Daffodil International University
Entertainment & Discussions => Sports Zone => Cricket => Topic started by: maruppharm on October 13, 2013, 06:02:45 PM
-
দুপুরের দিকে আমার অনুশীলনে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সোহাগ গাজী দেরি করিয়ে দিল। ও যে রকম ব্যাট করছিল, সেটা ফেলে যাই কী করে! ব্যাটসম্যানদের সেঞ্চুরি-ডাবল করা স্বাভাবিক, কিন্তু একজন টেলএন্ডার যখন সেঞ্চুরির দিকে এগোতে থাকে, না দেখে ওঠা মানে রোমাঞ্চ মিস করা। টেলএন্ডারদের ভালো ব্যাটিং দেখার মধ্যে একটা আলাদা মজা আছে। তাই ঠিক করলাম সোহাগের সেঞ্চুরি দেখেই অনুশীলন করতে যাব।
সোহাগের ব্যাটিংয়ের সবচেয়ে ভালো দিক ছিল, সে তার সামর্থ্য বুঝে খেলেছে। খেয়াল করলে দেখে থাকবেন, ও পেসারদের বলে খুব বেশি শট না খেলে স্পিনারদের আক্রমণ করেছে। এমন না যে পেসারদের বলে একেবারেই জবুথবু হয়ে ছিল। তবে সোহাগ স্পিনারদের ভালো খেলে, কাল সেই সামর্থ্যটাই ও কাজে লাগিয়েছে।
রবিউলের কথাও আলাদা করে বলা উচিত। আমি তো চিন্তাই করিনি ও এ রকম বুদ্ধি খাটিয়ে উইকেটে থাকার চেষ্টা করবে। তবে আরেকটু বুদ্ধি খাটিয়ে লাঞ্চের আগের খেলাটাই ওর খেলে যাওয়া দরকার ছিল। তাহলে ফিফটি পেয়ে যেত। সেটা না করে লাঞ্চের পর দুম করে পুল খেলতে গেল। তার পরও বলি, রবিউল অসাধারণ খেলেছে।
খুব বড় কোনো ঘটনা না ঘটলে চট্টগ্রাম টেস্টের পরিণতি এখন ড্রই। মূলত ব্যাটসম্যানদের কৃতিত্বে সেটা হলেও আমার মনে হয় এখন বোলারদেরও কিছু করার আছে। চতুর্থ দিনে বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হওয়ার আগে নিউজিল্যান্ডের ১ উইকেট ফেলা গেছে। আরও দু-একটা উইকেট ফেলতে পারলে ওরা আরও চাপে থাকত। তবে এখন আর উইকেট ফেলার পরিকল্পনা না করে রান কম দেওয়ার চিন্তা করাই ভালো।
চতুর্থ দিনেও উইকেটে কোনো পরিবর্তন দেখলাম না। উইকেট দেখে মনে হচ্ছে এই টেস্টে ফলাফল হওয়ার সম্ভাবনা কম। বল একটু এদিক-ওদিক না করলে ব্যাটসম্যানদের আউট করা মুশকিল। কাজেই উইকেট নেওয়ার জন্য জোরজবরদস্তি করা যাবে না। রান যেন কম হয়, ওদের যেন ঘাম ছুটে যায় রান করতে গিয়ে সেটাই দেখা প্রয়োজন। ওরা সারা দিন ব্যাট করতে চাইলে করুক, তবু রান আটকে রাখতে হবে। এটা করতে পারলে আমাদের বোলাররা দ্বিতীয় টেস্টেও ভালো বল করার আত্মবিশ্বাস পাবে। ব্যাটসম্যানদের ক্ষেত্রেও একই কথা বলব। প্রথম ইনিংসে রান পায়নি তামিম ও বিজয় (এনামুল)। ওদের উচিত এই টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ভালো রান করে পরের টেস্টের আগে আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করা।
নিজেদের মাঠে আমরা টেস্টেও ভালো দল, আবারও তা প্রমাণিত হলো চট্টগ্রামে। এই ভালোটা ধরে রাখতে হবে। আসলে টেস্টে ভালো না করলে বিশ্ব ক্রিকেটে আলোচিত হওয়া কঠিন। সুখের কথা, আমাদের দলটা এখন সে পথে হাঁটতে শুরু করেছে। দলের ওপর অদৃশ্য একটা আত্মবিশ্বাস যেন ভর করেছে। মমিনুল নিজেই বলেছে, এত রান করবে ও আশা করেনি। সোহাগের সেঞ্চুরি আর সবার মতো নিশ্চয়ই ওর কাছেও অপ্রত্যাশিত ছিল। অন্যরাও এখন তাদের দেখে চেষ্টা করবে। একটা দল আসলে এভাবেই বদলে যায়। সামর্থ্যের সুপ্ত কলিগুলো যখন ফুল হয়ে ফুটতে থাকে, দলের চেহারাটাই অন্য রকম দাঁড়ায়। বাংলাদেশ দলটাকে এখন সে রকমই লাগছে।
http://www.prothom-alo.com/sports/