Daffodil International University
Career Development Centre (CDC) => Job Satisfaction & Skills => Career Guidance => Be a Leader => Topic started by: Narayan on June 18, 2013, 08:58:00 AM
-
বিপ্লবী এর্নেস্তো চে গুয়েভারার জন্ম ১৪ জুন ১৯২৮ আর্জেন্টিনায়। ১৯৬৭ সালের ৯ অক্টোবর বলিভিয়ায় তাঁকে আহত অবস্থায় আটক করে হত্যা করা হয়। কিউবা বিপ্লবের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ১৯৫৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি অব লাস ভিয়াসের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে চে এই ভাষণ দেন।
‘আজ আমাকে এখানে যে মর্যাদায় ভূষিত করা হলো, তা শুধু আমি বিনম্রভাবে এ দেশের জনগণের পক্ষ থেকে গ্রহণ করতে পারি, ব্যক্তি হিসেবে নয়। ব্যক্তি এর্নেস্তো গুয়েভারা কীভাবে স্কুল অব এডুকেশনের পক্ষ থেকে সম্মানসূচক ডক্টর উপাধি লাভ করতে পারে যেখানে তাঁর শিক্ষার পুরোটাই এসেছে গেরিলা ক্যাম্প, তিক্ত বাদানুবাদ আর সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে? আমি বিশ্বাস করি, আমার শিক্ষাকে ক্যাপ আর গাউনে রূপান্তর করা যায় না। তাই আমি আজকেও তোমাদের সামনে আমাদের সেনাবাহিনীর সম্মানে সামরিক পোশাকে এসেছি। এই উপাধি গ্রহণের শুভক্ষণে আমি আমাদের সেনাবাহিনীকেও পূর্ণ গৌরবে উপস্থাপন করতে চাই। আমি একবার এই ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা নিয়ে আমার ভাবনাকে তাদের সামনে তুলে ধরব। হাজারো ঘটনা আর কাজের চাপে এত দিন আমি সে কথা রাখতে পারিনি। আজ, আমি সে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করব।
এই নতুন কিউবায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ভূমিকা কী হওয়া উচিত? আমি বলব, বিশ্ববিদ্যালয়কে ভেঙেচুরে ভিন্ন ধাঁচে গড়ে তোলার সময় এসেছে। কালোদের, মিশ্র বর্ণের, শ্রমিকদের, চাষিদের জন্য এ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুয়ার খুলে দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় হবে গণমানুষের। মনে রাখতে হবে, এই বিশ্ববিদ্যালয় কারও পৈতৃক সম্পত্তি নয়, এটি কিউবার জনগণের সম্পত্তি। বিজয় হলে কেবল জনগণেরই হবে। জনগণ এখন জানে যে তারা অপ্রতিরোধ্য। আজ তারা আশায় বুক বেঁধে এদিকে তাকিয়ে আছে, বিশ্ববিদ্যালয়কেই আভিজাত্যের মুখোশ খুলে তাদের হাসিমুখে অভ্যর্থনা জানাতে হবে। হয় আপামর জনসাধারণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের দুয়ার খুলে দাও, নয়তো শুধু দুয়ার খোলো; জনগণই বিশ্ববিদ্যালয়কে নিজেদের মতো করে গড়ে নেবে।
আমাকে যদি জনগণ ও বিপ্লবী সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি হিসেবে এবং অবশ্যই তোমাদের অধ্যাপক হয়ে কিছু উপদেশ দিতে হয়, তবে আমি বলব, মানুষের কাছে পৌঁছাতে হলে মানুষের সঙ্গে মিশে যেতে হবে। তোমাদের জানতে হবে জনগণ কী চায়, তাদের কী প্রয়োজন, তারা কেমন আছে, কী ভাবছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখো, কতজন শ্রমিক, কৃষক, দিনে আট ঘণ্টা মাথার ঘাম পায়ে ফেলা মানুষেরা এখানে পা ফেলতে পেরেছে। তারপর নিজেকে প্রশ্ন করো, কিউবার শাসনব্যবস্থায় জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে কি না। এবার একটু চিন্তা করো, যে সরকার জনগণের ইচ্ছাকে তার কাজে পরিণত করছে, সেই সরকার এই বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে কী করছে? দুর্ভাগ্যজনকভাবে গোটা কিউবার জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী সরকারেরও বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তেমন কোনো সংযোগ নেই। দেশের সাধারণ মানুষের ইচ্ছা, আশা, আকাঙ্ক্ষা মুক্তভাবে এখানে পৌঁছাতে পারে না।
