Daffodil International University
Religion & Belief (Alor Pothay) => Islam => Allah: My belief => Topic started by: arefin on January 25, 2013, 06:52:55 PM
-
ধর্ষণ’ বেশ কিছু দিন ধরে আমাদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। যদিও আমাদের এই সমাজ কখনই এর কলঙ্কমুক্ত ছিল না, তবে দিল্লির ঘটনার পর আমাদের দেশেও ঘটে যাওয়া কিছু পাশবিকতার কারণে আমরা অনেকটা নড়েচড়ে বসেছি। নর-নারীর সহ অবস্থানে সমাজ যেখানে এগিয়ে যাওয়ার কথা সেখানে ধর্ষণের মতো কিছু অপরাধের কারণে পুরুষের ওপর তৈরি হচ্ছে নারী মনে এক ধরনের ঘৃণা- যা কিনা পুরুষ বিদ্বেষেও রূপ নিচ্ছে কিছু কিছু ক্ষেত্রে।
পর পর এমন কিছু অঘটন ঘটে যাওয়ার পর অনেকেই আবার খুঁজে ফিরেছেন কিছু সমাধান, যাতে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা আর না ঘটে, অনেকে আবার নিজের মতামত তুলে ধরেছেন ধর্ষকের শাস্তি কিভাবে হওয়া উচিত সে সম্পর্কে।
মূল কথায় আসি। ধর্ষণের সঙ্গা আমরা সবাই জানি। সহজ কথায়-ধর্ষণ বলতে এক চরম পাশবিক ও বিকৃত যৌন নির্যাতনকে বোঝায়। যা একই সঙ্গে অশ্লীলতা, বিকৃত মানষিকতা ও কুশিক্ষার ফলাফল হিসেবেই আমরা দেখে থাকি।
আর সমাজ থেকে এই অশ্লীলতাপূর্ণ অমানবিক নির্যাতন নির্মূল করা শুধুমাত্র আইন করে সম্ভব নয়, দরকার মানুষের ধর্মীয় মূল্যবোধের বিকাশ। নৈতিকতার অবক্ষয়ের কারণে সমাজ আজ যে অভিশাপে ভুগছে তা থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের ইসলামের দারস্থ হতেই হয়।
ইসলামে রয়েছে নারীর মর্যাদা ও অধিকার রক্ষায় সুনির্দিষ্ট নীতিমালা। শুধু তাই-ই নয়, একজন পুরুষ একজন নারীর দিকে কোন দৃষ্টিতে তাকাবে সে কথাও পবিত্র কুরআনে আলোচিত হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘মুমিন পুরুষদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে ও তাদের লজ্জাস্থানের হিফাজত করে।’ (সূরা : নূর-৩০)
পরের আয়াতে একই ভাবে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা নারীদেরও এভাবে সতর্ক করে দিয়েছেন, ‘মুমিন নারীদের বলুন, তারা যেন দৃষ্টিকে সংযত করে ও তাদের লজ্জাস্থানের হিফাজত করে।’ (সূরা : নূর-৩১)
সমাজে এই ধরনের ন্যাক্কারজনক কাজ এমনি এমনি ঘটে না। পেছনে অবশ্যই কোনো কারণ থাকে। আর কারণ হিসেবে আমরা নৈতিকতার অবক্ষয়কেই দায়ী করি যা কিনা বিভিন্নভাবে ঘটে। আমাদের সমাজ তো মানুষের পশুত্বকে জাগিয়ে তোলার উপাদানে পরিপূর্ণ। বিজ্ঞাপন থেকে শুরু করে নানা ক্ষেত্রে নারীর স্বল্প বসন আর যাই হোক আমাদের তরুণ সমাজের কাছে কোনো শুভ ইঙ্গিত পৌঁছায় না। এই অশ্লীলতার ব্যাপারে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা সতর্ক করে বলেছেন ‘যারা মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতা কামনা করে, তাদের জন্য আছে দুনিয়া ও আখিরাতে কঠিন শাস্তি।’ (সূরা নূর: আয়াত ১৯)
তবে পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরও সতর্ক হতে হবে। এ বিষয়ে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা সতর্ক করে বলেছেন, ‘মুমিন নারীরা যেন সাধারণত যা প্রকাশ থাকে তা ব্যতীত তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে, তাদের গলা এবং বুক যেন মাথার কাপড় দ্বারা আবৃত করে।’ (সূরা নূর : ৩১)
আল্লাহ আরও বলেছেন, ‘জাহিলিয়া যুগের মতো সাজসজ্জা করে রাস্তায় বের হয়ো না।’ (সূরা : আহজাব-৩৩)
তবে এর পরেও যদি কেউ নির্যাতিত হয় তাহলে তার কোনো দায়ভার নাই। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, ‘যে তাদের ব্যভিচারে বাধ্য করে তাহলে তাদের জবরদস্তির পর আল্লাহ তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সূরা নূর : ৩৩)
ইসলামে ধর্ষকের কঠিন শাস্তির বিধান রয়েছে।
আমরা একটি সুন্দর বাসযোগ্য সমাজ চাই, যেখানে কোনো মানুষকে আর নির্যাতিত হতে হবে না, আর সেই লক্ষ্যে পৌঁছার জন্য আমাদের সবাইকে ন্যায় নীতির ভিত্তিতে এক সঙ্গে কাজ করে যেতে হবে, সব অপরাধের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।