Daffodil International University

Health Tips => Protect your Health/ your Doctor => Topic started by: Sahadat Hossain on December 10, 2020, 10:27:20 AM

Title: হৃদয়ের সুরক্ষা
Post by: Sahadat Hossain on December 10, 2020, 10:27:20 AM
করোনা ভাইরাস ফুসফুসের পাশাপাশি অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ক্ষতি করে। বিশেষ করে রক্তনালির।

উচ্চ রক্তচাপের ডায়বেটিস রোগীরা কোভিডে আক্রান্ত হলে তাঁদের পায়ের রক্তনালিতে রক্ত জমাট বাঁধে।

হৃদয়ের সুরক্ষা
বিভিন্ন দেশের কোভিডে আক্রান্ত মৃত রোগীদের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে যে বেশির ভাগ রোগী ফুসফুস, হার্ট, ব্রেনে রক্ত জমাট বেঁধে মারা যাচ্ছেন। তাই এখন একেই কোভিডে মৃত্যুর প্রধান কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সারা বিশ্বে শুরু হয়েছে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ। শুরুতে অজানা থাকলেও এখন এটা পরিষ্কার যে এই ভাইরাস ফুসফুসের পাশাপাশি অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ক্ষতি করে। বিশেষ করে রক্তনালির। বিশেষ করে সংক্রমিত রোগীদের ভেতর রক্তনালিতে রক্ত জমাট বেঁধে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের মতো জটিল অবস্থা দেখা দিচ্ছে। এমনকি করোনামুক্ত হওয়ার পর এ ধরনের জটিলতার একটা ঝুঁকি থেকেই যায়।

করোনায় আক্রান্ত রোগীদের রক্ত জমাট বাঁধা ও এর প্রতিকার নিয়ে প্রথম আলো আয়োজন করেছে স্বাস্থ্যবিষয়ক বিশেষ অনুষ্ঠান এসকেএফ নিবেদিত ‘হৃদয়ের সুরক্ষা’। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে অতিথি হিসেবে ছিলেন ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সি এম শাহীন কবির। সঞ্চালনায় ছিলেন ডা. বিলকিস ফাতেমা। অনুষ্ঠানটি ৮ ডিসেম্বর প্রথম আলো ও এসকেএফের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই দর্শকদের প্রশ্নের জবাবে ডা. শাহীন কবির পায়ে রক্ত জমাট কেন বাঁধে তা নিয়ে আলোচনা করেন। উচ্চ রক্তচাপের ডায়বেটিস রোগীরা কোভিডে আক্রান্ত হলে তাঁদের পায়ের রক্তনালিতে রক্ত জমাট বাঁধে। কারণ, এ সময়টিতে হাঁটাচলা কম করা হয়। এ অবস্থাকে ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস বলে। যাঁরা এই রোগে আক্রান্ত হবেন, তাঁদের পায়ে ব্যথা থাকবে, পা লাল হয়ে ফুলে যাবে। সাধারণত এটি ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু কোভিডে আক্রান্ত রোগীরা যখন হাসপাতালে বা আইসিইউতে থাকেন, তখন তাঁদের পায়ে ক্লট জমে এটি হয়ে থাকে।

ডা. সি এম শাহীন কবির,
সহযোগী অধ্যাপক.
ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট
যখন নিশ্বাস নেওয়া হয়, তখন করোনাভাইরাস শ্বাসতন্ত্রে প্রবেশ করে এলভুলিয়াম এপিথালিয়ামকে আক্রান্ত করে। এতে ফুসফুসে নিউমোনিয়া হয়। করোনাভাইরাস এই সময় রক্তনালিতে এসি ই (এঞ্জিওটেনসিন-কনভারটিং এনজাইম) ইনহেভিটর আক্রান্ত করে ইনফ্ল্যামেশন বা ড্যামেজ তৈরি করে। এই ড্যামেজটাকে প্রতিরোধ করার জন্যই শরীরে এই ক্লট তৈরি হয়।

