Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Messages - Md. Nurul Islam

Pages: [1] 2
3
মহামারী বা দূরারোগ্য ব্যধি থেকে পরিত্রাণের দোয়া

বিভিন্ন প্রতিরোধক ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি দূরারোগ্য ব্যধি কিংবা মহামারী থেকে একমাত্র আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়াটাই সর্বোত্তম পন্থা।

এমন পরিস্থিতিতে সব সময় এ দোয়াটি পড়ার অভ্যাস করা সমীচীন, যা রাসুল (সা) শিখিয়ে দিয়েছেন:

اَللَّهُمَّ اِنِّىْ اَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْبَرَصِ وَ الْجُنُوْنِ وَ الْجُذَامِ وَمِنْ سَىِّءِ الْاَسْقَامِ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল বারাসি ওয়াল জুনুন
ওয়াল ঝুজাম ওয়া মিন সায়্যিল আসক্বাম।’
-সূনানে আবু দাউদ, সূনানে তিরমিজি

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আপনার কাছে আমি শ্বেত রোগ থেকে আশ্রয় চাই। মাতাল হয়ে যাওয়া থেকে আশ্রয় চাই। কুষ্ঠু রোগে আক্রান্ত হওয়া থেকে আশ্রয় চাই। আর দূরারোগ্য ব্যাধি (যেগুলোর নাম জানিনা) থেকে আপনার আশ্রয় চাই।’

তিরমিজিতে এসেছে, আরও একটি দোয়া পড়তে বলেছেন রাসুলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামঃ

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ مُنْكَرَاتِ الأَخْلاَقِ وَالأَعْمَالِ وَالأَهْوَاءِ وَ الْاَدْوَاءِ
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন মুনকারাতিল আখলাক্বি ওয়াল আ’মালি ওয়াল আহওয়ায়ি, ওয়াল আদওয়ায়ি।’

অর্থ : হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি তোমার কাছে খারাপ (নষ্ট-বাজে) চরিত্র, অন্যায় কাজ ও কুপ্রবৃত্তির অনিষ্টতা এবং বাজে অসুস্থতা ও নতুন সৃষ্ট রোগ বালাই থেকে আশ্রয় চাই।’ _সূনানে তিরমিজি

4
নিজের ব্যবসা শুরু করলে পরিবার বাধা দেয় তাসলিমাকে, কিন্তু এখন ৩০জন কাজ করে তার কারখানায়।

২০০৮ সালে সাংবাদিকতা ছেড়ে ব্যবসা শুরু করেন তাসলিমা। চাকরি ছেড়ে যখন ব্যবসা শুরু করেন তখন তার সে সিদ্ধান্তকে সমর্থন দেয়নি পরিবার। তাদের কাছ থেকে বাধা এসেছে, বলেছে- কেন তুমি এটা করছো তুমি আরেকটা চাকরি খুঁজো। কারণ আরেকটি ব্যবসা করতে গিয়ে লোকসানের মুখে পড়েছিলেন তাসলিমা মিজি। তাই নতুন ব্যবসা শুরু করায় তার উপর ভরসা করতে পারছিলো না পরিবার।

কয়েক বছরের মাথায় পরিবারের সে ধারণাকে ভুল প্রমাণ করেন, এখন ৩০ জনের বেশি কর্মী কাজ করেন তাসলিমার কারখানায়।

তসলিমা বলেন- "এখন এটা অবশ্যই খুবই আনন্দের, আমার বাবার সাথে যখন কথা বলি যে- আমি ব্যবসা বাড়াবো, আমার ফ্যাক্টরিটাকে আমি বড় করবো আমার বাবা তখন চান যে তাঁর জমিতে এরকম একটা ফ্যাক্টরি করি যেটা গ্রামের অনেক লোকের কর্মসংস্থান করবে। এটা বড় একটা অর্জন।"

কীভাবে তাসলিমা মিজি তার ব্যবসা দিয়ে ঘুরে দাঁড়ালেন, প্রতিষ্ঠিত করলেন চামড়াজাত পণ্যের ব্র্যান্ড গুটিপা?

ত্রিশোর্ধ নারীদের জীবন সংগ্রাম নিয়ে বিবিসি বাংলার ধারাবাহিক 'তিরিশে ফিনিশ'-এর এই গল্পটি তাসলিমা মিজির।

5
অনলাইন কোডিং কোর্স চালু করেছে গুগল

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রযুক্তি কোম্পানি গুগল ‘গুগল আইটি অটোমেশন উইথ পাইথন প্রফেশনাল সার্টিফিকেট’ নামে নতুন একটি কোর্স চালু করেছে। এটি ছয় মাসের প্রোগ্রাম যা চাকরি প্রার্থীদের পাইথন এবং আইটি অটোমেশনবিষয়ক চাকরির দক্ষতা বৃদ্ধি করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। গুগলের প্রোডাক্ট লিড নেটালি ভ্যান ক্লিফ কনলি সম্প্রতি এক বিবৃতিতে জানান পাইথন এখন সর্বাধিক চাহিদা সম্পন্ন প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ। যুক্তরাষ্ট্রে ৭৫ হাজার এন্ট্রি-লেভেল জব-সহ ৫ লাখ ৩০ হাজারের বেশি চাকরির জন্য পাইথন দক্ষতার প্রয়োজন। এই নতুন সার্টিফিকেট কোর্সের সাহায্যে চাকরি প্রার্থীরা ছয় মাসের মধ্যে পাইথন এবং আইটি অটোমেশন শিখতে পারবে। প্রোগ্রামটিতে একটি চূড়ান্ত প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত রয়েছে যেখানে শিক্ষার্থীরা তাদের নতুন দক্ষতা সমস্যার সমাধান করতে ব্যবহার করবে। যেমন, অটোমেশন ব্যবহার করে একটি ওয়েব পরিষেবা তৈরি করতে পারবে। সব ধরনের শিক্ষার্থী যেন এই আইটি প্রফেশনাল সার্টিফিকেট কোর্সে সুযোগ পেতে পারে তা নিশ্চিত করতে গুগল ডট ওআরজি গুডউইল, মেরিট আমেরিকা, পার স্কলারস এবং আপওয়ার্ডলি গ্লোবালের মতো অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের জন্য ২ হাজার ৫০০ বৃত্তি দেবে। গত অক্টোবরে গুগলের প্রধান নির্বাহী সুন্দর পিচাই এবং হোয়াইট হাউস উপদেষ্টা ইভানকা ট্রাম্প প্রযুক্তি দক্ষতা শেখাতে ২ লাখ ৫০ হাজার মার্কিনিকে প্রশিক্ষণের সুযোগ দেওয়ার জন্য একটি কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন। এই সময় পিচাই আরও উল্লেখ করেছিলেন, তথ্যপ্রযুক্তি পেশাজীবীদের সার্টিফিকেট দেওয়ার জন্য গুগলের কর্মসূচি ২০২০ সালের মধ্যে ১০০ মার্কিন কমিউনিটি কলেজগুলোতে বিস্তৃত হবে।

6
দাঁড়িয়ে পানি পান স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়

দেহের কোষ, কলা বা টিস্যু, বিভিন্ন অঙ্গ তথা মস্তিষ্ক, কিডনী, পাকস্থলী, ত্বক, চুল ইত্যাদির যথাযথ কার্যকারীতার জন্য পানি অত্যাবশ্যকীয়। শরীরের সকল প্রকার কার্যাবলী সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা প্রয়োজন। কিন্তু অনেক সময় ভুল নিয়মে পানি পান করে নিজেকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দেই আমরা। দাঁড়িয়ে পানি পান করলে দেখা দিতে পারে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা।
চলুন জেনে নেই দাঁড়িয়ে পানি পানের ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে।
১. দাঁড়িয়ে পানি পান করলে তা সরাসরি পাকস্থলীতে গিয়ে আঘাত করে। স্টমাক থেকে নিঃসৃত অ্যাসিডের কর্মক্ষমতা কমিয়ে দেয়। বদহজমের আশঙ্কা বাড়ে। তলপেটে যন্ত্রণাসহ একাধিক সমস্যা তৈরি হয়।
২. দাঁড়িয়ে পানি পান করা হলে তা দ্রুত কোলন বা মলাশয়ে চলে যায়। ফলে পানির প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপকরণ শরীরে শোষিত হয় না।
৩. গ্যাস্ট্রো ইসোফেগাল রিফ্লাক্স ডিজিজ বা G.E.R.D দাঁড়িয়ে পানি পান করলে তা সরাসরি ইসোফেগাসে গিয়ে ধাক্কা মারে। এরফলে পাকস্থলীর ভেতরের সরু নালিটি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। যার ফলে গ্যাস্ট্রো ইসোফেগাল রিফ্লাক্স ডিজিজ বা G.E.R.D এর মতো রোগ শরীরে বাসা বাঁধে।
৪. পানি পান করার পরেই ছাঁকনিগুলো শরীর পরিশ্রুত করার কাজ শুরু করে দেয়। দাঁড়িয়ে পানি পান করলে শরীরের অন্দরে থাকা ছাকনিগুলো সংকুচিত হয়ে যায়। পরিশ্রুত করার কাজ বাধা পায়। শরীরে টক্সিনের মাত্রা বাড়তে থাকে।
৫. দাঁড়িয়ে পানি পান করলে নার্ভ উত্তেজিত হয়ে যায়, উদ্বেগ বাড়তে থাকে।
৬. কিডনি ক্ষতিগ্রস্থ হয় দাঁড়িয়ে পানি পান করলে। এতে কিডনির কর্মক্ষমতা কমে। কিডনি ড্যামেজের সম্ভাবনা থাকে।

7
১১ বছর বয়সেই মোটিভেশনাল বক্তা হাম্মাদ!

১১ বছরের বালক হাম্মাদ সাফি পুরো পাকিস্তানকে কাপিয়ে তুলেছেন। তার প্রশংসায় এখন পঞ্চমুখ পুরো পাকিস্তান। বিস্ময় এ বালকের কথা বলার ধরণ এতটাই প্রাণবন্ত যে, বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা তার বক্তব্য শোনেন।

এই বয়সেই একজন মোটিভেশনাল স্পিকার হিসেবে পরিচিত হাম্মাদ। তার ভাষণ শুনে অনেকেই নিজেদের ক্যারিয়ার সমস্যার সমাধান বের করে থাকেন।

হাম্মাদ মাদ্রাসায় পড়ালেখা ছেড়ে স্পোকেন ইংলিশের কোর্স করে। সে পাকিস্তানের ইউনিভার্সিটি অব স্পোকেন ইংলিশে লেকচার দেয়। এ ইউনিভার্সিটির ফ্যাকাল্টি তাকে ইতোমধ্যে ‘ক্ষুদে প্রফেসর’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।

হাম্মাদ যখন কথা বলেন তখন তার হাত, এবং মুখের হাসি এমনভাবে ব্যবহার করে যে দেখে বোঝাই যাবে না তার বয়স ১১ বছর। তার হাঁটার ধরণও অন্য সবার চাইতে আলাদা।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাখ লাখ মানুষ এখন এই পাকিস্তানি বিস্ময় বালকের কথা শোনেন। বর্তমানে হাম্মাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ১ লাখ ৪৫ হাজার। তার কিছু ভিডিও কয়েক লাখ বার দেখা হয়েছে।

ইতোমধ্যে পাকিস্তানে হাম্মাদকে একজন অনলাইন স্টার বলা হয়।
হাম্মাদের আবেগপূর্ণ ও অনুপ্রেরণামূলক ভাষণ প্রভাব মানুষের ওপর এতটাই পড়ে যে, মানুষ নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখেন।

বিলাল খান নামে একজন জানান, কিছুদিন আগে সে খুবই হতাশাগ্রস্ত ছিলেন। তার কোনো চাকরি ছিল না। এক সময় তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু একদিন হাম্মাদের ভিডিও দেখে সে চিন্তা করে ১১ বছরের একটি বালক যদি এই বয়সে কিছু করতে পারে তাহলে আমি নই কেন?

