Daffodil International University

Health Tips => Health Tips => Topic started by: Badshah Mamun on November 01, 2012, 02:53:17 PM

Title: লাল মাংসের ভালমন্দ
Post by: Badshah Mamun on November 01, 2012, 02:53:17 PM
লাল মাংসের ভালমন্দ
(http://new.ittefaq.com.bd/uploads/news_image/2012-10-19_1350660116.jpg)

গোশত প্রাণীজ প্রোটিন বা আমিষ। খাদ্য মূল্যের দিক থেকে উদ্ভিদ প্রোটিনের তুলনায় উন্নতর। গোশত সুস্বাদুও বটে। এতে সমস্ত এমাইনো এসিড বিদ্যমান। এছাড়া আছে লৌহ, ফসফরাস, ভিটামিন বি১ ও ভিটামিন বি২। গোশতের চর্বি বেশির ভাগ থাকে বাহিরের অংশে। তবে খাসীর গোশতের পরতে পরতে চর্বি বিদ্যমান। সেজন্য খাসীর গোস্তের চর্বি ছাড়ানো মুশকিল হয়ে পড়ে। কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেশি থাকলেও গরু ও খাসীর কলিজায় লৌহের পরিমাণও বেশি থাকে। এছাড়া মগজে কোলেস্টেরলের পরিমাণ থাকে ১০০%। দেহে প্রোটিনের ঘাটতি পূরণের জন্য এবং কৃশকায় লোকদের ওজন বাড়ানোর জন্য  গোসত প্রয়োজন। দেহের ক্ষত, পোড়া ঘা সারানোর জন্য জিঙ্ক প্রয়োজন। এই জিঙ্ক পাওয়া যাবে গোশত থেকে। এই কারণে নিরামিষ ভোগীদের খাবারে জিঙ্কের অভাব হয়ে থাকে। আবার খেলোয়াড়দের খেলাধূলা করার সময় প্রচুর ঘাম হয়। ফলে শরীর থেকে বেশ জিঙ্ক বের হয়ে যায়। এ কারণে তাদের খাবারে গোসতের পরিমাণ বাড়ালে এর অভাব অনেকটা পূরণ হয়। গোশতে অবস্থানকারী রোগজীবানু দেহে বিষ উত্পন্ন করে। যা ভক্ষণের ফলে রোগের সৃষ্টি হয়। এর জন্য প্রয়োজন রোগ জীবানুমুক্ত গোসত ভক্ষণ করা। রোগ জীবানু দ্বারা গোসত বিষাক্ত হওয়ার অন্যতম কারণ হলো রোগাক্রান্ত পশু জবাই করা। তাই আসছে ঈদ উপলক্ষে যারা পশু কোরবানী দিবেন তারা সেদিকে অবশ্যই লক্ষ্য রাখবেন। আবার সংরক্ষণের অজ্ঞতাও গোস্তকে দূষিত করে।

যদি রান্না করা গোসত সংরক্ষণ করতে ইচ্ছা থাকে তাহলে তাড়াতাড়ি ঠান্ডা করে ফ্রিজে রেখে দেয়াই উত্তম, কারণ গোসতের মধ্যে সহজেই ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করতে পারে। টিনিয়া সেলিনাস নামক প্যারাসাইট রেড মিটে থাকে। এটা দেহে বিশেষ এক ধরণের টিবির জন্ম দেয়। এ জাতীয় জীবানু অন্ত্র, পাকস্থলী,

যকৃত প্রভৃতি জায়গায় প্রবেশ করে আমাদের অসুস্থ করে তোলে। অধিক পরিমাণ অর্ধসিদ্ধ গোসতই এ ধরণের রোগের বিস্তার ঘটায়। গোসতে ট্রাইসেরাইড, কোলেস্টেরল ও পিউরিনের পরিমাণ বেশি থাকে বলে হূদরোগ, বাত, উচ্চ রক্তচাপ এর রোগীদের কম খাওয়া বা পরিহার করা উচিত। আবার লিভার , গলব্লাডার ও প্যানক্রিয়াসের অসুখে প্রাণীজ চর্বি বাদ দেয়াই ভালো। তাই গোসতের সংরক্ষণের সময় মনে রাখতে হবে যাতে এর স্বাভাকি স্বাদ ও গন্ধ বজায় থাকে। টুকরা বড় করলে খাদ্যমূল্যের অপচয় কম হয়। তাপে থাকমিন নষ্ট হয় ৩০% আবার রাইয়োফ্লভিন নষ্ট হয় ২০%। এদিকে অস্বাস্থ্যকর উপায়ে রান্না করা  গোসত থেকে ফিতাকৃমি হয়। এর ফলে পেট ব্যথা, খিঁচুনী, মাথা ধরা, পেট খারাপ ও জ্বর হতে পারে।  দেখা যায় খাদ্য হিসেবে গোসতের স্বাস্থ্যকর ও অস্বাস্থ্যকর দু’টি দিকই রয়েছে। এই দু’দিক বিবেচনা  করেই গোসত খাওয়া উচিত।

লেখক:
আখতারুন নাহার আলো
প্রধান পুষ্টি কর্মকতা, বারডেম, ঢাকা