Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Messages - Hafizur Rahman

Pages: [1] 2 3
1

বর্তমানে কোভিড-১৯ মহামারী সারা বিশ্বকে নাস্তানাবুদ করে ফেলেছে। এ মুহূর্তে সংক্রমণ কমাতে দ্রুত, কার্যকর, সহজসাধ্য ও নিরাপদ চিকিৎসা ব্যবস্থা উদ্ভাবন অত্যন্ত জরুরী। কিন্তু এখন পর্যন্ত এই মারাত্মক রোগের জন্য কোনও নির্দিষ্ট কার্যকরী ভ্যাকসিন বা অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ তৈরি হয়নি। তাই চিকিৎসক, বিজ্ঞানী এবং পুষ্টিবিদরা বিকল্প খুঁজছেন এবং অনুসন্ধান করছেন, কী কী উপায়ে এই ভাইরাল সংক্রমণ থেকে মানবদেহকে রক্ষা করা যায়।

দেহের চাহিদানুযায়ী পর্যাপ্ত পুষ্টি গ্রহণ শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে সুদৃঢ় করে গড়ে তোলে, যা সংক্রামক রোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার অন্যতম হাতিয়ার। তার মানে, যেখানে চিকিৎসা নেই, সেখানে রোগ প্রতিরোধব্যবস্থাটির প্রধান কাজ হলো দেহকে বিপজ্জনক অণুজীব সংক্রমণ থেকে রক্ষা করা। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যুগুলি শরীর থেকে সরিয়ে ফেলা এবং দেহের মধ্যে বেড়ে ওঠা ম্যালিগন্যান্ট কোষের ওপর নিয়মিত নজরদারি করে এই রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা। কারণ এগুলো  দেহের স্বাভাবিক কাজে ব্যঘাত ঘটাতে পারে। তাই পুষ্টিকর খাবারের অভাব শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনাকে দুর্বল করে দিতে পারে।

কোভিড-১৯ রোগীর সাম্প্রতিক কেসগুলি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সমস্যা (এআরডিএস) মৃত্যুর মূল কারণ। অন্যদিকে অন্তঃকোষীয় অক্সিডেটিভ স্ট্রেস (প্রতিক্রিয়াশীল অক্সিজেন এবং নাইট্রোজেন) হলো এআরডিএসের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এটা কোষকে ধ্বংস করে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের স্বাভাবিক কার্যক্রমে ব্যঘাত ঘটায়। ফলে রোগি ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যায়। চীনের টংজি মেডিকেল কলেজের একদল গবেষক কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত ২৯ জন রোগীর উপর একটি ছোট গবেষণা চালান। তাঁরা দেখেন, ২৭  জন রোগীরই সিআরপি প্রোটিন উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই প্রোটিন প্রদাহ এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেসকে ত্বরান্বিত করে।

 

ভিটামিন সি

ভিটামিন সি পানিতে দ্রবণীয়। এটা শরীরের সহজাত এবং অভিযোজক (adaptive) বিভিন্ন কোষীয় কার্যক্রমের মাধ্যমে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে মজবুত করে। ভিটামিন সি ক্ষতিকর জীবাণুগুলির বিরুদ্ধে এপিথিলিয়াল প্রতিরোধব্যবস্থাকে দৃঢ় করে। এ ছাড়া ত্বকে যে অক্সিড্যান্ট স্ক্যাভেনজিং প্রক্রিয়া আছে, তাকেও সাহায্য করে ভিটামিন সি। এর ফলে সম্ভাব্য জারণ প্রক্রিয়ার চাপ থেকে কোষ কিংবা টিস্যু রক্ষা পায়। ভিটামিন সি ফাগোসাইটিক কোষগুলিতে জমে থাকা নিউট্রোফিলস এবং কেমোট্যাক্সিস, ফাগোসাইটোসিস, প্রতিক্রিয়াশীল অক্সিজেন প্রজাতির উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে। এমনকি অণুজীবের ধ্বংস হারও বাড়িয়ে দেয়। ম্যাক্রোফেজ দ্বারা সংক্রমণের স্থানগুলি থেকে অ্যাপোপটোসিস প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মৃত কোষ এবং ব্যবহৃত নিউট্রোফিলগুলিকে সরিয়ে ফেলে। ফলে নেক্রোসিস/NETosis এবং সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যুর পরিমাণ কমে যায়।

সম্প্রতি আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন জার্নাল -এ একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। এআরডিএস-এ আক্রান্ত ১৬৭ জন রোগীর ওপর করা এক গবেষণার বিশ্লেষণ করা হয়েছে সেই প্রবন্ধে। ওই গবেষণায় রেগিদের দিনপ্রতি ১৫ গ্রাম ইন্ট্রাভেনাস (আইভ) ভিটামিন সি দেওয়া হয়েছে পর পর চারদিন। ফলে মৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। কোভিড-১৯ আক্রান্ত চীনের ৫০ জন রোগীর ওপর করা আরেকটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সেই গবেষণায় দেখা গেছে, একটি উচ্চমাত্রা (ডোজ) আইভি ভিটামিন সি সফলভাবে বাড়িয়ে দিয়েছে অক্সিজেনেশনের হার। সকল রোগী শেষ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছে।

কোরিয়ান আর্মি ট্রেনিং সেন্টারে ১৪৪৪ জন ব্যক্তিকে নিয়ে করা হয়েছে আরেকটি গবেষণা। তাতে দেখা গেছে, ওরাল ভিটামিন সি (৬ গ্রাম/প্রতিদিন) ভাইরাল সংক্রমণের ঝুঁকি কমিয়ে দিতে সক্ষম। এই গবেষণার রিপোর্ট গত মার্চে বিএমজে মিলিটারি হেলথ জার্নাল-এ প্রকাশিত হয়। প্রকৃতপক্ষে, উচ্চমাত্রার ভিটামিন সি বেশ কয়েক দশক ধরে চিকিৎসা পদ্ধতিতে ব্যবহৃত হচ্ছ। সাম্প্রতিক এনআইএইচ বিশেষজ্ঞ প্যানেলের রিপোর্ট পরিষ্কারভাবে জানিয়েছে যে, উচ্চমাত্রার ভিটামিন সি (দেহের প্রতিকেজি ওজনের জন্য ১.৫ গ্রাম) মানব দেহের জন্য নিরাপদ ।

