Daffodil International University

Health Tips => Health Tips => Teeth => Topic started by: Badshah Mamun on June 26, 2013, 10:22:30 AM

Title: Teeth
Post by: Badshah Mamun on June 26, 2013, 10:22:30 AM
দাঁতের মাড়িতে রক্ত


মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়া মুখের সাধারণ অসুখ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সমীক্ষায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের ৮০ শতাংশ মানুষই এ রোগে ভুগে থাকেন। জানালেন টুথপ্ল্যানেট চেম্বারের দন্তবিশেষজ্ঞ ইফফাত সাইফুল্লাহ খান বাঁধন।
   
তিনি আরও বলেন, “মুখের এই অসুস্থতার সঙ্গে অপরিচ্ছন্নতার বিশেষ যোগসূত্র রয়েছে।”

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানাচ্ছেন তিনি।

রক্ত পড়ার কারণ

নিয়মিত সঠিক পদ্ধতিতে দাঁত পরিষ্কার না করাই এ রোগের প্রধান কারণ। কেননা, অপরিচ্ছন্নতার কারণে দাঁতে জীবাণুর প্রলেপ পড়ে। আস্তে আস্তে এই জীবাণুর প্রলেপ খাদ্যকণা ও লালার সঙ্গে মিশে ক্যালকুলাস বা পাথরে পরিণত হয়।

অাঁকাবাঁকা ও উঁচুনিচু দাঁতের জন্যও অতি সহজে ময়লা জমে এই ধরনের অসুবিধা হতে পারে। প্রাথমিক অবস্থায় ব্রাশ বা মেসওয়াক করে এই জীবাণুর প্রলেপ দূর না করলে আস্তে আস্তে মাড়ির প্রদাহ শুরু হতে থাকে। মাড়ি ফুলে লাল হয়ে যায়, সামান্য আঘাতেই মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়ে।

এই অবস্থায় তেমন ব্যথা না হলেও দৈনন্দিন জীবনে খাওয়াদাওয়া, কথা বলা বা দাঁত ব্রাশ করা, এমনকি কলাজাতীয় নরম খাবার খাওয়ার সময়ও মাড়ি থেকে রক্ত পড়তে দেখা যায়।
রক্ত পড়াই এ রোগের প্রধান লক্ষণ। অবশ্য কোনো কোনো সময় মাড়িতে বিশেষ জীবাণুর আক্রমণ হলে রোগী তীব্র ব্যথা অনুভব করে। এ সময় চিকিৎসার অভাবে ব্যথা ক্রমেই বাড়তে থাকে।

মুখ ছাড়াও দেহগত কারণেও মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়তে পারে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়— রক্তশূন্যতা, হেমোফিলিয়া বা রক্তক্ষরণপ্রবণতা। এমনকি কিছু কিছু রক্তের ক্যানসারেও মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়তে পারে। তাছাড়া অপুষ্টিজনিত কারণ যেমন, ভিটামিন ‘সি’র অভাবে এবং গ্রন্থিরসের (হরমোন) বিশৃঙ্খলার কারণেও গর্ভাবস্থার সময় মাড়ি দিয়ে রক্তক্ষরণ হতে পারে। এ ক্ষেত্রে অবশ্য তেমন চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরই এর লক্ষণ দূর হয়ে যায়।

চিকিৎসা না করলে যা হতে পারে

খাবার খাওয়ার পর খাদ্যকণা দাঁতের আনাচেকানাচে জমে থাকে। পরে সেগুলো মুখের মধ্যে থাকা বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়ার সংস্পর্শে এসে দাঁতের উপর নরম সাদা পদার্থ হিসেবে জমে ওঠে, যাকে ‘ডেন্টাল প্লাক’ বলে।

এই সাদা আবরণটি আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পেয়ে দাঁত ও মাড়ির মাঝে শক্ত অবস্থান নেয়। সাধারণ অবস্থায় ব্রাশ বা মেসওয়াক করে এই প্লাক অপসারণ করা যায়। তবে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পরিষ্কার না করা হলে এই প্লাক পরিপক্ক ক্যালকুলাস বা পাথরে রূপ নেয়।