8
ডায়াবেটিস কিন্তু এখন একটা মহামারীর আকার ধারণ করেছে। প্রতিবছর এই ডায়াবেটিস এর কারণে সাঁরা পৃথিবীতে কত কত মানুষ মারা যাচ্ছে তার কোন হিসাব নেই।

ডায়াবেটিস প্রধানত ২ ধরনের হয়-
• ধরন-১ ডায়াবেটিস, এটি সাধারনত শিশুকালেই লক্ষণ দেখে নির্ণয় করা যায়। তবে কারো কারো ক্ষেত্রে ২০ বছর বয়স পার হবার পর ধরা পড়ে। এই ধরনটিতে শরীরে খুবই কম ইন্সুলিন তৈরী হয় অথবা একদমই তৈরী হয় না। ফলে প্রতিদিন ইন্সুলিন ইনজেক্সন নিতে হয়। ডায়াবেটিসে আত্রান্তদের ৫%-১০% কে এই ধরনটিতে ভুগতে দেখা যায়। এর প্রকৃত কারণ এখনও জানা যায়নি। তবে জেনেটিক, ভাইরাস এবং সতোপ্রতিষেধক সমস্যা বা জটিলতা হয়ত এ ব্যপারে কিছুটা ভূমিকা পালন করে।

• ধরন-২ ডায়াবেটিস, এটি ধরন-১ অপেক্ষা অনেক বেশী সাধারণ প্রকৃতির। বেশীর ভাগ ডায়াবেটিক রোগী এর অন্তর্ভূক্ত। এটি সাধারনত পূর্ণ বয়সেই দেখা যায়। তবে যুবক-যুবতীরাও দিন দিন অনেক বেশী হারে এর অন্তর্ভূক্ত হচ্ছে। ডায়াবেটিসে আত্রান্তদের মধ্যে ৯০% – ৯৫% কে এই ধরনটিতে ভুগতে দেখা যায়। এক্ষেত্রে ‘প্যাংক্রিয়াস’ রক্তের গ্লুকোজ বা শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক রাখার জন্য পর্যাপ্ত ইন্সুলিন তৈরী করতে পারেনা এবং প্রায়শই ইন্সুলিনের প্রতি দৈহিক প্রতিক্রিয়া ঠিকমত হয় না। অনেকে আক্রান্ত হয়েও অনেকদিন যাবত বুঝতেই পারেন না যে তারা এ ধরনের ডায়াবেটিসে ভুগছেন। অথচ এটি কিন্তু একটি জটিল অবস্থা। যত দিন যাচ্ছে, অতিশয় স্থুলতা ও ব্যায়াম বিমুখতা- মূলত এ দু’টি কারণে এই ধরনের ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছেই।

এছাড়াও রয়েছে-
• গর্ভধারণকালীন ডায়াবেটিস- এটি গর্ভাবস্থায় দেখা যায়। এক্ষেত্রে গর্ভবতীর রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা গর্ভকালীন যে কোন সময়ে বৃদ্ধি পায়। অথচ গর্ভবতী হওয়ার পূর্বে তাদের ডায়াবেটিস ছিল না। সেই সমস্ত স্ত্রীলোক সাধারনত এই ডায়াবেটিসে ভোগেন যারা স্থুলকায় এবং যাদের পরিবারের অন্যান্য (রক্ত-সম্পর্কীয়) সদস্যরা ডায়াবেটিসে ভুগছেন। গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস হলে মায়ের রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা অবশ্যই স্বাভাবিক রাখতে হবে। তা না হলে বাচ্চার ক্ষতি হতে পারে। যারা গর্ভধারনকালীন ডায়াবেটিসে ভোগেন তাদের মধ্যে ৫%-১০% স্ত্রীলোককে পরবর্তীতে ‘ধরন-২ ডায়াবেটিসে’ ভুগতে দেখা যায় এবং এক্ষেত্রে ২০%-৫০% এর ৫-১০ বছরের মধ্যে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা থাকে।
• অন্য নির্দিষ্ট ধরনের ডায়াবেটিস- এটি বিভিন্ন কারণে হয়, যেমন- জিনগত অবস্থা, শল্যচিকিৎসা, ওষুধ, পুষ্টিহীনতা, ইনফেক্সন ও অন্যান্য অসুস্থতা। ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের মধ্যে ১%-৫% এই ধরনটিতে ভোগেন।

‘ধরন-১ ডায়াবেটিসে’-এর কিছু উপসর্গ-
• অবসাদ, পিপাসা বৃদ্ধি পাওয়া, ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া, বিবমিষা, বমি হওয়া, ক্ষুধা বৃদ্ধি পাওয়া সত্ত্বেও ওজন কমে যাওয়া।
‘ধরন-১ ডায়াবেটিস’ রোগীদের ক্ষেত্রে এই উপসর্গগুলো খুব কম সময়ের মধ্যেই প্রকাশ পেয়ে থাকে এবং জরুরী অবস্থার মধ্য দিয়ে এটি নির্ণীত হয়।
‘ধরন-২ ডায়াবেটিসে’-এর কিছু উপসর্গ-
• ঝাপসা বা অস্পষ্ট দৃষ্টি, অবসাদ, ক্ষুধা বৃদ্ধি পাওয়া, পিপাসা বৃদ্ধি পাওয়া, ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া।

*যেহেতু ধরন-২ ডায়াবেটিস ধীরে ধীরে প্রকাশ পায়, তাই কিছু কিছু ব্যক্তির রক্তে উচ্চ মাত্রায় গ্লুকোজ থাকা সত্ত্বেও তারা এই উপসর্গগুলো আদৌ বুঝতে পারেনা।

‘ধরন-২ ডায়াবেটিস’ -হওয়ার সম্ভাবনা বেশী থাকে-
১/ বয়স ৪৫ বছরের বেশী হলে,
২/ পিতামাতার কোন একজন, ভাই অথবা বোন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে,
৩/ গর্ভধারনকালীন ডায়াবেটিস হলে অথবা ৯ পাউন্ড অপেক্ষাবেশী ওজনের বচ্চা প্রসব করলে,
৪/ হৃদরোগ থাকলে,
৫/ রক্তে উচ্চমাত্রায় কোলেস্টেরল বা চর্বি থাকলে,
৬/ অতিশয় স্থুলতা থাকলে,
৭/ পর্যাপ্ত ব্যায়াম না করলে,
৮/ মহিলাদের পলিসিস্টিক ওভারি ডিসিজ অর্থাৎ ডিম্বাশয়ে টিউমার হলে,
৯/ রক্ত পরীক্ষায় গ্লুকোজ বা শর্করার সহনশীলতা জনিত বৈকল্য (IGT) থাকলে,
১০/ কোন কোন বিশেষ সংস্কৃতির অধিকারী জনগোষ্ঠি।

ডায়াবেটিস সনাক্তকরণ পরীক্ষা ও মূল্যমান-
• প্রাথমিকভাবে প্রস্রাব পরীক্ষার মাধ্যমে তাতে গ্লুকোজ(Glucose) বা শর্করা এবং চর্বি ভেঙ্গে যাওয়ায় সৃষ্ট কিটোন বডির উপস্থিতি নির্ণয় করা যায়। তবে ডায়াবেটিস সনাক্তকরণের জন্য প্রস্রাব পরীক্ষার উপর সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করা উচিত নয়।

ডায়াবেটিস সনাক্তকরণের জন্য রক্তের গ্লুকোজ বা শর্করা নির্ণয়ের কিছু পরীক্ষা ও মাত্রা-
• অভুক্ত অবস্থায় রক্তের গ্লুকোজ বা শর্করার মাত্রা (FBS) -> যদি পর পর দু’বার ১২৬ মিলিগ্রাম/ডি.এল অর্থাৎ ৭.০মিলি.মোল/এল বা তা অপেক্ষা বেশী হয় তবে ডায়াবেটিস হয়েছে বলে ধরে নেয়া হয়। এই মাত্রা ১০০ থেকে ১২৫ মিলিগ্রাম/ডি.এল অর্থাৎ ৫.৬ থেকে ৬.৯ মিলি. মোল/এল পর্যন্ত হলে তাকে (IFG- impaired fasting glucose) উপবাসকালীন হানিকর শর্করা অর্থাৎ ডায়াবেটিস হওয়ার পূর্ব-অবস্থা হিসেবে ধরে নেয়া হয়। এই মাত্রাগুলোকে ধরন-২ ডায়বেটিসে আক্রান্ত হওয়ার বিপদ সংকেত হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
• মুখে খাওয়া গ্লুকোজের সহনশীলতা পরীক্ষা (GTT) -> মুখে (৭৫ গ্রাম) গ্লুকোজ খাওয়ার ২ ঘন্টা পর রক্তে গ্লুকোজ বা শর্করার মাত্রা ২০০ মিলিগ্রাম/ডি.এল অর্থাৎ ১১.১মিলি. মোল/এল বা তা অপেক্ষা বেশী হলে তাকে ডায়াবেটিস ধরা হয়। এই পরীক্ষা ‘ধরন-২ ডায়বেটিস’ সনাক্ত করার জন্য বেশী ব্যবহৃত হয়। এই মাত্রা ১৪০ মিলিগ্রাম/ডি.এল থেকে ১৯৯ মিলিগ্রাম/ডি.এল অর্থাৎ ৭.৮ থেকে ১১ মিলি. মোল/এল পর্যন্ত হলে এই অবস্থাকে Impaired glucose tolerance (IGT) হিসেবে ধরা হয় এবং যা ভবিষ্যতে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হবার ইংগিত বহন করে।
• ভুক্ত অবস্থায় রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা (RBS)-> ২০০মিলিগ্রাম/ডি.এল বা ১১.১মিলি.মোল/এল বা তা অপেক্ষা বেশী হলে এবং সেই সঙ্গে ডায়াবেটিসের উপসর্গ যেমন অতিরিক্ত পিপাসা, ঘন ঘন প্রস্রাব, অবসাদ ইত্যাদি থাকলে ডায়াবেটিস হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে রোগ সনাক্তকরণের পরবর্তী ধাপ হিসেবে ‘মুখে খাওয়া গ্লুকোজের সহনশীলতা পরীক্ষা’ অর্থাৎ (GTT) অবশ্যই করে নিতে হবে।
• উপরের পরীক্ষাগুলো ছাড়াও প্রতি ৩-৬ মাসের মধ্যে অন্তত একবার হিমগ্লোবিনের A1c (HbA1c) পরীক্ষা করে দেখা উচিত। এই HbA1c নিরূপণের মাধ্যমে পূর্বের ২-৩ মাস সময়ের মধ্যে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কেমন ছিল তা অনুমান করা যায়। ডায়াবেটিসের চিকিৎসার ফলাফল বোঝার জন্য যা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কারো A1c এর মাত্রা ৫ পর্যন্ত স্বাভাবিক ধরা হয়। ৫.৭ থেকে ৬.৪ পর্যন্ত হলে তাকে ভবিষ্যতে ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ হবার জন্য ঝুকিপূর্ণ হিসেবে ধরে নেয়া হয়। আর ৬.৫ বা তা অপেক্ষা বেশি হলে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত বলে ধরে নেয়া হয়।

ডায়াবেটিসের জরুরী বা তাৎক্ষণিক জটিলতাসমূহ-
১). ডায়বেটিক হাইপারগ্লাইসেমিক হাইপার- অসমোলার কোমা (Diabetic hyperglycemic hyperosmolar coma)
২). ডায়বেটিক কেটোএসিডোসিস (Diabetic ketoacidosis)