এখন দেখা যাক, কীভাবে ভিটামিন সি কোভিড-১৯ কারণে তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সমস্যার সমাধানে আণবিক লেভেলে কাজ করে। ভিটামিন সি একটি শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, কোলাজেন সিন্থেসিস এবং জিন নিয়ন্ত্রক মনো অক্সিজেনেস ও ডাই-অক্সিজেনেস এনজাইমগুলির কোফ্যাক্টর অর্থাৎ সহযোগী হিসেবে কাজ করে। এটা ফুসফুসের এয়ার স্যাকের এপিথিলিয়াল প্রতিরক্ষাব্যবস্থাপনার রক্ষণাবেক্ষণেও সহায়তা করে। এছাড়া সিএফটিআর, একোয়াপুরিন-৫, ENaC, এবং Na+/K+ ATPase মতো প্রোটিন চ্যানেলগুলিকে বৃদ্ধি করে। ফলে অ্যালভিওলার তরল নিঃসরণ কমে যায় । এছাড়াও ফাগোসাইটিক কোষগুলিতে জমে থাকা ভিটামিন সি, কেমোট্যাক্সিস, ফাগোসাইটোসিস এবং শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন ক্ষতিকারক অণুজীব ধ্বংসের প্রক্রিয়াকে তরান্বিত করে।

 

ভিটামিন ডি

ভিটামিন ডি এর দুটো ফর্ম আছে- ডি২ এবং ডি৩। ভিটামিন ডি৩ সবচেয়ে কার্যকরী। আমাদের শরীরের প্রতিটি অঙ্গের কোষগুলিতে ভিটামিন ডি’র রিসেপ্টর আছে। সেই রিসেপ্টরের সঙ্গে বন্ধনের তৈরি করে নিউক্লিয়ার মেটারিয়ালের সাথে যুক্ত হতে পারে ভিটামিন ডি ৩। এটি যেমন আমাদের শরীরে ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাসের পরিমাণ বাড়িয়ে তোলে, তেমনি দাঁত ও হাড়ের গঠনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর পাশাপাশি বেশ কিছু রোগের প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ভিটামিন ডি। তবে এখানেই শেষ নয়, ভিটামিন ডি’র আরও অনেক উপকারিতা রয়েছে।

বহু গবেষণায় দেখা গেছে, নিউমোনিয়া এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা (সার্স এবং মার্সজনিত) প্রতিরোধে ভিটামিন ডি’র মেগাডোজ কার্যকরী। এমডিপিআই প্রকাশিত নিউট্রিয়েন্টস জার্নালের ২ এপ্রিল সংখ্যায় প্রকাশিত একটি রিভিউ প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। তাতে গবেষকরা জানান, ভিটামিন ডি বিভিন্নভাবে সংক্রমণের ঝুঁকি কমায়। বিশেষ প্রক্রিয়ায় ক্যাথেলিসিডিন এবং ডিফেনসিন নামে দুটি প্রোটিন তৈরি হয়। এতে সংক্রমণের ঝুঁকি যেমন কমায়, তেমনি অতিরিক্ত সাইটোকাইনসের মাত্রা কমিয়ে ফুসফুসের ক্ষত সারাতে পারে। ফলে নিউমোনিয়া সেরে যায়।

সবাই জানে, মানব দেহে ভিটামিন ডি-এর পরিমাণ বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমতে থাকে, অন্যদিকে বাড়তে থাকে ওষুধ ব্যবহারের মাত্রা। জার্মানির একাডেমি অফ মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট অ্যান্ড মেডিসিনের বিজ্ঞানীরা আরেকটি গবেষণা চালিয়েছেন। ওষুধের কিছু গ্রুপ আছে, যেমন, অ্যান্টিপাইলেপটিক্স, অ্যান্টিনোপ্লাস্টিকস, অ্যান্টিবায়োটিকস, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরিএজেন্টস, অ্যান্টিহাইপারটেন্সিভস, অ্যান্টিরোট্রোভাইরালস এবং এন্ডোক্রাইন ইত্যাদি। এগুলো মানবদেহের প্রেগনানে-এক্স নামে নিউক্লিয়ার রিসেপ্টরকে সক্রিয় করে বলে জানিয়েছেন ওই গবেষকরা। ফলে ফলে বয়স্ক ব্যক্তির রক্তের সিরাম ২৫-হাইড্রোক্সি ভিটামিন ডি’র ঘনত্ব হ্রাস পায় ।

সাম্প্রতিক COVID-19 কেস স্টাডিগুলো পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ভিটামিন ডি’র ঘাটতি তীব্র শ্বাসকষ্ট বাড়িয়ে দেয়। তাই যাদের শরীরে ভিটামিন ডি’র ঘনত্ব কম, অর্থাৎ যাদের বয়স বেশি, করোনায় মৃত্যুর ঝুকি তাঁদেরই সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে ২৫- হাইড্রোক্সি ভিটামিন ডি’র ঘনত্ব কম হলে।

এখন দেখা যাক, সরাসরি কিভাবে ভিটামিন ডি কোভিড-১৯ সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে পারে। এর জন্য বিশেষ এক পদ্ধতি আছে। এতে ইনফেক্টেড ম্যাক্রোফাজ ১, ২৫ ডাই হাইড্রোক্সি ভিটামিন ডি তৈরি হয়। এছাড়া ক্যাথেলিসিডিন এবং ডিফেনসিনকে নামের দুটো প্রোটিন তৈরি হয়। এই প্রোটিন দুটি ভাইরাসের এনভেলাপকে দ্রবীভূত করতে পারে। ফলে ভাইরাসের প্রতিলিপি তৈরি প্রক্রিয়ার হার কমে যায়। এছাড়া ফুসফুসের আস্তরণের জন্য ক্ষতিকর সাইটোকাইনের ঘনত্বও কমাতে পারে।

২০১৭ সালে দ্য লন্ডন স্কুল অফ মেডিসিন অ্যান্ড ডেন্টিস্টির একদল বিজ্ঞানীরা একটা গবেষণা চালান। তাঁরা দেখিয়েছেন, ব্যাকটিরিয়া এবং ভাইরাসের কারণে তীব্র শ্বাসকষ্টে ভোগা ১৯ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে ভিটামিন ডি প্রতিরক্ষারমূলক ভূমিকা পালন করে। তাঁদের ওই প্রতিবেদনটি বিএমজে জার্নালে প্রকাশিত হয়।

এছাড়াও একদল কোরিয়ান বিজ্ঞানী দেখিয়েছেন, ভিটামিন ডি পরিপূরক অ্যান্টি অক্সিডেশন সম্পর্কিত অনেক জিন যেমন গ্লুটাথায়ন রিডাক্টেজ এবং গ্লুটামেট-সিস্টাইন লাইগেজ মডিফায়ার সাব-ইউনিটের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। গ্লুটাথায়নের উৎপাদন বাড়লে কোষের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। অ্যাসকরবিক অ্যাসিড অর্থাৎ ভিটামিন সি এর ব্যবহার বাড়িয়ে দেয়। এ কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন-এর প্রাক্তন পরিচালক চিকিৎসক টম ফ্রিডেন কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় ভিটামিন ডি ব্যবহার করার প্রস্তাব করেন গত ২৩ শে মার্চ। কিছুদিন আগে সান ফ্রান্সিসকো সানলাইট, পুষ্টি এবং স্বাস্থ্য গবেষণা কেন্দ্রের গবেষক  উইলিয়াম গ্রান্টের কথাতেও একই সুর ছিল। তিনি ইনফ্লুয়েঞ্জা অথবা কেভিড-১৯-এর ঝুঁকিতে ব্যক্তিদের দ্রুত ২৫-হাইড্রোক্সিভিটামিন ডি-এর ঘনত্ব বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। ঠিক করে দিয়েছেন এর মাত্রাও। কয়েক সপ্তাহের জন্য প্রতিদিন ১০,০০০ আইইউ ভিটামিন-ডি৩ গ্রহণ করতে হবে।