ক্যালকুলাসের ক্ষতিকর ব্যাক্টেরিয়া কিছু রাসায়ানিক নিঃসরণ করে। ফলে মাড়িতে প্রদাহ (Inflammation) হয়ে ফুলে যায় এবং রক্ত পড়া শুরু হয়। প্রথমে এই প্রদাহের মাত্রা কম থাকে বলে ব্যথা কম অনুভূত হয়। অযত্ন-অবহেলায় এটি পর্যায়ক্রমে মারাত্মক আকার ধারণ করে দাঁত ও আশপাশে কোষকলায় আক্রমণ ও ধ্বংস করে দাঁতের বিভিন্ন পয়েন্টে ‘পকেট’ তৈরি করে।

এভাবে ধীরে ধীরে মাড়ি ক্ষয় করে ফেলে। এমনকি দাঁত যার সাহায্যে চোয়ালে আটকে থাকে, সেই এলভিওলার অস্থিকেও ক্ষয় করে ফেলতে পারে। মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়ার পাশাপাশি আস্তে আস্তে দাঁত নড়ে যায়। এক সময় দাঁত পড়েও যেতে পারে।


(http://d30fl32nd2baj9.cloudfront.net/bangla-media/2013/06/26/bleeding-gums1.jpg/ALTERNATES/w300/Bleeding-Gums1.jpg)

প্রতিকার

যে কোনো রোগেরই চিকিৎসা করার আগে সেই রোগের সত্যিকার কারণ খুঁজে বের করতে হবে। অপরিচ্ছন্নতার জন্য মাড়ি আর দাঁতে জমে থাকা নরম ও কঠিন বস্তু, যথা জীবাণুর প্রলেপ ও খাদ্যকণা রোগী নিজেই পরিষ্কার করতে পারেন। তবে জীবাণুর প্রলেপ একবার শক্ত হয়ে পাথরে পরিণত হলে তা দন্তু চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পরিষ্কার করিয়ে নিতে হয়।

অাঁকাবাঁকা কিংবা উঁচুনিচু দাঁতের কারণে রক্ত পড়লে সে ক্ষেত্রে স্কেলিং করানোর সঙ্গে সঙ্গে অাঁকাবাঁকা দাঁতের চিকিৎসা ও অর্থোডেনটিস্টের সাহায্য নিতে হবে।
বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে দন্তচিকিৎসকদের পাথর তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়াকে ‘স্কেলিং’ বলা হয়। এটা অতি সূক্ষ্ম ও সময়সাপেক্ষ কাজ। সেই সঙ্গে যথেষ্ট ধৈর্য ও দক্ষতার প্রয়োজন।
স্কেলিং বা দাঁতের পাথর পরিষ্কার শুরু হওয়ার পরপরই রক্ত পড়া ও প্রদাহ কমে যায়। তবে দেহগত কোনো রোগের কারণে রক্ত পড়লে সে ক্ষেত্রে ওই রোগের প্রয়োজনীয় চিকিৎসাও একই সঙ্গে করাতে হয়।

মাড়ি জীবাণু দিয়ে আক্রান্ত হলে ‘স্কেলিং’ করার পরে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে হয়। অবশ্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অ্যান্টিবায়োটিক লাগে না।

ভিটামিন ‘সি’র অভাবে রক্ত পড়লে সে ক্ষেত্রে ‘স্কেলিং’ করার পর ভিটামিন ‘সি’-যুক্ত খাবার খেতে হবে।
সাধারণত মাড়ির রোগ নিরাময় কিংবা রক্ত পড়া বন্ধ করার জন্য শুধু ভিটামিন ‘সি’ খাওয়া সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। মনে রাখতে হবে, রোগী নিজে সঠিক পদ্ধতিতে দাঁত নিয়মিত পরিষ্কার না করলে কোনো ডাক্তারের পক্ষেই এ রোগের সাফল্যজনক চিকিৎসা করা সম্ভব নয়।

প্রতিরোধ

প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম। এই উক্তিটি জিনজিভাইটিস বা মাড়ি ফোলা রোগে সবচেয়ে বেশি প্রযোজ্য। কারণ ঠিকমতো দাঁত ও মুখের যত্ন নিলে এই রোগ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। এর জন্য প্রয়োজন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে দাঁত ব্রাশ করা, ফ্লস বা সুতা দিয়ে দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকা ময়লা পরিষ্কার করা এবং মেসওয়াক বা গাছের ডাল দিয়ে দাঁত মাজা।


