Daffodil International University

Faculty of Allied Health Sciences => Pharmacy => Topic started by: mustafiz on November 19, 2013, 03:29:22 PM

Title: আলতাপরি (Altapori)
Post by: mustafiz on November 19, 2013, 03:29:22 PM
যেন সে এক রূপকথার পাখি। তার নামেও আছে রূপকথার চরিত্র। নাম তার লালপরি। কেউ কেউ বলে আলতাপরি। ছোটকাল থেকে তাকে এ নামেই চিনে এসেছি। আমাদের হাতে তখন বইপত্র ছিল না। নাম যা শুনেছি, তা-ই মেনে নিয়েছি। না মেনে উপায়ও ছিল না। তার শরীরের যা রং, তাতে লালপরি বা আলতাপরি না বলে উপায় কী?

কিন্তু অনেক পরে এ নাম নিয়ে বিপত্তি বাঁধল। কারণ একটাই। অপরূপ সুন্দর এই লাল পাখিটি মূলত পুরুষ পাখি। মেয়েটি কিন্তু লাল নয়, হলুদ। সে হিসেবে মেয়েটিকে বলতে হয় হলুদপরি। তারও অনেক পরে অজয় হোমের বই পড়ে তার মূল নাম জানতে পারলাম। বাংলায় ওর নাম ‘বড় সাতসয়ালি’ বা ‘বড় সহেলি’।

পুরুষ ও স্ত্রী আলতাপরি প্রায় একই মাপের হয়। লম্বায় ২০ থেকে ২২ সেন্টিমিটার। পুরুষ পাখিটির উপরের পালকগুলো কালো। গলা ও চিবুক কুচকুচে কালো। এ দুটি অংশ বাদ দিলে বাকি পুরোটাই লাল। ডানার কালো পালকগুলোর উপর দিয়ে সিঁদুরের মতো লাল কয়েকটি পালক উপর থেকে নিচের দিকে নামানো। টুকটুকে লাল লেজের উপরে কয়েকটা কালো পালক। কপাল হলুদ। পিঠের উপরের পালক গাঢ় শ্লেট রংয়ের।

আর মেয়ে পাখির কোমরের পালক সবুজাভ হলুদ। লেজও তাই। গলা থেকে লেজের গোড়া পর্যন্ত শরীরের পুরো নিচের অংশই হলুদ। কালচে রংয়ের ডানা; তার উপর হলুদ রংয়ের দুটো পালক। হলুদ লেজের আবার একজোড়া পালক কালো রংয়ের। পুরুষ আর মেয়ের মধ্যে মিল আছে দুটি মাত্র জায়গায়-- উভয়েরই ঠোঁট এবং পা কালো। পুরো ভারতীয় উপমহাদেশ জুড়েই দেখা যায় আলতাপরিদের।

ওদের প্রধান খাবার কীটপতঙ্গ। পতঙ্গভুক অন্যান্য পাখিদের মতো ওরা শূন্যে উড়তে উড়তেও পোকা ধরতে পারে। তবে গাছের ডালের বা পাতার আড়ালের পোকা যখন ধরে, সে এক দেখার মতো দৃশ্য। এই ডাল থেকে ওই ডালে লাফিয়ে লাফিয়ে যখন পোকা ধরে, তখন মনে হয় বড় আকারের লাল-হলুদ কোনো প্রজাপতি ডিগবাজি খেতে খেতে উড়ছে। অন্য কোনো পাখি এসে বিরক্ত করলে মুহূর্তেই বাতাসে ঢেউ তুলে দূরের কোনো গাছে উড়ে চলে যায়। তবে পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, পতঙ্গভুক পাখিরা সাধারণত একজন আরেকজনকে বিরক্ত করে না। ভাবখানা এমন-- তোমার পোকা তুমি খাও, তাতে আমার কী!

মূলত ঘন গাছপালাসমৃদ্ধ চিরসবুজ বনের বাসিন্দা আলতাপরিরা। মাঝেমধ্যে নিজেকে স্বাধীন ভেবে লোকালয়ের আশপাশেও চলে আসে। এলেও বেছেবেছে ঘন পাতাওয়ালা উঁচু গাছেই গিয়ে বসে। বসেও ঘুরেফিরে মগডালেই। ওরা পুরোপুরিই বৃক্ষবাসী। কখনও মাটিতে নামে না।

ওরা কখনও একা, কখনও জোড়ায় জোড়ায় ঘুরে বেড়ায়। তবে বেশিরভাগ সময়ই দলবদ্ধ হয়ে গাছের মগডালে মগডালে পোকামাকড় খুঁজে বেড়ায়। দলছুট হয়ে একাকী বা জোড়ায় জোড়ায় ঘুরে বেড়ালে ধরে নিতে হবে, ওদের প্রজননের সময় এসে গেছে। আরেকটি কথা, ওরা যখন দলবদ্ধ থাকে, তখন ওদের একজন দলপতিও থাকে। দলপতিকে অনুসরণ করে বাকি সবাই।

ওরা গানও গাইতে পারে। গানের গলাও খুব মিষ্টি। ওরা গাছের ডালে বসেও যেমন গান গায়, তেমনি গাইতে পারে উড়তে উড়তেও।

এপ্রিল থেকে জুলাই মাস ওদের প্রজননের সময়। তখন দুজন মিলে জোড়া বাঁধে। তারপর বেশ উঁচুতে বাটির মতো করে বাসা বানায়। ডিম পাড়ে ২ থেকে ৪টি। ডিমের রং হয় সবুজ। তার উপর বাদামি ছোপ ছোপ। বাসা বানানো থেকে শুরু করে বাচ্চাদের লালনপালন সব দুজনে মিলেই করে।
Title: Re: আলতাপরি
Post by: Saqueeb on November 25, 2013, 01:50:12 PM
nice post.