লেখক: অধ্যাপক, পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

Sources:
https://www.prothomalo.com/bigganchinta/article/1655807/%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%A8%E0%A6%BE-%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%A7%E0%A7%87-%E0%A6%AD%E0%A6%BF%E0%A6%9F%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A6%A8-%E0%A6%B8%E0%A6%BF-%E0%A6%93-%E0%A6%A1%E0%A6%BF%E0%A6%AA%E0%A7%81%E0%A6%B7%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%B0?fbclid=IwAR2tvG8BrO_ip7rmy2ajuqyx_S6vQoQ054dzm_-g8ILCl1Rp6Q2PcoGRv9g

3

ভালো বা মন্দ-যেমনই হোক, করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট সংকট অভাবনীয়ভাবে বদলে দেবে বিশ্বকে। ছবি: রয়টার্স
ভালো বা মন্দ-যেমনই হোক, করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট সংকট অভাবনীয়ভাবে বদলে দেবে বিশ্বকে। ছবি: রয়টার্স
সারা বিশ্বে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস মানুষের প্রাত্যহিক জীবনের সঙ্গে সঙ্গে বদল নিয়ে এসেছে চিন্তায়ও। উন্মোচন করে দিয়েছে এত দিনকার রাষ্ট্র ব্যবস্থা ও কাঠামোয় বিদ্যমান গলদগুলো। বিশ্বজুড়েই মানুষ এক নতুন উপলব্ধির সামনে দাঁড়িয়ে। ফলে মহামারি পরবর্তী বিশ্ব যে অনেক দিক থেকেই এখনকার চেয়ে আলাদা হবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

ভালো বা মন্দ-যেমনই হোক, এই সংকট অভাবনীয়ভাবে বদলে দেবে সামাজিক বিন্যাস। মার্কিন পত্রিকা পলিটিকো সম্প্রতি বৈশ্বিকভাবে করোনাভাইরাস মহামারির প্রেক্ষাপটে ৩০ জনের বেশি বুদ্ধিজীবীর মত নিয়েছে। তাঁদের দেওয়া মতের সারসংক্ষেপ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো—

১. স্পর্শ না করাটা রেওয়াজে পরিণত হতে পারে, যা সমাজ ও সংস্কৃতিতে বড় প্রভাব ফেলবে। অনলাইন যোগাযোগের সঙ্গে বাড়বে মানুষে-মানুষে দূরত্বও।

২. বর্তমানে চিকিৎসক, নার্স থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য খাতের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা কোনো আগ্নেয়াস্ত্র না উঁচিয়েই মানুষের জীবন রক্ষায় সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কাজটি করছেন, যার মধ্য দিয়ে দেশপ্রেম ধারণার বেসামরিকীকরণ ঘটতে পারে।

৩. রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মেরুকরণ কমে আসবে।

৪. নতুন করোনাভাইরাসের মতো ‘অভিন্ন শত্রুর’ বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিসরে দলীয় ও মতাদর্শিক বিভাজনের বদলে মানুষ ঐক্য ও সংহতির গুরুত্ব অনুধাবন করবে।

৫. বিশেষায়িত জ্ঞানের প্রতি মানুষকে উদাসীন করে তোলা বর্তমান বিশ্বব্যবস্থা বদলে এমন ব্যবস্থা গড়ে উঠবে যেখানে বিশেষায়িত জ্ঞানের প্রতি জন-আস্থা বাড়বে।

৬. করোনাভাইরাস মহামারি বাজার-সংস্কৃতি ও অতিমাত্রায় ব্যক্তিস্বাতন্ত্রবাদের সঙ্গে আমাদের প্রণয়ের অবসান ঘটাতে পারে।

৭. কর্তৃত্ববাদী ও চরম নিপীড়নমূলক রাষ্ট্রের বিষয়টি এখন বাস্তব; নাগরিকের ব্যক্তিগত জীবনে রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ বাড়বে।

৮. ধনী-গরিব নির্বিশেষে সারা বিশ্বের মানুষের অস্তিত্ব একসূত্রে গাঁথা—এমন উপলব্ধি মানুষকে যূথবদ্ধতার শক্তি অনুধাবনে সহায়তা করবে।

৯. কোয়ারিন্টিনের এই সময় ধর্মের উপাসনার রীতি ও উপাস্য দুই ধারণাকেই চ্যালেঞ্জ করবে।

১০. ধ্যানচর্চা বা মেডিটেশনের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার মঙ্গল চান—এমন ব্যক্তিদের সামাজিক মর্যাদা বাড়বে।

১১. বিদ্যমান স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থায় থাকা ত্রুটিগুলো প্রকাশ হয়ে যাওয়ায় বিশ্বব্যাপী এক নতুন সংস্কার আন্দোলনের জন্ম হতে পারে, যা এমনকি বিভিন্ন দেশে সরকার পরিবর্তনের আন্দোলনেও রূপ নিতে পারে।

১২. শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন জরুরি বিষয়কে অনলাইনভিত্তিক করার চাপ বাড়বে প্রশাসনগুলোর ওপর।

১৩. ঘরে বসে কাজ করার যে রেওয়াজ এই সময়ে তৈরি হচ্ছে, তা অক্ষুণ্ন রাখার চাপ তৈরি হবে প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর।

১৪. স্বাস্থ্যকর ডিজিটাল জীবনযাপনের বিষয়ে মানুষের সচেতনতা বাড়বে।

১৫. বেশ কয়েক বছর ধরে ব্যয় সংকোচন এবং তাৎক্ষণিক ও উচ্চ মাত্রার সেবার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বিবেচিত হওয়া টেলিমেডিসিনের গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে।

১৬. শ্রেণি-পেশা নির্বিশেষে নাগরিকদের জন্য কার্যকর সুরক্ষা বলয় তৈরির চাপ বাড়বে রাষ্ট্রের ওপর।

১৭. মুনাফাকেন্দ্রিক ওষুধনীতির বদলে স্বাস্থ্যসেবা এবং ওষুধের উন্নয়ন ও উৎপাদনে আরও সরাসরি ও কার্যকর ভূমিকা রাখার জন্য সরকারগুলোর ওপর চাপ বাড়বে।

১৮. জনস্বাস্থ্য ও মহামারির মতো বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের দক্ষতা ও বিজ্ঞানের প্রতি জন-আস্থা বাড়বে।