আরেকটি ব্যাপার ইদানীং বেশ দেখা যাচ্ছে বলে জানান ডা. শাহীন কবির, সেটি হলো কোভিডে আক্রান্ত ব্যক্তিদের যাঁদের ডায়বেটিস আছে, তাঁদের রক্তে শর্করা বেড়ে যাচ্ছে, আবার যাঁদের উচ্চ রক্তচাপ আছে, তাঁদের রক্তচাপ বেড়ে যাচ্ছে। এটি করোনাভাইরাসের জন্যই হচ্ছে। কারণ, এসি ই ইনহেভিটরে আক্রান্ত হলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। তখন প্রেশার বেড়ে যায়। কোভিড সেরে গেলে এ ধরনের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। এ সময় সামান্য কিছু ওষুধ সেবন করলে রোগীর কোনো ক্ষতি হবে না।
প্রথমত যখন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়, তখন কেউ জানত না, কেন রোগী এতে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছেন। তবে এখন বিভিন্ন দেশের কোভিডে আক্রান্ত মৃত রোগীদের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে যে বেশির ভাগ রোগী ফুসফুস, হার্ট, ব্রেনে রক্ত জমাট বেঁধেই মারা যাচ্ছেন। তাই এখন একেই কোভিডে মৃত্যুর প্রধান কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

কোভিডে ৮০ শতাংশ রোগীর কোনো উপসর্গ দেখা যায় না বা হালকা নিউমোনিয়া থাকে। এটি সাধারণত কোনো চিকিৎসা ছাড়াই ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু ১৫ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে গুরুতর অবস্থা দেখা দেয়। ডা. শাহীন কবির বলেন, যাঁদের উচ্চ রক্তচাপ, ডায়বেটিস; যাঁদের রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি রয়েছে; বৃদ্ধ, ক্যানসারে আক্রান্ত রোগী; যাঁদের অতিরিক্ত ওজন—তাদেরই কোভিডে মৃত্যুর ঝুঁকি অনেক বেশি। তিনি আরও বলেন, ‘সিডিসির একটি গবেষণায় দেখা গেছে, অন্যান্য রোগীর চেয়ে এ ধরনের রোগীর ৬ গুণ বেশি সম্ভাবনা আছে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার এবং ১২ গুণ বেশি সম্ভাবনা আছে মারা যাওয়ার।’

এ ধরনের রোগীদের রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি থাকে বেশি। এ জন্য হাসপাতালে ভর্তি করার পর চিকিৎসকেরা তাঁদের বিভিন্ন রকমের পরীক্ষা–নিরীক্ষা করেন এবং কিছু দিকে বিশেষ খেয়াল রাখেন। যেমন শ্বাসকষ্ট পালমোনারি এম্বলিজমের দিকে যাচ্ছে কি না, পায়ে রক্ত জমাট বাঁধছে কি না। কিছু ব্লাড টেস্ট করা হয় শুধুমাত্র রক্ত জমাট বাঁধার সম্ভাবনা নির্ণয়ের জন্য। রক্ত জমাট যদি হার্টে হয় অ্যারিদমিয়া বা হার্ট ফেইলিউর হয়, ব্রেনে জমাট বাঁধলে স্ট্রোক হয়, এটি যদি কিডনিতে হয়, তাহলে কিডনি ইনফেকশন হতে পারে। এ জন্য কোভিডকে মাল্টিসিস্টেম ডিজিজ বলে উল্লেখ করেন ডা. শাহীন কবির।

কোভিডে আক্রান্ত যেসব রোগী হাসপাতালে থাকেন, তাঁদের সবার প্রথমে অক্সিজেন থেরাপি দেওয়া হয়। এরপর অ্যান্টিভাইরাল ড্রাগ ও স্টেরয়েড দিতে হবে। রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিরোধ করতে দুই রকমের অ্যান্টি–ক্লগনেন্ট ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। একটি মুখে খাওয়ার আর অন্যটি শিরা বা চামড়ার নিচে দিতে হয়। এ দুটি ওষুধই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নেওয়া যাবে না।

ডা. শাহীন কবির বলেন, বাংলাদেশে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। এ জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাস্ক ব্যবহার করা এবং সঠিক পদ্ধতিতে হাত ধোয়ার কোনো বিকল্প নেই। তবে আশার কথা এই যে এত দিনে এ নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে, মৃত্যুর প্রকৃত কারণও জানা গিয়েছে। তাই এখন এটি মোকাবিলা করা সহজ হবে।

Video Link: https://www.facebook.com/watch/?v=373364963734592

Ref: https://www.prothomalo.com/life/health/%E0%A6%B9%E0%A7%83%E0%A6%A6%E0%A7%9F%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%B8%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%BE