Daffodil International University
Famous => Person => Topic started by: maruppharm on November 13, 2013, 10:03:02 AM
-
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ তরুণ উদ্যোক্তা, লেখক ও বক্তা সাবিরুল ইসলাম নিয়মিত লিখছেন ‘স্বপ্ন নিয়ে’তে।
আমি যখন লন্ডনে আমার ঘরে বসে ‘স্বপ্ন নিয়ে’র জন্য এই লেখাটা তৈরি করছি, তখন মনে হলো, বাংলাদেশ সফরে পাওয়া অভিজ্ঞতা আর কাজের সঙ্গে জুড়ে থাকা আবেগগুলো সবার সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিই। আমার জন্য সেই সফরটা ছিল পূর্বপুরুষের দেশে আমার একটি চিহ্ন রেখে যাওয়া আর অন্য রকম কিছু করে দেখানোর এক বিরাট সুযোগ।
এই পুরো কর্মকাণ্ডে আমার পাশে থাকা আমার পুরো দলটির কাঠখড় পোড়ানো পরিশ্রম আর সংকল্পের মাধ্যমে সেটা অনেকাংশেই সম্ভব হয়েছে। এত কিছু দিয়ে আসলে বুঝতে পেরেছি, আমার হূদয়ের গহিনে ‘বাংলাদেশ’ নামটা খুব যত্ন করে লেখা আছে।
শুধু বাংলাদেশই নয়, সেই সঙ্গে কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া এবং আরও সব দেশ থেকে বাংলাদেশিরা আমাকে যে পরিমাণ সহযোগিতা করেছে, তা আসলে ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। আমি অনুধাবন করেছি, নিজের শিকড় থেকে যে ভালোবাসাটা পাওয়া যায়, তার সঙ্গে অন্য কিছুর তুলনা চলে না।
বাংলাদেশে এ যাত্রাটি আমার জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল, তা বুঝতে পেরেছি যখন শুনেছি আমার সফরের সাফল্যে আমার বাবার চোখে পানি এসে গিয়েছিল। তাই শুধু আমার জন্যই নয়, বরং লন্ডনে থাকা আমার পরিবারের জন্যও বাংলাদেশে কাটানো ওই সময়টা ছিল একটা বিশাল পাওয়া।
আমি সত্যি সবার কাছে কৃতজ্ঞ সবার অসামান্য সহযোগিতার জন্য। বিশেষ করে ঢাকায় থাকা সেই দলটির কথা না বললেই নয়, যারা আগামী বছর বাজারে আসতে যাওয়া আমার ‘টিন-ট্রিপ্রেনার’ নামের তরুণ উদ্যোক্তা তৈরির গেমটির একটি ডিজিটাল ভার্সন তৈরি করে দিয়েছে। তাদের বিশেষভাবে ধন্যবাদ।
সবাইকে জানিয়ে রাখছি, বাংলাদেশে ‘ইন্সপায়ার ওয়ান মিলিয়ন’-এর অভাবিত সাফল্যের পর এই প্রকল্পের ১০ লাখ মানুষের কাছে পৌঁছানোর মাইলফলক স্পর্শের ‘গ্র্যান্ড ইভেন্ট’টি খুব শিগগিরই বাংলাদেশেই আয়োজন করার প্রস্তুতি নিচ্ছি আমি। এ জন্য বাংলাদেশের থেকে ভালো জায়গা আর কীই-বা হতে পারে! সামনের বছরের প্রথম দিকে অনুষ্ঠেয় এই বিশাল আয়োজনটি নিয়ে আমি সত্যিই উচ্ছ্বসিত। আমার প্রত্যাশা, সবাই ইন্সপায়ার ওয়ান মিলিয়নের এই মাইলফলক উদ্যাপনে আমাদের সঙ্গী হবে।
বলতে খুবই গর্ববোধ হচ্ছে, ইন্সপায়ার ওয়ান মিলিয়নের বাংলাদেশ কার্যক্রমের স্বীকৃতি হিসেবে আমাকে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি হিসেবে ‘ইয়াং অ্যাচিভার্স’ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই যে পুরস্কারটি আমি লন্ডনে গ্রহণ করতে যাচ্ছি। এই ভীষণ গর্বের অর্জনটি আসলে আমার একার নয়, বরং বাংলাদেশে যারা আমাকে একনিষ্ঠভাবে সাহায্য করেছে, সাহস জুগিয়েছে, তাদের সবার অর্জন এটি। তাদের সবার পক্ষ থেকেই পুরস্কারটি আমি গ্রহণ করতে চাই।
২০১১-এর মে মাস থেকে শুরু হওয়া ইন্সপায়ার ওয়ান মিলিয়ন নিয়ে আমার এই যাত্রা সামনের দিনগুলোতে বেলজিয়াম, মরক্কো ও নাইজেরিয়ায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, যার যাত্রা শেষ হবে ১০ লাখ মানুষের কাছে পৌঁছানোর মাইলফলক স্পর্শের মধ্য দিয়ে, আমার প্রিয় বাংলাদেশে।
বাংলাদেশে এই প্রকল্পের সাফল্যমণ্ডিত হওয়ার পেছনে সেই সব মানুষের কথা কিছুতেই ভুলতে পারি না আমি, যাদের সহযোগিতা ছাড়া এই যাত্রা প্রায় অসম্ভব ছিল। তাই স্বপ্নচারী আর সবচেয়ে মেধাবী মানুষদের নিয়ে আয়োজন করতে যাচ্ছি ‘ইন্সপায়ার ওয়ান মিলিয়ন বাংলাদেশ: ড্রিম টিম ১০০’ নামের একটি প্রকল্পের, যেখানে ছেলেমেয়ে নির্বিশেষ সব ক্ষেত্রের প্রতিভাবান তরুণেরা অন্তর্ভুক্ত থাকবে, যারা বাংলাদেশ ও বিশ্বে আমার বিভিন্ন প্রকল্প সাধারণ মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করবে।
শেষ করছি কিছু মজার অভিজ্ঞতার কথা বলে। ওই সময়টায় বাংলাদেশি সুন্দর, চমৎকার আর ঝলমলে তরুণীদের কাছ থেকে প্রায়ই একটা প্রশ্নের সম্মুখীন হতাম, ‘সাবিরুল, এখনো কি একলাই আছ?’ উজ্জ্বল সেই সব তরুণীর প্রতি একটা আকর্ণ হাসির সঙ্গে আমার উত্তরটা হতো এই, ‘হ্যাঁ, এখনো একলা। এবং আমি তোমাদেরও ভালোবাসি।’
আর সাবিরুল ইসলাম নামের এই সুদর্শন ব্রিটিশ-বাংলাদেশির পাকাপোক্ত কোনো বন্ধনে বাঁধা পড়তে বেশ কয়েকটা বছর দেরি আছে এখনো।
সবার জন্য শুভেচ্ছা।
-
Nice