ডায়বেটিসের দীর্ঘমেয়াদি জটিলতাসমূহ-
১). এ্যথেরোস্ক্লেরোসিস-> রক্তনালীতে চর্বি জমে ছিদ্রপথ সরু হয়ে যাওয়া (Atherosclerosis)
২). করোনারি আর্টারি ডিজিস-> হৃদপিন্ডের ধমনীর রোগ। (Coronary artery disease)
৩). ডায়বেটিক নেফরোপ্যাথি-> ডায়বেটিস জনিত কিডনী রোগ। (Diabetic nephropathy)
৪). ডায়বেটিক নিউরোপ্যাথি-> ডায়বেটিস জনিত ্লায়ূ-রোগ। (Diabetic neuropathy)
৫). ডায়বেটিক রেটিনোপ্যাথি-> ডায়বেটিক জনিত চোখের রেটিনার রোগ। (Diabetic retinopathy)
৬). ইরেক্সন প্রব্লেম-> পুরুষের লিঙ্গোত্থান সমস্যা। (Erection problems)
৭). হাইপারলিপিডিমিয়া-> রক্তে চর্বির মাত্রা বেড়ে যাওয়া। (Hyperlipidemia)
৮). হাইপরটেনশন-> উচ্চ রক্তচাপ। (Hypertension)
৯). ইনফেক্সন অফ স্কিন এন্ড ইউরিনারী ট্রাক্ট-> চর্ম এবং প্রস্রাবের নলীর ইনফেক্সন। (Infections of the skin and urinary tract)
১০). পেরিফেরাল ভাস্কুলার ডিজিস-> প্রান্তিক রক্তনালীর রোগ। (Peripheral vascular disease)
১১). স্ট্রোক-> মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ বা ইনফার্কশন জনিত সমস্যা। (Stroke)

রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা অনেক বেড়ে যাওয়া যেমন ভাল নয়, তেমনি হঠাৎ করে যেন খুব বেশি কমে না যায় সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। কারন উভয় ক্ষেত্রেই জীবনের জন্য হুমকি স্বরূপ জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে। বিশেষ করে যারা ইনসুলিন নিচ্ছেন তাদের ক্ষেত্রে বেশি খেয়াল রাখতে হবে। এসব ক্ষেত্রে কি কি উপসর্গ হতে পারে তা জানা থাকলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসার ব্যবস্থা নেয়া সহজ হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ার আগে রোগীকে হাসপাতালে নিলে ঝুঁকি অনেক কমে যায়।


 
রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা খুব বেড়ে গেলে (হাইপারগ্লাইসেমিয়া) যেসব উপসর্গ হতে পারে সেগুলো হল-
পেটে ব্যথা, ঘন ঘন দীর্ঘ-শ্বাস নেয়া, পিপাসা ও প্রস্রাব বৃদ্ধি পাওয়া, অবসাদ, জ্ঞান হারিয়ে ফেলা, প্রশ্বাসে মিষ্টি গন্ধ।

রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা খুব কমে গেলে (হাইপোগ্লাইসেমিয়া) যেসব উপসর্গ হতে পারে সেগুলো হল-
বিভ্রান্তি, শরীরের প্রত্যঙ্গগুলোর ভয়ানক আলোড়ন অথবা অচৈতন্য, মাথা ঘোরা, দ্বৈত-দৃষ্টি, ঝিমানো বা নিদ্রালুভাব, মাথাব্যথা, দূর্বলতা, সমঝতার অভাব

রক্তে গ্লুকোজ স্বল্পতা জনিত আচ্ছন্নতা বা প্রচন্ড ইন্সুলিন প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে গ্লুকোজ, চিনি বা হাতের কাছে বর্তমান মিষ্টি জাতিয় খাবার খাওয়াতে হবে অথবা গ্লুকোজ-ইনজেক্সন দিতে হবে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রোগীকে হাসপাতালে নিতে হবে।

ডায়াবেটিসের চিকিৎসা-
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে উপসর্গ মুক্ত থেকে সুস্থ্যভাবে জীবন যাপনের জন্য সঠিক সময়ে সঠিকভাবে চিকিৎসা নিতে হবে। তাহলে ডায়াবেটিসের সঙ্গে সম্পর্কীত জটিলতা যেমন- অন্ধত্ব, হৃদরোগ, কিডণী রোগ, পচন জনিত অঙ্গহানী ইত্যাদি থেকে অনেকাংশে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। এটা মনে রাখতে হবে যে ডায়বেটিস নির্মূল করা যায় না। নিয়মিত ও পরিমিত খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম, বিশ্রাম ও প্রয়োজনে ওষুধ গ্রহণের মাধ্যমে এটাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়।
• পথ্য- ডায়াবেটিক রোগীরা খাদ্যের সাথে কি পরিমাণ চর্বি, আমিষ ও শর্করা(Carbohydrates) গ্রহণ করবেন তা নিকটতম ডায়াবেটিক সেন্টারে গিয়ে অথবা ফ্যামিলি ফিজিশিয়ান এর নিকট থেকে জেনে নিতে হবে। প্রয়োজনে পথ্যবিশারদের নিকটে গিয়ে পরামর্শ নেয়া যেতে পারে। তবে একজন ডায়াবেটিক রোগির প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কার্বহাইড্রেট বা শর্করা ৫০-৬০% (এর মধ্যে আঁশ যুক্ত খাবার ২০-৩৫ গ্রাম), ফ্যাট বা চর্বি ৩০% এবং প্রোটিন বা আমিষ ১০-২০% থাকা প্রয়োজন।
ধরন-২ ডায়াবেটিস- এ আক্রান্তদের সুষম ও কম চর্বিযুক্ত খাদ্য সঠিক পরিমাণে সময়মত গ্রহণ করা উচিত।
• ব্যায়াম- ডায়াবেটিক রোগীদের প্রতিদিন ব্যায়াম করা উচিত। এটা একদিকে যেমন রক্তের গ্লুকোজ বা শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখে, তেমনি ওজন কমাতে ও উচ্চ-রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে সহায়তা করে। যারা নিয়মিত ব্যায়াম করেন না তাদের তুলনায় যারা করেন তারা অনেক কম হারে হার্ট-এ্যটাক ও স্ট্রোকের শিকার হন।

ব্যায়ামের নিয়মাবলী-
o ব্যায়াম আরম্ভ করার পূর্বে এবং বিশেষ করে ব্যায়ামের ধরন পরিবর্তনের সময় ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নেয়া উচিত।
o নিজের শারীরিক উপযুক্ততা অনুসারে আনন্দ- দায়ক ব্যায়ামের বিষয় নির্বাচন করতে হবে।
o প্রতিদিন এবং সম্ভব হলে দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ে হাঁটতে হবে।
o মাঝে মাঝে হাঁটার আগে ও পরে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা পরীক্ষা করে দেখা উচিত।
o হাঁটার সময় শর্করা সমৃদ্ধ কিছু খাবার সাথে রাখতে হবে। যে কোন মূহুর্তে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে জাওয়ার ভাব অনুভূত হলে তা খেয়ে নিতে হবে।
o জরুরী অবস্থার প্রয়োজনে নিজের সাথে সব সময় ডায়াবেটিক কার্ড বা সর্বশেষ চিকিৎসা পত্রের ফটোকপি সাথে রাখতে হবে।
o হাঁটার আগে ও পরে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ও চিনিমুক্ত তরল খাবার খেতে হবে।
(ব্যায়ামের ধরন ও সময় এবং রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেশী বা কম হওয়ার উপর ভিত্তি করে খাদ্য ও ওষুধের ধরন এবং পরিমাণ পরিবর্তনের প্রয়োজন হতে পারে।)
• বিশ্রাম- সময়মত ও নির্দিষ্ট পরিমাণে বিশ্রাম ও ঘুম ডায়াবেটিস রোগীর জন্য অতি জরুরী। দুপুরের আহার ও প্রার্থণার পর (জায়নামাজ বা শীতল পাটির উপর) ১৫-২০ মিঃ চোখ বুঝে চুপচাপ সটান শুয়ে থাকাত পারলে খুবই ভাল হয়। তবে রাতে ৬-৭ ঘুমানো অপরিহার্য। কারণ রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে এই ঘুমের বেশ বড় ভূমিকা রয়েছে।
• ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে ওষুধ- ইন্সুলিন ও মুখে খাওয়ার বড়ি দ্বারা ডায়াবেটিসের চিকিৎসা করা হয়।

o ধরন-১ ডায়াবেটিক- রোগীর শরীরে ইন্সুলিন তৈরি হয় না। তাই ইন্সুলিন ইনজেক্সন নিতে হয়। ইন্সুলিনের ধরণ অনুসারে দিনে একবার থেকে চারবার পর্যন্ত ইনজেক্সন নিতে হয়। কেউ কেউ ‘ইন্সুলিন-পাম্প’ ব্যবহার করে। এটা সব সময় বহন করতে হয় এবং তা থেকে সমস্ত দিনভর নির্দিষ্ট হারে ইন্সুলিন সরবরাহ হতে থাকে। অনেকে আবার শ্বাসের সাথে ইন্সুলিন নেয়ার জন্য ‘ইন্সুলিন-শ্বাসক’ ব্যবহার করে।

o ধরন-২ ডায়াবেটিস- নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ব্যায়াম, খাদ্য পরিবর্তন ও মুখে খাওয়া ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা করতে হয়। প্রসূতি ও দুগ্ধবতী মায়েদের চিকিৎসার জন্য ইন্সুলিন ব্যবহার করা যেতে পারে।
মনে রাখবেন, ইন্সুলিন নেয়ার আগে নাস্তা / খাবার রেডি রেখে প্রয়োজনীয় কাজ সেরে তারপর ইনসুলিন নেবেন এবং ২০ মিনিট পর আহার করবেন। তারপর অন্য কাজ করবেন। এর মাঝে কোন ভারি কাজ করবেন না। এমনকি গোসলও করবেন না।
• পায়ের যত্ন: ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রায়শই পায়ের সমস্যায় ভুগে থাকে। ডায়াবেটিস(Diabetes) হলে রক্তনালী ও ্লায়ুকোষের ক্ষয় হয় এবং দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে পারে। অনেক সময় পায়ে ক্ষত হলে তাতে ইনফেক্সন না হওয়া পর্যন্ত টের পাওয়া যায় না। এমন কি চামড়া ও অন্যান্য কোষে পচন ধরতে পারে। ঠিকমত চিকিৎসা করা না হলে জীবন রক্ষার্থে পা কেটে ফেলার প্রয়োজন হতে পারে। পা কেটে ফেলার যতগুলো কারণ রয়েছে সেগুলোর মধ্যে ডায়াবেটিস অনেকটা এগিয়ে আছে। সুতরাং পায়ের ক্ষত ও ক্ষতি থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে প্রতিদিন পায়ের পরীক্ষা ও পরিচর্যা করতে হবে।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধে যা করা প্রয়োজন:
• শরীরের ওজন আদর্শ মাপের মধ্যে রাখা ও কর্মময় জীবন যাপন করার মাধ্যমে ‘ধরন-২ ডায়াবেটিস’ প্রতিরোধ করা সম্ভব হতে পারে।
• তবে বর্তমানে ধরন-১ ডায়াবেটিস প্রতিরোধের তেমন কোন উপায় নেই এবং উপসর্গ না থাকলে তা ঢালাওভাবে নির্ণয়ের জন্য যাচাই বাছাই করার তেমন কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় না।
• ধরন-২ ডায়াবেটিস- এ আক্রান্ত না হয়ে থাকলে এবং কোনরূপ উপসর্গ দেখা না দিলেও যাদের ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস নির্ণয়ের জন্য নিয়মিত পরীক্ষা করা উচিত-
o অতিরিক্ত ওজন বিশিষ্ট শিশুদের ক্ষেত্রে যদি ডায়াবেটিসের সহায়ক আশংকাজনক কারণগুলো বিদ্যমান থাকে, তবে ১০ বছর বয়স থেকে শুরু করে প্রতি ২ বছর পর পর পরীক্ষা করতে হবে।
o অতিরিক্ত ওজন বিশিষ্ট প্রাপ্তবয়স্ক যাদের বিএমআই (ওজন=কেজি /উচ্চতা=মিটার২) ২৫ অপেক্ষা বেশী এবং সেইসাথে ডায়াবেটিসের সহায়ক অন্যান্য আশংকাজনক কারণগুলো বিদ্যমান, তাদের ক্ষেত্রে প্রতি ৩ বছর পর পর পরীক্ষা করতে হবে।
o বয়স ৪৫ বছরের বেশী হলে প্রতি ৩ বছর পর পর পরীক্ষা করতে হবে।
ডায়াবেটিস সংক্রান্ত জটিলতা থেকে রক্ষা পেতে হলে মাঝে মাঝে অর্থাৎ বছরে অন্তত চার বার ডায়াবেটিক হাসপাতালে গিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে হবে। কোন সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করতে হবে।

