Daffodil International University
Health Tips => Health Tips => Block => Topic started by: shilpi1 on June 06, 2013, 03:07:01 PM
-
সকালে ঘুম থেকে উঠে মুখ ব্রাশ ও মুখ ধোয়ার জন্য বেসিনের আয়নার সামনে দাড়িয়ে অবাক, একি! এক দিকে চোখ বন্ধ হচ্ছেনা, হা করতেই মুখ বেঁকে যাচ্ছে। মুখে পানি নিলে মুখ থেকে পড়ে যাচ্ছে, গাল ফুলাতে পারছেন না, কপাল বা ভ্রু কুচকাতে পারছেন না, কি হলো? নিশ্চই ঘাবড়ে গেলেন।
ঘাবড়ানোর কিছুই নেই। এরকম সমস্যায় যদি কেউ পড়েন তবে বুঝতে হবে আপনার মুখের নার্ভে এমন কোনো সমস্যা হয়েছে যার ফলে আপনার মুখের মাংস পেশী তার স্বাভাবিক কাজ কর্মের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় ফেসিয়াল বা বেল্স পলসি বলে। এটি আবার মুখ অবশ রোগ নামেও পরিচিত।
মানুষের মুখ মন্ডল এক বিশেষ ধরনের মাংস পেশী দ্বারা তৈরি। যার সাহায্যে মানুষ মুখের মাংস পেশীর সংকোচন ও প্রসারণ দ্বারা মনের ভাব প্রকাশ করতে পারে। আর এ জন্য একটি শিল্পের সৃষ্টি হয়েছে যার নাম মুখাভিনয় শিল্প। মুখ মন্ডলে মানুষের সৌন্দর্য ও দৈনন্দিন কাজের সুবিধার জন্য বিভিন্ন প্রয়োজনীয় অঙ্গ যেমন- মুখ, নাক, চোখ, কপাল, কান ইত্যাদি স্থাপন করেছেন। এই অঙ্গের সাহায্যে মানুষ তার পরিচিতসহ খাওয়া দাওয়া, কথা বলা, শ্বাস গ্রহণ করা, দেখা, শোনার মত গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পন্ন করে থাকেন।
এসব কাজ সঠিকভাবে সম্পাদনের জন্য মুখে কিছু সংখ্যক নির্দিষ্ট মাংস পেশী স্থাপন করা হয়েছে। ওই সব মাংস পেশীকে আদেশ নির্দেশ প্রদানের জন্য মগজ থেকে কানের পাশ দিয়ে নেমে সপ্তম ক্রেনিয়াল বা ফেসিয়াল নার্ভ ৫টি ভাগে বিভক্ত হয়ে মুখমন্ডলে বিভিন্ন মাংস পেশীকে সচল রাখে। কোনো কারণে উক্ত মস্তিকের ক্রেনিয়েল বা ফেসিয়াল নার্ভে প্রদাহ, প্রতিবন্ধকতা দেখা দেয়। যদিও আঘাত পেলে নার্ভ তার স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।
যদিও ফেসিয়াল পলিসি এর সঠিক কারণ নির্ণয় অনেক ক্ষেত্রেই কঠিন। তবে ফেসিয়াল নার্ভের- ভাইরাস আক্রমণ, অতিরিক্ত ঠান্ডা আঘাত, ষ্ট্রোক, এসব এর কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা যায়।
এবার চলুন জেনে নেই মুখ মন্ডলে স্বাভাবিক কাজকর্মের কি কি প্রধান মাংস পেশী এবং তার কি কাজ :
১। অক্সিপিটর ফ্রন্টালিস-ব্রু উপরে উঠায়
২। করোগেটর ও প্রসেসিস-ব্রু কুচকায়
৩। অরবিকুলার অকুলি চোখ বন্ধ করে
৪। জাইগো মেট্রিক- মেজর ও মাইন (উপরের ঠোট সহ মুখের কোনা উপরে উঠায়)
৫। বাক্সিনেটর- গাল ফুলায়, চুষতে সহায়তা করে।
হঠাৎ করেই এ রোগে যে কেউ আক্রান্ত হতে পারেন। আক্রান্ত হওয়ার আগে অনেক সময় মাথা ব্যথাসহ আক্রান্ত পাশের কানের গোড়ায় ব্যথা হতে পারে। এরপর হঠাৎ করেই আক্রান্ত পাশের চোখ বন্ধ করতে, কথা বলতে, কপাল কুচকাতে বা উপরে তুলতে, থুথু ফেলতে, পানি পান করতে, খাবার দাবার চিবাতে অসুবিধাসহ মুখ এক দিকে বেকে যেতে পারে।
চিকিৎসাঃ
যেহেতু এটি স্নায়ুবিক সমস্যা সৃষ্ট মাংস পেশীর অবশতা তাই এর চিকিৎসার মুখ্য ভূমিকা হলো ফিজিওথেরাপি। এ রোগে আক্রান্ত হলে আপনি প্রথমে একজন নিউরো বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো প্রয়োজন বোধে স্টিরয়েড, ভিটামিন এবং তার পাশাপাশি ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞের শরনাপন্ন হয়ে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা নিতে হবে। ফিজিওথেরাপি চিকিৎসায় সাধারণত ইলেক্ট্রিক নার্ভ ইস্টিমুলেশনসহ পদ্ধতিগত চিকিৎসা ব্যায়াম ও ম্যাসেজ উপকারী।
এর জন্য যে ব্যায়াম করতে হবে:
১। জোড় করে চোখ মারার চেষ্টা করা।
২। শিশ বাজানোর চেষ্টা করা।
৩। ঠোঁট চেপে ধরে গাল ফুলানোর চেষ্টা করা।
৪। কপাল কুচাকানো।
৫। ভ্রু কুচকানো ইত্যাদি।
এছাড়াও শক্ত খাবার আক্রান্ত গালে খেতে হবে এবং অতিরিক্ত ঠান্ডা খাওয়া পরিহার করতে হবে।
এ সমস্ত রোগীর চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিশেষ ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ ফিজিওথেরাপি নিতে হয়। মনে রাখবেন ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা ফেসিয়াল প্যারালাইসিস রোগের একমাত্র এবং মূল চিকিৎসা।
-
Thanks for sharing the important information...
-
Very Sensitive Issue........