Daffodil International University

Health Tips => Health Tips => Topic started by: shilpi1 on June 20, 2013, 12:53:33 PM

Title: বেল্স পলসি বা মুখ বেকে যাওয়া
Post by: shilpi1 on June 20, 2013, 12:53:33 PM
 সকালে ঘুম থেকে উঠে মুখ ব্রাশ ও মুখ ধোয়ার জন্য বেসিনের আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে অবাক, একি! এক দিকে চোখ বন্ধ হচ্ছেনা, হা করতেই মুখ বেঁকে যাচ্ছে, মুখে পানি নিলে মুখ থেকে পড়ে যাচ্ছে, গাল ফুলাতে পারছেন না, কপাল বা ভ্রু কুচকাতে পারছেন না, কি হলো? নিশ্চই ঘাবড়ে গেছেন।

 

ঘাবড়ানোর কিছুই নেই। এরকম সমস্যাই যদি কেউ পড়েন তবে বুঝতে হবে আপনার মুখের নার্ভে এমন কোন সমস্যা হয়েছে যার ফলে আপনার মুখের মাংশ পেশী তার স্বাভাবিক কাজ কর্মের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। ডাক্তারী ভাষায় একে ফেসিয়াল বা বেল্স পলসি বলে আমাদের দেশে যা মুখ অবশ রোগ নামে খ্যাত।

 

মানুষের মুখমণ্ডল এক বিশেষ ধরনের মাংশ পেশী দিয়ে তৈরি যার সাহায্যে মানুষ মুখের মাংশ পেশীর সংকোচন ও প্রশারণ দ্বারা কথা না বলেও মনের ভাব প্রকাশ করতে পারে, আর এ জন্য একটি শিল্পের সৃষ্টি হয়েছে যার নাম মুখাভিনয় শিল্প। মুখমণ্ডলে মানুষের সৌন্দর্য ও দৈনন্দিন কাজের সুবিধার জন্য বিভিন্ন প্রয়োজনীয় অঙ্গ যেমন- মুখ, নাক, চোখ, কপাল, কান ইত্যাদি রয়েছে। এসব অঙ্গের সাহায্যে মানুষ খাওয়া দাওয়া, কথা বলা, শ্বাস গ্রহণ করা, দেখা, শোনার মতো গুরুত্বপূন্ন কাজ সম্পন্ন করে।

 

এসব কাজ সঠিক ভাবে সম্পাদনের জন্য মুখে কিছু সংখ্যক নির্দিষ্ট মাংশ পেশী স্থাপন করা হয়েছে এবং ওই সব মাংশ পেশীকে আদেশ নির্দেশ প্রদানের জন্য মগজ থেকে কানের পাশ দিয়ে নেমে সপ্তম ক্রেনিয়াল বা ফেসিয়াল নার্ভ পাঁচটি ভাগে বিভক্ত হয়ে মুখমণ্ডলে বিভিন্ন মাংশ পেশীকে সচল রাখে। কোনো কারণ বশত মস্তিকের ক্রেনিয়েল বা ফেসিয়াল নার্ভে প্রদাহ, প্রতিবন্ধকতা বা আঘাত পেলে নার্ভ তার স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। যদিও ফেসিয়াল পলিসির সঠিক কারণ নির্নয় অনেক ক্ষেত্রেই কঠিন। তবে ফেসিয়াল নার্ভের- ভাইরাস আক্রমন, অতিরিক্ত ঠাণ্ডার প্রকোপ, ষ্ট্রোক, এসবের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা যায়।

 

এবার চলুন জেনে নেই মুখমণ্ডলে স্বাভাবিক কাজ কর্মের কী কী প্রধান মাংশ পেশী রয়েছে এবং তার কাজ কি?

 

১।     অক্সিপিটর ফ্রন্টালিস- ব্রু উপরে উঠায়

২।     করোগেটর ও প্রসেসিস- ব্রু কুচকায় ৩।     অরবিকুলার অকুলি- চোখ বন্ধ করে

৪।     জাইগো মেট্রিক- মেজর ও মাইন (উপরের ঠোটসহ               

         মুখের কোনা উপরে উঠায়)

৫।     বাক্সিনেটর- গাল ফুলায়, চুষতে সহায়তা করে।

 

হঠাৎ করেই এ রোগে যে কেউ আক্রান্ত হতে পারে। আক্রান্ত হওয়ার আগে অনেক সময় মাথা ব্যথাসহ আক্রান্ত পাশের কানের গোড়ায় ব্যাথা হতে পারে এবং এর পর হঠাৎ করেই আক্রান্ত পাশের চোখ বন্ধ করতে, কথা বলতে, কপাল কুচকাতে বা উপরে তুলতে, থুথু ফেলতে, পানি পান করতে, খাবার দাবার চিবাতে অসুবিধাসহ মুখ এক দিকে বেকে যেতে পারে।

 

চিকিৎসা : যেহেতু এটি স্নায়ুবিক সমস্যা সৃষ্ট মাংশ পেশীর অবশতা, তাই এর চিকিৎসার মুখ্য ভূমিকা হলো ফিজিওথেরাপি। এ রোগে আক্রান্ত হলে আপনাকে প্রথমে একজন নিউরো বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো প্রয়োজন বোধে স্টিরয়েড, ভিটামিন এবং তার পাশাপাশি ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞের শরনাপন্ন হয়ে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা নিতে হবে। ফিজিওথেরাপি চিকিৎসায় সাধারনত ইলেক্ট্রিক নার্ভ ইস্টিমুলেশনসহ পদ্ধতিগত চিকিৎসা ব্যায়াম ও ম্যাসেজ উপকারী।

 

ব্যায়ামগুলো যেমন:

 ১।    জোড় করে চোখ মারার চেষ্টা করা।

২।    শিশ বাজানোর চেষ্টা করা।

৩।    ঠোঁট চেপে ধরে গাল ফুলানোর চেষ্টা করা।

৪।    কপাল কুচাকানো।

৫।    ভ্রু কুচকানো ইত্যাদি। এছাড়াও শক্ত খাবার খেতে হবে এবং অতিরিক্ত ঠাণ্ডা খাওয়া বা লাগানো পরিহার করতে হবে।

এসব রোগীর চিকিৎসা ক্ষেত্রবিশেষ ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ ফিজিওথেরাপি নিতে হয়। মনে রাখবেন ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা ফেসিয়াল প্যারালাইসিস রোগের একমাত্র এবং মূল চিকিৎ