ডায়াবেটিক রোগীকে নিয়মিত যে বিষয়গুলো পরীক্ষা করে দেখতে হবে-
o মাঝে মাঝে রক্তচাপ মেপে দেখতে হবে এবং তা অবশ্যই ১২০/৮০মিমি.মার্কারি বা তার নীচে রাখতে হবে।
o ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকলে প্রতি ৬ মাস পর পর HbA1c পরীক্ষা করে দেখতে হবে। নিয়ন্ত্রণে না থোকলে প্রতি তিন মাস অন্তর তা পরীক্ষা করতে হবে। HbA1c এর মাত্রা <৬% রাখতে হবে।
o প্রতি বছর রক্তের কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা পরীক্ষা করতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে রক্তে যেন- এল.ডি.এল < ১০০মি.গ্রাম/ ডেল, এইচ.ডি.এল >৪০ মি.গ্রাম /ডি.এল ও ট্রাইগ্লিসারাইড < ১৫০ মি.গ্রাম/ডি.এল থাকে।
o প্রতি বছর কিডনীর কার্যকারীতা পরীক্ষা করে দেখতে হবে। বিশেষ করে সেরাম ক্রিয়েটিনিন ও মাইক্রোএলবুমিনিউরিয়া কিরূপ অবস্থায় আছে তা নির্ণয় করে দেখতে হবে।
o প্রতি বছর অন্তত একবার চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ বিশেষ করে যারা ডায়বেটিক রেটিনোপ্যাথি সম্পর্কে অভিজ্ঞ তাদের কাছে গিয়ে চোখ দেখাতে হবে। অসুবিধা থাকলে মাঝে মাঝে যেতে হবে।
o দাঁতের যত্ন নিতে হবে এবং ৬ মাস পর পর দন্ত চিকিৎসকের কাছে গিয়ে দাঁত পরিষ্কার করাতে হবে।
o চিকিৎসা কর্মীর কাছে গেলে অবশ্যই পা পরীক্ষা করাতে হবে।
o সংক্রামক ব্যাধির প্রতিষেধক নেয়ার ব্যপারে সচেতন থাকেতে হবে।

9
Life Style / স্মার্টফোনের অ্যাপ
« on: June 14, 2017, 09:57:00 AM »
স্মার্টফোনের ৭০ শতাংশ অ্যাপ গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য গুগল এবং ফেসবুকের মতো থার্ড পার্টি প্রতিষ্ঠানের কাছে পাচার করে থাকে বলে এক গবেষণায় বলা হয়েছে।

স্মার্টফোনে নতুন কোনো অ্যাপ ইনস্টল করা হলে ব্যক্তিগত তথ্যে ঢোকার আগে গ্রাহকের অনুমতি নেওয়া হয়। অ্যাপ ঠিকমতো কাজ করার জন্য গ্রাহকের কিছু তথ্য কাজে লাগে। তবে অ্যাপ যদি ব্যক্তিগত তথ্যে প্রবেশাধিকার পায় সেক্ষেত্রে এটি যেকোন ডেভেলপার বা থার্ড পার্টি প্রতিষ্ঠানকে এটি হস্তান্তর করে দিতে পারে। সেক্ষেত্রে ঐসব থার্ড পার্টি প্রতিষ্ঠান বা ডেভেলপার আপনার গতিবিধি পর্যবেক্ষণের ক্ষমতা পায় বলে জানিয়েছে এক দল গবেষক।

গ্রাহকদের অগোচরে ঠিক কতটুকু তথ্য সংগ্রহ করার সম্ভাবনা আছে এবং এসব তথ্যে সংরক্ষণে গ্রাহকরা কীভাবে আরও সতর্ক হতে পারে সে ব্যাপারে গবেষণা করেছেন স্পেনের আইএমডিইএ নেটওয়ার্কস ইনস্টিটিউটের গবেষকরা। গবেষকরা বলেন, মানুষের স্মার্টফোন থেকে ঠিক কতোটা তথ্য সংগ্রহ ও হস্তান্তর করা হয় তা জানার জন্য আমরা একটি ফ্রি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ ডেভেলপ করি।

অ্যাপটির নাম লুমেন প্রাইভেসি মনিটর। এ অ্যাপটি সাধারণ অ্যাপ থেকে গ্রাহকের কতটুকু তথ্য পাচার হয় তা বিশ্লেষণ করতে পারে। তা ছাড়া কোন অ্যাপগুলো গ্রাহকের তথ্য সংগ্রহ করে রাখছে তাও বের করতে পারে অ্যাপটি। এ অ্যাপ ব্যবহারের মাধ্যমে গ্রাহকরা ইনস্টলড অ্যাপ কতটুকু তথ্য সংগ্রহ করল এবং থার্ড পার্টিকে পাঠাচ্ছে তা দেখতে পারবেন। অ্যাপটি গ্রাহকের ডিভাইসে চলা সব অ্যাপে নজর রাখতে সক্ষম। তা ছাড়া অ্যাপগুলো ব্যক্তিগত তথ্য বাইরে পাঠাচ্ছে কিনা, কোন ধরনের ইন্টারনেট সাইটে তথ্য পাঠাচ্ছে, কোন নেটওয়ার্ক প্রটোকল ব্যবহার করছে তা বিশদে বের করতে পারে লুমেন নামের এ অ্যাপটি।

গবেষকরা ২০১৫ সালের অক্টোবর মাস থেকে লুমেন অ্যাপ ব্যবহারকারী ১৬০০ মানুষের ৫০০০ অ্যাপ নিয়ে গবেষণা করেছেন। গবেষকরা জানান, ফেসবুক, গুগল এবং ইয়াহুর মতো প্লাটফর্মগুলোতে গ্রাহকের ব্যক্তিগত পাঠানো হয়ে থাকে। বিজ্ঞাপন পাঠানোর উদ্দেশে প্রায় ৫৯৮টি ইন্টারনেট সাইটে গ্রাহকের তথ্য পাঠানো হয় বলে জানায় গবেষকরা। গবেষণায় দেখা গেছে, ৭০ শতাংশ মোবাইল অ্যাপে অন্তত একজন পর্যবেক্ষক নজরদারি এবং তথ্যাদি পাঠিয়ে থাকেন। এর মধ্যে ১৫ শতাংশ অ্যাপে ৫ অথবা তার বেশি পর্যবেক্ষক দেখা গেছে। গবেষকরা জানান, প্রতি চারজন পর্যবেক্ষকের একজন ডিভাইস সনাক্ত করার জন্য গ্রাহকের ফোন নম্বর অথবা ১৫ ডিজিটের আইএমইআই নম্বর গ্রহণ এবং বাইরে পাচার করে থাকে।

10
Ramadan and Fasting / ”ইতিকাফ
« on: June 14, 2017, 09:46:03 AM »
ইতিকাফের উদ্দেশ্য : ইবাদত করা ও আধ্যাত্মিক উৎকর্ষ সাধনের উদ্দেশ্যে মসজিদে পূর্ণাঙ্গ অবস্থানকে ইতিকাফ বলে। যিনি ইতিকাফ করেন তাকে ‘মুতাকিফ’ বলে। ইতিকাফ যে কোনো সময় করা যায়। যখনই কেউ ইতিকাফের নিয়তে মসজিদে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অবস্থান করেন, তখনই তা ইতিকাফ বলে পরিগণিত হয়। তবে রমজান মাসের শেষ দশ দিন ইতিকাফ করা সুন্নাত।

ইতিকাফের গুরুত্ব : আত্মার পরিশুদ্ধি ও আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য লাভের জন্য ইতিকাফ একটি উত্তম পন্থা। দুনিয়ায় মানুষকে হাজারো ব্যস্ততা ও ঝামেলার মধ্য দিয়ে জীবন যাপন করতে হয়। শয়তান মানুষের পিছে অবিরাম লেগে আছে। প্রতিটি কাজে সে মানুষকে ধোকা দেবার চেষ্টা করে। সে মানুষের পাপাত্মাকে সুড়সুড়ি দিয়ে জাগ্রত করে তোলে। তাই দুনিয়ার প্রতিটি কাজেই মানুষকে অবিরাম পরীক্ষা দিয়ে যেতে হয়। এ পরীক্ষায় কখনো কখনো মানুষের পদঙ্খলন হয়ে যায়। স্ত্রী-সন্তানাদির মায়া, তাদের সুখের চিন্তা, দারিদ্র্যের অনুভূতি, লোভ, মোহ, আকর্ষণ মানুষকে প্রতিনিয়ত গুনাহের দিকে টানতে চায়। অথচ পবিত্র, পরিশুদ্ধ ও পরহেযগারীর জীবনই আল্লাহ তা’য়ালার পছন্দনীয়। কেবল পবিত্র আত্মার লোকেরাই আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারে। কেবল আল্লাহর ধ্যান ও তাঁর চিন্তাই মানুষকে আল্লাহর নিকটে পৌঁছে দেয়। যে ব্যক্তি যতো বেশি পরিচ্ছন্ন ও গভীরভাবে আল্লাহকে উপলব্ধি করতে পারে,সে ততো বেশি আল্লাহর নৈকট্য লাভে সক্ষম হয়।

বস্তুত ইতিকাফ মানুষের জীবনে একটি সুযোগ এনে দেয়। সংসার ও সামাজিক যাবতীয় কাজকর্ম ও লেনদেন থেকে কিছু সময় কিছু দিনের জন্য মুক্ত হয়ে মানুষ একান্তভাবে আল্লাহর ধ্যানে মশগুল থাকার সুযোগ পায় ইতিকাফের মাধ্যমে। এখানে স্ত্রীর চিন্তা নেই, স্বামীর চিন্তা নেই, সন্তানাদির চিন্তা নেই, সম্পদের চিন্তা নেই। মোটকথা, সকল চিন্তার ঊর্ধ্বে ওঠে মানুষ এখানে একমাত্র আল্লাহর চিন্তায় মশগুল হবার সুযোগ পায়। সে প্রতিটি মুহূর্ত আল্লাহকে ধ্যান করে, তাঁকে গভীরভাবে অনুভব করে। তাঁর আজাবের কথা মনে করে ভীত-কম্পিত হয়ে ওঠে। তাঁর পুরস্কারের কথা স্মরণ করে আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে ওঠে। তাঁরই পথে চলার জন্য তাঁরই জন্য নিজেকে কুরবানী করার জন্য সে মানসিকভাবে সুদৃঢ় সিদ্ধান্তে পৌঁছতে সক্ষম হয়। ইতিকাফ মানুষের উপর এমন নৈতিক ও আধ্যাত্মিক প্রভাব সৃষ্টি করে, যা তাকে দীর্ঘদিন আল্লাহর পথে তথা পরহেযগারীর পথে পরিচালিত করে। তাই ইতিকাফের মাধ্যমে মানুষ অনেক পুণ্য ও নেকী অর্জন করে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারে। ইতিকাফ মুমিন জীবনের পাথেয়।

