Daffodil International University
Religion & Belief (Alor Pothay) => Islam => Allah: My belief => Topic started by: arefin on August 22, 2012, 02:05:48 PM
-
আমাদের এ ঢাকা শহরে যানজট দিনদিন প্রকট আকার ধারণ করছে। এর ভোগান্তিতে সামান্য পথ পাড়ি দিতে লেগে যায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে বর্ষার খোঁড়াখুঁড়ি আর রাস্তাঘাটের বেহাল দশা। ঢাকা নগরীর যোগাযোগ ব্যবস্থার এ জীর্ণদশা কাগজে কলমে লিখে তুলে ধরা সম্ভব নয়।
এমন অসহনীয় যানজটে বসে আমরা অনেকেই বিরক্তি প্রকাশ করি। সামান্য কারণে রেগে যাই অন্যের ওপর। এসব স্বাভাবিক। এমন গরম আর জ্যামে আটকে থাকতে কারই বা ভালো লাগে?
প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা কর্মস্থলে যাতায়াতের সময় ঘণ্টাদুয়েক কিংবা তার চেয়েও বেশি সময় জ্যামে আটকে থাকি আমরা। তবে পবিত্র রমজানে আমরা চাইলে এ সুযোগটুকু কাজে লাগাতে পারি। চুপচাপ বসে না থেকে আপনি অন্তত এ সময়টুকুতে আল্লাহকে স্মরণ করুন।
সুযোগ হলে সঙ্গে একটি তসবিহ নিয়ে বের হতে পারেন। যেটুকু সময় জ্যামে আটকে থাকতে হবে, এ সময়টুকু এক মনে আল্লাহ পাকের যিকির করতে পারেন নিঃশব্দে।
সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার কিংবা আসতাগফিরুল্লাহ অথবা যে কোনো যিকির কিংবা দুরুদ শরীফ পড়তে পারেন। স্বাভাবিক যিকিরের জন্য মাথায় যেমন টুপি দেওয়া জরুরি নয়, তেমনি অজুও প্রয়োজনীয় নয়। তবে হ্যাঁ, অজুর সঙ্গে যিকির করলে সওয়াব অবশ্যই বাড়বে, তবে অজু ছাড়াও আল্লাহকে ডাকা যায়।
পবিত্র রমযানের প্রতিটি মুহূর্ত আল্লাহ পাকের বিশেষ রহমতের। এ মাসে একবার সুবহানাল্লাহ বললে অন্য মাসে সত্তর বার বলার সওয়াব পাওয়া যায়।
দিনেরাতে আমরা অহরহ নিজেদের অজান্তে কত গুনাহ করে থাকি। সেসবের জন্য তওবা হিসেবে আসতাগফিরুল্লাহ পড়লেও আল্লাহ পাক তা মার্জনা করবেন।
রমজান মাস হিসেবে এসব যিকিরের মাধ্যমে শুধু সময়কে কাজে লাগানো নয় বরং আল্লাহ পাকের যিকিরের মাধ্যমে আপনার হৃদয়ে প্রশান্তি অনুভব করবেন।
স্বয়ং আল্লাহ পাক পবিত্র কুরআনে সূরা রাদের ২৮ নম্বর আয়াতে বলেছেন, ‘‘মনে রেখো, আল্লাহর স্মরণের মাধ্যমে হৃদয়ে স্থিরতা আসে।’’
সূরা আহযাবের ৩৫ নং আয়াতে আল্লাহ পাক বলেছেন, ‘‘যেসব পুরুষ ও নারী আল্লাহ পাকের যিকির করে তাদের জন্য আল্লাহ পাক প্রস্তুত করে রেখেছেন ক্ষমা ও মহা প্রতিদান।’’
হাদীসের কিতাবসমূহে যিকিরের অনেক উপকারিতার কথা উল্লেখ রয়েছে। আর রমজান উপলক্ষে তো এসবের সওয়াব আরও বহুগুণে বেড়ে যায়। মুখ বুজে চুপ করে ভ্রু কুঁচকিয়ে বসে থাকলেও সময় যেমন চলে যাবে, কিংবা অযথা আলাপ বা গালগল্পে মেতে থাকলেও সময় পার হয়ে যাবে, কিন্তু এ সময়টুকু যদি আমরা এসব অনর্থক আলাপে না কাটিয়ে মহান আল্লাহর তাসবীহ জপতে থাকি, আমাদের আমলনামায় এভাবেই তো যোগ হয়ে যাবে কত সওয়াব।
বুখারী ও মুসলিমের হাদীস থেকে জানা যায়, আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ পাকের যিকির করে এবং যে করে না, এদের উদাহরণ হলো ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেছেন, অন্তরের জন্য যিকির যেমন মাছের জন্য পানি। যিকিরশূন্য হৃদয় পানিবিহীন মাছের মতোই অস্থির থাকে।
বিশেষ করে বিকেলে যখন কর্মব্যস্ত মানুষ কর্মস্থল থেকে নিজের বাসার দিকে রওনা হয়, ঠিক ওই সময়টিই আল্লাহ পাকের কাছে অনেক মূল্যবান। ইফতারের আগ মুহূর্তে আল্লাহ পাক বান্দার কোনো দুআকে ফেরত দেন না।
শত সমস্যায় জর্জরিত আমাদের দেশ। নানাবিধ দুঃখ বেদনায় ঘেরা আমাদের এ জীবন। এসব সমস্যার সমাধান তো ওই মহান আল্লাহ পাকেরই হাতে। চাওয়ার মতো চাইলে তিনি দান করেন। এর প্রচুর উদাহরণ ইতিহাসের পাতায় পাতায় বিদ্যমান। তাই নিজের পাপ কিংবা কর্মের দিকে না তাকিয়ে আল্লাহ পাকের দয়া ও করুণার ওপর ভরসা করে আল্লাহ পাকের সঙ্গে নিজের আত্মার সংযোগকে সুদৃঢ় করতে পারলে এ পৃথিবীতে আর কোনো চাওয়া বাকি থাকে না।
Source: banglanews24.com