Daffodil International University

Health Tips => Health Tips => Topic started by: Badshah Mamun on November 01, 2012, 01:18:39 PM

Title: ঈদে সুস্থ থাকতে ৭ পরামর্শ
Post by: Badshah Mamun on November 01, 2012, 01:18:39 PM
ঈদে সুস্থ থাকতে ৭ পরামর্শ


ঈদুল আযহা বা কোরবানীর ঈদ। এই ঈদ আসলেই ঈদুল ফিতর বা রোজার ঈদ অপেক্ষা একটু বাড়তি স্বাস্থ্য সচেতন হতে হয়। কারণ কোরবানীর ঈদে কিছু বাড়তি স্বাস্থ্য ঝুঁকি থাকে বিশেষ করে কোরবানীর মাংস অতিভোজন এবং কোরবানীর পশু জবাই থেকে সৃষ্টবর্জ্য অনেক ক্ষেত্রে রোগ সংক্রমণ ঘটাতে পারে। এছাড়া ঈদ আসলে নতুন জামা-কাপড় কেনা, নানা রকম খাবার, হাতে মেহেদী এবং বাড়ী ফেরার বিড়ম্বনাতো থাকছেই। এসব নিয়ে আমাদের আজকের এই স্বাস্থ্য ভাবনা।

ঈদ স্বাস্থ্য-এক
প্রতিটি ঈদে বিপুল সংখ্যক মানুষ ঢাকাসহ বিভিন্ন শহর থেকে গ্রামের বাড়ী এবং গ্রামের বাড়ী থেকে শহরে ঈদ করতে আসে। ছেলে-মেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে আসেন বেশীরভাগ মানুষ। চড়তে হয় লঞ্চ-ষ্টিমার, বাস, ট্রেইন ইত্যাদিতে। যাদের প্রাইভেট যানবাহন নেই অথবা বিমানে চড়েননা তাদেরতো বিডম্বনার শেষ নেই। বিশেষ করে যাদের দুরপাল্লার বাসে বাড়ী ফিরতে হয় তাদের অনেকেই বাসে বমি করে থাকেন। এসব যাত্রীদের উচিত গন্তব্যে রওনা হবার অন্তত: আধা ঘন্টা আগে এন্টিএমিটিকস বা বমির জন্য সতর্কতামূলক ওষুধ যেমন অমিডন ট্যাবলেট অথবা সিরাপ সেবন করা এতে রাস্তায় এই বিব্রতর স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যায় অনেক ক্ষেত্রে।

ঈদ স্বাস্থ্য-দুই
ঈদে প্রচুর মানুষ নতুন জামা-কাপড় পরেন। বিশেষ করে শিশু-কিশোরদের নতুন জামা-কাপড় ছাড়াতো ঈদ ভাবাই যায়না। প্রতিটি নতুন জামা-কাপড় কিনে ধোলাই করে পরা উচিত। অনেক ক্ষেত্রে নতুন কাপড়ের রং ও কেমিক্যাল থেকে কন্টাক্ট এলার্জি হতে পারে। শরীর চাকা চাকা হয়ে ফুলে যেতে পারে। এসব ক্ষেত্রে যে কোন এন্টিহিস্টামিন জাতীয় ট্যাবলেট সেবন করা ভালো। যেমন: ওরাডিন, লোরাটিন, অ্যালাট্টল, সেসোনিক্স, আট্টিজিন ইত্যাদি। পাশাপাশি যাদের নতুন কাপড়ে এলার্জি হয় তাদের জামা-কাপড় ধুয়ে পরা উচিত।

ঈদ স্বাস্থ্য-তিন
ঈদের সময় শহর থেকে যারা গ্রামে ঈদ করতে যান তাদের অনেকে গ্রামের বাড়ীতে ২/৪ দিন থাকেন। অনেকে পুকুরে গোসল করেন। এ সময় অনেকে বিভিন্ন ধরণের চর্মরোগে আক্রান্ত হন। যেমন: চুলকানি, একজিমা, এলার্জি ইত্যাদি। এ সময় ভালোভাবে হাইজিন মেইনটেইন করা উচিত। পাশাপাশি যে কোন ভালো ময়েশ্চারাইজার লোশন ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়। আর যদি চর্মরোগ জাতীয় কোন সমস্যা দেখা দেয় তবে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কোন চিকিত্সকের পরামর্শ নেয়া ভালো।

