Daffodil International University

Entertainment & Discussions => Sports Zone => Cricket => Topic started by: mustafiz on November 19, 2013, 11:24:38 AM

Title: Perpetually - Shining Tendulkar's achievement
Post by: mustafiz on November 19, 2013, 11:24:38 AM
হানিফ মোহাম্মদ, ক্রিকেটের প্রথম ‘লিটল মাস্টার’। ৫৫টি টেস্ট খেলা পাকিস্তানের সাবেক এই ব্যাটসম্যান শচীন টেন্ডুলকারের গুণমুগ্ধ। টেন্ডুলকারের অবসরের পর হাতে কলম তুলে নিলেন ব্যাটিং কিংবদন্তি
লিটল মাস্টার খেতাবটা আমার নয় শচীন টেন্ডুলকারেরই প্রাপ্য। প্রাপ্য লিটল জিনিয়াস খেতাবটাও।
টেন্ডুলকারকে বিস্ময়কর ক্যারিয়ারের শেষবিন্দুতে পৌঁছাতে দেখা আমার জন্য ছিল খুবই আবেগময়। আর কোনো ক্রিকেটার ওই জায়গায় পৌঁছাতে পারবে কি না, সন্দেহ আছে। ‘লিটল জিনিয়াসের’ যা কিছু অর্জন, সবই নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে।
অন্য কোনো ক্রিকেটারকে আমি এতটা মুগ্ধতা ও আগ্রহ নিয়ে অনুসরণ করিনি। আমি মনে করি ভারতীয় ক্রিকেট তার কাছে অনেক ঋণী। ভারতের উচিত তাকে ধন্যবাদ দেওয়া, কারণ বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা ও শিখর ধাওয়ানের মতো নতুন প্রজন্মের প্রতিভারা অনুপ্রেরণা পেয়েছে তার কাছ থেকেই।
ভারতীয় ক্রিকেটকে নতুন উচ্চতায় তোলার পেছনে কারও যদি অনুপ্রেরণা থেকে থাকে সেটা এই ছোট মানুষটাই। তার দৃঢ়সংকল্প, একাগ্রতা, আত্মবিশ্বাস ও বড় কিছু করার মানসিকতাই তো অনুপ্রেরণা হয়ে এসেছে তাদের জন্য। ২৪ বছর ধরে ক্রিকেটে রাজত্ব করাটাই বলে দেয় খেলাটার প্রতি তার ভালোবাসা ও নিবেদন। শুধু ক্রিকেটীয় অর্জনের জন্যই নয়, মাঠের বাইরের আচরণও তাকে তরুণ প্রজন্মের কাছে সত্যিকারের এক আদর্শ মানুষ বানিয়েছে।
মুম্বাইয়ে বিদায়ী টেস্টটা খেলতে নামার পর টেন্ডুলকার যে ভালোবাসা, সম্মান ও স্তুতিবন্যায় ভেসেছে, স্বীকার করতেই হবে সেটা দেখে অশ্রু ধরে রাখতে পারিনি। আমি কেঁদেছি, কারণ এটাই তো ছিল সরাসরি তার অনন্যসুন্দর ব্যাটিং দেখার শেষ সুযোগ। আমি কেঁদেছি, কারণ সত্যিই বিশ্বাস করি, সে আরও দু-তিন বছর অনায়াসেই খেলতে পারত।
তিনবার এই লিটল মাস্টারের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পেয়েছি আমি। সর্বশেষ, ক্রিকেট ক্লাব অব ইন্ডিয়ার রজতজয়ন্তী উদ্যাপনে প্রয়াত রাজ সিং দুঙ্গারপুর যেবার সপরিবারে আমাকে মুম্বাইয়ে নিমন্ত্রণ জানালেন, সেবার।

