Daffodil International University

Faculty of Allied Health Sciences => Public Health => Topic started by: Asif.Hossain on October 12, 2013, 03:19:36 PM

Title: অ্যালার্জি সমস্যায় করণীয়
Post by: Asif.Hossain on October 12, 2013, 03:19:36 PM
অ্যালার্জি সমস্যায় করণীয়
সচরাচর নির্দোষ বলে গণ্য কোনো জিনিসের কারণে যদি শরীরে রি-অ্যাকশন হয়, তবে তাকে অ্যালার্জি বলা হয়। যেসব দ্রব্য অ্যালার্জি সৃষ্টি করে তাকে বলা হয় অ্যালার্জেন বা অ্যান্টিজেন এবং এসব দ্রব্য দেহে প্রবেশের ফলে দেহের অভ্যন্তরে যে দ্রব্য সৃষ্টি হয় তাকে বলা হয় অ্যান্টিবডি। অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি পরস্পর মিলিত হলে যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় তাকে বলা হয় অ্যান্টিজেন-অ্যান্টিবডি বিক্রিয়া।
শীত আর বসন্তের সময় ধুলাবালি, কুয়াশা ও পরাগরেণুর কারণে অ্যালার্জির সমস্যা বেশি দেখা দিয়ে থাকে। এসব অ্যালার্জির সমস্যা নিয়েই আমরা আলোচনা করব।
অ্যালার্জিজনিত সর্দি : এর উপসর্গ হচ্ছে অনবরত হাঁচি, নাক চুলকানো, নাক দিয়ে পানি পড়া বা নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, কারও কারও চোখ দিয়েও পানি পড়ে এবং চোখ লাল হয়ে যায়।
সিজনাল অ্যালার্জিক রাইনাইটিস : ঘন ঘন হাঁচি, নাক দিয়ে পানি পড়া, নাসারন্ধ্র বন্ধ হয়ে যাওয়া। এ ছাড়া অন্য উপসর্গ, চোখ দিয়ে পানি পড়া ও চোখে তীব্র ব্যথা অনুভব করা।
অ্যাজমা বা হাঁপানি :এর উপসর্গ হচ্ছে কাশি, ঘন ঘন শ্বাসের সঙ্গে বাঁশির মতো শব্দ হওয়া বা বুকে চাপ চাপ লাগা। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে মাঝে মধ্যেই ঠাণ্ডা লাগা।
অ্যাকজিমা :অ্যাকজিমা বংশগত চর্মরোগ। যার ফলে ত্বক শুষ্ক হয়, চুলকায়, আঁশটে ও লালচে হয়। খোঁচানোর ফলে ত্বক পুরু হয় ও কখনও কখনও উঠে যায়। ফলে জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত ত্বক থেকে চুয়ে চুয়ে পানি পড়ে এবং দেখতে ব্রণ আক্রান্ত বলে মনে হয়। এটা সচরাচর বাচ্চাদের মুখে ও ঘাড়ে এবং হাত ও পায়ে বেশি দেখা যায়।
অ্যালার্জিক কনজাংটাইভাইটিস :চোখে চুলকানো, চোখ লাল হয়ে যাওয়া

প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা
রক্ত পরীক্ষা বিশেষত রক্তে ইয়োসিনোফিলের মাত্রা বেশি আছে কি-না তা দেখা।
সিরাম আইজিইর মাত্রা : সাধারণত অ্যালার্জি রোগীদের ক্ষেত্রে আইজিইর মাত্রা বেশি থাকে।
স্কিন প্রিক টেস্ট : এ পরীক্ষায় রোগীর চামড়ার ওপর বিভিন্ন অ্যালার্জেন দিয়ে পরীক্ষা করা হয় এবং এ পরীক্ষায় কোনো কোনো জিনিসে রোগীর অ্যালার্জি আছে, তা ধরা পড়ে।
প্যাঁচ টেস্ট : এ পরীক্ষা হয় রোগীর ত্বকের ওপর।
বুকের এক্স-রে : হাঁপানি রোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসা শুরু করার আগে অবশ্যই বুকের এক্স-রে করে দেওয়া দরকার যে, অন্য কোনো কারণে শ্বাসকষ্ট হচ্ছে কি-না।
স্পাইরোমেট্রি বা ফুসফুসের ক্ষমতা দেখা : এ পরীক্ষা করে রোগীর ফুসফুসের অবস্থা সম্পর্কে সঠিক ধারণা করা যায়।
সমন্বিতভাবে অ্যালার্জির চিকিৎসা হলো
অ্যালার্জেন পরিহার : যখন অ্যালার্জির সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজে পাওয়া যায়, তখন তা পরিহার করে চললেই সহজ উপায়ে অ্যালার্জি নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
ওষুধ প্রয়োগ : অ্যালার্জিভেদে ওষুধ প্রয়োগ করে অ্যালার্জি উপশম অনেকটা পাওয়া যায়।
অ্যালার্জি ভ্যাকসিন বা ইমুনোথেরাপি : অ্যালার্জি দ্রব্যাদি থেকে এড়িয়ে চলা ও ওষুধের পাশাপাশি ভ্যাকসিনও অ্যালার্জিজনিত রোগীদের সুস্থ থাকার অন্যতম চিকিৎসা পদ্ধতি। এ পদ্ধতি ব্যবহারে কর্টিকোস্টেরয়েডের ব্যবহার অনেক কমে যায়। ফলে কর্টিকোস্টেরয়েডের বহুল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে রেহাই পাওয়া যায়। বিশ্বের অধিকাংশ দেশে, বিশেষ করে উন্নত দেশগুলোয় এ পদ্ধতিতে চিকিৎসা দেওয়া হয়ে থাকে। আগে ধারণা ছিল, অ্যালার্জি একবার হলে আর সারে না। কিন্তু বর্তমানে চিকিৎসা ব্যবস্থার যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। প্রথম দিকে ধরা পড়লে অ্যালার্জিজনিত রোগ একেবারে সারিয়ে তোলা সম্ভব। অবহেলা করলে এবং রোগ অনেক দিন ধরে চলতে থাকলে নিরাময় করা কঠিন হয়ে পড়ে।