ঈদ স্বাস্থ্য-চার
ঈদের সময় প্রায় সকল মহিলা কিশোরী থেকে শুরু করে অনেক শিশু পর্যন্ত হাতে মেহেদী পরেন। ব্যবহার করা হয় বাড়তি মেকআপ। আমাদের দেশে যে সমস্ত মেহেদী পাওয়া যায় এসবের বেশীরভাগ নুিমানের এবং ক্ষতিকর কেমিক্যালযুক্ত। এতে অনেকের মারা্তক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়। মেহেদী লাগানোর স্থান ফুলে যায়, লাল হয়। অনেক সময় তীব্র চুলকানি হয়। যাদের মেহেদীতে এ ধরণের সমস্যা হয় তারা তািনকভাবে যে কোন এন্টিহিস্টামিন ট্যাবলেট খাবেন এবং আক্রান্ত স্থানে মাইল্ড বা হালকা মাত্রার স্টেরয়েড ক্রিম যেমন কিউটেভেট, মোমেসন, টপিকর্ট, জেনোকর্ট দিনে ২ বার লাগাবেন। এতে উপকার পাওয়া যাবে। অনেক সময় মেহেদী এলার্জি এত তীব্র হয় যে, ইনজেকশন পর্যন্ত দেয়ার প্রয়োজন হয়। যাদের এলার্জি আছে তাদের কৃত্রিম মেহেদী না লাগানোই ভালো। তারা প্রাকৃতিক মেহেদী ব্যবহার করতে পারেন। একই ভাবে যাদের কসমেটিকে এলার্জি হয় তারাও ভারী মেকআপ পরিহার করতে পারেন।

ঈদে স্বাস্থ্য-পাঁচ
ঈদের সময় যারা বাড়ীতে যান তাদের অনেকের ঘুমের সমস্যা হয়। ঘুমানোর জন্য রাত না জাগা ভালো। রাতে ১০টার মধ্যে ঘুমাতে চেষ্টা করুন। আর যদি ঘুম না আসে তবে এক গ্লাস দুধ পান করতে পারেন। তবে রাতে কফি বা টি খাবেন না।

ঈদে স্বাস্থ্য-ছয়
ঈদের সময় সবচেয়ে বাড় যে স্বাস্থ্য সমস্যা হয় তা হচ্ছে প্রচুর খাওয়-দাওয়া বিশেষ করে কোরবানীর মাংসের নানা আইটেম ছাড়াও গ্রামীন জনপদের নানা বাহারী পিঠাতো থাকেই। যাদের পেটের সমস্যা আছে তারা অবশ্যই সতর্কতার সঙ্গে খাবেন। আর যাদের পেটের সমস্যা নেই তারাও পরিমিত আহারের চেষ্টা করুন। কোরবানীর সময় দেখা যায় ভুড়িভোজে অনেকের বদ হজম বা ইনডাইজেশন হতে পারে। বাড়তে পারে বুকজ্বালা-পোড়া। এমনকি অনেকের ফুডপয়জনিংও হতে পারে। তাই ঈদে বিশেষ করে খাবার দাবারের প্রতি সতর্ক থাকতে হবে। এছাড়া সেমাই, জর্দা এসব যথাসম্ভব কম খাওয়া ভালো। গ্রামে, এমনকি শহরেও আজকাল নানা ধরণের ভেজাল সেমাই, দুধ বিক্রয় হয়। এসব খাবারে পেটের পীড়া দেখা দিতে পারে। হতে পারে পাতলা পায়খানা ও বমি। যাদের ফুডপয়জনিং হয় তারা সিপ্রোফ্লক্সাসিন জাতীয় এন্টিবায়োটিক সকালে ও রাতে ৫ দিন সেবন করতে পারেন। যেমন: সিপ্রোসিন, নিউফ্লক্সাসিন, বিউফ্লক্স ইত্যাদি। এছাড়া পেটে সমস্যা, আমাশয় হলে ফ্লাজিল জাতীয় ওষুধ (মেট্রোনিডাজল) সেবনের প্রয়োজন হতে পারে। বুকজ্বালা-পোড়া করলে সেবন করতে হবে এন্টাসিড জাতীয় সিরাপ বা ট্যাবলেট।

ঈদ স্বাস্থ্য-সাত
ঈদের সময় গন্তব্যে যাওয়া আসার সময় ছোট খাটো দুর্ঘটনা, কেটে যাওয়া, পুড়ে যাবার মত সমস্যাও হতে পারে। তাই গন্তব্যে যাওয়ার সময় একটা ছোট ফার্স্ট এইড বক্স বা প্রাথমিক চিকিত্সার কিছু সরঞ্জাম, উপাদান সঙ্গে রাখতে পারেন। যেমন: গজ, ব্যান্ডেজ, তুলা, এন্টিসেপটিক লোশন, ক্রিম, বমি বন্রে ট্যাবলেট ইত্যাদি। যাদের বুকজ্বালা-পোড়া হয় এবং বুকের ব্যথা আছে অথবা যাদের হার্টের সমস্যা, ডায়াবেটিস ও ব্লাড প্রেসার আছে তারা প্রয়োজনীয় ওষুধ সঙ্গে নিতে ভুলবেনা

লেখক :
লেখক: ডা: মোড়ল নজরুল ইসলাম
চুলপড়া, চর্মরোগ ও এলার্জি এবং
যৌন সমস্যা বিশেষজ্ঞ
লেজার এন্ড কসমেটিক সার্জন
বাংলাদেশ লেজার স্কিন সেন্টার
বাড়ী-৩৯ (আম্বালা কমপ্লেক্স)
রোড-২ ধানমন্ডি, ঢাকা


Source: http://new.ittefaq.com.bd/news/view/158855/2012-11-01/24