Daffodil International University
Health Tips => Health Tips => Kidneys => Topic started by: rumman on February 07, 2017, 12:29:43 PM
-
কারো কিডনি নষ্ট বা দুর্বল হলে চিকিত্সকরা যখন স্বাভাবিক চিকিত্সা বাদ দিয়ে ডায়ালিসিস করার পরামর্শ দেন তখন রোগীর স্বজনদের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে। কারণ ডায়ালিসিসকে বলা হয়ে থাকে কিডনি রোগীদের চিকিত্সার শেষ ধাপ—যার মাধ্যমে তার জীবনটাকে টেনেটুনে কিছুটা দীর্ঘ করা হয়। পুরোপুরি সুস্থ হবার জন্য নয়। তাছাড়া এর বিপুল খরচ বহন করাও সবার পক্ষে সম্ভব হয় না।
কিন্তু বিশ্ববাসীর জন্য সুখবর নিয়ে এসেছেন এক বাঙালি বিজ্ঞানী। ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই বায়ো-ইঞ্জিনিয়ার যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটির বায়ো-ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর। তার নাম শুভ রায়। তিনি জানিয়েছেন, শরীরের দু’টি কিডনিও যদি বিগড়ে যায় তবু আর হা-পিত্যেশ করতে হবে না। হন্যে হয়ে ঘুরতে হবে না দ্বারে দ্বারে। তার উদ্ভাবিত কৃত্রিম কিডনি লাগিয়েই ফিরে পাওয়া যাবে স্বাভাবিক জীবন।
শুভ রায়ের আবিষ্কৃত কিডনি দেখতে অনেকটা কফির কাপের মতো। কাপটাকে বসিয়ে দেওয়া যাবে শরীরের ভেতরেই। ব্যস্, কিডনি যা করে এটাও সেই একই কাজ করে বাঁচিয়ে দেবে রোগীকে। গত সাত বছরের লাগাতার চেষ্টার পর শেষমেশ কৃত্রিম কিডনি উদ্ভাবন করেছেন শুভ রায়। গত শুক্রবার শুভ ও তার সহযোগী গবেষকরা ওই আবিষ্কারের কথা ঘোষণা করেন। তারা জানিয়েছেন, আর মাত্র দুই-তিন বছরের মধ্যেই আমেরিকার বাজারে বাণিজ্যিকভাবে এসে যাবে এই কিডনি। আর ইউরোপসহ বিশ্ববাজারেও সেই কিডনি আসতে দেরি হবে না। এই বিস্ময়কর উদ্ভাবন এখন শীর্ষ মার্কিন সংস্থা ‘ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’-এর অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।
কীভাবে কাজ করবে:শুভ রায় কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকাকে বলেন, ‘‘তলপেটে যেখানে শরীরের দু’পাশে আমাদের দু’টি কিডনি রয়েছে, সেখানেই যে কোনো এক পাশে এটি অস্ত্রোপচার করে বসিয়ে দেওয়া যাবে। হার্ট থেকে আসা রক্তকে আসল কিডনির মতো ফিল্টার করে নেবে কৃত্রিম কিডনি। এটি নজর রাখবে যাতে গুরুত্বপূর্ণ হরমোনগুলি শরীরে ঠিকভাবে তৈরি হয় আর সংশ্লিষ্ট গ্রন্থিগুলি (গ্ল্যান্ডস) থেকে সেই হরমোনগুলির ক্ষরণ হয় পর্যাপ্ত পরিমাণে। শুধু তাই নয়, শরীরে রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখার কাজটাও করবে ওই কৃত্রিম কিডনি। এটা স্বাভাবিক কিডনির চেয়ে অনেক দ্রুত ও দক্ষতার সঙ্গে ডায়ালিসিসের কাজ করতে পারবে।’’
কিডনি রোগের কারণ:কিডনির অসুখগুলোর জন্য মূলত দায়ী দু’টি জিনিস। ডায়াবেটিস আর উচ্চ রক্তচাপ। সচেতন জীবনযাপন করলে মানুষ ডায়াবেটিস এড়িয়ে চলতে পারে। কিডনির অসুখ একেবারে সেরে যায় না। নষ্ট কিডনিকে ‘কাজ চালানোর গোছের’ রাখতে ডায়ালিসিস করাতে হয়। একবার ডায়ালিসিস করলে কিছুদিন কাজ চালিয়ে নেওয়া যায়। কিন্তু তারপর আবার ডায়ালিসিসের প্রয়োজন হয়। সমস্যাটা আরো জটিল হয়ে ওঠে কিডনির অসুখের চরম পর্যায়ে। একে ডাক্তারি পরিভাষায় বলে ‘এন্ড-স্টেজ রেনাল ডিজিজ’ (ইএসআরডি)। যখন আমাদের শরীরের কিডনি দু’টি রক্তস্রোত থেকে আর সবটুকু বর্জ্য পদার্থ (ওয়েস্ট প্রোডাক্ট) ও বাড়তি তরল ছেঁকে নিতে পারে না, এটা সেই পর্যায়। তখন রোগীকে বার বার ডায়ালিসিস করিয়ে সাময়িকভাবে কিডনি সচল রাখা হয়—যার খরচ প্রচুর। এক পর্যায়ে রোগীকে মৃত্যুর কাছে পরাজয় স্বীকার করে নিতে হয়। এই পরিস্থিতিতে বাজারে কৃত্রিম কিডনি এলে শুধু যে রোগীরাই উপকৃত হবেন তা নয়। ডাক্তাররাও নিশ্চিন্ত বোধ করবেন।
-
Thanks for sharing