১৯. ভার্চ্যুয়াল আইন প্রণয়নের কাজ শুরু হতে পারে, যা তদবিরের সংস্কৃতি রোধে কার্যকর হয়ে উঠবে।

২০. বর্তমান পরিস্থিতি কেটে যাওয়ার পর দরকার হবে আরও বৃহৎ ও বিজ্ঞ সরকার ব্যবস্থা।

২১. জলবায়ু পরিবর্তন ও ঐতিহাসিক বৈষম্যের এ যুগকে অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তির যুগে রূপান্তরের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।

২২. বিদ্যমান বহু আইন ও নীতি অকার্যকর প্রমাণিত হওয়ায় নতুন সামাজিক চুক্তির আলোকে সার্বিক পরিবর্তনের দাবি জোরদার হবে।

২৩. বহুপক্ষীয় কূটনীতি শুধু নয়, বৈশ্বিক সমস্যা মোকাবিলায় শত্রু-মিত্র সবার সঙ্গে সহযোগিতার গুরুত্ব নতুন করে উপলব্ধি করবেন বিশ্বনেতারা।

২৪. তথ্য গোপন বা বিকৃত না করে জনগণকে আস্থায় নেওয়ার গুরুত্ব অনুধাবন করবে রাষ্ট্র।

২৫. মূলধারায় আসবে ইলেকট্রনিক ভোটিং ব্যবস্থা।

২৬. ঝুঁকি কমাতে চিঠির মাধ্যমে ভোট দেওয়া বিকল্প হয়ে উঠতে পারে।

২৭. বৈশ্বিক মহামারির আতঙ্ক সমাজকে বাধ্য করবে ভোগের সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার বিষয়টিকে মেনে নিতে।

২৮. গণহারে বিচ্ছিন্ন থাকার অবধারিত ফল হিসেবে সামনে চলে আসবে মানুষে-মানুষে সংসর্গের উচ্চ চাহিদা এবং ছোট পরিসরে হলেও উচ্চ জন্মহারের মতো বিষয়।

২৯. অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থা শক্তিশালী হবে।

৩০. ভোক্তা ও করপোরেশন উভয়েরই ব্যয় বাড়বে।

৩১. সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন শ্রেণির মধ্যে ব্যবধান বৃদ্ধিই শুধু নয়, মধ্যবর্তী শ্রেণিগুলোর মধ্যেও বৈষম্য বাড়বে।

৩২. এই মহামারি শেষে মানুষ নানা দিক থেকে মুক্তি চাইবে; বাড়িয়ে দেবে পারস্পরিক যোগাযোগ।

৩৩. বাইরে খাওয়া ও পার্টি করার প্রবণতা কমে ঘরে রান্নার ঝোঁক বাড়বে।

৩৪. মহামারি শেষে শপিংমলকেন্দ্রিক সংস্কৃতির বদলে উদ্যানসহ বিভিন্ন উন্মুক্ত জনপরিসরের প্রতি মানুষের আকর্ষণ বাড়বে।

৩৫. রক্ষণশীল ও উদারনৈতিক ধারণার পাল্টাপাল্টি বিন্যাসে আটকে থাকা ‘পরিবর্তন’ ধারণায় বদল আসবে মূলগত পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে।

৩৬. দীর্ঘ দিন ধরে মানুষকে সু-অভ্যাস শেখানো প্ল্যাটফর্মগুলো অকেজো প্রমাণিত হওয়ায় মানুষ আবার তার সৃজনশীলতা ও কল্পনাশক্তির ওপর আস্থা রাখতে শিখবে।

৩৭. কাজ, কাজ এবং কাজ—সাফল্যের চাবিকাঠি হিসেবে স্বীকৃত এই প্রচার থেকে মুখ ফিরিয়ে মানুষ নিজের ও নিজ পরিবারের দিকে আরও বেশি মনোযোগী হবে।

https://www.prothomalo.com/international/article/1648096/%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BF-%E0%A6%A5%E0%A7%87%E0%A6%95%E0%A7%87-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%AC-%E0%A6%B8%E0%A6%AC%E0%A6%87-%E0%A6%AC%E0%A6%A6%E0%A6%B2%E0%A7%87-%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%AC%E0%A7%87-%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%87%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%95%E0%A6%BF%E0%A6%A8?fbclid=IwAR2cEGU5hlAffZ3t9g0ma_j0YyYYVfRAzmy3ywhuZwG9SEwoWu3WQyiSZog

4
সময়টা এখন প্রযুক্তির। প্রযুক্তির সহায়তা না থাকলে ঘরে বসে কাজ করাটা মোটেই সহজ হতো না। আর এ কারণে করোনাভাইরাসের প্রভাবে বেশির ভাগ শিল্প আপাতত বন্ধ হয়ে গেলেও প্রযুক্তিনির্ভর কোম্পানিগুলো আছে বেশ ভালো অবস্থায়।

আরও অনেকের মতো আইফোন বিক্রিতে ধস নেমেছে। আর এ কারণে বাজার মূলধনে এক ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাওয়া অ্যাপলের শেয়ারের দর ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরের পর প্রথমবারের মতো ২ শতাংশ কমে গেছে। ফলে অ্যাপল আর এখন ট্রিলিয়ন ডলারের কোম্পানির আসনে নেই। গত ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত তাদের বাজার মূলধন কমেছে ৪০০ বিলিয়ন ডলার। এতে তাদের বাজার মূলধন ১ হাজার ৩৭০ বিলিয়ন ডলার থেকে কমে হয়েছে ৯৮২ বিলিয়ন ডলার।

আর এই সুযোগে ট্রিলিয়ন ডলারের কোম্পানি হয়ে গেছে আরেক টেক জায়ান্ট মাইক্রোসফট। কেননা অ্যালফাবেট ও আমাজনের বাজার মূলধনও ট্রিলিয়ন ডলার থেকে কমে গেছে। বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ এখন ঘরে বসে কাজ করছে। মাইক্রোসফটের ক্লাউডভিত্তিক অফিস ৩৬৫-এর ব্যবহার বেড়েছে বহু গুণ। ফলে খুব ভালোভাবে টিকে আছে মাইক্রোসফট।

https://www.prothomalo.com/economy/article/1647770/%E0%A6%9F%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A6%A8-%E0%A6%A1%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%87%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%B8%E0%A6%AB%E0%A6%9F?fbclid=IwAR08FDwoUnHsgJHujPPBFfdWKgG8SyjHuK5gyHaNUm-lQYww-UCVFxR59sI