ইতিকাফের প্রকারভেদ : ইতিকাফ প্রধানত তিন প্রকার। যেমন- ১. ওয়াজিব ইতিকাফ, ২. সুন্নাত ইতিকাফ ও ৩. মুস্তাহাব ইতিকাফ। ক. ওয়াজিব ইতিকাফ : মান্নতের ইতিকাফ ওয়াজিব। চাই তা শর্তে হোক কিংবা হোক বিনা শর্তে। শর্তে হবার অর্থ হচ্ছে, কারো একথা বলা, আমার অমুক উদ্দেশ্য হাসিল হলে আমি ইতিকাফ করবো। ওয়াজিব ইতিকাফ কমপক্ষে একদিন হতে হবে। ওয়াজিব ইতিকাফের জন্য রোজা রাখা শর্ত। হাদিসে আছে, হযরত ওমর (রা.) একদিন রাসূলকে (সা.) বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! জাহেলী যুগে আমি মসজিদে হারামে এক রাত ইতিকাফ করার মান্নত করেছিলাম। হুজুর (সা.) বললেন, তোমার মান্নত পূর্ণ করো। (বুখারী) খ. সুন্নাত ইতিকাফ : রমজান মাসের শেষ দশদিনের ইতিকাফ হচ্ছে সুন্নত। (কেবলমাত্র হানাফী মাযহাবে রমজানের শেষ দশ দিনের) এ ইতিকাফ হচ্ছে সুন্নতে মুয়াক্কাদা। তবে কিছু সংখ্যক লোক ইতিকাফ করলে অন্যরা দায়িত্বমুক্ত হবে বলে এ মাজহাবের রায়। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, হুযুর (স) সব সময় রমজানের শেষ দশদিন ইতিকাফ করতেন। ইন্তেকাল পর্যন্ত এ নিয়ম তিনি পালন করেছেন। তার ইন্তেকালের পর তার স্ত্রীগণ ইতিকাফের সিলসিলা জারি রাখেন। (বুখারী) গ. মুস্তাহাব ইতিকাফ : রমজানের শেষ দশ দিন ব্যতীত অন্য যে কোন সময় ইতিকাফ করা মুস্তাহাব। মুস্তাহাব ইতিকাফের জন্য কোনো সময় নির্দিষ্ট নেই। এ ইতিকাফ সামান্য সময়ের জন্যও হতে পারে কিংবা এক দিন বা একাধিক দিনের জন্যও হতে পারে।

ইতিকাফের শর্তাবলী : ১. মুসলমান হওয়া। ২. বালেগ ও আকেল হওয়া। ৩. পবিত্র থাকা। ৪. ইতিকাফের নিয়ত করা। ৫. পূর্ণাঙ্গ সময় (আবশ্যকীয় প্রয়োজন ব্যতীত) মসজিদে অবস্থান করা ইত্যাদি।

নারীদের ইতিকাফ : হাদিস থেকে জানা যায, নারীরাও ইতিকাফ করতে পারে। নারীদের ইতিকাফ গৃহকোণে (নামাজের স্থানে) বাঞ্ছনীয়। নারীদের ইতিকাফের জন্য স্বামীর অনুমতি আবশ্যক। সন্তান প্রসব করলে বা গর্ভপাত হলে কিংবা ঋতুরাব দেখা দিলে ইতিকাফ ছেড়ে দিতে হবে।

ইতিকাফ অবস্থায় করণীয় : ইতিকাফ অবস্থায় আল্লাহর জিকির, তাসবিহ, ইস্তেগফার, দরূদ, কুরআন তিলাওয়াত ও জ্ঞানচর্চা করা মুস্তাহাব। মসজিদে থেকে করা সম্ভব এমন সব ইবাদতই ইতিকাফ অবস্থায় করা যায়।

ইতিকাফ বাতিল হয়ে যায় যেসব কারণে : ১. মসজিদ বা ইতিকাফের স্থান থেকে নিস্প্রয়োজনে বের হলে। ২. ইসলাম পরিত্যাগ করলে। ৩. অজ্ঞান, পাগল বা মাতাল হলে| ৪. মাসিক দেখা দিলে। ৫. সন্তান ভূমিষ্ট হলে বা গর্ভপাত হলে। ৬. সহবাস করলে। ৭. বীর্যপাত ঘটালে। ৮. মুতাকিফকে কেউ জোরপূর্বক মসজিদে থেকে বের করে দিলেও ইতিকাফ বাতিল হয়ে যাবে।

11
* তিনটি কাজ করলে আর কখনো আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থাকবে না।

 ১। আধা ইঞ্চি পরিমাণ কাঁচা আদা নিন। তারপর অল্প একটু লবন মাখিয়ে খেয়ে ফেলুন। আদা খাওয়ার কিছুক্ষণ পর এক কাপ কুসুম গরম পানি খান। গভীর রাতে আর গ্যস্ট্রিকের সমস্যা হবে না।
অথবা

২। এক গ্লাস পানি একটি হাড়িতে নিয়ে চুলায় বসান। এর আগে এক ইঞ্চি পরিমাণ কাঁচা হলুদ পানিতে দিয়ে দিন। পানি অন্তত পাঁচ মিনিট ফুটতে দিন। তারপর নামিয়ে আনুন। পানি ঠাণ্ডা হলে হলুদসহ খেয়ে ফেলুন। গ্যাস্ট্রিক দৌঁড়ে পালাবে।
অথবা

৩। ওপরের সমস্ত পদ্ধতি ঝামেলার মনে হলে শুধুমাত্র এক গ্লাস পানিতে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে পান করুন। কখনোই রাতে পেট বা বুক ব্যথা করবে না।

- সংগৃহীত -

12
Success / Think for Sucess
« on: July 19, 2016, 09:51:49 AM »
সফলতার পেছনে দৌড়ালেই সফল হওয়া যায় না। সফল হতে হলে অনেক কিছু করতে হয় আবার বেশ কিছু জিনিস এড়িয়ে চলতে হয়। যে বিষয়গুলো সফলতার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় সেগুলো যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলাই বুদ্ধিমানের কাজ।
সফল হতে চাইলে যে কাজগুলো করবেন না, তার একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে আইএনসি ওয়েবসাইটে। আপনি চাইলে এই পরামর্শগুলো একবার দেখে নিতে পারেন।
.
সবকিছু সঠিক হবে এটা চিন্তা করা বন্ধ করুন

আমরা যখন কোনো কাজ করি, তখন ধরেই নেই যে সেটা আমাদের নিজেদের মনমতো হবে। যা মনে মনে চাচ্ছি সেটাই হোক, এমনটাই আশা করি। আর সেটা যখন না হয়, তখন বিষণ্ণ হয়ে পড়ি। অনেক বেশি হতাশা কাজ করে, যা আমাদের আত্মবিশ্বাসকে নষ্ট করে দেয়। তাই কখনোই এই বাড়তি চাপ নেবেন না। জীবনে সবকিছু পারফেক্ট হয় না। একটাতে সফল না হলে আরেকটাতে হবেন। এই বিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে যান।
.
মনের বিরুদ্ধে কিছু করবেন না

অনেক সময় ইচ্ছার বিরুদ্ধেই আমরা কাজ করি। যা আমাদের সফলতার পথের প্রধান বাধা। ‘না’ বলতে শিখুন। সফল হতে চাইলে যে বিষয়ে মন সায় দেবে না সেটা ভুলেও ‘হ্যাঁ’ বলবেন না।
.
নিজের দুর্বলতাকে পাত্তা দেবেন না

কোনো মানুষই পৃথিবীতে পারফেক্ট না। সবারই কিছু না কিছু দুর্বলতা থাকে। আর আপনি যদি নিজের দুর্বলতাকে বড় করে দেখেন আর ভাবেন এটা আপনাকে দিয়ে সম্ভব না তাহলে কখনোই সফল হতে পারবেন না। নিজের দুর্বলতাকে নিজের শক্তি বানান। দেখবেন, সহজেই সফলতাকে আপনাকে ধরা দেবে।
.
অন্যকে দোষ দেওয়া বন্ধ করুন

অন্যের কাঁধে দোষ চাপিয়ে নিজেকে সঠিক প্রমাণ করার চেষ্টা করবেন না। আপনি যখন সফল হন তখন ভাবেন, সেটা নিজের যোগ্যতায় হয়েছেন। আর সফল না হলে চট করেই অন্যের কাঁধে দোষ চাপিয়ে দেবেন? এটা মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ না।
.
নেতিবাচক চিন্তাগুলো ঝেড়ে ফেলুন

নিজের আত্মবিশ্বাস ধরে রাখতে মনের সব নেতিবাচক চিন্তা ঝেড়ে ফেলুন। আমি পারব না, আমাকে দিয়ে হবে না, আমার চেয়ে অন্যরা ভালো পারে- এ ধরনের চিন্তা যতদিন ধরে রাখবেন, ততদিন সফলতা আপনার থেকে অনেক দূরে থাকবে।
.
অতীতকে জোর করে ধরে রাখবেন না

অতীতে যা ঘটে গেছে, সেটার জন্য নিজের ভবিষ্যৎ নষ্ট করে লাভ কী? অতীতে বসবাস করলে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ দুটোই ডোবাবেন। তাই সফল হতে চাইলে অতীতকে চিরবিদায় জানান।
.
সবাইকে খুশি করার চিন্তা বাদ দিন

একজন মানুষ কখনোই একসঙ্গে সবাইকে খুশি করতে পারে না। তাই অযথা এর পেছনে দৌড়ে কোনো লাভ নেই। নিজের ভালোটা দেওয়ার চেষ্টা করুন। তাতে কেউ খুশি হবে, কেউ হবে না। এটা মনে নিতে শিখুন।
.
নেতিবাচক চিন্তার মানুষদের কাছ থেকে দূরে থাকুন

আমাদের জীবনে অন্যের কথার বেশ প্রভাব পড়ে। নিজের অজান্তেই সেই কথাগুলো আমাদের সফলতাকে নষ্ট করে। তাই এসব নেতিবাচক চিন্তার মানুষদের কাছ থেকে যতটা পারুন দূরে থাকুন।
.
কখনোই নিঃসঙ্গ থাকবেন না

একাকিত্ব মানুষের মনের উদ্যমতাকে নষ্ট করে দেয়। কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়। তাই একা না থাকার চেষ্টা করুন। পরিবার-বন্ধুদের সঙ্গ আপনার মনকে চাঙ্গা রাখবে, আপনার কার্যক্ষমতা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেবে।
.

13
Self Improvement / How To Raise Your Self-Esteem
« on: March 15, 2016, 09:49:45 AM »
Self-Esteem

Have you wondered about what self-esteem is and how to get more of it? Do you think your self-esteem is low? Do you know how to tell? Do you know what to do about it?
Self-esteem answers the question, “How do I feel about who I am?” We learn self-esteem in our family of origin; we do not inherit it.
Global self-esteem (about “who we are”) is normally constant. Situational self-esteem (about what we do) fluctuates, depending on circumstances, roles, and events. Situational self-esteem can be high at one moment (e.g., at work) and low the next (e.g., at home).
Low self-esteem is a negative evaluation of oneself. This type of evaluation usually occurs when some circumstance we encounter in our life touches on our sensitivities. We personalize the incident and experience physical, emotional, and cognitive arousal. This is so alarming and confusing that we respond by acting in a self-defeating or self-destructive manner. When that happens, our actions tend to be automatic and impulse-driven; we feel upset or emotionally blocked; our thinking narrows; our self-care deteriorates; we lose our sense of self; we focus on being in control and become self-absorbed.
Global self-esteem is not set in stone. Raising it is possible, but not easy. Global self-esteem grows as we face our fears and learn from our experiences. Some of this work may require the aid of a psychotherapist. In the meantime, here is what you can do:
Get sober. Get help through 12-step groups to stop self-destructive behaviors. Addictions block learning and drag down our mood. Identify them and replace them with self-care.
Practice self-care. Make new lifestyle choices by joining self-help groups and practicing positive health care.
Identify triggers to low self-esteem. We personalize stressful events (e.g., criticism) by inferring a negative meaning about ourselves. A self-defeating action often follows. Each event can, instead, be a chance to learn about ourselves, if we face our fear of doing so and the negative beliefs about ourselves that sustain the negative meanings.
Slow down personalizing. Target personalizing to slow impulsive responses. You can begin to interfere with these automatic overreactions by using relaxation and stress management techniques. These techniques are directed at self-soothing the arousal. This allows us to interrupt the otherwise inevitable automatic reaction and put into play a way to begin to face the unacknowledged fears at the root of low self-esteem.
Stop and take notice. Pay attention to the familiarity of the impulse. Our tendency is to overreact in the same way to the same incident. Awareness of the similarity can be the cue to slow our reactivity.
Acknowledge reaction. Verbalize, “Here I go again (describe action, feeling, thought) . . . ” Actively do something with the awareness rather than passively note it. The result is to slow the impulse and give ourselves a choice about how we want to respond.
Choose response. Hold self-defeating impulses. Act in a self-caring and effective way. By choosing to act in a more functional way, we take a step toward facing our fears.
Accept impulse. Be able to state the benefit (e.g., protection) of overreaction. We won’t be able to do this at first, but as we become more effective, we will begin to appreciate what our self-defeating impulse had been doing for us.
Develop skills. We can provide for our own safety, engender hope, tolerate confusion, and raise self-esteem by learning and using these essential life skills:
Experience feelings. “Feel” feelings in your body and identify your needs. When we do not respect our feelings, we are left to rely on what others want and believe.
Optional thinking. End either/or thinking. Think in “shades of gray” and learn to reframe meanings. By giving ourselves options, we open ourselves to new possibilities about how to think about our dilemmas.
Detachment. End all abuse; say “no” to misrepresentations and assumptions. By maintaining personal boundaries, we discourage abuse by others and assert our separateness.
Assertion. Voice what you see, feel, and want by making “I” statements. By expressing our thoughts, feelings, and desires in a direct and honest manner, we show that we are in charge of our lives.
Receptivity. End self-absorption; listen to others’ words and meanings to restate them. In this way, we act with awareness of our contribution to events as well as empathize with the needs of others.

