Daffodil International University
Entertainment & Discussions => Sports Zone => Cricket => Topic started by: mustafiz on November 18, 2013, 05:44:44 PM
-
‘আমার হলো সারা...তোমার হোক শুরু’—ওয়াংখেড়ের বিদায়ী অনুষ্ঠান থেকে বাড়ি ফিরে ছেলে অর্জুনকে কী এ কথাই বলেছেন টেন্ডুলকার? ঠিক এভাবে না বললেও পুত্রের কাছে চাওয়া তাঁর এটিই। নয়তো, বাবা খেলা ছাড়ার পরদিন সকালেই ছেলে অর্জুন কেন নেমে গেলেন কঠোর অনুশীলনে।
১৪ বছর বয়সী অর্জুন টেন্ডুলকারকে নিয়ে অবশ্য বাবা শচীন টেন্ডুলকারের একটা ভয় আছে। তিনি চান না ছেলের জন্য তাঁর নিজের খ্যাতি চাপ হয়ে দাঁড়াক। সে জন্যই অবসর-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে ছেলের জন্য আকুতিই ঝরেছে তাঁর কণ্ঠে, ‘অর্জুনকে ওর মতো খেলতে দিন। ওকে কোনো চাপে ফেলবেন না। বাবার মতো হতে হবে—এমন কোনো প্রত্যাশা নেই।’
বিখ্যাত বাবাদের সন্তানেরা বেশির ভাগ সময়ই বাবার মতো হতে পারেন না। ভারতীয় ক্রিকেটে রোহান গাভাস্কার এর একটা বড় উদাহরণ। সব ধরনের প্রতিভা থাকার পরও বাবা সুনীল গাভাস্কারের খ্যাতির কাছে পরাভব মানতে হয়েছে রোহানকে। চাপে জর্জরিত রোহানের অবস্থা এমন হয়েছিল, শেষে মুম্বাই ছেড়ে বাংলার হয়ে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট খেলেছেন। ভারতীয় দলে জায়গা পেলেও চাপের মুখে তিনি নিজেকে সেভাবে মেলে ধরতে পারেননি।
অর্জুনের ক্ষেত্রেও এমনটি হওয়ার আশঙ্কা আছে। তাই বাবা ছেলের ব্যাপারে সতর্ক। নিজের ক্রিকেট জীবন যেভাবে তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন, নিজের ছেলের ক্ষেত্রেও সেটাই প্রত্যাশা তাঁর। তাই তো অবসরের পরদিনই ছেলেকে পাঠিয়ে দিলেন মুম্বাইয়ের বান্দ্রায় অবস্থিত এমআইজি ক্লাবের মাঠে। আগের দিন বাবার বর্ণাঢ্য অবসরের আনুষ্ঠানিকতার রেশ না কাটতেই মাঠে নেমে ঘাম ঝরাল কিশোর অর্জুন।
অর্জুনের কোচ নকুল পারকর টেন্ডুলকারের অবসরের দিন রাতেই ফোন পেয়েছিলেন অঞ্জলির। নকুল ভেবেছিলেন অর্জুন হয়তো কয়েক দিন অনুশীলনে কামাই দেবে। বাবার অবসর নিয়ে এত শোরগোল। অর্জুনও নিশ্চয়ই কয়েক দিন বুঁদ হয়ে থাকবে ওতেই। কিন্তু অঞ্জলির ফোন পেয়ে নকুল জানলেন, অর্জুন আসছে ঘাম ঝরাতে।
সকাল আটটা থেকে অর্জুন অনুশীলন করেছে। চোখে-মুখে রাজ্যের প্রতিজ্ঞা। বাবার মতো যে হতেই হবে। কিন্তু সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টায়। বাবার নাম ভাঙিয়ে নয়।
টেন্ডুলকার পরিবারের নীতিও ঠিক এমনই। যা করো নিজের চেষ্টায় করো, যা পাও পরিশ্রম করে পাও। অর্জুনের শরীরের ভেতর যে রক্ত, ওই রক্তই তো বলে দিচ্ছে সবকিছু। অর্জুনও নিশ্চয়ই পুরো ব্যাপারটিকে এভাবেই দেখছে।
একটা অধ্যায় তো শেষ। আরেকটি অধ্যায় শুরুর প্রস্তুতিটাও যেন শুরু হয়ে গেছে। ভারতীয় ক্রিকেট দলে আরও একজন ‘টেন্ডুলকার’ রাজত্ব করবেন কি না, সেটা দেখতে হয়তো অপেক্ষা তো একটু করতেই হবে। অপেক্ষার কারণ টেন্ডুলকার পরিবারের জীবনবোধ। ওই যে, তাঁদের বিশ্বাস, সবকিছুই পরিশ্রম করে পেতে হয়।
তবে মাঠে এখনো টেন্ডুলকার নামের কেউ একজন খেলে যাবে—শচীনভক্তদের আপাতত সান্ত্বনা বোধ হয় এটাই! ওয়েবসাইট।