5

করোনাভাইরাস মোকাবিলার প্রস্তুতি চলছে পুরো পৃথিবীতে। আমরাও চেষ্টা করছি। এর প্রাথমিক প্রস্তুতি হিসেবে আমরা প্রচুর খাবারদাবার কিনে রাখছি ঘরে। কিন্তু একবারও কি ভেবে দেখেছি, ঘরে জমা করে রাখার ফলে খাবারগুলোর গুণগত মান আদৌ বজায় থাকবে কি না? যে খাবার আমরা কিনে ঘরে জমা করেছি, সেগুলো আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা শক্তিশালী করার পক্ষে যথেষ্ট কি না? কারণ, করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো। পাশাপাশি যথাযথ কর্তৃপক্ষের দেওয়া স্বাস্থ্যসংক্রান্ত নির্দেশাবলি সঠিকভাবে পালন করা।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধের প্রথম ধাপ হলো ব্যক্তিগত সচেতনতা গড়ে তোলা এবং প্রত্যেকের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্থাৎ ইমিউন সিস্টেম বাড়িয়ে তোলা। এর ফলে করোনাভাইরাস সংক্রমণের যে মারাত্মক লক্ষ্মণ অর্থাৎ শ্বাসযন্ত্র এবং পরিপাকতন্ত্রের সংক্রমণ, সেগুলো সহজে প্রতিরোধ করা সম্ভব। সহজভাবে বললে, যেকোনো ভাইরাস হলো প্রোটিন যুক্ত অণুজীব, যার কারণে মানুষ জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট এমনকি মারাত্মক নিউমোনিয়া (নতুনভাবে) হতে পারে। তা ছাড়া এই ভাইরাস ভয়ংকর প্রাণঘাতী রোগ তৈরি করতে পারে খুব সহজে। তাই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বেশি পরিমাণে অ্যান্টি–অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে প্রতিদিন।


উদ্ভিজ্জ খাবার হলো অ্যান্টি–অক্সিডেন্টের সবচেয়ে ভালো উৎস, বিশেষ করে বেগুনি, নীল, কমলা ও হলুদ রংয়ের শাকসবজি ও ফল। ছবি: রজত কান্তি রায়
উদ্ভিজ্জ খাবার হলো অ্যান্টি–অক্সিডেন্টের সবচেয়ে ভালো উৎস, বিশেষ করে বেগুনি, নীল, কমলা ও হলুদ রংয়ের শাকসবজি ও ফল। ছবি: রজত কান্তি রায়
করোনাভাইরাস মোকাবিলার প্রস্তুতি চলছে পুরো পৃথিবীতে। আমরাও চেষ্টা করছি। এর প্রাথমিক প্রস্তুতি হিসেবে আমরা প্রচুর খাবারদাবার কিনে রাখছি ঘরে। কিন্তু একবারও কি ভেবে দেখেছি, ঘরে জমা করে রাখার ফলে খাবারগুলোর গুণগত মান আদৌ বজায় থাকবে কি না? যে খাবার আমরা কিনে ঘরে জমা করেছি, সেগুলো আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা শক্তিশালী করার পক্ষে যথেষ্ট কি না? কারণ, করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো। পাশাপাশি যথাযথ কর্তৃপক্ষের দেওয়া স্বাস্থ্যসংক্রান্ত নির্দেশাবলি সঠিকভাবে পালন করা।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধের প্রথম ধাপ হলো ব্যক্তিগত সচেতনতা গড়ে তোলা এবং প্রত্যেকের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্থাৎ ইমিউন সিস্টেম বাড়িয়ে তোলা। এর ফলে করোনাভাইরাস সংক্রমণের যে মারাত্মক লক্ষ্মণ অর্থাৎ শ্বাসযন্ত্র এবং পরিপাকতন্ত্রের সংক্রমণ, সেগুলো সহজে প্রতিরোধ করা সম্ভব। সহজভাবে বললে, যেকোনো ভাইরাস হলো প্রোটিন যুক্ত অণুজীব, যার কারণে মানুষ জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট এমনকি মারাত্মক নিউমোনিয়া (নতুনভাবে) হতে পারে। তা ছাড়া এই ভাইরাস ভয়ংকর প্রাণঘাতী রোগ তৈরি করতে পারে খুব সহজে। তাই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বেশি পরিমাণে অ্যান্টি–অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে প্রতিদিন।


অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট হলো কিছু ভিটামিন, মিনারেল ও এনজাইম, যা শরীরের ক্ষতিকর ফ্রি র‌্যাডিক্যালের (দেহের কোষ, প্রোটিন ও DNA ক্ষতি করে এমন কিছু) বিরুদ্ধে লড়াই করে, শরীরের কোষগুলোকে ক্ষতির হাত থেকে বাঁচিয়ে শরীরে জীবাণু সংক্রমণের ঝুঁকি প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। প্রধান অ্যান্টি–অক্সিডেন্টগুলো হলো বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন এ, সি, ই, লাইকোপেন, লুটেইন সেলেনিয়াম ইত্যাদি।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে অ্যান্টি–অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ যে খাবারগুলো বেশি করে খেতে হবে, সেগুলো হলো:

বিটা ক্যারোটিন: উজ্জ্বল রংয়ের ফল, সবজি। যেমন গাজর, পালংশাক, আম, ডাল ইত্যাদি।
ভিটামিন এ: গাজর, পালংশাক, মিষ্টি আলু, মিষ্টিকুমড়া, জাম্বুরা, ডিম, কলিজা, দুধজাতীয় খাবার।
ভিটামিন ই: কাঠবাদাম, চিনাবাদাম, পেস্তাবাদাম, বাদাম তেল, বিচিজাতীয় ও ভেজিটেবল অয়েল, জলপাইয়ের আচার, সবুজ শাকসবজি ইত্যাদি।
ভিটামিন সি: আমলকী, লেবু, কমলা, সবুজ মরিচ, করলা ইত্যাদি।

এ ছাড়া যে খাবার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, সেগুলোর একটি তালিকা দেওয়া হলো। এ খাবারগুলো আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে তো বাড়িয়ে তুলবেই, সেই সঙ্গে আরও বিভিন্নভাবে আপনার শরীরকে সুস্থ থাকতে সহায়তা করবে।

সামগ্রিকভাবে উদ্ভিজ্জ খাবারই হলো অ্যান্টি–অক্সিডেন্টের সবচেয়ে ভালো উৎস, বিশেষ করে বেগুনি, নীল, কমলা ও হলুদ রংয়ের শাকসবজি ও ফল। এ ছাড়া যে ধরনের খাবারগুলো আপনার প্রয়োজন, সেগুলোর একটি তালিকা দেওয়া হলো।