আমি একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলাম। সেখানে কিছু লোক ভারতীয় দলে টেন্ডুলকারের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল, তার ফিটনেস ও ফর্ম নিয়ে প্রশ্ন তুলে তার অবসরে যাওয়া উচিত কি না, সেটা জানতে চেয়েছিল। শুনে তখন আমি হতভম্ব! ১০ বছর আগের ঘটনা সেটি। মনে আছে বলেছিলাম, ‘আপনারা একটা রত্ন পেয়েছেন, উচিত হবে না সেটিকে ধ্বংস করা। সে যত দিন খেলতে চায়, তাকে খেলতে দিন এবং তাকেই সিদ্ধান্ত নিতে দিন কবে অবসর নেবে।’ আমি গর্বিত যে সেদিন আমি ভুল বলিনি। এর পরও শচীন অনেক নতুন রেকর্ড গড়েছে। ব্যাটিংকে অনেক উঁচুতে নিয়ে গেছে। আমার মনে হয় না শিগগিরই এসব রেকর্ড ভাঙবে।
আমি সৌভাগ্যবান যে ব্র্যাডম্যানের যুগ দেখেছি, দেখেছি টেন্ডুলকারের অসাধারণ সব কীর্তিও। স্বভাবতই তাই সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান কে এই প্রশ্নটার মুখোমুখি অনেকবারই হয়েছি। ৯৯ টেস্ট গড়ের ব্র্যাডম্যান, না ১০০টি আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি করা টেন্ডুলকার? খেতাবটা ব্র্যাডম্যানই পেতে পারেন, তবে এই ধরনের তুলনা টানা সব সময়ই কঠিন এবং আমি সেটা করিও না। কারণ বেশি ম্যাচ খেললে গড়ে সেটার প্রভাব পড়বেই।
ব্র্যাডম্যানের মান ও যোগ্যতা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তবে টেন্ডুলকার ২৫ বছর ধরে ধারাবাহিকতা, একাগ্রতা ও রানের বন্যা বইয়ে দিয়েই নিজেকে অসাধারণ এক উচ্চতায় নিয়ে গেছে। দেখিয়েছে অক্লান্ত পরিশ্রম ও ভালোবাসায় কারও পক্ষে কতটা অর্জন করা সম্ভব। এভাবেই সে সব ধরনের ক্রিকেটে ধারাবাহিক পারফর্ম করে সেরা হয়েছে।
আজকাল আমরা পাকিস্তানের ব্যাটিং-সমস্যা ও এটা থেকে বের হওয়ার উপায় খুঁজছি। আমি আমাদের ব্যাটসম্যানদের একটাই পরামর্শ দেব, তারা যেন টেন্ডুলকারের ব্যাটিংয়ের ভিডিও দেখে ও উপলব্ধি করে এই মহান খেলাটায় অসম্ভব বলে কিছু নেই। তাদের দেখা উচিত টেন্ডুলকার কীভাবে সময়ের সঙ্গে নিজের ব্যাটিং টেকনিক বদলে নিয়েছে।
শেষ টেস্টে হাফ সেঞ্চুরির পর অবসরে যাচ্ছে ভেবে মনটা আরও খারাপ হয়েছে। আমার মনে হয় কেউ যদি লিটল মাস্টার খেতাবের যোগ্য হয়, তবে সে এই মানুষটাই। ২০০ টেস্ট খেলার জন্য আমি টেন্ডুলকারকে অভিনন্দন জানাই। আমার মনে কোনো সন্দেহই নেই, যখনই কেউ ক্রিকেট নিয়ে কথা বলবে, টেন্ডুলকারের নামটা সবার ওপরেই থাকবে। টেন্ডুলকার ক্রিকেটে খেলেছে ২৪ বছর, তবে তার অবদান কোনো দিনই মুছে যাবে না।
আমার জীবনের অন্যতম সেরা মুহূর্ত হলো ২০০৬ সালের জানুয়ারিতে, ভারত যখন পাকিস্তানে এল ও কান্ট্রি ক্লাবে নিমন্ত্রণে এল। মুম্বাইয়ে সিসিআইয়ের অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার জন্য বিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে আমাকে সম্মাননা স্মারক তুলে দিয়েছিল টেন্ডুলকারই!
আমার অ্যাওয়ার্ড শোকেসে সামনের দিকে সগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে সেই স্মারক প্লেটটি! পিটিআই।