা আন্তর্জাতিক ঋণদাতা ও বিনিয়োগকারীদের কাছেও দেশের আকর্ষণ বাড়বে।

উন্নয়নশীল দেশ সামগ্রিকভাবে অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক

সর্বোপরি, আমাদের বিশ্বাস যে উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হওয়ার বর্তমান প্রস্তুতি পর্যায়ে বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। যেহেতু ক্ষুদ্র বাণিজ্য সুবিধার মাপকাঠিতে স্বল্পোন্নত দেশের যাত্রা শুরু হয়, সেক্ষেত্রে আঞ্চলিক ও দ্বিপক্ষীয় মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির জন্য দেশটিকে ক্রমবর্ধমান প্রচেষ্টা চালাতে হবে যাতে করে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে অতিরিক্ত শুল্ক রপ্তানি না কমায়। বাণিজ্য-ছাড়ের প্রভাব থেকে মুক্ত হওয়ার এটাই চাবিকাঠি। দীর্ঘস্থায়ী অন্তর্বর্তী কাল অতিক্রম করতে হলে এ ধরনের মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির জন্য দেশটিকে মরিয়া চেষ্টা চালাতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি যে বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হওয়ার সুফল লাভ করতে সক্ষম হবে। অতএব, ক্ষতি কমিয়ে সম্ভাব্য সুবিধাগুলো পেতে হলে পরিবর্তনের পথে এগোতে হবে। এ পরিস্থিতিতে দরকার সরকারের দূরদর্শী ও ইতিবাচক রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও কার্যকর নীতি।
চিররঞ্জন সরকার, ১১ জুলাই, ২০১৮

Pages: [1]