14
ই-কমার্স ব্যবসা শুরুর গাইডলাইন

ই-কমার্স ব্যবসা কি , কেন করবেন , কিভাবে শুরু করবেন এই কথাগুলো বারবার মাথার মধ্যে ঘুরপাক খেতে হবে এই খাতে নিজেকে একজন উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে হলে । প্রতিটা ব্যবসার মূলে একটা কথা থাকে , তা হচ্ছে R&D । এর পুরো অর্থ হচ্ছে রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট । একজন উদ্যোক্তা ব্যবসায়ীর জীবনে সফলতার গল্প যেমন থাকার সম্ভাবনা রয়েছে ঠিক তেমনি সফল না হওয়ারও সম্ভাবনা থাকে । কিন্তু এই R&D যদি আপনি ব্যবসার শুরু এবং ব্যবসা শুরু করার পরেও ব্যবসা চলাকালীন সময় সঠিকভাবে প্রয়োগ না করেন, তবে আপনি সফল হওয়ার জন্যে যথেষ্ট পরিমান নিজে পরিশ্রম ও চেষ্টা করছেননা তা আপনাকেই বুঝে নিতে হবে ।
ই-কমার্স ব্যবসাটি কি ? ? ? ?

এতগুলো প্রশ্নবোধক চিহ্ন দেয়ার একটাই কারণ হলো এর ব্যাপকতা, আপনার জিজ্ঞাসা ব্যাপক থাকা উচিত । ইলেকট্রনিক কমার্স বুঝায় সোজা কথায় ই-কমার্স । অনলাইনে কেনাকাটা করবেন , অনলাইনে আপনার ক্রেতা একটি প্রোডাক্ট পছন্দ করবে এবং তা কেনার আগ্রহ দেখাবে সেই মানুষ এবং যখন সেই ব্যক্তি আপনার প্রোডাক্ট কেনার জন্যে অনলাইনে টাকা প্রদান করলো , ঠিক তখন থেকে আপনার দায়িত্ব বেড়ে গেলো কয়েকগুন । প্রথমেই অনলাইনে পেমেন্ট কনফার্ম করতে হচ্ছে আপনাকে , তারপর ক্রেতার পছন্দের জিনিসটি আপনার স্টক থেকে খুঁজে বের করে ভালো একটি প্রোডাক্ট ক্রেতার ঠিকানায় ডেলিভারি করতে হবে সঠিকভাবে । এখানেই উদ্যোক্তার দায়িত্ব সমাপ্ত নয় , কাজ এখান থেকে আরও নিবিড়ভাবে শুরু হয় । ক্রেতা প্রোডাক্ট পাওয়ার পর ক্রেতার সার্ভিস এবং প্রোডাক্ট সম্পর্কে অনুভূতি কি জানতে হবে এবং এই ক্রেতা যেন পরবর্তীতেও আরও প্রোডাক্ট কেনে সেই ব্যাপারে সচেতন হতে হবে এবং ভালো কাস্টমার সাপোর্ট দিতে হবে , সাথে করে নতুন কোন এক্সুসিভ প্রোডাক্ট আসলে তা ক্রেতাকে সৌজন্য মেসেজের মাধ্যমে জানাতে হবে ।

 

কেন করবেন ই-কমার্স ব্যবসা

আপনি যথেষ্ট পরিমান দায়িত্বশীল মানুষ ? মানুষকে ভালো সার্ভিস কিভাবে দিতে হয় , প্রোডাক্ট নিয়ে আপনার চিন্তাভাবনা অন্য অনেকের থেকেই খুব সুচারুভাবে সম্পূর্ণ করতে সক্ষম হবেন, তবেই এই ব্যবসা নামতে পারেন । তবে কিন্তু আছে !! ! !

 

কয়েকবছর এই ব্যবসা সম্পর্কে আপনার বিশদ একটা ধারণা রাখতে হবে । প্রায়োগিক জ্ঞান এবং অর্থ এই দুটোর কোন একটি কম হলেই এই ব্যবসায় সফল হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটুকু আপনার কমে যাবে ।

সেইজন্যে ভাবুন ! আবার ভাবুন ! আবার ভাবুন ! আমি বলবো আবার ভাবুন !

 

সময় নিন আপনার কি কি বিষয় জানা কম আছে যা এই ব্যবসায় নামার আগে আপনাকে কঠিন অবস্থার সম্মুখীন করতে পারে । টেকনিক্যাল বিষয় , প্রোডাক্ট সোর্সিং , প্রোডাক্ট ডেলেভারি , পেমেন্ট , কমিনিকেশন , রিসার্চ , ডেভেলপমেন্ট , কাস্টমার সাপোর্ট , মার্কেটিং , সময়ের সাথে পলিসি ঠিক করা , আইনি বিষয়ে নিজে কতটুক জানেন এসব বিষয় আপনাকে জানতে হবে ।

এখন হয়ত প্রশ্ন আসতে পারে আমি এইসব ব্যাপারে দক্ষ লোক রাখবো । তবে বলবো , সেই দক্ষ লোককে চেনার জন্যেও আপনার দক্ষতা থাকতে হবে এবং দক্ষ থাকলেও আপনাকে ব্যবসার পুরো দিক সম্পর্কে আসলেই ভালো কিছু বিষয় এবং অবস্থানগত বিষয় ভালোভাবে জানতে হবে । সেটাই এই ব্যবসায়ের জন্যে মূল চালিকাশক্তি ।   

 

কিভাবে শুরু করবেন ই–কমার্স ব্যবসা

 

ব্যবসা শুরু করার আগে কয়েকটি বিষয় আপনাকে অনেক গুরুত্বের সাথে চিন্তা করতে হবে । সেই বিষয়গুলো হলোঃ

 

১। আপনি কি প্রস্তুত এই ব্যবসার জন্যে

আপনি এই ব্যবসায় আসতে আর্থিক এবং মনগতভাবে প্রস্তুত কিনা । আপনার কাছে কি আসলেই যথেষ্ট পরিমান অর্থের ব্যবস্থা আছে । এবং ব্যবসার চ্যালেঞ্জিং মুহূর্তগুলো মোকাবেলার মত যথেষ্ট পরিমান মনোবল আছে । নিজের সাথে কথা বলুন এবং ভাবুন । ভাবুন এবং আবার কথা বলুন । নিজের ক্ষমতা সম্পর্কে জানুন । আপনি আসলে কি করতে পারেন এবং কি পরিমান পদক্ষেপ কতটুকু করতে পারবেন সেই বিষয়ে পুরো একটি গ্রাফ কিংবা ছক করুন ।

 

২। কি প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করতে চান       

কি ধরণের প্রোডাক্ট মূলত বিক্রি করবেন সেই বিষয়ে লক্ষ্য নির্ধারণ করুন । একসাথে কতগুলো প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করা আপনার পক্ষ্যে সম্ভব । মানুষ আসলে কি ধরণের প্রোডাক্ট কিনতে চায় সেই প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করা প্রোডাক্টগুলো কি সহজে সংগ্রহ করা যাবে নাকি না । যদি সম্ভব হয় তবে কত কম খরচে তা সংগ্রহ করা যাবে তা ঠিক করতে হবে এবং সংগ্রহ করা আপনার পক্ষে অনেক কঠিন হলে কত সহজে সংগ্রহ করা যায় খেয়াল করতে হবে ।

 

৩। প্রোডাক্ট এর খরচ এবং পরিবহন খরচ

অল্প সময়ে ভালো প্রোডাক্ট কিভাবে আনা যাবে ও কত কম খরচ পরবে প্রোডাক্ট আনতে তা খেয়াল রাখতে হবে । মনে রাখতে হবে প্রোডাক্ট যত কম দামে আপনি কিনতে পারবেন ও পরিবহন খরচ যত কম হবে আনতে, আপনার খরচ মূলত তত কমবে এবং আপনি তত কম মূল্যে ক্রেতার কাছে বিক্রি করতে সক্ষম হবেন প্রোডাক্ট । আর এই খরচ যত কমাতে পারবেন প্রতিযোগিতামূলক বাজারে ঠিকে থাকা আপনার পক্ষে তত বেশি সম্ভব । ক্রেতার কাছে ততবেশি আপনি কাছে পৌঁছাতে পারবেন । কত বেশি লাভ করতে পারবেন তা নয় বরং কত কম দামে ভালো প্রোডাক্ট কিনে কত কম লাভে বিক্রি করতে পারবেন তা লক্ষ্য থাকবে । 

 

৪। প্রোডাক্ট এর গুণগত মান রক্ষা

প্রোডাক্ট ভালো এবং সুন্দরভাবে সুরক্ষিত উপায়ে পৌঁছে দিতে সক্ষম হতে পারা ব্যবসার জন্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ । কত সময় প্রোডাক্ট ভালো থাকবে এবং কিভাবে রাখলে ভালো অবস্থায় সংরক্ষিত থাকবে তা নিজেকে সঠিক উপায়ে ঠিক করতে হবে । প্রোডাক্টকে ভালোভাবে প্যাকিং করতে হবে , যাতে ভালোভাবে সংরক্ষিত থাকে । প্রোডাক্ট সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখতে হবে । ক্রেতা যেই ধরণের প্রোডাক্ট বিষয়ে কথা বলা হয়েছে সেই প্রোডাক্ট অক্ষুন্নভাবে মান নিয়ন্ত্রণ করতে হবে ।

 

৫। প্রতিষ্ঠানের নাম নির্ধারণ ও আইনি কাজ

প্রতিষ্ঠানের নাম নির্ধারণ করতে হবে । যদি বিশেষ কোন প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করার ইচ্ছে থাকে তবে সেই প্রোডাক্ট এর নামে প্রতিষ্ঠানের নাম খোলা যায় , আর যদি বেশকিছু প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করার ইচ্ছে থাকে তবে প্রোডাক্টগুলোর সাথে মানানসই সেইরকম ভাবে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের নাম ঠিক করতে হবে এবং ট্রেডমার্ক , লোগো সহ যাবতীয় আইনি কাজ সম্পূর্ণ করতে হবে । নাম নির্বাচনের ক্ষেত্রে সমসাময়িক শব্দ কিংবা কিওয়ার্ড নিয়ে দারুণভাবে সময়কে পর্যবেক্ষণ করতে এবং মানুষ কোন শব্দ পছন্দ করে তা নিয়ে আলোচনা – চিন্তা করতে হবে । তাহলেই ভালো নাম মনে আসবে । মনে রাখতে বিজনেজ দাঁড় করানোর প্রথম পদক্ষেপই হচ্ছে নাম । নাম দিয়েই মানুষ আপনার প্রতিষ্ঠানকে চিনবে । নাম নির্বাচন ও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । মনে রাখতে হবে “নেম ইজ ব্র্যান্ড” , তারপর মানুষের কাছেই আপনি আপনার কোম্পানির ভালো সেবা নিয়ে খুব সহজে ভালো স্থান করতে পারবেন ।