১. সবজি: করলা (বিটা ক্যারোটিনসমৃদ্ধ), পারপেল/লাল পাতা কপি, বিট, ব্রোকলি, গাজর, টমেটো, মিষ্টি আলু, ক্যাপসিকাম, ফুলকপি।
২. শাক: যেকোনো ধরনের ও রঙের শাক।
৩. ফল: কমলালেবু, পেঁপে, আঙুর, আম, কিউই, আনার, তরমুজ, বেরি, জলপাই, আনারস ইত্যাদি।
৪. মসলা: আদা, রসুন, হলুদ, দারুচিনি, গোলমরিচ।
৫. অন্যান্য: শিম বিচি, মটরশুঁটি, বিচিজাতীয় খাবার, বার্লি, ওটস, লাল চাল ও আটা, বাদাম।
৬. টক দই: এটি প্রোবায়োটিকস, যা শ্বাসযন্ত্র ও পরিপাকতন্ত্র সংক্রমণের ঝুঁকি প্রতিরোধ করে। অন্যদিকে শাকসবজি, ফল, বাদামজাতীয় খাবার শরীরে নিউটোভ্যাক্স ভ্যাকসিনের অ্যান্টিবডি প্রক্রিয়াকে উন্নত করে, যা স্টেপটোকোক্কাস নিউমোনিয়া প্রতিরোধে সক্রিয় ভূমিকা রাখে।
৭. চা: গ্রিন টি, লাল চায়ে এল-থেনিন এবং ইজিসিজি নামক অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট থাকে, যা আমাদের শরীরে জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অনেক যৌগ তৈরি করে শরীরে রোগ প্রতিরোধব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে।
৮. এ ছাড়া ভিটামিন বি-৬, জিংক–জাতীয় খাবার (বিচিজাতীয়, বাদাম, সামুদ্রিক খাবার, দুধ ইত্যাদি) শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরির কোষ বৃদ্ধি করে। তাই এ ধরনের খাবার বেশি খেতে হবে।
৯. উচ্চ মানের আমিষজাতীয় খাবার (ডিম, মুরগির মাংস ইত্যাদি) বেশি করে খেতে হবে।
১০. অ্যান্টি–অক্সিডেন্টের খুব ভালো কাজ পেতে হলে খাবার রান্নার সময় অতিরিক্ত তাপে বা দীর্ঘ সময় রান্না না করে প্রয়োজনীয় তাপমাত্রায় রান্না করতে হবে।


উদ্ভিজ্জ খাবার হলো অ্যান্টি–অক্সিডেন্টের সবচেয়ে ভালো উৎস, বিশেষ করে বেগুনি, নীল, কমলা ও হলুদ রংয়ের শাকসবজি ও ফল। ছবি: রজত কান্তি রায়
উদ্ভিজ্জ খাবার হলো অ্যান্টি–অক্সিডেন্টের সবচেয়ে ভালো উৎস, বিশেষ করে বেগুনি, নীল, কমলা ও হলুদ রংয়ের শাকসবজি ও ফল। ছবি: রজত কান্তি রায়
করোনাভাইরাস মোকাবিলার প্রস্তুতি চলছে পুরো পৃথিবীতে। আমরাও চেষ্টা করছি। এর প্রাথমিক প্রস্তুতি হিসেবে আমরা প্রচুর খাবারদাবার কিনে রাখছি ঘরে। কিন্তু একবারও কি ভেবে দেখেছি, ঘরে জমা করে রাখার ফলে খাবারগুলোর গুণগত মান আদৌ বজায় থাকবে কি না? যে খাবার আমরা কিনে ঘরে জমা করেছি, সেগুলো আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা শক্তিশালী করার পক্ষে যথেষ্ট কি না? কারণ, করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো। পাশাপাশি যথাযথ কর্তৃপক্ষের দেওয়া স্বাস্থ্যসংক্রান্ত নির্দেশাবলি সঠিকভাবে পালন করা।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধের প্রথম ধাপ হলো ব্যক্তিগত সচেতনতা গড়ে তোলা এবং প্রত্যেকের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্থাৎ ইমিউন সিস্টেম বাড়িয়ে তোলা। এর ফলে করোনাভাইরাস সংক্রমণের যে মারাত্মক লক্ষ্মণ অর্থাৎ শ্বাসযন্ত্র এবং পরিপাকতন্ত্রের সংক্রমণ, সেগুলো সহজে প্রতিরোধ করা সম্ভব। সহজভাবে বললে, যেকোনো ভাইরাস হলো প্রোটিন যুক্ত অণুজীব, যার কারণে মানুষ জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট এমনকি মারাত্মক নিউমোনিয়া (নতুনভাবে) হতে পারে। তা ছাড়া এই ভাইরাস ভয়ংকর প্রাণঘাতী রোগ তৈরি করতে পারে খুব সহজে। তাই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বেশি পরিমাণে অ্যান্টি–অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে প্রতিদিন।


অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট হলো কিছু ভিটামিন, মিনারেল ও এনজাইম, যা শরীরের ক্ষতিকর ফ্রি র‌্যাডিক্যালের (দেহের কোষ, প্রোটিন ও DNA ক্ষতি করে এমন কিছু) বিরুদ্ধে লড়াই করে, শরীরের কোষগুলোকে ক্ষতির হাত থেকে বাঁচিয়ে শরীরে জীবাণু সংক্রমণের ঝুঁকি প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। প্রধান অ্যান্টি–অক্সিডেন্টগুলো হলো বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন এ, সি, ই, লাইকোপেন, লুটেইন সেলেনিয়াম ইত্যাদি।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে অ্যান্টি–অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ যে খাবারগুলো বেশি করে খেতে হবে, সেগুলো হলো:

বিটা ক্যারোটিন: উজ্জ্বল রংয়ের ফল, সবজি। যেমন গাজর, পালংশাক, আম, ডাল ইত্যাদি।
ভিটামিন এ: গাজর, পালংশাক, মিষ্টি আলু, মিষ্টিকুমড়া, জাম্বুরা, ডিম, কলিজা, দুধজাতীয় খাবার।
ভিটামিন ই: কাঠবাদাম, চিনাবাদাম, পেস্তাবাদাম, বাদাম তেল, বিচিজাতীয় ও ভেজিটেবল অয়েল, জলপাইয়ের আচার, সবুজ শাকসবজি ইত্যাদি।
ভিটামিন সি: আমলকী, লেবু, কমলা, সবুজ মরিচ, করলা ইত্যাদি।

পেঁপেতে প্রচুর পেপেন এনজাইম আছে, যা মানুষের পাকস্থলীতে আমিষ হজমে সাহায্য করে। আরও আছে পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ভিটামিন সি। ছবি: রজত কান্তি রায়
পেঁপেতে প্রচুর পেপেন এনজাইম আছে, যা মানুষের পাকস্থলীতে আমিষ হজমে সাহায্য করে। আরও আছে পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ভিটামিন সি। ছবি: রজত কান্তি রায়
এ ছাড়া যে খাবার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, সেগুলোর একটি তালিকা দেওয়া হলো। এ খাবারগুলো আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে তো বাড়িয়ে তুলবেই, সেই সঙ্গে আরও বিভিন্নভাবে আপনার শরীরকে সুস্থ থাকতে সহায়তা করবে।