আমি মাটির সন্তান, দেশের মানুষেরাই আমাকে গড়ে তুলেছে। আমি বিশ্বাস করি, এই মানুষদের শিক্ষার সুফল ভোগ করার অধিকার আছে। শিক্ষাব্যবস্থাকে ঘিরে গড়ে তোলা প্রাচীর ভেঙে ফেলতে হবে। শিক্ষা কোনো বিলাসদ্রব্য নয় যে শুধু যাদের বাবার পকেটে টাকা আছে, তারাই শিক্ষিত হবে। কিউবার ঘরে ঘরে প্রতিদিন রুটির সঙ্গে শিক্ষাকেও পৌঁছে দিতে হবে। আমি এখনো গর্ব করে বলতে পারছি না যে এখানকার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা হাজার হাজার শ্রমিক ও কৃষকের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের দরজা খুলে দিয়েছে। আমাদের এখনো অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হবে। একজন বিপ্লবী হিসেবে আমি তোমাদের সবাইকে বিনয়ের সঙ্গে বলতে চাই যে শিক্ষার ওপর আর কারও একচ্ছত্র অধিকার নেই, এই ক্যাম্পাসও কোনো নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর জন্য নয়। কিউবার প্রতিটি নাগরিকের এখানে সমান অধিকার আছে। হয় তাদের অধিকার তাদের ফিরিয়ে দিতে হবে, অথবা তারা নিজেরাই তা আদায় করে নেবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে আমার জীবনের মোড় ঘুরে গিয়েছিল; মধ্যবিত্ত শ্রেণীর বাসিন্দা, সেদিনের সেই যুবক ডাক্তার এর্নেস্তো একসময় তোমাদের মতোই স্বপ্ন দেখত। সংগ্রাম আমাকে বদলে দিয়েছে, আমি বিপ্লবের গুরুত্ব বুঝতে পেরেছি, জনগণের কাতারে এসে দাঁড়িয়েছি। আমি আশা করি, তোমরা যারা আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের চালিকাশক্তি, তারা একে জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেবে। এটি কিন্তু তোমাদের জন্য কোনো হুমকি বা দুঃশ্চিন্তার কারণ নয়। আমি শুধু বলতে চাই যে ইউনিভার্সিটি অব লাস ভিয়াসের শিক্ষার্থীরা যদি জনগণের ও জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী বিপ্লবী সরকারের সঙ্গে একাত্ম হয়ে যায়, তবে সেটি হবে কিউবার সাফল্যের টুপিতে আরেকটি পালক যোগ করবে।
আমার বর্তমান সহকর্মী, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের উদ্দেশে আমি বলতে চাই, পুরোনোকে ঝেড়ে ফেলুন। সমাজের কালো, মিশ্রবর্ণ, শ্রমিক ও কৃষকের কাতারে নিজেদের শামিল করুন। দেশের মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়ান। তাদের সঙ্গেই আপনাদের বাঁচতে হবে, একই বাতাসে নিঃশ্বাস নিতে হবে। এক ও অভিন্ন কিউবাকে অনুভব করার চেষ্টা করুন। আমরা সবাই মিলে যখন এই কাজগুলো করব, তাতে কারও অসম্মান হবে না। কেউ ছোট হব না, হেরে যাব না। দেশ হিসেবে কিউবা দৃঢ় পদক্ষেপে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। সেদিন এই প্রফেসর অব এডুকেশন, ডাক্তার, ব্যাংক, প্রেসিডেন্ট, কমান্ডার—যে কিনা আপনাদের এখন বিদায় জানাচ্ছে, তাকে ভুলে গেলেও আমার দুঃখ থাকবে না।
Courtesy: Prothom Alo
-
Nice post.Thanks Sir for the sharing.
-
Nice.. thanks for shearing....
-
remarkable personality in the revolution era of the world
-
A legend.. it feels great to know a little more about him rather than seeing him on all the polo-shirts as a commercial commodity.