 

৬ । ডোমেইন এবং হোস্টিং নির্বাচন

ডোমেইন এবং হোস্টিং নির্বাচন করতে হবে । ডোমেইন নিয়ে রিসার্চ করতে হবে কি ধরণের ডোমেইন নাম অর্থাৎ ওয়েবসাইটের ঠিকানা কি হলে মানুষ খুব পছন্দ করবে। সহজে পড়া যায় এবং সুন্দর একটা নাম রাখতে হবে । যেই নাম দিয়েই আপনি ক্রেতার কাছে আকর্ষণ করতে পারবেন আপনার সার্ভিসের বিষয়ে । আশেপাশে পরিচিত সুন্দর শব্দগুলো থেকেই সঠিক উপায়ে নাম নির্ধারণ করতে হবে । একটা নাম এখানে অনেক কিছু অর্থ বহন করে । এরপর ডোমেইন প্রোভাইডাররা পুরো কন্ট্রোল প্যানেল দিচ্ছে নাকি সেটা খেয়াল রাখতে হবে। আপনাকে সিক্রেট কোড দিচ্ছে নাকি সেটা দেখতে হবে ।   তারপর খেয়াল রাখতে হোস্টিং এর ব্যাপারে । কত পরিমান ডাটা এবং কত ব্যান্ডউইথ নিয়ে আপনাকে কাজ করতে হবে সেই বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে । কতজন আপনার সাইট একসাথে ভিজিট করতে সক্ষম তার সম্যক একটা ধারণা অবশ্যই আপনাকে রাখতে হবে আর তা না হলে Website Temporary Unavilable এর সমস্যায় পরতে হতে পারে যার ফলে আপনার সাইটের সুনাম ধরে রাখতে পারবেন না , CPU Use Limit এর সমস্যার জন্যে এটি হয় অর্থাৎ বেশি ভিজিটর আসলে এই সমস্যায় পরতে হয় এবং সেই হিসেব করেই আপনাকে তাই নিতে হবে আপনার পছন্দমত হোস্টিং প্ল্যান । ডেডিকেটেড হোস্টিং সার্ভার প্ল্যান নিতে হবে । লিনাক্স , ভিপিএস কিংবা ক্লাউড হোস্টিং প্ল্যানের মতন আপনাকে একটা প্ল্যান নিতে হবে আপনার হোস্টিং সাপোর্ট প্রতিষ্ঠান যেইরকম প্ল্যান সেবা দিয়ে থাকে। শেয়ারড হোস্টিং নেয়া যাবেনা , এতে করে সাইট স্লো হওয়ার সম্ভাবনা যথেষ্ট থাকে কারণ এই হোস্টিং এ অনেকের একাধিক সাইট শেয়ারড অবস্থায় থাকে আর তাই সাইট স্লো হয় । তাই হাইস্পিড ,খরচ , আপটাইম , সার্ভিস সবকিছু খেয়াল করে প্ল্যান নিতে হবে। ব্যাকআপ কতদিন দিবে এই প্ল্যানে সেই ব্যাপারেও আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে । প্ল্যানে ব্যাকআপ কি কয়েকদিন দেয়ার কথা থাকবে নাকি সপ্তাহ নাকি মাস থাকবে সেই ব্যাপারে আপনার ধারণা রাখতে হবে । SSL সার্ভিস নেয়া যায় , আর সাইটের নিরাপত্তার জন্যে SITE LOCK সার্ভিস এবং হোস্টিং এ ব্যবহার করতে পারেন CDN সার্ভিস ।

 

৭। ওয়েবসাইট এর প্ল্যাটফরম তৈরি

ওয়েবসাইট এর প্ল্যাটফরম কি হবে এবং কোনটি সহজ সবকিছু বিবেচনা করে CMS কিংবা কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সিলেক্ট করতে হবে ।

 

কয়েকটি উল্লেখযোগ্য (CMS কিংবা কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম )

Opencart    – আকর্ষণীয় ডিজাইন এবং সহজে ব্যবহার উপযোগী ওপেনসোর্স কনটেন্ট

                       ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম হিসেবে এটি ব্যবহার করা যায় ।

Magento      – Zend Framework এ তৈরি জনপ্রিয় একটি কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এটি ।

                     বিভিন্ন ধরণের জনপ্রিয় ফিচার রয়েছে ই-কমার্স এর জন্যে জনপ্রিয় এই ফ্রি                   

                       ওপেনসোর্স ম্যাজেন্টো’তে ।

Presta shop      – ফ্রি ওপেনসোর্স ভিত্তিক একটি CMS বা কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এটি ।

                       সুন্দর এবং আকর্ষণীয় ডিজাইনের জন্যে এটি বেশ জনপ্রিয়।

Zencart          – জনপ্রিয় একটি ওপেনসোর্স ভিত্তিক CMS হচ্ছে জেনকার্ট ।

Woocommerce – ওয়ার্ডপ্রেসের মাধ্যমে আকর্ষণীয় সাইট তৈরি করা যায় Woocommerce এর দ্বারা ।

                       একটি ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন এটি ।

 

৮। কিওয়ার্ড রিসার্চ–

কিওয়ার্ড রিসার্চ একজন উদ্যোক্তাকে তার নেয়া উদ্যোগের ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে নেবে । কিওয়ার্ড নিয়ে নিজের সম্ভাব্য প্রোডাক্ট নিয়ে রিভিউ লিখে ব্লগ করা যেতে পারে । সার্চ ইঞ্জিনে যেসব প্রোডাক্ট কিওয়ার্ড নিয়ে মানুষ বেশি সার্চ করে সেইসব কিওয়ার্ড নিয়ে ই-কমার্স সাইটের ব্লগে কাজ করা উচিত নিজের প্রোডাক্ট এর ওপর । এতে করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবং ব্লগের মাধ্যমে ক্রেতার কাছে নিজের কোম্পানির প্রোডাক্ট সম্পর্কে তথ্য তুলে ধরা যাবে । পেইড টুল লংটেল প্রো ( Long tail pro v3) সফটওয়্যারটি www.longtailpro.com/ থেকে কিনে ব্যবহার করা যায় এবং পেইড ও ফ্রি টুল Moz দিয়ে কিওয়ার্ড রিসার্চ করা যাবে । 

 

৯। মার্কেটিং – 

যত ভালো অবস্থাই থাকুক প্রতিষ্ঠানের , আপনি ঠিকমত যদি মার্কেটিং করতে না পারেন তবে আপনি আপনার কাস্টমারদের কাছে পৌঁছাতে পারবেন না । আর কাস্টমারদের কাছে পৌঁছাতে না পুরো ব্যবসাই লাভের দেখা পাবেনা । সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো সঠিক ব্যবহার করতে হবে , ফেসবুক , টুইটার সহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পেইড বিজ্ঞাপন করতে হবে । পেজ প্রমোট করতে হবে , সাথে পেজ থেকে বুস্টপোস্ট করতে হবে । এছাড়া এসইও , ইমেইল মার্কেটিং , এসএমএস মার্কেটিং , পোস্টারিং , লিফলেট , ডিজিটাল বিজ্ঞাপন সবকিছুর নিয়ে চিন্তা করতে হবে একজন উদ্যোক্তাকে তার বাজেট অনুযায়ী । বাজেট যেমন হবে সেইরকম চিন্তা রেখে মার্কেটিং করতে হবে । তবে আপনাকে ধরে রাখতে হবে মূল ব্যবসায়ের ৩৫-৪৫% এর মতন অর্থ ব্যবস্থা রাখতে হবে নূন্যতম মার্কেটিং এর জন্যে । এতে করে ক্রেতার কাছে সহজে আপনি আপনার প্রোডাক্ট নিয়ে পৌঁছাতে পারবেন । 

 

 

১০। পেমেন্ট সিস্টেম –

পেমেন্ট প্রসেস কি হবে সেই সম্পর্কে ভালোরকম ধারণা পোষণ করতে হবে একজন নতুন উদ্যোক্তাকে । ক্যাশ অন ডেলেভারি এবং অনলাইন পেমেন্ট দুইটি মাধ্যমের ব্যবস্থা রাখতে হবে । ক্রেতাকে সময়ের সাথে সাথে অনলাইনে পেমেন্ট করে কেনাকাটায় আগ্রহী করে তুলতে চেষ্টা করতে হবে । এতে করে কেনাকাটার পদ্ধতি এবং লেনদেন অনেক সহজতর হবে এবং ক্যাশ অন ডেলেভারি প্রসেস পুরোপুরি ব্যবস্থা করতে হবে । SSL ব্যবস্থা রাখা উচিত সাইটে যাবতীয় অনলাইন পেমেন্ট নিরাপত্তা রাখার পাশাপাশি । (SSL কি , কিভাবে কাজ করে তার বিস্তারিত )

 

১১। প্রোডাক্ট ডেলিভারি–

প্রোডাক্ট ডেলিভারির সময় ট্রেকিং পদ্ধতি চালু করতে পারলে খুব ভালো হয়। প্রোডাক্ট এখন কোন এলাকায় আছে তা যদি জানা যায় তবে ক্রেতা এবং বিক্রেতার মধ্যে এক দারুণ সমন্বয় ঘটবে । প্রোডাক্ট ঠিকমত ক্রেতার কাছে পৌঁছাতে কত সময় লাগবে তা সঠিক নিরূপণ করে ক্রেতাকে জানানো সম্ভব হলে তা ক্রেতার কাছে সেই প্রতিষ্ঠান থেকে কেনার ব্যাপারে দারুণ আগ্রহী করে তুলবে । প্রোডাক্ট ডেলিভারির সময় খুব সুন্দরভাবে কোম্পানির লোগোর মোড়ানো পেপার দিয়ে প্যাকিং করে দিতে হবে এবং প্রোডাক্ট এর গুণগতমান যেন ভালো থাকে তা লক্ষ্য রাখতে হবে । তাহলে ক্রেতা ভালো প্রোডাক্ট পাবে ।

 

১২ । কাস্টমার সাপোর্ট– 

অনেক সময় প্রোডাক্ট নিয়ে অনেক সমস্যা হয় । সেই বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্যে ২৪ ঘণ্টা কাস্টমার সাপোর্ট ব্যবস্থা করতে হবে ,যা ক্রেতার সন্তুষ্টি অনেকাংশে বৃদ্ধি করবে । ক্রেতার সাথে ভালো ব্যবহার করতে পারা ব্যবসার এক গুরুত্বপূর্ণ দিক । ক্রেতা কাস্টমার সাপোর্ট পেয়ে সন্তুষ্ট হলেই পরবর্তীতে সেই ব্যক্তি একই প্রতিষ্ঠান থেকে আগ্রহী হবে প্রোডাক্ট কিনতে । কোন সমস্যা হলো কিনা ডেলেভারি নিয়ে তা জেনে নেওয়া এবং কি ধরণের সেবা ক্রেতা চাচ্ছেন তা সম্পর্কে জেনে নিবে । ভালো কাস্টমার সাপোর্ট দেই যেই প্রতিষ্ঠান সেই প্রতিষ্ঠানের এইদিক দিয়ে মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে । কারণ ক্রেতা সন্তুষ্ট হয় এবং সাথে আরও কয়েকজনকে প্রতিষ্ঠানের ভালো সার্ভিসের ব্যাপারে জানায় মানুষকে । সবকিছুই একটা ভালো দিকে এই ক্ষেত্রে ।