সামগ্রিকভাবে উদ্ভিজ্জ খাবারই হলো অ্যান্টি–অক্সিডেন্টের সবচেয়ে ভালো উৎস, বিশেষ করে বেগুনি, নীল, কমলা ও হলুদ রংয়ের শাকসবজি ও ফল। এ ছাড়া যে ধরনের খাবারগুলো আপনার প্রয়োজন, সেগুলোর একটি তালিকা দেওয়া হলো।

১. সবজি: করলা (বিটা ক্যারোটিনসমৃদ্ধ), পারপেল/লাল পাতা কপি, বিট, ব্রোকলি, গাজর, টমেটো, মিষ্টি আলু, ক্যাপসিকাম, ফুলকপি।
২. শাক: যেকোনো ধরনের ও রঙের শাক।
৩. ফল: কমলালেবু, পেঁপে, আঙুর, আম, কিউই, আনার, তরমুজ, বেরি, জলপাই, আনারস ইত্যাদি।
৪. মসলা: আদা, রসুন, হলুদ, দারুচিনি, গোলমরিচ।
৫. অন্যান্য: শিম বিচি, মটরশুঁটি, বিচিজাতীয় খাবার, বার্লি, ওটস, লাল চাল ও আটা, বাদাম।
৬. টক দই: এটি প্রোবায়োটিকস, যা শ্বাসযন্ত্র ও পরিপাকতন্ত্র সংক্রমণের ঝুঁকি প্রতিরোধ করে। অন্যদিকে শাকসবজি, ফল, বাদামজাতীয় খাবার শরীরে নিউটোভ্যাক্স ভ্যাকসিনের অ্যান্টিবডি প্রক্রিয়াকে উন্নত করে, যা স্টেপটোকোক্কাস নিউমোনিয়া প্রতিরোধে সক্রিয় ভূমিকা রাখে।
৭. চা: গ্রিন টি, লাল চায়ে এল-থেনিন এবং ইজিসিজি নামক অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট থাকে, যা আমাদের শরীরে জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অনেক যৌগ তৈরি করে শরীরে রোগ প্রতিরোধব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে।
৮. এ ছাড়া ভিটামিন বি-৬, জিংক–জাতীয় খাবার (বিচিজাতীয়, বাদাম, সামুদ্রিক খাবার, দুধ ইত্যাদি) শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরির কোষ বৃদ্ধি করে। তাই এ ধরনের খাবার বেশি খেতে হবে।
৯. উচ্চ মানের আমিষজাতীয় খাবার (ডিম, মুরগির মাংস ইত্যাদি) বেশি করে খেতে হবে।
১০. অ্যান্টি–অক্সিডেন্টের খুব ভালো কাজ পেতে হলে খাবার রান্নার সময় অতিরিক্ত তাপে বা দীর্ঘ সময় রান্না না করে প্রয়োজনীয় তাপমাত্রায় রান্না করতে হবে।

লেবুতে আছে ভিটামিন সি। এ ভিটামিন জারণজনিত পীড়ন (oxidative stress) রোধে একটি অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। ছবি: রজত কান্তি রায়
লেবুতে আছে ভিটামিন সি। এ ভিটামিন জারণজনিত পীড়ন (oxidative stress) রোধে একটি অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। ছবি: রজত কান্তি রায়
ওপরের খাবারগুলো ছাড়াও নিউমোনিয়া প্রতিরোধে উচ্চ আমিষযুক্ত খাবার বেশি করে খেতে হবে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত কোষ ও টিস্যু দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে এবং পাশাপাশি নতুন টিস্যু তৈরি হবে। এর সঙ্গে দরকার পর্যাপ্ত ঘুম। অপর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম শরীরে কর্টিসল হরমোনের চাপ বাড়িয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়, তাই পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে।

যে খাবার বাদ দিতে হবে
সব ধরনের কার্বনেটেড ড্রিংকস, বিড়ি, সিগারেট, জর্দা, তামাক, সাদাপাতা, খয়ের ইত্যাদি। এগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় বাধা দিয়ে ফুসফুসে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়, ঠান্ডা খাবার, আইসক্রিম, চিনি ও চিনির তৈরি খাবার (যা ভাইরাসের সংক্রমণে সহায়তা করে)।

এ লেখার উদ্দেশ্য সঠিক পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে প্রত্যেকের শরীরে রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা উন্নত করতে সহায়তা করা, যাতে শুধু করোনাভাইরাস নয়, সব ধরনের ভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় আপনি শারীরিকভাবে সক্ষম থাকতে পারেন।

লেখক: প্রধান পুষ্টিবিদ ও বিভাগীয় প্রধান, পুষ্টি বিভাগ, বারডেম হাসপাতাল।


https://www.prothomalo.com/life-style/article/1646380/%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%87%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%B8-%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%A7%E0%A7%87-%E0%A6%AF%E0%A6%BE-%E0%A6%96%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%A8?fbclid=IwAR0i0bWAsXHgtOYhtey_Wr5SU-3T6nxNmHc_EwQVSg6xQywBtraoYdYk4lE


6
I have a simple philosophy in life I’ve learned from people much smarter than me. That is, watch the people you don’t want to be like, and do the opposite of what they do.

Link:
https://medium.com/mind-cafe/the-7-habits-of-highly-ineffective-people-44b0ff317be

7
Multimedia Section / Biggest design trends for 2020
« on: February 18, 2020, 10:54:26 AM »
Design trends 2020 are an ideal mixture of the visual side of graphic design and the high-tech side of evolving technology.


Link:
https://uxdesign.cc/biggest-design-trends-for-2020-8988bf2d5caa

8
Interior Design / MYTHBUSTER ADAM SAVAGE HAS MADE A BAG, AND IT'S BEAUTIFUL
« on: February 19, 2019, 10:40:26 AM »
ADAM SAVAGE IS clearly overjoyed about his new bag. I met up with the gear-obsessed designer, former Mythbusters host, and Tested.com editor in chief at his workshop in San Francisco to see his latest creation. He's designed his first carryall utility bag, the EDC One, and launched a new brand, Savage Industries, to market it. With the same childlike glee he exudes on camera, Savage flipped the thing around on the workbench, opening and closing it, zipping and unzipping, as he pointed out all the features.

It's constructed almost entirely out of upcycled cloth from boat sails, so each bag has some unique quirks, and every specimen comes off the production line with a broken-in look. The handles are held together by magnets instead of snaps or velcro, which, if you've fiddled with those types of closures on your own bag, is a welcome innovation. You just bring the handles near one another and they jump together with a satisfying clonk. Also clever: The straps are stiff enough that the clasped handle stays propped upright like a little pup tent frame. Unzip and pry open the bag, and it holds its shape in that configuration too, thanks to a pair of spring steel inserts that run around the lip and keep the mouth agape like the jaw of a whale shark.

There's a pocket inside to hold your notebooks (Savage adores Tom Sachs Ten Bullets notebooks, though he says his pocket is brand-agnostic) and, via a stack of horizontal loops, your pens and pencils. On the Kevlar-reinforced bottom, there are strips of velcro. This detail hints at accessories to come, like some padded bays for camera equipment or a waterproof bucket-like insert for toting a 12-pack.

