Daffodil International University
Career Development Centre (CDC) => Job Satisfaction & Skills => Career Guidance => Be a Leader => Topic started by: Narayan on April 21, 2013, 02:31:04 PM
-
থ্রি ইডিয়টস চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে চেতন ভগতের উপন্যাস অবলম্বনে। চেতন ভগত সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় লেখক। জন্ম ভারতের নয়াদিল্লিতে, ১৯৭৪ সালের ২২ এপ্রিল। বই লেখার পাশাপাশি তরুণদের জন্য উৎসাহমূলক বক্তৃতা করেন তিনি। চেতন ভগত ২০০৮ সালের ২১ নভেম্বর দিল্লিতে হিন্দুস্তান টাইমস লিডারশিপ সামিটে এই বক্তৃতা দেন।
আমি নেতা নই। আমি একজন স্বপ্নচারী মানুষ যে ধৈর্যের সঙ্গে কাজ করে স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করতে জানে। আজ আমি বলতে এসেছি কীভাবে দেশের নাগরিক হিসেবে আমরা জাতির স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে পারি।
বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে আগে আমাদের নিজেদের অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলোর সমাধান করতে হবে। ভেবে দেখো, সবাই সুখী, ধনী আর সফল প্রতিবেশীর সঙ্গেই বন্ধুত্ব করতে চায়, তাই না? যে পরিবারে সব সময় দ্বন্দ্ব আর ঝগড়া লেগেই থাকে, তাদেরকে সবাই এড়িয়ে চলে। জাতির ক্ষেত্রেও ঠিক একই নীতি প্রযোজ্য। আমাদের মধ্যে অসংখ্য সমস্যা আর বিভেদ। তবে আজ আমাদের প্রশ্ন এটা নয় যে এই সমস্যার দায় কার। আমাদের প্রশ্ন, কীভাবে এই সমস্যার সমাধান করা হবে?
এমন দেশ গড়তে হবে যেখানে সবাই নিজের যোগ্যতা, উদ্যম আর পরিশ্রম দিয়ে উন্নতি করতে পারবে। যেখানে কেউ জিজ্ঞেস করবে না, তুমি কোথা থেকে এসেছ, সবাই জানতে চাইবে, তুমি কোথায় যচ্ছে। আমরা সবাই এমন দেশের স্বপ্ন দেখি।
এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে হলে অনেক কিছু করতে হবে এবং রাজনীতিবিদদের দোষ দিয়ে বসে থাকলে চলবে না। আমি মনে করি, তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আমাদের চিন্তাধারা অবশ্যই বদলাতে হবে, শুধু জনগণ নয়, নেতাদেরও একই কাজ করতে হবে। এগুলো হলো, ভেদাভেদের রাজনীতির বদলে ঐকমত্যের রাজনীতির প্রচলন করা, আভিজাত্যের খোলস ছেড়ে জনতার কাতারে মিশে যাওয়া এবং ব্যবহারিক ইংরেজির চর্চা করা।
প্রথমে রাজনীতির কথায় আসি। আমি পাঁচ বছর ধরে ভারতের তরুণদের পর্যবেক্ষণ করছি। শুধু বড় শহরগুলোতে নয়, প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে তাদের গভীরভাবে বোঝার চেষ্টা করেছি। আমাদের জনসংখ্যার একটি বিশাল অংশজুড়ে আছেন এই তরুণেরা, এঁরাই প্রকৃত ভোটব্যাংক। কিন্তু রাজনীতিবিদদের ভাষণে তরুণদের স্বপ্ন প্রতিফলিত হয় না। নেতারা এখন পুরোনো আমলের দেশপ্রেমের বুলি কপচান আর ধর্ম-বর্ণ ইত্যাদি সংস্কারের মাহাত্ম্য প্রচার করেন। কিন্তু তরুণেরা আসলে কী চান? তাঁরা চান ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে, ভালো চাকরি করতে, নিজেদের সামনে আদর্শ হিসেবে অনুকরণীয় কাউকে পেতে। মেধাবী শিক্ষার্থীদের স্থান করে দেওয়ার মতো এত আসন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নেই, চাকরির ক্ষেত্রেও তাই। তরুণদের সবচেয়ে বড় একতা এখানেই যে তাঁরা সবাই দেশকে এগিয়ে নিতে চান, উন্নতি করতে চান। তরুণদের এই স্বপ্ন পূরণের জন্য অবকাঠামো প্রয়োজন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রয়োজন। এসব অর্জন করা মোটেই সহজ নয়, কিন্তু আমাদের মধ্যে একতা গড়ে তোলার জন্য এর কোনো বিকল্প নেই।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে একটি দৃঢ় কিন্তু নিরপেক্ষ কণ্ঠের খুব প্রয়োজন। কেউ যখন কোনো ছুতোয় আমাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে চাইবে, তখন সেই বিভেদ সৃষ্টিকারীর দলের কাউকেই জোর গলায় এর প্রতিবাদ করে তার অপচেষ্টা রুখে দিতে হবে। কেউ যদি বলে যারা মারাঠি নয়, তাদের আক্রমণ করা উচিত, তাহলে মারাঠিদের মধ্য থেকেই এই আগ্রাসী আহ্বানের প্রতিবাদ করতে হবে। জাতির বিবেকরূপী কণ্ঠস্বরই পারে সবাইকে দেশের স্বার্থে একত্র করতে। তরুণ প্রজন্মও তাই চায়।
দ্বিতীয়ত, আমাদের ঠুনকো আভিজাত্যের অহংকারে মাটিতে পা না ফেলার অভ্যাসটা একটু বদলাতে হবে। যখনই কেউ একটু সফল, একটু বেশি শিক্ষিত, ধনী, বিখ্যাত, মেধাবী কিংবা সংস্কৃতিমনা হয়ে ওঠে, সে নিজেকে খুব একটা কেউকেটা ভাবা শুরু করে। নিজেকে সাধারণ জনগণের কাছ থেকে আলাদা করে এমন লোকদের সঙ্গে মেলামেশা করা শুরু করে, যারা সাধারণ মানুষকে মানুষ বলেই মানতে নারাজ। বায়বীয় বুদ্বুদে বুদ্ধিজীবী পরিবেষ্টিত হয়ে থাকতে ভালো লাগে মানি, কিন্তু এই বুদ্ধির উপযোগিতা কোথায়?