১৩। টিম ম্যানেজমেন্টঃ

কোন বিষয়ে কোন মানুষ দক্ষ সেটা যদি একজন উদ্যোক্তা বুঝতে না পারেন তাহলে সমস্ত প্রসেস চেইন ঠিকমত কাজ করবেনা । সাপ্লাই থেকে শুরু করে পুরো প্রসেস এবং পেমেন্ট , প্রোডাক্ট সোর্সিং সব বিষয়গুলো একটি ডিপার্টমেন্ট আরেকটি ডিপার্টমেন্ট এর সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত । প্রতিটি পদক্ষেপ তখনই হওয়ার সম্ভাবনা থাকে সফল যখন প্রতিটি ডিপার্টমেন্ট এর লোক ঠিকমত কাজ করে দক্ষতার সাথে । এইজন্যে ট্রেনিং সেশন প্রতিষ্ঠানে চালু রাখা উচিত । কারো পারফর্ম নেমে গেলেই তাকে ট্রেনিং সেশনে পাঠিয়ে দক্ষতা বৃদ্ধি নিয়ে কাজ শেখানো এবং দক্ষতা বৃদ্ধির ওপর কাজ করা দরকার । সমস্যা বুঝতে হবে টিমের । কে আসলে কোথায় বাঁধা পরছে ,সেই জায়গায় কাজ করতে হবে । তবেই প্রতিষ্ঠান ভালো করবে ।

১৪। বাজেট নির্ধারণঃ 

সব উদ্যোগ ও কাজগুলো সম্পূর্ণ করতে চাই একটি সুনির্দিষ্ট বাজেট । কখন, কোথায়, কিভাবে, কত পরিমাণ বাজেট নির্ধারণ করতে হবে তার সম্ভাব্যতা যাচাই করতে হবে । প্রতিষ্ঠান শুরুর পূর্ববর্তী রিসার্চ করার সময়ই ব্যাপারগুলো উঠে আসে । যেই পরিমান অর্থ নিয়ে প্রতিষ্ঠান দাঁড় করানোর দরকার মনে করছেন ,ঠিক সেই পরিমান টাকা আপনার সাপোর্টিং বাজেট হিসেবে রাখুন । যাতে প্রতিষ্ঠান দাঁড় করানোর সময় কিংবা দাঁড় করানোর পরেও কোনরুপ সমস্যার সম্মুখীন হলে সেই সাপোর্টিং বাজেট আপনাকে সহায়তা করতে হবে । এটা অবশ্যই আমাদের দেশে উদ্যোক্তাদের ব্যবসার শুরুতেই ভাবা উচিত । ঠিক একই পরিমান বাজেট , যে বাজেট নিয়ে আপনি ব্যবসা করছেন সেটা কিভাবে খরচ করবেন কোন খাতে সেটাও লক্ষ্য রাখতে হবে । ৩৫-৪০ ভাগ বাজেটের টাকা মার্কেটিং , ৩৫-৪০ ভাগ প্রোডাক্ট ও প্রোডাক্ট কোথায় পাওয়া যায় , আনার বিষয়ে বাজেট ধরতে হবে এবং কারিগরি দিক ও প্রতিষ্ঠান চালানো খরচ ২০-২৫ ভাগ বাজেট রাখতে হবে । বাজেটের আকারভেদে আপনার ইচ্ছেয় বিভিন্ন বিষয় বুঝে সেই হিসেবে সঠিকভাবে বাজেট রাখতে পারেন ।

ব্যবসার প্রতি ধাপ ব্যবসার সামনের দিক ঠিক করবে ।

সবাইকে শুভেচ্ছা, ভালো থাকবেন ।     

15
শখের বসে ২০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছিলেন গৃহবধূ তনুজা রহমান মায়া। নিরলস প্রচেষ্টা আর অক্লান্ত পরিশ্রমে তিনি এখন দেশের একজন শ্রেষ্ঠ নারী উদ্যোক্তা। ৩ হাজারের অধিক নারী-পুরুষকে হস্তশিল্প পণ্য তৈরি করে জীবিকা নির্বাহের সুযোগ করে দিয়েছেন। তারা কাপড়ে সুই-সুতা দিয়ে নকশি কাঁথা, নকশি চাদর, হাতের কাজের শাড়ি, থ্রি-পিস, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, টুপিসহ ৪০ ধরনের পণ্য তৈরি করছে। প্রতি মাসে এসব শ্রমিকের বেতন দেয়া হয় ১২ লাখ টাকার ওপর। তনুজার হ্যান্ডিক্র্যাফট ব্যবসায় এখন বিনিয়োগ তিন কোটি টাকা।

কথা হয় সফল এ নারী উদ্যোক্তা যশোরের তনুজার সঙ্গে। তিনি তুলে ধরেন তার সাফল্যের ইতিবৃত্ত। তনুজার শুরুটা ছিল শখের। পরবর্তীতে প্রয়োজনের তাগিদে নিজের পায়ে দাঁড়ানোরও একটা প্রচেষ্টা ছিল। পুরনো দিনের স্মৃতি তুলে ধরে তনুজা বলেন, ‘একদিন আমার স্বামীকে কিছু টাকা ধার দিই। পরে স্বামীর কাছে ধারের টাকা চাইলে আর ফেরত দেয় না। স্বামী বলে তোমার কিসের টাকা? তুমি কি ইনকাম কর? তখন থেকে মনে জেদ আসে। সেই জেদ থেকেই ১৯৯৬ সালে হ্যান্ডিক্র্যাফটের ব্যবসা শুরু।’

উচ্চমাধ্যমিক পাস তনুজার বিয়ে হয় কিশোরী বয়সে অষ্টম শ্রেণীতে পড়া অবস্থায়। ১৯৯৮ সালে তার স্বামী মারা যান। দুই ছেলে ও এক মেয়ের জননী তনুজা। বড় ছেলে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে চাকরি করছে। মেয়ে ক্যান্টনমেন্ট কলেজে বিবিএ পড়ছে। উদ্যোক্তা হিসেবে তনুজার যাত্রা শুরু ১৯৯৬ সালে। তখন ঘরে বসেই সেলাইয়ের কাজ করতেন। তারপর গড়ে তোলেন রঙ হ্যান্ডিক্র্যাফট নামে একটি প্রতিষ্ঠান।
১০ থেকে ১২ জন কর্মী নিয়ে লড়াইটা শুরু হয়। চার বছর পর্যন্ত কঠোর সংগ্রাম করতে হয়েছে তনুজাকে। এরই মধ্যে যশোর শহরে তার সুনাম ছড়িয়ে পড়ে, চাহিদা বাড়তে থাকে তার তৈরি পণ্যের। চার বছর পর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি শুধু সামনে এগিয়ে যাওয়ার পালা।

মাত্র ২০ হাজার টাকা দিয়ে শুরু করা তনুজার হ্যান্ডিক্র্যাফট ব্যবসায় এখন বিনিয়োগ তিন কোটি টাকা। এর মধ্যে এসএমই ফাউন্ডেশনের লোন নেয়া আছে ৭৫ লাখ টাকা। আর ব্যাংক থেকে তিনি দেড় কোটি টাকা সিসি লোন নিয়েছেন। যশোরের রেলগেটসংলগ্ন মুজিব সড়কে প্রথমে ছোট একটা শোরুম চালু করেন, সঙ্গেই ফ্যাক্টরি। যেসব পণ্য তৈরি হতো তার বাজার যশোর শহরের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। গুণগত ও মানসম্মত হওয়ায় তার পণ্য অল্প সময়ের মধ্যে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। সফল হওয়ার পেছনে গোপন রহস্য কী জানতে চাইলে তনুজা বলেন, আমি মানের সঙ্গে কখনোই আপস করিনি, করবও না। এ কারণে টিকে আছি। তিনি বলেন, সামাজিক, পারিবারিক প্রতিবন্ধকতা প্রথমে কাজ করতে গিয়ে অনুভব করেছি। তারপরও প্রাচীন বাংলার নকশাকে তুলে ধরার মাধ্যমে আমার পণ্যে দেশি কাঁচামাল ব্যবহার করছি, যা ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তিনি আরও বলেন, এখন প্রতিষ্ঠান বড় হয়েছে। বহু মানুষ কাজ করছে। দরকার ছিল ব্যাংক ঋণের। কিন্তু পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে এ ব্যাপারে এগিয়ে আসে এসএমই ফাউন্ডেশন। বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে তারা জাতীয় এসএমই নারী উদ্যোক্তা হিসেবে আমাকে ঋণ দেয়। ফলে এখন আমাকে আর অর্থ নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার তৈরি পণ্য ব্র্যান্ড হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে চাই। পাশাপাশি কর্মসংস্থান ৩ থেকে বাড়িয়ে ৫ হাজারে উন্নীত করব, এটা আমার স্বপ্ন। তিনি বলেন, নিজের পায়ে দাঁড়ানোর পর যখন দেখি গ্রামে মেয়েদের আয়-রোজগার দরকার, তখন আর বসে থাকতে পারলাম না। আমার এখানে কাজ করার পর অনেক মেয়ের ভাগ্য বদলে গেছে। এটা দেখে বুকটা ভরে যায়।

তনুজা বলেন, ব্যবসা করতে গিয়ে ট্যাঙ্ বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। এ বিড়ম্বনার কারণে অনেক ব্যবসায়ী ট্যাঙ্ দিতে আগ্রহ দেখান না। অনেকে বাধ্য হয়ে ট্যাঙ্ দেন। বিশেষ করে যারা ব্যাংক লোন নিয়ে ব্যবসা করছেন তারা ভোগান্তি স্বীকার করে ট্যাঙ্ দিচ্ছেন। তনুজা মনে করেন, ট্যাঙ্ প্রক্রিয়া সহজ এবং পরিমাণটা কম হওয়া উচিত। তাহলে সব ব্যবসায়ী ট্যাঙ্ দিতে উৎসাহী হবে। তিনি বলেন, এক সময় যে তরুণরা আড্ডা আর ক্যারাম খেলে সময় পার করত তাদের কারচুপির কাজ শিখিয়েছি। কারচুপির কাজ করে একটা ছেলে এখন সপ্তাহে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা আয় করছে। এ টাকার ৭০ শতাংশ তাদের দেয়া হয়। বাকি ৩০ শতাংশ প্রভিডেন্ট ফান্ড হিসেবে রেখে দেয়া হয়। প্রভিডেন্টের এ টাকা তাদের প্রতি বছরের রমজান মাসে দিয়ে দেয়া হয়। যাতে তারা ঈদ ভালোভাবে করতে পারে।

তনুজার ফ্যাক্টরিতে কথা হয় জনি ও আসাদুল নামের দুই কর্মচারীর সঙ্গে। এ দুইজন মাসে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় করেন। দুইজনকে ভারতের মুম্বাই থেকে প্রশিক্ষণ করিয়ে এনেছেন তনুজা। তনুজার কারখানার শ্রমিক জনি বলেন, একটি পাঞ্জাবির ডিজাইন করতে অনেক সময় লেগে যায়। দিনে মাত্র দুই থেকে তিনটি পাঞ্জাবির কাজ করা যায়। তনুজা জানান, বাংলাদেশে হস্তশিল্পের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে, প্রয়োজন সহযোগিতা ও অনুকূল পরিবেশ। নারীদের জন্য ব্যাংক ঋণ পাওয়াটা খুবই কঠিন বলে জানান তিনি।তার মতে, সহজ শর্তে ও কম সুদে ঋণ পাওয়া গেলে এ দেশে অসংখ্য নারী আছে, যারা বড় উদ্যোক্তা হতে পারেন। প্রথমদিকে তিনি নিজেও এ সমস্যা মোকাবিলা করেছেন। তবে এমএমই ফাউন্ডেশন এবং বাণিজ্যিক ব্যাংক তাকে সহযোগিতা করায় ব্যবসাটা প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন।

ব্যবসা করে শুধু অর্থ উপার্জনই করেননি, পেয়েছেন কাজের স্বীকৃতিও। দারিদ্র্যবিমোচন ও কর্মসংস্থানে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১০ সালে তিনি পেয়েছেন জাতীয় এসএমই নারী উদ্যোক্তা পুরস্কার। ২০১৩ সালে পেয়েছেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের কোয়ালিটি অ্যাঙ্গেলিন্ট অ্যাওয়ার্ড।

Pages: [1] 2