 ব্রাশের নিয়ম
(ক) উপরের দাঁত নিচের দিকে এবং নিচের দাঁত উপরের দিকে ব্রাশ করা, উপরের এবং নিচের সব দাঁত বাইরের দিকে ব্রাশ করা।
(খ) উপরের এবং নিচের মাড়ির দাঁতের ভেতরকার অংশ পেছনের দিক দিয়ে ব্রাশ করা।
(গ) সামনে-উপরের এবং নিচের দাঁতের ভেতরকার অংশ উল্টোদিক দিয়ে ব্রাশ করা।
(ঘ) উপরের ও নিচের মাড়ির দাঁত এবং এর সঙ্গে যুক্ত সামনের দাঁতের যে অংশ দিয়ে আমরা কামড় দেই সে অংশটুকু ভালোভাবে ব্রাশ করা।
(ঙ) সঠিক সময়ে ব্রাশ করা উচিৎ। সঠিক পরিচর্যায় যেমন দাঁতের সৌন্দর্য বজায় থাকে, তেমনি দাঁতের স্বাস্থ্যও ভালো হয়। প্রতিদিন দুবার দাঁত ব্রাশ করা উচিত। রাতে খাওয়ার পর শোবার আগে একবার এবং সকালে নাশতা খাওয়ার পরে একবার। এই দুবার দাঁত ব্রাশ করা অত্যাবশ্যক।

প্রত্যেকবার দাঁত ব্রাশ করার সময় হাতের আঙুল দিয়ে মাড়ি ম্যাসাজ করতে ভুলবেন না। মাড়ি ম্যাসাজ করলে আঙুলের চাপে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়।

বেশিরভাগ মানুষই সকালে ঘুম থেকে উঠে দাঁত ব্রাশ করেন। এটা একেবারেই করবেন না। রাতে শোবার আগে যখন দাঁত ব্রাশ করা হয় তখনই মুখ পরিষ্কার হয়ে যায়।

আসলে দাঁত ব্রাশ করার কারণ হল, আমরা প্রত্যহ যা খাই তার থেকে অল্প অল্প খাদ্যকণা দাঁতের গায়ে ও ফাঁকে লেগে থাকে; এই খাদ্যকণাকে পরিষ্কার করার জন্য ব্রাশ করা হয়।
ভালো ব্রাশ ও পেস্ট নির্বাচন

নরম টুথব্রাশ দিয়ে ফ্লোরাইডযুক্ত টুথপেস্ট বা জেল দিয়ে দাঁত ব্রাশ করতে হবে। একই পেস্ট নিয়মিত ব্যবহার করা উচিত নয়। ব্রাশ করার পর তা ভালোভাবে ঢেকে রাখতে হবে যেন ধুলাবালি পোকামাকড় ব্রাশে না লাগে।

দাঁতে শিরশিরজনিত সমস্যা থাকলে মেডিকেটেড টুথপেস্ট ব্যবহার করা যায়।

মেসওয়াক বা দাঁতন

গবেষণায় দেখা গেছে যে ব্রাশের মতোই মেসওয়াক বা গাছের ডাল দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করলে খুবই ভালো ফল পাওয়া যায়। অনেকেই নিমগাছের ডাল দিয়ে দাঁত মাজেন।

ভুলভাবে ব্রাশ ব্যবহারে দাঁত ক্ষয়ের সম্ভাবনা থাকে। মেসওয়াক ব্যবহারে সে ভয় একেবারেই নেই। দাঁত ও মাড়ি সুস্থ রাখতে হলে দিনে অন্তত পাঁচবার মেসওয়াক ব্যবহার করতে হবে।
তাই একটু যত্ন নিলেই দাঁত দিয়ে রক্ত পড়ার সমস্যা আর থাকবে না।


Source: http://bangla.bdnews24.com/lifestyle/article640463.bdnews
Title: Re: Teeth
Post by: russellmitu on July 01, 2013, 04:10:41 PM
THANKS