Source: https://www.wired.com/story/savage-industries-bag/

9
Interior Design / Radical Innovation Award 2019
« on: February 19, 2019, 10:37:59 AM »
Submissions are now open for the 2019 Radical Innovation, which challenges designers, architects, hoteliers and students to pioneer compelling ideas in travel and hospitality. New in 2019, the competition will distinguish between built and unbuilt projects, in addition to honoring a select individual who challenges the hospitality community through the art of invention with the Innovator Award.

A panel of jurors leading the fields of hospitality, design, and investment evaluate all entries based on their originality, creativity, design, and potential impact on the industry. Feasibility is key. While Radical Innovation seeks brave ideas, the program requires achievable visions with a clear, compelling brief accompanied by a high-level presentation that illustrates how the concept could be achieved in the next 3-5 years with design renderings and video pitch.

The deadline for submissions is April 3, 2019.

Read more: https://www.dexigner.com/news/31785


10
Interior Design / Studio TK Launches 'Clique' Modular Furniture System
« on: February 19, 2019, 10:37:37 AM »
Studio TK recently launched a brand new modular seating system, Clique. Designed to create visual continuity throughout the office, Clique is a reconfigurable system that allows for versatility in any workplace, no matter how small.

The system of benches, ranging from two to eight seats, are easy to move and can transversely fit any space. Clique's various configurations promote a multitude of work styles from lounge to collaboration, and the planning allows for multi-use scenarios to combine styles in one setting.

Clique's pre-configured benches yield a simplified specification process, removing the hassle of specifying multiple parts to create a larger setting. Individual seats can be unbolted with ease in order to replace or change seat and back configurations. The system is offered with a choice of an upholstered leg base or an aluminum hoop leg in either polished or various powdercoat colors.

Read more: https://www.dexigner.com/news/31787


11
Interior Design / Architecture & Design Film Festival LA 2019
« on: February 19, 2019, 10:37:07 AM »
The 2019 Architecture & Design Film Festival, the nation's preeminent film festival devoted to architecture and design, will return to DTLA for the third edition of ADFF:LA from March 13-17 at the Los Angeles Theatre Center.

The curated program will feature 22 films covering a range of topics, some directly related to LA like That Far Corner (a film about Frank Lloyd Wright's Maya-inspired houses, written & directed by LA's Chief Design Officer Christopher Hawthorne) and Frank Gehry: Building Justice (a film that explores prison design with students of SCI-Arc and Yale School of Architecture).

The festival will also host events, director Q&As and panel discussions throughout the five days with dynamic speakers including Frances Anderton, Edward Lifson and Kerry Brougher, director of the soon-to-open Academy Museum of Motion Pictures.

Read more: https://www.dexigner.com/news/31790


12
Interior Design / Winston Bench by Eva Harlou for Mater
« on: February 19, 2019, 10:36:44 AM »
Mater has unveiled the Winston Bench - a light weight and compact design, made from environmentally friendly materials and suitable for a range of interior spaces, designed by Eva Harlou. "The Winston Bench has been designed with the desire to create a beautifully crafted piece of furniture that is versatile and that can be used in different interior settings," Harlou commented.

The Winston Bench has an elegant aesthetic and it is crafted in FSC certified oak and wicker. The intricate cane-work of the piece is woven by Denmark's most experienced and highly skilled craftsman. Cane is a sustainable material as the grass reproduces itself very quickly after harvesting.

The oak framework and the detailing of the leg fixtures underline the exquisite craftsmanship of the Winston Bench. Furthermore, the waste wood and rattan from the production of the Winston Bench are compressed into wooden pellets and used to heat up the workshop, making it an energy self-sufficient piece.








13
Interior Design / Integrating Life and Work in the AEC World
« on: February 19, 2019, 10:35:29 AM »
As women achieve greater levels of parity in leadership roles, trail-blazing professionals in architecture, engineering and construction are focused on supporting and accelerating this trend.

On Thursday, February 21, a group of women holding executive and principal roles will join a panel discussion moderated by Julia McFadden, AIA, Associate Principal of Svigals + Partners, as part of the 2019 Women Who Build Summit. Hosted by The Construction Institute of the University of Hartford, the program promotes achievement among women within the architecture, engineering and construction professions and celebrates the women who inspire other women to enter this field.

Titled 'Integrating Life and Work in the AEC World,' the panel will focus on innovative approaches to employee engagement and how work environments that foster life-work balance generate greater job satisfaction and productivity.

"Executives and managers do well to recognize each employee as an individual, with unique experiences and personal challenges they may face," says McFadden. "I'm looking forward to this discussion, and hearing from the panel the range of approaches to supporting employees - men and women - in achieving a synergistic integration of work and life."

Read more: https://www.dexigner.com/news/31796


14
Dubbeldam Architecture + Design (DA+D) has recently completed Informa Canada's Toronto expansion. Informa Canada produces and manages over 45 annual conferences, trade and consumer shows in the construction, design, craft, art, real estate, and furniture sectors, including the Interior Design Show, IIDEXCanada, the Artist Project and Fan Expo. The fit-up for Informa's Toronto expansion into one of midtown's Class A office buildings comfortably accommodates a growing team of 110 employees in a 16,000 s.f. floorplate.

Informa's department teams working in different sectors (real estate shows, consumer shows, Fan expo, finance department) were previously isolated from one another, and with communication and productivity decreasing it was necessary to integrate the teams into a more collaborative environment. The new layout divides the department teams into coloured quadrants which are visually identified by bold coloured accents in the Teknion workstation furniture and wall graphics. The workstations are located around the perimeter to provide access to views and natural light. Private offices and meeting rooms have glass partitions to allow for borrowed light in adjacent interior spaces. The new office layout, reflecting the creativity and collaborative nature of their process, has dramatically improved Informa's workflow and productivity.







S


15
Valerio Dewalt Train Associates (VDTA) recently completed the Residences at 8 East Huron, on the edge of the River North neighborhood of Chicago. The client, CA Ventures, desired a very clean, modern-looking luxury apartment building, but the site had such a small footprint that previous architects had been unable to come up with a workable plan.

The tolerances were very tight, but VDTA found inventive ways to avoid a characterless "cereal box" building. The 102 apartments are almost all corner units, with excellent views of the city. The 26-story residential tower is wrapped in glazing with accents of white Ceramitex sintered paneling. Protruding rows of balconies are semi-enclosed by the window wall, which continues above the roofline and is architecturally expressed on the amenity level. To achieve its sleek aesthetic, the concrete structure is tucked behind the glass, and all lateral members are placed in a hidden level below the pool among the building's mechanical systems.

The 24th floor features 8,000 square feet of indoor and outdoor amenity space, including an outdoor infinity-edge stainless steel swimming pool and sun deck.










Pages: [1] 2 3