টিভি খুললে শতকরা ৭০ ভাগ সময় দিল্লি, মুম্বাই কিংবা বেঙ্গালুরুর খবর দেখতে পাই, কিন্তু শুধু এই তিনটি শহর নিয়েই ভারত নয়। ভারতের শতকরা ৯০ ভাগ মানুষ এসব শহরে থাকে না। তাদের খবর যদি গণমাধ্যমে যথাযথভাবে প্রচার করা না হয়, দেশ কীভাবে এগিয়ে যাবে? আমি মানবিক দিক বিবেচনা করে এসব করতে বলছি না। দেশে ব্যবসা করতে হলেও জনগণকে জানতে হবে, তাদের চাহিদা বুঝতে হবে। এতে মানসম্মান নষ্ট হয় না। আমার বই রেলস্টেশনে, শহরের অলিগলিতে বিক্রি হয়। এতে তো পাঠকের চোখে আমি সস্তা হয়ে যাই না। শুধু মুম্বাইয়ের র্যাম্পে হেঁটে চলা মডেলরা কী পরেছে, তা নয়, ইন্দোর আর রায়পুরের রাস্তায় হেঁটে চলা মানুষেরা কী ভাবছে, তা-ও জানতে হবে। মেকি আভিজাত্য না দেখিয়ে খেটে খাওয়া মানুষের সঙ্গে মিশে যেতে হবে। শুধু অপসংস্কৃতির ধুয়ো তুলে গালিগালাজ করলেই দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না।
সবশেষে আমি বলতে চাই, ইংরেজি শেখার ব্যাপারে আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবই আর পরীক্ষার খাতায় সীমাবদ্ধ না রেখে, ইংরেজি শিক্ষা সর্বস্তরে ছড়িয়ে দিতে হবে। আমি একজন গ্রামের ছেলেকে হিন্দিতে জ্যামিতি বা পদার্থবিদ্যা শেখাতে পারি, কিন্তু সে যখন চাকরি খুঁজতে যাবে, তখন সেটা তার খুব একটা কাজে লাগবে না। কিন্তু ইংরেজি তাকে একটা ভালো চাকরি পেতে সাহায্য করবে। ইংরেজির প্রসার ঘটিয়ে আমরা যদি দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন করতে পারি, তাহলে আমরা সংস্কৃতি রক্ষার জন্য অনেক উদ্যোগ নিতে পারব, কিন্তু অসংখ্য মানুষকে বেকার কিংবা ক্ষুধার্ত রেখে আর যা-ই হোক, সংস্কৃতি রক্ষার কথা ভাবা যায় না।
এসব শুধু বক্তৃতা করার জন্য বলা নয়, আমাদের নিজেদের অবস্থান থেকেই আমরা কোনো না কোনোভাবে এই কাজগুলো করতে পারি। অন্তত বন্ধুদের আড্ডাতেই না-হয় সবাই কিছুক্ষণ এটা নিয়ে কথা বললেন। যদি আরও কোনো উপায়ে এই ধারণাগুলো দশজনের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারেন, তবে তা-ই করুন। আজ আমরা এখানে বসে চমৎকার বক্তৃতা শুনছি, এর অর্থ হচ্ছে আমাদের অনেক কিছু আছে, যা এ দেশের কোটি কোটি মানুষের নেই। দেশের কাছ থেকে তো অনেক কিছুই নিলাম, আসুন, এবার ভেবে দেখি, দেশকে আমরা কী দিতে পারি।
Courtesy: Daily Prothom-Alo
-
good inspiring post for the youth..:)
-
This is very encouraging expression for the general people and also a good tutorial for our political leader.
-
Thanks for Inspiring post
-
Inspirational writing to boost up the inherent potential.
-
The speech is so simple, still so pragmatic. He's a genius, no doubt!