Daffodil International University
Faculty of Humanities and Social Science => Journalism & Mass Communication => Topic started by: Md. Khairul Bashar on January 30, 2013, 10:15:21 AM
-
কাজ তো থাকবেই, তবু দাম্পত্য জীবনে স্বামী-স্ত্রীর পরস্পরকে সময় দেওয়া জরুরি। আধুনিক জীবনে ‘কোয়ালিটি টাইম’-এর কথা উচ্চারিত হচ্ছে বারবার। অর্থাৎ, কতটা সময় দিলাম, তার চেয়েও বড় কীভাবে সময় দিলাম...
ব্যস্ত জীবন। ব্যস্ত দিন। স্বামী-স্ত্রী দুজনরেই দম ফেলার অবকাশ নেই। সকালে ঘুম থেকে উঠেই দুজন দুদিকে। স্বামী তো সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অফিস নিয়েই ব্যস্ত। ওদিকে ভোরে সন্তানদের স্কুলের জন্য তৈরি করে দিয়ে স্ত্রীও অফিসমুখী। শুধু কর্মজীবী স্ত্রীই নন, গৃহিণীর কাজের পরিমাণও কোনো অংশে কম নয়। ভোর থেকে শুরু হয় তাঁর কর্মযজ্ঞ। এই ব্যস্ততার মধ্যে কখন যে স্বামী-স্ত্রী পরস্পর থেকে খানিকটা দূরে সরে গেছেন, টেরও পাননি। দিনের পর দিন একসঙ্গে থাকলেও শেষ কবে খুনসুটিতে মেতেছিলেন, মনে করতে পারছেন না। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দাম্পত্য জীবনে কোয়ালিটি টাইম বা গুণগত সময়ের খুব প্রয়োজন। তাহলে অনেক ব্যস্ততার মধ্যে পুরোনো সেই দিনের মতো এখনো ভালোবাসার রেশ থাকে সম্পর্কে। ১০ ঘণ্টা একসঙ্গে থাকার চেয়ে এক ঘণ্টার গুণগত সময় অনেক বেশি কার্যকর সম্পর্কের বুনটে।
কাজের বাইরে একান্তে
সারা সপ্তাহেই ব্যস্ততা। এর মধ্যেও দুজন দুজনের জন্য খানিকটা সময় রাখতেই পারেন। অফিস থেকে ফেরার পথে স্বামী-স্ত্রী কোনো কফি শপে গিয়ে কফিতে চুমুক দিতে দিতে কিছু মুহূর্ত কাটাতে পারেন। তখন সংসারের হালচাল, সন্তানের ভবিষ্যৎ কিংবা অফিসের সমস্যাগুলো ছাপিয়ে নিজেদের জন্য একটু সময় দিন। গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মোরশেদা বেগমের মতে, গুণগত সময় মানেই পরিবারের জন্য একান্ত কিছু সময়, যে সময়টুকুতে সব ধরনের সমস্যা দূরে সরিয়ে শুধু ভালোবাসার আবেশে থাকবেন দুজন। তখন পরস্পরের প্রতি অভিযোগগুলো তুলবেন না। তাহলে দাম্পত্য জীবনের অনেক সমস্যা মাথা চাড়া দেবে না।
এই দিন তোমার-আমার
মনে হতেই পারে, কেন প্রয়োজন কোয়ালিটি টাইম? এই তো বেশ ভালো আছি। সংসারের জন্যই তো কাজ করছি। স্বামী-সন্তানের দেখভাল করেই তো জীবন কাটিয়ে দিলাম। তবুও কোথায় যেন বেদনার সুর বাজে। অনেকে তো বুঝতেই পারেন না যে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। ফলাফলে কারও কারও ক্ষেত্রে দেখা যায় দাম্পত্যে তৃতীয় ব্যক্তির প্রবেশ কিংবা ভার্চুয়াল জগতের হাতছানি। এটি যেন না হয়। হাজারো কাজের মধ্যে একটি দিন বেছে নিন। সেই দিনে স্বামী-স্ত্রী বাইরে ঘুরতে যেতে পারেন। রাতে ক্যান্ডেল লাইট ডিনার করতে পারেন। অল্প আয়োজনে রিকশায়ও আইসক্রিম খেতে খেতে গল্প করতে পারেন। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের হেড অব করপোরেট অ্যাফেয়ার বিটপী দাশ সব সময় চেষ্টা করেন পরিবারের সঙ্গে কোয়ালিটি সময় কাটাতে। ছুটির দিনে কোথাও বেড়াতে না গেলে স্বামী-সন্তানের সঙ্গে বাড়িতে বসে সিনেমা দেখেন। বন্ধুদের বাড়িতে নিমন্ত্রণ করেন। তিনি বলেন, ‘কাজের বাইরে আসলে পুরো সময়টা আমার স্বামী-সন্তানের জন্য বরাদ্দ। সন্ধ্যার চা এবং রাতের খাবার সব সময় স্বামীর সঙ্গে খাওয়ার চেষ্টা করি। এই সময়টুকু না দিলে পারিবারিক বন্ধন মজবুত থাকে না।’
এগিয়ে আসতে হবে স্বামীকেও
শুধু স্ত্রী একাই কোয়ালিটি টাইম নিয়ে ভাববেন, তা নয়। পারস্পরিক সম্পর্কের জন্য দুজনেরই সমানভাবে এগিয়ে আসতে হবে, বিশেষ করে স্বামীদের। তাঁরা অনেক সময় মনে করেন, সব দায়িত্ব শুধু স্ত্রীদেরই। বিষয়টি তেমন হওয়া উচিত নয়। কেউ কেউ ভাবেন, দামি উপহার কিংবা কেনাকাটার টাকা দিয়ে দিলেই দায়িত্ব শেষ; বরং স্ত্রীকে হঠাৎ তাঁর প্রিয় কোনো ফুল, বই বা ছোট্ট কিছু দিয়ে অবাক করে দিতে পারেন। ব্যস্ততার মধ্যেও যে তাঁকে মনে রেখেছেন, এতেই স্ত্রী খুশি হবেন। কাজ তো থাকবেই, তবুও অফিস থেকে ফিরে একসঙ্গে এক কাপ চা খেলে ক্ষতি কী?
প্রাধান্য দিন সঙ্গীর পছন্দকে
সবচেয়ে প্রাধান্য দিতে হবে সঙ্গীর ছোট ছোট পছন্দকে। খুব সূক্ষ্ম ভালো লাগাকে গুরুত্ব দিলে দাম্পত্য জীবন সুখকর হয়ে উঠবে। পারস্পরিক ভুল বোঝাঝুঝি বড় আকার ধারণ করে না, এমনটাই মনে করেন ব্র্যাক ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান তাহনিয়্যাত আহমেদ। সঙ্গীকে সব সময় বুঝিয়ে দিতে হবে, আপনার জীবনে তাঁর গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। পর্যাপ্ত সময় না দিলে তিনি একাকিত্ববোধে ভুগতে পারেন। পরিস্থিতি এমন হওয়ার আগেই দিনের একটি সময় সঙ্গীর জন্য বরাদ্দ রাখুন।
Source: http://www.prothom-alo.com/detail/date/2013-01-30/news/325068